নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে পঞ্চগড়ের জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চার বিচারকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলা শাখার আয়োজনে পঞ্চগড় আদালত চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে শহরের প্রধান সড়ক ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয় মিছিলটি। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বিসহ সমন্বয়ক মোজাহার ইসলাম সেলিম, মাহফুজুর রহমান, মনিরুজ্জামান ফয়সাল প্রধান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: আলিফ হত্যা: ইসকন নিষিদ্ধ ও হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম
এ সময় তারা বলেন, পঞ্চগড় আদালতের জেলা ও দায়রা জজ গোলাম ফারুক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মন্ডল ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুজ্জামান এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু হেনা সম্প্রতি জেলা জজ আদালতের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে মেধার মূল্যায়ন না করে নিয়োগের নামে বাণিজ্য করেছেন। ছাত্র-জনতা ও পরীক্ষার্থীরা নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ করলে নিয়োগ স্থগিত করা হয়। তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কোনো অগ্রগতি নেই।
তারা আরও বলেন, তারা এখনও আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরের ভূমিকা পালন করছেন। আগস্ট বিপ্লবের পরেও তারা ঘুষ, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্য করে আসছেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় সমন্বয়কদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ গোলাম ফারুক।
আগস্ট বিপ্লবের পরেও যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তারা আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর। তাদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণ করা না হলে আদালত ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটির নেতারা।
সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি বলেন, ‘জেলা ও দায়রা জজ গোলাম ফারুকসহ ওই চার বিচারক আওয়ামী লীগ সরকারের মদদপুষ্ট। আদালতের নিয়োগে দুর্নীতি করে আইনমন্ত্রীর এলাকার লোকদের বারবার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। সরকারি বাড়ি থাকা সত্ত্বেও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মণ্ডল আদালতকেই নিজের বাসভবন বানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: তিন দফা দাবিতে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
তিনি বলেন, ‘হাসিনার সময়ে প্রশাসনের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হলেও তার দোসর এই বিচারকদের এখনও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। তাই তারা শহিদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এখনও নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা। তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে আবারও রক্ত দেব। তবু আর অন্যায়-দুর্নীতি হতে দেব না।’
এ বিষয়ে জানতে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জমিরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।