সংকট
দেশের সার কারখানায় গ্যাসের সংকট থাকলেও, সারের অভাব হবে না: শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘সারাদেশের সার কারখানাগুলোতে গ্যাসের সংকট থাকলেও, সারের কোনো সংকট হবে না।’
নরসিংদী পলাশে এশিয়ার সর্ববৃহৎ সার কারখানার পরিদর্শন শেষে শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএসটিআইকে আন্তর্জাতিক মানের করতে সরকার কাজ করছে: শিল্পমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ করে সার উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকের সারের চাহিদা মেটানো হবে। এ উদ্দেশ্যে অচিরেই ভোলায় একটি নতুন সার কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সারাদেশেই গ্যাসসহ জ্বালানি সংকট রয়েছে। সেসব বাধা পেরিয়ে কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী সার সরবরাহ করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। বর্তমানে আমদানি করতে হলেও অচিরেই সার উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য মাসুদা সিদ্দিকি রোজী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা ও বিসিআইসির চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে: শিল্পমন্ত্রী
বাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নে বিটাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে: শিল্পমন্ত্রী
মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ সংকট, বিপাকে জেলেরা
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পাঁচ সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলেরা হতাশ হয়ে ফিরছেন নদী থেকে। তাদের অধিকাংশই ঋণ পরিশোধ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
জেলেরা জানান, ইলিশের আশায় তারা নদীতে গেলেও তাদের খরচের টাকা উঠছে না। উপরন্তু বাড়ছে এনজিও ও মহাজনের ঋণের বোঝা। এছাড়া এ পেশা ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
আরও পড়ুন: ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, নদীর পানি আরেকটু বাড়লে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাবে।
স্থানীয়রা জানান, ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী থেকে দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ ইলিশ আহরণ করা হলেও এবার ভরা বর্ষায় জেলেদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে তা দিয়ে ট্রলারের ইঞ্জিনের তেলের দামসহ অন্যন্য খরচও উঠে না।
ভোলার মেঘনা নদীর ইলিশা ও তুলাতুলি মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, আড়তদারদের মাছের বাক্সগুলো খাঁ খাঁ করছে। জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় ঘাটের এখন এমন অবস্থা। জেলেদের পাশপাশি আড়তদাররাও রয়েছেন বিপাকে।
মাছের আড়তদাররা জানান, জেলেসহ তারাও বিপাকে দিন কাটাচ্ছেন। নদীতে ইলিশের সংকট থাকায় তারাও দেনায় জড়িয়ে পড়ছেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে কমেছে ইলিশের দাম
সিলেটে বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট
সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুর্গতরা।
সিলেট নগরীর ১৫ হাজারসহ মোট সাড়ে ৮ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ১০৭টি ইউনিয়ন ও আটটি ওয়ার্ডে এখনও পানি আছে।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি
এখনও ১৯ হাজার ৭৩৮ জন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় দুই হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে চলে গেছেন।
জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুলের দিনমজুর কবির আহমদ বলেন, 'আমরা যখন আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলাম, তখন খাবার ও পানি ছিল কিন্তু এখন বাড়ি ফেরার পর খাবার ও পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। পুরো বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আমার বাড়িতে যে ধান রাখা হয়েছিল তা ভেসে গেছে। এখন আমি কী খাব?’
এছাড়া নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে অনেক নিচু এলাকার সড়ক ও বাড়িঘর থেকে এখনো পুরোপুরি পানি নেমেনি।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, রবিবার বিকেল ৩টায় কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান, পানি ধীরে ধীরে কমছে বলে মনে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে এবং বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রম পুরোদমে চলছে।
মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে এবং তারা বন্যাকবলিত এলাকায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
২৮ জুন থেকে আবারও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া শুক্রবার থেকে কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার দুটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট থেকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে খাবার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা বর্ষণে গত ২৭ মে থেকে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। ১৫ জুন থেকে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে বন্যায় ১০০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট, ভেসে গেছে ৪০০ পুকুরের মাছ
সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বৃদ্ধি, বন্যার আশঙ্কা
কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ ও অবাধ পরিবহন নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী আরও জানান, কোরবানির পশুর সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনায় সরকারের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি আছে।
আব্দুর রহমান বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ করা হয়েছে। কোরবানির চাহিদার চেয়ে ২২ লাখ ৭৭ হাজার ৯৭৩টি অতিরিক্ত গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এবার কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি যা গতবারের চেয়ে ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩৪টি বেশি।
কোরবানির পশু নিয়ে কোনোরকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই বলে জানান প্রাণিসম্পদমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহা। এটি যাতে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে এবং পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে উদযাপন করা যায় সে লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও সরকারের অন্যান্য দপ্তর-সংস্থা কাজ করছে।
আব্দুর রহমান বলেন, ‘কোরবানির পশুর জন্য অতীতে পর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। কিন্তু আমরা এখন দেশে উৎপাদিত পশু দিয়েই কোরবানি সম্পন্ন করতে পারছি।’
মন্ত্রী আরও জানান, দেশে অবৈধ উপায়ে গবাদিপশুর অনুপ্রবেশ যেন না ঘটতে পারে সেজন্য সীমান্তবর্তী জেলাসমূহে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা, খামারি ও উদ্যোক্তারা সম্মিলিতভাবে কাজ করায় প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এ খাতে উৎপাদন বেড়েছে।
কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘রোগাক্রান্ত পশু হাটে বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হবে। হাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।’
তিনি আরও বলেন, লাভের আশায় কোরবানির অনুপযুক্ত পশু বা রোগাক্রান্ত পশু যাতে কেউ বিক্রির চেষ্টা না করে। কোরবানির পশু নিরাপদ ও কোরবানি উপযোগী কি না বা তাদের শরীরে দূষিত পদার্থ প্রবেশ করানো হয়েছে কি না পরীক্ষা করে দেখতে প্রতিটি নির্ধারিত কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম থাকবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও কোনো খামারি নিজ বাড়ি থেকে পশু বিক্রি করলে তাকে হাসিল দিতে হবে না। কোনো খামারি তার পশু দূরবর্তী হাটে নিতে চাইলে, রাস্তাঘাটে জোর করে নামাতে বাধ্য করা যাবে না। হাটে আনার পথে কেউ প্রাণী বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারা গ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল গ্রহণ করতে পারবে না। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় সরকারের ইউনিট তথা পৌরসভা, উপজেলা বা ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন এ বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, গত বছরের মতো এবছরও অনলাইন প্লাটফর্মে সারাদেশে কোরবানির পশু বিক্রয়ের ব্যবস্থা চালু থাকবে। নগদ টাকা বহন না করে যথাসম্ভব বিকল্প উপায়ে স্মার্ট পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন করতে খামারিদের পরামর্শ দেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, মহাসড়কে বা যেখানে হাট বসালে যান চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। সড়কে বা সেতুতে কোরবানির পশুবাহী গাড়িকে প্রাধান্য দেওয়া হবে, যাতে রাস্তায় পশু আটকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না হয়।
তিনি আরও জানান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (হট লাইন-১৬৩৫৮) চালু থাকবে। পশুর হাটে কোনো রকম সমস্যা হলে হট নম্বরে কল করলে প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় আরও ছিলেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম মোস্তফা কামাল, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, রেলপথ ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা।
ডেঙ্গু রোগীদের স্যালাইনের কোনো সংকট হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ডেঙ্গু রোগীদের জন্য স্যালাইনের কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
এছাড়া ডেঙ্গু রোধে বাসাবাড়ির সবকিছু পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দিয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন সামন্ত লাল সেন৷
আরও পড়ুন: ঈদের দিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাসপাতাল পরিদর্শন
সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিজ দপ্তরে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডেঙ্গু নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা হাসপাতালগুলোকে বলে রেখেছি। এখন চিকিৎসকরা ডেঙ্গু চিকিৎসা সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন।
তিনি আরও বলেন, স্যালাইনের যে সংকটের কথা ভাবা হয়েছে, সেটা নিয়েও আমি বৈঠক করেছি। স্যালাইনের কোনো সংকট হবে না।
সামন্ত লাল বলেন, তবে ডেঙ্গু না হোক, সেটা আমাদের সবার প্রার্থনা। বিপর্যয় না হওয়ার জন্য কী করতে হয়, সেটা আপনারা ভালো করে জানেন।
ঈদের ছুটিতে চিকিৎসকদের দায়িত্ব নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি নিজে ঢালাওভাবে বলতে চাই না যে, আমি কী করেছি। আপনারা নিজেরাই বলবেন, আমরা কতটা মনিটরিং করতে পেরেছি। যতটুকু সম্ভব যথাসাধ্য চেষ্টা আমি ঈদের সময় করেছি। মন্ত্রী হওয়ার আগেও এমন কোনো ঈদ নেই, যেদিন আমি হাসপাতালে যাইনি। এমন কোনো দুর্গা পূজা নেই যেদিন হাসপাতালে যাইনি। আগে হাসপাতালে যেতাম, তারপর উৎসবে যেতাম।
তিনি আরও বলেন, আমি এবার না বলেই গিয়েছি। ঈদের আগের দিন যে কয়েকটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম, আমি কাউকে বলেনি। আমি গিয়ে চিকিৎসকদের উপস্থিতি দেখতে পেয়েছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এবার মন্ত্রণালয় থেকে একটা প্রশাসনিক আদেশ দিয়ে ছুটিতে কাজ করা চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছি। এটা আমি নিজে অনুভব করেছি। আমি যখন বার্নে কাজ করতাম, রাতে একটা মেয়ে না-খেয়ে কাজ করেছেন। সব হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকত। ইচ্ছা করে এবার খাবারের অর্ডার করেছি। যাতে ভালোভাবে তারা ঈদটা করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ঈদে চিকিৎসাসেবায় কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ঈদের ছুটির মধ্যে হঠাৎ হাসপাতাল পরিদর্শনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
উন্নতির দাবি তিতাসের, তবে ঢাকা-গাজীপুর-নারায়ণগঞ্জের শিল্প-কারখানায় এখনো তীব্র গ্যাস সংকট
ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের শিল্প-কারখানায় তীব্র গ্যাস সংকট অব্যাহত। এরপরও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিবেশক তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি দাবি করছে, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
এর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মধ্যাঞ্চলের এই জেলাগুলোর শিল্পাঞ্চলের পোশাক ও বস্ত্র খাতগুলো গত কয়েক মাস ধরে তীব্র গ্যাস সংকটে ভুগছে।
গাজীপুরের গ্রুপ অব টেক্সটাইল কারখানার শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবস্থাপক ইউএনবিকে বলেন, 'কারখানাগুলো ভয়াবহ সংকটে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পিজিসিএলের আওতাধীন এলাকায় ৬০ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা
তিনি অভিযোগ করেন, গাজীপুরের বেশিরভাগ শিল্প কারখানা তাদের উৎপাদনের সময়ে পর্যাপ্ত গ্যাস পায় না। অথচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সময়েই তাদের মেশিনগুলো চালু রাখা দরকার। অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে গ্যাসের চাপ খুবই কম থাকে।
কম চাপসম্পন্ন গ্যাসের প্রবাহ কম ভোল্টেজের বিদ্যুতের মতো - বৈদ্যুতিক চার্জ থাকা সত্ত্বেও অনেক যন্ত্রপাতি চলবে না।
বস্ত্র গ্রুপের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্যাস সরবরাহ না থাকায় বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং সেগুলো বন্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
চলমান গ্যাস সংকটে কারখানার ডাইং সেকশনের জেনারেটর, ব্রয়লারের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি চালানো হচ্ছে না। এতে শিল্প উৎপাদন অব্যাহত রাখতে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে এবং বিপুল আর্থিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এক শিল্প মালিক বলেন, ‘পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অনেক শিল্প কারখানা আসন্ন ঈদে বেতন ও উৎসব বোনাস দিতে পারবে না।’
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈরসহ অন্যান্য এলাকায় তিন শতাধিক কারখানা রয়েছে।
এই সমস্ত শিল্প তীব্র গ্যাস সংকটে ভুগছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে।
প্রতিটি কারখানায় এক হাজারের বেশি শ্রমিক রয়েছে। কিন্তু গ্যাস সংকটের কারণে তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমাতে হচ্ছে। আবার তাদের কেউ কেউ তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য উচ্চ মূল্যে সিএনজি ব্যবহার করছে।
মিরপুর, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ এলাকাতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
তিনি বলেন, দাম বাড়ালেও সরকার পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না।
তিনি বলেন, ‘গ্যাসের অভাবে পোশাক কারখানার উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এরই মধ্যে অনেক ক্রেতা নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে জাহাজের পরিবর্তে বিমানে পণ্য পাঠানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। কিছু ক্রেতা দামের ক্ষেত্রে ছাড় চাইছেন।’
তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে কিছু গ্রাহক বিরক্ত হয়ে অর্ডার বাতিল করেন।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজও (বিসিআই) অভিযোগ করেছে, গ্যাস সংকটের কারণে দেশের কোনো শিল্পই সম্পূর্ণ সক্ষমতা অনুযায়ী চলতে পারছে না।
আরও পড়ুন: আগামী ৪ বছরের মধ্যে গ্যাসের শতভাগ প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে: প্রতিমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের কার্যালয়ে সাক্ষাতের সময় বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরীর (পারভেজ) নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এ অভিযোগ করেন।
শিল্প খাতের এ সংগঠন বলছে, সরকার তাদের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করবে এই আশায় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ানোর অজুহাতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।
বিসিআইয়ের এক বিবৃতেত বলা হয়, ‘তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমার প্রবণতা থাকলেও আবারও বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে বলে শোনা যাচ্ছে।’
এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দরকার। ‘বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে শিল্প খাতকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দিলে সে অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।’
তিতাস গ্যাসের মহাব্যবস্থাপক অর্পনা ইসলাম গ্যাস সংকটের কথা স্বীকার করেছেন। তবে সম্প্রতি গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর পদক্ষেপের ফলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
অদূর ভবিষ্যতে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি পেট্রোবাংলার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
পেট্রোবাংলার পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, গত এক মাসে সারা দেশে গ্যাসের সরবরাহ বেড়েছে দৈনিক মাত্র ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) বা তার কাছাকাছি, যার ফলে উৎপাদন ও সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে প্রায় দেড় হাজার এমএমসিএফডি।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, চার হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে ১৬ ফেব্রুয়ারি বিদেশ থেকে আমদানিসহ ২ হাজার ৬৭১ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদন হয়েছে।
তিতাস গ্যাসের তথ্যে আরও দেখা যায়, গ্যাস সংকটের কারণে প্রায় ৩০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটের কৈলাশটিলায় আরও ১.৬ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যাবে: প্রতিমন্ত্রী
সরকারি বিএল কলেজে আবাসন-পরিবহন সংকট চরমে
খুলনার সরকারি ব্রজলাল কলেজ (বিএল কলেজ) প্রতিষ্ঠার ১২১ বছর পার হলেও শিক্ষার্থীদের আবাসন ও পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। বছরের পর বছর এ দুই সংকটে পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে শিক্ষার্থীদের।
খুলনা মহানগরী থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে দৌলতপুরের ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত এ কলেজে ১৯০২ সালের ২৭ জুলাই থেকে পাঠদান শুরু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪৯ জন ছাত্র নিয়ে এফএ (ফার্স্ট আর্টস) ক্লাস শুরু হয়। আবাসিক কলেজ হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল এবং এটি ছিল অবিভক্ত বঙ্গদেশের প্রথম আবাসিক কলেজ।
কলেজটিতে উচ্চ মাধ্যমিক, সম্মান এবং স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে উচ্চ মাধ্যমিকসহ ২১টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং ২২ বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে ২৫ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটির একাডেমিক ভবনসহ অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়ন হয়নি শুধু আবাসিক হলের। নির্মিত হয়নি নতুন কোনো ছাত্রাবাস। ২৫ সহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আটটি আবাসিক হলে আবাসন সুবিধার রয়েছে মাত্র সাড়ে সাতশ’ ছাত্র-ছাত্রীর। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রাবাসে ৪৩১ জন ছাত্র এবং তিনটি ছাত্রীনিবাসে ৩১৯ জন আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য।
আরও পড়ুন: গ্রামে নগরায়নের ছোঁয়া, খুলনায় মিলছে না খেজুরের রস
শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের পাঁচটি ছাত্রাবাসের বেহাল অবস্থা। কক্ষের বিভিন্ন স্থানে ফাটল। পলেস্তারা খসে পড়েছে অনেক স্থানে। গ্রিলগুলো বাঁকা হয়ে গেছে। পিলারের ঢালাই খুলে রড বেরিয়ে আছে। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রাবাসে থাকছেন শিক্ষার্থীরা।
শহীদ তিতুমীর, ড. জোহা এবং হাজী মহসীন হলের প্রায় তিনশ’ ছাত্র জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হলে থেকে পড়াশোনা করছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং সুবোধ চন্দ্র হলের ছাত্ররা টিনের চালের ঘরের হলে থাকেন। ২০২২ সালে সর্বশেষ বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামে একটি ছাত্রীনিবাস তৈরি করা হয়।
২৫ হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রী পরিবহনের জন্য কলেজটিতে বাস রয়েছে মাত্র ছয়টি। প্রতিদিন নওয়াপাড়া থেকে ডুমুরিয়া পর্যন্ত ছয়টি রুট থেকে ছাত্র-ছাত্রী আনা-নেওয়া করা হয়। প্রতিটি ৭০ সিটের বাসে ১৩০ থেকে ১৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী আনা-নেওয়া করা হয়।
কলেজের শিক্ষার্থী হাসান উজ জামান বলেন, ‘বিএল কলেজে পাঁচটি ছাত্রাবাস রয়েছে। যেগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শহীদ তিতুমীর, ড. জোহা এবং হাজী মহসীন হলে প্রায় তিনশ’ ছাত্র থাকে। অধিকাংশরা ঝুঁকি নিয়ে হলে থেকে পড়াশোনা করে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং সুবোধ চন্দ্র হলে ছাদ না থাকায় গরমের দিনে অনেক গরম সহ্য করা লাগে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ২৫ হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আটটি আবাসিক হলে আবাসন সুবিধা রয়েছে মোটে এক হাজারের মতো। এজন্য সবদিক বিবেচনা করে আমাদের আবাসন সংকট কাটিয়ে উঠতে অধ্যক্ষ মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের দুই মাস পরও চালু হয়নি খুলনা-মোংলা রেললাইন
হাজী মুহাম্মদ মহাসীন হলের ছাত্র মো. আলিম হোসেন জানান, হলে খাওয়ায় অনেক সমস্যা। ঠিকমতো মিল চললেও খাবারের মান অনেক নিম্নমানের। পাশাপাশি আলোর একটু স্বল্পতা রয়েছে। এর স্থায়ী সমাধানের জন্য বিদ্যুতের ওয়ারিং ব্যবস্থা নতুন করে করতে হবে।
মন্নুজান হলের ছাত্রী সুতপা বসু বলেন, ‘অনেকদিন ধরে আমাদের হলটা সংস্কারের অভাবে পড়ে আছে। বাধ্য হয়ে আমাদের অন্য হলে গিয়ে থাকতে হয়। এজন্য দ্রুতই মন্নুজান হলটা সংস্কার করা হলে মেয়েদের আবাসন সংকট অনেকটা কমবে।’
দৌলতপুরের একটি মেসে থাকেন এম এম মিলন নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘কলেজে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজারের বেশি। কিন্তু সে তুলনায় হলগুলোতে সিটের সংখ্যা অনেক কম। এজন্য চাইলেও আমরা হলে থাকতে পারি না। নতুন করে আরও দু-একটি হলের ব্যবস্থা হলে আমাদের সবার জন্য সুবিধা হতো।’
পরিবহন সংকট প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা বলে বাসের দুটি ট্রিপ থেকে একটি ট্রিপ বন্ধ করে দেয়। ফলে বিভিন্ন রুটের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বাসে সিটের অপ্রতুলতায় দাঁড়িয়ে পর্যন্ত যাওয়ার জায়গা হচ্ছে না। ফলে বাড়তি টাকা খরচ করে কলেজে যাওয়া-আসা করা লাগছে।
পরিবহন ও আবাসন সংকট সম্পর্কে জানতে চাইলে সরকারি বিএল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শরীফ আতিকুজ্জামান বলেন, ‘আবাসন সমস্যা দীর্ঘদিনের। সরকারের এ নিয়ে আপাতত কোনো পলিসি নেই। ছাত্রী হল তৈরি হয়, কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রদের কোনো হল তৈরি হয় না। কোনো কোনো জায়গায় ছাত্রদের হল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের এখানে যে ছাত্র হলগুলো আছে সেগুলো আমরা সংস্কারের ব্যবস্থা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাড়িতো ছাত্রদের অর্থায়নে কেনা ও তত্ত্বাবধায়ন করা হয়। এ খাতে সরকারের কোনো বরাদ্দ থাকে না।’
আরও পড়ুন: খুলনায় সরিষার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা
রাতারাতি সব সংকট দূর করা যাবে না: অর্থমন্ত্রী
রাতারাতি সব সংকট দূর করা যাবে না বলে জানয়িছেন নবনিযুক্ত অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ আছে তা সমাধান করতে হবে।
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে প্রথম দিন সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সময় দিতে হবে। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে অর্থ মন্ত্রণালয় একা পারবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। রাতারাতি সব কিছু ঠিক করা যাবে না।
তিনি বলেন, অর্থ পাচার রোধে কাজ করা হবে। টাকার মূল্য কমে গেছে। সেটা নিয়েও কাজ করা হবে। এ বিষয়ে দেখি কী করা যায়! অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ আছে। একটু সময় দিন।
জলবায়ু সংকটের বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধানসহ অভিযোজন তহবিল দ্বিগুন করার দাবি বাংলাদেশের
বিশ্ব জলবায়ু সংকটের বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধানের পাশাপাশি অভিযোজন তহবিল দ্বিগুন করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ বলছে, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে জীবাশ্ম জালানির ব্যাপারে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এসময় দুর্বল অভিযোজন লক্ষ্যমাত্রার খসড়ার ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করে বৈশ্বিক জলবায়ু অভিযোজনের অর্থ দ্বিগুণ করারও দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশ চাইছে বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন হ্রাসে প্রধান নির্গমনকারী দেশগুলোর রাজনৈতকি প্রতিশ্রুতি। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে উন্নত দেশগুলোকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় জলবায়ু সংকট থেকে মনোযোগ সরানো উচিত নয়: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের পার্টি হেড প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ুবিষয়ক দূত সাবের হোসেন চৌধুরী ইউএনবিকে বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে ফসিল ফুয়েলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। অনেক দেশ অনেক কথা বলছে। কিন্তু বিজ্ঞান কী বলছে আমদের সেটাতে গুরুত্ব দিতে হবে। ২৮তম জলবায়ু সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অবশ্যই বিজ্ঞানের ভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আলোচনার খসড়াগুলোতে সব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আজ সোমবার ও আগামীকাল (মঙ্গলবার) দুই দিন হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই দিনে আশা করছি, আমরা এই সম্মেলন থেকে একটি গ্রহণযোগ্য ফল বের করে আনতে পারব।’
অভিযোজনের লক্ষ্যের দুর্বল খসড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “‘বৈশ্বিক অভিযোজন লক্ষ্যে’র যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে তা আমরা পর্যালোচনা করছি। আশা করছি, সমমনা দেশগুলোকে নিয়ে আমরা শেষ দুই দিনে এই খসড়াকে শক্তিশালী করতে পারব।”
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, আমরা নতুন ও অতিরিক্ত সরকারি অর্থায়নে গুরুত্ব দেব। বাংলাদেশ দৃঢভাবে ন্যাপ বাস্তবায়নের জন্য দ্বিগুণ অভিযোজন তহবিল চাই। আমরা জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা অর্জনের জন্য সময়সীমাবদ্ধ বাস্তবায়নযোগ্য লক্ষ্যগুলোর ওপর জোর দিয়ে অভিযোজন সংক্রান্ত গ্লোবাল গোলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য উন্মুখ।
ক্ষয়ক্ষতির অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়ে পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, এই তহবিল থেকে অর্থ নিতে বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তত। এ ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।
আগামীকাল মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে বহুল আলোচিত দুবাই জলবায়ু সম্মেলন। উদ্বোধনের দিনেই ক্ষয়ক্ষতি তহবিলকে কার্যকর করার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যদিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করা দুবাই জলবায়ু সম্মেলন শেষ দিনে চূড়ান্ত চুক্তিতে বিশ্ববাসীকে কী উপহার দেবে সেটা দেখার অপেক্ষায় অধীর বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো।
দুবাই জলবায়ু আলোচনা সোমবার চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। সেই সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রও ছোট হয়ে এসেছে। এখন কেবলমাত্র দুটি ইস্যু সামনে আছে। একটি হচ্ছে, জলবায়ু প্রশমনে বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন কমানোর উচ্চাভিলাসী লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে- জলবায়ু সংকট উত্তরণে দেশগুলোর সদিচ্ছা প্রকাশ।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ জলবায়ু সংস্থার প্রধান সাইমন স্টিয়েল সোমবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুবাইয়ে একটি অর্থবহ চুক্তিতে উপনীত হতে হলে আমাদের বাধা সৃষ্টির মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। বৈশ্বিক মূল্যায়ন (গ্লোবাল স্টকটেক) অনুমোদনে সব দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন। এখানে হারজিতের কিছু নেই। আমি জিতব, আপনি হারবেন- এই মানসিকতা পরিত্যাগ করতে হবে। এখানে একজনের পরাজয় মানে সবার ব্যর্থতা। যা বিশ্বের ৮০০ কোটি মানুষকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে। তাই আলোচনার টেবিলে প্রত্যেককে মঙ্গলের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সব দেশের লক্ষ্য হতে হবে বিশ্বের সব মানুষের মঙ্গলের জন্য চূড়ান্ত চুক্তিতে উপনীত হওয়া।’
দুবাইয়ে গত ৩০ নভেম্বর থেকে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ২০২৩ (কপ-২৮) শুরু হয়েছে। তা চলবে আগামীকাল ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত। ১৩ দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ১৯৮টি দেশের সরকার প্রধানসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আসন্ন জলবায়ু সংকট এড়াতে প্রধান অর্থনীতিগুলোকে অবশ্যই ন্যায্য অংশীদারিত্ব করতে হবে: জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলার কৌশল নিয়ে ইইউ, দক্ষিণ এশিয়ার নীতি নির্ধারক-বিশেষজ্ঞদের আলোচনা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেড়েছে ডায়রিয়া, হাসপাতালে স্যালাইন সংকট
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ৩০-৪০ জন রোগী।
হাসপাতালে স্যালাইন ও পর্যাপ্ত বেড না থাকায় শীতে মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীর স্বজনরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বলছে, বেডের অভাব ও কলেরা স্যালাইন সরবরাহ না থাকায় কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা।
সরেজমিনে শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯৬।
আরও পড়ুন: ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
সারি সারি চট-চাদর বিছিয়ে মাটিতে শুয়ে আছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। সেখানেই চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আব্দুল্লাহ নামে এক শিশুর মা বলেন, গত দুদিন থেকে ছেলের পাতলা পায়খানা। শুক্রবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেছি ছেলেকে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু শীতের দিনে বেড না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছি। হাসপাতাল থেকে কলেরা স্যালাইন দিচ্ছে না।
মানিক মিয়া নামে আরও এক শিশুর বাবা বলেন, শুক্রবার সকালে ডায়রিয়া আক্রান্ত ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু বেড না থাকায় মেঝেতে কম্বল বিছিয়ে শুয়ে আছে আমার ছেলে ও স্ত্রী।
চেষ্টা করেও শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা পাচ্ছি না।
শহরের পৈরতলার এলাকার জহিরের ছেলে ভর্তি আছে হাসপাতালে। তিনি বলেন, রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেছি ছেলেকে। কিন্তু বেড নাই।
বারান্দাতেও কম্বল বিছিয়ে থাকতে হচ্ছে গাদাগাদি করে। এতে শিশুদের ডায়রিয়া ভালো করতে এসে ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুদের জন্য ২০টি বেড মজুদ আছে। কিন্তু এবছর বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। আর ডায়রিয়া ওয়ার্ডে যে বেড রয়েছে, তা মোট ২০-২৫ জনকে দেওয়া সম্ভব। তাই রোগীদের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাইজুর রহমান ফয়েজ বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার শীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে এবার বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা যাদের বয়স মাত্র ৬ মাস থেকে এক বছর। আগামী দু'একদিনের মধ্যে কলেরা স্যালাইন রোগীদের দিতে পারব।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে বর্তমানে ৯৬ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে। শুধু শুক্রবার ৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগ রোগীই শিশু।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, শীতে প্রতি বছর শিশুদের ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ বাড়ে।
তিনি আরও বলেন, এবারও বেড়েছে। তবে এবার শিশুর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইনসহ অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ আছে। সবাই চিকিৎসা পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে ডায়রিয়ার প্রকোপ
রাজধানীতে ২৩ লাখ মানুষ পাবেন ডায়রিয়ার টিকা