পানিবাহিত রোগ
সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমছে, তবে আটকে পড়া বর্জ্যে দুর্ভোগ
সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি শুক্রবার সকালে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পচা বর্জ্যের দুর্গন্ধে পৌর এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন পৌরবাসী।
সরজমিনে উত্তর আরপিন নগর, সাহেব বাড়ি ঘাট, মোদ্দো বাজার, সুরমা মার্কেট, আলফাত স্কয়ার পয়েন্ট, কালিবাড়ি, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, জামাই পাড়া, হাজির পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানিতে জমে থাকা বর্জ্য দেখা গেছে।
পানি কমতে শুরু করলেও এলাকার বাসিন্দারা নিত্যকাজে বাড়ির বাইরে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
উত্তর আরপিন নগর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, এলাকায় এত দুর্গন্ধ যে সকাল থেকেই বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি।
নতুন পাড়া এলাকার অসীম রায় বলেন, বন্যার পানি কমেছে কিন্তু এই পচা বর্জ্যের কারণে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
তবে সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, পানি সরে যাওয়ার পরপরই কর্তৃপক্ষ শহর পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আহমেদ হোসেন জানিয়েছেন, পানিবাহিত রোগে এখনো কেউ অসুস্থ হয়নি। তবে ১২৩ টি মেডিকেল টিম সেবা দিতে প্রস্তুত আছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ
রাঙামাটিতে ডায়রিয়ার প্রকোপ
রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলায় গত দুই দিনে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং আরও প্রায় ৭০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
রবিবার জুরাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অনন্যা চাকমা জানান, শুক্রবার আমতলা গ্রামের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী রাঙাবী চাকমার ডায়রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
তিনি জানান, জুরাছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে পাঁচটি মেডিকেল টিম পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৩ লাখ মানুষ পাবেন ডায়রিয়ার টিকা
শুক্রবার উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের পাহাড়ি আমতলা গ্রামের ডায়রিয়া আক্রান্ত ১০ রোগীকে রাঙামাটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলা বাদলহাটছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মঙ্গল চাকমা জানান, কয়েকদিনের বৃষ্টির পর পানিবাহিত রোগের খবর পাওয়া গেছে।
সরজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
দুই বছরের শিশু অমর শান্তি চাকমার মা সঞ্জারিকা চাকমা জানান, গত দুই দিন ধরে তার ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অমর সুস্থ হয়ে উঠছে তবে তার শ্বশুর-শাশুড়ি ও আক্রান্ত হয়েছেন।
জুরাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অনন্যা চাকমা জানান, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত মেডিকেল টিম ওই এলাকায় থাকবে।
আরও পড়ুন: ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
কয়রার প্লাবিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ, খাবার ও চিকিৎসক ‘সংকট’
‘ঘরের চারপাশে পানি। সে পানিতে এখন তিক্ত গন্ধ। ঘরেও টিকতি পারিনে। আবার পানিতি নামলিও গায়ে পায়ে চুলকানি শুরু হয়। এরমধ্যি ছোট ছাওয়ালডার (ছেলের) ৩ দিন ধরি পাতলা পায়খানা। পানির মধ্যি ডাক্তারও আসে না। পাশের বাড়ির এক দাদাকে বইলে সেলাইন আনাই খাবাইছি।’