বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ঢাকার পেট্রোবাংলায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) মধ্যে একটি গ্যাস বিক্রয় চুক্তি সই হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সই করা এই চুক্তির মাধ্যমে কাফকো-তে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে, যা দেশের কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরাসরি অবদান রাখবে।
চুক্তি অনুযায়ী, কেজিডিসিএল কাফকো-কে গড়ে দৈনিক ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট ( এমএমসিএফডি) হারে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করবে। এই বিপুল পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ কাফকোর সার উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কেজিডিসিএলের পক্ষে কোম্পানির সচিব কবির উদ্দিন আহম্মদ এবং কাফকোর পক্ষে সিসিও ও কোম্পানি সচিব খাজা সাইদুর রহমান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে দেশের শীর্ষস্থানীয় সরকারি ও শিল্প খাতের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, কেজিডিসিএল-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেজানুর রহমান, বিসিআইসি চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান এবং কেজিডিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, কাফকো এবং পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, চুক্তি সই শেষে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফেকা)- এর পক্ষে শিল্প সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমান কেজিডিসিএল-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ এর নিকট বকেয়া গ্যাস বিল বাবদ ৯২৩ কোটি ৮১ লক্ষ ১৮ হাজার ৬১৬ টাকা এবং ডিমান্ড চার্জ বাবদ ৩৪ কোটি ৩৭ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮৪৮ টাকার দুটি চেক হস্থান্তর করেন।
এ পর্যায়ে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌ. সালাহউদ্দিন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমানের কাছে বকেয়া বাবদ ৬৩৪ কোটি ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৬৫ টাকার চেক হস্থান্তর করবেন।
এই চুক্তি সই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায়, বিশেষ করে কৃষিভিত্তিক শিল্পে জ্বালানি নিরাপত্তা সুদৃঢ় করার সরকারের অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন। এটি কাফকোর মতো বৃহৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং স্থানীয়ভাবে সার উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমাতেও অবদান রাখবে। এই অংশীদারত্ব বাংলাদেশের শিল্প ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।