উন্নয়ন
সম্পদের বিভাজন রোধে সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে সম্পদের বিভাজন রোধে সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্লাটফর্মে আসা উচিত বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ‘কান্ট্রি এনভায়রনমেন্টাল অ্যানালাইসিস ২০২৩ : বিল্ডিং ব্যাক এ গ্রিনার বাংলাদেশ বিল্ডিং’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে ডুপ্লিকেশন এবং ওভারল্যাপিং কমানো প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অসংখ্য ঝুঁকি এবং অস্তিত্বের হুমকির সঙ্গে আর্থিক এবং সক্ষমতা বাড়াতে সম্পদের সুরক্ষা অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: সব উন্নয়ন জলবায়ু সহায়ক করার লক্ষ্য সরকারের: পরিবেশমন্ত্রী
উদীয়মান চাহিদা মোকাবিলা করতে প্রয়োজনীয় নীতির সমন্বয় করা হবে জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাস্থ্যই সবার আগে তাই সরকার বায়ু ও পানির গুণমান উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জলবায়ু কর্মের জন্য অগ্রাধিকারমূলক হস্তক্ষেপগুলো ক্রমানুসারে করা হচ্ছে এবং সরকার সক্রিয়ভাবে একটি সময়সীমাবদ্ধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে।
টেকসই অনুশীলনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি সবুজ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে স্থিতিস্থাপক সমাজ গড়ে তুলতে নারীরা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে: পরিবেশমন্ত্রী
কর্মশালায় আরও ছিলেন বাংলাদেশের নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম।
কর্মশালায় পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, কান্ট্রি এনভায়রনমেন্টাল অ্যানালাইসিস ২০২৩ রিপোর্টের মূল ফলাফলের ওপর উপস্থাপনা এবং আলোচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন ও এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি: ফারুক খান
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফারুক খান জানিয়েছেন, দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন ও এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশের (আটাব) নতুন কমিটির প্রথম মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন: পর্যটন শিল্পে ফিলিপাইনকে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন ফারুক খান
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর পুলিশ কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম।
এতে সভাপতিত্ব করেন- আটাবের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম আরেফ এবং সঞ্চলনায় ছিলেন- আটাবের মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে আটাবকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ, সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে এবং সুসম্পর্ক বজায় রেখে আটাব সদস্যদের স্বার্থে নিজেদের নিয়জিত করে দেশের এভিয়েশন ও পর্যটনখাতে উন্নয়নে আধুনিক এবং যুগোপযোগী ও স্মার্ট ব্যবস্থা করে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: এসআরএফবির সভাপতি ফারুক খান, সম্পাদক আফরিন জাহান
১৫ বছরে পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পে দক্ষতা বেড়েছে: ফারুক খান
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে এবং বাংলাদেশে বৈশ্বিক গণমাধ্যম তৈরিতে সহযোগিতা করবে কাতার।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এর সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের ইসলামিক সম্মেলনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত কাতার মিডিয়া করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা শেখ আবদুল আজিজ বিন থানি আল-থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আল জাজিরার মতো বৈশ্বিক গণমাধ্যম তৈরির অভিজ্ঞতার আলোকে কীভাবে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন প্রতিমন্ত্রী ও কাতারের মিডিয়া করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
এ সময় গণমাধ্যম সেক্টরে দুই দেশের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ব্যাপারে তার উভয়ে একমত পোষণ করেন। এর মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ঘটবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শ্রমবাজার ইস্যুতে কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
স্বাধীন বিচার বিভাগ একটি দেশের উন্নয়নকে উৎসাহিত করে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীন বিচার বিভাগ, শক্তিশালী সংসদ ও প্রশাসন একটি দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বাসকে বাস্তবায়নে বিচার বিভাগকে প্রশাসন থেকে পৃথক করে সম্পূর্ণ স্বাধীন করেছি।’
শনিবার(২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'একবিংশ শতাব্দীতে দক্ষিণ এশীয় সাংবিধানিক আদালত: বাংলাদেশ ও ভারতের শিক্ষা' শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: গত মাসের নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের কোনো নেতা প্রশ্ন তোলেননি: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে প্রশাসন থেকে আলাদা এর জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দ করে করেছে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ আগে আর্থিক বিষয়ে সরকারের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন প্রণয়ন করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, এর আগে নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা এটাকে নির্বাচন কমিশিন (ইসি) হিসেবে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করেছি এবং এর জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি।’
তিনি বলেন,‘এর মানে হলো- আমরা নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি এবং আওয়ামী লীগ সরকার তা করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সংবিধানে একটি অনুচ্ছেদ সংযোজন করেছে, যাতে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রমজানে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, 'এই অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আমি বলতে পারি, জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন,‘ইনশাল্লাহ, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশে পরিণত করতে সক্ষম হব।’
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মগুলো সময়মতো কাজ করে না: প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা ইস্যুতে অতিমাত্রায় গুরুত্ব আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে
সিঙ্গাপুরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ ইয়েও বলেছেন, বাংলাদেশ যদি অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে চায়, তাহলে রোহিঙ্গা ইস্যুকে আঞ্চলিক ব্লকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। কারণ এখানে মিয়ানমার পূর্ণ সদস্য।
ঢাকায় এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গা ইস্যুর গুরুত্বকে উপেক্ষা না করে এবং এটিকে প্রভাবশালী ইস্যুতে পরিণত হতে না দিয়ে, আসিয়ানের দৃষ্টিভঙ্গি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে হোটেল রেনেসাঁয় 'বাংলাদেশ অ্যান্ড আসিয়ান ইন এ মাল্টিপোলার ওয়ার্ল্ড' শীর্ষক ডিস্টিংগুইশড স্পিকার সিরিজের অংশ হিসেবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে কসমস গ্রুপের জনকল্যাণমূলক সংস্থা কসমস ফাউন্ডেশন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুকে জাতিসংঘের আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখতে মহাসচিবের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ
জর্জ ইয়েও বলেন, এখন আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে চায় বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে একটি এজেন্ডাকে প্রাধান্য দিতে চায়।
কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিলে আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশকে তুলে ধরা সম্ভব। এক্ষেত্রে খুব বেশি অসুবিধা হবে বলেও মনে করেন না ইয়ো।
রোহিঙ্গা সংকটকে মানবিক ট্র্যাজেডি আখ্যা দিয়ে সিঙ্গাপুরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার মূল প্রবন্ধে বলেন, 'এর কোনো সহজ সমাধান নেই। কারণ এসব সমস্যার শিকড় ইতিহাসের মধ্যেই রয়েছে এবং এর সমাধানও ইতিহাসের গভীরেই থাকতে পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার পর আসিয়ান এর নিন্দা জানায়নি। কারণ তারা মনে করে এটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যা।
আসিয়ান তার সদস্য দেশগুলোর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না উল্লেখ তিনি আরও বলেন, ‘আসিয়ান রাখাইন রাজ্যের মানবিক ইস্যুটিকে রাজনৈতিক ইস্যু থেকে আলাদা করার চেষ্টা করেছে।’
তিনি বলেন, আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ব্রুনাই রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তবে অন্যদের এরকম সহানুভূতি নেই। মিয়ানমারের সঙ্গে লাওসের ঐতিহ্যগত সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা মুখ্য ইস্যু হলেও মিয়ানমারে এটি গৌণ ইস্যু।
বাংলাদেশের উন্নয়নের বিষয় তুলে ধরে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে দেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন জর্জ ইয়ো।
আরও পড়ুন: ন্যাম সম্মেলন: রোহিঙ্গা ইস্যু মিয়ানমারের কাছে তুলবেন হাছান মাহমুদ
কসমস ফাউন্ডেশনের সভাপতি, প্রখ্যাত কূটনীতিক ও বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান।
ড. চৌধুরী বলেন, আসিয়ান ও বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা সময়োপযোগী এবং মূলত দুটি কারণে আলোচনার উপযুক্ত সময় এটি।
প্রথম কারণটি উত্থাপন করে তিনি বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার দিকে নজর দেবে বাংলাদেশ; এর মধ্যে আসিয়ান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, বিশেষ করে তারা আসিয়ান অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রশংসনীয় হিসেবে দেখছেন। ‘এটি এই অঞ্চলকে একক বাজার ও উৎপাদনের ভিত হিসেবে মনে করে। এটি এই অঞ্চলকে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে, ন্যায়সঙ্গত অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটাবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে সম্পূর্ণরূপে যুক্ত করবে।’
তিনি বলেন, আসিয়ান কানেক্টিভিটি সম্পর্কিত মহাপরিকল্পনাটিও প্রশংসনীয় লক্ষ্য। ‘তাই আঞ্চলিক সংলাপের অংশীদার হতে চাওয়া এবং সিঙ্গাপুরসহ বন্ধু দেশগুলোর সমর্থন চাওয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই।’
ড. চৌধুরী বলেন, দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে আসিয়ানের সদস্য দেশ মিয়ানমারে ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করছে। যেহেতু বিরোধী পক্ষগুলোর প্রধানরা বাংলাদেশকে নিরাপদ স্বর্গ হিসেবে দেখছে, তাই বাংলাদেশেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার হুমকি রয়েছে।
আরও পড়ুন: খাদ্য, জ্বালানি ও রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা করবে ঢাকা
ঢাকার উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস ফরাসি-জার্মানির
বাংলাদেশের সঙ্গে পৃথকভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণে সম্মত হয়েছে ফ্রান্স ও জার্মানি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে এ দুই দেশ।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে পৃথক বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।
ইউরোপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই রাষ্ট্রদূত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং বিমান চলাচল ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয় এবং এ বিষয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে আলোচনায় আরও অগ্রগতি হবে।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে নিয়ে 'লবিস্ট সমর্থিত' বিবৃতি বিদেশি বিনিয়োগে প্রভাব ফেলবে না: হাছান মাহমুদ
ইউরোপীয় এভিয়েশন জায়ান্ট এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি যখন পারমিট করবে তখনই বাংলাদেশ কিনবে।
বিমান কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত কি না- জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ক্রয়ের বিষয়ে এ ধরনের 'চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত' পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়া হয় না।
দুই রাষ্ট্রদূত নিজ নিজ সরকার প্রধানের অভিনন্দনপত্র হস্তান্তর করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, এ দুটি দেশই বাংলাদেশের প্রধান উন্নয়ন ও বাণিজ্য অংশীদার। আগামী দিনগুলোতে সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
ফরাসি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই সাংবাদিকদের বলেন, ফ্রান্স বাংলাদেশের সঙ্গে তরুণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নতুন এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম শুরু করতে চায়।
তিনি বলেন, ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে এরই মধ্যে একটি চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে দুই দেশ এই সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায়।
সাক্ষাৎকালে তারা বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, সংস্কৃতিসহ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যালোচনা করেন।
মেরি মাসদুপুই আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ফ্রান্স ও জার্মানি বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক গভীর করতে সম্মত হয়েছে এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সহায়ক ভূমিকা পালনের আশ্বাস দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
নির্বাচন পরবর্তী প্রথম সরকারি সফর হিসেবে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে চীনা অর্থ ছাড় আগের চেয়ে সহজ হবে: অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে চীনা অর্থ ছাড় আগের চেয়ে সহজ হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রাতারাতি সব সংকট দূর করা যাবে না: অর্থমন্ত্রী
এক প্রশ্নের জবাবে আলী বলেন, 'উন্নয়নের জন্য যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলোর প্রতি চীনের অঙ্গীকার রয়েছে। আমি আশা করি চীনের অর্থায়ন ছাড় আগের চেয়ে সহজ হবে।’
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে নতুন সরকার হওয়ায় তাদের কাজ নতুনভাবে শুরু হয়েছে। এজন্য আমি আজ অর্থমন্ত্রী আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি।’
নতুন অর্থমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ জোরালো ভূমিকা রাখবে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, নতুন সরকারের অধীনে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন: অর্থমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারে প্রিসাইডিং অফিসার, কারণ দর্শানোর নোটিশ
শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি, আগের রাতে ভোট হবে না: সিইসি
চীনে আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নের উন্নয়ন
সারসংক্ষেপ
আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ শৃঙ্খলা। অনেক বড় দেশ আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, চীনের স্টেট কাউন্সিলের একাডেমিক ডিগ্রি কমিটি “পিএইচডি, মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদানের পেশাদার ক্যাটালগ” জারি করে। “ট্যালেন্ট ট্রেনিং ডিসিপ্লিনস (মন্তব্যের জন্য খসড়া)”, এর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন আন্তঃবিভাগীয় বিভাগের অধীনে প্রথম স্তরের শৃঙ্খলা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে চীনের আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন উন্নয়নের একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করে।
মূল শব্দ: আঞ্চলিক ও দেশীয়, চীন, শৃঙ্খলা নির্মাণ
১ . আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নের উন্নয়নের প্রেক্ষাপট
১.১ আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণার উৎস
আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি বিকাশে নবদিগন্তের হাতছানি
আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন মূলত ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও হ্যাবসবার্গ সাম্রাজ্যে "প্রাচ্যবাদ" এর একটি শাখা হিসেবে আবির্ভূত হয়। পাশ্চাত্যের বণিক বা ধর্মপ্রচারক যারা প্রাচ্যে ভ্রমণ করেছিলেন তারা তাদের নিজস্ব উপলব্ধির সঙ্গে জ্ঞান, কিংবদন্তি ও কল্পনার মতো অনেক কারণকে একত্রিত করেছিলেন। তারা প্রাচ্যের সাংস্কৃতিক রীতিনীতি, আইন, প্রথা ইত্যাদিকে পাশ্চাত্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছিলেন। তারা সত্য ও মিথ্যা তথ্য নিয়ে পাশ্চাত্যে ফিরে যান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্দিষ্ট আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন স্কুলের প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। তারা প্রধানত মানবিক বিষয়ে ফোকাস করে এবং ভাষা, ইতিহাস, রীতিনীতি, আইন ও সাহিত্য শেখায়(জরান,২০১৯)।
১.২ আধুনিক আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন
আধুনিক এলাকা অধ্যয়নের উৎস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়কাল থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। মার্কিন সরকারের গোয়েন্দা তথ্য এবং সামরিক প্রয়োজনের কারণে, প্রাথমিক এলাকা অধ্যয়ন কেন্দ্রটি অফিস অব স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেসের অফিসে অবস্থিত ছিল।
প্রারম্ভিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা অধ্যয়ন কোর্সের সঙ্গে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল (হুসাইন,২০১১)৷ মার্কিন সরকার রুথ বেনেডিক্টকে কমিশন দিয়েছে, রুথ জাপানের সংস্কৃতি ও সমাজ অধ্যয়ন করেছে, যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপান দখলের জন্য পরবর্তী নীতি প্রণয়ন করতে এবং জাপানি অধ্যয়নের প্রবণতা চালু করতে সহায়তা করে(লুস,২০০৮)।
১৯৬০-এর দশকে, আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন তুলনামূলক রাজনীতির সঙ্গে একত্রে বিকশিত হয় এবং কিছু আঞ্চলিক তুলনামূলক অধ্যয়ন শুরু হয়। ১৯৬০ সালে অ্যালমন্ড ও অন্যদের দ্বারা সম্পাদিত "দ্য পলিটিক্স অব ডেভেলপিং রিজিয়ন" ছিল প্রারম্ভিক আঞ্চলিক গবেষণায় একটি বিশ্বকোষ, যা প্রতিটি অঞ্চলের ইতিহাস, প্রক্রিয়া, গঠন ও কার্য বিশ্লেষণ করে(বালিন্দুন,২০১৩)।
১.৩ নতুন যুগে আঞ্চলিক গবেষণার উন্নয়ন
১৮৭০ থেকে ১৮৯০ এর দশক পর্যন্ত, আঞ্চলিক গবেষণা পদ্ধতি মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের মধ্যে পরিপূরকতা দেখাতে শুরু করে। এই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো তুলনামূলক রাজনীতি বিজ্ঞানসম্মত হতে শুরু করে। বিপুল সংখ্যক পণ্ডিত প্রকৃত স্থানীয় পরিস্থিতি বোঝার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণ ও মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে কার্যকারণ প্রক্রিয়া আবিষ্কার করতে শুরু করেন। সবচেয়ে বিখ্যাত কেস হলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপর জেমস স্কটের গবেষণা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কৃষকদের আচরণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে, তিনি স্থানীয় কৃষকদের প্রতিরোধের কারণ এবং কীভাবে তারা "দুর্বলদের অস্ত্র" ব্যবহার করেছিলেন তা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন(জেমস,২০১১)।
১৯৯০ এরপর, বিশ্বায়নের বিকাশ ও স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের প্রেক্ষাপটে, কিছু গবেষক "প্রথাগত আঞ্চলিক দেশ অধ্যয়ন" ও "অঞ্চলভিত্তিক জ্ঞান" এর মধ্যে পার্থক্য করার প্রয়োজনীয়তার প্রস্তাব করেন। আঞ্চলিক জ্ঞান থেকে বিকশিত সাধারণ তত্ত্বের চাহিদা পরিবর্তিত হওয়ার সঙ্গে আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণা পদ্ধতি আরও বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠেছে। অবশ্যই, সেই সময়কালে পদ্ধতিগত বিবাদে জড়িত হওয়া অনিবার্য ছিল।
আরও পড়ুন: ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ প্রসঙ্গে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশল সম্পর্কিত গবেষণা
২. চীনে আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণার উন্নয়ন
২.১ চীনে আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নের ঐতিহ্য
একটি দীর্ঘ ইতিহাসযুক্ত প্রাচীন সভ্যতা হিসেবে চীনের আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণার একটি গভীর ঐতিহ্য রয়েছে। "ঐতিহাসিক রেকর্ড"-এ কোরিয়া ও দাওয়ানের(উজবেকিস্তান) ঐতিহাসিক নথিগুলোকে প্রতিবেশী দেশগুলোর দেশভিত্তিক গবেষণা হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় রাজবংশের পরবর্তী সরকারি "ঐতিহাসিক রেকর্ড"র ঐতিহ্য অনুসরণ করে এবং আশেপাশের অঞ্চলের জাতিগত গোষ্ঠী, জাতি ও দেশগুলোকে নথিভুক্ত করে, প্রাসঙ্গিক গবেষণার ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার প্রদর্শন করে।
কিং রাজবংশের শেষের দিকে, পশ্চিমা দেশগুলো চীনের দরজা খুলতে শক্তি প্রয়োগ করে এবং চীনের মূলধারার বুদ্ধিজীবীরা "বিশ্বকে দেখার জন্য তাদের চোখ খুলতে" শুরু করে। এই সময়কালে বাহ্যিক বিশ্বের অবস্থার উপর অনেকগুলো মনোগ্রাফ তৈরি হয়েছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে প্রতিনিধিত্বকারী ছিল "ইং হুয়ান ঝি লু"।
চীন প্রজাতন্ত্রের সময়, ড. সান ইয়াত-সেনের সচিব দাই জিতাও-এর "অন জাপান" লিখেছেন (১৯২৮)। সাধারণভাবে বলতে গেলে, একটি দীর্ঘ গবেষণার ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও, নতুন চীন প্রতিষ্ঠার আগে চীনা বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের বহির্বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ও সঞ্চয়ন ছিল স্বতঃস্ফূর্ত, আদিম, বিক্ষিপ্ত ও সরল গবেষণার পর্যায়। তখন কোনো নিয়মতান্ত্রিক জ্ঞান ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি এবং কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাও ছিল না।
২.২ চীনের আধুনিক আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন
চীনের আধুনিক আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন শুরু হয়েছিল নতুন চীন প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে। ১৯৫৪ সালের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত, প্রধানমন্ত্রী ঝৌ এনলাই জেনেভা সম্মেলনে যোগদানের জন্য একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
নতুন চীন প্রথমবারের মতো পাঁচটি প্রধান শক্তির মধ্যে একটি হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রবেশ করে। একই বছরের ৭ জুলাই, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক ব্যুরোর বর্ধিত সভায় ঝৌ এনলাইয়ের প্রতিবেদন শোনা যায়। নতুন চীনে পদ্ধতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন শুরু হয়।
১৯৫৬ সালে, চীনের একাডেমি অব সায়েন্সেসের ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস ইনস্টিটিউট এবং জিয়ামেন ইউনিভার্সিটির নানিয়াং ইনস্টিটিউট ধারাবাহিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীকালে, অনেকে ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীকালে, পিকিং ইউনিভার্সিটি, চীনের রেনমিন ইউনিভার্সিটি এবং ফুদান ইউনিভার্সিটি যথাক্রমে ১৯৬৪ সালে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিভাগ স্থাপন করে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত পর্যায়েরও সূচনা করে।
২.৩ সমসাময়িক চীনের আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণা
সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় সংক্ষিপ্ত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হওয়ার পর, চীনে আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর থেকে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করে। ১৯৮০ সালে, চায়না ইনস্টিটিউট অব কনটেম্পোরারি ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণা ইউনিট প্রতিষ্ঠা করতে থাকে। একবিংশ শতাব্দীতে, যখন চীন দেশের গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ গভীরতর হচ্ছে, তখন আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নও তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধকরণকে ত্বরান্বিত করতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের জরুরি জলবায়ু তহবিল প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
১৯৯৯ সালে, চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের নয়টি মূল গবেষণা ভিত্তি স্থাপন করে যাতে আন্তর্জাতিক বিষয় জড়িত থাকে এবং উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন সম্পূর্ণ মনোযোগ পায়। পরবর্তীকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১১ সালে "জাতীয় ও আঞ্চলিক গবেষণা চর্চা ফাউন্ডেশন" প্রকল্প চালু করে এবং ২০১৫ সালে প্রশিক্ষণ ও নির্মাণ পদ্ধতি জারি করে।
৩. চীনের আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণার বৈশিষ্ট্য
৩.১ নিয়মানুবর্তিতা: শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নির্মিত হচ্ছে
'উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা' শীর্ষক বিআইডিএসের বার্ষিক সম্মেলন শুরু বৃহস্পতিবার
'উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলন শুরু হবে বৃহস্পতিবার।
আগামী ৭ থেকে ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান এবং অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।
আরও পড়ুন: করোনায় ১৩ শতাংশ মানুষ চাকরি হারিয়েছে: বিআইডিএস
সম্মেলনে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও নীতিবিকল্প, গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র, কোভিড-১৯ পরবর্তী সংকট বিশ্লেষণ, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, তৈরি পোশাক খাত, দক্ষিণ এশিয়ার হালনাগাদ প্রবৃদ্ধির অভিজ্ঞতা, বৈশ্বিক মূল্যের ধাক্কা ও খাদ্য নিরাপত্তা, লিঙ্গ, জনসংখ্যার মেগাট্রেন্ডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মোট ১৮টি প্রবন্ধ, ৭টি গণ বক্তব্য ও ৫টি বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। উন্নয়ন, কর, অবৈতনিক পরিচর্যার কাজ, বিবর্তিত বৈশ্বিক ব্যবস্থা, ভূ-অর্থনৈতিক বিষয়, সমসাময়িক বাংলাদেশে কৃষি পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং আরও অনেক কিছু থাকবে অন্তর্ভুক্ত।
আরও পড়ুন: ঢাকা শহরে ২০১৯-২০২২ সালের মধ্যে সামগ্রিক দারিদ্র্যের হার কমেছে ৪.৩ শতাংশ: বিআইডিএসের জরিপ
এস আর ওসমানী, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আহসান এইচ মনসুর, বিনায়ক সেন, আতিউর রহমান, সাজেদা আমিন, নায়লা কবীর, জায়েদী সাত্তার, হোসেন জিল্লুর রহমান, কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, আহমেদ মুশফিক মোবারক, সৈয়দ আবদুল হামিদ, প্যাট্রিক আলেকজান্ডার কার্বি, সিদ্ধার্থ শর্মা, ড্যানিয়েল রেসনিক, জেমস থারলো, পল ডরশ, গৌরব দত্ত, সৈয়দ মঈনুল আহসান, দিলেনি গুনওয়ার্দেনা, আহমদ আহসান, এম নিয়াজ, জিওফ উড এবং অন্যান্যরা সমসাময়িক উন্নয়ন আলোচনার মূল বিষয়গুলোতে মূল দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করবেন।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক, সুশীল সমাজের সদস্য ও স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করে 'অর্থনৈতিক নীতি: বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে নীতিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা' শীর্ষক বিশেষজ্ঞ প্যানেল আলোচনার মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটবে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে ধনী ও দরিদ্রের আয়বৈষম্য বেড়েছে: বিআইডিএস’র গবেষণা
গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসঙ্গে চলে: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জনগণের কল্যাণে সরকারের গ্রহণ করা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর জন্য সরকারি কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় দেশের নিয়মকানুন, প্রবিধান ও সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করবেন।’
বুধবার (২৯ নভেম্বর) ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কোর্সের (ডিএসসিএসসি) গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এই অনুষ্ঠানে ২৪টি দেশের ৪৯ জনসহ মোট ২৫৭ জন কর্মকর্তা গ্র্যাজুয়েট হন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সবসময় মনে রাখবেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসঙ্গে চলে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ন্যাশনাল ডিফেন্স ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীদের সাক্ষাৎ
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠনকে অগ্রাধিকার দেন এবং ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেন। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সরকার সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে 'ফোর্সেস গোল-২০৩০' প্রণয়ন করে।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, সরকারের যথাযথ কাজ হলো জনগণের পক্ষে ভালো কাজকে সহজ করা এবং মন্দ কাজকে কঠিন করা।
জনগণের জীবনমান উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর গতিশীল নেতৃত্বে অর্থনীতি ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সব সূচক ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল।’
আইনের শাসন, ব্যক্তিগত স্বাধীনতার নিশ্চয়তা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার, মূল্যবোধ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল স্থিতিশীলতার ভিত্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা ছাড়া অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ছাড়া স্বাধীনতা জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে না।
আরও পড়ুন: সশস্ত্র বাহিনী দিবস: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ৩ বাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ
তিনি আরও বলেন, ‘আইনের শাসনের অনুপস্থিতিতে সমাজ সঞ্চয়, অধ্যবসায়, সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তার ক্ষেত্রে ব্যক্তির ত্যাগের প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে পারে না।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জগুলো গতিশীল ও বহুমুখী এবং প্রচলিত হুমকি থেকে শুরু করে অপ্রচলিত হুমকি পর্যন্ত। কঠোর প্রশিক্ষণ আপনাদের নানা জটিল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও জ্ঞানার্জনের সুযোগ করে দিয়েছে।’
ডিএসসিএসসিকে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্ররূপ; বিভিন্ন পটভূমি, সংস্কৃতি ও দৃষ্টিকোণ থেকে সামরিক নেতাদের একত্রিত করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে গড়ে ওঠা বন্ধন সদিচ্ছা বাড়িয়ে তুলবে।।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিএজির মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ