গবেষণা
টেকসই খাদ্য নিরাপত্তায় গবেষণা জোরদার করতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে গবেষণা আরও জোরদারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের স্বল্প জীবনকালীন ও উচ্চফলনশীল নতুন জাত উদ্ভাবন এবং খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে আর চাষের জমি কমছে।
আরও পড়ুন: ফসলি জমি রক্ষা এবং মজুতদারি রোধে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা চান কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা খাদ্য উৎপাদনে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছি। দেশের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম কৃষি এখন বাণিজ্যিকীকরণের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে রাজধানীর খামারবাড়িতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ গবেষণা দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক কর্মশালায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের বিজ্ঞানী ও গবেষণা সংস্থাগুলো ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্রকে কাজে লাগিয়ে নতুন জাত উদ্ভাবনে সময় কমিয়ে আনতে হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে ফসলের নতুন উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ারের সভাপতিত্বে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলস, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব সাস্কাচুয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট বালজিত সিং, বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক এবিএম খালদুন।
আরও পড়ুন: উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের আলু চাষের আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
মজুতদার ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে: কৃষিমন্ত্রী
চিকিৎসা গবেষণায় আরও সময় দিন: চিকিৎসকদের বললেন প্রধানমন্ত্রী
শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার মানসিকতাকে কবর দিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় আরও সময় দিতে দেশের চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'আমরা একটি সেক্টরে পিছিয়ে আছি। আর সেটি হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা। চিকিৎসকরা প্র্যাকটিস করে অর্থ উপার্জনে নিয়োজিত থাকেন এবং তারা গবেষণার কাজে আগ্রহী না।’
'বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ', 'জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (এনএসটি) ফেলোশিপ' এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং শিক্ষার্থীদের বিশেষ গবেষণার অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার(১১ মার্চ) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
শেখ হাসিনা শ্রোতাদের মধ্যে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের বিষয়ে জানতে চান।
তিনি বলেন, ‘এটি ঠিক যে, এখানে চিকিৎসকরাও আছেন, আমি সরাসরি তাদের জিজ্ঞাসা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী এখন থেকেই গবেষণা কাজের ওপর গুরুত্বারোপ করার জন্য তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ‘গবেষণা কার্যক্রমে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ দেশের মানুষকে সুস্থ, সবল ও মেধাবী হতে হবে। তাদের মেধা বিকশিত করার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য গবেষণা অপরিহার্য।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণায় যারা সম্পৃক্ত হবেন তাদের সরকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দেবে।
তিনি বলেন, 'আমি আবারও অনুরোধ করবো সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস কমিয়ে গবেষণা কাজে আরও বেশি সময় দিন।’
তিনি বলেন, গবেষণা কাজকে উৎসাহিত করতে যা যা করা দরকার সরকার তাই করবে।
প্রধানমন্ত্রী কৃষি খাতে গবেষণার ফলাফলের কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গবেষণা উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন করে। আমাদের বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গবেষণার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো ধরনের গবেষণায় সব ধরনের বাধা দূর করতে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গবেষণার জন্য বিনিয়োগের অর্থ দেশের গণমানুষের পকেট থেকে আসছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভার সভাপতিত্ব করেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের এই অর্থ অবশ্যই জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। এটা সব সময় মাথায় রাখতে হবে।’
দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরও একটি নির্মাণের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের মাটি খুবই নরম। আমরা প্রতিটি দ্বীপে মাটি পরীক্ষা করেছি, কিন্তু সেখানে এ ধরনের প্লান্ট নির্মাণ করা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, বর্তমান বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হলে সরকার রূপপুরে দ্বিতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করবে।
তিনি বলেন, 'আমি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীকে প্রথমটি শেষ করার পরপরই দ্বিতীয়টি শুরু করতে বলেছি এবং এখন থেকেই আমাদের তার প্রস্তুতি নিতে হবে।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.আলী হোসাইন এতে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
জলবায়ু সহনশীল ফসল উদ্ভাবনে গবেষণায় গুরুত্বারোপ বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের অধ্যাপকদের
জলবায়ু পরিবৃর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জলবায়ু সহনশীল ফসল উৎপাদনে অধিকতর গবেষণা এবং প্রচলিত ফসলের বিকল্প শস্য চাষের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ড এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বব্যিালয়ের (বাকৃবি) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাববিষয়ক একটি সেমিনারে তারা এসব সুপারিশ করেন।
শনিবার (৯ মার্চ) বাকৃবির কৃষি অনুষদের সম্মেলনকক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় ‘খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও জনসাধারণের জীবিকার উপর জলবায়ুর প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক ক্ষয়ক্ষতি কমানো ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রভাবের প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠার উপায় অন্বেষণে গুরুত্বারোপ করেন দুই দেশের অধ্যাপকেরা।
সেমিনারে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ডের অধ্যাপক বিঙ্গুনাথ ইনগিরিগে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন কেবল একটি নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়। এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা।
তিনি আরও বলেন, যদি একটি দেশও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী হয় এর প্রভাবে বিশ্বের প্রতিটি দেশকেই ভুগতে হবে।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
এসময় তিনি জলবায়ুর পরিবর্তনে কৃষিতে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসের প্রভাব আলোচনা করেন।
কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীবিকার প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদন যেমন কমেছে, দারিদ্র্যের হারও বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঋতুর পরিবর্তন ঘটেছে।
এ কারণে উচ্চ ফলনশীল কিছু কিছু ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর কৃষকদের জীবিকা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
দেশের কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব কমানো ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায় সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, প্রচলিত সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের পাশাপাশি ফসল রোপণ এবং কাটার সময়কাল জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। জলবায়ু সহনশীল ফসল উদ্ভাবনে অধিক গবেষণা করতে হবে এবং প্রচলিত ফসলের বিকল্প ফসল চাষ করতে হবে।
সেমিনারের এক পর্যায়ে পর্যায়ে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়।
এ পর্বে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষিতে নদীর ভূমিকা, উচ্চ ফলনশীল ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্য উৎপাদনে গুরুত্বারোপ, চাষাবাদে অল্প পানি ব্যবহারে উচ্চ ফলন ও ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমানোর উপায়, স্বল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায় এমন ফসল উৎপাদনে জোর দেওয়া, কৃষি উৎপাদনে জ্বালানির প্রভাব কমিয়ে সৌরশক্তির ব্যবহার, কৃষকদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষকদের শহরমুখী হওয়ার কারণ এবং কৃষি উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়া সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রাব্বানী, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আবেদীন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে তিন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠিত
দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
বিজ্ঞান-প্রযুক্তির গবেষণায় বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে: তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বর্তমান যুগে এগিয়ে যেতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণায় আরও বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং এ লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে এগিয়ে যেতে আমাদেরকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের রূপকল্প দিয়েছেন। আমাদের যে টেকসই অভীষ্ট রয়েছে সেখানে বিজ্ঞানকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর বিসিএসআইআর (সায়েন্স ল্যাব) আয়োজিত ‘বিজ্ঞান ও শিল্প-প্রযুক্তি মেলা-২০২৪’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, আমাদের শিক্ষানীতির আলোকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার জন্য সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কারণ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় আরও বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাব।
আরও পড়ুন: আন্তঃজেলা বাস ঢাকার বাইরের আর নগর পরিবহন ঢাকার অভ্যন্তরের টার্মিনাল ব্যবহার করবে: শেখ তাপস
শেখ হাসিনার আগে এ দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় কেউ উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেননি মন্তব্য করে তাপস বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে এ দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় উল্লেখযোগ্য কোনো বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হতো না। কিন্তু ২০০৯ সালে দায়িত্বভার গ্রহণের পর তিনি এই খাতকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেন।
আজ আমাকে বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান বললেন, শুধু গবেষণায় ৯ কোটি টাকা তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি এটাও পর্যাপ্ত নয়। আমার বিশ্বাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী, এই এলাকার সংসদ সদস্য এবং আমিসহ সবাই মিলে আমরা যদি এটা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনতে পারি তাহলে ৯ কোটি ৯০ কোটিতে রূপান্তরিত হবে।
তিনি বলেন, একসময় বিজ্ঞান শিক্ষা পিছিয়ে পড়লেও শেখ হাসিনার নানামুখী উদ্যোগের ফলে বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও কর্মক্ষেত্র বাড়ছে। বিজ্ঞান চর্চায় ও বিজ্ঞানে পড়াশোনায় আমাদের শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে এখন আবারও আগ্রহ ফিরে পেয়েছে। আগে আমাদের শিক্ষার্থীরা বড় হলেই ভাবত পড়াশোনার জন্য বিদেশে চলে যাব। এদেশে আমার কর্মের সুযোগ নেই, আমার মেধা-মনন বিকাশের সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, আপনার লক্ষ্য করেছেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের এই পথচলায় আমাদের অনেক সন্তান বহির্বিশ্বের অনেক সুযোগের হাতাছানি উপেক্ষা করে বাংলাদেশে ফিরে আসছে। দেশের জন্য দেশপ্রেম ও নিষ্ঠা নিয়ে দেশের উন্নয়নে অংশীদার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞান ও গবেষণায় অবারিত সুযোগ করে দিয়েছেন বলেই তারা দেশে ফিরে আসছেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরের সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক ভূঁইয়ার মৃত্যুতে তাপসের শোক
সিন্ডিকেট রোধে কোটি মানুষকে টিসিবি কার্ড দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: তাপস
গবেষণা করে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, গবেষণাধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ করে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে। ইলিশ যেমন আমাদের গৌরবের জায়গা, তেমনি ইলিশ জাতীয় অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও একটা বড় ক্ষেত্র।
তিনি বলেছেন, তাই এটিকে লালন-পালন, পরিচর্যা ও বিভিন্ন গবেষণাধর্মী পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এটিকে আরও বেশি উৎপাদন বাড়ানো এবং এটিকে সত্যিকার অর্থে বড় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করেই আমরা এগোতে চাই।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩ এর মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ করণীয় শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা কথা জানান।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ২০০১-২ সালের চেয়ে ইলিশ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি। এ প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণেরও বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা, সদিচ্ছা ও একটি জাতিকে গড়ে তোলার প্রয়াসের জন্যই এটি হয়েছে। বর্তমানে ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ ৭১ হাজার টন।
আরও পড়ুন: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে চাই: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান
ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশে ইলিশের অভায়শ্রম কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সে জায়গাগুলো থেকে উত্তরণ করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, ইলিশের বিচরণ পথ সুগম ও নিরাপদ করতে হবে। তা না হলে ইলিশের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে। এজন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রকৃত জেলেদের একটা সুনির্দিষ্ট তালিকা করা জরুরি।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া মৎস্যজীবী বিভিন্ন সংগঠনকে দায়িত্ব নিয়ে সুষ্ঠুভাবে তা পালনের মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, জাটকা নিধন বন্ধ করতে হবে এবং কেউ অবৈধ জাল ব্যবহার করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি অভয়াশ্রম সম্পৃক্ত এলাকার জেলে ও মৎস্যজীবীদের নিয়ে সামাজিক ক্যাম্পেইন করতে হবে। মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে তাদের জন্য ভিজিএফের পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
এ সময় মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের উদ্যোক্তাদের চেয়েও দ্বিগুণ লাভ করার মানসিকতা পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন বলে জানান মন্ত্রী। দাদন ব্যবসায়ীদের হাত থেকে ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত জেলেদের রক্ষার উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীতা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
বাজারে ইলিশের পর্যাপ্ততা থাকা সত্ত্বেও মধ্যসত্ত্বভোগীদের জন্য ইলিশের দাম অনেক শ্রেণির মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায় বলেও এ সময় জানান মন্ত্রী।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি বিষয়ে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া চলছে এবং এ অসাধু ব্যবসায়ী যারা কারসাজি করে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
পরে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩ এর প্রতিবেদন শীর্ষক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
রপ্তানি বাড়ানোর পরিকল্পনা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
টিআইবির গবেষণা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পড়ে না: আরাফাত
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাচন নিয়ে যে গবেষণা করেছে, তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পড়ে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত। তিনি বলেন, টিআইবি অযৌক্তিক কথা বলেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তথ্যপ্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা এই গবেষণা করেছেন, তাদের গবেষণার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। আন্তর্জাতিক জার্নালে তাদের কোনো গবেষণা নেই।
টিআইবির গবেষণা বৈজ্ঞানিক মিসকন্ডাক্টকে (অসদাচরণ) ছাড়িয়ে গেছে। তারা অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সুশীল সমাজ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে গবেষণা করে তার ফলাফল জনগণের সামনে তুলে ধরবে।’
টিআইবি যেটা করেছে, সেটা গবেষণা না, এটা তাদের মতামত বলে উল্লেখ করেন আরাফাত। তিনি বলেন, নির্বাচনে কিছু অনিয়ম হলেও নিবাচন কমিশন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। যারা অনিয়ম করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন ছিল একতরফা ও কৃত্রিম প্রতিযোগিতা: টিআইবি
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের শক্ত অবস্থানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বরং মিথ্যা ছড়িয়ে তাদের মনোবল দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমি টিআইবিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারি, চ্যালেঞ্জ করতে চাই; তারা আন্তর্জাতিক মানের কোনো জার্নালে গবেষণা পাঠিয়ে দেখুক, তারা এটা পাবলিশড করবে না। যদি পাবলিশ করে, তাহলে আমি মেনে নেব তাদের এটা গবেষণা হয়েছে।'
আরও পড়ুন: টিআইবি তাদের প্রতিবেদনের মাধ্যমে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির হাতে ‘অস্ত্র তুলে দিচ্ছে’: হাছান মাহমুদ
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আপনাদের, আন্তর্জাতিক মানের কোনো জার্নাল এটি পাবলিশ করা তো পরের কথা, এটাকে গ্রহণই করবে না। কারণ এটি কোনো গবেষণার আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের কোনো পদ্ধতি অনুসরণ অনুসরণ করেনি।’
তিনি আরও বলেন, 'সম্পূর্ণ গোজামিল দিয়ে একটি রিপোর্ট দাঁড় করানো হয়েছে। খুবই দুঃখজনক হলেও সত্য যারা এখানে সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের নির্বাচন, পলিটিক্যাল সায়েন্স-এ বিষয়গুলো নিয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই। আন্তর্জাতিক জার্নালে তাদের বেশির ভাগেরই কোনো পাবলিকেশন্স নেই।'
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকন্যা আছেন বলেই দেশে সমৃদ্ধি ঘটছে: আরাফাত
টেকসই উন্নয়নে উচ্চতর গবেষণা পরিচালনার আহ্বান ইউজিসি চেয়ারম্যানের
উচ্চতর গবেষণা ছাড়া কোনো দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে শিক্ষকদের বেশি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্রাজুয়েটের সংখ্যা না বাড়িয়ে গুণগত মানসম্পন্ন ও দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ষষ্ঠ ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ইলেকট্রিক্যাল ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (ইআইসিটি ২০২৩)’- শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) অনুষদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন আয়োজন করে।
শুক্রবার রাতে কুয়েটের টিচার্স ক্লাবে সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষা সেবা নির্বিঘ্ন করার আহ্বান ইউজিসি’র
ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর আলমগীর বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগে ফিজিক্যাল, বায়োলজিক্যাল ও সাইবার বিষয়গুলো একীভূত করে বর্তমান যুগের সমস্যা সমাধানের উপায় বের করতে হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও গবেষকদের যুগের চাহিদা অনুাযায়ী গ্রাজুয়েট ও পেশাজীবী তৈরি করতে হবে।
ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে শিক্ষকদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়নের সংস্কৃতি চালু করতে হবে। গবেষণা পরিচালনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতা নিতে পারেন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
সম্মেলনের আয়োজক কমিটির সভাপতি ও ইইই অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কুয়েটের ইইই বিভাগের প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম ও প্রফেসর ড. মনির হোসেন বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে বিশ্বের ১৩টি দেশ থেকে ৪৭২টি টেকনিক্যাল পেপার থেকে বাছাই করা ১৩৮টি টেকনিক্যাল পেপার ২৭টি টেকনিক্যাল সেশনে উপস্থাপন করা হয়।
এছাড়া কনফারেন্সে ৮টি কি-নোট সেশন ও একটি টেকনিক্যাল ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে আমেরিকা, বেলজিয়াম, ভারত ও বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ৩০০ গবেষক, শিক্ষক, স্বনামধন্য প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদসহ অন্যরা অংশ নেন।
আরও পড়ুন: বিএসএমএমইউ ও ইউজিসির মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই
সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মে ছাড় দেবে না ইউজিসি
বিষণ্ণতায় ভুগছেন ৭৪ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী: গবেষণা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের মাঝে বিষণ্ণতার হার এবং বিষণ্ণতার প্রভাবকসমূহ নিরূপণের বিষয়ে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জার্নালে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, দেশের ৭৪ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী বিষণ্ণতায় ভুগছেন।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ‘Prevalence of depression and its associated factors among undergraduate admission candidates in Bangladesh: Anation-wide cross-sectional study’ শিরোনামে একদল গবেষক বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে ২০২১-২২ এইচএসসি সেশনের প্রায় ৫ হাজার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থীর ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করেন।
এ জরিপের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ৩টি ক্যাটাগরিতে বিষণ্ণতার বিষয়টি ওঠে এসেছে। ৩০ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাল্টিডিসিপ্লিনারি কিউ-১ জার্নাল প্লস ওয়ান জি (ইম্পেক্ট ফ্যাক্টর: ৩.৭, ২০২২) এ গবেষণা প্রকাশিত হয়।
গবেষণার বিষয়ে অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, দেশের ৭৪ শতাংশ ভর্তি পরীক্ষার্থী বিভিন্ন পর্যায়ের বিষণ্ণতায় ভুগছেন। এর মধ্যে মাঝারি বিষণ্ণতায় ২৬ শতাংশ, অত্যধিক বিষণ্ণতায় ২৬ শতাংশ এবং ২২ শতাংশ শিক্ষার্থী মারাত্মক পর্যায়ের বিষণ্ণতায় ভুগছেন।’
আরও পড়ুন: জলজ খাদ্য, সম্পদ ও সম্প্রদায়ের কোভিড-১৯ এর প্রভাব নিরূপণে শাবিপ্রবির গবেষণা বিশ্বে মডেল
তিনি বলেন, বিষণ্ণতা বৃদ্ধি ও হ্রাস, উভয় পক্ষেই প্রভাবক কারণ চিহ্নিত হয়েছে। বিষণ্ণতা বৃদ্ধির পেছনে প্রভাবক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে লিঙ্গ, ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার, পারিবারিক সমস্যা, গুরুতর অসুস্থতা, কোভিড আক্রান্ত, প্রাতিষ্ঠানিক ফলাফল, মানসিক সমস্যা।
অন্যদিকে, ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস, শরীরচর্চা, পড়াশুনার সময়, ধর্মচর্চা, বিষণ্ণতা হ্রাস করতে ভুমিকা পালন করে। পারিবারিক আয় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বিষণ্ণতার প্রভাবক হিসেবে চিহ্নিত হলেও এদের প্রভাব খুব জোরালো নয়।
এছাড়া, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের বিষণ্ণতার সঙ্গে ধুমপানের অভ্যাস, বৈবাহিক অবস্থা, প্রেমের সম্পর্ক ও ধর্মবিশ্বাসের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও উঠে এসেছে এই গবেষনায়।
এ গবেষণার আরেক গবেষক মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ছেলেদের তুলনায় মেয়ে শিক্ষার্থীদের অত্যধিক বিষণ্ণতায় ভোগার ঝোঁক প্রায় দ্বিগুণ। খুব সম্প্রতি কোনো প্রকার ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার হওয়া এবং পারিবারিক সমস্যায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের অত্যধিক বিষণ্ণতায় ভোগার ঝোঁক যথাক্রমে ২ গুণ এবং ৩ গুণ।’
আরও পড়ুন: গবেষণায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে এমএলএলডব্লিউএস’র চুক্তি
অপরদিকে, যাদের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ আছে তাদের মাঝে বিষণ্ণতার হার অধিক এবং ঝোঁক প্রায় দেড়গুণ। তবে ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি সচেতন এবং নিয়মিত শরীরচর্চাকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিষণ্ণতার হার তুলনামূলক কম এবং আক্রান্ত হওয়ার ঝোঁক যথাক্রমে ১ দশমিক ৪ এবং ২ গুণ কম।
বিষণ্ণতা হ্রাস করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সৎসঙ্গ এবং উত্তম পারিবারিক পরিবেশ ও বোঝাপড়ার কোনো বিকল্প নেই। সেইসঙ্গে শরীরচর্চা এবং ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি সচেতনতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার্থীদের শুধু দৈহিক সুস্বাস্থ্যই নয়, মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করাও অপরিহার্য। শুধু ভালো একাডেমিক ফলাফল নয়, দৈহিক ও মানসিকভাবে বলিষ্ঠ প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্রের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।’
গবেষণাটিতে অবদান রেখেছেন শাবিপ্রবি পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাফিউল হাসান ও আল মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুনমুন সরকার, যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মিলাদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশবিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আখের আলী, চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জুবায়ের আহমেদ।
আরও পড়ুন: গবেষণায় ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেলেন শাবিপ্রবির ৪ গবেষক
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ প্রসঙ্গে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশল সম্পর্কিত গবেষণা
সারসংক্ষেপ
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ চীনের শিক্ষার ক্ষেত্রে ‘নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ’র প্রতিভা প্রশিক্ষণের জন্য নতুন প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এই নিবন্ধে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভার (চীনের বাংলা ভাষার শিক্ষার্থী) বর্তমান পরিস্থিতি আলোচনা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশলগত তাৎপর্য তুলে ধরে চীনে বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশল সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কোন দেশে বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার, বেশি মানসিক রোগ?
মূল শব্দ: ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’, বাংলাভাষী প্রতিভা
ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকেই চীন ও বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ছিল। নিউ তাং রাজবংশের দ্বিতীয় খণ্ডের ২২১(পর্ব) প্রাচীন ভারতীয় মগধ রেকর্ড করেছে। মিং ইতিহাসের ৩২৬ খণ্ডেও ‘বাংলা’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে চীন ও বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর উভয়পক্ষ রাজনীতি, অর্থনীতি, সামরিক ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর সহযোগিতা করেছে। দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা দুই দেশ সফর করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় বাড়ছে এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত হচ্ছে।
(১) নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ নির্মাণের কৌশলগত তাৎপর্য
নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, "আপনি যদি কোনো লোকের সঙ্গে এমন ভাষায় কথা বলেন যা তিনি বোঝেন, এটি তার মনে থাকবে। আপনি যদি তার নিজের ভাষায় তার সঙ্গে কথা বলেন, তিনি স্মরণ করবেন।” ভাষা ও চিন্তার সম্পর্ক নিয়ে অনুমানকে সামনে রেখেছিলেন আমেরিকান সাপির ও তার শিষ্য ওল্ফ। তারা বিশ্বাস করেন, সমস্ত উচ্চ পর্যায়ের চিন্তাভাবনা ভাষার উপর নির্ভর করে। (সাপির, ১৯২১), ভাষার কাঠামো একটি নির্দিষ্ট সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সদস্যদের আচরণ ও চিন্তাভাবনা নির্ধারণ করে অনুমানটি স্পষ্ট করেন সাপির-ওল্ফ। সুতরাং, অন্যান্য দেশের সংস্কৃতি ও চিন্তাভাবনা বোঝার জন্য, আরও ভালো আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও মিডিয়া বিষয়ক যোগাযোগ বাড়াতে নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজের নির্মাণ গুরুত্বপূর্ণ।
বৈশ্বিক কৌশলগত বিন্যাস ও সম্প্রসারণে, অনেক দেশ নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ নির্মাণকে জাতীয় কৌশলের উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছে। চীনের নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ কৌশল নির্মাণকাজ একবিংশ শতাব্দীতে একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ আন্ডারগ্রাজুয়েট ট্যালেন্ট ট্রেনিং বেস’ ও ‘স্পেশালিটি কনস্ট্রাকশন সাইটস’ সহায়তা পরিকল্পনা তৈরি করেছে। চীন তার নিজ দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কযুক্ত দেশগুলোর সরকারি ভাষা (৮৮টি নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ) পড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়কে সহায়তা দেবে।
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ নির্মাণের মূল চাবিকাঠি হলো আন্তঃসংযোগ। আর ভাষার আন্তঃযোগিতা হলো আন্তঃসংযোগ অর্জনের ভিত্তি। ভাষা পরিকল্পনার কৌশলগুলো প্রচারের ফলে নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজের প্রতিভা প্রশিক্ষণের পরিমাণ, গুণমান ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির উচ্চতর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
(২) চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশলগত তাৎপর্য
বাংলা ভাষা বাঙালি জাতির মাতৃভাষা, জাতিগত সংস্কৃতি, ধারণার বাহক ও জাতীয় আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সাহিত্য সৃষ্টির জন্য বাংলা ভাষা ব্যবহার করেন। ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার জন্য ‘ভাষা আন্দোলন’ হয়। এই আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের জাতিগত ভাবনা জাগিয়ে তোলে এবং শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশিদের কাছে বাংলা ভাষা হয়ে উঠেছে সাংস্কৃতিক প্রতীক, জাতীয় গর্ব ও জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। ‘বাংলাদেশি সংস্কৃতি একটি সম্মিলিত সংস্থান; যা শ্রেণি, অঞ্চল ও ধর্মীয় সীমানা জুড়ে বাংলাদেশিদের ঘনিষ্ঠ ইউনিটে আলোকিত করতে পারে।’ (উইলিয়াম ভন শ্যান্ডেল, ২০১১)
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’র অন্তর্ভুক্ত একটি দেশ হিসাবে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং মূলত কয়েকটি বড় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে চীনের সঙ্গে একমত হয়। আন্তর্জাতিক বিষয়ে চীন ও বাংলাদেশের নেতারা নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরালোভাবে বিকাশ লাভ করেছে। চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে উঠেছে। চীনের দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ এবং তৃতীয় বৃহত্তম ইঞ্জিনিয়ারিং চুক্তি বাজার। বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণ চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ভালো প্রতিবেশী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে এবং আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি বিকাশে নবদিগন্তের হাতছানি
২. ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ প্রসঙ্গে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের বর্তমান পরিস্থিতি
(১) পেশাদার প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির পরিমাণ কম
চীনের মূল ভূখণ্ডে বর্তমানে শুধু পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা বিষয়ে চার বছর মেয়াদি স্নাতক পর্যায়ের কোর্স চালু রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনান ন্যাশনালিটিস বিশ্ববিদ্যালয়, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ও ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়াও, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইনর কোর্স হিসেবে বাংলা ভাষা চালু রয়েছে।
নিবন্ধনের বছর অনুযায়ী, চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এখানে বাংলা বিভাগ ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এ পর্যন্ত মাত্র সাতটি ব্যাচ এখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মেজর ২০১৬ সালের পরে নামভুক্ত হয়। ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটি ২০১৬ সালে, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ ২০১৭ সালে, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ২০১৮ সালে এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০ সালে।
তালিকাভুক্তির পরিমাণের ক্ষেত্রে, চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২০ জন, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজে প্রায় ১২ জন, ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটিতে প্রায় ১৫ জন, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ জন এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। সামগ্রিক অর্থে শিক্ষার্থী ভর্তির পরিসর ছোট এবং প্রতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তির পরিকল্পনাও নেই। ২-৪ বছরের মধ্যে শুধু একবার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
তবে গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ প্রতি বছর বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ভর্তি করে। চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এত ঘন ঘন শিক্ষার্থী ভর্তির স্কুল আর নেই। বর্তমানে গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজের প্রথম বাংলা ভাষা স্নাতক কোর্সের দুটি ব্যাচ রয়েছে।
(২) শিক্ষকদের দক্ষতা অপর্যাপ্ত
শিক্ষকদের দৃষ্টিকোণ থেকে, চীনের বাংলা ভাষা বিষয়ে চীনা শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বল্প, পেশাগত ডিগ্রি কম এবং শিক্ষণ অভিজ্ঞতাও অপর্যাপ্ত। যে কয়েকজন অভিজ্ঞ প্রবীণ শিক্ষক ছিলেন তারা অবসর নিয়েছেন, কেবলমাত্র একজন শিক্ষক আছেন যিনি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলা ভাষা পড়াচ্ছেন। এ ছাড়া বর্তমানে যেসব শিক্ষক আছেন তাদের বেশিরভাগই সবেমাত্র স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দুজন চীনা শিক্ষক আছেন। ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগে তিনজন চীনা শিক্ষক আছেন। বেইজিং ফরেন স্টাডিজের বাংলা বিভাগে শুধু একজন চীনা শিক্ষক আছেন এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে তিনজন চীনা শিক্ষক আছেন। গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজের বাংলা ভাষা বিভাগে মোট ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জন চীনা শিক্ষক ও ২ জন বাংলাদেশি শিক্ষক। মোট শিক্ষকের সংখ্যায় এখানে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষা বিষয়ে সর্বাধিক। তবে শিক্ষকদের একাডেমিক স্তর ও পাঠদানের অভিজ্ঞতাও উন্নত করা দরকার।
(৩) উচ্চ পর্যায়ের বাংলাভাষী প্রতিভার ঘাটতি
চীনে বাংলাভাষী প্রতিভার কাঠামোগত ঘাটতি রয়েছে। প্রশিক্ষণ এখনও স্নাতক ডিগ্রি পর্যায়ে রয়েছে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষা বিষয়ে এখনও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কোনো কোর্স চালু হয়নি। অনেক শিক্ষার্থী অন্যান্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়েন বা সরাসরি চাকরি করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের চাকরির সঙ্গে বাংলা ভাষার কোনো সম্পর্ক নেই।
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের প্রেক্ষাপটে, বাজারে এমন উচ্চ-পেশাদার প্রতিভার প্রয়োজন আছে; যারা দেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিস্থিতি জানে এবং অর্থায়নে পেশাদার জ্ঞান অর্জন করে, যেমন- আইন, অর্থনীতি, বাণিজ্য ইত্যাদি। যে দেশে বিনিয়োগ করছেন, সে দেশের জাতীয় পরিস্থিতি ও সংস্কৃতি না বোঝার কারণে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ব্যর্থতা ও বিনিয়োগের ক্ষতির অনেক ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বেদনায় ভরা দিন: শেখ হাসিনা
গবেষণায় ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেলেন শাবিপ্রবির ৪ গবেষক
গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) চার অনুষদের চারজন গবেষক (শিক্ষক)।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ- শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে সাস্ট রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে অনলাইনে আয়োজিত ১১তম বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনে এ পুরস্কার দেন।
আরও পড়ুন: শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
পুরস্কারপ্রাপ্ত ৪ জন গবেষক হলেন-
১) অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি (এফইটি) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আফজাল হোসাইন।
২) ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ওশেনোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সোলাইমান হোসাইন।
৩) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
৪) লাইফ সায়েন্সেস অনুষদের অন্তর্ভুক্ত জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক প্রধান।
বার্ষিক এ গবেষণা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং রিসার্চ সেন্টারের সদস্য অধ্যাপক ড. শামিম আহমেদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খান, শাবিপ্রবির উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন, পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী।
দুই দিনব্যাপী এই বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনে ১৯টি টেকনিক্যাল সেশনে মোট ১৮১টি গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করা হবে।
পাশাপাশি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাস্ট রিসার্চ সেন্টারে আওতায় এক বছর মেয়াদি ১৬১টি গবেষণা প্রকল্প, দুই বছর মেয়াদি ২৯টি গবেষণা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
এই অর্থবছরে গবেষণায় মোট ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গবেষণা প্রণোদনা হিসেবে গবেষকদের জন্য আরও ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও চলবে ক্লাস-পরীক্ষা
সিলেটে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার