তিস্তা
তিস্তায় জেলের জালে ৪ মণ ওজনের ডলফিন!
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে তিস্তা নদীতে চার মণ ওজনের একটি ডলফিন ধরা পড়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার ভোটমারি ইউনিয়নের শৈইলমারী তিস্তার চরে এক জেলের জালে ধরা পড়ে ডলফিনটি।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের শৈইলমারীর চরে জেলে শাহজাহান মিয়ার জালে ধরা পড়েছে ৪ মণ ওজনের একটি ডলফিন। এরপর কয়েকজন জেলে মিলে ডলফিনকে উঁচু স্থানে ওঠার কিছুক্ষণ পর সেটি মারা যায়। ডলফিন দেখতে উৎসুক মানুষ তিস্তা চরে ভিড় করেন।
স্থানীয় রিফাত হোসেন বলেন, সকাল থেকে তিস্তার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীতে বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরা পড়ছে। সেই সঙ্গে জেলের জালে ডলফিনও ধরা পড়েছে।
শৈলমারী চরের জেলে শাহজাহান মিয়া বলেন, জালে আটকের পর প্রথমে বড় মাছ মনে করেছি পরের ডাঙ্গায় ওঠার পর দেখি একটি ডলফিন। কিছুক্ষণ পরেই ডলফিনটি মারা যায়।
এ বিষয়ে ভোটমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরাদ হোসেন বলেন, তিস্তা নদীতে ডলফিন আটকের বিষয়টি স্থানীয় একজনের কাছে শুনেছি।
এর আগে তিস্তা নদীতে জেলের জালে ৭২ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছ আটক হয়। পরে জেলেরা ৮০ হাজার টাকায় মাছটি বিক্রি করেন।
রংপুরে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি, সতর্কতা জারি
ভারতের উত্তর সিকিমে ভয়াবহ বন্যা ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাংলাদেশ অংশে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার নদী তীরবর্তী এলাকায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নদী পার্শ্ববর্তী এলাকার সর্বসাধারণকে সতর্কতা অবলম্বনে ইতোমধ্যে মাইকিং শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানোর আতঙ্কে এলাকাবাসী
বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে মাইকিং শুরু হয়। সেই সঙ্গে সতর্কতা অবলম্বনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, সকাল থেকে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিদর্শন করছি। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের সতর্ক করতে মাইকিং করা হচ্ছে। এতে সর্বসাধারণকে গরু ও ছাগলসহ প্রয়োজনী জিনিসপত্র নিয়ে সতর্ক থেকে নিকটস্থ বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র/প্রাইমারি/হাইস্কুলে অবস্থান নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা জানান, বেলা ৩টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে ৫২.০৮ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়। বিপৎসীমার স্তর ৫২ দশমিক ১৫০। এটি বিকাল ৪টায় বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে।
এদিকে, রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে ২৭ দশমিক ৪, দিনাজপুরে ৫৪ দশমিক ৪, সৈয়দপুরে ২৭, নীলফামারীর (ডিমলা) ১১ দশমিক ৯, কুড়িগ্রামে ১৫ এবং পঞ্চগড়ে ৭ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার বাঁধ ভেঙে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে
তিস্তায় নিখোঁজের ১৬ ঘন্টা পর শিশুর লাশ উদ্ধার
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তিস্তা নদীতে নিখোঁজের ১৬ ঘন্টা পর মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) মহসিন মিয়া (৬) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শিশুটি গত ২ অক্টোবর বিকালে বাবা নওশা মিয়ার সঙ্গে তিস্তা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়।
আরও পড়ুন: পূর্বধলায় রাস্তার পাশ থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার তালুক বেলকা গ্রামের তিস্তার শাখা নদীতে শিশু মহসিন মিয়া তার বাবার সঙ্গে মুঠোজাল নিয়ে মাছ ধরতে যায়। মাছ ধরার একপর্যায়ে ওই শিশু তার বাবার অজান্তে নদীর পানিতে ডুবে যায়। নিখোঁজের পর থেকেই ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, পুলিশ ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধারে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে প্রায় পাঁচ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়েও তারা উদ্ধার করতে পারেনি। প্রবল স্রোতের কারণে ওই শিশুর লাশ তিস্তার শাখা নদীতে ভেসে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে কিশামত সদর গ্রামের কাজিউলের দোকান সংলগ্ন নদীতে থাকা একটি গাছের গুঁড়িতে লাশটি আটকে থাকে। আজ সকালে গ্রামবাসী লাশটি দেখতে পেয়ে স্বজনদের খবর দেয়। পরে স্বজনরা শনাক্ত করে লাশটি উদ্ধার করেন।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নিখোঁজের প্রায় ১৬ ঘন্টা পর তিস্তার শাখা নদী থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন চ্যাটার্জি বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার করল পিবিআই
খুলনায় ডোবা থেকে ১৯ মাসের শিশুর লাশ উদ্ধার
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে
উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাড়ছে অন্যন্য নদ-নদীর পানিও। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুঃশ্চিতায় পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার আমন চাষীরা।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ২৪৮ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া কুড়িগ্রাম সদর পয়েন্টের ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দলদলিয়া ইউনিয়নের তিস্তা নদীর অববাহিকার চাপড়ার পাড় এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, রবিবার থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার আমন খেতে পানি চলে আসছে। সোমবার ধান খেত তলিয়ে গেছে। জমিতে পানি উঠায় খুব চিন্তায় পড়ে গেছি। এর আগে দুইবার খেত নষ্ট হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপরে, কুড়িগ্রামে বন্যার আশঙ্কা
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, এরকম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে শীতকালীন মরিচ ও চালকুমড়াসহ বিভিন্ন শাক সবজির ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও ক্ষতি হতে পারে রোপা আমনেরও। আবহাওয়া এরকম থাকলে বিভিন্ন সবজিতে ক্ষতির আশঙ্কা আছে।
তিস্তায় নিখোঁজের ১৬ দিন পর এইচএসসি পরীক্ষার্থী লাশ উদ্ধার
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তা নদীতে গোসলে নেমে ১৬ দিন পর নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের সাপমারি এলাকায় ডুবে যাওয়া স্থান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ভেসে উঠে এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাইস আহমেদের লাশ।
আরও পড়ুন: নাটোরে নিজ ঘর থেকে আরেক বৃদ্ধের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার
নাইস আহমেদ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের গনেশের বাজারের মোনাব্বের হোসেনের ছেলে। এ বছর আনোয়ারমারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
এ বিষয় গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেন বলেন, লাশ ভাসার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে লাশটি শনাক্ত করে পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের কচুয়া বাজারসংলগ্ন তিস্তা নদীতে ৬ বন্ধু গোসল করতে যান। এরপর তারা নদীতে গোসলে নামলে ৬ বন্ধুই তিস্তার স্রোতে তলিয়ে যেতে থাকেন।
এক বন্ধু কেনো রকমে সাঁতরে পাড়ে উঠলেও বাকি ৫ বন্ধু স্রোতের টানে তলিয়ে যেতে ধরেন। এসময় ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন নৌকা দিয়ে ৩ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও অন্য দুইজন সেখানেই নিখোঁজ হন।
তারা দুজনেই এসএইচসি পরীক্ষার্থী। নিখোঁজের ৩৪ ঘণ্টা পর ডুবে যাওয়া স্থান থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে ভেসে ওঠে মুন্না আহমেদ নামে এক পরীক্ষার্থীর লাশ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার করল পিবিআই
তুরস্কে আরও ৪ জনের লাশ উদ্ধার করল বাংলাদেশ সম্মিলিত দল
কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে ৫০টি বাড়ি বিলীন
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।
তিস্তা নদীর পানি শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
রবিবার (২৭ আগস্ট) সকালে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া রেল ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পদ্মা-মধুমতির ভাঙন, বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও ফসলি জমি
বৃষ্টি ও বন্যার ফলে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট এলাকায় দেড় কিলোমিটার এলাকাব্যাপী নদী ভেঙেছে। এই ভাঙনে সর্বশেষ বুড়িরহাট বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩০ মিটার নদী গর্ভে চলে গেছে।
এ ছাড়াও উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নে প্রায় ৫০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। পানি বাড়ার ফলে এই উপজেলার দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৫ শতাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে।
এ ছাড়াও রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির কারণে গরু, ছাগল ও হাসঁ, মুরগির খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে বন্যায় ৭০৫ হেক্টর আমন ধান, ৮ হেক্টর বীজতলা ও ১১০ হেক্টর সবজিখেত বন্যায় নিমজ্জিত হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের মেম্বার মিনহাজুল বলেন, আমার ইউনিয়নের সরিষাবাড়ী এলাকার বাড়িগুলোতে পানি উঠেছে। এখানে ২ শতাধিক বাড়িঘর তলিয়ে গেছে।
জোলাপাড়ার আবুল জানান, এই গ্রামের ৭৫টি বাড়ির মধ্যে ৪৫টি বাড়িতে পানি উঠেছে।
এই গ্রামের মাহমুদা বলেন, আমার ছোট পুকুরে ৪/৫ হাজার টাকায় প্রায় ১৮ কেজি মাছের পোনা ছেড়েছিলাম, সব মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় ভাঙন, বিলীন হচ্ছে বসতঘরসহ আবাদি জমি
ফের তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উজানের পাহাড়ি ঢল ও মৌসুমি বর্ষার বৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৪টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৬ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে ১৪ আগস্ট বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও একদিন পরে তা নিচে নেমে আসে। বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার বন্যার শঙ্কায় চিন্তিত তিস্তাপাড়ের মানুষ।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি বাড়তে থাকে। শুক্রবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা বরাবরে প্রবাহিত হয়। ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে ৩ ঘণ্টা পরে দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
উজানে ভারী বর্ষণ ও ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ।
ব্যারাজ ও নদী তীরের বাসিন্দারা জানান, পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের আবাদ করা ফসলের খেতে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। যার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
চর গোবর্দ্ধন এলাকার আজিজুল ইসলাম জানান, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। চরাঞ্চলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যেতে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের শতশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হলদিবাড়ি চরের আব্দুল মতিন বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ক্রমেই বাড়ছে পানি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। পরিবার-পরিজন নিয়ে মাচাংয়ের ওপর বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের। এসব এলাকার বাসিন্দারা শিশু-বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে
কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে
কুড়িগ্রামে সবক'টি নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিশেষ করে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীর ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এছাড়া, হুমকিতে রয়েছে খিতাব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল থেকে ৩০ থেকে ৩৫ মিটার দূরে অবস্থান করছে নদী। মাঝে একটি আঁকাবাঁকা রাস্তা, রাস্তার ধারে কিছু গাছপালা।
যে কোনো মুহূর্তে তিস্তা হিংস্র হয়ে উঠলে বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। একই অবস্থা ওই ইউনিয়নের গতিয়াশাম কমিউনিটি ক্লিনিকের।
আরও পড়ুন: বিপদসীমার ২৮ সেমি ওপরে তিস্তার পানি
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তা নদীতে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন তীব্র হয়ে উঠেছে। গত ৩ মাস ধরে দফায় দফায় ভাঙছে তিস্তা।
এরমধ্যে শুধু খিতাবখাঁ গ্রামেই ইসমাইল হোসেন, রসুল, মোস্তাক, কদিমল, হাসেন আলী, ইউসুফ, দুলাল, আব্দুর রহিম, বালো, কছো মামুদ মমিন, হারুন, আবুল, আ. ছাত্তার, রফিকুল, অতুর আলী, রুস্তম, রফিকুল, আবুল হোসেন, মসুল, নুর ইসলাম, ফয়েজ, মাহাম্মদ, আবেদ, শফিকুল ইসলামসহ ৩০টি পরিবারের ভিটে মাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অন্যান্য ৪টি গ্রামসহ এর সংখ্যা ৫০-এর উপরে।
উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, গতিয়াশাম ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, রামহরি এবং কালিরহাট গ্রামে শত শত একর ফসলি জমি ও গাছপালা গিলে খাচ্ছে তিস্তা নদী। বাড়িঘর হারিয়ে তাদের অনেকেই খোলা আকাশের নীচে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন। এই গ্রামের অনেকে আবার মাঝেরচর নামক স্থানে নতুন বসতি স্থাপনের কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: তিস্তার ভাঙন: গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে শতাধিক পরিবার গৃহহীন
কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
প্লাবিত হয়েছে জেলার নদ-নদীর অববাহিকায় নিম্নাঞ্চলগুলো। তলিয়ে গেছে আমন-আবাদসহ বিভিন্ন সবজির খেত।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তার অববাহিকার গড়াইপিয়ার এলাকার নয়ন মিয়া বলেন, ২-৩ দিন থেকে আবারও তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়া দেখে এখানকার মানুষেরা অনেক দুঃশ্চিতায় আছে। তা ছাড়াও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও নদী ভাঙে, পানি কমলেও নদী ভাঙে। তিস্তা পাড়ের মানুষের ১২ মাসই কষ্ট।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে
লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৩৫ সেন্টিমিটার।
অর্থাৎ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি কমলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন
ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষেরা জানান, কয়েকদিন থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকে পানি বাড়তে থাকে। সোমবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
নিম্নাঞ্চলের আবাদকৃত ফসলের খেতে পানি উঠেছে। শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মহিষখোঁচা ইউনিয়নের চর গোবর্ধন এলাকার মমিনুর রহমান বলেন, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হলদি বাড়ি তিস্তা পাড়ের আমছার আলী বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ক্রমেই বাড়ছে পানি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। পরিবার পরিজন নিয়ে মাচাংয়ের ওপর বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের। এসব এলাকায় শিশু বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সোমবার সকাল ৬টা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা পাড়ে কৃষকের নির্ঘুম রাত কাটছে
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত