বিনিয়োগ
বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশকে সহায়তা করার প্রস্তাব টনি ব্লেয়ারের
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
রবিবার ক্লারিজের হোটেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশকে আরও উন্নয়নে সহায়তা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং বাংলাদেশকে আরও উন্নয়নে সহায়তা করতে চেয়েছেন।
মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী ব্লেয়ারকে বলেছিলেন যে বাংলাদেশে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য আরও বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।
টনি ব্লেয়ার বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে, বিশেষ করে জিসিসি (গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিল) এর সঙ্গে এবং তিনি বাংলাদেশকে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়াতে সাহায্য করতে পারেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি: আইএমএফ দল
টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউশন ফর গ্লোবাল চেঞ্জের প্রধান ব্লেয়ারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে: ‘বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতি খুবই আকর্ষণীয় এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে খুব ভালো করছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার।
রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসায় তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউশন ফর গ্লোবাল চেঞ্জের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ পরিদর্শন করবেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা প্রয়োজন এমন খাতগুলো চিহ্নিত করতে বিআইডিএর সঙ্গে বসবেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক এম নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের জন্য কমনওয়েলথের পর্যবেক্ষক চান প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ১৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন: নসরুল
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত ‘ইউএস-বাংলাদেশ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ: শেয়ারড ভিশন ফর স্মার্ট গ্রোথ’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা সভায় ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভবিষ্যৎ শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক সেশনে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মার্চে আদানির বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই: নসরুল
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এলএনজি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট ডিস্ট্রিবিউশন, বৈদ্যুতিক যানবাহন অবকাঠামো, উপকূলীয় এবং অফশোর হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানের মতো বিভিন্ন খাত এবং উপ-খাতে লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গ্যাসের অবকাঠামো উন্নীতকরণ, পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প স্থাপন, জিএইচজি নির্গমন কমানো, স্মার্ট গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন হচ্ছে এমন খাতগুলোর মধ্যে যেখানে মার্কিন কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে পারে এবং সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিশেষ প্রণোদনা দেবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, ভিশন বাস্তবায়নের জন্য আর্থিক বিনিয়োগের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত এবং জ্ঞান-ভিত্তিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি আরও বরেন, বিনিয়োগ শুধুমাত্র বহুপক্ষীয় উন্নয়ন সংস্থা থেকে নয়, সরকারি ও বেসরকারি খাত থেকেও আসা উচিত।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, শেভরনের বাংলাদেশ অফিসের প্রেসিডেন্ট এরিক ওয়াকার এবং এক্সন মবিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. জন আরডিল।
আরও পড়ুন: প্রতিদিন প্রায় ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে: নসরুল
জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিনাজপুরে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন: নসরুল হামিদ
সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের জন্য জার্মান বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে জার্মানির হামবুর্গের অ্যাংলো-জার্মান ক্লাবে আয়োজিত 'বাংলাদেশ : সাসটেইনেবলিটি অব সীফুড সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স' শীর্ষক ব্যবসায়িক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ দূতাবাস, জার্মানি, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, বাংলাদেশ এবং জার্মান-এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: জাটকা নিধন বন্ধ হলে দেশের মানুষ বড় ইলিশ খাওয়ার সুযোগ পাবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, জার্মানির মিনিস্টার (কমার্শিয়াল) মো. সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুল হক, হামবুর্গে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ওয়াল্টার স্কট, বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ব্লু ইকোনমি সেলের প্রধান (যুগ্মসচিব) ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, জার্মান ফিশ প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রির ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ম্যাথিয়াস কেলার, গ্লোবাল গ্যাপ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান মোলার, জার্মান-এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের কান্ট্রি কমিটির চেয়ারম্যান থমাস কনিং, জার্মান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি আব্বাস আলী চৌধুরী,সলিডারিডাড, বাংলাদেশ-এর স্ট্র্যাটেজিক এনগেজমেন্ট লিড মঈন উদ্দিন আহমেদসহ জার্মানির মৎস্য খাতের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান।
সেমিনারে মন্ত্রী বলেন, জার্মানি অনেক প্রাচীন,উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ। এ দেশের প্রযুক্তি, নীতি, গবেষণা অনেক সমৃদ্ধ। মৎস্য খাতে জার্মানি ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ খাতে দুই দেশের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়েরও সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগে বিদেশি ব্যবসায়ীদের আহ্বান প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ একটি দেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ সমুদ্র সম্পদ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের মাধ্যমে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এখন আমাদের গবেষণার ক্ষেত্র, সম্পদের ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত। সমুদ্র অঞ্চলে আমাদের খুব বেশি অভিজ্ঞতা নেই। এ জন্য আমরা সবসময় সমুদ্র সম্পদের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উন্নত দেশকে সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা, বিনিয়োগ ও একসঙ্গে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাই।
জার্মান বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে এ সময় মন্ত্রী বলেন, জার্মানি বাংলাদেশের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। দুই দেশ মৎস্য খাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে। মৎস্য খাতে জার্মান বিনিয়োগকারীদের গবেষণা, অভিজ্ঞতা, মৎস্য মাননিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন বাংলাদেশের কাজে লাগবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে এখন বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ ও সরকারের বিনিয়োগ উপযোগী নীতি রয়েছে । বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প স্থাপন ও আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধাসহ সরকার সবধরণের সহযোগিতা প্রদান করবে।
তিনি বলেন, মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। রপ্তানির পূর্বে প্রতিটি মাছ এখন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। বাংলাদেশের মাছের মান নিয়ে এখন আর বিদেশিদের অভিযোগ নেই। কারণ নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্যপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে এখন বাংলাদেশ কোনো আপোষ করে না। মাছের মান নিশ্চিত করতে আগে কোনো আইন ছিল না। বর্তমান সরকার মৎস্য ও মৎস্যপণ্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণে আইন করেছে। আইন অমান্য করলে জরিমানা ও শাস্তির বিধান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এমনকি মাছের খাদ্যোর ব্যাপারেও বর্তমান সরকার অনেক সচেতন। বাংলাদেশের মাছকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা সরকারের লক্ষ্য।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশের মতো উন্নত করা। তার স্বপ্ন পূরণের আগেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে কাজ করছেন। তার হাত ধরে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। শেখ হাসিনাকে বলা হয় উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান।
আরও পড়ুন: সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডিমের ভারসাম্যপূর্ণ মূল্য নিশ্চিত করা হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন শুধু উন্নয়নের কথা ভাবছে না, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। একসময় আমাদের লক্ষ্য ছিল উন্নয়ন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের নীতি, শুধু উন্নয়ন নয় বরং উন্নয়ন অবশ্যই টেকসই হতে হবে।
বাংলাদেশে শিগগিরই আন্তর্জাতিক সীফুড মেলা আয়োজন করা হচ্ছে জানিয়ে এ খাত সংশ্লিষ্ট জার্মান গবেষক, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সীফুড মেলায় অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগে বিদেশি ব্যবসায়ীদের আহ্বান প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
বাংলাদেশ থেকে সি-ফুড আমদানি ও বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগের জন্য বিদেশি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে স্পেনের বার্সেলোনায় গ্লোবাল সি-ফুড এক্সপো ২০২৩ এ বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন দেশের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
এ সময় বাংলাদেশ থেকে মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতাদের বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সবধরণের সহযোগিতা প্রদানেরও আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভালো ব্যবসার জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা হবে: জাপানি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী
এ সময় তিনি জানান, বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশ সরকার কর অব্যাহতিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রস্তুত।
পাশাপাশি বাংলাদেশের চিংড়ি ও অন্যান্য মৎস্যসম্পদ রপ্তানির চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা উত্তরণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও এ সময় তুলে ধরেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, চিংড়ি, ফিনফিশ, শুটকি মাছ, কাঁকড়াসহ বিভিন্ন মৎস্য ও মৎস্য পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এ অর্থবছরে ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকার রোগমুক্ত বাগদা চিংড়ি উৎপাদনে বেসরকারি খাতে ম্যাচিং গ্র্যান্ট প্রদানসহ চিংড়ি উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।
সনাতনী পদ্ধতির চিংড়ি হ্যাচারিকে এসপিএফ হ্যাচারিতে রূপান্তর, ক্লাস্টারভিত্তিক চিংড়ি চাষ পদ্ধতি প্রচলন, চিংড়ি খামারের উৎপাদন বৃদ্ধি, সাপ্লাই চেইনের মান উন্নয়ন, দেশব্যাপী বিদ্যমান চিংড়ি খামারের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি, সমন্বিত ই-ট্রেসিবিলিটি সিস্টেম প্রবর্তন, মৎস্য ও মৎস্য পণ্য মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০২০ প্রণয়ন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে ন্যাশনাল রেসিডিউ কন্ট্রোল প্ল্যান বাস্তবায়ন, মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে দেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা, নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিং, আমদানিকারক দেশের মৎস্য পরিদর্শন এবং মাননিয়ন্ত্রণ বিধি ও চাহিদার সঙ্গে গতি রেখে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মৎস্যসম্পদে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। বিভিন্ন দেশের মৎস্য খাত কীভাবে বিকশিত হয়েছে, মৎস্য খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার, মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ, সি-ফুড রপ্তানিসহ বিভিন্ন বিষয় বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত গ্লোবাল সি-ফুড এক্সপো থেকে বাংলাদেশ অভিজ্ঞতা অর্জন করছে।
এ বছর বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সি-ফুড এক্সপো আয়োজন করা হচ্ছে জানিয়ে সি-ফুড সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশের ক্রেতা ও বিশেষজ্ঞদের এ এক্সপোতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও যোগ করেন, দেশের সি-ফুড খাতে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ খাতের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক।
আরও পড়ুন: আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে শেখ হাসিনা ও কিশিদার আলোচনা
বাংলাদেশে ভালো ব্যবসার জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা হবে: জাপানি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার জাপানের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে তাদের জন্য অপেক্ষা করা ব্যবসা ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে বাংলাদেশে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি অব্যাহত রাখব এবং বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আপনাদের সকলের জন্য একটি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করব।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হোটেল ওয়েস্টিনে নির্বাচিত জাপানি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের (সিইও) সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো চার বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ২০১৪ সাল থেকে যখন আমরা আমাদের 'বিস্তৃত অংশীদারিত্বে' প্রবেশ করি এবং বিগ-বি উদ্যোগের অধীনে জাপানের অঙ্গীকারে প্রবেশ করি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়েছে: জাপানের প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, তিনি নিশ্চিত যে জাপানি ব্যবসায়ীরাও এই ক্রমবর্ধমান প্রবণতা অনুসরণ করছে এবং তারা তাদের বিদ্যমান ব্যবসা সম্প্রসারণ বা বাংলাদেশে নতুন ব্যবসা খোলার দিকে ইতিবাচকভাবে আগ্রহী হবে। আমি আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমার সরকার এবং সমস্ত প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলো আপনাদেরকে এবং জাপানে আমাদের অন্যান্য বন্ধুদের বাংলাদেশে ব্যবসায়িক প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে আগ্রহী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিগত পাঁচ দশকে দু'দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দৃষ্টান্তমূলক ফলাফল দেখে আমাদের প্রত্যাশা আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশে জাপানের আরও বড় পদচিহ্ন থাকবে। আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে জাপানি সংস্থাগুলোর উত্থাপিত বেশ কয়েকটি নিয়ন্ত্রক এবং নীতিগত সমস্যার সমাধান করেছি।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজেই বাংলাদেশ-জাপান যৌথ পাবলিক-প্রাইভেট ইকোনমিক ডায়ালগ (পিপিইডি) গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন এবং জাপানে পৌঁছানোর ঠিক আগে ১১ এপ্রিল পিপিইডি’র পঞ্চম রাউন্ডের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে উদার বৈদেশিক বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিযোগিতামূলক ব্যয়, প্রচুর মানবসম্পদ, উচ্চ ক্রয়ক্ষমতাসম্পন্ন দেশীয় ভোক্তা বাজার এবং ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির দিক থেকে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত লাভজনক স্থান হিসেবে দ্রুত আবির্ভূত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র হতে সচেষ্ট রয়েছে। আমরা সারা দেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাই-টেক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক প্রতিষ্ঠা করছি। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে যোগাযোগের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একটি পরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ করছে। টোকিওতে আমাদের দূতাবাস বাংলাদেশে আপনাদের উদ্যোগকে সহযোগিতা ও সহজতর করতে প্রস্তুত।’
জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আহ্বান জানাল প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
বুধবার সফররত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত জং সুং মিন তার সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ‘আইডিএফ গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস’ পদক পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ উন্নয়ন অংশীদার এবং দেশটি স্বাধীনতার পর থেকে বিশেষ করে টেক্সটাইল ও অবকাঠামো খাতে সহযোগিতা করে আসছে।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে জাং সুং মিন বাংলাদেশ সফর করছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী।
কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতির অফিসের রাষ্ট্রপতির দূত এবং ভবিষ্যত কৌশলের সিনিয়র সেক্রেটারি বলেছেন, আগামী দিনে সম্পর্কটি ধীরে ধীরে আরও শক্তিশালী হবে।
৫০ বছর আগে ১৯৭২ সালের ১২ মে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন রবিবার
সাক্ষাতকালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রদূত বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের বিষয়ে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা জানান।
জাং সুং মিন বলেছেন যে সফরের পর তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম ও ত্যাগের কথা জানতে পেরে ‘মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত’ হয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্টের পক্ষে রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে দক্ষিণ কোরিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানান।
প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকেও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এ সময় মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং-কিউন উপস্থিত ছিলেন।
জাং সুং মিন বাংলাদেশে তিন দিনের সফরে গতকাল ঢাকায় পৌঁছেছেন।
প্রেসিডেন্ট ইউনের একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসাবে তিনি ২০২২ সালের মে মাসে কাজ শুরুর পর থেকে নতুন প্রশাসনে দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক নীতিগুলো প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
আরও পড়ুন: বিরোধীরা আমার ব্যর্থতা খুঁজে পেলে সংশোধন করব: সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপায় নিয়ে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার আলোচনা
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য অভিন্ন। উভয় দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন যে কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা মওকুফ এবং বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দ্বিগুণ কর এড়ানোর চুক্তি দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করবে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াবে।
প্রতিমন্ত্রী ৩ ফেব্রুয়ারি প্রিটোরিয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যান্ডিথ মাশেগো ডলামিনির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেন এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন।
বৃহস্পতিবার বিজনেস ইউনিটি সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, সংগঠনটি বাংলাদেশি চেম্বারগুলোর সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, পারস্পরিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী সম্ভাবনার মূল্যায়ন ও ব্যবসায়িক বিষয়ে আলোচনার জন্য বিভিন্ন চেম্বারের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে একটি বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা বিজনেস কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডলামিনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে সাম্প্রতিক উচ্চ পর্যায়ের সফরের কথা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের দৃঢ় বহিঃপ্রকাশ: প্রণয় ভার্মা
আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশে আরও চীনা বিনিয়োগের আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
চীন আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অংশীদার হওয়ার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে নতুন রাষ্ট্রদূতের মেয়াদে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, সংযোগ এবং সাউথ সাউথ কোঅপারেশনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় চীন বাংলাদেশে যে ‘মূল্যবান’ সহায়তা করেছে, তা স্বীকার করেছেন মোমেন।
তিনি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে চীনের অব্যাহত সমর্থন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন করা দরকার এবং আশা প্রকাশ করেন যে প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু হবে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকা রুশ জাহাজ গ্রহণ করবে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রতিরক্ষা খাতে তুরস্কের সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদায়ী তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরানকে বলেছেন, উভয় দেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সহযোগিতা ছাড়াও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নতুন বিনিয়োগের জন্য আরও তুরস্কের বিনিয়োগকে আকর্ষণ করছে।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন যে ইতোমধ্যেই তার দেশের দুটি কোম্পানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে চলতি বছর ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহে ট্রানজিট দেশ হতে পারলে তুরস্ক যথেষ্ট খুশি হবে: তুরস্কের রাষ্ট্রদূত
রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিশেষ করে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশে তুরস্কের বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে বাংলাদেশে তুরস্কের বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে।’
তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে সংলাপ করতে বাংলাদেশে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক আয়োজনের ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়, বিদেশিদের নয়: তুরস্কের রাষ্ট্রদূত
সর্বশেষ কমিশন সভা ২০১৯ সালে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন যে তার দেশ প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রী তুরস্ককে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অনুরোধ জানান, কারণ ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জন্য গুরুতর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জবাবে রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশের অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দেন।
বৈঠকে অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: তুরস্ক ও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক হস্তান্তর
বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে ৩ বছরে ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এডিবি
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে বলেছেন, বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে আগামী তিন বছরে এডিবি দুই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) এডিবি অফিসে মাসাতসুগু আসাকাওয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন দীপু মনি ।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ও এডিবি প্রেসিডেন্ট সংস্থাটির অর্থায়নে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে চলমান প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে এডিবি’র অর্থায়নে ভবিষ্যত প্রকল্প নিয়েও আলোচনা করেন। এর আগে ২৪ নভেম্বর দীপু মনি এডিবি আয়োজিত ‘হাউ টু রিকভার লার্নিং লসেস ফ্রম কোভিড-১৯ স্কুল ক্লোজারস’ সেমিনার, ‘আইএফএফইডি (ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স ফ্যাসিলিটি ফর এডুকেশন) উদ্যোগ ও এডিবি এডুকেশন সেক্টর ডিরেকশনাল গাইড’ এবং এডিবি’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘স্ট্রাটেজিক থ্রাস্টস ফর বাংলাদেশ এডুকেশন সেক্টর অপারেশন’ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন।
দীপু মনি কোভিড-১৯ এর সময়ে বাংলাদেশে যথেষ্ট সহায়তার জন্য; বিশেষ করে বাজেট সহায়তা ও ভ্যাকসিন সংগ্রহে অর্থায়নের জন্য এডিবিকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করবে জাতিসংঘ ও এডিবি: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি এডিবি প্রেসিডেন্টকে বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।
এডিবি’র অবদানের কথা স্বীকার করার করে দীপু মনি বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে, বিশেষ করে আইসিটি ও কারিগরি শিক্ষায় সংস্থাটির আরও সহায়তা কামনা করেন।
শিক্ষামন্ত্রী ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি ফর এডুকেশন (আইএফএফইডি) থেকে বর্ধিত অর্থের জন্য অনুরোধ করেন। এডিবি হচ্ছে আইএফএফইডি-এর একটি বাস্তবায়নকারী অংশীদার।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ সরকার কোভিড-১৯ এর প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধার করে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য জিডিপির ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ মূল্যের বিশাল উদ্দীপনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি, সার ও খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে অর্থনীতির ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। দীপু মনি কাউন্টারসাইক্লিকাল সাপোর্ট সুবিধাসহ বাংলাদেশকে এডিবি এর সহায়তার জন্য অনুরোধ করেন।
এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া শিক্ষামন্ত্রীকে স্বাগত জানান এবেং গুসি শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য অভিনন্দন জানান।
এসময় মাসাতসুগু বাংলাদেশের অগ্রগতি ও অর্জনের; বিশেষ করে সামাজিক খাত, নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: জিডিপি অনুপাতে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে কম ঋণ থাকা দেশের মধ্যে অন্যতম: এডিবিকে অর্থমন্ত্রী
এডিবি প্রেসিডেন্ট মানসম্পন্ন শিক্ষায় সকল শিশুর সুষম প্রবেশাধিকার, শিক্ষা খাতে প্রযুক্তির পরিবর্তনকে কাজে লাগানোর ও উন্নয়নে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ওপর জোর দেন।
তিনি দেশীয় সম্পদ বৃদ্ধির গুরুত্বও উল্লেখ করেন। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স ফ্যাসিলিটি ফর এডুকেশন (আইএফএফইডি) এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য তিনি শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনিকে অভিনন্দন জানান এবং বলেন যে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে আগামী তিন বছরে দুই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এডিবি।
তিনি সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও এডিবির মধ্যে সহযোগিতা জোরদার হবে।
শিক্ষামন্ত্রী এসময় শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে যে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটছে তা দেখার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এডিবি প্রেসিডেন্টকে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং মাসাতসুগু দীপু মনির আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
তিনি ২০২৩ সালে বাংলাদেশে সফরে আসার কথা জানান।
আরও পড়ুন: এশিয়ায় খাদ্য সংকট মোকাবিলায় ১৪ বিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি