রেমিট্যান্স
আগস্টে ২৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে
সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে ২৪২ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০২৪ সালের একই সময়ে ২২২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সবশেষ চলতি অর্থবছরের শুরুর জুলাই মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন রেকর্ড ২৪৮ কোটি মার্কিন ডলার।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস— জুলাই ও আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৯০ কোটি ডলার। গত বছর একই সময় এসেছিল ৪১৩ কোটি ডলার। এর মানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৭৭ কোটি ডলার যা ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ।
পড়ুন: একটি ভালো নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরবে: অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বিপিএম৬ মানদণ্ড অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বেড়ে ৩ হাজার ১০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর আগে এটি ২ হাজার ৬০০ কোটির বেশি ছিল।
গেল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবাহ এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ হাজার ৩৩ কোটি মার্কিন ডলার।
৯৪ দিন আগে
ভরসা রেমিট্যান্সের ওপর, ভবিষ্যৎ নিশ্চিত কতখানি?
দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধি, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, আমদানি ব্যয় মেটানোর অনেকটাই রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরশীল। বিগত ছয় মাসে রেমিট্যান্সের পালে সুবাতাস বইছে, কিন্তু রেমিট্যান্স নির্ভরতার ভবিষ্যৎ কতটা নিশ্চিত—এমন প্রশ্ন অর্থনীতিবিদ ও অভিবাসন সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি, অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে আড়াই বিলিয়ন ডলার। চলতি বছর মার্চে দেশের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে ৩ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রতিটি হিসাবে বিগত সময়ের তুলনায় এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
রেমিট্যান্সের ওপর দিন দিন ভরসা বাড়লেও আগামীতে এ খাত থেকে অর্থনীতিতে কতটা সহায়তা মিলবে, বিশ্ব বাজারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সে কথা হলফ করে বলা কঠিন।
বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, দেশের বাইরে প্রায় দেড় কোটি প্রবাসীর বাস, যাদের মধ্যে নিয়মিত রেমিট্যান্স পাঠান ৬০-৬৫ লাখের মতো প্রবাসী। প্রবাসীদের পাঠানো এ রেমিট্যান্সের বড় অর্থ আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। এক মধ্যপ্রাচ্যেই ৩৪ শতাংশ প্রবাসী থাকেন যাদের বেশিরভাগ কাজ করেন বিভিন্ন খাতে শ্রমিক হিসাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স হালনাগাদ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কুয়েত ও কাতারের মতো দেশ থেকে বড় সংখ্যক রেমিট্যান্স আসে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে যারা বিদেশে কাজের সন্ধানে পাড়ি জমিয়েছেন, তাদের ৭০ শতাংশের বেশির গন্তব্য সৌদি আরব।
অন্যান্য দেশে কেন প্রবাসীদের চাপ কমছে—এমন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আপতত সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিচ্ছে না যেখান থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে। ওমানেও বন্ধ শ্রমবাজার। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্য সবচেয়ে বেশি শ্রমিক যেত মালয়েশিয়া। গত বছর থেকে সেখানেও শ্রমিক পাঠানো একেবারেই বন্ধ। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালি শ্রমিকদের বড় গন্তব্য, অথচ বৈধ পথে দেশটিতে পাড়ি জমানো দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশেও সুবিধা করতে পারছেন না বাংলাদেশি শ্রমিকরা। অনেকেই দেশে ফিরে আসছেন কাজ না পেয়ে।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ের ২৭ দিনে রেমিট্যান্স ২০০ কোটি ডলার ছাড়াল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনোমিকস স্টাডি সেন্টারের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রকৃত উৎসের চিত্র।
‘দ্য ইকোনোমিক সিগনিফিকেন্স অব রেমিট্যান্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে পাঠানো রেমিট্যান্সের সবচেয়ে বড় মাধ্যম বিদেশে কর্মরত শ্রমিক বা যারা ছোট খাটো চাকরি করেন এমন মানুষ।
‘ব্লু-কলার’ ট্যাগধারী নিম্ন আয়ের এসব শ্রমিকের ঘামে ভেজা অর্থ দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করলেও মানবেতর হয়ে পড়েছে তাদের জীবন। বিদেশে কাজ করে নিজের অবস্থা উন্নয়নের যে পথ এতদিন সুগম ছিল, ধীরে ধীরে তা কঠিন হয়ে উঠছে।
বিএমইটির তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে যেখানে ১৩ লাখের মতো মানুষ কাজের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে, সেই সংখ্যা ৩ লাখ কমে ২০২৪ সালে নেমেছে ১০ লাখে। ২০২৩ সালে যারা বিদেশে গিয়েছিলেন তাদের অনেকে আবার ফিরে এসেছেন কাজ না পেয়ে। প্রতি বছর কত সংখ্যক শ্রমিক আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরে আসছেন, তার কোনো সঠিক হিসাব নেই সংস্থাটির কাছে।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, সবশেষ ২০২৪ সালে ৮০ হাজারের ওপরে শ্রমিক আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরেছেন। ১০ বছর আগেও দেশে ফিরে আসার এ সংখ্যা ছিল ৫০ হাজারের কিছু বেশি। যারা দেশে ফিরে আসছেন তাদের অনেকেই সহায়সম্বল বিক্রি করে, অনেকে আবার ঋণ নিয়ে কিংবা ধারকর্জ করে বিদেশে গিয়েছিলেন কাজের সন্ধানে। কিন্তু যে কাঙ্ক্ষিত কাজের কথা বলে তাদের নেওয়া হয়েছিল, সেই কাজ না পেয়ে বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। অনেকে আবার বৈধ পথে গিয়ে ফিরে এসেছেন অবৈধ শ্রমিক হিসেবে।
যারা কোনোরকমে পেটের দায়ে দেশের বাইরে সর্বাত্মকভাবে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন তাদের বেশিরভাগই ভুগছেন হতাশায়, পড়ছেন অপমৃত্যুর কবলে।
রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) এ বছরের এক জরিপে দেখা যায়, দেশে গড় আয়ু ৭০ বছরের ওপরে হলেও প্রবাসী শ্রমিকদের গড় আয়ু ঠেকেছে মাত্র ৩৭ বছরে।
যে কাজের কথা বলে দেশ থেকে শ্রমিকদের প্রবাসে পাঠানো হয়, সিংহভাগ ক্ষেত্রে তাদের সেই কাজ দেওয়া হয় না। টিকে থাকতে কম টাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হয় প্রবাসী শ্রমিকদের। প্রবাসে যেসব বাংলাদেশি কর্মী থাকেন তাদের ৩১ শতাংশের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়, ১৬ শতাংশ মারা যান কোনো না কোনো দুর্ঘটনায় এবং ২৮ শতাংশের ভাগ্যে জোটে স্বাভাবিক মৃত্যু। তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হচ্ছে, প্রবাসের হতাশ জীবনের ভার বইতে না পেরে ১৫ শতাংশ কর্মী আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
যারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখেন, তাদের ভাগ্য এমন নির্মম হলে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে রামরুর পরিচালক অভিবাসন বিষয়ক গবেষক মেরিনা সুলতানা বলেন, ‘প্রবাসী কর্মীদের কেবল টাকার মেশিন মনে করা হয়। তারা টাকা পাঠাচ্ছে, রিজার্ভ বাড়ছে। কিন্তু যারা টাকা পাঠাচ্ছে তাদের নিশ্চিত ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নীতি নির্ধারকদের বরাবরই অবহেলা। অন্যান্য দেশ যেখানে নিজ দেশ থেকে প্রেরিত শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার, সেখানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এতে করে একটু একটু করে বিদেশে যাওয়ার আগ্রহ হারাচ্ছে মানুষ। এতে চাপ পড়ছে দেশের কর্মসংস্থানে; বাড়ছে বেকারত্ব। সর্বোপরি প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে।’
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক বিদেশে পাঠাতে প্রায় ৩ হাজারের মতো এজেন্সি রয়েছে। এসব এজেন্সির বিরুদ্ধে বহুকাল ধরে উঠছে নানা ধরনের অভিযোগ। কয়েকটি এজেন্সি শাস্তির মুখোমুখি হলেও আসেনি কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন। রাজনৈতিক প্রভাবে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি নিজেদের আলাদা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে।
রিক্রুটিং এজেন্সির দুর্নীতির চিত্র ফুটে উঠেছে এ বছর এপ্রিলে হাইকোর্টে জমা দেয়া প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে। তাতে বলা হয়েছে, গত বছর ১৭ হাজার ৭৭৭ শ্রমিক মালয়েশিয়া যেতে না পারার দায় একান্তই এসব এজেন্সির। একদিকে তারা মালয়েশিয়া কর্মী পাঠাতে পারেনি, অন্যদিকে সরকার-নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার পরিবর্তে গমনেচ্ছু শ্রমিকদের থেকে আদায় করেছে অতিরিক্ত অর্থ।
এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের মে মাসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়া যেতে ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা সরকার-নির্ধারিত ফি হলেও গমনেচ্ছুদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা করে আদায় করেছে এসব এজেন্সি। বিভিন্ন পর্যায়ে ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৩টি এজেন্সির তালিকা করেছে দুদক, যারা হাজার কোটি টাকার ওপরে আত্মসাৎ করেছে প্রবাস গমনেচ্ছু কর্মীদের থেকে।
আরও পড়ুন: প্রবাসীদের স্বীকৃতি ও প্রণোদনার পর রেমিট্যান্স প্রবাহে রেকর্ড
প্রবাসে শ্রমিক পাঠানোর নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে রেমিট্যান্সের প্রসঙ্গ টেনে মেরিনা বলেন, ‘যতদিন না এথিকাল রিক্রুটিং নিশ্চিত করা যাবে ততদিন পর্যন্ত রেমিট্যান্সকে অর্থনীতির একটি স্থায়ী মজবুত ভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না। দেশে এত এত এজেন্সি, তারা কেন বারবার ব্যর্থ হচ্ছে, কেন দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছে—এসব সমস্যার সমাধান না করলে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ হঠাৎ করে মুখ থুবড়ে পড়বে।’
অদক্ষ শ্রমিক পাঠানো এবং রেমিট্যান্সের বাজারকে বিস্তৃত না করা আগামীর জন্য বিপজ্জনক উল্লেখ করে মেরিনা বলেন, ‘নেপাল-শ্রীলঙ্কার মতো দেশ বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠাচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশে এত এত ট্রেনিং সেন্টার থাকার পরও শ্রমিকদের কেন দক্ষ করে গড়ে তোলা যাচ্ছে না, সেটি বড় প্রশ্ন। চাইলেই হংকং-সিঙ্গাপুরের মতো দেশে নারী শ্রমিক পাঠানো যায়, বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য ভালো বাজার এটি, কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক অদক্ষ শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীলতা এখন ভালো রেমিট্যান্স এনে দিলেও আগামীতে তা কতদিন বহাল থাকবে সেটি অনিশ্চিত।’
অভিবাসন বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যে দক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আহরণের প্রাণকেন্দ্র সৌদি আরবে ২০৩৪ ফিফা বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে যেসব কর্মী নেওয়া হচ্ছে, তাদের জন্য দক্ষতার মাপকাঠি ঠিক করে দিচ্ছে দেশটি। একই অবস্থা অন্যান্য দেশেও।
এ অবস্থায় রেকর্ড রেমিট্যান্স নিয়ে উদযাপনের পাশাপাশি রেমিট্যান্সের মূল উৎস প্রবাসী কর্মীদের ব্যাপারে কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনই বলে মত খাত সংশ্লিষ্টদের।
১২৪ দিন আগে
প্রবাসীদের স্বীকৃতি ও প্রণোদনার পর রেমিট্যান্স প্রবাহে রেকর্ড
প্রবাসীদের জন্য আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ব্যবস্থা চালু, নিয়ম-কানুন সহজীকরণ ও নগদ প্রণোদনা বাড়ানোর মতো পদক্ষেপের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ লক্ষণীয়ভাবে বাড়তে শুরু করেছে।
সদ্যসমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের কাছ থেকে রেকর্ড ৩০ হাজার ৩২ কোটি মার্কিন ডলার (৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে যেখানে রেমিট্যান্স ছিল ২ হাজার ৩৯০ কোটি ডলার (২৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন)।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে প্রকাশিত মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিপত্র অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশে সর্বোচ্চ একক মাসে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে রেমিট্যান্স প্রবাহের সর্বোচ্চ মাসিক রেকর্ড।
এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পেছনে সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ রয়েছে, যা প্রবাসীদের বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করা হয়েছে বলে নীতিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
নীতিপত্রে জানানো হয়েছে, রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করেছে সরকার, একই সঙ্গে বিধিবিধান সহজ করেছে এবং প্রবাসীদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা চালু করেছে।
এ ছাড়া, প্রবাসীদের সম্মাননা ও যাত্রার অভিজ্ঞতা আরও আরামদায়ক করতে গত বছরের নভেম্বরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চালু করা হয় ‘প্রবাসী লাউঞ্জ’।
এই বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন স্থানে রয়েছে আরামদায়ক বসার জায়গা, ভর্তুকিযুক্ত খাবার, নামাজের জায়গা ও শিশু পরিচর্যা কক্ষ—যা প্রবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলতা ও শ্রদ্ধার প্রকাশ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয়ে রেকর্ড
নীতিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ক্রলিং পেগ এক্সচেঞ্জ রেট ব্যবস্থা চালুর পর বৈধ ও অনানুষ্ঠানিক বাজারের বিনিময় হারে ব্যবধান অনেকটা কমে এসেছে। এর ফলে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রেমিট্যান্সপ্রবাহ আরও বেড়েছে এবং বিনিময় হার স্থিতিশীল থেকেছে।
তাছাড়া, দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি)।
এ লক্ষ্যে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করছে বিএমইটি। যার মধ্যে রয়েছে— বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এর মাধ্যমে বাজারচাহিদাসম্পন্ন দক্ষতা উন্নয়ন, সার্টিফিকেশন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
দক্ষ শ্রমবাজার সম্প্রসারণে আরও সমন্বিত উদ্যোগ নিতে বিএমইটি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল (এনএইচআরডিএফ) এবং ইন্ডাস্ট্রি কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রামের (এসআইসিআইপি) সমন্বিত উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে এসআইসিআইপি ও এসআইইপির মতো কর্মসূচির মাধ্যমে অগ্রগতি হয়েছে। সরকার দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরিতে অব্যাহতভাবে কাজ করছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বা রেকর্ড রেমিট্যান্স প্রবাহ।
শুধু ২০২৫ সালের জুন মাসেই দেশে এসেছে ২৮১ কোটি ডলার, যা আগের বছরের জুন মাসের ২৫৩ কোটি ডলারের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া, ঈদুল ফিতরের সময়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতায় চলতি বছরের মার্চ মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে।
ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রবাসীরা এখন হুন্ডির মতো অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমের চেয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলেই অর্থ পাঠাতে বেশি আগ্রহী। এটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ কমাতে এবং আমদানি ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসকারী প্রবাসী জিয়ানুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, ‘বর্তমান সরকার কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে প্রবাসীরা এখন অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন টাকা পাঠাতে।’
তিনি বলেন, ‘প্রক্রিয়াটা সহজ হয়ে গেছে এবং আমরা উৎসাহ পাচ্ছি সঠিক চ্যানেলে টাকা পাঠাতে। যদি প্রক্রিয়াটা এমন সহজ থাকে আর বিনিময় হারও আকর্ষণীয় হয়, তাহলে হুন্ডির মতো অবৈধ পথে টাকা পাঠানোর কোনো প্রয়োজনই পড়ে না।’
তবে তিনি আরও বলেন, ‘আগের সরকারের সময় হুন্ডি সিন্ডিকেটের যে দৌরাত্ম্য ছিল, তা এখন নেই বলেই অনেকটা বাধ্য হয়েই সবাই সঠিক পথে টাকা পাঠাচ্ছে।’
জিয়ানুলের ভাষ্যে, ‘সরকারকে হুন্ডি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এই কঠোর অবস্থান বজায় রাখতে হবে। সেই সঙ্গে প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে হবে এবং বিমানবন্দরে ভালো সেবা দিতে হবে। যদি প্রবাসীরা মনে করে তারা দেশের জন্য সম্মানিত ব্যক্তি, তাহলে তারা নিঃসন্দেহে আরও বেশি টাকা বৈধ পথে পাঠাবে।’
আরও পড়ুন: মে মাসের ১৭ দিনে দেশে ১৬১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে
২০২৪–২৫ অর্থবছরে প্রতিমাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ধারাবাহিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী। এরমধ্যে জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার (রেকর্ড), এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার, মে-তে ২৯৭ কোটি ডলার ও জুনে ২৮১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
১৪৫ দিন আগে
২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয়ে রেকর্ড
জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত বছরের আগস্টে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আত্মপ্রকাশ করে দেশ গঠনের ভার নেয়। সেই সময় থেকেই এই সরকারের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা, যার প্রভাব দেখা যায় প্রতি মাসের প্রবাসী আয়ে। প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিকতা প্রতি মাসেই লক্ষ করা গেছে। আর এর মধ্য দিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহের নতুন রেকর্ড গড়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছর।
সদ্য বিদায় নেওয়া অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে এ বছরের জুন মাস পর্যন্ত রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন মোট ২৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, এক অর্থবছরের ব্যবধানে প্রেরিত রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার।
বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাস অর্থাৎ জুনে মোট ২ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা গতবছর একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালে জুন মাসে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: রেমিট্যান্সে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ, মার্চে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার
অর্থবছরের হিসাবে রেকর্ড রেমিট্যান্সের পাশাপাশি মাসিক হিসাবে চলতি বছর মার্চে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বিদায়ী অর্থবছরের মার্চে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রেমিট্যান্স এসেছে, যা শুধু এ অর্থবছরের জন্য নয়, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
ব্যাংক এবং আর্থিক খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, হুন্ডির বদলে প্রবাসীদের মধ্যে বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর প্রবণতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এজন্যই রেমিট্যান্সের প্রবাহ উর্ধ্বমুখী।
রেমিট্যান্সের ইতিবাচক প্রবাহ বজায় থাকলে রিজার্ভের ওপরে চাপ কমবে এবং আমদানি ব্যয় মেটানো সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
১৫৬ দিন আগে
মে মাসের ১৭ দিনে দেশে ১৬১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে
চলতি মে মাসের ১৭ দিনে দেশে ১৬১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এটি প্রবাসী কর্মীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রার একটি শক্তিশালী প্রবাহকে তুলে ধরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশোধিত হালনাগাদ তথ্য থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহের এমন চিত্র উঠে এসেছে।
এতে দেখা যায়, এই সময়ের মধ্যে গড়ে প্রতিদিন ৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা ২০২৪ সালের মে মাসে রেকর্ড করা দৈনিক গড়ে ৭ কোটি ৫১ লাখ ডলারের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি।
রেমিট্যান্সের উৎসের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে, যেখানে দুটি বিশেষায়িত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন (কৃষি) ব্যাংকের মাধ্যমে ১৫ কোটি ৯৯ লাখ ডলার পাঠানো হয়েছে।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে মোট ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩১ কোটি ৩০ ডলার। সমস্ত ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ২৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার আহরণ করেছে।
আরও পড়ুন: মে মাসের ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৯২ কোটি ২০ লাখ ডলার
২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ১৭ মে পর্যন্ত চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে বাংলাদেশ রেকর্ড ২ হাজার ৬১৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। এই সংখ্যাটি পুরো ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রাপ্ত মোট ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলারকে ছাড়িয়ে গেছে।
প্রবাসীরা ইতোমধ্যেই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিলের মধ্যে ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা আগের পূর্ণ অর্থবছরের পরিসংখ্যানকে ছাড়িয়ে গেছে। বিগত দশ মাসের মাসিক প্রবাহ ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির প্রতিফলন দেখা গেছে।
এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ডলার, জুলাইতে ১৯১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারাবাহিক বৃদ্ধি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করে চলেছে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
১৯৮ দিন আগে
এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে দেশ
গত এপ্রিলে দেশের রেমিট্যান্স আহরণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। প্রবাসীরা মাসটিতে ২৭৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে শুধুমাত্র ৩০ এপ্রিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেশে এসেছে। এ মাসের ১ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের শেষে ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাংলাদেশে মোট দুই হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৯১১ কোটি ডলার। এতে দেখা যায় এই অর্থবছরের এই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরও রেমিট্যান্স আহরণের এই শক্তিশালী প্রবণতা দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
গত মার্চে রেমিট্যান্স সর্বকালের সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার দেশে এসেছিল।
চলতি অর্থবছরে প্রতি মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এই রেকর্ডটি ব্যাংকিং চ্যানেলের প্রতি প্রবাসীদের আস্থা ফেরার ইঙ্গিত দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রমতে, ঊর্ধ্বমুখী এই প্রবণতার পেছনে সরকারি প্রণোদনা, অবৈধ পথে অর্থ পাঠানোর (হুন্ডি) বিরুদ্ধে কঠোর আইন ও ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর সুবিধা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আরও পড়ুন: এপ্রিলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৩৬.৬ শতাংশ
একই সঙ্গে প্রতি মার্কিন ডলারে স্থিতিশীল বিনিময় মূল্য ১২২ টাকা এবং ইতিবাচক রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও উৎসাহব্যঞ্জক ধারায় অবদান রেখেছে।
২০২২ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৬ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও বিপুল ডলার বিক্রির ফলে ২০২৪ সালে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৩৯ কোটি ডলারে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ডলার বিক্রির পরিবর্তে বাজার থেকে কেনার দিকে ঝুঁকেছে বাংলাদেশ ব্যাংক , যা রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, রেমিট্যান্স প্রবাহের চলমান বৃদ্ধি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় অবদান রাখবে এবং দেশের বিদেশী ঋণের উপর নির্ভরতা কমাবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের রেমিট্যান্সের পরিসংখ্যান-
এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, অক্টোবেরে ২৩৯ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ডলার, জুলাইতে ১৯১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে দেশ।
২১৪ দিন আগে
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ: বাণিজ্য উপদেষ্টা
সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের আর্থসামাজিক বিকাশে ভূমিকা রাখছে।’
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বাণিজ্য উপদেষ্টা এ সব কথা বলেন। বৈঠকে তারা বাণিজ্য উপদেষ্টা সম্পর্কোন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, ভিসা চালু, বাণিজ্য-বিনিয়োগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশেও বর্তমানে বিনিয়োগ পরিবেশ ভালো। সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ও সে দেশের ব্যবসায়ীরা এ দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারে।’
এসময় তিনি বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা সুবিধা পুনরায় চালু করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ নেওয়ার আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছে।’
বাংলাদেশ থেকে এখনও দক্ষ শ্রমিক নেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ দেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সেমি গভর্নমেন্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।
২১৮ দিন আগে
রেমিট্যান্সে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ, মার্চে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার
চলতি বছর মার্চে রেমিট্যান্সে বিগত সব রেকর্ড ভাঙবে বাংলাদেশ এমন ধারণা আগেই করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক; হলোও তাই। পুরো মার্চজুড়ে ৩.২৯ বিলিয়ন রেমিট্যান্স এসেছে যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খানের দেয়া তথ্যানুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছর মার্চে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে ৬৪.৭০ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ১.৯৯ বিলিয়ন ডলার।
মার্চের আগে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার, যা এতদিন ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ২.৬৪ বিলিয়ন রেমিট্যান্স এসেছিল।
আরও পড়ুন: মার্চের ১৯ দিনে ২২৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স, নতুন রেকর্ডের সম্ভাবনা
চলতি বছর প্রতি মাসে রেমিট্যান্সের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, ফেব্রুয়ারির আগে জানুয়ারিতে আসা মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২.১৮ বিলিয়ন ডলার।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রবাসীরা এবার প্রচুর পরিমাণে অর্থ বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। শুধু ২৭-৩১ মার্চ এ সময়ের মধ্যেই রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪৫ মিলিয়ন ডলার। বৈধ চ্যানেলে অর্থ প্রেরণের কারণেই এবার রেমিট্যান্সে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ।
২৪২ দিন আগে
মার্চের ১৯ দিনে ২২৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স, নতুন রেকর্ডের সম্ভাবনা
মার্চ মাসের প্রথম ১৯ দিনে দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় এসেছে ২২৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। যে হারে রেমিট্যান্স আসছে, তাতে করে মার্চে রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা ব্যাপক রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এই রেমিট্যান্সের প্রবাহ অনেক বেশি।
গত বছর মার্চের প্রথম ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৬ কোটি ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে অনেকাংশে।আরও পড়ুন: ১৫ দিনে ১৩১ কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এলো দেশে
ইতোমধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জুলাই থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্সের প্রবাহ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৭৫ কোটি ডলার, যা গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল এক হাজার ৬৩৪ কোটি ডলার।
বর্তমান অর্থবছরে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ।
এর আগে মার্চের প্রথম ১৫ দিনে দেশে ১৬৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। সে হিসাবে গত চার দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৯ কোটি ডলার। শুধু ১৯ মার্চই মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ২০ লাখ ডলার।
রেমিট্যান্সের ধারা এভাবে অব্যাহত থাকলে মাস শেষে মোট রেমিট্যান্স ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে করে রেমিট্যান্স অর্জনে নতুন মাইলফলক অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
দেশে মাসিক হিসাবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চে আছে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অর্জিত ২৫৪ কোটি ডলার। যে হারে রেমিট্যান্স আসছে তাতে করে ঈদকে সামনে রেখে মার্চে ৩০০ কোটি ডলার।
২৫৯ দিন আগে
১৫ দিনে ১৩১ কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এলো দেশে
চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশে এসেছে ১৩১ কোটি ২২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এতে করে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ৭৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
রবিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশীয় মুদ্রার হিসাবে (১ ডলার= ১২২ টাকা) ১৬ হাজার ৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা রেমিট্যান্স এসেছে এই অর্ধেক মাসে।
আরও পড়ুন: চলতি বছর রেকর্ড রেমিট্যান্স পাবে বাংলাদেশ: গভর্নর
শুধু রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ লাখ ডলার।
১ ফেব্রুয়ারি রেমিট্যান্স এসেছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। ২ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে এসেছে ৬৫ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার ডলার রে
২৯১ দিন আগে