জাতীয় শোক দিবস
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ভারতীয় হাইকমিশনারের শ্রদ্ধা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
সোমবার (১৫ আগস্ট) হাইকমিশনার ভারতের জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্যদের গুলিতে বঙ্গবন্ধু তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
সারাদেশে জাতীয় শোক দিবস পালন
শোক দিবসের বিশেষ নাটক ‘একজন কফিলুদ্দিন’
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এটিএন বাংলায় আজ (১৫ আগস্ট) রাত ৮টা ৪৫ প্রচার হবে বিশেষ নাটক ‘একজন কফিলুদ্দিন’।
‘মহামানবের দেশে’ গল্প অবলম্বনে নির্মিত কাহিনিচিত্রটি রচনা করেছেন সহিদ রাহমান। নাট্যরূপ দিয়েছেন বিদ্যুৎ রায় এবং পরিচালনায় সুমন ধর। এতে অভিনয় করেছেন গাজী রাকায়েত, আহমেদ রুবেল, রোকেয়া প্রাচী প্রমুখ।
এছাড়া নাটকটির এক বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন দু-বাংলার খ্যাতিমান কথা-সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
ছোটবগী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব কফিলুদ্দিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ২৬ বছর ধরে খালি পায়ে, কালো-কাপড় পরিধান করে ও কোন প্রাণীর মাংস না খেয়ে জীবন যাপন করছেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার এমন শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর শোক পালন মানুষকে হতবাক করে। ফলে গ্রামের মানুষ তাকে মুজিব পাগল নামে ডাকে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় সে। পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধে গিয়েছিলেন কফিলুদ্দিন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি ছিল তার অগাধ বিশ্বাস।
যুদ্ধ শেষে গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানের কাছে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাত লাভের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
কমান্ডার জানান, ঢাকাতে নিয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাত প্রাপ্তির বিষয়টি জটিল ও অনিশ্চিত। তবে কমান্ডার আশান্বিত করে বঙ্গবন্ধু আমতলীতে এক জনসভায় আসবেন। তাকে সেখানে নিয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দূর থেকে দেখার সুযোগ করে দিবেন। পরবর্তীতে কমান্ডারের কাছ থেকে খবর পেয়ে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা হয়ে ৩৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে কফিলুদ্দিন সেখানে যান। ততক্ষণে বঙ্গবন্ধু আমতলীর জনসভা শেষ করে ঢাকার উদ্দেশে চলে যান।
এভাবে এগিয়ে চলে নাটকের কাহিনি।
পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি: জয়
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের শ্রদ্ধা
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী সমাধিতে দুইবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রথমে সরকারপ্রধান হিসেবে এবং পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্যদের গুলিতে বঙ্গবন্ধু তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়।
এরপর প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা ও মোনাজাত করেন।
এছাড়াও জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
পরে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দও সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মন্ত্রিসভার সদস্য, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সমাধি প্রাঙ্গণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেবেন।
এর আগে শেখ হাসিনা দিবসটির জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক নিবাস টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সকালে বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্য শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফুলের পাপড়ি ছিড়িয়ে দেন। সেই সাথে তিনি শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া করেন।
পড়ুন: শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধুর প্রতি মার্কিন দূতাবাসের শ্রদ্ধা
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।
দূতাবাস জানিয়েছে, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকীতে তাঁর অনন্য-সাধারণ জীবনের কথা স্মরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।’
তিনি ছিলেন সম্মানজনক ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া প্রথম বাংলাদেশি অংশগ্রহণকারীদের অন্যতম।
দূতাবাস জানিয়েছে, ‘এই অপূরণীয় ক্ষতিতে আমরা শোকাহত।’
পড়ুন: শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে শ্রদ্ধাভরে দিবসটি পালন করছে দেশবাসী।
১৯৭৫ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেসময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা-বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তার তিন ছেলে-ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল এবং দশ বছর বয়সী শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল, ভাই শেখ নাসের, কৃষক নেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত, যুব নেতা শেখ ফজলুল হক মনি এবং তার স্ত্রী আরজু মনি, শিশু সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ ও আবদুল নাঈম খান রিন্টুসহ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের আঠারজন সদস্য সেদিন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
সেই সাথে বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল উদ্দিন আহমেদ (বীর উত্তম) নিহত হন। একই দিনে খুনিদের কামানের গোলায় মারা যান রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একই পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যও।
সরকার, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন দিবসটি পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা।
এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়। তখন বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এ সময় মোনাজাত করা হয়।
ধানমন্ডি থেকে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। এখানে শায়িত আছেন তার মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্য শহীদরা।
প্রধানমন্ত্রী তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফুলের পাপড়ি ছিড়িয়ে দেন। সেই সাথে তিনি শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া করেন।
পড়ুন: জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
দিবসটি উপলক্ষে জোহরের নামাজের পর সারাদেশের মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, ‘মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপসহীন। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। তৎকালীন পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু অসীম সাহসিকতার সাথে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন।’
তিনি বলেন, `বঙ্গবন্ধু আজীবন সাম্য, মৈত্রী, গণতন্ত্রসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির দূত।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তাঁর নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালিরই শুধু নয়, বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্যও প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবেন।
এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী চক্র তাঁকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বাঙালি জাতির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রগতি নষ্ট করার অপচেষ্টা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে।
জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁর আত্মত্যাগের মহিমা এবং দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ আমাদের কর্মের মাধ্যমে প্রতিফলিত করে সকলে মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি-জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকার।
পড়ুন: ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও আমার সরকার উৎখাতে কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর সেখানে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতির স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়। তখন বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এ সময় মোনাজাত করা হয়।
ধানমন্ডি থেকে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। এখানে শায়িত আছেন তার মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্য শহীদরা।
প্রধানমন্ত্রী তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফুলের পাপড়ি ছিড়িয়ে দেন। সেই সাথে তিনি শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেসময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা-বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
পড়ুন: শোক দিবসে নিশ্ছিদ্র ও নির্ভুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ আইজিপির
১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও আমার সরকার উৎখাতে কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আহ্বান
বঙ্গবন্ধুকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।
তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের হত্যাকাণ্ড ছিল স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের অত্যন্ত সুপরিকল্পিত অভ্যুত্থান।
জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে শুক্রবার রাতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ব্রুনাইয়ের আয়োজনে ‘পনেরো আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ ব্রুনাইয়ের সভাপতি মোস্তফা রেজা আলীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ মালেক। প্রধান আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাক ড. জিয়া রহমান।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. লাভলী রহমান, অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. আবুল হাসনাত মিল্টন, মালয়েশিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. এটিএম এমদাদুল হক, ব্রুনাই বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর জিলাল হোসেন, ব্রুনাই বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বকুল, ব্রুনাই বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা ড. নূর রহমান খোকন, রেজাউল করিম, ডা. এবিএম কামরুল হাসান প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।
আরও পড়ুন: সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া ২১ আগস্টের হামলা সম্ভব ছিল না: প্রধানমন্ত্রী
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড সুপরিকল্পিত: নানক
১৫ আগস্টের ইতিহাস ভুলে গেলে বাঙালি পথভ্রষ্ট হবে: আইনমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করার সংকল্প প্রধানমন্ত্রীর
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে অদূর ভবিষ্যতে বিচারের সম্মুখীন করার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে হত্যাকারীদের বিচার করা খুবই জরুরি ছিল, আমরা সেটা করেছি। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা জড়িত ছিল সেটাও একদিন বেরিয়ে আসবে। সেই দিনও বেশি দূরে নয়।’
সোমবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, যারা নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল এবং যারা খুনিদের পাশে ছিল বা যারা এর জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল তারা সবাই সমানভাবে দোষী।
নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করার জন্য একটি কমিশনের দাবির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সেদিনের সংবাদপত্রগুলো পড়লেই বিষয়গুলো সবার কাছে খুব স্পষ্ট হবে।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে তাকে সময় না দিয়ে একই বছর তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
তিনি বলেন, ‘একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে করতে অনেক বছর লেগে যায়, কিন্তু মাত্র এক বছরেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।’
আরও পড়ুন: গ্রামে ৫জি সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
বাবা-মা এবং ভাইদের কী অপরাধ ছিল: প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতির ছেলে হয়েও কামাল সাদাসিধে জীবন-যাপন করত: হাসিনা
বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনই সকলের জন্য একটা বার্তা: ড. অজিৎ সিং
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনটাই সবার জন্য একটা বার্তা বলে মন্তব্য করেছেন জার্মানির গুটেনবার্গ ইউনিভার্সিটি অব মাইনজ’র এমিরেটাস প্রফেসর ড. অজিৎ সিং সিকান্দ।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন তরুণদের জন্য, বাঙালির জন্য, মানবজাতির জন্য একটি বার্তা। মাহাত্মা গান্ধী যেমন বলেছে ‘মাই লাইফ ইজ মাই ম্যাসেজ।’ তেমনি বঙ্গবন্ধুর জীবন সবার জন্য একটি ম্যাসেজ। যার মধ্য দিয়ে সমগ্র জীবনাচরণ, আদর্শ, মহানুভবতা এবং জীবন সংগ্রাম ফুটে ওঠে।’
রবিবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।
এসময় বঙ্গবন্ধুকে মহাত্মা গান্ধী, মার্টিন লুথার কিং, নেলসন মেন্ডেলা, জহরলাল নেহেরু এর মতো বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে তুলনা করেন প্রফেসর ড. সিং।
১৯৭৫ সালের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো সেই কুৎসিত ভয়ংকর রাতের কথা ভুলবো না। যে রাতে নৃশংসভাবে শেখ মুজিব আর তার পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে। সেটা মানুষের স্মৃতিতে চিরদিন থাকবে। যিনি স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তাকে মনে রেখেই আগামীর পথ চলতে হবে। তাকে মনে রাখতে হবে তার অবদান ও তার ত্যাগের জন্য। মনে রাখতে হবে, তিনি চেয়েছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমাদের তার সেই ভাবনা আর স্বপ্নের পথটাই বাস্তবায়ন করতে হবে।’
শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু খুব সাবলীল বক্তব্য দিতেন। মহত্মা গান্ধী ও শেখ মুজিব সাধারণ মানুষের ভাষা বুঝতে পারতেন। তারা সততা ও আদর্শ দিয়ে সাধারণ মানুষের খুব কাছে যেতে পারতেন। তাই সমসাময়িক রাজনৈতিক নেতাদের থেকে আলাদা গ্রহণযোগ্যতা ছিল নেতা মুজিবের। পাকিস্তানি মিলিটারিদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, তোমরা আমাদের ভাই। সুতরাং আমাদের বুকে গুলি চালাবে না।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকে যারা অস্বীকার করে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই: তথ্যমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের চিহ্নিত করতে নিরপেক্ষ কমিশন: আইনমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু বাঙালির অনুপ্রেরণার বাতিঘর: খাদ্যমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস অফিসার ও সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. শফিউল্লাহ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কূটনৈতিক ছিলেন না কিন্তু কূটনীতি খুব ভালো বুঝতে পারতেন। একবার তিনি কুয়েতের আমীরকে বলেছিলেন, ‘তুমি তেলের শেখ আর আমি হলাম পানির শেখ।’ মূলত বঙ্গবন্ধরু দূরদর্শিতার করণেই মধ্যপ্রাচ্য থেকে দ্রুত স্বাধীনতার স্বীকৃতি লাভ করে বাংলাদেশ।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বঙ্গবন্ধু ফেলো-২০২১ প্রফেসর ড. আফজাল হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ধর্ম নিরপেক্ষ ও বৈশ্বিক শান্তি গড়তে চেয়েছেন যাতে সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করতে পারে।’
প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল সভাপতির বলেন, ‘আমরা অনেক চড়া দামে আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। সুতরাং যে মূল উদ্দেশ্য বা মূলনীতি নিয়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি তা রক্ষা করতে হবে। শেখ মুজিবর রহমানের দর্শন, চিন্তা চেতনাকে আমাদের বার বার বোঝার চেষ্টা করতে হবে।’
১৫ আগস্ট: বঙ্গভবনে জাতির পিতার দোয়া অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রবিবার বঙ্গভবনের দরবার হলে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বাদ আসর মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
মিলাদ মাহফিলে রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রপতির সচিব, বঙ্গভবনের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং অন্যান্য কর্মচারীরা অংশ নেন।
মিলাদের পর বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যসহ ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নয়ন এবং অগ্রগতি কামনা করা হয়।
মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বঙ্গভবন জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সাইফুল কবির।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকে যারা অস্বীকার করে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই: তথ্যমন্ত্রী
জিয়ার মদদে ঘটে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী