ঐতিহ্য
বাঙালির ঐতিহ্য-সংস্কৃতি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, একটা সময় ছিল দেশে ধর্ম নিয়ে কেউ বাড়াবাড়ি করত না। হিন্দু মুসলমান সবাই দলবেঁধে একে অপরের ধর্মীয় উৎসবে অংশ নিত। হঠাৎ করে সেই সুন্দর সম্প্রীতির সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী বিভেদ আনার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি কথা বারবার বলেন, আমিও বলছি, ধর্ম যার যার উৎসব হবে সবার। আবহমানকালের আমাদের বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্র আর সহ্য করা হবে না।
আরও পড়ুন: এমবিবিএস-বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় রাজধানীর সবুজবাগ বাসাবোর রাজারবাগ এলাকায় বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দিরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত উপস্থিত মেডিকেল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তোমরা দলে দলে ডাক্তার হও, এটা যতটা জরুরি তার থেকেও অনেক বেশি জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তোমাদেরকে সৎ, আদর্শিক মানুষ হওয়া এবং ভালো ডাক্তার হওয়া।
আরও পড়ুন: দেশে ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, দেশের লাখ লাখ অসহায় মানুষ তোমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। একজন রোগী যখন চিকিৎসা নিতে আসে সেই রোগীই জানে তার জন্য ডাক্তার কত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এজন্য ডাক্তারদের সংখ্যা বৃদ্ধির থেকে ভালো মানুষ ও ভালো মানের ডাক্তার হওয়ার দিকে আমি বিশেষ জোর দিয়েছি।
তোমাদের প্রত্যেককে সৎ মানুষ ও ভালো ডাক্তার হতে হবে।
আরও পড়ুন: বিদেশি রোগীও মেডিকেল ভিসায় বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে আসতে শুরু করেছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
গ্যালারি অন হুইলস: ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় রিকশা পেইন্টারদের কসমস ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা
ঢাকার রিকশা পেইন্টারদের একটি দলকে সম্মান জানিয়ে 'গ্যালারি অন হুইলস' শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কসমস ফাউন্ডেশন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বারিধারার ব্যক্তিগত জাদুঘরে কসমস ফাউন্ডেশনের শিল্প শাখা গ্যালারি কসমসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
চলতি মাসের শুরুতে রিকশা ও রিকশা চিত্রগুলোকে ইউনেস্কো তার ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান জুনিয়র, কসমস ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী এবং কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সুশীল সমাজ, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ হানিফ পাপ্পু, সৈয়দ আহমেদ হোসেন, এস এ নূর আলী, মো. মনির হোসেন ও মোহাম্মদ সোলেমানসহ বিভিন্ন রিকশা চিত্রশিল্পী ও দেশি-বিদেশি গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘ইউনেস্কোর ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি ঐতিহ্যের তালিকায় এই উল্লেখযোগ্য অন্তর্ভুক্তিকে সম্মান জানাতে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য রিকশা চিত্রশিল্পীদের এবং কসমস ফাউন্ডেশনকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। এই বছর আমরা ঢাকায় আমাদের ঐতিহ্যবাহী (স্বাধীনতা) কুচকাওয়াজের অংশ হিসেবে 'অ্যাডর্ন-এ-রিকশা'- শিরোনামের একটি অনন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। যা ছিল আমাদের দেশের আইকনিক বাহনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আমাদের সমৃদ্ধি ও ফিলিপিনো উৎসবের রং।’’
অনুষ্ঠানটি যে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছে এবং ফিলিপাইনের ‘আতি আতিহান’ উৎসবের মতো বিশ্বব্যাপী ঐতিহ্যবাহী উৎসবগুলোর কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত লিও বলেন, এই অর্জন উদযাপনের জন্য বাংলাদেশেরও একটি রিকশা-থিমভিত্তিক বার্ষিক উৎসব হওয়া উচিত।
কসমস ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘‘যখন আমরা বড় হয়েছি, আমরা পেছনে প্রাণবন্ত ও অর্থবহ চিত্রকর্ম সম্বলিত রিকশা দেখেছি– এবং সবসময় উপলব্ধি করেছি যে এই কাজের উল্লেখযোগ্য শৈল্পিক মূল্য রয়েছে। আমি এনায়েতউল্লাহ খান ও কসমসকে অভিনন্দন জানাতে চাই এটি উপলব্ধি করার জন্য এবং আজ রাতে আমাদের সামনে এর গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য। এই শিল্প আমাদের জীবদ্দশায় বহুদূরে এগিয়ে যাবে। কারণ রিকশা ও রিকশাচিত্র যানবাহনের চেয়ে বেশি, ঢাকা ও এর জনগণের সঙ্গে এর এক ধরনের অনন্য ও চিরায়ত বন্ধন রয়েছে। এটি সেই সম্পর্কের সারমর্ম, যা সহজাতভাবে কখনই ফিকে হওয়ার নয়, ইউনেস্কো একেই স্বীকৃতি দিয়েছে এবং আমরা আজ এখানে তা উদযাপন করছি।’’
আরও পড়ুন: ‘বিজয়’: বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী-মুক্তিযোদ্ধা বীরেন সোম ও শিশু শিল্পীদের নিয়ে গ্যালারি কসমসের দিনব্যাপী আর্ট ইভেন্ট
ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র
ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র।
আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসানে শহরে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণবিষয়ক ২০০৩ কনভেনশনের চলমান ১৮তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সভায় মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) এ বৈশ্বিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন: ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি
জামদানি বয়ন শিল্প, শীতল পাটি বয়ন শিল্প, বাউল গান ও মঙ্গল শোভাযাত্রার পর প্রায় ছয় বছরের বিরতিতে বাংলাদেশের পঞ্চম অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ‘ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র’ স্বীকৃতি লাভ করেছে।
উল্লেখ্য, ছয় বছর ধরে এ চিত্রকর্মের নিবন্ধন ও স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও প্রথম চেষ্টায় তা ব্যর্থ হয়।
তবে ২০২২ সালে পুনরায় নথিটি জমাদানের সুযোগ দিলে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ও প্যারিসস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় সম্পূর্ণ নথিটি নতুনভাবে প্রস্তুত করা হয়।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও সচিব খলিল আহমদ এ অর্জনকে বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান হিসেবে অভিহিত করেন।
এছাড়াও নিবন্ধন ও স্বীকৃতি প্রক্রিয়ায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর ও প্যারিসস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসকে অভিনন্দন জানান।
বাংলাদেশের রিকশাচিত্র ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর সভায় উপস্থিত আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সদস্য, উপস্থিত মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূতসহ শতাধিক দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান এবং এ চিত্রকর্মের বৈচিত্র্যপূর্ণ বহিঃপ্রকাশে তাদের সন্তুষ্টি ব্যক্ত করেন।
এ অর্জনের মাধ্যমে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হলো।
এখানে উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে ৪২তম সাধারণ পরিষদের সভায় বাংলাদেশ ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়।
ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের এ ধারাবাহিক সাফল্যকে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অগ্রযাত্রা হিসেবে অভিহিত করেন সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন: ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত বাংলাদেশ
সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সমর্থন: মন্ত্রী
পিঠা-পুলি বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যের অংশ: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, পিঠা-পুলি বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যের অংশ। এ ছাড়া বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে পিঠা-পুলির আয়োজন।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিয়ামতপুরের ঘুঘুডাঙ্গার তালতলিতে তৃতীয়বারের মতো তাল পিঠা মেলা অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: গুজব ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে: খাদ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রত্যেক সৃষ্টির আনন্দ আছে। সেই সৃষ্টি টেকসই হলে আনন্দ আরও বেড়ে যায়। একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তালের গাছ রোপন করেছিলাম। সেই ঘুঘুডাঙ্গার তাল সড়ক এখন দেশে ও বিদেশে ব্রান্ড হয়ে উঠেছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, তালসড়ককে কেন্দ্র করে ঘুঘুডাঙ্গা একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। কিছু কাজ করা হয়েছে। জলবায়ু ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ এখানে অর্থায়ন করার আশ্বাস দিয়েছে।
আরও পড়ুন: আউশ ধানের চাষ বেশি হওযায় চাল আমদানির প্রয়োজন হবে না: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যের অপচয় বন্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির হাজার বছরের ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির হাজার বছরের যে ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলোকে আরও সমৃদ্ধ করতে আমাদের দেশের শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের আরও বেশি মনযোগী হতে হবে।
শুক্রবার (২১ জুলাই) সিলেটে ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সিলেট অঞ্চলের অনেক মনীষী আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশিষ্টতা দিয়েছেন। বিশেষ করে হাসন রাজার গান, শাহ আব্দুল করিমের গান ওনাদের সৃষ্টিশীল কর্ম মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ সম্ভবত এসব গুণীজন একাধারে গান রচনা, সুরারোপ, সংগীত চর্চায় আত্মনিবেদিত ছিলেন। সে কারণে তাদের সৃষ্টি অনন্য এবং অমর হয়ে আছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু সিলেট অঞ্চলের নয়, আমাদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেন এরকম অনেক গুণীজন তাদের অনন্য সৃষ্টি রেখে গেছেন। এদের মতো করে শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় মনোনিবেশ করলে আমাদের সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হবে, আরও বৈচিত্র্যময় হবে। আর সেজন্য আজ যারা শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় অবদানের জন্য সম্মাননা পেলেন এবং আগামীতে যারা পাবেন তারা এসব সৃষ্টিশীল কাজে আরও বেশি মনোনিবেশ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
আরও পড়ুন: অন্য দেশে এমন ঘটনা ঘটলে বিদেশি মিশন কি বিবৃতি দেয়: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের সংস্কৃতি চর্চায় সবধরনের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। জেলা, উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলার নিয়মিত কর্মকাণ্ড আয়োজনে সরকারি ব্যবস্থাপনা পূর্বের চেয়ে এখন অনেক বাড়ানো হয়েছে।’
গুণীজনদের কাজের সরকারি স্বীকৃতি হিসেবে শিল্পকলা একাডেমির সম্মাননা সংস্কৃতি কর্মীদের উৎসাহিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে পাঁচজন গুণিজনের হাতে ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা ২০২২’ তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- লোকসংস্কৃতিতে মিহিরকান্তি চৌধুরী, কণ্ঠসংগীতে পূর্ণিমা দত্ত রায়, নাট্যকলায় চম্পক সরকার, আবৃত্তিতে জ্যোতি ভট্টাচার্য, যন্ত্রসংগীতে (বাঁশি) মো. মিনু মিয়া।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সিলেটের গুণীজন, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিলেটের জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশ গুপ্ত।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘গোপন তথ্য’ কারা ফাঁস করেছে তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি: মোমেন
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য: মেয়র আতিক
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র বলেন, ‘সকল ধর্মের উৎসব আয়োজনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সবসময় পাশে আছে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের সামগ্রিক অগ্রযাত্রায়। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে ঋদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।’
রবিবার বিকালে প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের হল রুমে শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ১২ ঘণ্টার আগেই কোরবানির বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করা হয়েছে: মেয়র আতিক
মতবিনিময় সভায় পূজামণ্ডপে আগত শিশু ও নারী দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, যানযট নিরসণে ব্যবস্থা গ্রহণ, রাস্তাঘাট সংস্কার, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এ যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
এসময় মেয়র বলেন, ‘দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, সামাজিক উৎসবও। দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন, পাড়া-প্রতিবেশি একত্রিত হন, মিলিত হন আনন্দ-উৎসবে। তাই এ উৎসব সার্বজনীন। এ সার্বজনীনতা প্রমাণ করে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’
এসময় মেয়র পূজামণ্ডপের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণ, নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানো, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ, রাস্তাঘাট সংস্কারে ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেন। ডিএনসিসির কুইক রেসপন্স টিমকে সর্বদা প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দেন তিনি।
সভায় কাউন্সিলর ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা ডিএনসিসির আওতাধীন অঞ্চলের পূজামণ্ডপের সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন। এসময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মো. আবু ইউসুফ পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি উপস্থাপন করেন।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সেলিম রেজা’র সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, ডিএনসিসির সকল বিভাগীয় প্রধান ও কাউন্সিলররা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মো. আবু ইউসুফ এবং ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ২০ ফিটের কম প্রশস্তের রাস্তার উন্নয়নে কোনো বরাদ্দ নেই: মেয়র আতিক
ঢাকা শহরকে বাঁচাতে গাছ লাগাতে হবে: মেয়র আতিক
শেরপুরে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় মানুষের ঢল
পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও শেরপুর শহরের নবীনগর ছাওয়াল পীরের দরগা সংলগ্ন খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দুই শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। শুক্রবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নবীনগর এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মেলায় সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছিল।
পৌষমেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ‘গাঙ্গি’ খেলা (কুস্তি) ছাড়াও ঘোড়দৌড়, সাইকেল রেস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কারর বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. নজরুল ইসলাম।
শেরপুরের এ পৌষ মেলার প্রধান আকর্ষণ ‘গাঙ্গী খেলা’। বড়-মাঝারি-ছোট এ তিনটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হয় গাঙ্গী খেলা। মেলায় বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের দোকানেও ছিল ব্যাপক ভিড়। শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে পৌষমেলা হয়ে উঠেছিলো জমজমাট ও প্রাণবন্ত।
রাতে এ উপলক্ষে দরগাহ প্রান্তরে আয়োজন করা হবে বাউল গানের আসর।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও পৌষ মেলা আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী শেখ মমতাজ জানান, স্থানীয় নবীনগর এলাকাবাসী প্রায় ২০০ বছর যাবত এ মেলার আয়োজন করে আসছে। প্রতি বছর বাংলা পৌষ মাসের শেষদিন (পঞ্জিকা মতে) ছাওয়াল পীরের দরগাহ সংলগ্ন মাঠে এ পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য বজায় রেখে এবছরও পৌষমেলার আয়োজন করেছি। এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। এর মধ্য দিয়ে গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতি লালনের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় হয়।
আরও পড়ুন: ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই’
কসমস আতেলিয়ার৭১ এর আয়োজনে 'আর্টিস্ট রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম'
রাঙামাটিতে গুর্খা সম্প্রদায়ের ‘টিকা লাগাউনে’ উৎসব
শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে রাঙামাটিতে বসবাসরত গুর্খা সম্প্রদায়ের ‘টিকা লাগাউনে’ (বড়রা ছোটদেরকে আর্শিবাদ দেয়া) উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সকালে শহরের বিভিন্ন মন্দিরের মন্ডপে দশমীর অঞ্জলী প্রদান শেষে গুর্খা সম্প্রদায়ের বাড়িতে বাড়িতে এই উৎসব চলে।
আর এরই ধারাবাহিকতায় রাঙ্গামাটির জেল রোডস্থ সুর নিকেতন সঙ্গীত শিক্ষালয় ভবনে সুর নিকেতন প্রতিষ্ঠাতা মনোজ বাহাদুর গুর্খা ও সহধর্মিনী লক্সমি মানজি গুর্খার আয়োজনে মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে রাঙ্গামাটিতে বসবাসরত গুর্খা সম্প্রদায়ের ‘টিকা লাগাউনে’ উৎসব পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: আজ বিজয়া দশমী
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, গুর্খা সম্প্রদায়ের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা রাম বাহাদুর রায়, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপেন কুমার ঘোষ, কাউখালী সরকারী কলেজের অধ্যাপক রিপন ঘোষ, নারী নেত্রী শিলা রায়, সাংবাদিক মিল্টন বাহাদুর, বিগ এইচ প্রোডাকশনের সত্ত্বাধিকারী ও বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী হিমাদ্রী গুর্খা মিতুলসহ গুর্খা সম্প্রদায়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সুর নিকেতন সঙ্গীত শিক্ষালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা।
এসময় সুর নিকেতন প্রতিষ্ঠাতা মনোজ বাহাদুর বলেন, আদিকাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত গুর্খা সম্প্রদায়ের মানুষ শারদীয় দূর্গা উৎসেব দশমীর দিনে এই ‘টিকা লাগাউনে’ উৎসব পালন করে আসছে। এই উৎসবের মাধ্যমে সম্প্রীতি-ভ্রাতৃত্ববোধ ও পারস্পরিক সৌহাদ্য উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লার ঘটনায় অপরাধীদের খুঁজে বের করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল বলেন, গুর্খা সম্প্রদায়ের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে ভ্রাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে চলার পথ দেখাতে হবে। যাতে করে এই নতুন প্রজন্ম গুর্খা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন উৎসব ও আচার অনুষ্ঠান যথাযথ ভাবে উৎসব মুখর ভাবে পালন করতে পারে।
সুষ্ঠ সংস্কৃতি চর্চায় ভূমিকা রাখবে নৃ-গোষ্ঠীর ‘কারাম উৎসব’: খাদ্যমন্ত্রী
নৃ-গোষ্ঠীর নতুন প্রজন্মকে সমাজের মূল স্রোতে আনতে শিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তোলার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ‘নৃ-গোষ্ঠীর নেতাদের শিক্ষায় আগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি মাদকমুক্ত সমাজ গঠনেও ভূমিকা রাখতে হবে। কারাম উৎসব ভাতৃত্ববোধ তৈরি ও সুষ্ঠু সংস্কৃতির চর্চায় ভূমিকা রাখবে।’
মঙ্গলবার বিকেলে নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দন নগর ইউনিয়নের বুধুড়িয়ার লক্ষীডাঙ্গায় 'নৃ-গোষ্ঠীর কারাম উৎসব' উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকার খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টিমান উন্নয়নে কাজ করছে: খাদ্যমন্ত্রী
এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে একাত্তরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যরা মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেয়। তাদের স্বতন্ত্র সংস্কৃতি আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্য যোগ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কৃতির বিকাশ ও লালনে সরকারের নানামুখী উদ্যোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে এখানকার নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ তরুণীদের নিয়ে একটি সাংস্কৃতিক দল গঠন করা হয়েছে।’ এসময় এ অঞ্চলের নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতিকে দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু বাঙালির অনুপ্রেরণার বাতিঘর: খাদ্যমন্ত্রী
চন্দন নগর ইউনিয়ন আদিবাসী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি বিশ্ব মিত্র মারডির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ঈশ্বর চন্দ্র বর্মন, নিয়ামতপুর আদিবাসী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি বিষদ মনি টপ্প্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.জাহিদ হাসান বিপ্লব এবং চন্দন নগর ইউনিয়নের সভাপতি বদিউজ্জামান।
দিনব্যাপী কারাম উৎসবে ১০টি দল অংশ নেয়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওঁরাও সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব কারাম। ওঁরাওদের গ্রামে গ্রামে কারাম বৃক্ষের (খিলকদম) ডাল পূজাকে কেন্দ্র করে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
ঢাকায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে সপ্তাহব্যাপী শিল্প ও সংস্কৃতি প্রদর্শনী
রোহিঙ্গাদের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা এবং প্রত্যাশার প্রতিনিধিত্বকারী ১০০ সাংস্কৃতিক পণ্য এবং শিল্পকর্ম নিয়ে ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে শুরু হলো সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) এর সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস)-এর আয়োজনে ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া প্রদর্শনী চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। রবিবার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয় একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।
আইওএম -এর রোহিঙ্গা কালচারাল মেমরি সেন্টার (আরসিএমসি)-এর সাথে যুক্ত রোহিঙ্গা কারিগররা হাতে তৈরি এসব পণ্য প্রস্তুত করেছেন নেদারল্যান্ড দূতাবাসের সহায়তায়। প্রদর্শনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যকে বৃহৎ পরিসরে সংরক্ষণে আরসিএমসি-এর চলমান উদ্যোগের অংশ।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান খুঁজতে অস্ট্রেলিয়া পাশে আছে: হাইকমিশনার
আইওএম বাংলাদেশ-এর মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন,‘এই প্রদর্শনীর লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যের সৌন্দর্য এবং এর বিভিন্ন দিক প্রদর্শনের মাধ্যমে সম্প্রদায়কে ক্ষমতায়িত করা এবং এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যেন পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও চলমান থাকে তা নিশ্চিত করা। আরসিএমসি প্লাটফর্মটি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর গল্প বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে তুলে ধরতে এবং অভিবাসীদের সঙ্গে যুক্ত করতে সহযোগিতা করছে।’
প্রদর্শনীর সংগ্রহের মধ্যে ‘মিয়ানমার লাইফ’,‘ক্যাম্প লাইফ’ এবং ‘ফিউচার লাইফ’ শিরোনামের চিত্রকর্মগুলো রোহিঙ্গাদের অতীত,বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে চিত্রিত করে।ঐতিহ্যবাহী ঘর,নৌকা এবং আসবাবপত্রের স্কেল মডেলগুলো আরাকানের (বর্তমান রাখাইন)দৈনন্দিন জীবনকে তুলে ধরে।কৃষিকাজ, মাছধরা এবং গৃহস্থালীকর্মের বিভিন্ন যন্ত্র তাদের ঐতিহ্যগত জীবিকা এবং কারুশিল্পের দক্ষতা নির্দেশ করে। এছাড়া ক্যাম্পের ভিডিওগুলো রোহিঙ্গা কারিগরদের গল্প বলে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: মস্কোর সহযোগিতা চায় ঢাকা
এ প্রসঙ্গে রোহিঙ্গা কারিগর সইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ডানা আছে পাখা নেই, মন আছে আশা নেই। এই প্রদর্শনী আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরার সুযোগ করে দিয়েছে।’
আরসিএমসি’র আরেকজন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিনিধি মো. শিব্বিলি বলেন,‘আমার স্বপ্ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি এবং ইতিহাসে যা কিছু নিহিত আছে তা তুলে ধরা।’
বাংলাদেশে জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর মিয়া সেপ্পো বলেন,‘রোহিঙ্গা কালচালার মেমরি সেন্টার এবং এ জাতীয় যত প্রয়াস আছে সে সবের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে বস্তুগত এবং অধরা ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা যা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক পরিচয় নিশ্চিত করবে এবং মাতৃভূমির সঙ্গে তাদের বন্ধন দৃঢ় করবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত অ্যানে জেরার্ড ভ্যান লিউয়েন বলেন, ‘সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি হচ্ছে মনের প্রতিফলন, উজ্জ্বীবন এবং লালনপালন। শিল্পকর্ম, কারুশিল্প এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ সবার জন্য সুগম করা উচিত, বিশেষ করে বাস্তহারা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতদের জন্য। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং পরিচয় সংরক্ষণের মাধ্যমে আরসিএমসি তাদের আশা এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে শক্তিশালী করেছে। আমি আশা করছি, প্রথমে ঢাকা এবং পরবর্তীতে আমস্টারডামে এই প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অঙ্গীকার এবং তাদেরকে দেয়া বাংলাদেশের আতিথেয়তা বিশ্বব্যাপী আরও বড় পরিসরে স্বীকৃত হবে।’
আরও পড়ুন: নতুন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ‘রোহিঙ্গা ইস্যু’ এজেন্ডায় থাকবে: ইইউ
প্রদর্শনী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটো গ্যালারিতে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এই প্রদর্শনীর পরে শিল্পকর্মগুলো নেদারল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হবে ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামে আরেকটি প্রদর্শনীর জন্য। সীমিত আকারের একটি সংস্করণ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে তাদের গবেষণা কর্মসূচির জন্য।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারুশিল্পের প্রদর্শনী প্রকৃতপক্ষে একটি মহত উদ্যোগ। এটা নির্দেশ করে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের সংস্কৃতি সংরক্ষণে শ্রদ্ধাশীল। এই উদ্যোগটি আইওএম এবং নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সম্পর্ক আরও জোরদার করবে।’
গবেষণা এবং প্রাসঙ্গিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে ‘দ্য সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ অব এনএসইউ’ রোহিঙ্গা ইস্যুতে জ্ঞান বিতরণে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বর্তমানে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে। আরসিএমসি রোহিঙ্গাদের আর্ট থেরাপি দেয়ার মধ্য দিয়ে তাদের সুরক্ষা এবং দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করছে। পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বারা এই কাজটি করে প্রতিষ্ঠানটি।