হামলা
উত্তরায় চাপাতি দিয়ে দম্পতির ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
রাজধানীর উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে চাপাতি দিয়ে হামলা চালানোর ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ফুটপাতের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ওই ঘটনায় জড়িত মোবারক (২৪) ও রবিকে (২১) আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।
ওসি জানান, অভিযুক্তদের বহনকারী মোটরসাইকেল একটি প্রাইভেটকারের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে গ্রেপ্তাররা ওই দম্পতির সঙ্গে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে চালক অজ্ঞাত এক সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে চাপাতি বের করে ওই দম্পতির ওপর হামলা চালায়।
হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ধরে ফেলে এবং মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। চাপাতি হাতে হামলাকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও পুলিশ তাকে একটি চক্রের সদস্য হিসেবে শনাক্ত করেছে।
আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী একজন বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে ছুরিকাঘাতের শিকার কিশোরীর মৃত্যু, হামলাকারী গ্রেপ্তার
৬ ঘণ্টা আগে
কুষ্টিয়ায় ভিডিও ধারণকালে ফটো সাংবাদিকের ওপর ‘হামলা’
কুষ্টিয়ায় ট্রলিচাপায় স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনা নিয়ে লাইভ ভিডিও ধারণকালে স্থানীয় দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার ফটো সংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার ফুলতলা প্রতীতি বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ওই সাংবাদিকের কাছে থাকা ভিডিও ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। ঘটনার পর ইমরান হোসেন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন।
ইমরান হোসেন বলেন, ‘ট্রলিচাপায় স্কুলছাত্রের নিহতের ঘটনা নিয়ে দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভ করার সময় কুষ্টিয়া পৌরসভার কাস্টম মোড়ের হাশেম ডাক্তারের গলির চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী রকি ও আরিফুলসহ আরও ১০-১২ জন আমার ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমার নাক, পিঠ ও মাথা কেটে গিয়ে গেছে।’
এই হামলার একটি ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, হামলার সময় সন্ত্রাসীরা ইমরান হোসেনের কাছে থাকা প্যানাসনিক পিভি-১০০ মডেলের একটি ভিডিও ক্যামেরা ও ক্যামেরার বয়া (মাইক্রোফোন) ছিনিয়ে নেয়।’
হামলার পর অন্য সাংবাদিকরা তাকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুন্সী শাহীন আহমেদ বলেন, ‘ঘটনার পর কুষ্টিয়া মডেল থানায় এজাহার দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো এক অদৃশ্য কারণে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। আসামিদের বাঁচাতে মামলা নিতে বিলম্ব করা হচ্ছে বলে আমার মনে হয়।’
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে ছুরিকাঘাতের শিকার কিশোরীর মৃত্যু, হামলাকারী গ্রেপ্তার
হামলার প্রতিবাদে ও অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া মডেল থানা ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।
কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর ও সাধারণ সম্পাদক আবু মনি জুবায়েদ রিপন বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকের ওপর হামলা সত্যিই নিন্দনীয়। আমরা এই হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি রাখছি। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, ‘আমরা লিখিত এজাহার পেয়েছি। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি মামলা নেওয়ার জন্য বলে দিয়েছি।’
১ দিন আগে
গাজীপুরে হামলা: ঢামেক হাসপাতালে একজনের মৃত্যু
গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাসায় হামলার শিকার কাশেম খান (১৭) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার মৃত জামাল হাজীর ছেলে কাশেম খান। তার লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণখানে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের অতর্কিত হামলায় অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর বাসভবন ভাঙচুরের চেষ্টা করলে তারা দলটির কর্মীদের আক্রমণের শিকার হন।
আরও পড়ুন: অপারেশন ডেভিল হান্টে গাজীপুরে আটক ৪৮ জন
তাদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদের মধ্যে কাশেম আজ মারা যান।
৫ দিন আগে
গাজীপুরে হামলার ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার, ক্ষমা চাইলেন পুলিশ কমিশনার
গাজীপুরের ভাওয়াল রাজবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান। একই সঙ্গে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে রাজবাড়ী সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গিয়ে ক্ষমা চান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) রাতে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি, একই সঙ্গে ব্যর্থতা স্বীকার করছি।’
‘হামলাকারী কাউকে ছাড়া হবে না, প্রতিটি হামলার জবাব দেওয়া হবে। এছাড়া যেসব পুলিশ সদস্য রেসপন্স করতে দেরি করেছেন, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শুনেছি, আমার ওসি দুই ঘণ্টা পর আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। আমি এখানে দাঁড়িয়ে বললাম, তাকে সাসপেন্ড (বরখাস্ত) করব। আমি বলতে চাই, যারা এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আঁতাত করেছে, তাদের পুলিশে চাকরি করতে দেওয়া যাবে না।’
পুলিশ কমিশনার বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে যারা অত্যাচার করেছে, দেশের ওপর জুলুম করেছে, তারা আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে। কিন্তু তাদের কোনো মাথাচাড়া বরদাশত করা হবে না। ইতোমধ্যে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ রাতে চিরুনি অভিযান চালানো হবে। ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফ্যাসিবাদ দমনে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা করা হবে।”
আরও পড়ুন: আজ থেকে গাজীপুরসহ সারা দেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু
৯ দিন আগে
গাজীপুরে আওয়ামী কর্মীদের হামলায় আহত ১৪
গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সকল প্রকার চিহ্ন মুছে দিতে বিভিন্ন স্থাপনা ও নেতা কর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানোর সময়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলার স্বীকার হয়েছেন একদল ছাত্র-জনতা। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১৪ জন।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুর শহরের দক্ষিণখান এলাকায় ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ভাঙচুর চালাতে গেলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতার উপর চড়াও হয় এবং মারধর করেন।
আরও পড়ুন: সম্পত্তিতে হামলা চালালে ফ্যাসিবাদীরা আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের সুযোগ পাবে: প্রধান উপদেষ্টা
এতে অনেকেই আহত হন। পরে তাদের চিকিৎকার জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
হামলার ঘটনা নিশ্চিত করে গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান জানান, হামলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসি আরও জানান, ওই ঘটনা সংশ্লিষ্ট আরও তথ্য সংগ্রহে কাজ করছে পুলিশ।
১০ দিন আগে
সিরাজগঞ্জে প্রয়াত এমপি স্বপনের দুটি বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় সয়দাবাদ পুনর্বাসন এলাকায় সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের প্রয়াত এমপি আওয়ামী লীগ নেতা হাসিবুর রহমান স্বপনের দুটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করে এ বিষয়টি প্রচার করে।
প্রায় ১০ মিনিটের এ ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মিছিল নিয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের পুনর্বাসন এলাকায় ওই দুটি বাড়িতে এ ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের আস্তানা, সয়দাবাদে হবে না—মর্মে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। ভাঙচুর শেষে তারা মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে স্বপনের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ওই এলাকায় তিনটি প্লটে প্রয়াত এমপি স্বপনের তিনটি বাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে একটি একতলা ও একটি দোতলা মিলে দুটি পাকা বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।
প্রয়াত স্বপন ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর আগে এসব বাড়ি তিনি মেয়েদের নামে লিখে দেন। বর্তমানে এসব বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির বলেন, ‘এ ঘটনা লোকমুখে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।’
১০ দিন আগে
সম্পত্তিতে হামলা চালালে ফ্যাসিবাদীরা আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের সুযোগ পাবে: প্রধান উপদেষ্টা
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পত্তিতে হামলা না চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, তাদের সম্পত্তির ওপর হামলা চালালে তারা আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের সুযোগ পাবে এবং তাদের সাজানো গল্প ছড়ানোর চেষ্টা করবে। আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি হলে তা বিশ্বে ভুল বার্তা দেবে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সরকারি বিবৃতিতে এসব কথা জানান।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, (শেখ হাসিনার এ কর্মকাণ্ড) দেশকে তার নিপীড়নের যুগ থেকে পুনরুদ্ধার হতে বাধাগ্রস্ত করছে। অবিলম্বে সম্পূর্ণ আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতে হবে। কোনো অজুহাতে শেখ হাসিনার পরিবার ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ দলের রাজনীতিবিদদের সম্পত্তির বিরুদ্ধে বা কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে আর কোনো হামলা করা যাবে না।
তিনি বলেন, যারা (আওয়ামী লীগ নেতাদের) সম্পত্তির ওপর হামলা চালিয়েছে, এতে তাদের ক্ষোভ বোঝা যায়। কারণ তারা ও তাদের আত্মীয়-স্বজন শেখ হাসিনার শাসনামলে বছরের পর বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সরকার বুঝতে পারে যে, শেখ হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েও তার সন্ত্রাসীদের সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন। তবে এই বাস্তবতা বোঝার পরও, সরকার সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যে, আমাদের অবশ্যই আইন মেনে চলতে হবে। বিশ্বকে দেখাতে হবে যে আমরা আইনের শাসনকে সম্মান করি। আইনের শাসন মেনে চলাই আমাদের নতুন বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য, যা পুরোনো ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে আমাদের আলাদা করেছে। আমাদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ভিত্তিকে দুর্বল করা যাবে না। আইনের প্রতি কোনো অবজ্ঞা নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তিকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
আরও পড়ুন: ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ নিয়ে সরকারের বিবৃতি
ড. ইউনূস বলেন, যেসব নাগরিক শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে জুলাই ও আগস্ট মাসে রুখে দাঁড়িয়েছিল, তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নিজেদের ও বিশ্বের বন্ধুদের সামনে প্রমাণ করতে হবে যে, আমরা ন্যায়বিচারের পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরস্পরের নাগরিক ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইন মেনে চলার বিষয়ে অবিচল। একটি ন্যায়সঙ্গত নতুন বাংলাদেশের পক্ষের সংগ্রামীদের এমন কিছু করা উচিত নয়, যা বর্তমান প্রতিষ্ঠানগুলোর আচরণকে আগের স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে তুলনা করার সুযোগ তৈরি করে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এ বিষয়ে সচেতন। সরকার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সব বাংলাদেশির জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। যদি কেউ দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য উসকানিমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা নেবে। যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী নেতারা দেশকে চরম দুর্দশার মধ্যে ফেলে গেছেন। যতদিন আমরা সজাগ থাকবো এবং নৈতিক উচ্চতা ধরে রাখবো, ততদিন তারা ফিরে আসার কোনো সুযোগ পাবে না। তাদের সম্পত্তির ওপর হামলা চালালে তারা আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের সুযোগ পাবে এবং তাদের সাজানো গল্প ছড়ানোর চেষ্টা করবে। আমরা তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের আওতায় আনছি। সারাবিশ্ব আমাদের সঙ্গে আছে। আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি হলে তা বিশ্বে ভুল বার্তা দেবে।
দেশের সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা যেন এমন একটি দেশ গড়ে তুলি, যেখানে সব বাংলাদেশি নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারে। এজন্য আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হবে। ইতিবাচক পরিবর্তনের পক্ষে গঠনমূলক ও শান্তিপূর্ণ উদ্যোগে নিজেদের শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
১১ দিন আগে
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই লেবাননে ইসরাইলের হামলা
লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকাকে লক্ষ্য করে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েল এসব হামলা চালায় বলে দেশটির জাতীয় সংবাদ সংস্থা (এনএনএ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এনএনএর বরাতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে পূর্ব লেবাননের পূর্বাঞ্চলীয় পর্বতমালার উচ্চতায় এবং পূর্ব লেবাননের বালবেক জেলার একটি এলাকায় একাধিক হামলা চালিয়েছে।
বিমান হামলার আগে, ইসরায়েলি বিমানগুলো পূর্ব লেবাননের হারমেল শহর এবং উত্তর বেকা শহরের উপর দিয়ে অনেক বেশি ও কম উচ্চতায় উড়ছিল। বৈরুত ও এর নিকটবর্তী শহরগুলোতেও ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান দেখা গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও এই হামলার ঘটনা ঘটলো। যুদ্ধবিরতি ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর কার্যকর হয়। এই যুদ্ধবিরতির চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল গাজায় যুদ্ধ শুরুর কারণে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষের অবসান ঘটানো।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে বন্যা ও ভূমিধসে নিহত ৭
চুক্তিতে বলা হয়েছিল যে ইসরায়েল ৬০ দিনের মধ্যে লেবাননের অঞ্চল থেকে সরে আসবে। একই সঙ্গে লেবানন-ইসরায়েলি সীমান্ত এবং দক্ষিণাঞ্চলে লেবাননের সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। এটি নিশ্চিত করে যে লিটানি নদীর দক্ষিণে কোনো অস্ত্র বা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য থাকবে না।
তবে লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২৭ জানুয়ারি ঘোষণা করেছিল যে, দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ছাড়াই প্রাথমিক ৬০ দিনের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে তারা ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী লেবাননে মাঝেমধ্যে হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং দাবি করেছে যে তাদের লক্ষ্য হিজবুল্লাহর সৃষ্ট ‘হুমকি’ নির্মূল করা।
১১ দিন আগে
সিরাজদিখানে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত সৌদি প্রবাসীর মৃত্যু
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত সৌদি প্রবাসী সৈকত মাহমুদ ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয়। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
সৈকত মাহমুদ উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের খালপাড় গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে কাদের বেপারীর সঙ্গে সৈকত মাহমুদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সৈকত মাহমুদ গুরুতর আহত হন। তাকে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে, পরে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করে।
নিহত সৈকত মাহমুদের বড় ভাই জহিরুল হক জহির বলেন, আমার ভাই মাত্র ২০দিন আগে সৌদি আরব থেকে ছুটিতে বাড়ি আসে। কাদের বেপারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ট্রাকচাপায় প্রবাসী যুবকের মৃত্যু
চিত্রকোট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল হুদা বাবুল বলেন, তাদের উভয় পক্ষের বাড়ি একই গ্রামে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনা নিহতের বড় ভাই জহিরুল হক জহির বাদী হয়ে রবিবার রাতে কাদের বেপারীকে ১ নম্বর আসামি করে আরও পাঁচ জনের নাম উল্লেখসহ মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
২১ দিন আগে
বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাদ দেওয়ায় টিআইবির উদ্বেগ
২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দটি রাখা ও বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা নিয়ে সরকার যে বিবৃতি দিয়েছে, তা সময়োপযোগী হলেও যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শুধু তা-ই নয়, পাঠ্যবইয়ের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দিয়ে এনসিটিবি নিজেকে পতিত কর্তৃত্ববাদের দোসর ও পুনর্বাসনকেন্দ্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করে সংগঠনটি।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে টিআইবি।
বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশে টিআইবি বলেছে, জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক সমালোচনাকে মিথ্যাচারের মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীকে বলতে চেয়েছিল— বাংলাদেশে আদিবাসী নেই। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বীকার করতে চায়নি যে, আদিবাসী পরিচয়ের মানদণ্ড কোনো জনগোষ্ঠী কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে কতকাল ধরে বসবাস করছেন— তার ওপর নির্ভর করে না। তারা মানতে চায়নি যে, আদিবাসী হচ্ছেন মূলধারার সংখ্যাগরিষ্ঠের বাইরে এমন জনগোষ্ঠী, যারা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং প্রথাগত ও প্রাকৃতিক পরিবেশ-নির্ভর জীবনাচরণের ধারা বহাল রেখে নিজেদের আদিবাসী হিসেবে পরিচিত থাকতে চায়।
দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনটি মনে করে, আদিবাসী পরিচয়ের এই ব্যাখ্যা যে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত, তা না জানা এনসিটিবির জন্য লজ্জাজনক। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে কোনোপ্রকার বিচার-বিবেচনা না করেই এক পক্ষের আবদারের দোসর হওয়া পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের প্রতিফলন ছাড়া আর কিছুই না।
একইসঙ্গে তা নজিরবিহীন রক্তপাত ও প্রাণহানির বিনিময়ে অর্জিত অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে শুধু সাংঘর্ষিকই নয়, প্রতারণাও বটে।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত গতকালের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অবস্থান স্পষ্টভাবে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে যে বাংলাদেশে সহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ এবং ধর্মান্ধতার কোনো স্থান নেই। যারা ঐক্য, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলার বিনষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারের এ বার্তাকে সময়োপযোগী হিসেবে স্বাগত জানাই।’
‘তবে উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, এতে দৃশ্যত সচেতনভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পরিচয় হিসেবে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি। যা জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত প্রধান উপদেষ্টার গত ২৫ আগস্টের ভাষণে আদিবাসী পরিচয়বিষয়ক শব্দচয়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যদি এটি সচেতনভাবেই ঘটে থাকে, তাহলে কি এর মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী এজেন্ডা ও বয়ানের প্রতিফলন ঘটেছে বলে ধরে নিতে হবে না?’
আদিবাসী পরিচয়ের বস্তুনিষ্ঠ ব্যখ্যা ও এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চর্চার অনুসরণে অবস্থান নির্ধারণের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আদিবাসী পরিচয় ব্যবহারের বিরোধী অন্য সব অংশীজনদের প্রতিও আমাদের একই আহ্বান।’
‘বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন শুধু ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের মাধ্যমে সম্ভব নয়, কর্তৃত্ববাদ চেতনা ও এজেন্ডা এবং তার বলপূর্বক চাপিয়ে দেয়ার চর্চার আমূল পরিবর্তন অপরিহার্য।’
৩১ দিন আগে