ব্যবসা
চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেছেন, বন্দর নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলবে। কিন্তু উন্নতি করতে হলে প্রযুক্তি, অর্থ ও দক্ষতা প্রয়োজন। বন্দর ঘিরে চার-পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বেশিরভাগ বন্দর বেসরকারি অপারেটররা পরিচালনা করে। আমরাও সেভাবে এগিয়ে যেতে চাই।
সোমবার (১০ নভেম্বর) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার লালদিয়া চর কন্টেইনার ইয়ার্ড উদ্বোধন শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
দেশের স্বার্থের ক্ষতি করে কাউকে বন্দর অপারেশন করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার রাখার সক্ষমতা ৫৬ হাজার টিইউএস থেকে ৬৬ হাজারে উন্নীত হবে। যারা বিজনেস করে, তাদের জন্য লালদিয়ার চর টার্মিনাল বড় সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং ১০ হাজার কনটেইনার রাখার ক্যাপাসিটি বাড়বে।
তিনি বলেন, বন্দরকে গতিশীল করতে যে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হবে, সেই প্রতিষ্ঠানই কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। সব ক্ষেত্রেই দেশের স্বার্থ প্রাধান্য পাবে। বন্দর নিয়ে জাতীয় স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ করবে না সরকার। ব্যবসায়ীরা যেন সুযোগ পায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের ঊর্ধ্বমুখী আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের চাপ সামলাতে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই এবং অন্তর্বর্তী সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে। লালদিয়ার চরের পরিত্যক্ত এই টার্মিনাল বাস্তবায়ন হলে বন্দরের কার্যক্রমও গতিশীল হবে। বন্দরের ভেতরে অব্যবহৃত পরিত্যক্ত স্থানগুলো কাজে লাগানো হবে বলেও এ সময় জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মূলত ৩২ একর জায়গার ওপর কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, যার মধ্যে ১৪ একর জায়গায় ইয়ার্ড করা হয়েছে। ফলে ১০ হাজার একক কন্টেইনার ধারণক্ষমতা এবং ১ হাজার ৫০০ ট্রাক রাখার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া ৮ একর জায়গায় হেভি লিফট কার্গো জেটির ব্যাকআপ ও ১০ একর জায়গায় এপিএম টার্মিনাল এলাকা তৈরি করা হয়েছে।
উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এরপর বে টার্মিনাল এলাকায় পরিবহন টার্মিনাল, তালতলা কনটেইনার ইয়ার্ড (ইস্ট কলোনি-সংলগ্ন) উদ্বোধন করেন এবং এক্সওয়াই শেড ও কাস্টমস অকশন শেড পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম মনিরুজ্জামানসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২৪ দিন আগে
চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম না কমলে আমদানি: বাণিজ্য উপদেষ্টা
চলতি সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে না কমলে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
রবিবার (৯ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোনো সংকট নেই, যথেষ্ট মজুত রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। ফলে আগামী চার পাঁচ দিনের মধ্যে বাজার স্বাভাবিক না হলে আমরা আমদানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেব।
এ সময় হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, একাধিক কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মৌসুমের শেষ, হঠাৎ করে ভারী বৃষ্টি, পেঁয়াজ সংরক্ষণের সময় শুকিয়ে যাওয়ার পরে ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি মজুতদার বা সিন্ডিকেটের কারণে হয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমার কাছে মজুতদারি বা সিন্ডিকেটের খবর নেই। সাময়িক সংকট তৈরি হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সংকট কেটে যাবে।
উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ২ হাজার ৮০০ আবেদন পড়েছে। ১০ শতাংশ আবেদন যদি অনুমোদন দেওয়া হয়, তাহলেও বাজার পেঁয়াজে সয়লাব হয়ে যাবে। কৃষক ক্ষতির মুখে পড়বেন। এজন্য আমরা সামগ্রিক বিবেচনায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
২৫ দিন আগে
আমদানি-রপ্তানি সচল রাখতে আগামী শুক্র ও শনিবার খোলা থাকবে ঢাকা কাস্টম হাউস
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পর দেশের আমদানি, রপ্তানি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখতে ঢাকা কাস্টম হাউস আগামী ২৪ ও ২৫ অক্টোবর (শুক্র ও শনিবার) অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) ঢাকা কাস্টম হাউস থেকে জারি করা এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, কাস্টম হাউস, ঢাকার আওতাধীন এয়ারফ্রেইট ইউনিট ও এক্সপ্রেস সার্ভিস ইউনিটের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে আগামী শুক্র ও শনিবার অফিস খোলা থাকবে। নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদেশে আরও বলা হয়, দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং ব্যবসায়িক গতি সচল রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কাস্টম হাউস, ঢাকার যৌথ কমিশনার সুমন দাশের সই করা ওই আদেশে উল্লেখ করা হয় জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
গত ১৮ অক্টোবর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেশ কয়েক ঘণ্টা সব ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকে।
স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকাণ্ডের পর দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়, আর বেশ কয়েকটি আগত ফ্লাইট চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
আগুনে বিপুল পরিমাণ আমদানি পণ্য, তৈরি পোশাক ও ওষুধশিল্পের কাঁচামাল এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের নমুনা পুড়ে যায়। শিল্প সংগঠনগুলোর হিসাবে, ক্ষয়ক্ষতি ও কার্যক্রমে বিঘ্নের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা) পর্যন্ত হতে পারে।
সময়মতো সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল তৈরি পোশাক রপ্তানি খাত বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে নমুনা পণ্য ধ্বংস হওয়ায় নতুন অর্ডার পাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এদিকে বিমানবন্দরে কার্গো জট তৈরি হয়েছে, বহু আমদানি পণ্য ক্লিয়ারেন্সের অপেক্ষায় পড়ে আছে, আর সংরক্ষণের জায়গাও মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে সরকার ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর নিরাপত্তা পরিদর্শন ও লজিস্টিক পুনর্মূল্যায়নের আশ্বাসও দিয়েছে তারা।
৪৩ দিন আগে
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশে বর্ধিত মাশুল স্থগিত
পণ্য পরিবহণকারী যানবাহনের মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে প্রায় দু’দিনের অচলাবস্থার পর বন্দরে গাড়ির বর্ধিত প্রবেশমূল্য (গেট-ফি) স্থগিত করা হয়েছে। এতে বন্দরে চলমান অচলাবস্থার সাময়িক নিরসন হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টেবর) দুপুরে বন্দর ভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান আশ্বাস দেন, পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে বর্ধিত ফি স্থগিত থাকবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘ফি বৃদ্ধির পর শনিবার থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, ট্রেইলার বন্ধ। ফলে আমদানি পণ্য খালাস বন্ধ ছিল। বিষয়টির সঙ্গে দেশের আমদানি-রপ্তানি জড়িত। তাই বন্দর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। সরকারি অনুমোদনক্রমে জারি করা এ গেজেট বন্দর প্রশাসন তাৎক্ষণিক কোনোরকম কারেকশন কিংবা বন্ধ করতে পারে না। তারপরও পরিবহন শ্রমিকদের বিষয়টা বিবেচনা করে যানবাহনের ক্ষেত্রে বর্ধিত গেট পাস ফি পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে সুপারিশসহ প্রস্তাব পাঠাব। বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাব। প্রস্তাব অনুমোদন হয়ে এলে আপনারা জানতে পারবেন কী সিদ্ধান্ত হয়েছে। আপাতত তা স্থগিত থাকবে। উপস্থিত শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা আশ্বস্ত করেছেন যে তারা কাজে ফিরে যাবেন। বাইরে প্রায় ৬ হাজার ট্রাক-কাভার্ডভ্যান অপেক্ষা করছে। সেগুলো বন্দরে ডেলিভারি বা রপ্তানি কাজে নিয়োজিত হবে।’
বন্দরের নতুন ট্যারিফ শিডিউল স্থগিতের দাবিতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও কর্মচারীদের কর্মবিরতি এবং পোর্ট ইউজার ফোরামের হুঁশিয়ারির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজ সভা হয়েছে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, প্রাইম মুভার নিয়ে।’
আন্তঃজেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও বিভাগীয় পণ্য পরিবহন ফেডারেশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান সুমন বলেন, ‘বন্দর চেয়ারম্যান পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে নতুন ট্যারিফ শিডিউলের বর্ধিত ফি স্থগিত থাকবে। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, আপাতত আমাদের ২৩০ টাকা দিতে হবে না। আগের মতো ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা ফিতে পাস নিতে পারব আমরা। যদি আমরা ৫৭ টাকা ৫০ পয়সাতে পণ্যবাহী গাড়ির পাস পাই তাহলে আমাদের গাড়ি বন্দরের পণ্য পরিবহন করবে। প্রতি দিন আমাদের ৮-৯ হাজার গাড়ি বন্দরে পণ্যবাহী ট্রাক কাভার্ডভ্যান চলাচল করে।’
চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন ফারুক বলেন, ‘দীর্ঘ সময় আলোচনার পর বন্দর চেয়ারম্যান পণ্যবাহী গাড়ির গেট পাসের বর্ধিত ফি স্থগিতের কথা জানিয়েছেন। স্থগিত করার লিখিত কাগজ পেলে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করব। যেহেতু এটা কার্যকরের বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, তাই স্থগিতের বিষয়টিও লিখিতভাবে জানালে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
৪৬ দিন আগে
কার্যক্রম শুরুর আগেই ৫০ কোটি টাকায় নির্মিত বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থগিত
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থগিত করেছে সরকার। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল বাল্লা স্থলবন্দর।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ৪০তম বৈঠকে বাল্লা স্থলবন্দরের অপারেশন কার্যক্রম স্থগিত রাখার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল স্থলবন্দরটি। কিন্তু বন্দরটিতে কোনো কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। বর্তমানে নির্মাণকাজ শেষে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় বন্দরটি এখন অরক্ষিত রয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের কেদারাকোট নামক স্থানে স্থলবন্দরটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ ১৩ একর এলাকা জুড়ে স্থলবন্দরের নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০২৩ সালের জুন মাসে শেষ হয়।
বন্দরের অবকাঠামোগত স্থাপনা নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে ৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অপরদিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ খোয়াই নদীর অপর তীরে ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়মুড়ায় সময়মত বন্দর স্থাপন না করায় বাল্লা স্থলবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।
উল্লেখ্য ১৯৫১ সালে চুনারুঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী বাল্লা এলাকায় ৪ দশমিক ৩৭ একর জায়গা নিয়ে একটি একটি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ১৯৯১ সালে পুনরায় চালু করা হয়। এ পোস্ট দিয়ে কিছু পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করা হতো। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ বাল্লাকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করেছিল সরকার।
চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সরকার বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থগিত করায় এটি অরক্ষিত হয়ে পড়বে। এখনই এর অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। বাল্লা স্থলবন্দরযাতে অরক্ষিত না থাকে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
৯৭ দিন আগে
কিছুতেই নাগালে আসছে না সবজির দাম
গত তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে সবজির দাম। কিছুতেই ক্রেতাদের নাগালে আসছে না দাম, বেশিরভাগ সবজিই কেজিপ্রতি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সরেজমিনে রাজধানীর মতিঝিল, শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরা এবং বাড্ডা এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজারে সবজি কিনতে এসে ক্ষোভ ঝাড়ছেন ক্রেতারা।
শান্তিনগর কাঁচাবাজারের ক্রেতা শামীমা আক্তার ইউএনবিকে বলেন, ‘এখনো বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে। বেগুনের দাম এত কীভাবে হয়? যে পটল সারাবছর ৫০ টাকা কেজি ছিল, তার দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এভাবে সবজির দাম বাড়তি থাকলে নিম্নআয়ের মানুষ খাবে কী?’
বাজার ঘুরে এই ক্রেতার কথার সত্যতা পাওয়া যায়। দেখা যায়, ভালো মানের গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে, লম্বা বেগুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা ও সাদা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।
বেগুনের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য সবজিও। কেজিপ্রতি পটল ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাকরোল ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা, জালি কুমড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
আরও পড়ুন: বাজারে আগুন দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি, ঊর্ধ্বমুখী প্রতিটি পণ্যের দাম
সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। তবে আগের সপ্তাহগুলোর তুলনায় পেঁপের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া বাজারে উঠেছে নতুন শিম, বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি।
উত্তর বাড্ডার সবজি বিক্রেতা আসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘অন্যান্য সময়ের তুলনায় সবজির সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছে। বছরের এ সময়ে এমনিতেই সবজির সরবরাহ কম থাকে। এর মধ্যে প্রতি ঘাটে ঘাটে টাকা দিতে হচ্ছে। এতে করে দাম বেশি।’
আরেক সবজি বিক্রেতা মনসুর বলেন, ‘আগামী মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বাজারে বাড়বে সরবরাহ। তখন সবজির দাম কিছুটা কমে আসবে। তার আগে সবজি এমন বাড়তি দামেই বিক্রি হবে।’
সবজির উচ্চমূল্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে শাকেরও। প্রতি মুঠো কলমি, পালং, হেলেঞ্চা শাক আগে ১০ টাকা থাকলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।
লাউ শাক, কুমড়া শাক মুঠোপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এ ছাড়া কাঁচামরিচ বাজারে এখনো উচ্চদরেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে।
তবে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে, কেজিপ্রতি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। আর রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি।
মসুর ডালও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। বড় দানার মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা এবং ছোট দানার মসুরের ডাল কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা।
আরও পড়ুন: দাম কমেছে ইলিশের, উর্ধ্বমুখী সবজির বাজার
মুরগি, গরু, খাসি বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। দাম অপরিবর্তিত আছে ডিমেরও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা এবং দেশি মুরগি স্থানভেদে ৫৮০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায় এবং সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজনপ্রতি ১৪০ টাকা। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসী ৯০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা।
মাংসের মতো মাছের বাজারেও আসেনি তেমন কোনো পরিবর্তন। আগের মতোই উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। এক কেজির ওপরে ইলিশের কেজি দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা, এক কেজি সাইজের ইলিশ দুই হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা, এক কেজির নিচে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা এবং ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়।
গলদা চিংড়ি কেজিপ্রতি সাইজভেদে এক হাজার ২০০ টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৮০০ থেকে হাজার টাকা। রুই মাছ কেজিপ্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কালবাউশ ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবজির দাম না কমলে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে না। আবার ডিম থেকে মুরগি থেকে মাছ এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম না কমলে আগামী মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
৯৮ দিন আগে
ডিএসইর আরও ১৩ ব্রোকারেজ হাউজ পেল ফিক্স সার্টিফিকেশন
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) চালুর লক্ষ্যে এপিআই সংযোগের মাধ্যমে আরও ১৩টি ব্রোকারেজ হাউজকে ফিক্স সার্টিফিকেশন দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) ডিএসই ট্রেনিং একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে এসব সার্টিফিকেশন দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ফিক্স সার্টিফিকেশন তুলে দেন ডিএসই'র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। বলেন, ‘যে ১৩টি ব্রোকারেজ হাউজ ফিক্স সার্টিফিকেশন গ্রহণ করেছে, তাদের ধন্যবাদ জানাই। তবে যেসব ব্রোকারেজ হাউজ এখনও সার্টিফিকেশনের আওতায় আসতে পারেনি, তাদের সহযোগিতা করার জন্য ডিএসই কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে সবাইকে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। চলমান পরিবর্তনগুলো বাজারকে ইতিবাচক দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।’
যেসব ব্রোকারেজ হাউজ সার্টিফিকেশন পেল
এপেক্স ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ লিমিটেড, ইবিএল সিকিউরিটিজ পিএলসি, গ্রীনডেল্টা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, ইসলামি ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এনএলআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এনআরবিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড, ওয়ান সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এসবিএসি ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড, স্মার্ট শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুর রহমান। বক্তব্য দেন ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাহমাত পাশা। সমাপনী বক্তব্য দেন ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আসিফুর রহমান।
এছাড়া ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, রিচার্ড ডি রোজারিও, আইসিটি ডিভিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক এএনএম হাসানুল করিম, প্রোডাক্ট অ্যান্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ডিভিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইয়িদ মাহমুদ জুবায়েরসহ ডিএসই ও বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসইর এপিআই উদ্যোগ
ডিএসই ২০২০ সাল থেকে এপিআই-ভিত্তিক ব্রোকার হাউজ অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (BHOMS) চালুর উদ্যোগ নেয়। এরপর থেকে ৬৫টি ব্রোকারেজ হাউজ নাসডাক ম্যাচিং ইঞ্জিনে সংযোগ নিয়ে নিজস্ব ওএমএসের মাধ্যমে লেনদেনের আবেদন করেছে। আজকের ১৩টিসহ মোট ৩৯টি ব্রোকারেজ হাউজ ফিক্স সার্টিফিকেশন পেয়েছে। এর মধ্যে ২২টি হাউজ ইতোমধ্যেই নিজস্ব ওএমএস চালু করেছে।
৯৮ দিন আগে
প্রাইজবন্ড কি? কোথা থেকে কিনবেন ও ভাঙাবেন? কেনার সুবিধা-অসুবিধা
আর্থ-সামাজিক জীবনধারায় প্রাইজবন্ড একটি পরিচিত নাম। এটি অনেকের কাছে সঞ্চয়ের নিরাপদ মাধ্যম এবং একই সঙ্গে ভাগ্য পরীক্ষা করার এক দারুণ সুযোগ। বিনিয়োগ, উপহার কিংবা দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের কাছে এটি এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তাই প্রাইজবন্ড কেনা ও ভাঙানোর নিয়ম, এর সুবিধা ও অসুবিধা, প্রাইজবন্ডের লটারী ও পুরুষ্কার সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা জরুরি। চলুন, প্রাইজবন্ডের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
প্রাইজবন্ড কি
বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের একটি বিশেষ বিনিয়োগ প্রকল্প প্রাইজবন্ড। এখানে বিনিয়োগকারী যেকোনও সময় বিনিয়োগ করতে পারেন এবং প্রয়োজনে বন্ড ফেরত দিয়ে মূলধন তুলে নিতে পারেন। তবে এই প্রকল্প থেকে সরাসরি কোনও মুনাফা বা সুদ দেওয়া হয় না।
প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময় অন্তর লটারির মতো ‘ড্র’ অনুষ্ঠিত হয়। সেই ড্র-এর মাধ্যমে বিজয়ীরা বিভিন্ন মূল্যমানের পুরস্কার পান। সাধারণত বছরে চারবার ড্র আয়োজন করা হয়, এবং তার দিনক্ষণও নির্দিষ্ট- ৩১ জানুয়ারি, ৩০ এপ্রিল, ৩১ জুলাই, এবং ৩১ অক্টোবর। এই তারিখগুলোর কোনওটি সরকারি ছুটির দিনে পড়লে সেই ড্র পরবর্তী কার্যদিবসে অনুষ্ঠিত হয়।
সব বিক্রিত বন্ড একসঙ্গে ড্র-এর আওতায় আসে না। নির্দিষ্ট ড্র অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখের কমপক্ষে দুই মাস আগে যে বন্ড বিক্রি হয়েছে, শুধুমাত্র সেগুলোই ড্র-এর অন্তর্ভুক্ত হয়। অর্থাৎ, কোনও বন্ড কেনার পর অন্তত দুই মাস অতিক্রম না হলে সেটি লটারিতে অংশ নিতে পারবে না।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে নগদায়ন বা পুনরায় চালু করার উপায়
ড্র অনুষ্ঠিত হয় সরকার অনুমোদিত স্থানে। এর আয়োজন ও পরিচালনায়ও থাকে সরকার কর্তৃক গঠিত বিশেষ কমিটি। ড্র-এর নিয়ম একক ও সাধারণ পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়, যেখানে প্রত্যেক সিরিজের জন্য একই নম্বর প্রযোজ্য হয়। বাজারে শুধুমাত্র চলমান প্রাইজবন্ড সিরিজগুলো ড্র-এর অংশ হয়।
প্রাইজবন্ড কেন কিনবেন: এর সুবিধা কি
অনেকেই প্রাইজবন্ডকে লটারির সঙ্গে তুলনা করেন। কিন্তু এ দুয়ের মাঝে রয়েছে সুক্ষ্ম পার্থক্য। লটারিতে একবার ড্র শেষ হয়ে গেলে সেই টিকিটের কোনও মূল্য থাকে না। টিকিটে জিততে না পারলে পুরো টাকাই হারাতে হয়। কিন্তু প্রাইজবন্ডে বিষয়টি ভিন্ন। একটি ড্র শেষ হয়ে গেলেও বন্ডের মেয়াদ শেষ হয় না। পরবর্তী ড্র’তেও সেটি অংশ নিতে পারে। তাই একবার বন্ড কিনলে তা দিয়ে একাধিকবার ড্র’তে অংশ নেয়ার সুযোগ থাকে।
প্রাইজবন্ডের আরেকটি দিক হলো- এতে কোনও মাসিক সুদ বা লভ্যাংশ নেই। কারণ প্রাইজবন্ড বিক্রির মাধ্যমে সরকার আসলে জনগণের কাছ থেকে সরাসরি ঋণ সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে গ্রাহক বন্ড ফেরত দিলে সরকার সেই ঋণ শোধ করে। অর্থাৎ এটি সুদভিত্তিক সঞ্চয় নয়, বরং একটি নিরাপদ বিনিয়োগ যা আবার যেকোনও সময় ভাঙানো যায়।
যে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে সরাসরি নগদ অর্থ উপহার দেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই বিব্রতকর। সেখানে প্রাইজবন্ড একটি উৎকৃষ্ট উপায়। যেমন- বিয়েতে উপহার হিসেবে প্রাইজবন্ড দিলে নবদম্পতি চাইলে তা সঙ্গে সঙ্গে ভাঙাতে পারেন। আবার চাইলে তারা বহু বছর রেখে দিয়ে ভবিষ্যতের ড্র-তে ভাগ্য পরীক্ষা করতে পারেন। এতে এক ধরনের স্বাধীনতা থাকে।
আরো পড়ুন: জুলাই ২০২৫ থেকে পরিবার সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফার হার: বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের পুনঃনির্ধারিত রিটার্ন রেট
শুধু বিয়েতেই নয়, জন্মদিন, শিশুর মুখে ভাত কিংবা অন্য যেকোনও পারিবারিক অনুষ্ঠানে প্রাইজবন্ড অর্থবহ উপহার হতে পারে। এর মাধ্যমে উপহারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ভবিষ্যতে বাড়তি সম্ভাবনারও সুযোগ পান। তাই এটি বিনিয়োগ, সঞ্চয় এবং উপহার- সবক্ষেত্রেই একটি কার্যকর বিকল্প।
প্রাইজবন্ডের পুরষ্কার
একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো পদ্ধতিতে প্রাইজবন্ডের পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে। এটি পূর্বনির্ধারিত এবং প্রতিটি সিরিজের জন্য একইভাবে প্রযোজ্য। কোন স্তরের পুরস্কারের জন্য প্রতিটি সিরিজ থেকে কতজন বিজয়ী হবেন- তা পুরস্কার ঘোষণার সময় স্পষ্টভাবে জানানো হয়।
প্রথম পুরস্কারের জন্য ৬ লাখ টাকা নির্ধারিত। ড্র-এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট নম্বর বাছাই করা হয়। তবে প্রতিটি সিরিজে সেই একই নম্বরের বন্ডধারী একজন করে এই পুরস্কার পান। বর্তমানে ৮২টি সিরিজ চালু রয়েছে। ফলে একটি নম্বর নির্বাচিত হলে মোট ৮২ জন প্রথম পুরস্কার পান।
একই নিয়মে দ্বিতীয় পুরস্কারের পরিমাণ ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এখানেও প্রতিটি সিরিজ থেকে একজন করে বিজয়ী নির্বাচিত হন। অর্থাৎ মোট ৮২ জন এই পুরস্কার পাবেন।
আরো পড়ুন: ই-রিটার্ন: অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন যেভাবে
তৃতীয় পুরস্কারের জন্য প্রতিটি সিরিজ থেকে দুটি করে নম্বর নির্বাচন করা হয়। পুরস্কারের পরিমাণ এক লাখ টাকা। তাই মোট বিজয়ীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬৪ জন।
চতুর্থ পুরস্কারের ক্ষেত্রে প্রতিটি সিরিজ থেকে দুটি করে নম্বর বাছাই করা হয়। এখানে পুরস্কারের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা। তাই মোট বিজয়ী হন ১৬৪ জন।
সবচেয়ে বেশি বিজয়ী নির্ধারিত হয় পঞ্চম পুরস্কারের ক্ষেত্রে। প্রতিটি সিরিজ থেকে ৪০টি নম্বর নির্বাচন করা হয়। পুরস্কারের পরিমাণ ১০ হাজার টাকা। ফলে মোট ৩ হাজার ২৮০ জন বিজয়ী হন।
সব মিলিয়ে প্রতি ড্র-তে মোট ৩ হাজার ৭৭২টি পুরস্কার দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক পরিবর্তন করে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের উপায়
প্রাইজবন্ড কোথা থেকে কিনবেন
সরকারের নির্দিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাইজবন্ড কেনা বা ভাঙানোর কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে থাকে। ময়মনসিংহ শাখা ব্যতীত বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কার্যালয়ে প্রাইজবন্ড পাওয়া যায়।
এছাড়াও যে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বন্ড কেনা যায়, সেগুলো হলো:
- শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলো বাদে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক- জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনস্থ সঞ্চয় ব্যুরো অফিস- ডাকঘর
ক্রেতাকে শুধু নগদ অর্থ নিয়ে উপস্থিত হতে হয়। আলাদা কোনও আবেদনপত্র জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার জন্য আবেদনের নির্ধারিত নিয়ম রয়েছে। বিজয়ীকে মূল প্রাইজবন্ডসহ ফর্ম পিবি-২৩ সঠিকভাবে পূরণ করতে হয়। অতঃপর তা বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কোনও কার্যালয় (ময়মনসিংহ বাদে) সহ উপরোল্লিখিত যেকোনও প্রতিষ্ঠানে জমা দিতে হয়। সাধারণত আবেদন করার তারিখ থেকে দুই মাসের মধ্যে পুরস্কারের টাকা প্রদান করা হয়। প্রাপকের ব্যাংক হিসাবে সরাসরি সেই অর্থ জমা হয়। একইভাবে এসব কার্যালয় থেকে প্রাইজবন্ড ভাঙানোও যায়।
আরো পড়ুন: পুরনো স্বর্ণ বিক্রির সময় যে কারণে দাম কেটে রাখা হয়
প্রাইজবন্ডের নেতিবাচক দিক
সুবিধার পাশাপাশি প্রাইজবন্ডের কিছু সীমাবদ্ধতা ও অসুবিধাও রয়েছে। সেগুলো হলোঃ
- প্রাইজবন্ডের ড্র-তে জেতার সম্ভাবনা খুবই কম। বিনিয়োগ করে পুরস্কার পাওয়া সম্পূর্ণ ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল।এটি আসলে কোনও দ্রুত লাভের উপায় নয়। স্বল্পমেয়াদি মুনাফার আশায় প্রাইজবন্ড কিনলে হতাশা আসতে পারে।বছরান্তে প্রাইজবন্ডের যে লভ্যাংশ দেওয়া হয় তার হার মাত্র ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক ডিপোজিটের তুলনায় এটি অনেক কম।- লভ্যাংশের হার এমনিতেই কম, তার উপর পুরস্কারের অর্থের উপর আয়কর দিতে হয়। আয়কর আইন ২০২৩-এর ১১৮ ধারা অনুযায়ী পুরস্কারের অর্থের উপর আরোপিত উৎসে কর ২০ শতাংশ।- নকল টাকা শনাক্তে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও নকল প্রাইজবন্ড ধরা অত্যন্ত কঠিন। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।- পুরস্কার তুলতে গেলে অনেক কাগজপত্র জমা দিতে হয়। সঠিকভাবে ফরম পূরণ করা এবং গেজেটেড অফিসার দ্বারা সত্যায়ন করা বাধ্যতামূলক। এতে সময় বেশি লাগে এবং ভোগান্তিও পোহাতে হয়।- সময়ের সাথে সাথে টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে ১০০ টাকা মূল্যের প্রাইজবন্ডের প্রকৃত মূল্য আগের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছে। দশ বছর আগে ১০০ টাকায় যে পরিমাণ জিনিস কেনা যেত, এখন একই টাকায় তা সম্ভব নয়।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশ সরকারের ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করার পদ্ধতি
প্রাইজবন্ড লটারীর ফলাফল জানার উপায়
প্রাইজবন্ডের ড্র–এর ফলাফল চেক করার জন্য রয়েছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট। এখানে প্রতিটি ড্র–এর বিজয়ীর সিরিজ ও নাম্বারের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এছাড়া প্রাইজবন্ড সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব একটি পোর্টাল রয়েছে- https://prizebond.ird.gov.bd/। এই সাইটে প্রাইজবন্ডের নাম্বার এবং সিরিজ লিখে আপনি সহজেই চেক করতে পারবেন যে আপনি প্রাইজবন্ড লটারী জিতেছেন কি না।
পরিশিষ্ট
সর্বসাকূল্যে, প্রাইজবন্ড কি, কোথা থেকে কিনবেন, কেন কিনবেন, এবং এর সুবিধা-অসুবিধাগুলো সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হলো। বিনিয়োগের পাশাপাশি ভাগ্য পরীক্ষার এক আকর্ষণীয় সুযোগ এই প্রাইজবন্ড। এটি সহজে কেনা যায়, যেকোনও সময় ভাঙানো যায় এবং বছরে চারবার এ থেকে পুরস্কার প্রাপ্তির সুযোগ থাকে। তবে এর ড্র-তে জেতার অনিশ্চয়তা, স্বল্প লভ্যাংশ বা কর কর্তনের বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখা উচিত। সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা দুটোর প্রতিই গুরুত্বারোপ সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সহায়তা করবে।
আরো পড়ুন: ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন
১০২ দিন আগে
বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি শুরু, কেজিতে দাম কমবে ৫-৭ টাকা
চার মাস পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৩১৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। এতে দেশের খোলা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম ৫ থেকে ৭ টাকা কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভারতীয় চালবোঝাই ৯টি ট্রাক বন্দরের ৩১ নম্বর ইয়ার্ডে প্রবেশ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সর্বশেষ এ বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়।
আমদানিকারকরা জানান, দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ভারত থেকে মোটা চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। চাল আমদানিতে দেশের বাজারে চালের দাম কমে আসবে।
বেনাপোলের চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হাজী মুসা করিম অ্যান্ড সন্স’র স্বত্বাধিকারী আব্দুস সামাদ বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার ভারত থেকে ৯টি ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন মোটা চাল আমদানি করেছি।
চালের এই চালান রাতেই বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। চাল ছাড়করণের জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউসে বিল অব এন্ট্রি জমা দেওয়া হয়েছে। পেট্রাপোল বন্দরে আরও চালবোঝাই ট্রাক বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দিতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের ২৩ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন করার শেষ সময় ছিল। সারা দেশের মতো বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা চাল আমদানির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। আমরা বেনাপোল স্থলবন্দরের বেশ কয়েকজন আমদানিকারক চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছি। আমদানির অনুমতিপত্র বা আইপি পাওয়ার পর অনেকে এলসি খুলেছেন যার বিপরীতে বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। আমদানির অনুমতিপ্রাপ্ত আরও আমদানিকারকরা পর্যায়ক্রমে এলসি খুলছেন। ফলে আগামী রবিবার থেকে চাল আমদানি বাড়তে পারে।
চাল আমদানির ফলে দেশের বাজারে চালের দাম কমে আসবে। কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা দাম কমে যাবে। ভালো মানের চিকন জাতের চাল ৬৭ থেকে শুরু করে ৭০ টাকার মধ্যে থাকবে। মোটা স্বর্ণা জাতের চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকার মধ্যে থাকবে।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ সভাপতি আমিনুল হক জানান, বন্ধের পর শুরুর প্রথম দিনে ৯ ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। আরও অনেক চালবোঝাই ট্রাক বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
১০৪ দিন আগে
পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু সূচকের উত্থান দিয়ে
সূচকের উত্থান দিয়ে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৬ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ৭ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে ১৭০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৫ দিন পর পুঁজিবাজারে লেনদেন ৯৫০ কোটি টাকা ছাড়াল
সূচকের উত্থান হয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৩২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৪৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৪টি কোম্পানির, কমেছে ১৩টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ৩০ মিনিটে সিএসইতে ২৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
১০৮ দিন আগে