দুর্নীতি
উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতি করলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না: দুদক চেয়ারম্যান
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একেবারে দুর্নীতির বিপক্ষে একজন মানুষ। তবে তার উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতি করলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, শুধু শাস্তি দিয়ে দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে পারস্পরিক আন্তরিকতা ও সুসম্পর্কই পারে দুর্নীতি অনেকাংশে লাঘব করতে। দুদক সেবাদাতা ও গ্রহীতাদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনে কাজ করে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে নগরীর স্টেশন রোডে দুদকের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কয়েকটি নিউজপেপারে এসেছে এই সরকারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার। আমরাও বিধিবদ্ধভাবে কাউকে ছাড় দেবো না। তবে কারো দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা যেন সুনির্দিষ্ট হয়।
তিনি বলেন, আমরা যদি শুধু বলি কোটি কোটি টাকা অমুক আত্মসাৎ করেছেন, দুর্নীতি করেছেন বললে হবে না। বলতে হবে কোথা থেকে করেছেন, কিভাবে করেছেন। এই অংশগুলো যদি আমরা প্রমাণ করতে না পারি, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেই অভিযোগ টিকবে না। এমনটি উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগগুলো যদি সুনির্দিষ্ট হয় তাহলে নিয়ে আসুন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গত এক বছরে অনেক মামলা হয়েছে এবং পুরনো অনেক মামলা বিগত সময়ে ধামাচাপা ছিল, সেই মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন মামলাগুলো দেখা হচ্ছে গুরুত্ব দিয়ে।
এছাড়াও অনেক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, বিশেষ করে সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকে, সেসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বাতিল
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্নীতি কমিশনের নিজস্ব কিছু বিধিবদ্ধ আইন আছে। আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। দুর্নীতি বাংলাদেশে অনেক ধরনের আছে, কিন্তু আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা সরকারি লোক। টাকা পাচার, অবৈধ আয় বিষয়ে নজর রাখার চেষ্টা করে দুদক। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা চলছে। আরও কয়েকটি বিষয় তদন্তাধীন। তদন্ত করে যদি শেষপর্যন্ত প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের ঝুলে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় সেই ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এরপর দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার আবু সাইমসহ প্রশাসনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
১১৫ দিন আগে
নতুন টেলিকম নীতিমালায় স্বৈরাচার-মাফিয়াদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হবে: তৈয়্যব
দেশের ইন্টারনেট-টেলিকম খাত বিগত স্বৈরাচারের দোসর ও মাফিয়া সিন্ডিকেটের কুক্ষিগত। এই সিন্ডিকেট ভাঙতেই নতুন টেলিকম নীতি করছে সরকার।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নতুন টেলিকম নীতির খসড়া প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমন অনেক লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু রয়েছে, যা বিশ্বের কোথাও নেই। এসব অদ্ভুত লাইসেন্স ব্যবস্থার আশ্রয় নিয়ে শত শত কোটি টাকা লুট করেছে এ খাতের সিন্ডিকেট ও মাফিয়ারা।
তৈয়্যব বলেন, মাত্র ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে লাইসেন্স নিয়ে প্রতিবছর এসব ভূইফোঁড় কোম্পানি ৪০০ কোটি টাকা করে লুট করছে। গত ১৫ বছরে এমন ৩ হাজার ৪০০’র বেশি কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছে তৎকালীন সরকার।
এসব কোম্পানি থেকে মাত্র ৫০ শতাংশ রাজস্ব পায় সরকার। বাকি টাকা পুরোটাই লুটপাট হয়। এই লুটপাট বন্ধে নতুন টেলিকম লাইসেন্সিং পলিসি নেওয়ার কাজ চলছে বলে জানান তৈয়্যব।
তিনি বলেন, এতদিন টেলিকম খাতের এসব লাইসেন্স পেতে সাত থেকে আটটি ধাপ পেরিয়ে আসতে হতো। এতে করে এ খাতে অনেক মধ্যস্বত্বভোগী সৃষ্টি হয়েছে, যারা টোল আদায়ের মতো করে অবৈধভাবে টাকা তুলছে।
নতুন লাইসেন্সিং ব্যবস্থায় দেশীয় কোম্পানির ক্ষতি হবে এটি মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, যাদের লাইসেন্সের মেয়াদ আছে, তাদের থেকে লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না। তবে নতুন করে লাইসেন্স নবায়ন করতে চাইলে নতুন নীতিমালার আওতায় আগাতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ১৭ কোটি ৫৭ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগই কর্মক্ষম
বাংলাদেশের ইন্টারনেট প্রসঙ্গে তৈয়্যব বলেন, এদেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা খুবই নিম্নমানের। এতদিন দেশের ইন্টারনেটের ৭০ শতাংশ ভারতনির্ভর ছিল। অনেক ইন্টারনেট ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বিদেশ থেকে ব্যান্ডইউথ নিয়ে আসতো।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়ম করেছি ইন্টারনেট ব্যবসা করতে হলে দেশের সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ ইন্টারনেট আনতে হবে। বিটিআরসির সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে- কেপিআই সিস্টেম চালু করে ইন্টারনেটের মান নির্ণয় করা হবে। যারা খারাপ মানের ইন্টারনেট দিবে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।’
এ ছাড়া, ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন স্পিড ৫ এমবিপিএস থেকে বাড়িয়ে ১২-১৫ এমবিপিএস করতে এ খাতের ব্যবসায়ী সংগঠনকে অনুরোধ করা হয়েছে। কেননা ৫ এমবিপিএস ইন্টারনেটকে আর যা হোক ব্রডব্যান্ড বলা যায় না, বলেন তৈয়্যব।
তৈয়্যব জানিয়েছেন, বিগত আমলে আইসিটি এবং টেলিকম খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এই দুর্নীতি রুখতে দুই খাতে আলাদা আলাদা শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আইসিটি খাতে নতুন করে কোনো দুর্নীতি হওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তৈয়্যব বলে, এ খাতে নতুন কোনো প্রকল্প নেওয়া হয়নি। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নতুন নীতিমালা তৈরিতে কাজ করছে সরকার।
১৫১ দিন আগে
যারা ক্ষমতায় যাবেন, তারা যেন দুর্নীতি না করেন: প্রত্যাশা উপদেষ্টা শারমীনের
আগামীতে যারা দেশের ক্ষমতায় আসবেন, অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স দেখিয়েছে, তারাও সেটা দেখান বলে মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
শনিবার (২১ জুন) ঢাকার এফডিসিতে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় দুর্নীতি আমাদের সব অগ্রযাত্রাকে উঁইপোকার মতো খেয়ে ফেলেছে। সে সময়ে প্রতিটি প্রকল্পেই দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতি নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার জিরো টলারেন্স দেখিয়ে আসছে। আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন, তারা যেন দুর্নীতি না করেন, সেই প্রত্যাশা থাকবে।’
‘একটি স্বৈরাচারী সমাজব্যবস্থার ভিতরে আমরা একটি সংবেদনশীল, যত্নশীল পলিসি প্রত্যাশা করতে পারি না। বিগত সরকার বাল্যবিবাহের মতো একটি সংবেদনশীল সামাজিক বিষয়ের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে বিয়ের বয়স ১৮ বছর থেকে কমিয়ে ১৬ বছর করে ভয়ঙ্কর উদাহরণ তৈরি করেছিল।’
ফলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আমাদের দীর্ঘদিনের অর্জন টেকসই হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, ‘যে দেশে আইন করে যৌতুক ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করা যায়নি, সেই দেশে আইন দিয়ে শিশুশ্রম বন্ধ করা কঠিন। শিশুশ্রম সম্মানজনক নয়। এটি শিশুর অধিকার হরণ করে।’
‘কোনো সমাজে শিশুশ্রম থাকলে সেখানকার অর্থনীতির নৈতিকতা থাকে না। দারিদ্র্য ও শিশুশ্রম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই, শিশুশ্রম নিরসনে দারিদ্র্য বিমোচনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে মহাদুর্যোগ দেখা দেবে: গোলাম পরওয়ার
উপদেষ্টা বলেন, ‘শিশুশ্রম নিরসনে রাষ্ট্র ও সমাজকে মুখোমুখি দাঁড় করানো যাবে না। রাষ্ট্র, সমাজ, প্রাইভেট সেক্টর, উন্নয়ন সহযোগীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’
প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করেছে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামে বিতার্কিকদের একটি সংগঠন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ.এইচ.এম সফিকুজ্জামান ও আইএলও বাংলাদেশ অফিসের শ্রম প্রশাসন বিভাগের প্রধান নীরান রামজুঠান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এবং মন্ত্রিপরষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন।
১৬৬ দিন আগে
রূপপুর ‘দুর্নীতি’: প্রচ্ছায়ার ৮ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থাকায় শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও শেখ রেহানার দেবর তারিক আহমেদ সিদ্দিকের মালিকানাধীন প্রচ্ছায়া লিমিটেডের ৮ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন আদালত। তাদের মধ্যে শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিকও আছেন।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
আজ দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম উল্লিখিত ব্যক্তিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন— তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী শাহিন সিদ্দিক, তার দুই মেয়ে বুশরা সিদ্দিক ও নওরীন তাসমিয়া সিদ্দিক, সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান, তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম এবং তাদের দুই মেয়ে শেহতাজ মুন্নাসী খান ও পারিজা পাইনাজ খান। তারা সবাই প্রচ্ছায়া লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার।
আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, ছোট বোন শেখ রেহানা, ছোট বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও অন্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ-সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের অনুসন্ধানে ৭ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ইউনিট-১ এ রিঅ্যাক্টর স্থাপন সম্পন্ন
প্রচ্ছায়া লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডাররা সপরিবারে গোপনে দেশত্যাগ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র পেতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে।
এতে সার্বিক অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ আরও ক্ষতির আশঙ্কা আছে। এজন্য উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাত্রা রহিত করা প্রয়োজন।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি তারিক আহমেদ সিদ্দিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
২১৯ দিন আগে
দুর্নীতি: শেখ রেহানার স্বামীসহ ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার স্বামীসহ তাদের মালিকানাধীন প্রচ্ছায়া লিমিটেডের ৮ পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তরা হলেন—শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক, শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও শেখ রেহানার দেবর তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী শাহিন সিদ্দিক, মেয়ে বুশরা সিদ্দিক ও নওরিন তাসমিয়া সিদ্দিক, সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান, তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম, তাদের দুই মেয়ে শেহতাজ মুন্নাসী খান এবং পারিজা পাইনাজ খান।
দুদকের পক্ষে উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার এ আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজিব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়), তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে প্রচ্ছায়া লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারগণ সপরিবারে গোপনে দেশ ত্যাগ করার চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্তসূত্রে তথ্য পাওয়ার কথা জানায় দুদক।
আরও পড়ুন: পাপনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
তাদের ভাষ্যে, অভিযুক্তরা দেশত্যাগ করে বিদেশে পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। তাছাড়া, সার্বিক অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ সমূহ ক্ষতির কারণ থাকায় অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চায় দুদক।
২০০৯ সালে টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিক প্রচ্ছায়া কোম্পানিটি চালু করেছিলেন বলে জানায় দুদক।
সম্প্রতি গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামক একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই কোম্পানির মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থপাচার করতেন শেখ হাসিনা।
২২০ দিন আগে
সুনামগঞ্জে হাওরে দায়সারা প্রকল্প, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
সুনামগঞ্জে হাওরের কান্দা কাটা গর্ত ভরাটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেওয়া প্রকল্প দায়সারা প্রকল্পে রূপ নিয়েছে। কৃষিবান্ধব এ প্রকল্পে মোটেও রক্ষা হয়নি হাওরের স্বার্থ। এরই মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমাও শেষ পর্যায়ে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় বছরে কাজ হয়েছে নামমাত্র।
পাউবো’র প্রকল্প কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদনের সঙ্গে সরেজমিনে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। কৃষকের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাউবো ও ঠিকাদার উভয়ে বরাদ্দের কোটি কোটি টাকা লুটপাটে তৎপর রয়েছে - এমন অভিযোগ কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতাদের।
একাধিক হাওরের গর্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সেরকম বাস্তবতাই চোখে পড়েছে। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ না জেনে, না বুঝে করা হচ্ছে বলে দাবি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের(পাউবো)।
জামালগঞ্জের হালি, শনি ও মহালিয়া হাওরের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের গর্ত (বাঁধে মাটি নেওয়ার ফলে সৃষ্ট গর্ত) ভরাটে এ উদ্যোগ ইতিবাচক। তবে পাউবো ও ঠিকাদারের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজ ২০ শতাংশও হয়নি। হাওর অভ্যন্তরে অসংখ্য গর্ত থাকার পরও কোনো গর্তই পুরোদস্তুর ভরাট করেনি ঠিকাদার। কিছু কিছু গর্তে খুবই সামান্য বালু ফেলা হয়েছে। আবার বেশিরভাগ গর্ত আগে যেরকম ছিল এখনও সে রকমই আছে। প্রায় দেড় বছর মেয়াদের এ প্রকল্পে সময় ক্ষেপণ ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হাওরপাড়ের মানুষ এ কাজের ব্যাপারে তেমন কিছু জানেও না। প্রাক্কলন তৈরির আগে ও পরে পাউবো এ নিয়ে কৃষকের সাথে কথা বলার প্রয়োজনও মনে করেনি। গর্তে বিটবালু ফেলে না ফেলে অনেকটা চুপিসারে এ কাজের ইতি টানতে চাইছে সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: নড়াইলে লবণাক্ততায় তিন ফসলি জমি এক ফসলিতে পরিণত
টেকসই বাঁধ, জীববৈচিত্র্য ও গোচারণ ভূমি রক্ষাসহ হাওরের নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। গর্ত এলাকা পরিদর্শনে গেলে এ প্রতিবেদকের কাছে হাওরের নিরাপত্তা ও কৃষকের ভাগ্য নিয়ে পরিহাস করা ছাড়া কিছুই মনে হয়নি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জরুরি বন্যা পুনঃনির্মাণ সহায়তা প্রকল্পের আওতায় জেলার দশটি হাওরে বরাদ্দ হয়েছে ১৪ কোটি ৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে জামালগঞ্জে ৩ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার, তাহিরপুরে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৭৮ হাজার, বিশ্বম্ভরপুরে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৮১ হাজার, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর মিলে ৫ কোটি ২১ লাখ ৪১ হাজার টাকা।
এ প্রকল্পের কাজ পায় নেত্রকোণার অসীম সিংহ ও টাঙ্গাইলের গুডম্যান এন্টারপ্রাইজ। প্রকল্পের সময়সীমা ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩০ মে পর্যন্ত রয়েছে। সময় ফুরিয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নদী থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ভিটবালু দিয়ে হাওরের পুরোনো গর্ত ভরাটের কথা উল্লেখ আছে অগ্রগতি প্রতিবেদনে।
এর মধ্যে পাউবো’র হিসাব অনুযায়ী জামালগঞ্জে ৫৫ ভাগ, তাহিরপুরে ৩৫ ভাগ, ধর্মপাশা-মধ্যনগরে ১৩ ভাগ এবং বিশ্বম্ভরপুরে ১৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিলের ১৫ ভাগ অর্থ ছাড় হয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। সবকিছু মিলে কাগজপত্রে কাজের অগ্রগতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে জামালগঞ্জে। কিন্তু জামালগঞ্জের হালি, শনি ও মহালিয়া হাওরের সরেজমিনের চিত্র বলছে সেখানে ২০ ভাগের বেশি কাজ হয়নি। স্থানীয় কৃষক ও হাওর সচেতন মানুষও পাউবো’র এমন কাণ্ডে ক্ষোভ জানিয়েছে।
মহালিয়া হাওরে মদনাকান্দি গ্রামের গরু চড়াতে আসা সুশীল দাস বলেন, ‘শুনছি গর্ত ভরাটের ডাক হইছে। যেডা ভরছে এইডা মনে করইন চার ভাগের এক ভাগ হইছে। যদি পুরাপুরি ভরাড হইত, তাহইলে হাওরে ঘাস হইলনে, গরু ঘাস খাইলনে, বান্ধের (বাঁধের) শক্তি থাকলনে, বাঁন ভাঙবার ভয় থাকলনানে, হাওর তল হইলনানে। এই ভরাডে হাওরের উপকার হওয়ার কথা। কিন্তু উপকার হইল কই? ’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘কার্তিক মাসে দেখছি কিছু কিছু জায়গা ভরাট করতাছে। পরে দেখছি তারা ড্রেজার লইয়া গেছে গা। এরপরে গর্ত ভরবার লাগি আর ড্রেজার আনা হইছে না।’
আরও পড়ুন: বরাদ্দ সংকটে হুমকিতে পবিপ্রবির ঐতিহ্যবাহী দুটি লেক
বেহেলী ইউনিয়নের আছানপুর গ্রামের কৃষক ও ইউপি সদস্য মো. ইউছুফ মিয়া বলেন, হালি হাওরের হেরাকান্দি অংশে সামান্য মাটি ফেলা হয়েছে। কোন গর্তই পুরোপুরি ভরাট করা হয়নি। এতে করে হাওরবাসীর কোনো উপকার হবে না। যারা কাজ করেছে তারাই লাভবান হবে।
মহালিয়া হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি সিরাজুল হক তালুকদার বলেন, সর্ব সাকূল্যে মহালিয়া হাওরের গর্ত ২০ শতাংশ ভরাট হয়েছে। যে কাজ হয়েছে, তাতে হাওরের কোনো কাজে আসবে না। যে সময় ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে, তখন জিজ্ঞেস করলে তারা জানিয়েছে হাওরের গর্ত সম্পূর্ণ ভরাট করা হবে। কিন্তু কাজ না করেই তারা সবকিছু নিয়ে চলে গেছে।
কাজের ভালো-মন্দ তদারকির জন্য কোনো টিমকে আসতে দেখেননি জানিয়ে বেহেলী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ও মদনাকান্দি গ্রামের কৃষক দেবাশীষ তালুকদার বলেন, ড্রেজিংয়ের পাইপ দিয়ে শুধু পানিই এসেছে বালু আসেনি। বালু না আসলে তো গর্ত ভরাট হবে না। শুধু লোকদেখানো কাজ হয়েছে। কোনো গর্তই ভরাট হয়নি। শুনেছি এ কাজ বাইরের এক কন্ট্রাক্টরের। তবে হরিপুরের ভজন তালুকদার এ কাজ তদারকি করছেন।
হাওর থেকে ফিরে জামালগঞ্জ উপজেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আক্কাছ মুরাদ বলেন, গর্ত ভরাটে কোটি টাকার প্রকল্প হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়েছে লাখ টাকার। অধিকাংশ গর্তে মাটিই পড়েনি। কিছু গর্তের দুই-এক জায়গায় সামান্য ভিটবালু ফেলা হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, দিনের পর দিন এভাবে আমাদের বোকা বানিয়ে ফায়দা লুটছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কোটি কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের বিপরীতে হাওরের কোনো উপকারই হচ্ছে না।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, এসব প্রকল্প দেওয়া হয় মূলত লুটপাটের জন্য। এ ব্যাপারে হাওরপাড়ের মানুষের সঙ্গে কোনো কথাবার্তা নেই। হাওরে গর্ত ভরাটের যে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে, স্থানীয় লোকজন তার কিছুই জানে না। কৃষকদের না জানিয়ে প্রকল্প নেওয়া মানে বরাদ্দ গিলে খাওয়ার পথ তৈরি করা। আর পাউবো তাই করে বেড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় সুনামগঞ্জের কৃষকরা
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, অনেক গর্তই ভরাট হয়েছে। বাকিগুলো করা হবে। হাওরে বিল-বাদাল আছে, বলা হচ্ছে মাছ মারা যাবে। কৃষকরা বলছেন জমির ফসল নষ্ট হবে। সে কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। সময় যদিও শেষ পর্যায়ে, তবে সময় আরও বাড়ানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির যে অভিযোগ সে ব্যাপারে অনেকেই অনেক কিছু জানে না। যতটুকু কাজ হয়েছে তার চেয়েও অনেক কম বিল দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১৫ শতাংশ বিল ছাড় হয়েছে। তাহলে অনিয়ম ও দুর্নীতি কোথায় হলো?
এ ব্যাপারে সাব-কন্ট্রাক্টর (সহ-ঠিকাদার) ভজন তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
২২০ দিন আগে
১১০১ কোটি টাকা দুর্নীতি: পিরোজপুর ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার
পিরোজপুর এলজিইডি’র এক হাজার ১০১ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের চার কর্মকর্তা ও এলজিইডি অফিসের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পিরোজপুর সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন— পিরোজপুর ডিস্ট্রিক্ট এ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার মো. মোহাসীন, এসএএস সুপার মো. মাসুম হাওলাদার ও নজরুল ইসলাম, সাবেক ডিস্ট্রিক্ট এ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার মো. আলমগীর হাসান এবং পিরোজপুর এলজিইডি অফিসের হিসাবরক্ষক একেএম মোজাম্মেল হক খান।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির মামলায় খালাস পেলেন ফালু
জানা গেছে, গেল ১৫ এপ্রিল পিরোজপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে ৮টি মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্য থেকে বুধবার পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সীমাহীন দুর্নীতির কারণে দেশব্যাপী আলোচনায় আসে পিরোজপুর এলজিইডি অফিস।
এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এলজিইডি’র প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্ত টিম পিরোজপুর এলজিইডি অফিসে সীমাহীন দুর্নীতির প্রমাণ পায়। কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি বিল পরিশোধ করা এবং এক হাজার ১০১ কোটি টাকা ব্যয়ে গরমিল পায় তদন্ত কমিটি।
সবশেষে দুদক বিষয়টি তদন্ত করে। পরে এর সত্যতা পেয়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পিরোজপুর এলজিইডি অফিস ও জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই সীমাহীন এ দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে।
২৩২ দিন আগে
দুর্নীতির মামলায় খালাস পেলেন ফালু
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালু।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রবিবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ আদালত-৫ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন এই রায় দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘ফালুর বিরুদ্ধে করা মামলার কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন।’
বিচারক আরও বলেন, ‘ফালুর যদি অবৈধ সম্পদ থাকে, সেটা তো অবরুদ্ধ করতে হতো। সেটাও তো করা হয়নি। সুতরাং এ মামলা থেকে তাকে খালাস দেয়া হলো।’
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমদ আলী সালামি রায়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় স্ত্রীসহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন ফালু। রায়ের পর হাসিমুখে নেতাকর্মীদের অভিনন্দন গ্রহণ করেন তিনি। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি বিএনপির এই নেতা।
২০০৭ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর মতিঝিল থানায় সাবেক সংসদ সদস্য ফালু ও তার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
আরও পড়ুন: মডেল মেঘনার আটকাদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্টের রুল
এরপর ফালু ও তার স্ত্রী হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। যেকারণে দীর্ঘদিন এ মামলার বিচারকাজ বন্ধ থাকে।
পরে হাইকোর্ট ফালুর স্ত্রীর মামলা গ্রহণ করে তাকে অব্যাহতি দেন। তবে তার আবেদন খারিজ করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ২৭ অগাস্ট মামলাটির অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, দুদকের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পেয়ে ২০০৭ সালের ১ মার্চ আইনজীবীর মাধ্যমে সম্পদের হিসাব দাখিল করেন ফালু। মামলার তদন্তে ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৮৬৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ এবং ১০ কোটি ৬০ লাখ ৪২ হাজার ৫১৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পায় দুদক।
২০০৪ সালে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন ফালু। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। এরপরে আওয়ামী লীগ সরকার থাকার সময় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
২৩৬ দিন আগে
দুর্নীতি: হাসিনা-রেহানাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউক থেকে ৩০ কাঠা প্লট গ্রহণের পৃথক তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের চার সদস্যসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করে এমন আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা, পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিকসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কি না, সে বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছে আদালত।
প্লট দুর্নীতির আরেক মামলায় এর আগে গত ১০ এপ্রিল শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে একই আদালত।
২৩৬ দিন আগে
ঘুষ-দুর্নীতি বেড়েছে, তাহলে কীসের সংস্কার হচ্ছে: মুরাদ
সংস্কারের মুলা ঝুলিয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা জেলা যুবদল সভাপতি ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল, রাষ্ট্র সংস্কার হবে, সরকারি অফিস-আদালতে ঘুষ দুর্নীতি কমবে। দেশে ঘুষ-দুর্নীতি তো কমেনি বরং বেড়েছে। তাহলে দেশে কীসের সংস্কার হচ্ছে?’
সোমবার (১৭ মার্চ) ধামরাই সদর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
মুরাদ বলেন, দেশের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবস্থা নাজুক। চুরি-ডাকাতি-ছিনতাইয়ে মানুষ অতিষ্ঠ। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপি বেহেশতে যাওয়ার টিকিট বিক্রি করে না: মুরাদ
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১দফার মধ্যেই রাষ্ট্রের সব সংস্কারের উল্লেখ রয়েছে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন করলে আলাদা করে আর কোন সংস্কার প্রয়োজন হবে নেই।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মুরাদ বলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। এটাই আমাদের দলের মূলনীতি। দলের আদর্শচ্যুত হয়ে এই দলে কেউ টিকে থাকতে পারেননি। তাই ভেবেচিন্তে কাজ করবেন। এমন কিছু করবেন না যাতে দলের সুনাম নষ্ট হয়।
ধামরাই সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্ব এবং এনায়েত হোসেনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় নেতা এম এ জলিল, এবাদুল হক জাহিদ, মনিরুল ইসলাম, আবুল হোসেন, মো. পলাশ, জসিমউদদীন, মুহাম্মদ রাকিব প্রমুখ।
আগের দিন রবিবার কুশুরা ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন লোকমান দেওয়ান।
২৬২ দিন আগে