শিক্ষক
৬২ বছর ধরে স্কুল আছে শিক্ষার্থী নেই, জানেন ঊর্ধ্বতনরাও
প্রতি ক্লাসে ৩ থেকে ৪ জন শিক্ষার্থী, তারপরও খিচুড়ি খাওয়া হলেই ছুটি; বাড়ি চলে যায় তারা। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। গাইবান্ধা শহরের প্রাণকেন্দ্র ভি এইড রোডে অবস্থিত কে এন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিত্যকার চিত্র এটি। গত ৬২ বছর থেকে এভাবেই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চললেও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অজানা নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও বিদ্যালয়টির সরকারিকরণ করা হয় ১৯৭৩ সালে। শুরু থেকে এমপি মন্ত্রীদের সুপারিশে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়ে আসছে বিদ্যালয়টিতে। এ কারণে প্রথম থেকেই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম থাকলেও শিক্ষক ছিল পর্যাপ্ত।
বিদ্যালয়টি বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে সুন্দর মনোরম পরিবেশে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থীর কোলাহলপূর্ণ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাস্তবে তা নয়, কোমলমতি শিশুদের ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে স্কুলের কার্যক্রম।
প্রতিষ্ঠার ৬২ বছর পরও স্কুলের শিক্ষকের সংখ্যা কম না হলেও শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। কোনো বছর প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীই ছিল না বলেও স্কুলের খাতাপত্র ঘেটে দেখা যায়। আবার কোনো কোনো ক্লাসে ছিল ১০ জন, কোনো ক্লাসে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ছিল না।
আবার দুটি ক্লাস চলে একই কক্ষে। দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা কীভাবে এক সঙ্গে নেওয়া হয়, তা অভিভাবকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ।
আরও পড়ুন: প্রভোস্টবিহীন জাবির কাজী নজরুল হল, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৬২ বছরেও স্কুলের শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল দেখাতে পারেনি বিদ্যালয়টি। অথচ শিক্ষকরা তাদের কর্তাব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করে মাসিক ভুয়া প্রতিবেদন দাখিল করে বহাল তবিয়তে চাকরি করে আসছেন।
অনিয়মের পাশাপাশি এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় কেউ এখানে ভর্তি হয় না বলে জানান স্থানীয় কাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, পড়ালেখার পরিবেশ নেই, শুধু ফাঁকিবাজি। সব জেনেও শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা সব হজম করে পকেট ভরছেন আর ভালো রিপোর্ট দিচ্ছেন।
সম্প্রতি স্কুলের পড়ালেখার পরিবেশ তৈরি করতে ৬ জন শিক্ষিকা ছাড়াও একজন দপ্তরি নিয়োগ করা হয়। নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষিকারা কোমলমতি শিশুদের শিক্ষার মান উন্নয়নের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শিক্ষার্থী পেতে বাড়ি বাড়ি ঘুরেছেন, কিন্তু কাজ হয়নি। বরং শিক্ষার্থী না পেয়ে তারাও হতাশ। অনেক চেষ্টা করে ৬টি শ্রেণির জন্য মাত্র ৬০ জন শিক্ষার্থীকে ধরে রাখতে পেরেছেন তারা। তার মধ্যে তৃতীয় শ্রেণিতে ৩ জন আর চতুর্থ শ্রেণিতে ৪ জন শিক্ষার্থী ক্লাস করে।
স্কুলের সামনের বাসিন্দা এবং ওই স্কুলের একসময়ের শিক্ষার্থী দুলাল মিয়া বলেন, ‘স্কুলের চারদিকে ভালো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। শিশুরা সেখানে পড়তে যায়। সেই কারণে কে এন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদা শিরিন বলেন, ‘স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়াতে আমরা কম চেষ্টা করিনি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের স্কুলে পাঠানোর অনুরোধ করেছি, কিন্তু কাজ খুব বেশি হয়নি। তাছাড়া এই স্কুলের চারপাশে কোচিং সেন্টারসহ ভালো কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সে কারণে শিশুরা ওই দিকে ঝুঁকে পড়ছে।’
স্কুলের অন্যান্য শিক্ষিকারা বলেন, স্কুলে শিক্ষার্থী ধরে রাখতে এবং উপস্থিতি বাড়াতে আমরা নিজেদের বেতনের টাকায় ছাত্রছাত্রীদের দুপুরে খিচুড়ি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। খিচুড়ি খেয়েই শিক্ষার্থীরা চলে যায়। এই স্কুলের অবস্থা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও গুঞ্জন থাকলেও শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা তা এড়িয়ে যান। তারা কোনো পরামর্শ দিতেও স্কুলে আসেননি।
গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লক্ষণ কুমার দাস স্কুলের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘জেলা পর্যায়ের সভায় বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। আমরা স্কুলে শিক্ষার্থী বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করছি।’
৯৯ দিন আগে
মাইলস্টোনের ৩ শিক্ষক জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন: প্রধান উপদেষ্টা
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী, মাসুকা বেগম ও মাহফুজা খানম মানবতা ও সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে এ জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার(১৯ আগস্ট) বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তিন শিক্ষক পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল, দুই ছেলে আদিল রশিদ ও আয়ান রশিদ, বোন মেহেতাজ চৌধুরী, ভাই মুনাফ মজিব চৌধুরী ও নিকট আত্মীয় কাওসার হোসেন চৌধুরী; শিক্ষক মাসুকা বেগমের বোন পাপড়ি রহমান ও ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান এবং শিক্ষক মাহফুজা খাতুনের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা, বোন মুরশিদা খাতুন, ভাগ্নে মো. মাইদুল ইসলাম ও নিকট আত্মীয় হুমায়ূন কবির।
পড়ুন: মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন শিক্ষিকা ফারজানা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বেশ কিছুদিন পার হলেও এই স্মৃতি এখনো সবার মধ্যে দগদগে হয়ে আছে। আমি ঘটনা জানামাত্রই আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা যে দুঃসময়ের মধ্যে ছিলেন, সেসময়ে দেখা করা সমীচীন হতো না। আমরা আপনাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করতে পারি। কিন্তু এই দুঃসহ স্মৃতি মুছে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, এ শোক আপনাদের একার নয়। জাতি হিসেবে আমরা এই শোককে ধারণ করি।’
এসময় তিন শিক্ষক পরিবারের কাছে তাদের স্মৃতিকথা শুনতে চান প্রধান উপদেষ্টা।
শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল বলেন, ‘তাকে যখন হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল তখন ফোনে আমার সাথে কথা হয়। সেদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে যে দৃশ্য দেখেছি, তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। জীবনে যেন কারো সেই অভিজ্ঞতা না হয়। আমি তাকে দেখলাম, একপাশ পুরোটা পুড়ে গেছে। সেখানে কয়েকজন সামান্য দগ্ধ বাচ্চা চিকিৎসা নিতে নিতে আমাকে বলল, ‘মিসই আমাদের টেনে টেনে বের করে আনল! মিস তো সুস্থ ছিল! এমন হলো কেন!’ আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি বের হয়ে এলে না কেন? তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না?’ সে আমাকে বলল, ‘ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?’ পৃথিবীর সকল মানুষ ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে তার জন্য দোয়া করেছে। সবার জন্যই সে নিবেদিত প্রাণ ছিল।’
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ২৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন শিক্ষক মাহফুজা খাতুন। মায়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা।
তিনি বলেন, ‘আমার মা অনেকখানি সুস্থ হয়ে উঠেছিল। আমি ভেবেছিলাম, মা’কে নিয়ে বাড়ি ফিরব। মাকে যেদিন হুইলচেয়ারে বসাই সেদিন মনে হলো আমি বিশ্বজয় করেছি। মা ছাড়া একেকটা দিন আমার স্বপ্নের মতো মনে হয়। আমার তো বাবা নেই, এখন মাও চলে গেল। আমি এতিম হয়ে গেলাম। এখন পর্যন্ত নিজের বাসায় ফিরতে পারিনি। মা ছাড়া সে বাসায় ফিরব কী করে?’
শিক্ষক মাসুকা বেগমের ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেক দিন ধরেই তাঁর বোন অসুস্থ। চোখে কিছুটা কম দেখেন। মাসুকা সবসময় তাঁর বাবা ও বোনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত, তাঁদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চটুকু দেয়ার চেষ্টা ছিল। বাবাকে নিয়মিত হাতখরচ পাঠাত। আমার ছেলে-মেয়েদের ও নিজের সন্তানের মতো মনে করত। প্রতিদিন তাঁদের সঙ্গে ওর কথা হতো। আমরা আর তার স্কুল—এই ছিল তাঁর জীবন।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের কথা শুনতে কষ্ট লাগে। একইসঙ্গে গর্ববোধ হয় যে আমাদের দেশে এমন নাগরিক আছে যারা অন্যের জীবন বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ দিয়েছে। মানবতার এই দৃষ্টান্ত তারা প্রমাণ করে গেছে। আমরা ক্ষুদ্র মানব ছিলাম, তারা আমাদের বড় করেছে। সবার ভেতরে নাড়া দিয়েছে। সবাই এটা নিজের মধ্যে অনুভব করেছে যে, ‘আমি যদি সেই অবস্থানে থাকতাম, আমি কী করতাম? আমি কি জীবনের পরোয়া না করে এভাবে ছোট শিশুদের প্রাণ বাঁচাতে আত্মবিসর্জন দিতাম? এই প্রশ্ন সবার মনে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই শিক্ষকগণ আমাদের গর্ব, আমাদের আদর্শ। তাঁদের স্মৃতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। এজন্য যা কিছু করা প্রয়োজন, আমাদের তা করব।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
১০৭ দিন আগে
শিক্ষকদের ওপর হামলা: এবার ভবনে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারি জবি শিক্ষার্থীদের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখানো হলে শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের সকল কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত এবং ভবন তালাবদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ জুলাই) জবির ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীকে হামলার ঘটনায় গত ১০ জুলাই থেকেই ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ মিছিল, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ এবং স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা যায়, গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবন তালাবদ্ধ করার পূর্বঘোষিত কর্মসূচির ঠিক আগমুহূর্তে শিক্ষক সমিতির আহ্বানে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিভাগীয় শিক্ষক ড. কে এ এম রিফাত হাসান ও সহকারী প্রক্টর মো. শফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: জবিতে ছাত্রদলের হামলা, ৩ দবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
আলোচনায় শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত তিনটি দাবির সঙ্গে আরও দুটি দাবি সংযুক্ত করে মোট ৫ দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো— আগামীকাল ১৫ জুলাই সকাল ১০টার মধ্যে প্রশাসনের উদ্যোগে নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। হামলায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত বহিষ্কার করতে হবে। যেসব অছাত্র জড়িত, তাদের ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে এমন সহিংসতা প্রতিরোধে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে। রাজনৈতিক ট্যাগ ও অপপ্রচার বন্ধে প্রশাসনিকভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষক সমিতি শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনে দুঃখ প্রকাশ করে এবং সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে রাতের মধ্যেই প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আশ্বাস দেয়। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা দিনের কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখেন।
তবে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) সকাল ১০টার মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখানো হলে শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের সকল কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হবে এবং ভবন তালাবদ্ধ করা হবে। তবে ভবনে অবস্থিত বিভিন্ন বিভাগের চলমান ফাইনাল ও মিডটার্ম পরীক্ষা এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত নয় বলেও জানান তারা।
আরও পড়ুন: জবির সহকারী প্রক্টর, ছাত্র কল্যাণ পরিচালকসহ ৩ বাগছাস নেতার ওপর ছাত্রদলের হামলার অভিযোগ
এদিকে, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ব্যাচভিত্তিক আলোচনা সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসানকে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ ও সমগ্র ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীদের ‘রাজনৈতিক ট্যাগ’ দিয়ে মানসিক হয়রানি করেছেন। বিশেষ করে বিভাগের দীর্ঘদিনের শ্রেণি প্রতিনিধি নন্দিনী ঘোষকে ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে অপপ্রচার চালানোয় শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং এই মিথ্যাচারের দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে নিতে হবে বলেও দাবি করেন।
১৪৩ দিন আগে
জবির শিক্ষক-বাগছাস নেতাদের ওপর ছাত্রদলের হামলা তদন্তে কমিটি গঠন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) দুই শিক্ষকসহ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) তিন নেতার উপর শাখা ছাত্রদলের নেতকর্মীদের হামলার ঘটনায় ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসেনকে আহ্বায়ক এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার (সংস্থাপন) জনাব এ. কে. এম. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মো. গিয়াস উদ্দিনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: জবির সহকারী প্রক্টর, ছাত্র কল্যাণ পরিচালকসহ ৩ বাগছাস নেতার ওপর ছাত্রদলের হামলার অভিযোগ
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন— শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন, মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক।
এর আগে, আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম রক্ষা করতে গেলে তাদেরকে গালিগালাজ ও হামলা করে ছাত্রদলের নেতকর্মীরা।
একইসঙ্গে শাখা বাগছাস সভাপতি ফয়সাল মুরাদ, মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুককেও ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে তাদের উপরও হামলা ও মারধর শুরু করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
বর্তমানে আহত অবস্থায় ফয়সাল মুরাদ ও ফেরদৌস শেখ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
১৪৭ দিন আগে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ৭১৭ শিক্ষকের ১১৩ জন ছুটিতে: উপাচার্য
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চলতি অর্থবছরে ৭১৭ জন কর্মরত শিক্ষকের মধ্যে ১১৩ জন শিক্ষক ছুটিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
শনিবার (২৮ জুন) বিকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের ৪২তম বার্ষিক অধিবেশন পূর্ববর্তী শুভেচ্ছা ভাষণে এই তথ্য জানান উপাচার্য।
এসময় জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, 'বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ৭১৭ জন, কর্মকর্তা ৩৮০ জন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ৯৭০ জন এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ৫০৬ জন কর্মরত আছেন। উচ্চশিক্ষার জন্য ১০২ জন শিক্ষক ছুটিতে এবং ১১ জন শিক্ষক লিয়েন ছুটিতে রয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজের শিক্ষক হিসাবে দায়িত্বে আছেন ৫২ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে সর্বমোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৬৯০ জন।'
তিনি আরও বলেন, 'বিগত শিক্ষাবর্ষে ১ হাজার ৬৭ জন শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান), ১ হাজার ১৮২ জন শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর ৩ জন এমফিল এবং ৪৭ জন গবেষক পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।'
পড়ুন: জাবিতে আবাসিক হল থেকে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার
তিনি বলেন, 'আমি অর্জিত ডিগ্রিধারীদের এই সিনেটের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং আশা করছি তারা কর্মক্ষেত্রে মেধা, দক্ষতা এবং প্রজ্ঞায় অর্জিত ডিগ্রির মান সমুন্নত রাখবেন।'
শনিবার (২৮ জুন) বিকাল ৩টায় সিনেটের নিয়মিত অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় ১ ঘণ্টা পিছিয়ে বিকাল ৪টা থেকে তা শুরু হয়। তবে জাবির ৪২তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে আওয়ামী লীগপন্থী তিন শিক্ষক সিনেট কক্ষ ত্যাগ করেন।
সিনেট কক্ষ ত্যাগ করা তিন সিনেটর হলেন- মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক নিগার সুলতানা, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিক-উর-রহমান এবং কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. যুগল কৃষ্ণ দাস।
১৫৯ দিন আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অধিকার সুরক্ষায় আসছে সার্ভিস রুল
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অধিকার সুরক্ষায় সার্ভিস রুল না থাকায় নানা ভোগান্তি ও বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন তারা। স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে চাকুরিচ্যুতির ঘটনাও অহরহ ঘটে থাকে। এসব অনিয়ম বা বৈষম্য রোধে সার্ভিস রুল অনুসরণ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা গেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারীভাবে আর বরখাস্ত করার সুযোগ থাকবে না। শিক্ষকসহ অন্যান্য কর্মর্কতা-কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দ্বার উন্মোচন হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সময় শিক্ষকরা ভয়েস রেইস করে, কোনোভাবে হয়ত কথা বলে বা বিভিন্নভাবে হয়ত যৌক্তিক কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু, কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি হয়তো ভালো লাগলো না, তখন তাকে চাকরিচ্যুত করে দেন। এটি শিক্ষক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও হয়।
অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, ‘এজন্য প্রতিটি ভার্সিটিতে সার্ভিস রুল থাকতে হবে এবং যা হবে, তা সার্ভিস রুল অনুযায়ী করতে হবে। তাই আমি মনে করি শিক্ষকদের নিরাপত্তায় এটি বড় একটি পদক্ষেপ।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগ: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি
তিনি আরও বলেন, এই সব বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রতিটি ভার্সিটির সার্ভিস রুল তৈরি করা হয়েছে কিনা? তৈরি করা না হলে অতি শিগগিরই করতে হবে। আমি খুব কম সময়ের মধ্যে। আগামী ২ সপ্তাহ মধ্যে করতে হবে। প্রতিটি ভার্সিটিতে চিঠি দিয়েছি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত এই সদস্য বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আউট সোসিং থেকে শুরু করে প্রতিটি পদে, অধ্যাপক পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগ বা চুক্তিটি সার্ভিস রুল অনুযায়ী করতে হবে। তাহলে প্রত্যেকের চাকরি নিরাপদ হবে।
তিনি আরও বলেন, সার্ভিস রুল অনুযায়ী কাউকে চাকরি থেকে বাদ দিতে হলে সময় দিতে হবে, কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং তাকে আগে সতর্ক করতে হবে এবং সময় জানিয়ে চাকরি থেকে বাদ দিতে হবে। অর্থাৎ চাকরিতে তার অধিকারটা প্রটেক্ট থাকতে হবে।
এছাড়াও পাবলিক ও প্রাইভেট ভার্সিটির বেতন অনেক কম। সার্ভিস রুল থাকলে সেখানে বেতন কাঠামো থাকবে। এটি আমরা আবার সময়ে সময়ে রিভিউ করব। দেশে বেসরকারি ১১৭ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে। ১১৭টি সার্ভিস রুল থাকতে হবে।
ইউজিসি সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চাকরিজীবনে বেশ কিছু সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা দেখা যায়। যেমন- বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছ ও লিখিত সার্ভিস রুল (চাকরি সংক্রান্ত নিয়মনীতি) নেই। এমনকি থাকলেও তা কার্যকরভাবে অনুসরণ করা হয় না। ফলে চাকরিচ্যুতি, পদোন্নতি, ছুটি বা শৃঙ্খলাভঙ্গ সংক্রান্ত বিষয়গুলো অনির্ধারিত বা স্বেচ্ছাচারীভাবে পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: সাত কলেজ নিয়ে যৌক্তিক সমাধান আসবে: ইউজিসি চেয়ারম্যান
চাকরিচ্যুতির ভয়
শিক্ষকদের স্বাধীন মত প্রকাশ, গবেষণা বা সমালোচনামূলক আলোচনা অনেক সময় বাধাগ্রস্ত করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
কোনো পূর্ব নোটিশ বা ব্যাখ্যা ছাড়াই অনেক সময় শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষকরা ন্যায্য অভিযোগ করার সুযোগ পান না।
এছাড়াও প্রশাসন বা মালিকপক্ষের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে বাধ্য করা হয়, না করলে হয়রানির শিকার হন তারা। অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষের দায়িত্ব বা প্রশাসনিক কাজ চাপিয়ে দেওয়া হয়।
বেতন অনেক কম
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই ন্যূনতম বেতন স্কেল পান না। বেতন কাঠামোও অনিয়মিত। ইনক্রিমেন্ট বা ছুটি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। জ্যেষ্ঠতা, যোগ্যতা বা গবেষণার মান বিবেচনা না করে অযোগ্যদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।
২১২ দিন আগে
এসএসসি পরীক্ষার্থীর মোবাইলে নকল, শিক্ষকের জেল-জরিমানা
এসএসসি পরীক্ষায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ছাত্রকে হোয়াটসঅ্যাপে নকল সরবরাহের ঘটনায় আটক আমেনা বাকী স্কুলের শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে ভ্রাম্যমাণ আদাল ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।।
আটক শিক্ষক আনোয়ার হোসেন সাইতাড়ার আব্দুল হামিদের ছেলে। তিনি চিরিরবন্দরের আমেনা বাকী রেসিডেন্সি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিতের শিক্ষক।
কেন্দ্র সচিব সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, আজকে উচ্চতর গণিত পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিটের মাথায় দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের পরিদর্শক দল একটি কক্ষে ৯৫২৭৫৭ রোল নম্বরধারী লাবিব হাসনাত সর্দার নামে এক ছাত্রের কাছে মোবাইল দেখতে পেলে তাকে বহিষ্কার করে। এরপর ওই মোবাইলের সূত্র ধরে আমেনা বাকি রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে আমেনা বাকি স্কুল থেকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এছাড়াও একই পরীক্ষায় অন্য একটি কক্ষ থেকে নকল করার অভিযোগে ২৪৫৫৭০ রোল নম্বরধারী হাফিজুল ইসলাম নামে আরেক ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন: নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনায় কমিটি চেয়ে রিট
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, কেন্দ্রের ভিতর থেকে মোবাইল ফোনে প্রাইভেট শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের কাছে প্রশ্ন জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে উত্তর সংগ্রহ করছিল তার ছাত্র। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষককে চিহ্নিত করে আটক করেন তারা। স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই শিক্ষককে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি ২ ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মীর সাজ্জাদ আলী জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক পরীক্ষা হলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তিনি বহিরাগত হিসেবে নকল সরবরাহে জড়িত ছিলেন। পরীক্ষায় অসুদপায় অবলম্বনের দায়ে গাইবান্ধায় ৬ জন পঞ্চগড়ে ১ জন এবং দিনাজপুরে ২ জনসহ ৯ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলে ৯৯৮ জন পরীক্ষার্থী।
২১৪ দিন আগে
এসএসসি পরীক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষককে কারাদণ্ড
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক শিক্ষককে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ এপ্রিল) উপজেলার ডগ্রী ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটে।
দণ্ডপ্রাপ্ত জুলহাস উদ্দিন পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুলের ওই ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ ওঠে শিক্ষক জুলহাস উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
এদিকে পরীক্ষাকেন্দ্রে অশালীন আচরণের অভিযোগে ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়।
অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বুলবুল অভিযুক্ত শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বর্ষবরণের মঞ্চ ভাঙচুর, বাতিল অনুষ্ঠান
পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম চন্দ্র দাস বলেন, ‘শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জুলহাস উদ্দিনকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।'
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোনো ধরনের অনৈতিক আচরণ বা হয়রানিকে বরদাশত করা হবে না।’
২২৭ দিন আগে
পরীক্ষার্থীদের অসদুপায় অবলম্বনে সহযোগিতা, কেন্দ্র সচিবসহ ২১ শিক্ষককে অব্যাহতি
চলমান দাখিল পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও পরীক্ষার্থীদের অসদুপায় অবলম্বনে সহযোগিতার অভিযোগে গাইবান্ধায় একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব ও ২১ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহমুদ আল হাসান সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) গাইবান্ধা সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষার গণিত বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল। কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ১৪টি কক্ষে একই সেট কোডে পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি বসিয়ে এমসিকিউ (বহু নির্বাচনি) পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রসচিব শরীফ মো. আবু ইউসুফসহ পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ২১ জন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া উত্তরপত্র যাচাই করে ৪৭ জন পরীক্ষার্থীর বহু নির্বাচনি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনরায় তাদের নির্ধারিত সেট কোডে পূরণ করানো হয়েছে।’এ বিষয়ে কেন্দ্রসচিব শরীফ মো. আবু ইউসুফ বলেন, ‘কেন্দ্রসচিব হিসেবে সব কক্ষে খবর রাখা সম্ভব হয় না। শিক্ষকদের গাফিলাতির কারণে এমনটি হয়েছে। তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।’
২৩০ দিন আগে
মাদরাসা ছাত্রকে বলাৎকার, শিক্ষকের যাবজ্জীবন
নাটোরের বড়াইগ্রামে মাদরাসা ছাত্রকে বলাৎকারের দায়ে আব্দুর রহিম কালু নামে এক মাদরাসা শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ওই শিক্ষককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকালে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন। এ সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নারী শিশু আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘২০২১ সালের ১৮ মে বড়াইগ্রাম উপজেলার তালসো গ্রামের আল জামিয়া মাদরাসার শিক্ষক কালু ওই ছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে স্থানীয় একটি ভবনের ছাদে নিয়ে বলাৎকার করে বাড়ির সামনে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তাকে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে নারীকে হত্যা, যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ছাত্রের বাবা আব্দুস সামাদ বাদি হয়ে মামলা করলে সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক আজ (বুধবার) এ রায় দেন।
এছাড়া ওই শিক্ষককে জরিমানা করা ৫০ হাজার টাকা ভিকটিম ছাত্রকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
২৬৭ দিন আগে