সড়ক দুর্ঘটনা
উত্তরে বাড়ছে দুর্ঘটনা, ১১ মাসে সড়কে ঝরেছে ২৪৩ প্রাণ
চলতি বছর উত্তরের ৮ জেলায় আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। এতে প্রতিনিয়তই প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছে আরও শত শত মানুষ।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত ১১ মাসে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় আশঙ্কাজনকভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। এই সময়ে ৪১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৩ জন নিহত এবং ৪৮৭ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনাজনিত এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৯৪টি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক আইন অমান্য করায় বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে ১৪ হাজার ৭৫৮টি মামলা করেছে হাইওয়ে পুলিশ, যা থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব অর্জিত হয়েছে।
রংপুর হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রিজিয়নের আওতায় তেঁতুলিয়া, বোদা, সাতমাইল, তারাগঞ্জ, বড়দরগা, গোবিন্দগঞ্জ ও হাতীবান্ধা এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের থানা রয়েছে। এসব থানার আওতায় রয়েছে ৩৭৩ কিলোমিটার মহাসড়ক এবং ১৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক। প্রতিদিন এসব সড়ক দিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্তে যাত্রীপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের চাপ, সড়কের কিছু অংশের নাজুক অবস্থা এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোসহ অসতর্কতা-অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।
দুই মাস আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শিকার হন নাট্যকার ও ভাওয়াইয়া গবেষক আশরাফুজ্জামান বাবু। তিনি রংপুরের বদরগঞ্জ থেকে শহরের দিকে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। তার মুখে ও ঠোঁটে বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করা যুবক রাশেদ এখন হুইলচেয়ারে বন্দি। একসময় যে মানুষটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিল, আজ সে বোঝা হয়ে গেছে নিজের কাছেই।
রংপুর নগরীর নজিরেরহাট এলাকার আব্দুর রহিম অনিক গত ২৪ সেপ্টেম্বর বদরগঞ্জ রোডে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও সন্তানসহ গুরুতর আহত হন। চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন তিনি। পারিবারিকভাবে অসচ্ছল অনিকের পরিবার ধারদেনা করে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখন একদিকে ঋণ পরিশোধের চিন্তা অন্যদিকে চিকিৎসার ব্যয়।
বাবু-রাশেদ-অনিকের মতো এমন অনেকই আছেন আড়ালে, যাদের দুর্ঘটনার খবর থাকে অজানা। অথচ ভোরের আলো ফোটার আগেই রংপুরের মহাসড়কগুলো জেগে ওঠে। কেউ যায় জীবিকার খোঁজে, কেউ ফেরে আপন নীড়ে। কিন্তু এই পথই অনেকের জন্য হয়ে উঠছে শেষ গন্তব্য। প্রতিদিনের যাত্রার আড়ালে লুকিয়ে থাকে অনিশ্চিত মৃত্যু, অশ্রু আর নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার গল্প।
এ অবস্থা থেকে উত্তোরণ ও দুর্ঘটনা রোধে সড়কগুলোতে নিয়মিত টহল, যানবাহন তল্লাশি ও আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করছে হাইওয়ে পুলিশ। পাশাপাশি চালক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তারা। সেই সঙ্গে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের সড়ক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করছে হাইওয়ে পুলিশ।
সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মতে, সড়কে নিয়মিত নজরদারি থাকলেও চালকদের একাংশ আইন মানতে অনীহা দেখাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দক্ষ চালকের অভাব, বিশ্রাম ছাড়া দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানো এবং যান্ত্রিক ত্রুটিও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে উঠছে।
তারা মনে করেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, চালকদের মানবিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করাও জরুরি। বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানো, অদক্ষ চালক দিয়ে যানবাহন পরিচালনা এবং লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালানোর প্রবণতা বন্ধ না হলে এই মৃত্যু মিছিল থামবে না। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত কার্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়নের পুলিশ সুপার আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত গতি, বেপরোয়া ওভারটেকিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং অদক্ষ চালকই অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল কারণ। রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন ৩৭৩ কিলোমিটার মহাসড়ক ও ১৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কে নিয়মিত টহল এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ভবিষ্যতে নজরদারি আরও জোরদার করা হবে। দুর্ঘটনা কমাতে গতি নিয়ন্ত্রণ, ফিটনেসহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনাও পরিকল্পনাও রয়েছে।
এদিকে, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, গত নভেম্বর মাসে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩১৭ জন। আগের মাস অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ১৪ দশমিক ২২ জন। নভেম্বর মাসে নিহত হয়েছেন ১৬ দশমিক ১ জন। সেই হিসেবে নভেম্বর মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩১টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৫টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮২টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৭১টি শহরের সড়কে এবং ৫টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ১২২টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৫৯টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্ম ঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজিকে।
নিরাপদ সড়ক চাই রংপুরের সহ-সভাপতি চঞ্চল মাহমুদ বলেন, অদক্ষ চালক আর অপ্রশস্ত সড়কের কারণেই প্রতিনিয়তই বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা । এ ব্যাপারে রাষ্ট্রযন্ত্রের সব কাঠামো কে আরো সক্রিয় ভুমিকা পালন করতে হবে।
১৮ ঘণ্টা আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ তরুণের মৃত্যু: ২ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহতের ঘটনায় অস্থায়ী চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করা দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এন এম ওয়াসিম ফিরোজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এই ঘটনা তদন্ত করার জন্য ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখছে পুলিশ। দুর্ঘটনাস্থলে ৭ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজনকে গতকাল (শুক্রবার) রাতেই পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে তারা।
এর আগে, গতকাল বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের সার্কিট হাউস মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় রিফাত আলী (১৮) ও সোহাগ আহমেদ (১৯) নামে দুই তরুণ নিহত হন। পুলিশের ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এরপর উত্তেজিত জনতা সার্কিট হাউস মোড়ে সড়কের ওপর একজনের মরদেহ রেখে অবরোধ করেন। পরে বিশ্বরোড মোড়ে পুলিশ বক্সে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় পুলিশ বক্সের আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন জ্বলিয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ঘটনাস্থলের অদূরে শান্তিবাগ এলাকার পুলিশ ফাঁড়িতেও ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। সেখানে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুনে দেয় তারা। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, ঢাকায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার পর নিবন্ধনহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় সার্কিট হাউস মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়। সেখানে ট্রাফিক পুলিশ ও থানা পুলিশের সদস্যরা ছিলেন। ওই চেকপোস্টে রিফাত ও সোহাগের মোটরসাইকেল থামানোর জন্য সংকেত দেওয়া হয়, কিন্তু সংকেত অমান্য করে তারা দ্রত গতিতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে দুর্ঘটনায় কবলিত হয়ে মারা যান।
১ দিন আগে
নভেম্বরে সড়কে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩.২২ শতাংশ, প্রতিদিন গড়ে ১৬.১ মৃত্যু
গত নভেম্বর মাসে দেশে মোট ৫৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩১৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ৬৪ জন, যা মোট নিহতের ১৩.২৫ শতাংশ এবং ৭১টি শিশু রয়েছে, যা ১৪.৬৯ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নভেম্বর মাসে ২২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯৪ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৪০.১৬ শতাংশ। এ মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ছিল ৪২.৫০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হয়েছেন ১০৬ জন, যা মোট নিহতের ২১.৯৪ শতাংশ। এ ছাড়া যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৭ জন, যা ১১.৮০ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, একই সময়ে ৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। পাশাপাশি ৪৭টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী নিহত হয়েছেন ১৯৪ জন (৪০.১৬ শতাংশ), বাসের যাত্রী ২৪ জন (৪.৯৬ শতাংশ), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-মিকচার মেশিন গাড়ির আরোহী ২২ জন (৪.৫৫ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসের আরোহী ১৪ জন (২.৮৯ শতাংশ), থ্রি-হুইলারের যাত্রী ৮৩ জন (১৭.১৮ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ৩১ জন (৬.৪১ শতাংশ) এবং রিকশা-বাইসাইকেলের আরোহী ৯ জন (১.৮৬ শতাংশ)।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, জাতীয় মহাসড়কে ঘটেছে ১৩১টি দুর্ঘটনা (২৪.৫৩ শতাংশ), আঞ্চলিক সড়কে ২৪৫টি (৪৫.৮৮ শতাংশ), গ্রামীণ সড়কে ৮২টি (১৫.৩৫ শতাংশ), শহরের সড়কে ৭১টি (১৩.২৯ শতাংশ) এবং ৫টি দুর্ঘটনা অন্যান্য স্থানে (০.৯৩ শতাংশ) ঘটেছে।
দুর্ঘটনার ধরন অনুযায়ী, ১২২টি (২২.৮৪ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষে, ২৩৭টি (৪৪.৩৮ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি (২০.৪১ শতাংশ) পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়ার মাধ্যমে, ৫৯টি (১১.০৪ শতাংশ) পেছন থেকে আঘাতের কারণে এবং ৭টি (১.৩১ শতাংশ) অন্যান্য কারণে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-ড্রাম ট্রাক-মিকচার মেশিন গাড়ি ২৫.৯১ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১২.৮৪ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৪.৫৮ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৭.৬৩ শতাংশ, থ্রি-হুইলার ১৭.৫৪ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৪.৮১ শতাংশ, বাইসাইকেল-রিকশা ২.৯৮ শতাংশ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ৩.৬৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় মোট ৮৭২টি যানবাহন সম্পৃক্ত ছিল। এর মধ্যে বাস ১১২টি, ট্রাক ১২৭টি, কাভার্ডভ্যান ২৩টি, পিকআপ ২৯টি, ট্রাক্টর ৯টি, ট্রলি ১৭টি, ড্রাম ট্রাক ২০টি, মিকচার মেশিন গাড়ি ১টি, মাইক্রোবাস ১৪টি, প্রাইভেটকার ২১টি, অ্যাম্বুলেন্স ২টি, জীপ ৩টি, মোটরসাইকেল ২৪১টি, থ্রি-হুইলার ১৫৩টি, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৪২টি, বাইসাইকেল-রিকশা ২৬টি এবং অজ্ঞাত যানবাহন ৩২টি।
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনা ঘটেছে ভোরে ৪.৮৬ শতাংশ, সকালে ২০.৯৭ শতাংশ, দুপুরে ১৯.১০ শতাংশ, বিকালে ১৭.৭৯ শতাংশ, সন্ধ্যায় ১৯.৮৫ শতাংশ এবং রাতে ১৭.৪১ শতাংশ।
বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৬.৪০ শতাংশ ও প্রাণহানি ২৪.৬৩ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬.১০ শতাংশ ও প্রাণহানি ১৪.০৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২০.৯৭ শতাংশ ও প্রাণহানি ২২.৯৮ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১২.১৭ শতাংশ ও প্রাণহানি ১৪.৪৯ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৩৬ শতাংশ ও প্রাণহানি ৬.২১ শতাংশ, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৬১ শতাংশ ও প্রাণহানি ৪.৯৬ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৭.১১ শতাংশ ও প্রাণহানি ৭.২৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.২৪ শতাংশ ও প্রাণহানি ৫.৩৮ শতাংশ।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৪১টি দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩০টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ৪১টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম শেরপুর ও পঞ্চগড় জেলায়, জেলাদুটিতে ৯টি করে দুর্ঘটনায় ২ জন করে নিহত হয়েছেন।
নিহতদের পেশাগত পরিচয় অনুযায়ী, শিক্ষার্থী ৫৭ জন, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ২৩ জন, ওষুধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ১৭ জন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ১৪ জন, শিক্ষক ১৩ জন, বিভিন্ন ব্যাংক–বীমা কর্মকর্তা ও কর্মচারী ৯ জন, এনজিও কর্মী ৭ জন, পোশাক শ্রমিক ৬ জন, চিকিৎসক ৫ জন, পুলিশ সদস্য ৪ জন, নির্মাণ শ্রমিক ৪ জন, সাংবাদিক ৩ জন, প্রতিবন্ধী ৩ জন, আইনজীবী ২ জন, র্যাব সদস্য ১ জন, সেনা সদস্য ১ জন এবং স্বর্ণকার ১ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা ও অদক্ষতা, নির্দিষ্ট বেতন ও কর্মঘণ্টা না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকেই দায়ী করা হয়েছে।
সুপারিশে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি, ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে সার্ভিস রোড নির্মাণ, পর্যায়ক্রমে রোড ডিভাইডার স্থাপন, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ১৪.২২ জন নিহত হলেও নভেম্বর মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছেন ১৬.১ জন। এই হিসেবে নভেম্বর মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩.২২ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলেছে, অধিকাংশ দুর্ঘটনা অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটছে। গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি এবং চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। পাশাপাশি যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এজন্য সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অধিকাংশ চালকের নিয়োগপত্র, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকায় তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এবং বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালাচ্ছেন।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন শ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
৩ দিন আগে
সিলেটে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২
সিলেটের গোলাপগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের তেরমাইল নামক স্থানে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একজন এবং সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর অন্যজন মারা যান। এ ছাড়াও আরও দুইজন মোটরসাইকেলআরোহী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতরা হলেন— গোলাপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোয়াসপুর গ্রামের আব্দুল আহাদ (৪২) এবং রানাপিং ছত্রিশ গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে সাব্বির আহমদ (২১)।
আহতরা হলেন— উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফাজিল পুর গ্রামের মৃত আব্দুল আলিমের ছেলে আরিফুল হক জয় (৩৫) এবং জুড়ি উপজেলার বাছিরপুর গ্রামের বাছিরপুর গ্রামের আকমল হোসেনের ছেলে জাকির আহমদ (২০)।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, মোটরসাইকেল দুটি একই দিক থেকে যাচ্ছিল। উপজেলার গোয়াসপুর এলাকায় পৌঁছানোমাত্র পেছন থেকে আসা মোটরসাইকেলটি সামনের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে দুইটি মোটরসাইকেলের চালকসহ চারজন আরোহীই ছিটকে পড়লে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম।
৩ দিন আগে
সীতাকুণ্ডে পিকআপ উল্টে দুই ব্যবসায়ী নিহত
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পানবোঝাই পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে দুই পান ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যবসায়ীরা হলেন: পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও এলাকার রমনি মোহন চৌধুরীর ছেলে কমল চৌধুরী ও হাটহাজারী থানার পশ্চিম দেওয়াননগর এলাকার মৃত ননী চৌধুরীর ছেলে সমীর চৌধুরী।
বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মোমেন জানান, পটিয়ার হাইদগাঁও ব্রাহ্মণঘাটা থেকে পানবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে পান ব্যবসায়ী কমল, সমীর ও উজ্জল চৌধুরী মিরসরাইয়ের মিঠাচরা বাজারে পান বিক্রি করার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পিকআপটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর বাঁশবাড়িয়া এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে কমল চৌধুরী ও সমীর চৌধুরী গুরুতর আহত হন। তবে উজ্জল চৌধুরী সামান্য আঘাত পান। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কমল ও সমীর চৌধুরীকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
৭ দিন আগে
দুই জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
দেশের দুই জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় অন্তত ১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে কুমিল্লা ও ঝিনাইদহ জেলায় এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঝিনাইদহে দুইটি ট্রাকের সংঘর্ষে রবিউল ইসলাম (৬০) নামে এক চালক নিহত হয়েছেন। ঢাকা-ঝিনাইদহ সড়কের মারকাজ মসজিদ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রবিউল ইসলামের বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলার শাপাহাটি গ্রামে।
পুলিশ জানায়, যশোরগামী একটি বালিবাহী ট্রাক ঝিনাইদহ শহরের মারকাজ মসজিদের সামনে পৌঁছালে মাগুরা থেকে আগত বিচালি বোঝাই অপর একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে বিচালি বোঝাই ট্রাকের চালক রবিউল ইসলাম গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক হামিদুর রহমান বেলাল বলেন, ট্রাক চালক রবিউল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান।
আরাপপুর হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, মরদেহ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আর ট্রাক দুইটিকে জব্দ করা হয়েছে।
এর আগে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ওয়াইব্রিজের গোড়ায় মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার সংঘর্ষে সৌদি আরব প্রবাসী একজন নিহত ও একজন আহত হন।
নিহত নিশাদ (২৬) উপজেলার রামকৃষ্ণপুর বাঁশগাড়ি গ্রামের মমিন মেম্বারের ছেলে। আহত ইফাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ঝুনারচর গ্রামের মো. জিলানীর ছেলে। ইফাতকে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিশাদ রাতে বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেলে ওয়াইব্রিজে ঘুরতে যান। ব্রিজের ওপর উঠতে গিয়ে একটি অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে নিশাদের মাথা ফেটে দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। স্বজনরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. শহীদুল্লাহ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
১১ দিন আগে
টেকনাফে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশা খাদে, নিহত ২
কক্সবাজারের টেকনাফে ট্রাকের ধাক্কায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা খাদে পড়ে অটোরিকশাচালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের আলীখালী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— অটোরিকশার চালক ফারুক (৩০) ও যাত্রী ইমান হোসেন (২৫)। ফারুক হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজারের মো. সেলিমের ছেলে এবং ইমান হোসেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার মো. সৈয়দ নুরের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে খাদে পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই চালকসহ দুজন নিহত হন।
টেকনাফের হোয়াইক্যং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নুরুল আবছার জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ট্রাক ও অটোরিকশাটি পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
১১ দিন আগে
তিন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩
দেশের তিন জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আরও অন্তত ৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ওমপাড়ায় মাইক্রোবাস ও অটোরিকশার সংঘর্ষে জোবায়দা বেগম (৫০) নামে এক নারী নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
নিহত জোবায়দা স্থানীয় বাড়ৈখালী শিবরামপুরের এখলাছ উদ্দিনের স্ত্রী। আহতরা হলেন— আশুদা বেগম (৫৪), আব্দুর মহিম (৩০) ও মহসিন (৪৫)। তাদের ঢাকা ও স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
হতহতরা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছেন শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, অটোরিকশাটি শ্রীনগরমুখী ছিল এবং মাইক্রোবাসটি ছিল ঢাকামুখী। বিকট শব্দে অটোরিকশাটি চূর্ণবিচূর্ণ এবং মাইক্রোবাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর সাময়িক সময়ের জন্য সার্ভিস লেনের ওই অংশটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে দুর্ঘটনাকবলিত যান দুটি সরিয়ে নেওয়ার পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় দুটি যানবাহনই জব্দ করা হলেও মাইক্রোবাসের চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশ স্টেশন থেকে জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে, সকাল ৮টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর বাজার এলাকায় ভটভটির ধাক্কায় এক পথচারী নিহত হন।
নিহত বাসেদ আলী (৭৫) ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর এলাকার মৃত রিফাত উল্লাহর ছেলে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) হুমায়ন কবির জানান, ছত্রাজিতপুর বাজার এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় ধানবোঝাই একটি ভটভটি বৃদ্ধ বাসেদ আলীকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ওসি বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়, তবে অভিযোগ না থাকায় তা পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
তার আগে, চাঁদপুর সদরের মহামায়া বাজারের পশ্চিমে সকাল ৬টার দিকে বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় মাহফুজুল হক (৭) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহত হয়। মাহফুজুল মহামায়া বাজার জামে মসজিদের সহকারী ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ মাঈনুল পাটওয়ারীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাজারের আরিবাড়ি সড়কে মায়ের সঙ্গে রাস্তা পারাপারের সময় চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা কুমিল্লাগামী সৌদিয়া বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশুটি ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটিকে আটক করলেও চালক পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মোকলেসুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসটি হেফাজতে নেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়েজ আহমেদ ইউএনবিকে জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
১২ দিন আগে
রাজধানীতে অটোরিকশার ধাক্কায় যুবক নিহত
রাজধানীর ডেমরায় রাস্তা পারাপারের সময় অটোরিকশার ধাক্কায় মো. বাবুল মিয়া (৩২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ডেমরা থানার বামৈল মোল্লা ডাইং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পরপরই আহত বাবুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী আশিকুর জানান, বাবুল কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া এলাকার মতি মিয়ার ছেলে। তিনি ডেমরা এলাকায় বসবাস করতেন।
তিনি আরও বলেন, রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুতগামী একটি অটোরিকশার ধাক্কায় বাবুল গুরুতর আহত হন। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাই।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হলে তারা অটোরিকশা জব্দ ও চালককে আটক করে থানায় নিয়েছে বলে জানিয়েছে।
১৪ দিন আগে
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের তিন আরোহী নিহত
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন মোটরসাইকেলআরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন দুই আপন ভাই।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— সুমন (২৫) ও তার ভাই ইমন (২২)। তারা কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী মোহাম্মদপুরের করিম মন্ডলের ছেলে। আরেকজন হলেন আশিক মোল্লা (২২)।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে মোটরসাইকেলযোগে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যাচ্ছিলেন তারা। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা অজ্ঞাতনামা একটি যানবাহন মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সুমন ও ইমন নিহত হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আশিককে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয়।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর সার্জেন্ট রাসেলকে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেলটিকে একটি অজ্ঞাত গাড়ি ধাক্কা দিয়ে চলে যায়।
তিনি বলেন, নিহতদের মরদেহ আজ (রবিবার) সকালে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপরাধী গাড়িটি ও তার চালককে শনাক্তে পুলিশ কাজ করছে।
১৪ দিন আগে