শিবালয়
শিবালয়ে কবর থেকে কঙ্কাল চুরি, স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে কবর থেকে কঙ্কাল চুরির অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। এতে স্থানীয় মানুষের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়নের বরংগাইল গ্রামের জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে এই কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার দিবাগত রাতে কোনো একসময় কবর খুঁড়ে কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রবিবার সকালে কবরস্থানে কবর জিয়ারত করতে গেলে বিষয়টি টের পান স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: দেশের প্রথম গয়াল-ইল্যান্ডের কঙ্কাল তৈরি করলেন বাকৃবি অধ্যাপক
এ সময় কবরস্থানের অনেকগুলো কবর খোঁড়া দেখতে পান এবং মৃত মানুষের হাড় (কঙ্কাল) কবরস্থানের চারপাশে দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জান্নাতুল বাকি কবরস্থানের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রফিক বলেন, মাস ছয়েক আগে উপজেলার বরংগাইল এলাকার করিম ব্যাপারীর ছেলে মারা যায়। আজকে তার স্ত্রী ছেলের কবর জিয়ারত করতে সকালের দিকে কবরস্থানে আসেন। এরপর তার মাধ্যমেই জানতে পারি কবরস্থানের অনেকগুলো কবর খোঁড়া হয়েছে। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কবরস্থানে গিয়ে দেখি ২২টির মতো কবর খুঁড়েছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে আটটি কবর পুরোপুরি খোঁড়া হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে ওই আটটি কবর থেকে দুর্বৃত্তরা কঙ্কালগুলো চুরির করেছে। প্রত্যেকটি কবর খোঁড়ার পর আবার মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। কবরের মাটিগুলো যে আলগা তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, তবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কতগুলো কঙ্কাল চুরি হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, কঙ্কাল চুরির ঘটনা শুনার পর পরই ওই কবরস্থানে গিয়ে আটটি কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পাই। তবে বাকি কবরগুলোও আংশিক খোঁড়া ছিল।
এ বিষয়ে শিবালয় থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুর রউফ সরকার বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সরেজমিনে কবরস্থান পরিদর্শন করেছি।
সেখানে কবরস্থান কমিটির লোকজনসহ স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেছি। কয়েকটি কবর খোড়া দেখা গেছে। তবে কতগুলো কঙ্কাল চুরি হয়েছে এখনো নিশ্চিত নয়।
কঙ্কাল চুরির ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: চার মাস আগে চুরি হওয়া ২ লাশের কঙ্কাল উদ্ধার
কঙ্কালের সূত্র ধরে সন্দেহভাজন খুনি গ্রেপ্তার
থানায় বিচার প্রার্থীকে মারধর: এএসআইয়ের পর ওসিও প্রত্যাহার
মানিকগঞ্জের শিবালয় থানায় শিশুকন্যাকে ধর্ষণ চেষ্টার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে এক বাবা নির্যাতনের ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনকে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (২২ আগস্ট) রাতে পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য অপরাধ করলে তার দায় পুলিশ বাহিনীর নয়। পুলিশের যে সদস্য অপরাধ করেছেন তার দায় ওই সদস্যকেই নিতে হবে।
জানা গেছে, গত শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় শিবালয় থানায় গিয়ে শিশুকন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে এক বাবার নির্যাতনের ঘটনায় রাতেই অভিযুক্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্তি করা হয়।
থানার ভেতরে বিচার প্রার্থীর নির্যাতনের ঘটনায় সোমবার ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে শিবালয় থানার ওসি মো. শাহীনকেও মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করে মাদারীপুর জেলায় সংযুক্তি করা হয়। এছাড়া ওসি মো. শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অপু মোহন্তকে।
পড়ুন: দুই শিশুকে বেঁধে নির্যাতন, চট্টগ্রামে ৩ পুলিশ প্রত্যাহার
শিবালয় থানার ওসি মো. শাহীন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তিনি থানায় ছিলেন না। শুনেছেন ওইদিন সন্ধ্যায় এএসআই আরিফ হোসেন থানার ভেতরে এক ব্যক্তিকে মারধর করেছেন। এই ঘটনায় তাকে সোমবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ থেকে মাদারিপুর জেলায় বদলী করা হয়েছে। তিনি সোমবার রাতেই শিবালয় থানার ওসি (তদন্ত ) শেখ ফরিদ আহমেদের কাছে তার দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়েছেন।
অপর দিকে ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু মোহন্ত বলেন, শিবালয় থানায় পুলিশ সদস্যের হাতে একজন মারধরের ঘটনায় তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করছেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সন্ধ্যায় শিবালয় থানায় কন্যাশিশু ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগ দিতে গিয়ে এএসআই আরিফ হোসেন ওই ব্যক্তিকে থানার ভেতরে পিটিয়ে আহত করেন।
ভুক্তভোগী ওই শিশুর বাবা জানান, স্ত্রীসহ তিনি ঢাকায় থাকেন। তার পাঁচ বছরের শিশুকন্যা থাকেন দাদীর কাছে। গত ২০ জুলাই রজ্জব খান নামে এক ব্যক্তি তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলে শিশুটির দাদী। পরে স্থানীয় সমাজপতিদের জানানো হলেও, প্রভাবশালী হওয়ায় কারণে তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন না। উল্টো তাকেই নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হতো।
এরপর গত ১৪ আগস্ট শিবালয় থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও থানা থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে মা ও শিশু কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান তিনি। এসময় থানার ওসি রুমে ছিলেন না। এএসআই আরিফ হোসেনের কাছে ঘটনা খুলে বলার পর তাকে থানার ভেতর মারধরে করা হয়। রাতে পুলিশ সুপারের কাছে বিচার দিলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবালয় সার্কেলে নূরজাহান লাবনীর নির্দেশে থানায় মামলা রেকর্ড হয়। ওই রাতেই অভিযুক্ত এএসআই আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
পড়ুন: বরগুনায় ছাত্রলীগকে লাঠিপেটা: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী প্রত্যাহার
শিবালয়ে যমুনায় ডুবে শিশুর মৃত্যু
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে মা ও নানির সাথে যমুনা নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।