গত এক দশক ধরে নির্মাণ কাজের ধীর গতির কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (কেএমসিএইচ) উদ্বোধন।
এদিকে হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ না হলেও বিদেশ থেকে আমদানি করে আনা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম। মূল্যবান এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম অরক্ষিত অবস্থায় দিনের পর দিন হাসপাতাল ভবনে পড়ে রয়েছে।
দফায় দফায় নবনির্মিত এই হাসপাতাল ভবনের বর্হিবিভাগ চালু করার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হলেও, বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ গত ৩০ জুন হাসপাতালের বর্হিবিভাগ চালু হওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্বপ্নের মেডিকেল কলেজ নিয়ে হতাশ কুষ্টিয়াবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ২৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যয় ধরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের ৩০ জুন।
কিন্তু নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমূহের নানা অনিয়ম ও জটিলতা সৃষ্টির কারণে ধাপে ধাপে একাধিকবার প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির ফলে সর্বশেষ এই প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে সর্বশেষ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত।
আরও জানা যায়, ২০০৮ সালে প্রকল্পটি অনুমোদনের পর ২০১১ সালে কুষ্টিয়া মেডিকেল ট্রেনিং সেন্টার ম্যাটসে অস্থায়ীভাবে মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয়। অস্থায়ী ভবন থেকে স্থানান্তরের পর ২০২২ সালের ৩ মার্চ মূল ক্যাম্পাসে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু হয়।
প্রথম দফায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এবং দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
এরপর ২০১৯ সালে নির্মাণাধীন হাসপাতাল ভবনের ছাদ ধসে এক শ্রমিক নিহত হলে কাজ আবার বাধাগ্রস্ত হয়। ছাদ ধসে মৃত্যুর ঘটনায় সে সময় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ওই সময় তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে দুর্ঘটনার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয় এবং তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।
এরপর ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর একনেক সভায় এই প্রকল্পের সংশোধিত ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) অনুমোদন করা হয়।
তখন এই প্রকল্পের ব্যয় ২০৬ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৮২ কোটি টাকা ধরা হয়। আর সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।