পশু
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে দক্ষিণ সিটির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। শুক্রবার ডিএসসিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের স্বাক্ষরিত এক সবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজধানীর নগর ভবনের শীতলক্ষ্যা হলে এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছাড়াও সকল বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন সেশনে দায়িত্ব পালন করবেন।
কোরবানি পরবর্তী বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত তথ্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষে জানাতে ডিএসসিসি এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদেরকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর- ০১৭০৯৯০০৮৮৮ ও০ ২২২৩৩৮৬০১৪।
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত নাগরিকদের যে কোনও অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: রাত ১০টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
এছাড়াও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে ইজারাকৃত কোরবানীর পশুর হাটসমূহের উৎপাদিত বর্জ্য অপসারণ কাজে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সমন্বয়, প্রতিটি হাট থেকে সংগৃহীত ও অপসারিত বর্জ্যের পরিমাণ রেকর্ড করা, হাট থেকে সংগৃহীত ও অপসারিত বর্জ্যের সঙ্গে মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল থেকে প্রাপ্ত তথ্যের যাচাই করা, কোরবানি পরবর্তী ওয়ার্ডভিত্তিক সরেজমিনে মাঠপর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগপূর্বক প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা এবং বর্জ্য অপসারণ, পরিবহন ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা কাজে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, ওয়ার্ড পর্যায়ে সৃষ্ট বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম সরেজমিনে সচিত্র মনিটরিংয়ের জন্য দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলের জন্য ইতোমধ্যে ১০টি টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমগুলো ঈদের দিন দুপুর ২টা হতে ১২ জুলাই পর্যন্ত ৭৫টি ওয়ার্ডে সরেজমিনে সচিত্র বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম তদারকি করবে।
আরও পড়ুন: ১২ ঘণ্টায় ডিএনসিসি’র কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার করা হবে: মেয়র আতিকুল
রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটে ২২টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম
বাগেরহাটে জমে উঠেছে পশুর হাট
বাগেরহাটে কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। হাটে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে পশু বেচা-কেনা। হাটে দেশি-বিদেশি জাতের বিভিন্ন সাইজের গরুর সরবারহের ঘাটতি নেই। তেমনি ক্রেতারও কমতি নেই। তবে হাটে দেশি জাতের গরুর চাহিদা বেশি।
ক্রেতারা বলছেন, গেল বছরের চেয়ে এ বছর গরুর দাম অনেক চড়া।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জেলায় এ বছর ৫০ হাজার গরু এবং ৭০ হাজার ছাগল ও বেড়া প্রস্তুত রয়েছে।
বাগেরহাটের ফকিরহাটের বেতাগা পশুর হাট শুক্রবার সকাল থেকে জমে উঠেছে। দেশি-বিদেশি জাতের বিভিন্ন সাইজের কয়েক হাজার গরু আনা হয়েছে হাটে। দুর-দুরান্ত থেকে ক্রেতা আসছে হাটে। গভীর রাত পর্যন্ত এই হাটে গরু কেনা-বেচা চলবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার ফয়লাহাট কামাল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে বিশাল গরুর হাট। ট্রাক এবং পিকআপ থেকে গরু নামানো হচ্ছে হাটে। মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হওয়ায় আশে পাশে ফাঁকা জায়গায় খুটি গেড়ে গরু রাখা হয়েছে। ক্রেতারা এসে নানাভাবে গরু দেখার পর বিক্রেতাদের সাথে দরকষাকষি করছেন। চাহিদা মতো মূল্য না পাওয়ায় অনেকই গরু বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন।
ফয়লাহাটের এক প্রাশে গিয়ে দেখা গেলো, অস্টেলিয়ান হলেস্টিয়ান জাতের সাদা রঙের একটি গরু দেখতে ভিড় জমিয়েছে ক্রেতা এবং উৎসুক জনতা। ওই গরুটি হাটের সব চেয়ে বড় সাইজের বলে দাবি খামারীর। ওই গরুটির দাম হাকানো হয়েছে পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটে ২২টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম
হলেস্টিয়ান জাতের ওই গরুর খামারি খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার আনন্দনগর গ্রামের নিয়ামুল ইসলাম জানান, গত তিন বছর ধরে সে ব্যবসার জন্য বাড়িতে গরুর খামার গড়ে তুলেছে। তার খামারে ছোট-বড় মিলে মোট আটটি গরু রয়েছে। খামারের সব চেয়ে বড় দু’টি গরু বিক্রির জন্য হাটে তুলেছে। এর মধ্যে সাদা রঙের উপর হালকা কালোছোপ দেয়া গরুটি তার খামারের সব চেয়ে বড়। আর কালো রঙে গরুটির তার চেয়ে একটু ছোট। বড় গরুটির ওজন হবে ১৪ মণ। বিক্রির জন্য পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম হাকিয়েছে। ক্রেতারা সর্বোচ্চ চার লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন। আর কালো রঙের গরুটির ওজন হবে ১২ মণ। দাম হাকিয়েছে চার লাখ ৫০ হাজার টাকা।
খামারি নিয়ামুল ইসলামের তথ্যমতে, তার খামারে হলেস্টিয়ান জাতের সাদা রঙের ওই গরুটি তিন বছর ২ মাস আগে জন্ম নিয়েছে। সে গরুটিকে লালন পালন করে বড় করে তুলেছে। প্রতিদিন ওই গরুটির খাবারের জন্য তার ব্যয় হচ্ছে এক হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ওই খামারী তার গরু দু’টি বিক্রি করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন।
দেলোয়ার হোসেন, কালাম শেখ, আরিফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন খামারী ও গরু ব্যবসায়ী জানান, বছরজুড়ে তারা গরুর খাবার হিসেবে খড়, ভুট্টারগুড়া, ভুসি,সরিষার খৈল,তুলার খৈল, সয়াবিনের খৈল দিয়ে থাকে। গো খাদ্যোর মূলো বেড়ে যাওয়ায় গরুর মূল্যে বেড়ে গেছে। যে মূল্যে গরু বিক্রির টার্গেট নিয়েছে তার কমে বিক্রি করলে তাদের লোকসান গুনতে হবে।
ক্রেতা রামপাল উপজেলার সোলাকুড়া গ্রামের রাসেল গাজী জানান, দুপুর থেকে সে হাটে ঘুরে ঘুরে গরু দেখছে। হাটে গরুর আমদানি থাকলেও দাম অনেক। গত বছরের চেয়ে এ বছর গরুর দাম অনেক চড়া। বিগত বছর সে যে সাইজের গরু এক লাখ টাকায় ক্রয় করেছে এ বছর ওই সাইজের গরুর দাম এক লাখ ৩০ হাজার টাকার উপরে। দাম বেশি হওয়ায় রাসেল গাজীর মতো অনেক ক্রেতা বাজেট করে গরুর হাটে এসে হিমশিম খাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশু কেনাবেচায় ডিজিটাল হাট চালু
ফয়লাহাটের ইজারাদার গাজী আক্তারুজ্জামান জানান, হাটে ছয় থেকে সাত হাজার গরু উঠেছে। ছাগলও আছে কয়েক হাজার। বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোরসহ বিভিন্ন জেলার খামারি এবং ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে এসেছে হাটে। গভীর রাত পর্যন্ত চলবে হাট। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের সুবিধার্থে হাটে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। সরকারি নিয়ম মেনে খাজনা নেয়া হচ্ছে।
বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান জানান, জেলায় এ বছর ঈদুল আজহা সামনে রেখে ৫০ হাজার গরু এবং ৭০ হাজার ছাগল ও বেড়া প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে জেলায় ৩৮ থেকে ৪০ হাজার গরু এবং ১৫ থেকে ২০ হাজার ছাগল ও বেড়ার চাহিদা রয়েছে। লাভবান হতে খামার এবং পারিবারিক পর্যায়ে মানুষ গরু লালন পালন করছে। হাটগুলোতে ভ্যাটেনারী মেডিকেল টিম কাজ করছে। হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও গরু বিক্রি হচ্ছে।
গরুর দাম যাতে কম হয় এজন্য দানাদার খাবারের পরিবর্তে ঘাস খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, জেলায় স্থায়ী ১৩টি এবং অস্থায়ী পাঁচটি মিলে মোট ১৮টি গরুর হাট বসেছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। হাটে প্রবেশ এবং বাইর হওয়ার জন্য আলদা পথ রাখতে বলা হয়েছে।
এছাড়া জাল টাকা রোধে আইনশৃ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। সরকার নির্ধারিত হারে ইজারা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাস্তায় পশুর হাট নয়
রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটে ২২টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম
রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল সেবা দানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ২২টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার থেকে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের টিমগুলো এ কাজে নিযুক্ত হয়।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন অনুমোদিত পশুর হাটগুলোতে এ টিমগুলো কাজ শুরু করেছে।
রোগাক্রান্ত ও কোরবানির অনুপযুক্ত গবাদিপশু যাতে হাটে ক্রয়-বিক্রয় না হয় সেজন্য এ মেডিকেল টিম কাজ করছে।
এছাড়াও সারাদেশের কোরবানির হাটে এক হাজার ৭৩৯টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। একই সঙ্গে একটি বিশেষজ্ঞ ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমও কাজ করছে।
অপরদিকে, রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম তদারকি করবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
এ জন্য মন্ত্রণালয়ের ৯জন উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাকে নির্ধারিত পশুর হাটে দায়িত্ব দিয়েছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ১২টি মনিটরিং টিমও রাজধানীর কোরবানির পশুর হাট তদারকি করবে।
আরও পড়ুন: রাত ১০টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
কোরবানির পশু নিয়ে ঢাকার পথে ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন
গত বছরের চেয়ে কিছুটা বাড়িয়ে পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ
গত বছরের চেয়ে কিছুটা বাড়িয়ে পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এবারের কোরবানির লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ঢাকায় ৪৭ থেকে ৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৫ জুন) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আসন্ন ঈদুল-আযহা উপলক্ষে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যাবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এক ভার্চুয়াল মিটিং শেষে এ দাম ঘোষণা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি জানান, ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা। গত বছর যা ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। একই চামড়া ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে; গত বছর যা ছিল ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা।
এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা; গত বছর যা ছিল ১৫ থেকে ১৭ টাকা। পাশাপাশি প্রতি বর্গফুট বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ থেকে ১৪ টাকা, গত বছর যা একই ছিল।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চামড়ায় লবণ দেয়ার বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করতে হবে। সামনে একটি জুমার দিন রয়েছে সেদিন যদি চামড়ায় লবন দেয়ার বিষয়টি বলা হয়, তাহলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তথ্যসচিব মো. মকবুল হোসেন, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক এ.এইচ.এম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদসহ চামড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, গত বছর ঢাকাতে প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৫ থেকে ১৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
পড়ুন: মানবজীবনে পবিত্র ঈদুল আযহার শিক্ষা
ঈদ উপলক্ষে ১ লাখ ৩০০ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ
রাস্তায় পশুর হাট নয়
আসন্ন ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এবার রাস্তায় পশুর হাট বসতে দেয়া হবে না। আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
রবিবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুক্তিযদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, রাস্তার ওপর পশুর হাট, হাটে যে খাজনা নেয়া হয় বা হাসিল, পশুর ট্রাকে বাঁধা দিয়ে চাঁদাবাজি, জোর করে হাটে পশু নামানো এ বিষয়গুলো বৈঠকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে প্রশাসন যেন সতর্ক থাকে কোন ব্যবসায়ী বা ক্রেতাদের যাতে ভোগান্তিতে পড়তে না হয়।
তিনি বলেন, যত্রতত্র যাতে পশুর হাট না বসে।অনেক সময় দেখা যায়, ঢাকার বাইরেও রাস্তার পাশে হাট বসছে। ফলে গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। কাজেই রাস্তার পাশে কোন অবস্থায় সাময়িকভাবেওযেনো কোরবানির পশু বিক্রি না হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, এখন থেকেই বড় সাইনবোর্ড থাকবে টোল রেট (হাসিল) কতো। তারা তাদের ইচ্ছা মতো নেয়। শতকরা হার কতো তা হাটে চার্টটা দৃশ্যমান থাকতে হবে। পত্রপত্রিকার মাধ্যমেও ব্যাপক প্রচার প্রচারণা করা হবে। যাতে বেশি নিতে না পারে সে জন্য সেখানে (পশুর হাট) ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে।
তিনি বলেন, পশুর চামড়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই বছর আমরা লক্ষ্য করেছি মানুষ চামড়ার ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। আমাদের দেশে প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থাটা নেই, কাঁচা চামড়া বিদেশে বিক্রি করা যায় না। মধ্যস্বত্ব ভোগীরাই সব সুবিধা ভোগ করে। যারা চামড়া বিক্রি করে তারা খুব কম দাম পায়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেড় লাখের বেশি কোরবানি পশু প্রস্তুত: জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর
তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয় অচিরেই সভা করে চামড়ার রেট ঘোষণা করবে। আগামী দুই দিনের মধ্যে শিল্প ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সাভারের চামড়া শিল্প নগরী পরিদর্শন করবেন। যাতে ওখানকার কারখানাগুলো ইফেক্টিভলি রান করতে পারে। কোনো অজুহাত যাতে ব্যবসায়ীরা দাঁড় করাতে না পারে, সেটা দেখার জন্য।
একই সঙ্গে মিলকারখানার মালিকদের জন্য আমাদের পরামর্শ সময়ের মধ্যে যেনো তাদের শ্রমিকরা বেতন-ভাতা, তাদের প্রাপ্য পেয়ে যায়। টাকা পয়সার জন্য তাদের মধ্যে যেনো কোনো অসন্তোষ সৃষ্টি না হয়। স্থানীয় প্রশাসন আগে থেকেই এসব মিল কলকারখানা খবর নিতে থাকবে।
পদ্মা সেতুসহ দেশের অন্যান্য সেতু, ওভারব্রিজে ডিজিটাল টোল ব্যবস্থা চালুর করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন পরেই ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য দেশের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর আমরা দেখেছি পদ্মা সেতুতে অনেক টোল আদায় হচ্ছে। এই টোল দিতে অনেক কষ্ট হয়। কারণ ম্যানুয়ালি সংগ্রহ করা হয়।
'আসন্ন ঈদে হাজার হাজার গাড়ি যাবে। তখন দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। তাই এই ঈদে কিছু করা যাবে না। ভবিষ্যতের জন্য সারা দেশে যাতে অটোমেশন টোলের ব্যবস্থা করা যায়, এ জন্য আমাদের প্রত্যেকের গাড়িতে ইলেকট্রনিক ডিভাইস স্থাপন করতে হবে। এতে করে কাউকে আর ম্যানুয়ালি টোল দিতে হবে। এই ব্যবস্থা দ্রুত চালুর জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছি' বলেন আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নয়, দেশের অন্যান্য সকল সেতুতে যেখানে টোল দেয়া হয় সেখানেই মানুষের অনেক কষ্ট হয়। এ জন্য সেতুর সুফলটা মানুষ ঠিক মতো পায় না। তাই ব্রিজ ও ওভারব্রিজের সুবিধা পেতে হলে দ্রুত ডিজিটাল টোল ব্যবস্থায় যেতে হবে। তাহলে মানুষ এর সুবিধা পাবে। যত দ্রুত সম্ভব প্রতিটি গাড়িতে এই ব্যবস্থা করতে হবে। যেটা আমরা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে দেখে থাকি। এ বিষয় আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।
এ সময় তিনি আরও জানান, বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরে যেতে হবে। তবে যে পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে থাকবে, সে সময়ে কোনো অপরাধ করলে কি আইনে ব্যবস্থা নেয়া যায়। সে বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদ উপলক্ষে সারাদেশে ৪৪০০টির বেশি পশুর হাট বসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এবার ১.২১ কোটির বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত: মন্ত্রী
বিশ্বনাথে পশু ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
সিলেটের বিশ্বনাথে আরশ আলী (৪৫) নামের এক পশু ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব মন্ডল কাপন গ্রামের একটি বাড়ির সামনের গেইটের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আরশ আলী উপজেলার নতুন বাজার খাইয়াখাইড় গ্রামের মৃত আখলুছ আলীর ছেলে।
বিশ্বনাথ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রমা প্রসাদ লাশ উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ইউনিয়নের পূর্ব মন্ডল কাপন গ্রামের মতিন মিয়া ও সিরাজ মিয়ার বাড়ির সামনের গেইটের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশে বিভিন্ন আলামত দেখে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:সিলেটের সব রেস্টুরেন্ট বন্ধের ঘোষণা
নিহতের শালা ময়নুল ইসলাম জানান, তার ভগ্নিপতি আরশ আলী বিশ্বনাথ পৌর এলাকার দতা গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বাস করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পশু ব্যবসা করতেন।
আরশ আলী প্রতিদিনের মতো বুধবার দুপুরে বিশ্বনাথ বাজারে কেনাকাটা করার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাত ১১টায় তাকে (ময়নুল) মুঠোফোনে কল দিয়ে জানান, তিনি এখনও বিশ্বনাথ বাজারে অবস্থান করছেন এবং কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরবেন।
কিন্ত রাতে বাড়িতে না ফেরায় তার মুঠোফোনে পরিবারের লোকজন কল দিলে ফোন বন্ধ পায়।
বৃহস্পতিবার ভোরে পূর্ব মন্ডল কাপন গ্রামের মতিন মিয়া ও সিরাজ মিয়ার বাড়ির সামনের পাকা গেইটের সাথে আরশ আলীর লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় লোকজন।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে এবং ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কেউ পরিকল্পিতভাবে আরশ আলীকে হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে।
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘কথিত’ আরসা নেতা হাসিমের লাশ উদ্ধার
সিলেটে নবজাতকের গলিত লাশ উদ্ধার
মানিকগঞ্জে বজ্রপাতে মৃত্যু ২
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেলে সিংগাইর উপজেলার শায়েস্তা ইউনিয়নের শিবপুর কালেন্দি চকে গবাদি পশুর জন্য ঘাস কাটতে গেলে বজ্রপাতের আঘাতে মারা যান তারা।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন, সিংগাইরের শিবপুর গ্রামের শাহিন মিয়া (৪২) এবং মো. রুবেল হোসেন (৪০)।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় বজ্রপাতে ২ কৃষক নিহত
স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)তদন্ত শেখ মোহাম্মদ আবু হানিফ বলেন, বিকেল ৪টার দিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাত হচ্ছিল। ওই সময় শাহিন ও রুবেল ধান খেতে ঘাস কাটছিল। বিকট শব্দে বজ্রপাতের আঘাতে তাদের মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।
সারাদেশে মোট ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি পশু কোরবানি হয়েছে
এ বছর ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। যার মধ্যে ৪০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৯টি গরু-মহিষ, ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৮টি ছাগল-ভেড়া ও ৭১৫টি অন্যান্য গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কোরবানির শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে: মেয়র আতিকঢাকা বিভাগে ৯ লাখ ৭৩ হাজার ৮৩৩টি গরু-মহিষ, ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৫৬টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৩৬৩টিসহ মোট ২২ লাখ ৩৯ হাজার ২৫২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ লাখ ৭১ হাজার ২৩১টি গরু-মহিষ, ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮৬টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ২০১টিসহ মোট ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫১৮টি, রাজশাহী বিভাগে ৬ লাখ ১৬ হাজার ৭৩৩টি গরু-মহিষ, ১২ লাখ ১৬ হাজার ২৮৩টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ১২৯টিসহ মোট ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ১৪৫টি, খুলনা বিভাগে ২ লাখ ৩৯ হাজার ১৪৭টি গরু-মহিষ, ৬ লাখ ১৮ হাজার ৪৪৩টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ১১টিসহ মোট ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৬০১টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য সরাবে ডিএসসিসি
বরিশাল বিভাগে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬২১টি গরু-মহিষ, ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৮টি ছাগল-ভেড়াসহ মোট ৪ লাখ ৬১ হাজার ৯৭৯টি, সিলেট বিভাগে ২ লাখ ৯ হাজার ৫৬৯টি গরু-মহিষ, ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৪টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৮টিসহ মোট ৪ লাখ ৮ হাজার ৯৪১টি, রংপুর বিভাগে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ২২০টি গরু-মহিষ, ৫ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩৯ টি ছাগল-ভেড়াসহ মোট ১০ লাখ ৪৪ হাজার ৮৫৯টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ লাখ ৮০ হাজার ৩২৫টি গরু-মহিষ, ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬১৯টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৩টিসহ মোট ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯৪৭টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়ালো সরকার
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকার এবছর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম গ্রহণ করে। সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আইসিটি বিভাগসহ অন্যান্য দপ্তর-সংস্থা, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ অন্যান্য বেসরকারি সংগঠন ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে গবাদিপশুর ডিজিটাল হাট পরিচালনা করে।
এই প্রেক্ষিতে এবছর অনলাইনে মোট ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫৭৯টি গবাদিপশু বিক্রয় হয়েছে যার আর্থিক মূল্য ২ হাজার ৭৩৫ কোটি ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬৭৮ টাকা। গতবছর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবাদিপশু বিক্রি হয়েছিল ৮৬ হাজার ৮৭৪টি যার আর্থিক মূল্য ছিল ৫৯৫ কোটি ৭৬ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪ হাজার ৮২৯ টাকা। এবছর গতবছরের তুলনায় প্রায় ৫ গুণ বেশি গবাদিপশু অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল কোরবানির পশুর হাটের উদ্বোধন
আগামী বছর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয়ের পরিসর আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করবে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ।করোনা মহামারির মধ্যেও গবাদিপশু উৎপাদন, কোরবানির পশু প্রস্তুতকরণ, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা ও খামারিদের উদ্বুদ্ধকরণ, পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল সেবা প্রদানসহ সুষ্ঠুভাবে কোরবানির সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ।
আরও পড়ুনঃ অনলাইনে জমে উঠেছে কোরবানির পশু বেচাকেনা
একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রাণিসম্পদ খাতের খামারি, উদ্যোক্তা, ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনসহ কোরবানির সাথে সম্পৃক্ত সকল সরকারি, বেসরকারি দপ্তর, সংস্থা ও সংগঠনকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন রওনক মাহমুদ।
আজকের মধ্যেই কোরবানি শেষ করুন: মেয়র তাপস
আজকের(বৃহস্পতিবার) মধ্যেই কোরবানির পশু জবাই দেওয়ার কাজ শেষ করার জন্য ঢাকাবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বৃহস্পতিবার দুপুরে 'কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম তদারকি' বিষয়ে নগর ভবনের শীতলক্ষ্যা হলে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র এই অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুনঃ সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে: মেয়র তাপস
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমি ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করছি, আপনারা আজকের মধ্যেই কোরবানি দেওয়া বা পশু জবাই শেষ করুন। আমাদের বিশাল জনবল নিরবিচ্ছিণ্নভাবে এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম করে থাকে। তাদেরও ঈদ আছে, তাদের বিশ্রামেরও প্রয়োজন আছে। আমরা তাদেরকে একদিন ঈদের ছুটি দিতে চাই।’
আরও পড়ুনঃ কোরবানির শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে: মেয়র আতিক
তিনি আরও বলেন, ‘নিতান্তই কেউ যদি আজকের মধ্যে কোরবানির পশু জবাই শেষ করতে না পারেন, তাহলে দয়া করে আপনারা আগামীকাল নিজ দায়িত্বে পশুর বর্জ্য নির্ধারিত ব্যাগে ভরে আপনার নিকটবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রে রেখে আসুন। বাস্তবতা হলো - আমরা একদিকে বর্জ্য অপসারণ করে আসি, এরপর লোকজন আবারও উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য ফেলে আসে। তাই শতভাগ বর্জ্য অপসারণের পরও কিছু কিছু জায়গায় আবারও বর্জ্য দেখা যায়। সেটা প্রত্যাশিত নয়। আমরা জনগণকে আমাদের এই বিশাল কর্মযজ্ঞে সহযোগিতার আহবান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুনঃ তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন: মেয়র আতিক
মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা অনেক জায়গায় চামড়া ফেলে যাচ্ছেন জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘একটা বিষয় আমরা লক্ষ্য করছি, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া সংগ্রহ করেছেন। সেই চামড়াগুলো হয়তো তারা বিক্রি করতে পারেননি। আজ সকাল থেকে আমরা লক্ষ্য করছি - বিভিন্ন জায়গায় নর্দমার সামনে, নর্দমার মুখে তারা সেই চামড়াগুলো ফেলে গেছেন। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আমি বারবার নিবেদন করেছি, কোনভাবেই যেন আমাদের নালা-নর্দমাগুলো বন্ধ করা না হয়, এখানে বর্জ্য ফেলা না হয়।’
এ সময় আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার টন কোরবানির পশুর ও হাটের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে মেয়র জানান। মতবিনিময়কালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, সচিব আকরামুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে ঢাদসিকের ১০ কমিটি
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটের বর্জ্য এবং ঈদের দিনের বর্জ্য অপসারণ তদারকি করার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কমিটি গঠন করেছে।
ডিএসসিসি এলাকার পশুর হাট এবং ঈদের দিনে কোরবানির বর্জ্য দুপুর ২টার মধ্যে অপসারণর লক্ষ্যে কাজ তদারকি করার জন্য এই টিমগুলো গঠন করা হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে এই টিমগুলো গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ইউএনডিপি, স্কাউটসের উদ্যোগে পশুর হাটে মাস্ক বিতরণ
এছাড়াও করপোরেশনের শীতলক্ষ্যা হলে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম সচিত্র তদারকির জন্য একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
করপোরেশনের আওতাধীন যেকোনও নাগরিক তার নিজ এলাকায় সৃষ্ট বর্জ্য সম্পর্কিত তথ্যাদি প্রেরণ বা পশুর বর্জ্য অপসারণ সম্পর্কিত সমসা সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে কঠোর ব্যবস্থা: মেয়র আতিক
নিয়ন্ত্রণ কক্ষে করপোরেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ তিন শিফটে ১৮ জুলাই দুপুর ২টা হতে ২৪ জুলাই দুপুর ২টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠ পর্যায়ে চলমান বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম তদারকি করবে।
সময়মতো বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্যে ডিএসসিসি এলাকায় নিয়মিত ৫০০০ কর্মীর পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ৫০০০ কর্মী কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে নিযুক্ত থাকবে।