ব্যবসায়ী
ঈদে ১৫০-১৬০ কোটি টাকার জামদানি বিক্রির আশা রূপগঞ্জের তাঁতী-ব্যবসায়ীদের
ঈদে ভালো বিক্রির আশায় নতুন ও রুচিশীল জামদানি শাড়ি তৈরিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া জামদানি পল্লীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁতীরা।
সরেজমিনে জামদানি পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁতীরা হাতে সুতা কাটার কাজ করে যাচ্ছেন। শ্রমিকরা বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এই ব্যস্ততা। কখনো ঘড়ির কাঁটা রাত ১০টা থেকে রাত ১১টা এমনকি রাত ১২টাও ছাড়িয়ে যায়। ঈদুল ফিতর ঘনিয়ে আসায় প্রায় প্রতিদিনই চলছে এমন ব্যস্ততা।
জামদানির ব্যবসায়ী ও বিসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা করছেন, এবারের ঈদে অন্তত ১৫০ থেকে ১৬০ কোটি টাকার বিক্রি হবে।
বিসিক জামদানি শিল্পনগরীর আওতাধীন এলাকায় ৪০৭টি প্লটে ৪০৭ জন উদ্যোক্তা রয়েছেন। তাদের মোট ১ হাজার ৬৬৫টি তাঁত রয়েছে এবং এখানে প্রায় সাড়ে ৩ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। মেশিন ছাড়াই তাদের সব কাজ করতে হয়।
জামদানি পল্লীতে ২০-২২ বছর ধরে শাড়ি বুননের কাজে নিয়োজিত মাইদুল ইসলাম বলেন, আসন্ন ঈদের কারণে কাজের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘কাজের চাপে বিশ্রামের সুযোগ নেই।’
তাঁতী নাদিম বলেন, 'আমি ১৭ বছর ধরে জামদানি শাড়ি বুনছি। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও কাজ বেড়েছে। আমরা চাই কাজের পরিধি বাড়ুক। কাজ বাড়লে মালিক, বিনিয়োগকারী ও শ্রমিকদের জন্য ভালো হবে।’
আরও পড়ুন: ঈদকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের জামদানি কারিগররা ব্যস্ত
জামদানি পল্লীর আরেক শ্রমিক শামীম বলেন, ‘আগে আমি সকাল ৯টায় কর্মস্থলে আসতাম। এখন আসতে হচ্ছে ভোর পাঁচটায়। আগে সন্ধ্যায় বাসায় যেতাম। এখন মাঝে মাঝে রাত ১০টা বা ১১টার মধ্যে বাসায় ফিরতে হয়। এখন কাজের চাপ বেড়েছে।’
জুনায়েদ জামদানি তাঁতের মালিক রুহুল আমিন বলেন, ‘ভারতীয় জামদানির কারণে আমাদের বাজার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তারা মেশিনে জামদানি বুনছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় তারা কম দামে বিক্রি করতে পারছেন। কিন্তু আমরা পারছি না। তারা একটি শাড়ি দুই হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু জামদানি শাড়ি বুনতে দুই হাজার টাকার সুতা লাগে। আমরা পাঁচ হাজার টাকার নিচে শাড়ি বিক্রি করতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে আমরা প্রতি মাসে ১০০টি শাড়ি বিক্রি করতাম, কিন্তু এখন ভারতীয় শাড়ির কারণে আমাদের বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে।’
জামদানি কারিগর পরিবারের সন্তান শাহ আলম বলেন, 'এখন দেখছি অনলাইনে জামদানি বিক্রি হয়। কিন্তু জামদানি শাড়ির কথা অনেকেই জানেন না। ভারতের মেশিনে তৈরি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে জামদানি নামে। আসলে ওগুলো জামদানি শাড়ি নয়। অরিজিনাল জামদানি শাড়ি কিনতে হলে বিসিক আসতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জামদানি শাড়ি রপ্তানি হচ্ছে। ঈদকে টার্গেট করে আমরা নতুন শাড়ি বুনছি। এখন পল্লীতে এলে ভালো শাড়ি পাবেন।’
রূপগঞ্জ জামদানি ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটির কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, এখানে সব ধরনের উদ্যোক্তা রয়েছেন। কেউ বেশি বিক্রি করে, কেউ কম।
তিনি বলেন, ‘যাদের ১৫-২০টি তাঁত আছে তারা ঈদুল ফিতরে এক থেকে দেড় কোটি টাকার শাড়ি বিক্রি করবে বলে ধারণা করা যায়। আর যাদের তাঁত কম তারা একটু কম বিক্রি করবেন। জামদানি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে এ বছর মোট ১৫০-১৬০ কোটি টাকা বিক্রির প্রত্যাশা করছি।’
আরও পড়ুন: জামদানিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত করা হবে: শিল্প সচিব
রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকুন: র্যাবকে প্রধানমন্ত্রী
আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে অসাধু ব্যবসার বিরুদ্ধে আরও সতর্ক থাকতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘পবিত্র রমজান আসছে। এ মাসে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লোভ-লালসা সংবরণ করার পরিবর্তে আরও লোভী হয়ে ওঠে, এটা খুবই দুঃখজনক।’
বুধবার(৬ মার্চ) রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে র্যাবের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন স্বজন হারানোর দুঃখের গভীরতা আর কেউ অনুধাবন করতে পারবে না, যেমনটা আমি করি : বিজিবি সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী
তিনি উল্লেখ করেন, এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ শুরু করে, দাম বাড়ায় এবং নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে।
র্যাব কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এসব অসাধু ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’
ঈদকে সামনে রেখে জাল নোটের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করতেও র ্যাব সদস্যদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং আমি আপনাদের অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে র্যাবের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন মুসলিম দেশগুলোকে অভিন্ন মুদ্রা চালুর পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
আ. লীগের ইশতেহারে নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বড় পদক্ষেপের অঙ্গীকার
উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নারীদের সুবিধার্থে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে আওয়ামী লীগ।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে 'স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান' স্লোগান নিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ২০২৪ উন্মোচন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
সরকারের উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের সঙ্গে নারীদের জন্য নীতিমালা সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকবে বলে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
ইশতেহারে বলা হয়, নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা অর্জন, অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নারীর উন্নয়নে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। গ্রামীণ নারীদের সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে এবং শ্রমশক্তিতে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ বাড়বে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন-শান্তি-সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে আ. লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন শেখ হাসিনা
এতে আরও বলা হয়েছে, সাধারণ আসনগুলোতে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় নারীরা নির্বাচিত হচ্ছেন এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কমপক্ষে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা আওয়ামী লীগের লক্ষ্য।
কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা, বন্ধুত্বপূর্ণ কর্মপরিবেশ, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকা ও জেলা সদরে শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার এবং কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেলের বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে।
ইশতেহারে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার মানব পাচার, বিশেষ করে নারী ও শিশু পাচার কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করেছে এবং তা আরও সক্রিয় ও কার্যকর করা হবে।
এতে বলা হয়, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে নারী উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা, উপদেষ্টা সেবা ও সম্পদ নিশ্চিত করা হবে। অনুদান, ঋণ ও বিনিয়োগ উদ্যোগের মাধ্যমে ই-কমার্স বা মালিকানাধীন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নারীদের মূলধনের প্রাপ্যতা সহজ করা হবে।
আরও পড়ুন: ভয়ভীতি সত্ত্বেও আসন্ন নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে: কাদের
ইশতেহারে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীর অনুপাত প্রায় সমান, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নারীর সংখ্যা ৩৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান এবং কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে আরও বলা হয়েছে, নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের উন্নয়নে জয়িতা ফাউন্ডেশনের ভূমিকা সম্প্রসারণ করা হবে। জয়িতা ফাউন্ডেশনের আওতায় সব বিভাগীয় সদর, জেলা ও উপজেলায় নারীবান্ধব বিপণন অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে বলা হয়েছে, তা ছাড়া নারী হয়রানির মামলা নিষ্পত্তির জন্য পৃথক আদালতে বাদীদের সরকারের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তার বিধান আরও কার্যকর করা হবে। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা বুধবার
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি এফবিসিসিআইয়ের আহ্বান
রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) মতিঝিলের এফবিসিসিআই আইকন টাওয়ারে আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ ও স্থিতিশীল মূল্যের বিষয়ে আলোচনায় ব্যবসায়ীদের প্রতি এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
২০২৪ সালের ১০ মার্চ বিশ্বজুড়ে রমজান শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশের প্রাণ, তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। আর সে কারণেই দেশ এত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘একটি শিল্প স্থাপনের জন্য ৪৩টি সংস্থার কাছ থেকে লাইসেন্স নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তবুও ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এত কষ্টের পরেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে পুরো ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের বদনাম হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার: এফবিসিসিআই সভাপতি
তিনি বলেন, কোনো ব্যবসায়ী বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যাহত করতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের তাতে আপত্তি রয়েছে, তাই এফবিসিসিআই সবসময় সুষ্ঠু ব্যবসার পক্ষে।
মাহবুবুল আরও বলেন, ‘যারা অনৈতিকভাবে বাজারে সংকট তৈরি করবে আমরা তাদের সঙ্গে নেই। আমরা ব্যবসায়ীদের অসৎ বা সিন্ডিকেট করার কোনো কথা শুনতে চাই না। আমরা চাই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করুক। সমস্যা থাকলে সমাধান হোক। তবে আমরা কোনো বদনাম চাই না।’
তিনি বলেন, ‘এলসি খোলা নিয়ে জটিলতা রয়েছে, এই নিয়েই আমরা কথা বলছি। প্রয়োজনে আরও কথা বলব। তবে আমি মনে করি, বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, খেজুরসহ ফলমূলের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে এফবিসিসিআই আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য জেলা চেম্বারদেরও আহ্বান জানান মাহবুবুল।
বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালী, সহসভাপতি খায়রুল হুদা চপল, পরিচালক ও বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অবরোধ অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভয় পায়: এফবিসিসিআই সভাপতি
এনবিআরকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান এফবিসিসিআই’র
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেশের অর্থনীতি জিম্মি: ব্যবসায়ী নেতারা
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা।
রাজধানীর নয়াপল্টনে তাদের মহাসমাবেশ বানচাল হওয়ার একদিন পর গত ২৯ অক্টোবর থেকে বিরোধী দল বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো দফায় দফায় অবরোধ ও হরতাল দেওয়া শুরু করেছে।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম। প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক খাতে ২০ দিনের হরতাল ও অবরোধের (২৯ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর) আর্থিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা (প্রতিদিন ৬৫০০ কোটি টাকা)।
তিনি বলেন, ‘হরতাল-অবরোধের কারণে দিনে ৬৫০০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমরা বারবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আর্থিক ক্ষতির কারণ এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ড এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছি।’
হরতাল-অবরোধের প্রচার-প্রচারণা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে পুরোপুরি ব্যাহত করতে ব্যর্থ হলেও, এই অস্থিরতা পরিবহন খাতকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে এবং পণ্য পরিবহনকে ব্যাহত করেছে; যার ফলে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে।
একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি সরকার প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধীরা রাস্তায় অবস্থানের আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে বৃহত্তর সংলাপের প্রস্তাব ডিসিসিআই সভাপতির
পরিবহন মালিকেরা জানায়, এ খাতের আনুমানিক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে প্রতিদিন প্রায় ১৬১ কোটি টাকা। এ হিসেবে ২০ দিনের হরতাল-অবরোধে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ২২০ কোটি টাকা।
ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ইউএনবিকে বলেন, ‘হরতাল ও অবরোধের ফলে আর্থিক ক্ষতি বহুমাত্রিক এবং আপনি এটি শুধু আর্থিক পরিসংখ্যানে হিসাব করতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক বা অন্য কোনো কারণে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হলে বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশের আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী দল ও বৈশ্বিক ক্রেতারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। তারপরে তারা তাদের ক্রয় আদেশ এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনাগুলো আরও সুরক্ষিত ও স্থিতিশীল এলাকায় সরিয়ে নেয়।
থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘যখন একটি বড় বৈশ্বিক ক্রেতা একটি দেশ থেকে অর্ডার স্থানান্তর করে, তখন ছোট ক্রেতারাও তাদের অনুসরণ করে।’
ড. দেবপ্রিয়র কথার প্রতিধ্বনি করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, একটি ক্রমবর্ধনশীল অর্থনীতির জন্য বৈশ্বিক বিনিয়োগ ও বৈশ্বিক ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে প্রতিটি সেক্টরে স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, কারণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পূর্ণরূপে আর্থিক লাভ বা ক্ষতির সঙ্গে সম্পর্কিত। ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীরা সব সময়ই আর্থিক লাভের জন্য বিনিয়োগের জায়গা সন্ধান করে। তারা নিরাপদ স্থানে বিনিয়োগ করতে জন্য পছন্দ করে।
বিক্ষোভে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে পরিবহন খাতে। দূরপাল্লার আন্তঃজেলা বাসগুলো স্টেশনে অলস বসে আছে। অগ্নিসংযোগের ভয়ে সিটি বাসগুলোকে কম যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। এতে অনেক পরিবহন শ্রমিক কর্ম ও বেতনহীন হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ গভীর খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে: ড. দেবপ্রিয়
মহাখালী আন্তঃনগর বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম ইউএনবিকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন প্রায় ৭০০ গাড়ি ছেড়ে যায়। হরতাল-অবরোধের কারণে তা এখন দিনে ১০০-তে নেমে এসেছে।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন, সপ্তাহে মাত্র দুই দিন বাস চালানোর ফলে শ্রমিকদের মজুরি ও জ্বালানি খরচ মেটানোটা আর্থিকভাবে চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। ফলে ব্যবসার মালিকরা বাস পরিচালনার খরচ ও ব্যাংক ঋণের কিস্তিসহ অন্যান্য ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, রাজধানীতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাস চলাচল করে। মালিক ও শ্রমিকেরা মিলে প্রতিদিন ১ দশমিক ৫৮ কোটি টাকা আয় করেন, গড়ে প্রায় ৪৫০০ টাকা।
তবে, এই আয় ৩২ দশমিক ৫০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। যার ফলে হরতাল-অবরোধের কারণে রাজধানীতে বাস চলাচলের জন্য দৈনিক ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।
মাহবুবুর বলেন, সাধারণ পরিস্থিতিতে সারাদেশে প্রায় ২ লাখ দূরপাল্লার বাস ট্রিপে প্রত্যেকে প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় করে, যার ফলে দেশব্যাপী দৈনিক ২০০ কোটি টাকা আয় হতো।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর থেকে ২৯ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মোট ২২৮টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখা শুধু অগ্নিসংযোগের ঘটনা রেকর্ড করে।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম শাখার উপসহকারী পরিচালক শাহজাহান সিকদার বলেন, একটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার পর ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ঘটনাস্থল থেকে বা ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থেকে তথ্য পায়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সময়ে অগ্নিসংযোগের আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, তবে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমকে সেগুলো জানানো হয়নি।
যেসব ঘটনার তথ্য জানানো হয় না, সেক্ষেত্রে স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। অর্থাৎ, পরিবহন কর্মচারীরা নিজেরাই বা যাত্রী ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম শাখার উপ-সহকারী পরিচালক বলেন, এক্ষেত্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
শাহজাহান বলেন, গত এক মাসে ২৮ অক্টোবর থেকে ২৯ নভেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত মোট ২১৭টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সবসময়ই অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করে: আহসান মনসুর
অসাধু ব্যবসায়ীদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান: রাষ্ট্রপতি
দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর লোভ এবং রাতারাতি বড় হয়ে ওঠার চেষ্টা দেশের ব্যবসার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে এবং জনগণের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ১২টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পাবনা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনায় একযোগে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
সাহাবুদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ীদের একটি অংশ মিথ্যা তথ্য ও নথির মাধ্যমে ব্যবসায়ী, উৎপাদক ও আমদানিকারকদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি প্রণোদনার অপব্যবহার করছে। এ পরিবেশে সৎ ও ভালো ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন।
সরকার সবসময় সৎ ব্যবসায়ীদের পাশে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যবসা করা সরকারের কাজ নয়। সরকারের কাজ হচ্ছে ব্যবসা-বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা। সরকার শুধু সেটাই করতে চায়।
রাষ্ট্রপতি ভারি, মাঝারি, ক্ষুদ্র, কুটির ও উচ্চ প্রযুক্তি শিল্পের মালিকদের হাতে পুরস্কার, ক্রেস্ট, অর্থ ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন।
সংশ্লিষ্ট খাতে অসামান্য অবদানের জন্য ছয়টি ক্যাটাগরিতে মোট ১২টি শিল্প ইউনিটকে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাওয়ার্ড ২০২২' দেওয়া হয়।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।
বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড প্রথম, জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেড, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে নিতা কোম্পানি লিমিটেড প্রথম এবং নোমান টেরি টাওয়েল মিলস লিমিটেড দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে।
ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে হযরত আমানত শাহ স্পিনিং মিলস লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে টেকনো মিডিয়া লিমিটেড।
এছাড়া ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে গ্রিন জেনেসিস ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এবং কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে শামসুন্নাহার টেক্সটাইল মিলস নির্বাচিত হয়েছে।
হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ ক্যাটাগরিতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রথম এবং সুপার স্টার ইলেকট্রিক্যাল এক্সেসরিজ লিমিটেড দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শাহজাহান কামালের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ মেক্সিকোর ব্যবসায়ীদের
বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানির পাশাপাশি দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেছেন মেক্সিকোর ব্যবসায়ীরা।
মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ইবারো আমেরিকানা ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উন্মোচন: বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর সেতুবন্ধন’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি বাংলদেশে বিনিয়োগ করতে চায়: বাণিজ্যমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ ছাড়া, সেমিনারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান, মেক্সিকান বিজনেস কাউন্সিল ফর ফরেন ট্রেড, ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি-সিওএমসিই’র এশিয়া ও ওশেনিয়া বিভাগের প্রেসিডেন্ট সার্জিও লে লোপেজ, মেক্সিকান প্রজাতন্ত্রের আমদানি ও রপ্তানিকারকদের জাতীয় সমিতি এএনআইইআরএম’র ডিরেক্টর মিসায়েল ড্যানিয়েল রেয়েস এবং মেক্সিকান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের মহাপরিচালক নাথান উলফ লাস্টবেডার সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের (বিজনেস টু বিজনেস পিপল) মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রযুক্তিসহ সব খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।
করোনা মহাসংকটের পর রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মতো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার কথাও তুলে ধরেন টিপু মুনশি।
আরও পড়ুন: দেশের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান: বাণিজ্যমন্ত্রী
সিওএমসিই ও এএনআইইআরএম’র প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর কথাও বলেন তারা।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করে বাণিজ্য বাজারের বৈচিত্র্যের উপর জোর দিতে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান সিওএমসিই’র মহাপরিচালক নাথান উলফ লাস্টবেডার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান বাংলাদেশের অনুকূল বাণিজ্য ল্যান্ডস্কেপ নিয়ে আলোচনা করেন। দেশটির ব্যবসায়ী নেতা ও নীতিনির্ধারকদের কৃষি, ওষুধ, আইসিটি, খেলাধুলা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির মতো ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সুযোগ অন্বেষণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য সম্পর্কিত গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
ইবারো আমেরিকানা ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড বিভাগের সমন্বয়ক ড. আরিবেল কনটেরাস সুয়ারেজ, মেক্সিকোর অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেন।
মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম সেমিনারটি পরিচালনা করেন। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে সমন্বয়মূলক অংশীদারিত্ব, কৌশলগত বিনিয়োগ, উদ্ভাবনী অনুশীলন, দক্ষতা উন্নয়ন ও বাজার অনুসন্ধানের জন্য উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান।
জাপানি ব্যবসায়ীদের শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য জায়গা দেওয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, বেশ কয়েকটি কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হলে বাংলাদেশ শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য জাপানকে আরও জায়গা বরাদ্দ করবে।
তাদের দেশের অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, জাপানের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদল প্রধানিমন্ত্রীকে এ তথ্য জানালে উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ইপিজেডে জাপানকে জায়গা দিয়েছে, জাপান শিল্পকারখানা স্থাপন করতে চাইলে আমরা আরও (জায়গা) দিতে পারি।’
আরও পড়ুন: সরকার উৎখাতের হুমকি বা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনো লাভ হবে না: প্রধানমন্ত্রী
এদিন জাপানের জেনারেল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক কমিটির পরিচালক ও হাউস অব কাউন্সিলর নাকানিশি ইউসুকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
জাপানি প্রতিনিধি দল বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান উন্নয়ন অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং আরও জোরদার করতে হবে।
প্রতিনিধি দল বলেন, জাপান বাংলাদেশে মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে কাজ করছে। ‘জাপান অবকাঠামোগত উন্নয়নে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পে অবদান রাখছে।’
ঢাকা ও নারিতা সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রশংসা করে তারা বলেন, এতে যোগাযোগের উন্নতি হবে।
জাপানি প্রতিনিধিদল ভারত মহাসাগরকে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য শান্তিপূর্ণ রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে বিদেশে চাকরি করতে যাওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
তারা নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষায় বাংলাদেশের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অনেক বেশি, কারণ সরকার মেয়েদের বিনামূল্যে শিক্ষা দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একটি সামুদ্রিক অ্যাকোয়ারিয়াম নির্মাণে জাপানের সহায়তাও চেয়েছেন।
এর আগে নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইয়োহেই সাসাকাওয়া গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে ইয়োহেই সাসাকাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য নিপ্পন ফাউন্ডেশন ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি এবং বলছি যে তাদের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বেঁচে যাওয়া ৮৪ বছর বয়সী ইয়োহেই সাসাকাওয়া বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরেন।
তিনি কুষ্ঠরোগ নির্মূল এবং কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাসাকাওয়া চলতি বছরের অক্টোবরে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় কুষ্ঠ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত আইডব্লিউএএমএ কিমিনন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সবার সঙ্গে সমানভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে: প্রধানমন্ত্রী
এফবিসিসিআইয়ের নতুন মহাসচিব মো. আলমগীর
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে মো. আলমগীরকে।
রবিবার (২০ আগস্ট) তিনি এফবিসিসিআইতে যোগ দেন।
এর আগে আলমগীর বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: এফবিসিসিআই -এর নতুন সভাপতি মাহবুবুল আলম
তিনি রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন।
সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. আলমগীর সরকারি চাকরিতে ৩৩ বছরের কর্মজীবনের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার নিয়ে এফবিসিসিআইয়ে এসেছেন।
১৯৯০ সালে পটুয়াখালী ডিসি অফিসে সহকারী কমিশনার হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয় এবং তিনি বিভিন্ন জাতিগত সংখ্যালঘুদের কল্যাণ ও উন্নয়নে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় কাজ করেন।
মো. আলমগীর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিবেশ অধিদপ্তরে এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়েও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মো. আলমগীর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তিনি সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এনইউএস) থেকে পাবলিক পলিসিতে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। যার ফলে তিনি বাংলাদেশের প্রথম বেসামরিক কর্মচারী হিসেবে এনইউএস থেকে এই ডিগ্রি অর্জন করেন।
এ ছাড়াও, মো. আলমগীর ইউকে ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স থেকে শেভনিং ফেলোশিপের অধীনে ম্যানেজিং মাইগ্রেশন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি থেকে হুবার্ট হামফ্রে ফেলোশিপের অধীনে 'সাবস্ট্যান্স ইউজ, রিডাকশন, ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড পলিসি' বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।
তিনি ঢাকার একাডেমি ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট থেকে প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট এবং জাপানের আইডিএএস অ্যাডভান্সড স্কুল থেকে ডেভেলপিং ইকোনমিকসে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন।
এ ছাড়াও তিনি দেশে ও বিদেশে অনেক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: এফবিসিসিআই এর সভাপতি হলেন মাহবুবুল আলম
এফবিসিসিআই-আইসিসির বৈঠক: ভারতের স্বাস্থ্য খাতের উদ্যোক্তাদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বান
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে নৌকাডুবি, ব্যবসায়ী নিখোঁজ
চট্টগ্রামের রাউজানে নিজের খামার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বন্যার পানিতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন এক ব্যবসায়ী।
সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হালদা নদীর একটি শাখা খালে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
নিখোঁজ চট্টগ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা সাহেদ(৩৫) রাউজানের এস এম ইউসুফের ছেলে।
নৌকাডুবির সময় সঙ্গে থাকা ৪জন সাঁতার কেটে পাড়ে উঠতে পারলেও বাবু উঠতে পারেনি। তীব্র স্রোত তাকে টেনে নিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কাউসার-উল-আলম বলেন, নিজ বসতঘর থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নিজস্ব প্রজেক্ট খামার বাড়িতে (মাছের খামার, গরুর খামার) যান সাহেদ।
রাত ৮টার দিকে সেখান থেকে ফেরার পথে রাউজান হাটহাজারী মধ্যবর্তী বাড়িঘোনা ব্রিজ এলাকায় নৌকা উল্টে যায়। নৌকায় থাকা আরও ৪জনসহ সাঁতার কেটে উঠতে পারলেও সাহেদ পানির স্রোতে ভেসে যান।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ, রাউজান থানা ও হাটহাজারী থানা পুলিশসহ স্থানীয় লোকজন বাবুর খোঁজ পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল, জোয়ারের পানিতে উরকিরচরসহ আশপাশের গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে।
সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম উল্লাহ জানান, উরকিরচরে সাহেদের গরু ও মুরগীর খামার আছে। যেখানে হালদা নদীর একটি শাখা খাল পেড়িয়ে যেতে হয়।
তিনি আরও বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে সোমবার খামারে পানি উঠে যায়। তাই সাহেদ সহ আরও ৩ জন খামার দেখে ফেরার পথে নৌকা উল্টে পানিতে পড়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল জানান, রাত ১২টা পর্যন্ত সাহেদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বন্যায় পানি বেশি থাকায় হালদা নদীতে ভেসে যেতে পারে। তার সন্ধানে হালদা নদী ও শাখা খালে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে বন্যা-ভূমিধস মোকাবিলায় সেনা মোতায়েন
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে কলেজছাত্রীর মৃত্যু