পাসপোর্ট
কুমিল্লায় পাসপোর্ট তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২৪
কুমিল্লায় পাসপোর্ট তৈরির বিভিন্ন কাগজ ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় মূল হোতাসহ ২৪ জনকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার ভোরে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাসপোর্ট দালাল শাকিল আহমেদসহ ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-২ এর একটি দল।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০ টি পাসপোর্ট ১০৮ টি ডেলিভারি স্লিপ, ২৯ টি জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি, নগদ ৪৩ হাজার টাকা, পাসপোর্ট তৈরির বিভিন্ন রকমের সীল ও প্যাডসহ পাসপোর্ট তৈরি সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে আহমদিয়া ইস্যুতে সংঘর্ষ: মামলার আসামি ৮২০০, গ্রেপ্তার ৮১
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পাসপোর্ট করে দেয়ার নামে অধিক অর্থ আদায় করতো বলে র্যাবের কাছে স্বীকার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে বলে জানান কোম্পানি অধিনায়ক মো. শাকিল।
আরও পড়ুন: পুলিশকে পিটুনির অভিযোগে যুব গেমসের কোচসহ ১১ খেলোয়াড় গ্রেপ্তার
প্রবাসী বাংলাদেশিরা কিভাবে ই-পাসপোর্ট করবেন: দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
একজন নাগরিকের জন্য তার পাসপোর্টটি তার নিজের দেশে যতটা না দরকার তার চেয়েও বেশি দরকার অভিবাসনের মাধ্যমে তিনি যে দেশে যাচ্ছেন সেই দেশে। সেখানে তার অভিবাসনের কারণ ও উদ্দেশ্যের পাশাপাশি দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য একমাত্র অবলম্বন এই পাসপোর্ট। তাই সেই দেশে থাকার মুহূর্তগুলোতে পাসপোর্টের কার্যকারীতার ব্যাপারে যথেষ্ট খেয়াল রাখা উচিত।
বর্তমানে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইরের দেশের দূতাবাসগুলোতেও ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম। সেই দেশগুলোতে বাংলাদেশের মতই পাসপোর্টের নবায়নকারীদের দেয়া হচ্ছে নতুন ই-পাসপোর্ট। চলুন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট নবায়ন করার উপায় জেনে নেয়া যাক।
ই-পাসপোর্ট-এর জন্য আবেদনের যোগ্যতা
বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাসপোর্টধারীদের ন্যায় বিদেশ- বিভুঁইয়ে থাকা বাংলাদেশিদেরকেও পাসপোর্ট নবায়ন এবং নতুন ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এজন্য পূর্বশর্তগুলো হলো-
আবেদনকারীর অবশ্যই একটি বৈধ বাংলাদেশি এনআইডি(জাতীয় পরিচয়পত্র) কার্ড এবং অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র থাকতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন সনদের ক্ষেত্রে, আবেদনকারীর নিজের ও পিতামাতার নামের সঙ্গে যেন অবশ্যই আবেদনের সংশ্লিষ্ট তথ্যের মিল থাকে। নতুবা আগে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র ঠিক করতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
উপরন্তু, আবেদনকারী মার্কিন নাগরিক হয়ে থাকলে, তাকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জারি করা দ্বৈত জাতীয়তা সনদপত্র দেখাতে হবে। অন্যথায়, আবেদনকারীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার জন্য থাকতে হবে বৈধ কাগজপত্র যেমন- বৈধ ভিসা বা স্থায়ী বাসিন্দা কার্ড।
বাংলাদেশি পাসপোর্টের সঙ্গে এক বছরের বেশি মেয়াদ থাকলেও আবেদন করা যাবে না যদি না সেই পাসপোর্টধারীদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের স্বপক্ষে কোন বৈধ প্রমাণপত্র থাকে।
প্রবাসীদের পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- বারকোড এবং অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখসহ পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদনের সারাংশ
- অনলাইনে জমাকৃত আবেদনের প্রিন্ট কপি
- পাসপোর্ট নবায়ন ফি পরিশোধের মানি অর্ডার/ক্যাশিয়ার চেক/অফিসিয়াল চেক
- বর্তমান বাংলাদেশি পাসপোর্টের মূল কপি
- বাংলাদেশি এনআইডি কার্ড কপি অথবা জন্ম সনদের অনলাইনে নিবন্ধনের যাচাইকরণ ওয়েবপৃষ্ঠার কপি সহ জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
- মার্কিন নাগরিক হলে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বৈত জাতীয়তা সনদপত্রের অনুলিপি
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের প্রমাণপত্রের অনুলিপি, যেমন বৈধ ভিসা, স্থায়ী বাসিন্দা কার্ড, অথবা একটি নোটারাইজড হলফনামা যেখানে উল্লেখ থাকবে যে আবেদনকারী মার্কিন নাগরিক নন।
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ/তালাক নিবন্ধন শংসাপত্রের অনুলিপি
- বর্তমান বাংলাদেশি এমআরপি(মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট)-এর তথ্যে কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন হলে তার স্বপক্ষে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র
আরও পড়ুন: অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে সংশোধনের নিয়ম
অনলাইনে প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট নবায়ন করার পদ্ধতি
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য অনলাইনে পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন পদ্ধতি
বাংলাদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের মত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও অনলাইনে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে যেয়ে ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করবেন। শুরুতেই বাংলাদেশ থেকে আবেদন করা হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়া হবে। এখানে না উত্তর দেয়ার পর বাছাই করতে হবে দেশ ও বাংলাদেশ দূতাবাসের নাম। তারপর নাম, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল ঠিকানা এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
নামটি অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদ অনুসারে হতে হবে। ইমেইল ঠিকানা যাচাইয়ের মাধ্যমে নিবন্ধনের পর ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটে লগইন করতে হবে। তারপর শুরু হবে পাসপোর্ট নবায়নের মুল আবেদন।
এখানে ব্যক্তিগত সেকশন থেকে শুরু করে বিতরণের ধরণ পর্যন্ত যথাযথ তথ্যাবলি দিয়ে পূরণ করতে হবে। তন্মধ্যে আইডি ডকুমেন্ট সেকশনে ‘Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP)’ অপশনটি বাছাই করতে হবে। এরপরে পাসপোর্ট আবেদনের কারণ হিসেবে Expired অপশনটি বাছাই করে বর্তমান পাসপোর্টের নাম্বার, ইস্যু ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লিখে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
অতঃপর পুরো আবেদনপত্রটি সফলভাবে শেষ হলে সাবমিট করার পর ডাউনলোড করে তার একটা প্রিন্ট নিয়ে নিতে হবে।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের বাইরে থেকে কিভাবে পাসপোর্ট নবায়ন ফি দিবেন
মানি অর্ডার/ক্যাশিয়ার/অফিসিয়াল চেক (অনুর্ধ্ব ৩০ দিন)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ দূতাবাস বরাবর নবায়ন ফি প্রদেয় করতে হবে। নগদ বা ব্যক্তিগত চেক বা অনলাইন পেমেন্ট গ্রহণ করা হয় না। তাই অনলাইন আবেদন করার সময় অফলাইন পেমেন্ট নির্বাচন করতে হবে। দূতাবাসে বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তির সময় আবেদনকারীকে মানি অর্ডার/ক্যাশিয়ার/অফিসিয়াল চেক ব্যক্তিগতভাবে জমা দিতে হবে।
দেশের বাইরে বাংলাদেশি ই-পাসপোর্ট নবায়ন ফি
ই -পাসপোর্ট ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠার হয়ে থাক। প্রবাসীরা ৫-বছর বা ১০-বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে পারবেন। পাসপোর্ট ডেলিভারি রেগুলার, বা জরুরি ভিত্তিতে নিতে পারেন।
বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট নবায়ন ফী বিভিন্ন। প্রবাসীগণ যে দেশে অবস্থান করছেন বা যে দেশ থেকে পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান সেই দেশের দূতাবাসের ওপর নির্ভর করে এই ফি ভিন্ন হয়।
আরও পড়ুন: ই-পাসপোর্টে ভুল তথ্য সংশোধন পদ্ধতি
পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন কিভাবে ও কোথায় জমা দিবেন
যুক্তরাষ্ট্রে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর পূর্বে ইমেলের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় জানানো হতো। কিন্তু এখন অনলাইনে আবেদন করার প্রক্রিয়া চলাকালীন অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় নির্ধারণ করতে হবে। আবেদনের প্যাকেজ বা পাসপোর্ট আবেদন সংক্রান্ত কোন নথি ডাকযোগে পাঠানো যাবে না।
আবেদনকারীকে অ্যাপয়েন্টমেন্টের নির্ধারিত তারিখে সশরীরে দূতাবাসে আসতে হবে। অতঃপর বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তির পরে আবেদনকারীর বর্তমান পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। তালিকাভুক্তি সম্পূর্ণ করার আগে খসড়া ডেলিভারি স্লিপ দেখানো হবে। সেখানে সমস্ত তথ্য যাচাই করার পর আবেদনকারী তাতে স্বাক্ষর করে তার নিজের কপিটি সঙ্গে নিয়ে আসবেন। আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা কোন দূতাবাসের আওতায় পড়েছে তা জানা যাবে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট নবায়নে কত দিন সময় লাগে
সাধারণত এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে ২১ কার্যদিবস, রেগুলার ডেলিভারিতে ৪৫ কার্যদিবস লাগে। তথ্য অসামঞ্জস্যতা বা সংশোধনের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণের সময়ে আরো বেশি সময় লাগতে পারে। তাছাড়া ই-পাসপোর্ট ঢাকা থেকে প্রস্তুত হয়ে বিতরণ হয় বলে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ সময় লেগে যায়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ই-পাসপোর্ট হাতে পেতে আনুমানিক ৭৫ দিন সময় লাগে। জার্মানিতে ৮-১০ সপ্তাহ; কখনও কখনও এর চেয়েও বেশি সময় লেগে যায়।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট নবায়ন সমস্যা সমাধানে সৌদি-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ
নবায়নকৃত পাসপোর্ট সংগ্রহ
তালিকাভুক্তির সময় আবেদনকারী যদি একটি প্রিপেইড ও স্ব-ঠিকানাযুক্ত রিটার্ন খাম (শুধুমাত্র ইউএসপিএস) ট্র্যাকিং নম্বর এবং নিজের বাংলাদেশি এনআইডির অনুলিপি প্রদান করেন তাহলে তাকে নতুন পাসপোর্ট ডাকযোগে পাঠানো হবে।
নতুন পাসপোর্ট ঢাকা থেকে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে গৃহীত হয়। এ সময় সাধারণ টেমপ্লেট সহ একটি সিস্টেম জেনারেট করা ইমেল ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগ থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার জন্য আবেদনকারীর নিকট একটি ইমেইল যায়। এই বার্তাপ্রাপ্তির পর রিটার্ন খাম এবং এনআইডি এর কপি প্রদানকারীরা নিজের বর্তমান ঠিকানায় ডাকযোগে নতুন পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
যাদের বাংলাদেশি এনআইডি নেই তাদেরকে যে কোনো কর্মদিবসে বিকাল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে দূতাবাসে যেয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইট থেকেই পাসপোর্ট ইস্যু হওয়ার আপডেট পাওয়া যায়।
শেষাংশ
প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট নবায়ন করার উপায়টি আগের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট নবায়ন থেকেও সহজ। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রটি অনলাইন নিবন্ধিত না থাকলে অথবা পাসপোর্টের তথ্যে সঙ্গে মিল না থাকলে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হবে নবায়নের জন্য আবেদনকারীদের।
বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে প্রবসীদের, কেননা প্রবাসে পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ছয় মাস আগেই পাসপোর্টটি নবায়ন করা জরুরি। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে অভিবাসনের সময়ে পাসপোর্টের সঙ্গে সম্পর্কিত যাবতীয় নথিপত্র দেশ থেকেই ঠিক করে যাওয়া উত্তম।
আরও পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
ই-পাসপোর্টে ভুল তথ্য সংশোধন পদ্ধতি
দেশে ও দেশের বাইরে প্রতিটি নাগরিক ও অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথিটির নাম পাসপোর্ট। বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম পুরোদমে চালু হওয়ার কারণে নতুন পাসপোর্টের আবেদনকারী এবং এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) নবায়নকারী সকলকেই ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করা হচ্ছে। আগামী ১৯ জানুয়ারি এই কার্যক্রমের তিন বছর হতে যাচ্ছে। হাতে পাওয়া ইলেক্ট্রনিক চিপযুক্ত নতুন পাসপোর্টটিতে তথ্যের নানা ভুল-ভ্রান্তি ধরা পড়তে পারে, যা আবেদনকারী এবং পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা উভয়ের মাধ্যমেই সংঘটিত হতে পারে। তাই যারা ই-পাসপোর্ট হাতে পেয়ে গেছেন তাদের পাশাপাশি নতুন আবেদনকারীদেরও ই-পাসপোর্টে ভুল তথ্য সংশোধন পদ্ধতি জেনে রাখা আবশ্যক। এই নিবন্ধে সেই ভুল সংশোধনের নিয়ম বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
পাসপোর্ট সংশোধনের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ই-পাসপোর্ট সংশোধন
২০২১-এ দুইবার ও ২০২২-এ একবার প্রজ্ঞাপনের পর সর্বশেষ গত ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ তারিখে পাসপোর্ট সংশোধনের নতুন প্রজ্ঞাপন দিয়েছে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। ফলশ্রুতিতে, পূর্বের পরিপত্রগুলো বাতিল হয়ে এখন এই প্রজ্ঞাপনটিই কার্যকর আছে এবং সেঅনুসারেই সকলকে ই-পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধন করতে হবে।
এখানে পাসপোর্টের ওপর জাতীয় পরিচয়পত্রকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মধ্যে তথ্যের কোন গরমিল থাকলে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যানুসারে পাসপোর্ট নতুন করে প্রস্তুত করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক তথা অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সীদের বেলায় জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এখানে প্রয়োজন সাপেক্ষে জেএসসি/জেডিসি/এসএসসি/দাখিল/উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়/কারিগরি ও সমমানের যে কোনে একটি সনদপত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই নথিপত্র ছাড়াও তথ্য সংশোধনের জন্য দরকার হবে লিখিত আবেদন ও অঙ্গিকারনামার, যেগুলোর ফর্ম পাওয়া যাবে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। এছাড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসেও পাওয়া যাবে এই ফর্মগুলো। তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদনকারীকে এগুলো স্বহস্তে পূরণ ও স্বাক্ষর করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
ই-পাসপোর্টে ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
-জাতীয় পরিচয়পত্র (প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ)
-জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি জমাদানকারীদের ক্ষেত্রে পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও জমা দিতে হবে।
-জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি, দাখিল, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি ও সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদগুলো থেকে যে কোন একটি সনদপত্র
-অভিবাসীদের ক্ষেত্রে পিআর(পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট)/জব আইডি/স্টুডেন্ট আইডি কার্ড/ড্রাইভিং লাইসেন্স
-পুরাতন ই-পাসপোর্টের মূল কপি এবং যে পৃষ্ঠাগুলোতে পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত ও ইমিগ্রেশনের তথ্য দেয়া আছে সেগুলোর ফটোকপি
-ই-পাসপোর্ট নবায়নের জন্য অনলাইন আবেদনের রঙিন মুদ্রিত কপি
-অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহ ই-পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদনের সারাংশের মুদ্রিত কপি
-অফলাইনে ই-পাসপোর্টে নবায়নের ফি পরিশোধ করলে ব্যাংক থেকে প্রদানকৃত ফি জমা রশিদ
-ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট অথবা পাসপোর্ট অফিসে প্রদর্শিত নমুনা ফর্মে লিখিত আবেদন ও অঙ্গীকারনামা
-সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে সরকারি অনাপত্তি/অধ্যাদেশ সনদপত্র
-বৈবাহিক অবস্থা সংযোজন, পরিবর্তন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে কাবিননামা
-স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বা গ্যাস বিলের কপি
যাদের কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নেই, তাদের নাম, বয়স, পিতামাতার নাম আংশিক বা সম্পূর্ণ পরিবর্তন করতে হলে আদালতের হলফনামার প্রয়োজন হবে।
পাসপোর্ট সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা বিভাগ থেকে প্রদত্ত তথ্য যাচাই হতে পারে।
আরও পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
ধাপে ধাপে ই-পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধন পদ্ধতি
ই-পাসপোর্টে নতুন কোন তথ্য সংযোজন, পুরনো তথ্যের নির্দিষ্ট কোন অংশ বিয়োজন, তথ্যের পরিবর্তন বা ভুল তথ্যের সংশোধন সবগুলোরই প্রক্রিয়া একই।
ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদনের সার্বিক প্রক্রিয়াকে দুইভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে।
- ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ও অঙ্গীকারনামা পূরণ।
- ই-পাসপোর্ট নবায়নের জন্য অনলাইন আবেদন।
- ই-পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফরম পূরণ।
এই প্রথম ধাপে সরাসরি চলে যেতে হবে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে। সেখানে ফরম ও ফি মেনু থেকে রি-ইস্যু/তথ্য পরিবর্তন/সংশোধনের আবেদন ফরম-এ ক্লিক করার পর প্রাপ্ত ওয়েব পেজ থেকে পাওয়া যাবে ভুল তথ্য সংশোধনের আবেদন ফর্ম।
আরও পড়ুন: পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
শুধুমাত্র বাংলায় আবেদনকারীর নাম ব্যতীত এই সম্পূর্ণ ফর্মটি পূরণ করতে হবে ইংরেজি ক্যাপিটাল অক্ষরে। নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করে যে কোনো আবেদনকারীই কোনো ঝামেলা ছাড়াই তথ্য সরবরাহ করতে পারবেন। প্রথমেই দুই কলামের বাম পাশের প্রথম অংশে যে পাসপোর্ট অফিস থেকে আবেদনকারী ভুলকৃত পাসপোর্টটি সংগ্রহ করেছিলেন তার নাম দিতে হবে। তারপর পর পর বাংলা ও ইংরেজিতে আবেদনকারীর নাম দিতে হবে।
এরপরের সেকশনটিতে ভুলকৃত পাসপোর্টের তথ্য উল্লেখ করতে হবে। এখানকার পাসপোর্ট নাম্বার, ইস্যুর স্থান ও তারিখ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ সবকিছুই পাওয়া যাবে পাসপোর্টে ইলেক্ট্রনিক চিপযুক্ত পৃষ্ঠাটিতে। পাসপোর্টে আবেদনকারীর ছবির বরাবর ওপর-নীচ করে ধরে ওপরের পৃষ্ঠায় ডানদিকে উল্লম্বভাবে পাওয়া যাবে পাসপোর্ট নাম্বারটি। আর ছবির পৃষ্ঠায় পাওয়া যাবে পাসপোর্ট ইস্যুর স্থান ও অন্যান্য তারিখগুলো।
এবার ডানদিকের ওপরের বক্স থেকে টিক চিহ্ন দেয়ার মাধ্যমে পাসপোর্ট বিতরণের প্রকৃতি নির্ধারণ করতে হবে। অতঃপর সেই প্রকৃতি অনুসারে পরের বক্সে উল্লেখ করতে হবে ফি-এর পরিমাণ, যে ব্যাংকের যে শাখায় প্রদত্ত ফি জমা দেয়া হয়েছে সেগুলোর নাম, রশিদ নাম্বার এবং জমাদানের তারিখ।
এরপর চূড়ান্তভাবে সংশোধীত তথ্য সরবরাহের পালা। বামের খালি অংশগুলোতে লিখতে হবে বর্তমানে ই-পাসপোর্টের ভুলকৃত তথ্যগুলো আর ডানের অংশগুলোতে উল্লেখ করতে হবে কি কি সংশোধন চাওয়া হচ্ছে সেগুলো। এখানে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, ডানের অংশগুলোর তথ্য অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুরূপ হতে হবে। আর অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রকে অনুসরণ করতে হবে।
অতঃপর যে দিনে ফর্মটি পূরণ করা হচ্ছে সে দিনের তারিখ দিয়ে নিচে আবেদনকারীকে স্বাক্ষর করতে হবে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের বেলায় এ অংশে স্বাক্ষর করবেন তাদের পিতা অথবা মাতা কিংবা অন্য অভিভাবক।
সবশেষে যে তথ্যগুলোর সংশোধন চাওয়া হচ্ছে সেগুলোর সাপেক্ষে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রগুলোর নাম একে একে উল্লেখ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ই-গেট ম্যাজিকে ১৮ সেকেন্ডেই ইমিগ্রেশন পার
ই-পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য অঙ্গীকারনামা পূরণ
এই ফর্মের জন্যও একইভাবে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ফরম ও ফি মেনুতে যেতে হবে। সেখান থেকে পাসপোর্টের তথ্য সংশোধনী অঙ্গীকারনামা ফরম-এ ক্লিক করার পর যে পেজ আসবে, সেখানেই পাওয়া যাবে পাসপোর্টের তথ্য সংশোধনী অঙ্গীকারনামা ফর্ম।
এখানে অঙ্গীকারনামার একটি সাধারণ নমুনা তৈরি করাই আছে। শুধু খালি অংশগুলোতে নিজের ব্যক্তিগত ও বর্তমান পাসপোর্টের তথ্যগুলো দিয়ে পূরণ করে দিতে হবে। যে তথ্যগুলো সংশোধন করতে হবে সেগুলোর ওপরে টিক চিহ্ন দিয়ে দিলেই হবে। দুই কলামের টেবিলটিতে বামের অংশগুলোতে বর্তমান পাসপোর্টের ভুলকৃত তথ্যগুলো এবং ডানের অংশগুলোতে সেই ভুলকৃত তথ্যগুলোর বিপরীতে জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখিত তথ্যগুলো লিখে দিতে হবে। অপ্রাপ্তবয়স্করা বা তাদের অভিভাবকগণ এ ক্ষেত্রে তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদের অনুরূপ তথ্য সরবরাহ করবেন।
সবশেষে আবেদনকারী বা তার অভিভাবকের(১৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে) স্বাক্ষরের মাধ্যমে শেষ হবে অঙ্গীকারনামা ফর্ম পূরণ।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট সংশোধন পদ্ধতি
ই-পাসপোর্ট নবায়ন বা সংশোধন উভয়ের যে কোনটি করার জন্য অনলাইনে ই-পাসপোর্ট রিনিউয়ের জন্য আবেদন করতে হবে। দুই ক্ষেত্রেই একইভাবে অনলাইন ফর্মটি পূরণ করতে হবে। পার্থক্য হচ্ছে শুধু আইডি ডকুমেন্টস সেকশনে Yes, I have an Electronic Passport (ePP) অপশন সিলেক্ট করে দিতে হবে। অতঃপর সে অনুসারে পুরাতন ই-পাসপোর্টের তথ্য দিতে হবে। আবেদনের বাকি সব সেকশনে খেয়াল রাখতে হবে যে, প্রতিটি তথ্য যেন অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুরূপ হয়।
যেহেতু ইতোমধ্যে একবার ই-পাসপোর্ট নেয়া হয়েছে, সেহেতু ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে আবেদনকারীর অবশ্যই নিজস্ব একটি অ্যাকাউন্ট আছে। সেখানে সেই আগের ইমেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করতে হবে।
তারপর সেই নতুন ই-পাসপোর্ট করার মত একে একে পাসপোর্ট টাইপ থেকে শুরু করে অ্যাড্রেস পর্যন্ত সব সেকশনগুলো পূরণ করে আসতে হবে। আইডি ডকুমেন্টসে বর্তমান ই-পাসপোর্টের সব তথ্য দেয়ার পর প্যারেন্টাল ইনফরমেশন থেকে ডেলিভারি অপশন্স এ্যান্ড অ্যাপয়েন্টমেন্ট পর্যন্ত নতুন ই-পাসপোর্ট আবেদনের মতো করে পূরণ করতে হবে।
অতঃপর সম্পূর্ণ আবেদনপত্র পূরণ শেষে সাবমিট করার পর ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট সেবা
ই-পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধন ফি জমা দেয়ার উপায়
নতুন ই-পাসপোর্টের আবেদনের জন্য যে ফি দিতে হয়েছিলো, নবায়ন বা ভুল তথ্য সংশোধনের জন্যও সেই একই ফি। এর বাইরে নাম অথবা বয়স সংশোধনের ক্ষেত্রে কোট হলফনামা বাবদ দুই থেকে তিন হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। তথ্য সংশোধনের ফি অনলাইনে অথবা অফলাইনে অর্থাৎ সশরীরে ব্যাংকে গিয়ে পরিশোধ করা যায়। চূড়ান্তভাবে আবেদন সাবমিট করার পরই অফলাইন পেমেন্ট অপশনে ক্লিক করলে ব্যাংক এশিয়া, ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, এবং সোনালী ব্যাংকের নাম দেখাবে। আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং প্রিন্ট করা ই-পাসপোর্টে তথ্য সংশোধনের আবেদনপত্রটি নিয়ে এই ব্যাংকগুলোর যে কোন শাখায় গিয়ে ফি জমা দেয়া যাবে। অবশ্যই জমা রশিদটি নিয়ে আসতে হবে।
এছাড়া অনলাইনে ফি পরিশোধের জন্য আছে বিকাশ, ভিসা কার্ড, মাস্টারকার্ড, কিউ-ক্যাশ, ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং, এবং সোনালী ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়ের মতো ডিজিটাল ব্যবস্থা।
ই-পাসপোর্ট ভুল তথ্য সংশোধন ফি-এর তালিকা
৪৮ পাতার ৫ বছরের মেয়াদী পাসপোর্ট ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পেতে হলে খরচ পড়বে চার হাজার ২৫ টাকা, ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পেতে হলে লাগবে ছয় হাজার ৩২৫ টাকা, এবং ২ কার্যদিবসের মধ্যে পেতে লাগবে আট হজার ৬২৫ টাকা।
৪৮ পাতার ১০ বছরের মেয়াদী পাসপোর্ট ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পেতে হলে খরচ পড়বে পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা, সাত কার্যদিবসের মধ্যে পেতে হলে লাগবে আট হাজার ৫০ টাকা, এবং দুই কার্যদিবসের মধ্যে পেতে লাগবে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।
৬৪ পাতার পাঁচ বছরের মেয়াদী পাসপোর্ট ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পেতে হলে খরচ হবে ছয় হাজার ৩২৫ টাকা, সাত কার্যদিবসের মধ্যে পেতে আট হাজার ৩২৫ টাকা, এবং দুই কার্যদিবসের মধ্যে পেতে ১২ হাজার ৭৫ টাকা।
৬৪ পাতার ১০ বছরের মেয়াদী পাসপোর্ট ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পেতে হলে খরচ লাগবে আট হাজার ৫০ টাকা, সাত কার্যদিবসের মধ্যে পেতে লাগবে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা, এবং দুই কার্যদিবসের মধ্যে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
ই-পাসপোর্টে ভুল সংশোধনের আবেদন কিভাবে ও কোথায় জমা দিবেন
ই-পাসপোর্টে ভুল সংশোধনের জন্য আবেদনের যাবতীয় নথিপত্র নিয়ে যে পাসপোর্ট অফিস থেকে বর্তমান ই-পাসপোর্টটি সরবরাহ করা হয়েছিলো সেখানে অনলাইনে নির্ধারণ করা তারিখে উপস্থিত হতে হবে। অতঃপর নথিপত্র বিশেষত পুরাতন পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবেদনকারীকে একটি ডেলিভারি স্লিপ প্রদান করবেন। এখানে উল্লেখ থাকবে সংশোধিত ই-পাসপোর্ট সরবরাহের সম্ভাব্য তারিখ।
সংশোধিত ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ
সংশোধিত ই-পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য আবেদনকারীকে সশরীরে পাসপোর্ট অফিসে আসতে হবে। এসময় সঙ্গে থাকতে হবে সেই ডেলিভারি স্লিপ, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পুরাতন ই-পাসপোর্ট। এ সময় সংশোধিত ই-পাসপোর্ট প্রদানের পূর্বে অফিস কর্মকর্তা আবেদনকারীর আঙ্গুলের ছাপ যাচাই করে নিবেন।
আরও পড়ুন: অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে সংশোধনের নিয়ম
পরিশেষে
ই-পাসপোর্টে ভুল তথ্য সংশোধন পদ্ধতি করার পর ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে আবেদনের বর্তমান অবস্থা যাচাই করা যাবে। সংশোধিত হয়ে ই-পাসপোর্ট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এলে ওয়েবসাইট থেকেই তা জানা যাবে। উপরোক্ত সাইটে অ্যাপ্লিকেশন আইডি অথবা অনলাইন নিবন্ধন আইডি নাম্বার, জন্ম তারিখ এবং ক্যাপচা পূরণ করে চেক-এ ক্লিক করলেই ই-পাসপোর্ট স্ট্যাটাস দেখাবে। ই-পাসপোর্ট প্রস্তুত হলেই লেখা থাকবে Your passport ready for issuance। অতঃপর আবেদনকারী পাসপোর্ট অফিসে যেয়ে ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে সংশোধনের নিয়ম
অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন কার্যক্রম শুরুর পর থেকে পাসপোর্ট প্রাপ্তির ঝক্কি-ঝামেলা অনেকটা কমে এসেছে। ঘরে বসেই স্বল্প সময়ের মধ্যেই আবেদন ফি পরিশোধসহ পুরো আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা যায়। সহজ ব্যাপার হলেও আবেদন ফর্মে তথ্য প্রদান করার সময় ভুল হচ্ছে কি না তার একটা প্রাথমিক সতর্কতা সংকেত পাসপোর্ট ওয়েব ইন্টারফেস থেকেই দেয়া হয়। কিন্তু তথ্যগুলোর পরিপূর্ণভাবে সঠিক হওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখতে হয় আবেদনকারী নিজেকেই। আর এই জায়গাটিতেই বিশেষ করে নতুনদের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া বা অসাবধানতা বশত ভুল হয়ে যায়। আজকের নিবন্ধে আলোচনা করা হবে ই-পাসপোর্ট আবেদনের সেই ভুলগুলোর সংশোধন নিয়ে।
জমা দেয়ার আগে ই-পাসপোর্ট আবেদনে কোনো ভুল ধরা পড়লে করণীয়
ই-পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য বাংলাদেশের অভিবাসন ও পাসপোর্ট অনুষদের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করলে আবেদনকারীর নামে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়। অ্যাকাউন্টটিতে আবেদনকারীর যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে। আবেদনের মুহুর্তে অনলাইন আবেদনের ফর্মের প্রতিটি পেজ আলাদা ভাবে সংরক্ষিত হয়। তাই আবেদনকারী পুরো আবেদনটি সম্পন্ন করে সাবমিট বাটনে ক্লিক না করেও তার অসমাপ্ত আবেদনটি নিজের অ্যাকাউন্টে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।
তাই চূড়ান্ত ভাবে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে আবেদন জমা প্রদানের আগ পর্যন্ত আবেদনপত্রের যে কোনো ভুল আবেদনকারী যতবার ইচ্ছে ততবার সংশোধন করতে পারবেন। একবার সাবমিট বাটনে প্রেস করে ফেলার পর আবেদনটি আর আগের মত সংশোধনের উপায় থাকবে না। জমাকৃত আবেদনের তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদনকারীকে সশরীরে তার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে। এ সময় জমাকৃত ই-পাসপোর্ট আবেদন সংশোধনের জন্য কি কি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে চলুন তা জেনে নেয়া যাক।
আরও পড়ুন: পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
জমা দেয়ার পর ই-পাসপোর্ট আবেদনে কোনো ভুল চোখে পড়লে করণীয়
ই-পাসপোর্ট আবেদন পরিপূর্ণভাবে শেষ করে তা ডাউনলোড করে প্রিন্ট করার পর দেখা গেলো তাতে ছোট্ট একটি ভুল আছে। এ অবস্থায় মুলত দুটি পদ্ধতিতে ভুল সংশোধনের চেষ্টা করা যেতে পারে।
(১) নিতান্ত উপেক্ষণীয় ভুলের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অফিসে যেয়ে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কম্পিউটার অপারেটরকে অনুরোধ করে ভুলটি সংশোধন করে নেয়া যেতে পারে। ছোট ছোট ভুল নিয়ে তেমন সমস্যা সৃষ্টি হবে না। তবে বড় ভুল হলে পাসপোর্ট অফিস আবেদনই গ্রহণ করতে চাইবে না। সেক্ষেত্রে অবলম্বন করতে হবে দ্বিতীয় উপায়।
(২) বড় ভুলটি সংশোধনের জন্যও পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাকে অনুরোধ করে দেখা যেতে পারে। যদি তিনি সংশোধন করে দেন তাহলে তো ভালই, আর তা না হলে শেষ উপায় হচ্ছে আবেদনপত্র বাতিল করা। অতঃপর নতুন করে আবেদন ফরম পূরণ করা। চলুন এবার দেখে নেয়া যাক ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার পদ্ধতি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
অনলাইনে জমাকৃত ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম
প্রক্রিয়াটির শুরু পাসপোর্ট অফিসের সহকারী উপ-পরিচালক বরাবর একটি দরখাস্ত লেখা দিয়ে। ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল বিষয়ের এই দরখাস্তে প্রথমেই নিজের নাম ও পিতামাতার নামের পর আবেদনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। এরপর দিতে হবে অনলাইনে নিবন্ধিত আবেদনের আইডি নম্বর। এটি পাওয়া যাবে আবেদনের পর অ্যাপ্লিকেশন সামারিতে, যার শুরু হয়েছে OID দিয়ে। অতঃপর আবেদন বাতিলের কারণ হিসেবে আবেদনের যে অংশে ভুল হয়েছে তার কথা লিখতে হবে। এই মূল অংশগুলোর মাধ্যমে দরখাস্তটি শেষ করে তার সঙ্গে অনলাইন আবেদনের সেই অ্যাপ্লিকেশন সামারির প্রিন্ট করা কপিটি সংযুক্ত করে দিতে হবে।
এরপর কাগজগুলো নিয়ে সশরীরে গিয়ে জমা দিতে হবে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট নবায়ন সমস্যা সমাধানে সৌদি-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ
অনলাইন থেকে ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার পদ্ধতি
পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিলের জন্য দরখাস্ত জমা দেয়ার দিনই আবেদনকারীর মোবাইলে ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিলের বিষয়ে একটি এসএমএস চলে আসবে। এবার আবেদনকারীকে পাসপোর্ট আবেদনের ওয়েবসাইটে তার নিজের অ্যাকাউন্টে লগইন করতে হবে। ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিলের এসএমএস যেহেতু চলে এসেছে, সেহেতু অ্যাকাউন্টে আবেদনের অংশে লাল অক্ষরে স্ট্যাটাস ক্যান্সেল দেখাবে। তারপরেই থাকবে ডিলিট অপশন, যেটি প্রেস করার মাধ্যমে পুরো আবেদনটি নিজের অ্যাকাউন্ট তথা অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলা যাবে। এরপর সঠিক তথ্য দিয়ে নতুন করে আবার ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইন আবেদন করা যাবে।
এখানে উল্লেখ্য যে ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল হতে প্রায়ই একটু সময় নিতে পারে। কখনও কখনও ২৪ ঘন্টার মতো দীর্ঘ সময়ও লেগে যেতে পারে। এছাড়া আবেদন ডিলিট করার পরেও প্রায় সময় নতুন ভাবে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায় না। মুলত পাসপোর্ট সার্ভারের ত্রুটির কারণে এরকমটা হয়ে থাকে। এই সমস্যাগুলোর বেলায় বার বার চেষ্টা না করে একটু বেশী সময় অপেক্ষা করে চেষ্টা করতে হবে। এই সময়টি তিন থেকে শুরু করে কখনও কখনও সাত দিন পর্যন্তও যেতে পারে।
এই সময়ে ই-পাসপোর্ট আবেদন বাতিল হয়েছে কি না তা নিয়মিত অনলাইনে যাচাই করা যেতে পারে। এর জন্য পাসপোর্ট আবেদনের ওয়েবসাইটের চেক স্ট্যাটাস মেন্যুতে যেতে হবে। অতঃপর অনলাইন পাসপোর্ট আবেদনের অ্যাপ্লিকেশন সামারির সেই OID নম্বর অথবা অ্যাপ্লিকেশন আইডি অথবা ইমেইল আইডি এবং জন্ম তারিখ দিয়ে আবেদনের বাতিলের ব্যাপারে জানা যাবে।
আরও পড়ুন: ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে: প্রধানমন্ত্রী
ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি পরিশোধের আগে আবেদনে ভুল ধরা পড়লে করণীয়
এ ধরনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের টাকা জমা দেয়ার সময়সীমাটিকে খেয়াল রাখতে হবে। ই-পাসপোর্টের আবেদনটি অনলাইনে জমা দেয়ার পর থেকে ২০০ কার্যদিবস বা ছয় মাস পর্যন্ত সময় থাকে টাকা জমা দেওয়ার। এই সময়টি ছবি তোলা ও আঙ্গুলের ছাঁপ দেয়ার জন্য আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হওয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ছয় মাস পর পাসপোর্ট আবেদনটি এমনিতেই পাসপোর্ট অফিসের পাশাপাশি পাসপোর্ট সার্ভার থেকেও সরিয়ে ফেলা হয়। তাই তাড়া না থাকলে ছয় মাস পর বাতিল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে তারপর নতুন করে আবেদন করা যেতে পারে।
তবে জরুরি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হলো তাৎক্ষণিকভাবে পাসপোর্ট অফিসের সহকারি উপ-পরিচালকের নিকট আবেদনটি বাতিল করার জন্য দরখাস্ত করা। এভাবে দরখাস্ত গ্রহণের পর থেকে এক দিনের মধ্যেই আবেদনটি সার্ভার থেকে বাতিল হয়ে যায়। কারিগরি জটিলতা থাকলে সর্বোচ্চ সাতদিন লাগতে পারে। অতঃপর উপরোক্ত নিয়মে ই-পাসপোর্ট আবেদনটি ডিলিট করে দেয়া যায়।
আরও পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি পরিশোধের পরে আবেদনে ভুল ধরা পড়লে করণীয়
যারা ইতোমধ্যে আবেদনের সঙ্গে টাকাও জমা দিয়ে ফেলেছেন, তাদের আবেদনে কোনো ভুল বের হলেও একই নিয়মে পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করতে হবে। কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে তাদের আবেদন ফি’টিও বাতিল হয়ে যাবে না। বরং তারা আগের আবেদনের সঙ্গে যে ব্যাংক রশিদ বা চালান দিয়েছিলেন, সেই একই রশিদ বা চালান নতুন পাসপোর্ট আবেদনের সময় জমা দিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়।
আগের বার আবেদনে ই-পাসপোর্টের যে মেয়াদ, পৃষ্ঠা ও সরবরাহের ধরণ উল্লেখ করা হয়েছিল, এবারেও তা অপরিবর্তিত রাখতে হবে। যেমন- আগের বার আবেদনের সময় যদি মেয়াদ ১০ বছর এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৪ হয়, এবং সরবরাহের ধরণ রেগুলার হয়, তবে এবারের আবেদনের বেলাতেও তথ্যগুলো একই রাখতে হবে।
তবে পাসপোর্ট আবেদন বাতিলের পর নতুন করে আবেদন না করা হলে পূর্বের আবেদনের জন্য ব্যাংকে জমাকৃত টাকা ফেরৎ পাওয়া যাবে না। ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি-এর এই ব্যাংক রশিদ বা চালান ইস্যু করা হয় মুলত আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নাম দিয়ে। এই চালানের মেয়াদ থাকে ছয়মাস; অর্থাৎ ছয়মাস পরে আবেদন করলে নতুন করে আবেদন ফি দিতে হবে।
শেষাংশ
সর্বোপরি, অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনে কোনো ভুল হলে প্রয়োজনীয় শর্তগুলো খেয়াল রেখে উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করলে তা সংশোধন নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। তবে অতিরিক্ত সময় ও শ্রম দুটোরই নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পেতে অনলাইনে আবেদনের সময় চূড়ান্ত ভাবে সাবমিট বাটনে ক্লিক করার আগেই সাবধান হওয়া উচিত। ইন্টারনেট পরিষেবার সহজলভ্যতার ও পাসপোর্ট আবেদন ডিজিটাল করার কারণে আবেদনের সময় অনেকটা বাঁচে। এরপরেও নাগরিক জীবনের জন্য অতি দরকারি এই নথিটি তৈরি করার প্রাথমিক ধাপে যথেষ্ট সময় দেয়া উচিত। এই ধাপে অল্প কিছু অতিরিক্ত সময় প্রদান ভবিষ্যতে শত শত বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
আরও পড়ুন: যেভাবে পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধন করবেন
পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি। সেই থেকে ধীরে ধীরে সারা দেশে পাসপোর্টের আঞ্চলিক অফিসগুলোতে ই-পাসপোর্ট ইস্যুর ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক নিজের এমআরপি বা মেশিন রিডেবল পাসপোর্টটি ই-পাসপোর্টে বদলে নিতে পারেন। ই-পাসপোর্টের সুবিধা হচ্ছে- এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের সময় স্বয়ংক্রিয় ই-গেইটের কারণে ইমিগ্রেন্টদের কোনো রকম চেকিংয়ের সম্মুখীন হতে হবে না। ফলে অন্য দেশে যাওয়ার সময় দীর্ঘ সময় ধরে চেকিংয়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকার দরকার পড়বে না। চলুন, মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট বা এমআরপি থেকে নতুন ই-পাসপোর্ট বা পাসপোর্ট রিনিউ করার পদ্ধতি জেনে নেয়া যাক।
পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের পূর্বশর্ত
পাসপোর্টের এই ডিজিটালকরণ সবেমাত্র শুরু হয়েছে, বিধায় পাসপোর্টের রিনিউ বলতে বর্তমানে এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে রূপান্তরকেই বুঝায়। তাছাড়া এখন আর এমআরপি দেয়া হয় না। পাসপোর্ট রিনিউ বা নতুন হোক উভয় ক্ষেত্রেই ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করা হয়। আবেদনকারির বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ই-পাসপোর্ট রিনিউ করা যাবে। এক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনটি অবশ্যই অনলাইনে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। নতুবা আগে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করে তারপর ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছরের উপরের আবেদনকারীদের জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্ট আইডি(এনআইডি) কার্ড দিয়ে পাসপোর্ট রিনিউ করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনের সময় এনআইডি কার্ডের তথ্যের হুবহু তথ্য সরবরাহ করতে হবে। কোনো গরমিল হলেই পাসপোর্ট অথবা এনআইডির যে কোনো একটির সংশোধন করতে হবে।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট নবায়ন সমস্যা সমাধানে সৌদি-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ
পুরাতন পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
→ মূল আবেদনের রঙিন মুদ্রিত কপি
→ অ্যাপয়েন্টমেন্টসহ আবেদনপত্রের সারাংশের প্রিন্ট কপি
→ জাতীয় পরিচয় পত্র বা অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি জমাদানকারীদের ক্ষেত্রে পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও জমা দিতে হবে।
→ পূর্ববর্তী পাসপোর্টের যে পৃষ্ঠাগুলোতে পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত ও ইমিগ্রেশনের তথ্য দেয়া আছে সেগুলোর ফটোকপি
→ ব্যাংকের মাধ্যমে পাসপোর্টের ফি পরিশোধ করা হলে ফি জমা প্রদানের রশিদ
→ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিজীবীগণ সরকারি অধ্যাদেশ/অনাপত্তি সনদ সংযুক্ত করতে পারেন
→ যদি তথ্য সংশোধন করতে হয় তাহলে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র
অনলাইনে পাসপোর্ট রিনিউ করার পদ্ধতি
অনলাইনে পাসপোর্ট রিনিউয়ের আবেদন
অনলাইনে পাসপোর্ট রিনিউয়ের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে যেয়ে ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করতে হবে। এখান থেকে নতুন ও পাসপোর্ট রিনিউ দুইয়েরই জন্য আবেদন করা যায়।
প্রথমেই জেলা নির্বাচনের পর থানার নাম বাছাই করতে হবে। আর এর সাথে সাথে সেই থানার নিকটস্থ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নাম দেখাবে। তারপর ইমেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটটিতে নিবন্ধন করতে হবে। এবার ইমেইল যাচাইয়ের পালা। এখানে আবেদনকারী যে ইমেইল ঠিকানা দিয়েছিলেন সেখানে এই ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে একটি বার্তা পাবেন। সেই বার্তায় প্রবেশ করে নির্দিষ্ট লিঙ্কে ক্লিক করলে আবেদনকারীকে পুনরায় পাসপোর্ট আবেদনের ওয়েবসাইটে নিয়ে আসা হবে। আর এভাবেই সম্পন্ন হবে ইমেইল যাচাই প্রক্রিয়া। এখন আবেদনকারি নিজের ইমেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ওয়েবসাইটে লগইন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
আবেদনের প্রথমেই ব্যক্তিগত তথ্যাবলি পূরণ করতে হবে। এরপরের স্ক্রিণে আসবে পাসপোর্ট নতুন না রিনিউ তার স্বীকারক্তির সেকশন প্রিভিয়াস পাসপোর্ট। এখানে Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP) এই অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। এরপরে পাসপোর্ট আবেদনের কারণ হিসেবে Expired অপশনটি বাছাই করতে হবে। অতঃপর একে একে পূর্ববর্তী পাসপোর্টের নাম্বার, ইস্যূ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। পাসপোর্ট ওপর-নীচ করে খুলে ওপরের পৃষ্ঠায় ডানদিকে উল্লম্ব ভাবে ইংরেজি অক্ষর ও সংখ্যা সম্বলিত নাম্বারটিই পাসপোর্ট নাম্বার।
আর পাসপোর্টের ছবির পৃষ্ঠায় পাওয়া যাবে তারিখগুলো। এরপর ঠিকানা, পিতা মাতার তথ্য, স্বামী/স্ত্রীর তথ্য, জরুরি যোগাযোগ, মোবাইল নাম্বার, পাসপোর্টের ধরণ ও সবশেষে প্রদানের ধরণ সেকশনগুলোতে সঠিকভাবে তথ্য সরবরাহ করে আবেদটি সম্পন্ন করতে হবে। প্রদানের ধরনে ক্যালেন্ডার থেকে সশরীরে আবেদন জমাপূর্বক ছবি তোলা ও ফিঙ্গাপ্রিন্ট দেয়ার তারিখ বাছাই করতে হবে। এখানে সাধারণত কমপক্ষে দেড় থেকে দুই মাস দূরত্বে যে কোন তারিখ বাছাইয়ের সুযোগ থাকে।
অতঃপর পূরণকৃত আবেদনপত্রটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে।
পাসপোর্ট রিনিউ ফি প্রদান
ই-পাসপোর্ট রিনিউ ফি অনলাইনে এবং অফলাইন তথা সশরীরে ব্যাংকে গিয়ে উভয়ভাবেই পরিশোধ করা যায়। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের নির্ধারিত করা ব্যাংকগুলো হলো- ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর যে কোনো শাখায় পাসপোর্ট রিনিউয়ের ফি জমা দেওয়া যাবে। এ সময় আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং প্রিন্ট করা ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্রটি অবশ্যই সঙ্গে থাকতে হবে।
আর অনলাইনে ফি পরিশোধের ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ড, ভিসা কার্ড, কিউ-ক্যাশ, বিকাশ, ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এবং সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করা যাবে।
আরও পড়ুন: যেভাবে পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধন করবেন
পাসপোর্ট রিনিউ ফি-এর তালিকা
ই-পাসপোর্ট রিনিউয়ের ক্ষেত্রে নতুন ই-পাসপোর্ট করার মতো একই খরচ লাগবে।
→ পাঁচ বছরের মেয়াদের ৪৮ পাতার পাসপোর্ট চার হাজার ২৫ টাকায় পাওয়া যাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, ছয় হাজার ৩২৫ টাকায় পাওয়া যাবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এবং আট হাজার ৬২৫ টাকায় পাওয়া যাবে দুই কার্যদিবসের মধ্যে।
→ পাঁচ বছর মেয়াদের ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ছয় হাজার ৩২৫ টাকায় পাওয়া যাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, আট হাজার ৩২৫ টাকায় পাওয়া যাবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এবং ১২ হাজার ৭৫ টাকায় পাওয়া যাবে দুই কার্যদিবসের মধ্যে।
→ ১০ বছরের মেয়াদের ৪৮ পাতার পাসপোর্ট পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকায় পাওয়া যাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, আট ৫০ টাকায় পাওয়া যাবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এবং ১০ হাজার ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাবে দুই কার্যদিবসের মধ্যে।
→ ১০ বছরের মেয়াদের ৬৪ পাতার পাসপোর্ট আট হাজার ৫০ টাকায় পাওয়া যাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে, ১০ হাজার ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এবং ১৩ হাজার ৮০০ টাকায় পাওয়া যাবে দুই কার্যদিবসের মধ্যে।
পুরাতন পাসপোর্ট রিনিউয়ের আবেদন কোথায় জমা দিবেন
পাসপোর্ট রিনিউয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একত্রিত করে সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পুরাতন পাসপোর্টের মূল কপি সঙ্গে নিতে হবে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে আবেদনের সময় যে তারিখ ঠিক করা হয়েছিল সেই তারিখে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে কাগজপত্রসহ। ওয়েবসাইটে থানার নাম উল্লেখ করার পর যে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নাম দেখিয়েছিল সেটিই হবে আবেদনকারীর নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস।
অতঃপর নথিপত্র বিশেষত পুরাতন পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবেদনকারীর বায়োমেট্রিক তথ্য নিবেন। এখানে খেয়াল রাখা উচিত যে, ছবি তোলার সময় সাদা শার্ট ও চশমা পড়া যাবে না। সব কাজ শেষে অফিস কর্মকর্তা একটি ডেলিভারি স্লিপ প্রদান করবেন। এখানে উল্লেখ থাকবে নবায়নকৃত পাসপোর্ট সরবরাহের সম্ভাব্য তারিখ।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে করণীয়
নবায়নকৃত পাসপোর্ট কোথায় সংগ্রহ করবেন?
আবেদনকারীকে সশরীরে পাসপোর্ট অফিসে এসে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। এসময় সঙ্গে থাকতে হবে সেই ডেলিভারি স্লিপ, পুরাতন এমআরপি ও জাতীয় পরিচয়পত্র। এসময় ই-পাসপোর্ট দেয়ার আগে আবেদনকারীর আঙ্গুলের ছাপ যাচাই করা হয়।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড করলে পাসপোর্ট বাতিল করা হবে: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী
শেষাংশ
পুরাতন পাসপোর্ট রিনিউ করার ক্ষেত্রে সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা বা জরিমানার কোনো ব্যাপার নেই। তবু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই পাসপোর্ট রিনিউ করে নেয়া উচিত। মেয়াদ শেষ হওয়ার ন্যূনতম ৬ থেকে ৭ মাস আগেই এই নবায়নের কাজটি করে ফেলা উত্তম। কারণ দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো উদ্দেশ্য থাকলে পাসপোর্টের মেয়াদ ন্যূনতম ছয় মাস না থাকলে কোনো এম্বেসি থেকে ভিসা পাওয়া যায় না। পাসপোর্ট রিনিউয়ের ক্ষেত্রে কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি ভবিষ্যতে মেয়াদোত্তীর্ণ ই-পাসপোর্ট রিনিউয়ের ক্ষেত্রে নতুন করে ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিণ্টের দরকার হবে না।
পাসপোর্ট নবায়ন সমস্যা সমাধানে সৌদি-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ
সৌদি আরবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের যাদের পাসপোর্ট নবায়ন প্রয়োজন তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য রবিবার বাংলাদেশ ও সৌদি আরব একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে সম্মত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সফররত সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী ড. নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় বিষয়টি উত্থাপিত হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
সৌদি উপমন্ত্রী দেশটিতে বসবাসরত মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টধারী বাংলাদেশিদের বিষয়টি উত্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
সমস্যা সমাধানে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনেরও প্রস্তাব করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবে একমত হয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আরও বলেন, আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় এসেছে।
তিনি বলেন, ড. নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদ ২০৩০ সালের জন্য নির্ধারিত এক্সপো ইস্যুতে বহুপক্ষীয় ফোরামে সৌদি আরবকে বাংলাদেশের সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
সৌদি উপমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়নেরও প্রশংসা করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো বিশ্বের দেশগুলোর অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করেছে।
তিনি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সৌদির সহযোগিতাও চেয়েছেন।
শেখ হাসিনা সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদের জন্য শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. জাভেদ পাটোয়ারী ও সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আলদুহাইলান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট প্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের আহ্বান সাংবাদিকদের
পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে করণীয়
‘সীমাবদ্ধতার মধ্যেও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে’
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার,এনডিসি, এইচডিএমসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি,জি অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে পাসপোর্ট এন্ড ইমিগ্রেশন রিপোটার্স ফোরাম (পিআইআরএফ) নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পিআইআরএফ’র সভাপতি দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার আছাদুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক দৈনিক কালবেলা আতাউর রহমানের নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের একটি দল নবনিযুক্ত মহাপরিচালককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এসময় মহাপরিচালক ফোরামের নির্বাহী কমিটির সকল সদস্যের সঙ্গে পরিচিত হন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি দৈনিক ইত্তেফাকের জামিউল আহসান সিপু, সহসভাপতি রুহুল আমিন তুহিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের আলী আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক দৈনিক বণিক বার্তার নেহাল হাসনাইন, দপ্তর সম্পাদক দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার ফজলুর রহমান।
আরও পড়ুন: ‘বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে গুরুত্ব দেয় জাতিসংঘ’
মঙ্গলবার দুপুরে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অধিদপ্তরের সেবাকে সহজীকরণ করতে আমাদের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আপনাদের সহযোগিতায় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।’
এসময়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মাসব্য ও অর্থ) উম্মে সালমা তানজিয়া, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পাসপোর্ট ভিসা ও ইমিগ্রেশন) সেলিনা বানু, ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাদাত হোসাইন, এনডিসি, পিএসসি, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ), শিহাব উদ্দিন খান, পরিচালক (পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন) মো. সাঈদুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ ‘ভেরি স্পেশাল পার্টনার’: ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার
সিউলে ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ উদযাপিত
বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, রাজধানীতে আটক ২
বিদেশে পাঠানোর কথা বলে প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) তাদের আটক করে।
আটক ব্যক্তিদের পরিচয়- মাহবুবুল হাসান (৫০) ও মাহমুদ করিম (৩৬)।
সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফারজানা হক (স্টাফ অফিসার, মিডিয়া) বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে শান্তিনগরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহবুবুল স্বীকার করেছে যে এই চক্রটি বিদেশি কোম্পানির ভুয়া নিয়োগপত্র ও অন্যান্য কাগজপত্র দেখিয়ে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে দরিদ্র ও বেকারদের সঙ্গে প্রতারণা করত। তারা ২০০০ সাল থেকে অনেকজনকে পাচার করেছে।
তিনি বলেন, এই চক্রটি গত দুই বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে দালালদের মাধ্যমে ৫২১টি পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছে। একজনকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠাতে দুই থেকে তিন লাখ টাকা এবং ইউরোপে ছয় থেকে সাত লাখ টাকা নেয়।
আরও পড়ুন: ২ স্বর্ণ ব্যবসায়ীসহ ডাকাত দলের ৪ সদস্য আটক
কিন্তু তারা কাউকে বিদেশে পাঠাতে এবং প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য কোনো ট্রাভেল এজেন্সির কাছে পাসপোর্ট জমা দিতে ব্যর্থ হয়। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরত দিতেও ব্যর্থ হয়েছে।
এএসপি ফারজানা বলেন, মানব পাচার চক্রটি এর আগে কিছু লোককে উচ্চ বেতনের চাকরির লোভ দেখিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছিল। এসব ব্যক্তিরা চক্রের বিদেশি সহযোগীদের হাতে আটক ছিল এবং সেখানে চাকরি না পেয়ে মুক্তিপণের জন্য নির্যাতিত হচ্ছিল।
তিনি জানান, আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা সীমান্ত থেকে ৩০ রোহিঙ্গা আটক
বঙ্গোপসাগরে মালয়েশিয়াগামী ট্রলারডুবি: ২৯ রোহিঙ্গাসহ আটক ৩৩
পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা নারী আটক
মানিকগঞ্জে পাসপোর্ট করতে আসা এক রোহিঙ্গা নারীকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে এ সময় ওই নারীর সঙ্গে থাকা এক দালালকেও আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হুমাইরা বেগম এবং জেলার চকরিয়া থানার গোয়াইলমারা গ্রামের মো. ইলিয়াসের ছেলে আবু তাহের।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষক আটক
মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ বলেন, জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের চরচান্দহর গ্রামের বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করেন এক নারী। আবেদনে তার নাম দেয়া হয় তাসনিম বেগম, পিতার নাম দেয়া হয় মো. খলিলুর রহমান। তিনি জন্মসনদ, বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র ও চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সনদপত্র দেন। কিন্তু তার কথাবার্তায় সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে দেখা যায়, রোহিঙ্গা হিসেবে তিনি নিবন্ধিত হয়েছেন।
তার নাম হুমায়রা, পিতার নাম হামিদুল্লাহ ও রোহিঙ্গা আইডি নম্বর ১৫৫২০১৭১২২৪১১৫৪৫৯।
নাহিদ নেওয়াজ আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী স্বীকার করেছেন তিনি রোহিঙ্গা। পরে তাকে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে।
জানা যায়, আবু তাহেরের সহযোগিতায় সিঙ্গাইর এলাকার এরশাদ নামে এক দালালের মাধ্যমে এক লাখ টাকা চুক্তিতে পাসপোর্ট করতে আসেন ওই নারী। এজন্য এরশাদকে অগ্রিম দেয়া হয় ৬০ হাজার টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাসপোর্টের আবেদনে ওই নারী সিঙ্গাইরের চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল স্বাক্ষরিত একটি সনদ ও সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার সোনাতনী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে করা জন্মসনদ জমা দেন।
জানতে চাইলে চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল বলেন, এটা একটা জাল সনদ। ওই সনদে যে সই রয়েছে সেটা আমার না। যে তারিখ দেয়া আছে ওই তারিখে আমি কোনো সনদ দেইনি।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার বলেন, পাসপোর্ট আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ দুই জন রোহিঙ্গাকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
পাসপোর্ট অফিস থেকে মামলা হওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫০টি স্বর্ণের বার জব্দ, ভারতীয় নাগরিক আটক
বালু বোঝাই ট্রাক থেকে ভারতীয় প্রসাধনী ও শাড়ী জব্দ, আটক ১
শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট বা ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট কার্যক্রমের আওতায় অন্তর্ভূক্ত হয়। সেই থেকে বাংলাদেশের সব বয়সের প্রতিটি নাগরিকের জন্য ই-পাসপোর্টের সুবিধা দেয়া হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তর অভিন্ন আবেদন পদ্ধতির মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকে। তবে বয়স ও পেশার ভিত্তিতে সেই আবেদনের নিয়মে অল্প কিছু পার্থক্য আছে। নবজাতক থেকে অনুর্ধ্ব ৬ বছর এবং তারপর থেকে অনুর্ধ্ব ১৮ বছরের শিশুদের জন্য আবেদনের প্রয়োজনীয় নথিপত্রে সামান্য তারতম্য থাকে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ই-পাসপোর্ট আবেদনের এই নিয়ম নিয়েই আজকের নিবন্ধ।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা শিশুদের ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম
শিশুদের ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদপত্রের অনুলিপি
হাতে লেখা বা কম্পিউটারে মুদ্রণকৃত জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র এখন আর ব্যবহৃত হয় না। তাই বাচ্চাদের ই-পাসপোর্টের জন্য প্রথমে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করে নিতে হবে। জন্ম সনদটি অনলাইনে নিবন্ধিত কিনা তা বাংলাদেশের জাতীয় জন্ম ও মৃত্য নিবন্ধনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যাচাই করা যায়। এখানে জন্ম সনদপত্রে থাকা জন্ম নিবন্ধন সংখ্যা ও জন্ম তারিখ দেয়ার পর যদি জন্ম সনদটি প্রদর্শিত হয়, তবেই তা ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য উপযুক্ত।
আরও পড়ুন: এটিএম বুথে কার্ড আটকে গেলে কি করবেন ? এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
বাবা-মার জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি
বাংলাদেশ পাসপোর্ট নীতি অনুযায়ী ৬ থেকে ২০ বছরের নাগরিকদের পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনের পাশাপাশি বাবা ও মায়ের প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি প্রয়োজন। বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের নামে ইংরেজি বানানের সঙ্গে সন্তানের জন্ম সনদে বাবা বা মায়ের নামের বানান মিল থাকা আবশ্যক। সামান্য ভুল থাকলেও তা আগে থেকেই সংশোধন করে নিতে হবে।
থ্রি-আর ছবি (শুধুমাত্র অনুর্ধ্ব ৬ বছরের শিশুদের জন্য)
ছয় বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অফিসে ছবি তোলার সময় জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাই এদের ক্ষেত্রে ল্যাবে প্রিন্ট করা থ্রি-আর সাইজের ধূসর ব্যাকগ্রাউন্ডের এক কপি ছবি আবেদনপত্র জমা দেয়ার সময় সঙ্গে করে পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু শিশুর বয়স ছয় বছরের বেশি হলে কোনো ছবির দরকার নেই।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান
ই-পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান অনলাইনে সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের প্রাপ্তি বাতায়ন ই-চালান ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে। অতঃপর তা পূরণ করে নিকটস্থ যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকে জমা দেয়া যাবে। তাছাড়া ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান নিয়ে থাকে। চালান নেয়ার পর ব্যাংক থেকে চালানের গ্রাহক কপিসহ একটি জমা রশিদ দেয়া হবে।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনপত্র ও শিডিউল কপি
ই-পাসপোর্ট আবেদন সম্পন্ন হলে একদম শেষে প্রিন্ট সামারি থেকে এক পৃষ্ঠার অনলাইন ই-পাসপোর্ট শিডিউল কপি পাওয়া যাবে। আর ডাউনলোড অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম-এ ক্লিক করলে তিন পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন কপি পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
শিশুদের ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইন আবেদন পদ্ধতি
শুরুতেই বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টালে যেয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার, ইমেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে। অতঃপর ড্যাশবোর্ডের ওপরের মেনু থেকে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করে প্রথমে আবেদনকারির জেলা ও থানা নির্বাচন করতে হবে। এরপরের ধাপেই ব্যক্তিগত তথ্যাদি দেয়ার পালা। এ অংশে শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রের অনুরূপ তথ্য দিতে হবে। এখানে পেশার ক্ষেত্রে আদার্স তথা অন্যান্য নির্বাচন করাটা উপযুক্ত।
১৮ বছরের নিচে যে কোনো বয়সের শিশুর জন্য শুধুমাত্র পাঁচ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট নির্বাচন করতে হবে।
ই-পাসপোর্ট আবেদনপত্র জমা
যাবতীয় নথিসহ আবেদনপত্রটি জমার জন্য চলে যেতে হবে থানার আওতাধীন পাসপোর্ট অফিসে। এ সময় জন্ম নিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রগুলোর সঙ্গে সেগুলোর মূল কপিও সঙ্গে রাখতে হবে। শিশুর থ্রি-আর সাইজ ছবি আলাদা রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
অনুর্ধ্ব ছয় বছর বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নথিসহ আবেদনপত্র জমা নিয়েই ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ দেয়া হবে। কারণ ছয় বছরের কম বয়সীদের বায়োমেট্রিক নেয়া হয় না। থ্রি-আর ছবিটিকেই ই-পাসপোর্টে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ছয় বছরের বেশি বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিকের জন্য সাক্ষাতকারের শিডিউল দেয়া হয়। বায়োমেট্রিক নেয়ার পর পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ দেয়া হয়।
ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি
বাংলাদেশে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি সমান। দেশের ভেতরে ই-পাসপোর্ট ফিয়ের সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট থাকে। পাঁচ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্টের জন্য নিয়মিত/সাধারণ ডেলিভারি ফি চার হাজার ২৫ টাকা। এক্সপ্রেস সেবার জন্য ছয় হাজার ৩২৫ টাকা ও সুপার এক্সপ্রেস হলে আট হাজার ৬২৫ টাকা দিতে হয়।
শিশুদের ই-পাসপোর্ট করতে কত দিন লাগে
নিয়মিত/সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ডেলিভারি স্লিপ হাতে পাওয়ার দিন থেকে ১৫ অথবা ২১ কার্যদিবস। এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে এই সময়টি কমে আসে সাত অথবা ১০ কার্যদিবসে। আর সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে পাসপোর্ট হাতে আসতে সময় লাগে মাত্র দুই কার্যদিবস। তবে এই সুপার এক্সপ্রেস সুবিধাটি শুধুমাত্র আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০ শহর
সরকারি চাকরিজীবীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে অনাপত্তিপত্র অথবা পিআরএল (অবসরোত্তর ছুটি) সনদের মাধ্যমে নিয়মিত/সাধারণ ফিতে এক্সপ্রেস ডেলিভারি সেবা পাওয়া যায়।
পরিশেষে
সবশেষে বলতে হয় যে বর্তমানে অনলাইন পদ্ধতির দৌলতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও শিশুদের ই-পাসপোর্ট নিয়ম খুব সহজ হয়ে গেছে। এছাড়া এখন ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য কাগজপত্রের সত্যায়ন প্রয়োজন হয় না। যেহেতু তারা কোনো ধরনের শিক্ষাগত সার্টিফিকেট প্রাপ্তির আগেই এই সেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে, তাই ভবিষ্যতেও তাদের পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র জনিত কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্রসহ এসএসসি, এইচএসসি, টিন সার্টিফিকেট সব ক্ষেত্রে একই তথ্য দেয়ার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ের কাজগুলোতে কোনো রকম ঝামেলা পোহাতে হবে না।