সিলেটে টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তবে কোনো নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
এদিকে বৃষ্টি ও ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ৬টা থেকে বুধবার (২১ মে) সকাল ৬টা পর্যন্ত এ অঞ্চলে ১৯৩.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর বুধবার (২১ মে) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৮ মিলিমিটার।
সিলেটের পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে সিলেটের নদ-নদীতে ক্রমাগত পানি বেড়েই চলছে। ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলই পানি বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ।’
ভারতে বৃষ্টি কমে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে আশা এ কর্মকর্তার। এ ছাড়া, সিলেটে টানা ভারী বর্ষণও পানি বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাউবোর তথ্যমতে, বুধবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদ-নদীতে পানি বাড়লেও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
এদিকে, সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে উপজেলার নদ-নদীর পানিও। গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
একইভাবে কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরেও পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে।
আরও পড়ুন: কবরস্থান থেকে ৫ কঙ্কাল চুরি, এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানান, ‘তার উপজেলার কোনো গ্রাম এখনো প্লাবিত হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘নদ-নদীর পানি বেড়েই চলছে। হাওরেও পানি ঢুকেছে। তাই আগাম বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কায় স্থানীয় প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।’
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পানি বৃদ্ধি পেলেও কোথাও পানিবন্দি অবস্থায় থাকার খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে। পাশাপাশি জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘সিলেটে এখনো বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কোনো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে স্থানীয় প্রশাসন ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।’
পরিস্থিতির অবনতি হলে স্বেচ্ছাসেবী, সরকারি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান তিনি।