শিশুশ্রম
নদীভাঙন, দারিদ্র্য আর অবহেলার মাঝেও স্বপ্ন দেখে যারা
চারদিকে নদী, মাঝে দ্বীপের মতো ছড়িয়ে থাকা কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল। এখানকার জীবন যেন জন্ম থেকেই সংগ্রামের আরেক নাম। চরবাসীর জন্য সকাল মানে নতুন দিনের সূচনা নয়, বরং চ্যালেঞ্জের আরেকটি অধ্যায়। আর এখানকার শিশুদের কাছে শৈশব মানে আনন্দ নয়; বরং দায়িত্ব, বেঁচে থাকার লড়াই।
ভোর হলেই ক্ষুধার তাড়নায় কিংবা পরিবারের প্রয়োজনে ছোট ছোট পায়ে শিশু-কিশোররা ছুটে যায় মাঠে— কারও সঙ্গে হাল চাষ করতে, কারও খেতে পানি দিতে, কিংবা কৃষকের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধান কেটে আনতে। খেলাধুলা বা বিনোদন নয়, এই বয়সেই তারা শিখে ফেলে জীবনের কঠিন অঙ্ক।
চরের শিশুরা যেন জন্ম থেকেই প্রশিক্ষিত একেকটি শ্রমিক। কেমন করে জমিতে মই দিতে হয়, আলু গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হয়, কিংবা কীভাবে ধান কাটতে হয়—এসব শিখে নেয় কচি হাতেই। মাটির সঙ্গে এদের হৃদ্যতা এতটাই গভীর যে মাটির গন্ধেই যেন তারা পেয়ে যায় জীবনের মানে।
চর শৌলমারীর কৃষক তাহের আলী বলছিলেন, ‘সকাল হলেই ছোটরা দৌড়ে চলে যায় খেতে। অনেকেই বাবার সঙ্গে হাল চাড়ে, কেউ সেচ দেয়, কেউ আবার ধান তোলে।’
১৮৭ দিন আগে
দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে শিশুশ্রম নির্মূল করতে হবে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
শিশুশ্রম বন্ধে সরকার আরও কার্যকরী উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে দেশে শিশুশ্রম হ্রাস পেয়েছে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে শিশুশ্রম নির্মূল করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
রবিবার সিলেটে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে শিশুশ্রম নিরসনবিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালের ২২ জুন শিশু আইন জারি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আইনটি এখন শিশু অধিকারের রক্ষাকবচ হয়ে কাজ করছে। শিশুশ্রম বন্ধের বিষয়ে আইএলও কনভেনশন দেশে শতভাগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া শিশুশ্রম বন্ধে সরকার আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করবে।
প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় কোনো শিশু শ্রমিক নেই উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিশুশ্রমকে অনুৎসাহিত করে তার পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তির শ্রমের শর্তে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে কাজ করব: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
ঈদের ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দিতে হবে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
৫৫৭ দিন আগে
প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
প্রাতিষ্ঠানিক কল-কারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই বলে দাবি করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে মহান মে দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বৃক্ষরোপণে জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ পরিবেশমন্ত্রীর
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুযায়ী শিশুশ্রম নিষিদ্ধ। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও শিশু শ্রমিক দেখা যায়- এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে একজন কাজের ছেলে রেখেছেন বা মেয়ে রেখেছেন। গরিব ঘরের সন্তানকে গ্যারেজে কাজ শেখানোর জন্য দিয়েছেন, পরবর্তী সময়ে সে হয়তো পরিবারের হাল ধরবে। এরকম অনেক ব্যাপার আছে। এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ নিলেও অনেক সময় বন্ধ করা সম্ভব হয় না। প্রাতিষ্ঠানিক কর-কারখানায় কোনো শিশু শ্রম নেই।’
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এবার প্রথম শ্রম সেক্টরে ঈদের আগে অন্যান্য বছর যেভাবে অরাজকতা হতো, সড়ক অবরোধ করত সেটা হয়নি। আগে মালিক-শ্রমিক একটা বৈরি সম্পর্ক ছিল। আমরা এখানে কনফারেন্স রুমে বসে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের সমস্যাগুলো টেবিলেই সমাধান করেছি। শ্রমিকদের পাওনা বেতন-বোনাস ছুটির আগেই তাদের দিতে সক্ষম হয়েছি।’
নজরুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘মালিকদের সমস্যা ছিল, সরকারের কাছে কিছু ইনসেনটিভ পাওনা ছিল, সেগুলো তাদের পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। যার কারণে শ্রমিকদের পাওনা যথাযথ সময়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এবার শ্রমিকরা সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করেছেন।’
এ বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শিশুশ্রম বন্ধের বিষয়ে আইএলও কনভেনশন বাংলাদেশ রেটিফাই করেছে। এটি বাস্তবায়নে শতভাগ চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনের বিষয়টি একটু উচ্চাভিলাসী। আমরা বলছি, যত দ্রুত সম্ভব আমরা করব। এ বিষয়ে প্রকল্পের আওতায় আমরা ইতোমধ্যে ১ লাখ ৯০ হাজার শিশুকে শ্রম থেকে সরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’
শিশুশ্রম নিরসনে মালিকদের সচেতন করা হচ্ছে জানিয়ে সচিব আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস, মালিকরা খুব দ্রুত এটা থেকে সরে আসবেন।’
আরও পড়ুন: মরিশাসের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর
৫৮৩ দিন আগে
কুড়িগ্রামে এক বিদ্যালয়ে ৮৫ শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে!
করোনায় দেশে প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাল্যবিয়ে বেড়েছে। দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ৮৫ জন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ে হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি কম হওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
সচেতন মহল মনে করছেন, দারিদ্রতা, যোগাযোগ বিচ্ছন্নতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার জন্য এই উপজেলায় বাল্যবিয়ের হার বেড়েই চলেছে। কোনভাবেই বাল্যবিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না।
তবে, জরিপ করে প্রকৃত বাল্যবিয়ে ও শিশুশ্রমে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা নির্ণয় করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বড়ভিটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ মতিউর রহমান খন্দকার জানান, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ৩৪৫ জনের মধ্যে ৮৫ জনের বাল্যবিয়ে হওয়ার বিষয়টি জানা গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাল্যবিয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণির দু’জন, সপ্তম শ্রেণির ১১, অষ্টম শ্রেণির ১৭, নবম শ্রেণির ২৮, দশম শ্রেণির ১৪ ও চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৩ জন রয়েছে। করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার আগে এই বিদ্যালয়ে প্রতিদিন গড়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ হলেও এখন উপস্থিতির হার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ।
ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুপুর, আশামনিসহ অনেকেই জানায়, ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার প্রথম দিনেই তাদের ১৭ জন বান্ধবীর বিয়ে হওয়ার খবর শুনে তাদের সবার মন খারাপ হয়ে গেছে।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমী আক্তার বলেন, ‘অনেকদিন পর স্কুল খুললো সব বান্ধবী এক সাথে মজা করবো, আনন্দ করবো। কিন্তু সেটা আর হলো না। স্কুল এসে দেখলাম আমার ২৮ জন বান্ধবী স্কুলেই আসে নাই। পরে জানতে পারি আমার ২৮ জন বান্ধবীসহ স্কুলের ৮৫ থেকে ৯০ জন শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে হয়েছে। জানি না আমার ভাগ্যে কি হবে।’
বাল্যবিয়ের শিকার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিথী খাতুনের বাবা ভ্যানচালক বাদশা মিয়া বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। ভ্যান চালিয়ে জীবন-জীবিকা চালাই। জানেন তো গরীব মানুষের দোষ বেশি। ভালো একনা (একটা) আলাপ আসছে তাই মোর মেয়েটা বিয়ে দিছং (দিয়েছি) ।’
বাল্যবিয়ের শিকার নিলুফা ইয়াসমিনের বাবা সাইকেল মেকার বাবলু মিয়া বলেন, ‘দেখতেছেন তো কোন রকম মানুষের সাইকেল ঠিক করেই যা পাই তাই দিয়ে কোন রকমে সংসার চলে। দেশে করোনা আসিয়া আমরা খুব কষ্টে ছিলাম। কোন সহযোগিতা পাইনি। দেখতে দেখতে মেয়েটাও বড় হয়ে গেল দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। তা একনা (একটা) ভালো সমন্ধ (ভালো ছেলে) পাওয়ায় আর দেরি করি নাই। সাথে সাথে মেয়েটাকে বিয়ে দিয়েছি। বাল্যবিয়ে দেয়াটা আমরা ভুল ছিল।’
আরও পড়ুন: করোনা: কুড়িগ্রামে ঝরে পড়েছে ৫০ হাজার শিশু, বাল্যবিয়ের শিকার বালিকারা
বন্যায় কুড়িগ্রামে ২৭ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি
১৫৩৪ দিন আগে
শিক্ষিত জাতি গঠনে শিশুশ্রমকে না বলতে হবে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
খুলনা, ১৪ সেপ্টেম্বর (ইউএনবি)- শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, উন্নত, সমৃদ্ধ ও শিক্ষিত জাতি গঠনে শিশুশ্রমকে না বলতে হবে।
২২৭৩ দিন আগে