মূল্য
পুঁজিবাজার: সপ্তাহজুড়ে চলল সূচক, লেনদেন ও শেয়ারের মূল্যপতন
সপ্তাহজুড়ে টানা পতনে সবদিক থেকে বড় রকমের হোঁচট খেয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার। সূচক কমার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে লেনদেন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চার কার্যদিবসের লেনদেনে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০৮ পয়েন্ট। ৫ হাজার ২০৫ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তাহ শুরু করে পতনে শেষমেষ সূচক ঠেকেছে ৫ হাজার ৯৭ পয়েন্টে।
সারা সপ্তাহের লেনদেনে প্রধান সূচক ২ শতাংশের বেশি কমার পাশাপাশি বাকি সূচকের রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে। শরীয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের সূচকও (ডিএসইএস) কমেছে ২৯ পয়েন্ট। এতে করে প্রায় আড়াই শতাংশ সূচক হারিয়েছে এই খাত।
গত সপ্তাহে ভালো কোম্পানির শেয়ারও ভালো করতে পারেনি। বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৫২ পয়েন্ট।
এক ধাক্কায় সূচক ২.৭২ শতাংশ কমে যাওয়ায় যারা ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন তারাও চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন।
ছোট ও মাঝারি কোম্পানির এসএমই সূচক কমেছে ৪.১৫ শতাংশ। এক সপ্তাহে ডিএসএমইএক্স সূচক হারিয়েছে ৪০ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে সূচকের হিসাবে ঢাকার পুঁজিবাজারের বেহাল দশা।
একই অবস্থা লেনদেনেও। আগের সপ্তাহে যেখানে গড় লেনদেন ছিল ৪৮৭ কোটি টাকা, এবার সেটি কমে নেমেছে ৩৯৯ কোটি টাকায়। এক ধাক্কায় লেনদেন কমেছে ১৮.১১ শতাংশ।
বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, যার ছাপ পড়েছে শেয়ার হাতবদলের পরিমাণের ওপরে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে যেখানে ৯৮ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে, তৃতীয় সপ্তাহে এসে তা কমে হয়েছে ৫৭ কোটি।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে আবারও পতন, সূচক কমলো ১০৮ পয়েন্ট
সারা সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৭৭টির। বিপরীতে ২৯৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হারিয়েছে দর, ২০টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
সপ্তাহজুড়ে মাত্র দুই খাতে রিটার্ন জমা বেড়েছে। করপোরেট বন্ড আর সাধারণ বীমা খাতে রিটার্ন জমা বাড়লেও বাকি খাতগুলো রীতিমতো ধুঁকছে। বিশেষ করে মিউচুয়াল ফান্ড ও সিরামিক খাতে রিটার্ন জমা কমেছে ৬ শতাংশের বেশি।
সামগ্রিক হিসাবে ব্যাংক খাতে শেয়ারের দাম বাড়লেও পৃথক প্রাতিষ্ঠানিক হিসাবে ভালো সময় যাচ্ছে না পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৪টিরই শেয়ারের দাম কমেছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৪১ শতাংশ এবং লেনদেন কমেছে ৩১ শতাংশ। ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পুরো সপ্তাহে দাম বেড়েছে মাত্র একটির, কমেছে ১৭টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সাধারণ বীমা খাতে ৮৫ শতাংশ দাম বাড়লেও জীবন বীমা খাতে দাম কমেছে ৫০ শতাংশের ওপরে। টেলিকম খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৩২ শতাংশ এবং আইটি খাতে কমেছে ৩৮ শতাংশ। ভালো করতে পারেনি প্রকৌশল খাতও, ১৬ শতাংশ দর হারিয়েছে এই খাত।
পতনের মধ্যেও ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে ম্যারিকো, বিচ হ্যাচারি ও এসিআই লিমিটেড। ম্যারিকো ২৫ কোটি ২০ লাখ, বিচ হ্যাচারি ২৫ কোটি ১০ লাখ ও এসিআই ২০ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সপ্তাহের শীর্ষ শেয়ারে জায়গা করে নিয়েছে দেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ‘বি’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটি চার কার্যদিবসে ২৪ শতাংশের ওপরে রিটার্ন দিয়েছে। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৫ টাকা যা এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ৩১ টাকা।
অন্যদিকে, ১৫ শতাংশের ওপর রিটার্ন হারিয়ে তলানিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ১২ টাকা থেকে কমে ১০ টাকায় নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: পতন যেন থামছেই না পুঁজিবাজারে
পর্যদুস্ত চট্টগ্রামও
ঢাকার মতো বেহাল দশা চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাপ্তাহিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এক সপ্তাহে সেখানকার সার্বিক সূচক কমেছে ২৫০ পয়েন্ট।
লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরি বাদ দিয়ে চট্টগ্রামের সিলেক্টিভ ইনডেক্স সিএসসিএক্সেও পতন হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। সপ্তাহজুড়ে ‘এ’, ‘বি’, ‘জি’ ও ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ারের সূচক কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামের বেঞ্চমার্ক সূচক সিএসই-৫০ কমেছে ১৭ পয়েন্ট এবং শরীয়াভিত্তিক সূচক সিএসআই কমেছে ২১ পয়েন্ট। এছাড়া সিএসই তালিকাভুক্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কোম্পানির এসএমই সূচক কমেছে ৪.৫৭ শতাংশ।
সারা সপ্তাহে ৩০১টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৫টির, কমেছে ২১৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনে শীর্ষে আছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড। চার কার্যদিবসে ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৮ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের বাজার মূল্য ৮৭ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৮ টাকা।
এদিকে, পুরো সপ্তাহে শেয়ারপ্রতি ২০ টাকা দর হারিয়ে তলানিতে আছে শমরিতা হাসপাতাল। সিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। চার দিনে কোম্পানিটির ৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
আরও পড়ুন: দোদুল্যমান সূচকে লেনদেন চলছে পুঁজিবাজারে
হতাশ বিনিয়োগকারীরা
টানা দরপতনে বাজারের ওপর হতাশ হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। অনেকেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট শূন্য করে বাজার ছাড়ছেন।
সেন্ট্রাল ডিপোজেটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) বিও অ্যাকাউন্টের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঈদের ছুটির আগে শূন্য ব্যালেন্সের বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১০, যা সর্বশেষ কার্যদিবসে বেড়ে হয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬৭। অর্থাৎ এই কদিনে ৪ হাজার ১৫৭ জন বিনিয়োগকারী নিজেদের বিও অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নিয়েছেন।
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী তারেক হোসেন জানান, ‘বাজার সংস্কারে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। যাদের জরিমানা করা হয়েছে এবং কারসাজির জন্য আটক করা হয়েছে, তাদের বিচারেরও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। সব মিলিয়ে বাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।’
আরেক বিনিয়োগকারী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কোনো দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। খারাপ কোম্পানি থেকে বেরিয়ে আসতে বাই-ব্যাক আইন চালু কথা বারবার বলা হলেও কমিশন সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করছে না। আবার যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে সর্বহারা হয়েছেন তাদের ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।’
মার্জিন ঋণ প্রসঙ্গে বিনিয়োগকারী ফরিদুর রহমান বলেন, “এই ঋণের কারণে খারাপ কোম্পানির শেয়ারে ধস নামলে বাধ্য হয়ে ভালো কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিতে হয়। এতে করে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অনেক কোম্পানির জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির দাম কমে। সব মিলিয়ে বাজারে সৃষ্টি হয় পতনের ধারা।”
আরও পড়ুন: পতনে পর্যদুস্ত পুঁজিবাজার
আইপিও কেন আসছে না?
পুঁজিবাজারের মুখ থুবড়ে পড়ার বড় আরেকটি কারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে ভালো কোম্পানির আগ্রহ না থাকা। চলতি বছর ভালো কিছু কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত আর আলোর মুখ দেখেনি।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক পদের এক কর্মকর্তা জানান, ‘চলতি বছর নতুন আর কোনো আইপিও আসার সম্ভাবনা নেই। ভালো ভালো কোম্পানিগুলো বাজারে বিনিয়োগে ভরসা পাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘সুপারিশ অনুযায়ী কোম্পানি তালিকাভুক্তির নিয়মনীতি ঢেলে সাজাচ্ছে বিএসইসি। গেজেট আকারে নতুন আইপিও আইন আসতে আসতে সেপ্টেম্বর মাস হয়ে যাবে। নতুন আইনের আওতায় নতুন কোম্পানি আসতে আরও পাঁচ-ছয় মাস। এতে করে ২০২৬ সালের মার্চ-এপ্রিলের আগে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ।’
গত বছর আগস্টে দায়িত্ব নেওয়া নতুন কমিশন এতদিনে কেন ভালো কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে পারল না, এ প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা জানান, ‘যেসব কোম্পানি ভালো মুনাফা করছিল, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে তাদের প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদে পরিবর্তন এসেছে। নতুন পর্ষদের অধীনে অনেক কোম্পানি এখনও গুছিয়ে উঠতে পারেনি। এদিকে ব্যাংক ঋণের সুদহার আগের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে কোম্পানির মুনাফার ওপরে। সব মিলিয়ে কোম্পানিগুলো ভালো করতে শুরু করলে তারা নিজ থেকেই পুঁজিবাজারের দিকে ঝুঁকবে।’
আরও পড়ুন: সপ্তাহের শুরুতেই সূচকের বড় পতন দেখল পুঁজিবাজার
ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে চাইলে তাদের বড় অঙ্কের কর ছাড়ের ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা। দেশের বড় বড় কোম্পানিকে নানা ধরনের সুবিধা দিয়ে বাজারে আনতে পারলে বাজার চাঙ্গা হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
২২৯ দিন আগে
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার বিশেষ নজর দিয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উপসচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উপসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ভোক্তাদের ভোগান্তি দূর করতে সরকার বাজার তদারকি জোরদার করেছে।
তিনি বলেন, আপনারা এরই মধ্যেই জেনেছেন যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ। বাজার তদারকি করার সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে।’
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও প্রেস উপসচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
অপূর্ব বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কেন্দ্র ও জেলা পর্যায়ের টাস্কফোর্সের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক বাজার পর্যবেক্ষণ করছে।
তিনি বলেন, ‘কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে জরিমানা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি শিগগিরই এটি (দাম) নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
অপূর্ব বলেন, প্রতিটি জেলায় দুজন করে ছাত্র প্রতিনিধি নিয়ে ১০ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ৫ লাখ ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।
দুর্গাপূজার নিরাপত্তা প্রসঙ্গে উপপ্রেস সচিব বলেন, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়টিকে আন্তরিকভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সফর অত্যন্ত সফল ও ঐতিহাসিক: প্রেস সচিব
তিনি বলেন, সারাদেশের সব পূজামণ্ডপে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত টহলসহ আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) অতিরিক্ত সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া দুর্গাপূজার ছুটি চলবে টানা চারদিন।
চলতি মাসের শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় এই বর্ধিতকরণ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম মঙ্গলবার সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, 'দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপনের জন্য এই অতিরিক্ত ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে।’
এছাড়া বৌদ্ধ সম্প্রদায় যাতে নির্বিঘ্নে 'কঠিন চিবরদান' উদযাপন করতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অপূর্ব বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ১৬০০০ নামে একটি হটলাইন চালু করেছে, যা আগামী দুই দিনের মধ্যে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ শুরু আজ
৪২২ দিন আগে
ভর্তুকি ও মূল্য বাড়ানো সত্ত্বেও ২০২৫ সালে বাড়বে পিডিবির লোকসান: সিপিডি
সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে ২০২৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চলমান লোকসান ১৯৬ শতাংশ বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা হবে বলে মনে করছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
এছাড়াও বিদ্যুতের দাম ও সরকারি ভর্তুকি বাড়ানোর পরও পিডিবি বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করছে সিপিডি।
রবিবার (২৩ জুন) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাকে 'জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, চ্যালেঞ্জ ও প্রস্তাবিত করণীয়' শীর্ষক উপস্থাপনায় এসব কথা তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
আরও পড়ুন: ট্যানারি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২৭৭৬ টাকা করার সুপারিশ সিপিডির
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. মোয়াজ্জেম বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারের পরিকল্পনা অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা। সেসময় ২৫ শতাংশ বাড়তি মজুদ থাকলেও সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎই যথেষ্ট।
তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত সক্ষমতার কারণে জ্বালানি সংকট এবং বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতা থাকায় চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও লোডশেডিং হচ্ছে।
ড. মোয়াজ্জেম বলেন, আবার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। ফলে পিডিবির লোকসান বাড়ছেই। এর প্রভাবে গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দামও বাড়ছে।
সভায় বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও সরকার ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুতের অতিরিক্ত খরচ (ক্যাপাসিটি চার্জ) বহন করছে। এই সক্ষমতা দেশের অর্থনীতির জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদন না করলেও তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। এই চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা এখন সরকারি তহবিল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এখন ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। ব্যবহার না করা হলেও উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে কেন?
সিপিডির গবেষণা পরিচালক আরও বলেন, সরকার এখন যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করেছে তা ২০৩০ সালেও প্রয়োজন হবে না। আজ থেকে ৬ বছরের মধ্যে চাহিদা ১৯৪০০ মেগাওয়াটে পৌঁছাতে পারে। ২৫ শতাংশ মজুদ বিবেচনায় নিলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রয়োজন ২৩ হাজার ২৫২ মেগাওয়াট।
তিনি আরও বলেন, সক্ষমতা বাড়লেও দেশে লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রীষ্মে গড় লোডশেডিং হয় ১১০০ মেগাওয়াট। বাজেটে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত নিয়ে স্পষ্ট কিছু নেই। এ খাত নিয়ে সরকার কী করবে সে বিষয়ে সবাই অন্ধকারে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ কে আজাদ।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ দাবি করে দাম বাড়ানো হলেও লোডশেডিং কমেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ কে আজাদ আরও বলেন, ‘৭-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস এনে ডিজেল দিয়ে কারখানা চালাতে হয়। এতে খরচ বেড়েছে। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’
সভায় আরও ছিলেন- বুয়েটের পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধ্যাপক ড. এম তামিম, বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের রেক্টর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, ভোক্তা অধিকার সংস্থা ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
আরও পড়ুন: বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিফলন নেই: সিপিডি
আর্থিক অভিজাতদের সহায়তা করতে সাংবাদিকদের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা: সিপিডি
৫২৯ দিন আগে
অনাবাসিক নাগরিকদের পরিষেবা মূল্যের ওপর নির্দিষ্ট হারে করারোপ বিবি’র
সেবার বিনিময়ে বহির্মুখী রেমিটেন্সের জন্য অনাবাসী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আয় থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে কর কেটে নেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বহির্মুখী রেমিটেন্সের জন্য কর কমানোর নির্দেশনা সম্বলিত একটি চিঠি ছিল।
বুধবার এ মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি বিভাগ একটি সার্কুলার জারি করে এবং বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে নিয়োজিত অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলোতে পাঠায়।
অনাবাসীদের চালান মূল্য পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে এনবিআরের চিঠির নির্দেশনা অনুসারে প্রযোজ্য হারে কর কেটে অবশিষ্ট অর্থ পাঠাতে হবে।
অনাবাসীকে সম্পূর্ণ বিল পাঠানোর ক্ষেত্রে, হিসাবকৃত বিলের ট্যাক্স কেটে রাখতে হবে এবং পরিশোধ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ব্যাংক কর্মকর্তা, কর্মচারীদের টিকা সনদ থাকতে হবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো অনাবাসিক ব্যক্তিকে পরামর্শ সেবার জন্য ১০০ টাকা মূল্যের চালান পাঠান, তাহলে ব্যাংকগুলো ৮০ টাকা পাঠাবে, আর কর কাটবে ২০ টাকা।
কোনো ব্যক্তির পরামর্শ সেবা হিসাবে ১০০ টাকা নগদ মূল্য পাঠানোর ক্ষেত্রে, ব্যাংকগুলো উৎস আয়কর সহ কর হিসাবে ২৫ টাকা কমিয়ে আনবে এবং অনাবাসী বিদেশি নাগরিকদের ৭৫ টাকা পাঠাবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী, অনাবাসীর নামে কর দিতে হবে।
উৎসে কর কেটে নেয়া ও জমার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে যে কোনো সময় তা আদায় করা যাবে। এই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ খেলাপি পরিমাণে প্রতি মাসে ২ শতাংশ সহজ সুদের হারে পুনরুদ্ধারযোগ্য হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেতে যাচ্ছে সাকিবের পিপলস ব্যাংক
সাইবার হামলা মোকাবিলায় সবচেয়ে বেশি সক্ষম বাংলাদেশ ব্যাংক
১৩৯৪ দিন আগে
কুষ্টিয়ার বাজারে হঠাৎ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি
কুষ্টিয়ার বাজারে চিনি, আটা, সোয়াবিন তেল, কালাইয়ের ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে।
এর মধ্যে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চিনির দাম কেজি প্রতি ৮ টাকা, লুজ সোয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা, আটা ও ময়দার দাম কেজি প্রতি ৬ টাকা, কালাইয়ের ডাল ৬ টাকা এবং এ্যাংকর ডাল কেজি প্রতি ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজরে হঠাৎ করে নিত্য প্রয়োজনীয় এসব দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কোন যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ক্রেতারা। চিনি, তেল, আটা, ডালসহ প্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকার কারণেই কুষ্টিয়ার বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি পেয়ে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
সরেজমিনে কুষ্টিয়া শহরের পৌর বাজার এবং বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে এক সপ্তাহ আগে বাজারে লুজ সোয়াবিন তেল ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই সোয়াবিন তেল এখন ১৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বউ-শাশুড়ির রহস্যজনক মৃত্যু
সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে চিনির। দাম বৃদ্ধির কারণে ক্রেতা সাধারণের কাছে এখন চিনির মিষ্টি স্বাদ অনেকটাই যেন নোনতা স্বাদে পরিণত হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চিনির দাম কেজি প্রতি প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে। আগে চিনির কেজি ছিল ৭০ টাকা। এখন সেখানে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আটা ও ময়দা ২৪ টাকা কেজির পরিবর্তে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে কালাই এবং এ্যাংকর ডালেরও। কালাইয়ের ডাল আগে ১২৪ টাকা কেজি ছিল। এখন সেখানে কেজিতে ৬ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ্যাংকর ডাল আগে ছিল ৩৪-৩৫ টাকা কেজি। আর এখন ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় করোনা উপসর্গে ১ মৃত্যু, শনাক্ত ৩২
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। কুষ্টিয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাঁরা নিয়মিত মনিটরিং করছেন। সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে কিনা এটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, অসদুপায় অবলম্বন করে কেউ যদি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে থাকে তবে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৫৫৫ দিন আগে