ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যে গত চারদিন ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও অন্তত দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।
স্থানীয় রাজস্ব দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বন্যার পানিতে রাজ্যের প্রায় ১৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সেখানকার ঘরবাড়ি, অবকাঠামো, রাস্তাঘাট ও কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রাজ্যজুড়ে ৪৫০টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ, যেখানে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
রাজ্যের নদীগুলোর পানির স্তর উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গোমতি, দক্ষিণ ত্রিপুরা, উনকোটি ও পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতির কথাও উল্লেখ করেছেন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: নেপালে ভারতীয় যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১৪, নিখোঁজ অনেকে
এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ব্রিজেশ পান্ডে বলেন, ‘প্রাথমিক প্রতিবেদনে ঘরবাড়ি ও গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতিসহ ভৌত অবকাঠামো ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতির কথা বলা হয়েছে।’
তিনি জানান, রাজ্যের ২ হাজার ৩২টি জায়গা থেকে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৭৮৯টি জায়গা পরিষ্কার করা হয়েছে, বাকি জায়গাগুলোতে পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম অল ইন্ডিয়া রেডিও জানিয়েছে, ত্রিপুরায় চারদিনের টানা বৃষ্টিতে কৃষি ও বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
দেশটির বিমান বাহিনীর কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছে স্থানীয় সরকার। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দলও ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে মোতায়েন করা হয়েছে।
বন্যার কারণে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে রেল পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং অন্যান্য বন্যাকবলিত এলাকায় টেলিযোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে ওষুধ কারখানায় বিস্ফোরণ: নিহত বেড়ে ১৮
এদিকে, রাজ্যের বহু জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় রাজ্যজুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।