এডিবি
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী এডিবি
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষা খাতে আরও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, উচ্চ শিক্ষাকে কর্মমুখী করতে ও শিক্ষার্থীদের কর্ম সংশ্লিষ্ট যোগ্যতা ও দক্ষতা বাড়াতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাতিমা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানান।
আরও পড়ুন: ২ জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি ব্যবস্থাপনায় ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন এডিবির
ফাতেমা ইয়াসমিন বলেন, এডিবির সবচেয়ে বড় সহযোগী রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
এই প্রতিনিধি দলে আরও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন- এডিবির বাংলাদেশ মিশনের কান্ট্রি ডাইরেক্টরএডিয়েনন গিনটিং, এডিবি অফিসের পাবলিক সেক্টর ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্সের সিনিয়র ডাইরেক্টর নিয়াজি, এডিবির প্রাইভেট সেক্টর অপারেশন ডিপার্টম্যান্টের ডাইরেক্টর আসিফ সারদ চিমা, এডিবির ডেপুটি কান্ট্রি ডাইরেক্টর জিয়াংবো নিং, এডিবির কান্ট্রি অপারেশন হেড না উন কিম, এডিবির এক্সটার্নাল রিলেশনের টিম লিডার গোবিন্দ বার প্রমুখ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশে সহযোগিতা বাড়াবে এডিবি: পরিবেশমন্ত্রী
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এডিবির আরও সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশে সহযোগিতা বাড়াবে এডিবি: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় তহবিলের খুবই প্রয়োজন বাংলাদেশের এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশে সহযোগিতা বাড়াবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
রবিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাতিমা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় জলবায়ু মোকাবিলায় ৯ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে অবকাঠামো উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষার জন্য সরকারের ৩.৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ রোধে ২০ বছরের পুরোনো বাস প্রত্যাহার করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বৈঠকে বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিংও ছিলেন।
অভিযোজন প্রচেষ্টায় বিনিয়োগে বেসরকারি খাতের অনীহার কথা স্বীকার করে সাবের অভিযোজন কর্মসূচি নগদীকরণ এবং স্থানীয়ভাবে নেতৃত্বাধীন উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর জোর দেন।
এছাড়াও আন্তঃসীমান্ত বায়ু দূষণের বিষয়টি তুলে ধরেন পরিবেশমন্ত্রী। যা বাংলাদেশের বায়ু দূষণের ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী। এর মোকাবিলার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
ডেল্টা প্ল্যান, মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান ও ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে এডিবির দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাতিমা ইয়াসমিন।
তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে এডিবির দৃঢ় অংশীদারিত্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় রূপান্তরমূলক প্রকল্প গ্রহণে এডিবির নিবেদনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মোট ৯.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের মধ্যে এডিবি বাংলাদেশের জন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিশেষ করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রতি তার গভীর প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
আরও পড়ুন: নদীর দখল ও দূষণমুক্ত করতে একযোগে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এডিবির আরও সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে আরও বেশি সহায়তা প্রত্যাশা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার গণভবনে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (সেক্টর ও থিমস) ফাতিমা ইয়াসমিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন। সরকার গ্রামীণ জনগণের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।'
আরও পড়ুন: ২ জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি ব্যবস্থাপনায় ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন এডিবির
সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী এডিবি কর্মকর্তাকে জানান, তার সরকার দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। কারণ এটি শিল্পায়নের সম্প্রসারণে এবং আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।
জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, কৃষি, নদী খনন ও পুনরুদ্ধারের মতো খাতগুলোর কথা উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব খাতে ম্যানিলাভিত্তিক এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সহায়তা বাড়াতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী এডিপিকে আরও বেশি জনকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান, যাতে অধিক সংখ্যক মানুষ উপকৃত হতে পারে।
বাংলাদেশকে এডিবির শীর্ষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত দেশ উল্লেখ করে ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাতিমা বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাঁচবার দক্ষিণ এশীয় এই দেশের জন্য সহায়তা বাড়িয়েছে আঞ্চলিক ঋণদাতা এ সংস্থা।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, এডিবি জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, মানবিক ও সামাজিক উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি নদী পুনরুদ্ধার, নদীভিত্তিক পর্যটন, বিনোদন কেন্দ্র এবং সেচ কেন্দ্রিক প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী।
আরও পড়ুন: ঢাকায় জ্বালানি সরবরাহ বাড়াতে ১৬০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে এডিবিতে যোগ দেওয়ার আগে ফাতিমা বাংলাদেশের অর্থ বিভাগে সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সৌজন্য সাক্ষাতে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অগ্রাধিকার সহায়তা হিসেবে এডিবির কাছ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ
২ জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি ব্যবস্থাপনায় ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন এডিবির
বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এডিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকল্পটির মাধ্যমে ওই অঞ্চলের ছয় লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জলবায়ু-সহনশীল বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ (এফসিডিআই) ব্যবস্থা চালু করবে এবং লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ হ্রাস করবে।
এটি এফসিডিআই অবকাঠামো শক্তিশালী করতে এবং চারটি উপ-অববাহিকায় নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য প্রাকৃতিকভাবে সমাধান করবে।
প্রকল্পটি সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থার জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং অন্যান্য কমিউনিটি অবকাঠামো নির্মাণ করবে।
প্রকল্পটি স্থানীয় মালিকানা বৃদ্ধি এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে অংশগ্রহণমূলক পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন: স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের বৈঠক
এটি সুবিধাগুলোর নকশা, নির্মাণ এবং পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে পানি ব্যবস্থাপনা গোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে এবং যৌথ ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।
নারী সদস্যপদকে লক্ষ্য করে চারটি উপপ্রকল্প এলাকায় পানি ব্যবস্থাপনা সংগঠন গঠনে সহায়তা বাড়ানো হবে।
প্রকল্পটি পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় উন্নয়ন, পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম তত্ত্বাবধান এবং এর কার্যক্রমে জলবায়ু অভিযোজন সমন্বিত করতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচকের ভিত্তিতে জলবায়ু ঝুঁকির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশ চরম আবহাওয়া এবং ধীরগতির জলবায়ু ঘটনাগুলোর ক্রমবর্ধমান পুনরাবৃত্তি এবং তীব্রতার মুখোমুখি হচ্ছে।
কার্যকর অভিযোজন ব্যবস্থা ছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনশীলতা এবং গ্রামীণ সম্প্রদায়গুলো, বিশেষত নারীরা, যারা তাদের জীবিকার জন্য জলবায়ু সংবেদনশীল কৃষি অনুশীলন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভর করে তাদের প্রভাবিত করে এমন চরম ঘটনাগুলোর কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটি কৃষি মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশ হারাতে পারে।
এডিবির সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট পুষ্কর শ্রীভাস্তভা বলেন, প্রকল্পটি এডিবির অর্থায়নে সাউথওয়েস্ট এরিয়া ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্সেস প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় অর্জিত অর্জনকে টেকসই করবে, যা কৃষি উৎপাদন ও কমিউনিটি অবকাঠামোর উন্নতি এবং গ্রামীণ পরিবারের আয় বৃদ্ধি করেছে।
এডিবির এই অতিরিক্ত সহায়তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতা আরও জোরদার এবং আয় বৃদ্ধি ও টেকসই জীবিকার ব্যবস্থা করবে। বিশেষ করে নারী ও অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য এবং দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্য হ্রাস করবে এই সহায়তাটি।
আরও পড়ুন: শিক্ষার মান উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস এডিবির
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের বৈঠক
চাহিদা, এডিবির পোর্টফোলিওর মূল বিষয়গুলো চিহ্নিতকরণ এবং মন্ত্রণালয়কে আরও নিবিড়ভাবে সহায়তা করার লক্ষ্যে আগামী তিন বছরের জন্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিনিধিদল।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল। সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: উজবেকিস্তানের ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলায় কী ধরনের প্রকল্প নেওয়া সম্ভব, আন্তঃসম্পদের সঠিক ব্যবহারের জন্য পৌরসভা বন্ড চালুকরণের সম্ভাব্যতা, গ্রামীণ পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নতকরণ, নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিনিয়োগ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এছাড়াও রাজধানী ঢাকার চারপাশে নদীগুলোর নাব্য রক্ষা এবং নৌ যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় নদীর দূষণ, দখল ও নাব্য রক্ষায় প্রকল্পের সম্ভাব্যতা নিয়ে মত বিনিময় হয়।
বৈঠকে পরামর্শক দলে ছিলেন- সাউথ এশিয়ার ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক তাকেও কনিশি, এডিবির বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিংসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর প্রধানরা।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে একযোগে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে: জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এডিবি চলমান দ্রুত নগরায়ন এবং মৌলিক নগর অবকাঠামোর জন্য অগ্রাধিকার বিবেচনা করে বড় শহরগুলোতে জল সরবরাহ এবং স্যানিটেশন (বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) এবং শহরগুলোকে আরও বাসযোগ্য করে তোলার জন্য সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে বৈঠকে জানানো হয়। মডেল শহর গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় এডিবির আগ্রহ রয়েছে বলে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক জলবায়ু সমঝোতাবিষয়ক অ্যাম্বাসেডর স্টেফান ক্রুজাটের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপে এবং ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (এএফডি) বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন কার্যক্রমের বিস্তারিত আলোচনা শেষে এ সম্পর্কিত প্রকল্পে বিনিয়োগে ফ্রান্সের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার বিভাগের তিনটি প্রকল্পে ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এএফডি) অর্থায়ন করেছে, যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৪১৫ দশমিক ০৯ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: নয়া দিল্লিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জয়শঙ্করের সঙ্গে আজ বৈঠক
শিক্ষার মান উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস এডিবির
বাংলাদেশের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার মান উন্নয়নে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরে মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আশ্বাস দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জলবায়ু অগ্রাধিকার সমর্থনে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
এডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, কারিগরি ও সাধারণ ধারার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার গতানুগতিক শিক্ষাক্রমের পরিবর্তে একটি দক্ষতা নির্ভর ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণভিত্তিক শিক্ষাক্রম চালু করেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় জ্বালানি সরবরাহ বাড়াতে ১৬০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
তিনি আরও বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার চাহিদা মোকাবিলা করে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর শিক্ষণ-শিখন অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে এডিবি ভূমিকা রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও উন্নয়নশীল এশিয়ায় বলিষ্ঠ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় জনসংখ্যাকে মানবসম্পদে রূপান্তর করতে নতুন শিক্ষাক্রম সহায়ক হবে।
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও উন্নয়নশীল এশিয়ায় বলিষ্ঠ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির
ঢাকাএশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৭ শতাংশে উন্নীত করেছে। পাশাপাশি বলেছে, ভারতের অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স প্রত্যাশার চেয়ে শক্তিশালী। ২০২৪ সালের পূর্বাভাস ৬ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও উন্নয়নশীল এশিয়ার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আশাব্যঞ্জক বলেও উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের পূর্বাভাসে নিম্নমুখী পরিবর্তন সত্ত্বেও ২০২৪ সালের জন্য দক্ষিণ এশিয়া উপঅঞ্চলের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ শতাংশে বজায় রাখা হয়েছে। উপঅঞ্চলের অন্যান্য অর্থনীতির জন্য ২০২৪ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রয়েছে।
উন্নয়নশীল এশিয়ার জন্য ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের পূর্বে অনুমান করা ৪ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সংশোধনের জন্য শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে দায়ী করা হয়। যা ২০২৪ সালের জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৮ শতাংশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অগ্রাধিকার সহায়তা হিসেবে এডিবির কাছ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ
উন্নয়নশীল এশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা আগের বছরের ৪ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে এই বছর সামঞ্জস্যযুক্ত ৩ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। যা ২০২৪ সালে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে সামান্য বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যালবার্ট পার্ক বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং বৈশ্বিক পরিবেশ সত্ত্বেও, উন্নয়নশীল এশিয়া শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করে চলেছে। অঞ্চলটি ধীরে ধীরে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনছে। যাইহোক, উচ্চ বৈশ্বিক সুদের হার থেকে শুরু করে এল নিনোর মতো জলবায়ু-সম্পর্কিত ইভেন্ট পর্যন্ত ঝুঁকি অব্যাহত রয়েছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারগুলোর জন্য সতর্ক থাকা এবং তাদের অর্থনীতি স্থিতিশীল এবং প্রবৃদ্ধি টেকসই তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
সম্ভাব্য নেতিবাচক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উন্নত অর্থনীতিতে দীর্ঘায়িত উচ্চ সুদের হার, সম্ভবত আর্থিক অস্থিতিশীলতার দিকে পরিচালিত করে। এডিবি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এল নিনো এবং ইউক্রেনে চলমান রুশ আগ্রাসনের মতো ঘটনা থেকে সরবরাহ ব্যাহত হলে জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন করে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হতে পারে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জলবায়ু অগ্রাধিকার সমর্থনে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
জলবায়ু অগ্রাধিকার সহায়তা হিসেবে এডিবির কাছ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ
জলবায়ু সহনশীল অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অর্জনে প্যারিস চুক্তির জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ২০২৩-২০৫০ এবং জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) ২০২১ হালনাগাদ বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলারের নীতিভিত্তিক ঋণ স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং নিজ নিজ পক্ষে ঋণ চুক্তিতে সই করেন।
আরও পড়ুন: নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
এই সহায়তা ৭০০ মিলিয়ন ডলারের জলবায়ু সহনশীল অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রথম উপকর্মসূচি। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সবেচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি; যার বার্ষিক গড় ক্ষতি প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেন, 'এই অঞ্চলের জলবায়ু ব্যাংক হিসেবে এডিবি বাংলাদেশের জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা জোরদার, স্বল্প কার্বন অর্থনীতিতে রূপান্তর, গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাস এবং সরকারের জলবায়ু কার্যক্রমে লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তির মূলধারায় বাংলাদেশের প্রগতিশীল পদক্ষেপে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ম্যানিলাভিত্তিক আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক বলেছে, এই কর্মসূচি জলবায়ু অর্থায়নকে একত্রিত করার জন্য সক্রিয় প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতিগত পরিবেশ তৈরি করবে। এটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এজেন্ডায় জলবায়ু কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেবে এবং কৃষি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবহন ও অবকাঠামো, নগর উন্নয়ন ও জ্বালানিসহ জলবায়ুবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কারে সরকারকে সহায়তা করবে।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সরকারের জলবায়ু অগ্রাধিকারের সার্বিক বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়।
সম্প্রতি কপ-২৮-এ উপস্থাপিত বাংলাদেশ জলবায়ু ও উন্নয়ন অংশীদারিত্ব বাস্তবায়নে এই কর্মসূচি সরকারকে নিবিড়ভাবে সহায়তা করবে।
প্রোগ্রামটি সরকারি পরিকল্পনা ও সম্পদ বরাদ্দের ক্ষেত্রে জলবায়ু অগ্রাধিকারকে মূলধারায় আনতে এবং সবুজ বন্ড ও টেকসই অর্থায়ন নীতির মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়নকে একত্রিত করতে সহায়তা করে।
সেক্টরাল পর্যায়ে, প্রোগ্রামটি জলবায়ু-স্মার্ট ও জলবায়ু সহনশীল কৃষি অনুশীলনগুলো বিশেষত নারী কৃষকদের পক্ষে প্রচার করে। একই সঙ্গে সৌর সেচ পাম্পের অভিযোজন, জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো নকশা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের অভিযোজন ও গণপরিবহন বহরে বৈদ্যুতিক বাস প্রবর্তনের জন্য নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রবর্তন করে।
এডিবি শহুরে বন্যা কমাতে জলবায়ু সহনশীল নগর কর্মপরিকল্পনা ও পৌরসভাগুলোর জন্য উন্নত নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রচারে সহায়তা করে।
২০২১ সালের অক্টোবরে এডিবি ঘোষণা করে, তারা ২০১৯ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোতে জলবায়ু অর্থায়ন ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি বাড়িয়েছে। এটি নতুন, জলবায়ুকেন্দ্রিক প্রযুক্তিগুলোতে প্রবেশাধিকার প্রসারিত করবে এবং জলবায়ু অর্থায়নের বেসরকারি মূলধনকে একত্রিত করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জলবায়ু অগ্রাধিকার সমর্থনে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ১.০৮ বিলিয়ন ডলার যোগ হতে পারে
বাংলাদেশে জলবায়ু অগ্রাধিকার সমর্থনে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) জলবায়ুকেন্দ্রিক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অর্জনের জন্য শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) প্যারিসে তার জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা, ২০২৩-২০৫০ এবং জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) ২০২১ হালনাগাদ বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলার নীতিভিত্তিক ঋণ (পিবিএল) অনুমোদন করেছে।
ম্যানিলাভিত্তিক আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংকটি বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ, যেখানে বার্ষিক গড় ক্ষতি প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার।
এই ঋণ হলো ৭০০ মিলিয়ন ডলার জলবায়ু স্থিতিস্থাপক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রথম সাবপ্রোগ্রাম।
এডিবি জানায়, এই ঋণ বাংলাদেশকে তার জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা শক্তিশালী করতে, কম কার্বন অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে, এর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করতে এবং সরকারের জলবায়ু কর্মে মূলধারার লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তিতে সহায়তা করবে।
এডিবি’র প্রিন্সিপাল পাবলিক ম্যানেজমেন্ট ইকোনমিস্ট আমিনুর রহমান বলেন, ‘জলবায়ুর প্রভাব বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচনকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। জলবায়ু কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে অর্থায়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এডিবি এই অঞ্চলের জলবায়ু ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশকে তার প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তার উন্নয়নে এফএও ও ইআরডির ৪ প্রকল্প চুক্তি সই
তিনি আরও বলেন, ‘এই কর্মসূচি জলবায়ু অর্থায়নকে একীভূত করার জন্য একটি সক্ষম প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতিগত পরিবেশ তৈরি করবে, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এজেন্ডায় জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে অগ্রাধিকার দেবে এবং কৃষি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবহন ও অবকাঠামো, নগর উন্নয়ন এবং জ্বালানিসহ জলবায়ু-সমালোচনামূলক খাতে সংস্কার বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তা করবে।’
এছাড়া সম্প্রতি কপ২৮-এ উদ্বোধন হওয়া ‘বাংলাদেশ জলবায়ু ও উন্নয়ন অংশীদারিত্ব’ কার্যকর করতে এই কর্মসূচি সরকারকে নিবিড়ভাবে সহায়তা করবে।
এটি সরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সম্পদ বরাদ্দকরণের ক্ষেত্রে জলবায়ু অগ্রাধিকারকে মূলধারায় আনা এবং সবুজ বন্ড ও টেকসই আর্থিক নীতির মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়নের গতিশীলতা সমর্থন করে।
সেক্টরাল পর্যায়ে প্রোগ্রামটি স্মার্ট জলবায়ু এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপক কৃষি চর্চাকে উৎসাহিত করে। বিশেষ করে যেগুলো নারী কৃষকদের পক্ষে সৌর সেচ পাম্পগুলোর অভিযোজন, জলবায়ু স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো নকশা ও পরিকল্পনা প্রবর্তন এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের অভিযোজনের জন্য নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও গণপরিবহন বহরে বৈদ্যুতিক বাসের প্রবর্তন করে।
এছাড়াও, বন্যা কমাতে নগর পৌরসভার জন্য জলবায়ু সহনশীল শহরের কর্ম পরিকল্পনা এবং উন্নত নিষ্কাশন ব্যবস্থার প্রচারে সহায়তা করে এডিবি।
২০২১ সালের অক্টোবরে এডিবি ঘোষণা করেছে, এটি ২০১৯ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত তার উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোতে জলবায়ু অর্থায়ন ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে দেওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়িয়েছে।
এটি নতুন জলবায়ুভিত্তিক প্রযুক্তির অভিগম্যতাকে প্রসারিত করবে এবং জলবায়ু অর্থায়নের দিকে ব্যক্তিগত পুঁজিকে সঞ্চয় করবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সমর্থন অব্যাহত রেখেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মানবিক সহায়তায় শরণার্থীদের স্বস্তির ব্যবস্থা করতে বিদেশি সরকারগুলোর সমর্থন বাড়াতে হবে: আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ
এশিয়ায় তাপচাপ মোকাবিলায় নারীদের সহনশীলতা বাড়াতে নতুন উদ্যোগ এডিবি'র
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে নারী ও মেয়েদের উপর তাপচাপের প্রভাব আরও ভালভাবে বুঝতে এবং অভিযোজনে বিনিয়োগের জন্য একটি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) এই নতুন উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়।
নতুন কারিগরি সহায়তা কর্মসূচির আওতায় এডিবি নারীদের ওপর তাপচাপের ক্রমবর্ধমান হুমকি কীভাবে প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে গবেষণা করবে এবং সুনির্দিষ্ট নীতি, পদক্ষেপ ও বিনিয়োগ নির্ধারণ করবে যা নারী ও মেয়েদের ওপর তাপের প্রভাব কমাতে সরকারকে সহায়তা করতে পারে।
বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্ক ও তাজিকিস্তানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
কপ-২৮ সম্মেলনের উদ্বোধনীতে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, 'এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে উষ্ণতম বছরের জন্য অবশ্যই রয়েছি। এটি নারীদের অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা, খাদ্য নিরাপত্তায় তাদের ভূমিকা এবং নারীদের ব্যবহৃত অবকাঠামোর ওপর নজিরবিহীন চাপ সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, ‘চরম তাপের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি মোকাবিলা না করে উন্নয়ন আর সম্ভব নয়। আমাদের অবশ্যই নারীদের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
প্রচণ্ড গরমে বিশ্বব্যাপী ৬৫০ বিলিয়ন ঘণ্টারও বেশি বার্ষিক শ্রম ক্ষতি হয়। যা প্রায় ১৪৮ মিলিয়ন পূর্ণ-সময়ের চাকরির সমতুল্য- য একটি পরিমাপে ব্যাঘাতের দিক থেকে কোভিড-১৯ মহামারির সঙ্গে তুলনীয়।
নারীরা এই ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা দ্বারা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত হয়, প্রাণঘাতী পরিস্থিতি এবং উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
এডিবি এবং আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আরশট-রক গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন বলেন, 'ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের নারীরা প্রায়শই আমাদের উষ্ণায়নের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’ ‘এসব ভারসাম্যহীনতা দূরীকরণে এডিবির উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিলিপে ক্যালডেরন বলেন, 'পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ প্রচণ্ড গরমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।’
‘নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলোকে রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে, বিশেষত শহরগুলোতে যেখানে শহুরে তাপ দ্বীপের প্রভাবের কারণে সমস্যাটি আরও গুরুতর। তাপপ্রবাহের নামকরণ এবং শ্রেণিবদ্ধকরণ থেকে শুরু করে শহুরে সবুজায়নের উদ্যোগগুলো, শহরগুলো তাদের নাগরিকদের জীবন ও জীবিকা সুরক্ষিত করার সমাধানগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রভাবে রয়েছে।’
ফিজির নারী, শিশু ও দারিদ্র্য বিমোচন বিষয়ক মন্ত্রী লিন্ডা তাবুইয়া বলেন, ‘প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন একটি জীবন্ত বাস্তবতা, আমরা সেখানে প্রত্যক্ষভাবে দেখতে পাচ্ছি যে প্রচণ্ড তাপ কীভাবে বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ‘আমাদের সম্মিলিত জলবায়ু প্রতিক্রিয়ার জন্য লক্ষ্যযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-উত্তরপশ্চিমাঞ্চল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডোর উন্নয়ন: বাংলাদেশকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
ইউএন-হ্যাবিট্যাট অ্যান্ড আরস্ট-রক গ্লোবালের চিফ হিট অফিসার এলেনি মাইরিভিলি বলেন, ‘নারীদের ওপর তাপচাপের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাবের জন্য একটি উপযুক্ত পদ্ধতি প্রয়োজন। ‘আমাদের জলবায়ু কৌশলগুলোতে লিঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গি একীভূত করা কেবল অপরিহার্য নয়; এটি জরুরি এবং সমতার বিষয়।’
মেলবোর্ন সিটির মেয়র স্যালি ক্যাপ বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শহরগুলো সর্বাগ্রে রয়েছে।‘নেতা হিসাবে, আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে আমাদের জলবায়ু সহনশীলতার প্রচেষ্টা, বিশেষত তাপচাপের বিষয়ে, অন্তর্ভুক্তিমূলক,নারীদের অনন্য দুর্বলতা এবং শক্তিকে স্বীকৃতি দেয়।
এই উদ্যোগটি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে সমস্ত নতুন কার্যক্রমে হিট অ্যাকশন-প্ল্যানিংকে একীভূত করার,নারীদের জলবায়ু সহনশীলতা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করা এবং লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল পদক্ষেপের পক্ষে পরামর্শ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিকে চিহ্নিত করে।
এডিবির মতে, ২০১৯ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে অভিযোজনের জন্য ৩৪ বিলিয়ন ডলারসহ নিজস্ব সম্পদ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়ন প্রদানের ব্যাংকের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে এই কর্মসূচিটি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
২০২২ সালে এডিবি ৭ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরমধ্যে প্রশমনের জন্য ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার এবং অভিযোজনের জন্য ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার রয়েছে।
ব্যাংকটি গত বছর বেসরকারি খাত থেকে জলবায়ু অর্থায়নে অতিরিক্ত ৫৪৮ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক-এডিবির ঋণ নয়, অনুদান চাই: টিআইবি