রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (রাকসু) ভোটার তালিকায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবিকে কেন্দ্র করে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয় ভাঙচুর করে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাবি শাখা ছাত্রদলের বিরুদ্ধে।
এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের দফায় দফায় ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বহিরাগতসহ আহত হয়েছেন অন্তত চারজন।
রবিবার (৩১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আসন্ন রাকসু নির্বাচনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিল রাবি শাখা ছাত্রদল।
এসময় তারা ‘জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো’, ‘প্রথমবর্ষের ভোটাধিকার, ছাত্রদলের অঙ্গীকার’, ‘রাকসু আমার অধিকার, তুমি কে বাদ দেওয়ার’, ‘ছাত্রদলের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘প্রথম বর্ষের ভোটাধিকার, দিতে হবে দিতে হবে’, ‘রাকসু ফি দিয়েছি, ভোটার হতে চেয়েছি’, ‘ডাকসু-রাকসু নির্বাচনে, প্রথমবর্ষ ভোট দেবে’, ‘প্রথমবর্ষের ভোটাধিকার, ফকির কে কেড়ে নেওয়ার’—স্লোগান দেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-রাকসু নির্বাচনে প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার শামিল। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এ দাবি মেনে না নেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
এদিকে ছাত্রদলের বিক্ষোভের মধ্যে মনোনয়ন ফরম তুলতে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার তোপের মুখে পড়েছেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তিও হয়।
পরে বেলা ১১টার দিকে সালাউদ্দিন আম্মারের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে ছাত্রদল। এ সময় দফায় দফায় উভয়পক্ষের মাঝে স্লোগান-পাল্টা স্লোগান, ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তিতে অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। দুপুর ২টায় পর্যন্ত থেমে থেমে এ উত্তেজনা পরিস্থিতি অব্যাহত ছিল।
আরও পড়ুন: ৩ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধে পবিপ্রবির কৃষি শিক্ষার্থীদের
সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে ছাত্রদল কার্যালয় ছেড়ে চলে যায়। দুপুরের পরে আবার কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। সালাউদ্দিন আম্মার ও ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে মনোনয়ন ফরম নেওয়া শুরু হয়।
রাকসুর কোষাধ্যক্ষ ও প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান বলেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে। তারা ভায়োলেন্স ঘটানোর চেষ্টা করছে। প্রশাসনকে অবহিত করেছি। এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নেবে। মনোনয়ন ফরম বিতরণের শেষ দিন আজ। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় দুপুরের পর থেকে আবার মনোনয়ন ফরম দেওয়া শুরু হয়।