হামলা
মাজারে হামলা বন্ধের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বিভিন্ন মাজারে হামলা হচ্ছে। তাই মাজারে হামলা বন্ধের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে দুর্গাপূজার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শাহ পরানে যে হামলা হয়েছে সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে কোনো ধরনের যেন হামলা না হয়, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধের মাধ্যমে কারাগারের বেশিরভাগ সমস্যার সমাধান সম্ভব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
উপদেষ্টা বলেন, এবার সারাদেশে পূজামণ্ডপ হবে ৩২ হাজার ৬৬৬টি। এরমধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫৭টি এবং ঢাকা উত্তর সিটিতে ৮৮টি।
তিনি আরও বলেন, গত বছর পূজামণ্ডপ ছিল ৩৩ হাজার ৪৩১টি। তবে এবার পূজামণ্ডপের সংখ্যা আরও বাড়বে। পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা পুরো তালিকাটা এখনও দিতে পারেননি।
উপদেষ্টা বলেন, পূজামণ্ডপগুলোতে কীভাবে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
এছাড়া নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন এবং দুষ্কৃতকারীদের অশুভ তৎপরতা রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ। এবারের স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগটি ভিন্ন হবে। বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিকদের মধ্য থেকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে।
তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব পালনের সময় বেঁধে দেওয়া হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের সংখ্যা (প্রতিটি মণ্ডপে) দিনে ২ জন ও রাতে ৩ জন থাকতে হবে। আজান ও নামাজের সময় বাদ্যযন্ত্র-মাইক বন্ধ রাখতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মাসহ অন্যান্য নেতারা।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
বাংলাদেশে সব বিদেশি নাগরিকের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আদালত প্রাঙ্গণে হিরো আলমের উপর হামলা, কান ধরে ওঠবস
বগুড়ার আদালত প্রাঙ্গণে আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম হামলার শিকার হয়েছেন। এসময় হামলাকারীরা মারধরের পর তাকে কান ধরে ওঠবস করান।
রবিবার (৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
ওবায়দুল কাদের, বগুড়ার সাবেক দুইজন ডিসি, একজন ইউএনওসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করতে গিয়েছিলেন হিরো আলম। তিনি মামলা করে ফেরার সময় হামলার শিকার হন।
আরও পড়ুন: একাধিক ত্রুটির কারণে হিরো আলমের মনোনয়ন বাতিল
তবে হামলার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের দায়ী করেছেন হিরো আলম।
তিনি বলেন, হামলার সময় তারা বলেছেন- আমি নাকি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গালমন্দ করেছি। কিন্তু আমি কখনো তারেক জিয়াকে নিয়ে গালমন্দ করিনি। যদি গালি দেওয়ার কোনো ফুটেজ দেখাতে পারেন তাহলে জুতার মালা গলায় দিয়ে ঘুরে বেড়াব।
বগুড়া জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী নাজমুল হুদা পপন বলেন, হিরো আলমের ওপর হামলার সঙ্গে বিএনপি বা কোনো অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী জড়িত নয়। হিরো আলম আওয়ামী লীগের এজেন্ট।
আরও পড়ুন: হিরো আলমের উপর ফের হামলার অভিযোগ
তিনি বলেন, এর আগে হিরো আলম বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। আওয়ামী লীগের সময় জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
কারখানাগুলোকে সহিংসতা-হামলা থেকে রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর: অধ্যাপক ইউনূস
বাংলাদেশের শিল্প নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তার সরকার কারখানাগুলোকে সহিংসতা ও হামলা থেকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
ইউনূস বলেন, ‘আমাদের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে এই শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া।’
আরও পড়ুন: অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের শিল্প প্রবৃদ্ধিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে ব্যবসায়ী নেতাদেরকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমরা এই শিল্পকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে চাই।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লব দেশে আশার নতুন যুগের সূচনা করেছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিল্প, অর্থ ও উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ব্যবসায়ী নেতারা পোশাক ও ওষুধ খাতে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, তারা সন্দেহ করেন যে দেশের বাইরে বসবাসরত গোষ্ঠীসহ বহিরাগতদের প্ররোচনায় কারখানাগুলো ভাঙচুর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আপনার সহমর্মিতা ও উপলব্ধি গভীরভাবে স্পর্শ করেছে: ইউএই প্রেসিডেন্টকে ড. ইউনূস
শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, কারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে আরও ক্রয়াদেশ পাওয়ার প্রচেষ্টায় শ্রম সংস্কার গ্রহণের জন্য শিল্প নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করার বড় সুযোগ আমাদের রয়েছে। আমাদের শ্রম আইনকে আইএলও স্ট্যান্ডার্ডে উন্নীত করতে হবে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এবং দেশের উৎপাদনকারীদের আরও ক্রয়াদেশ(অর্ডার) দিতে আগ্রহী।
বৈঠকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসের এজাজ বিজয় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: ইউএনএইচসিআরের সহায়তা চাইলেন অধ্যাপক ইউনূস
আদালতে যাওয়ার সময় কারো ওপর হামলা সমর্থনযোগ্য নয়: আইন উপদেষ্টা
আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রীসহ যেসব আসামির ওপর হামলা হয়েছে বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, আদালত চত্বরে আসামিদের ওপর হামলা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। আমি দু-তিনটা বড় দলের সঙ্গে কথা বলেছি যে তাদের কোনো কর্মী থাকলে যাতে থামানোর চেষ্টা করা হয়। দলগুলোও বলেছে যে তাদের যথেষ্ট পরিষ্কার নির্দেশনা আছে। তারপরও মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া থাকলে (দলগুলো বলেছে) তাদের কিছু করার নেই। তারা আরও চেষ্টা করবেন।
আরও পড়ুন: জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশল: আইন উপদেষ্টা
বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রনালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রী দীপু মনিসহ যেসব আসামিদের ওপর হামলা হয়েছে, এ নিয়ে জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। আপনাদের কী মনে আছে, আপনাদের একজন অগ্রজ সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে কীভাবে নির্মমভাবে রক্তাক্ত করা হয়েছিল? তখন আপনারা কী এই প্রশ্নটি করতে পেরেছিলেন? আপনাদের টিভিতে দেখাতে পেরেছিলেন? একটি মন্ত্রিসভাকে জনগণের শত্রুর পর্যায়ে নিয়ে আসার দায় তো সাবেক সরকারের।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) মন্ত্রিসভার সদস্যদের এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল, একটা জনরোষ তৈরি হয়েছে। মাহমুদুর রহমানের ওপর তো জনরোষ ছিল না, তাকে রক্তাক্ত করা ছিল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এভাবে অনেক সাংবাদিককে অপদস্ত করা হয়েছিল। আমি নাম নেব না। আপনারা তো রিপোর্টই করতে পারতেন না। আমি নাম নেব না, আপনাদের (সাংবাদিক) কারো কারো সরাসরি ইন্ধন ছিল এসব কাজে। এখন আপনারা প্রশ্ন তুলেছেন, আমি মনে করি আদালতে যাওয়ার সময় কারো ওপর হামলা সমর্থনযোগ্য না।’
আরও পড়ুন: আশা করি সাকিবকে গ্রেপ্তার করা হবে না: আসিফ নজরুল
আইন উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫ বছরে যারা চাকরি হারিয়েছেন, নিরাপত্তার ভয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন, জীবিকা হারিয়ে ঢাকা শহরে লুকিয়ে থেকেছেন, গুম-হত্যার শিকার পরিবার তাদের ক্ষোভ, ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। তবে সেই বহিঃপ্রকাশকে সমর্থন করছি না, প্রশ্নই আসে না। পুলিশ প্রশাসন বাধা দিলে বা শক্তিপ্রয়োগ করলে তখন তো বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নেবে।
পুলিশ খুব ডিমরালাইজড (মনোবলহীন) হিসেবে আছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটা সাবেক সরকারের অবদান। তারা পুলিশকে এমন একটি গণশত্রু বাহিনীতে পরিণত করেছিল, পুলিশ সাহস করে তাদের বাধা দিতে পারে না। তখন বিক্ষুব্ধরা বলে ‘তোরা তো উনার (হাসিনার) পুলিশ।’ তারপরেও আমরা বিভিন্ন কৌশলে চেষ্টা করছি এ ক্রাউডটা (ভিড়) কীভাবে কমাতে!
নির্বাচন অনুষ্ঠানে ৯০ দিনের একটি বাধ্যবাধকতা আছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমন এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রথমে অনুধাবন করা উচিত, তাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা কী ছিল! ভুয়া নির্বাচন করা যাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ছিল, তারা আগে নিজেরটা বিবেচনা করুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের একটা লেখা দেখলাম, তিনি আগের সরকারকে স্বৈরাচারী-অগণতান্ত্রিক বলেছেন, তার আগে আত্মসমালোচনা করা উচিত, এ স্বৈরাচারী সরকার এসেছে, কার অভিভাবকত্বে? কাজেই তার কথায় আমাদের পরিচালিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফরাসি, কানাডা ও মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
তিনি বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট আইন বিশেষজ্ঞরা আছেন, আমরা সবসময় সবকিছু সবদিকে দৃষ্টি রেখেই করব। আমরা বিশ্বাস করি, ডকট্রিন অব নেসেসিটি বলে একটা কথা আছে। সংবিধান পরিবর্তন কীভাবে হয়েছিল, সেটা নিয়ে আদালতে মামলা আছে। এখন এ বিষয়ে মতামত দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
চট্টগ্রামে থানায় হামলা ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলা, আসামি ৪০ হাজার
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাত অন্তত ৪০ হাজার মানুষকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাতে সিএমপি কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাশ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম ওবায়েদুল হক বলেন, গত ৫ আগষ্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে থানায় আক্রমণ করে জনতা। হামলার সময় থানার আসবাবপত্র লুট, যানবাহন ভাঙচুর, থানায় অগ্নিসংযোগ ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সাবেক এমপি এম এ লতিফ গ্রেপ্তার
এ ঘটনায় দুবৃর্ত্ত ও অগ্নিসংযোগকারীদের বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের বিবিধ ধারায় বিস্ফোরক আইনের ১৯০৮ এর ৩/৬ ধারা ও বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সনের ১৫(৩)/২৫-ডি ধারায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মিছিল শেষে হাজার হাজার লোক জড়ো হয় কোতোয়ালি থানার সামনে। এ সময় দুবৃর্ত্তরা থানায় হামলা চালায়। পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীদের নিবৃত্ত করতে চাইলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
এ সময় দুর্বৃত্তরা থানার গেট ভেঙে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও থানার বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
এছাড়াও একই দিন সিএমপির ১৬টি থানার মধ্যে ৮টি থানায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং আগুন দেওয়া হয়। এ সব ঘটনায় পুলিশের থানা ভবনের পাশাপাশি অন্তত ৪৫টি বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন থানা থেকে অন্তত ৫০০ অস্ত্র এবং ১২ হাজারেরও বেশি গুলি লুট করা হয়। অস্ত্র, গুলি যাবাহন ছাড়াও থানা ভবনের অবকাঠামো পুড়ে অন্তত ২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কলেজছাত্র হত্যায় হাসিনা-নওফেলসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার খবর অতিরঞ্জিত: মোদির সঙ্গে ফোনালাপে ইউনূস
সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার খবর 'অতিরঞ্জিত' করা হয়েছে।
একই সঙ্গে তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সংখ্যালঘু সুরক্ষার বিষয় নিয়ে সরেজমিনে রিপোর্ট করার জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানান।
শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোন আলাপে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের সঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ
প্রধান উপদেষ্টা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেছেন, তার সরকার সংখ্যালঘুসহ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টেলিফোন আলাপে সংখ্যালঘুদের রক্ষার বিষয়টি উত্থাপন করলে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশের সরকার প্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই টেলিফোনে কথোপকথন এবং এক্স-এ পোস্ট করা বার্তার জন্য মোদিকে ধন্যবাদ জানান অধ্যাপক ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তিনি ভারতীয় নেতা ও ভারতীয় জনগণকে অভিনন্দন জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নতুন সরকারকে শুভেচ্ছা জানান এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে মোদি বলেন, তিনি তাকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন।
তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তার নেতৃত্ব বাংলাদেশের মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।
ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং সারাদেশে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি ১৭ আগস্ট নয়াদিল্লিতে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠেয় তৃতীয় ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটে যোগ দিতে ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনের ফলে তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। এটি বাংলাদেশের 'দ্বিতীয় বিপ্লব' এবং তার সরকার ছাত্র-জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে।
ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় তাকে অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মোদিকে ইউনূসের ফোন, বাংলাদেশের হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস
রবিবার কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় নরসিংদীতে মানববন্ধন
নরসিংদীর রায়পুরায় উপজেলায় দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও রায়পুরা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরের ওপর হামলা ও গুলির ঘটনায় মানববন্ধন করেছে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত থেকে এই হামলার নিন্দা জানান।
আরও পড়ুন: কোটা বাতিলের দাবিতে বাকৃবিতে আবারও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা হলো সমাজের দর্পন। সকল অন্যায় ও দুর্নীতি তাদের কলমের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরেন তারা। সম্প্রতি সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে রায়পুরা উপজেলা। সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরলে সাংবাদিকদের ওপর চালানো হয় সন্ত্রাসী হামলা। দেশ রুপান্তরের সাংবাদিক মনিরের ওপর তেমনটাই হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, এখন থেকে আর কোনো সাংবাদিকদের ওপর হামলা মেনে নেওয়া হবে না। পাশাপাশি মনিরের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় না আনা হলে সুশীল সমাজকে সঙ্গে নিয়ে জেলার সাংবাদিক মহল দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন- নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, নরসিংদী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন রাজু, সাংবাদিক হলধর দাস, মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, মো. ফারুক মিয়া, মনজিল-এ-মিল্লাত, সুমন বর্মণ, তোফায়েল আহমেদ স্বপন, শামীম মিয়াসহ শতাধিক সাংবদিক।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দুপুরে মনিরুজ্জামান মনির রায়পুরা উপজেলার শ্রীরামপুর বাজার থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে উপজেলা পরিষদে ফিরছিলেন। এসময় শ্রীরামপুর বাজারের পাশে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা করে।
আরও পড়ুন: ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সিলেটে মানববন্ধন
পেনশন স্কিম: বাকৃবিতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের মানববন্ধন
সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে হামলা, বেরিয়ে গেছে সব হাজতি-কয়েদি
সাতক্ষীরা জেলা কারাগার ভেঙে হাজতি ও কয়েদিরা বেরিয়ে গেছে।
সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: শেরপুর জেলা কারাগার ভাঙল দুর্বৃত্তরা, ৫০০ বন্দির পলায়ন
এসময় তারা কারারক্ষীদের জিম্মি করে জেলখানার চাবি নিয়ে জেলখানা এলাকায় সব আলো নিভিয়ে দেয়।
এরপরেই সব হাজতি ও কয়েদিরা বেরিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী জানায়, সন্ধ্যার পর জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে আসামিদের বের করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। তবে কতজন হাজতি ও কয়েদি সেখান থেকে বেরিয়ে গেছে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান জানাতে পারেননি পুলিশ সুপার।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী-আন্দোলনকারীদের তারেক রহমানের অভিনন্দন
রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় দেশবাসীর প্রতি আহ্বান সারজিস আলমের
চট্টগ্রামে বিএনপির ৫ নেতার বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ
চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলার এক ঘণ্টা পর বিএনপির চার নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার রাত ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেহেদীবাগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, পাঁচলাইশে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পূর্ব গেটের কাছে নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও বাদশা মিয়া রোডে সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের বাসায় হামলা চালিয়ে আগুন দিয়েছে।
এছাড়াও চট্টেশরী রোডে বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও মীর হেলালের বাসায় হামলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো এই হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। যদিও আওয়ামী লীগ তা অস্বীকার করেছে।
নগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে বাদশা মিয়া রোডে ড. শাহাদাত হোসেনের বাসায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। পার্কিংয়ে থাকা অন্তত ৭ থেকে ৮টি গাড়িতে আগুন দেয়।
পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাঁচলাইশে মেডিকেলের পূর্বগেটে নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাসায় এবং রাত পৌনে নয়টায় মেহেদীবাগে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাসায় হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন ইদ্রিস আলী।
এসব হামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) তারেক আজিজ বলেন, এসব বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী নওফেল ও সিটি মেয়র রেজাউলের বাসভবনে হামলা এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
চাঁদপুরে 'রিমেমবারিং আওয়ার হিরোজ' কর্মসূচিতে হামলায় আহত ১০
চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ডে পূর্ব নির্ধারিত 'রিমেম্বিং আওয়ার হিরোজ' কর্মসূচি পালন করার সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকাল ৩টা থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। তবে পুলিশের সহায়তায় ব্যস্ততম সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
তারা বলছেন, হঠাৎ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র ও যুব সংগঠন ছাত্র ও যুবলীগের সদস্যরা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালালে অন্তত ১০ জন আহত হয়।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারে রাবি শিক্ষকদের বাধা
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় ইউএনবি বলেন, শিক্ষার্থীরা কিছু দাবি নিয়ে রাস্তায় নামে। কিন্তু তাদের রাস্তা থেকে দূরে অবস্থান করে কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়েছে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হামলার বিষয়টি তার জানা নেই।
আরও পড়ুন: ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তি পেলেন কোটা আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক