আপিল বিভাগ
অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও গঠন প্রক্রিয়া বৈধ: আপিল বিভাগ
সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সের আলোকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণ ও এই সরকার গঠনের প্রক্রিয়া বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রিটকারীর লিভ টু আপিল খারিজ করে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল (বুধবার) অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স এবং মতামত প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল সংক্রান্ত বিষয়ে আদেশের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
এদিন লিভ টু আপিলের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ। ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হওয়া লেখক ফিরোজ আহমেদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চান। এরপর আপিল বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় এবং উপদেষ্টারা শপথ নেন।
পরবর্তী সময়ে সরকার গঠনের এ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের ডিসেম্বরে আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, যে বিষয়টি (অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা) সংবিধানে নেই, সে বিষয়ে রেফারেন্স চাওয়া যায় না। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রেফারেন্সের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রুলস অনুসরণ করতে হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে তা করা হয়নি।
ওই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন। পরে হাইকোর্টের ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন এ আইনজীবী।
রিট খারিজের আদেশে হাইকোর্ট তখন বলেছিলেন, এক ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের উপদেশমূলক মতামত গ্রহণ করেছেন এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছেন। তাই এটি আইনি দলিল ও জনগণের ইচ্ছার সমর্থনপুষ্ট।
আদালত আরও উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ এবং আগামী বহু বছর জনগণ তা স্মরণে রাখবে। দেশের জনগণ বৈধতা দেওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে ‘সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার’-এর কথা বলা আছে। এতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির কাছে যদি মনে হয় জনগুরুত্বপূর্ণ কোনো আইনি প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে বা হতে পারে এবং এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়া প্রয়োজন, তাহলে তিনি প্রশ্নটি আপিল বিভাগের কাছে পাঠাতে পারবেন। আপিল বিভাগ উপযুক্ত শুনানির পর রাষ্ট্রপতিকে মতামত জানাতে পারবেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এ সরকার গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথের আগে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান।
রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্স (১/২৪) অনুযায়ী তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ ওই বছরের ৮ আগস্ট মতামত দেন।
সর্বোচ্চ আদালতের মতামতে বলা হয়, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের নিয়োগ দিতে পারবেন এবং তাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন।
১ দিন আগে
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই থাকছে, ৯ সেপ্টেম্বরই ডাকসু নির্বাচন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে আর কোনো বাধা রইল না।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে রায়ে বলা হয়েছে।
এদিন আদালতে ঢাবির পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির, রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং ডাকসুর জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদের পক্ষে ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী শুনানি করেন।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম এ রিট দায়ের করেন।
রিটে অভিযোগ করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে এস এম ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন। এরপরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্যানেলে প্রার্থী হলেন— এমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন ভন্ডুলের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার
এরপর গেল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে কোন প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাই ও চূড়ান্ত করা হচ্ছে এবং ভোটের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কী— এ বিষয়েও জানতে চান চাওয়া হয়।
তবে তার এক ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের আদালত ওই স্থগিতাদেশ দেন।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় পুনরায় মামলাটির বিষয়ে গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন নিয়ে চেম্বার জজ আদালতে গেলে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শুনানির জন্য মামলার দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল।
জানা গেছে, নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় এবং হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন: ‘৩৬ জুলাইয়ের’ সঙ্গে মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ইশতেহার ঘোষণা
চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ২১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৯২ দিন আগে
৮৫ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের রায় প্রকাশ
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। রায়ে আবেদনকারী এসব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে ২০০৭ সালে বরখাস্তের পর থেকে প্রাপ্য বকেয়া বেতনভাতা জ্যেষ্ঠতাসহ ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া এসব কর্মকর্তার বরখাস্ত থাকাকালীন সময়কে বিশেষ ছুটি হিসেবে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির দেওয়া এই রায়ের ১৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেছেন।
এর আগে ২০২২ সালে আবেদনকারীদের আপিল খারিজ করে দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা পৃথক আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের রায় দেন। আজ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
আদালতে আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। চার দলীয় জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের তৎকালীন জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া এই ৮৫ জন কর্মকর্তাকে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-৯ নির্বাচনী আসন পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর পুনর্বহাল করতে প্রায় এক যুগ আগে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করেন আপিল বিভাগ। ফলে তাদের চাকরিতে ফেরত আটকে যায়। পরে ২০২৩ সালে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য তারা আবেদন করেন। সেই আবেদনের ওপর ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানি হয়। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি আবেদনকারীদের আবেদন মঞ্জুর করে এবং ২০২২ সালে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বাতিল করে তাদেরকে চাকরিতে পূর্ণবহালের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
১০৮ দিন আগে
নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির আগের আদেশ স্থগিত
অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি অনুমোদন ও গ্রহণ করে ২০১৮ সালের আপিল বিভাগের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে যে আদেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ, সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন সর্ব্বোচ আদালত।
রবিবার (২৯ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
এই আদেশের ফলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে হাইকোর্টে যে রিট শুনানি চলছে, তা নিষ্পত্তি করতে আর কোনো বাধা থাকলো না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে, গত ২৬ জুন নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধির বহুল আলোচিত গেজেট গ্রহণ করে ২০১৮ সালে দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির আপিল বিভাগ যে আদেশ দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
আদালতে সেদিন রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
রিভিউ শুনানির পর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, আজ শুনানিকালে বলেছি যে বিচার বিভাগকে ‘অ্যাসল্ট করে’ এই শৃঙ্খলাবিধি গ্রহণ করা হয়েছিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে। কারণ, তার আগে নয়জন বিচারপতি এ বিষয়ে ভিন্ন আদেশ দিয়েছিলেন। এটি বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তৎকালীন সরকার বাধ্য করেছিল নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের গেজেট-সংক্রান্ত আদেশ দিতে। এটি দ্রুত রিভিউ করা প্রয়োজন বলেই আদালতের অনুমতি নিয়ে রিভিউটি করা হয়।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।
আরও পড়ুন: চাকরির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে আজও বিক্ষোভ
১২ দফা নির্দেশনার মধ্যে ছিল
১. সংবিধানের ১৫২ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় সব বিভাগের কাজ সার্ভিস অব রিপাবলিকের ভেতরে পড়বে। তবে বিচার বিভাগের কাজ ও অবকাঠামোর সঙ্গে প্রজাতন্ত্রের সিভিল সার্ভিসের অনেক ভিন্নতা রয়েছে। বিচার বিভাগকে অন্যান্য সিভিল সার্ভিসের সঙ্গে একত্রিত করা যাবে না।
২. বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করা এবং নির্বাহী বিভাগের ম্যাজিস্ট্রেটরা বিচারিক কাজ করতে পারবেন না।
৩. সিভিল সার্ভিস অর্ডার ১৯৮০ অনুযায়ী সব ম্যাজিস্ট্রেটকে পিএসসির অধীনে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে একসঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হয়। একসঙ্গে নিয়োগ দেওয়া সংবিধান পরিপন্থি।
৪. এই রায় পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা এবং কমিশন গঠন করতে হবে।
৫. সংবিধানের ১১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি জুডিশিয়ারির সবার চাকরির বিধিমালা (নিয়োগ, পদায়ন, বদলি পদোন্নতি ও ছুটিসহ অন্যান্য) প্রণয়ন করবেন।
৬. রাষ্ট্রপতি জুডিশিয়াল সার্ভিস পে-কমিশন বিধিমালা প্রণয়ন করবে।
৭. সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের থাকবে।
৮. বিচার বিভাগ জাতীয় সংসদ বা নির্বাহী বিভাগের অধীনে থাকবে না এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ সব বিচারক স্বাধীনভাবে কাজ করবেন।
৯. জুডিশিয়ারির (নিম্ন আদালত) বার্ষিক বাজেট প্রণয়নের ওপর নির্বাহী বিভাগের কোনো হাত থাকবে না। এই বাজেট সুপ্রিম কোর্ট প্রণয়ন এবং বরাদ্দ করবে।
১০. জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যরা প্রশাসনিক আদালতের আওতাভুক্ত থাকবেন।
১১. এই রায় অনুযায়ী বিচার বিভাগ পৃথককরণের জন্য সংবিধানে কোনো সংশোধন করার প্রয়োজন নেই। তবে পৃথককরণ আরও অর্থবহ করতে যদি সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তবে তা করা যাবে।
১২. জুডিশিয়াল পে-কমিশন জুডিশিয়ারির সদস্যদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে যতদিন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ না করবে, ততদিন পর্যন্ত বর্তমান অবকাঠামো অনুযায়ী তার সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।
২০০৫ সালে এই রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
১৫৯ দিন আগে
এক যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াত
দীর্ঘ এক যুগ পর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। রবিবার (১ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।
রায় ঘোষণার পর জামায়াতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান। রায় ঘোষণার জন্য জামায়াতের নিবন্ধন মামলাটি আজকের কার্যতালিকার শীর্ষে ছিল।
আদালতে জামায়াতের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন, ব্যরিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম।
আরও পড়ুন: আমরা ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় ছিলাম: জামায়াত আমির
এর আগে গত ১৪ মে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক সংক্রান্ত মামলার আপিলের শুনানি শেষ করে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন (১ জুন) দিন ধার্য করেছিল আদালত।
গত বছরের ২২ অক্টোবর খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করেছিল আপিল বিভাগ। পরে ১২ মার্চ রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল শুনানি শুরু হয়।
উল্লেখ্য, এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
১৮৭ দিন আগে
ইশরাককে শপথ পড়ানো হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত ইসির: আপিল বিভাগ
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ তাকে মেয়র ঘোষণা গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি করে এই পর্যবেক্ষণ দেন।
এর আগে, বুধবার (২৮ মে) ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট জারির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বক্তব্য শোনার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন আদালত।
ইশরাককে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানির কথাও বলা হয়। সে অনুযায়ী আজ শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ এই সিদ্ধান্ত দেন।
আদালতে ইশরাকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন।
আরও পড়ুন: ইশরাকের মেয়র ঘোষণার গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিতের বিষয়ে আপিল শুনানি বুধবার
এর আগে গত ২২ মে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পরে গতকাল সোমবার হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করা হয়।
আবেদনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও ইসির গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে এই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি কোন সিদ্ধান্ত না দিয়ে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
১৮৯ দিন আগে
নগদে প্রশাসক ও নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন অবৈধ
মোবাইল আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদের প্রশাসক নিয়োগ ও নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
৭ মে সংশ্লিষ্ট একটি আবেদনের শুনানি শেষে এই রায় দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক।
সোমবার (১২ মে) এই আদেশের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী।
আদালতে রায়ে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক বা পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে নগদদের ওপর অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ আরোপের যে কোনো প্রচেষ্টা আইন লঙ্ঘনের শামিল। ফলে, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আওতায় পরিচালিত কোম্পানিটি এখন থেকে শুধুমাত্র তাদের বৈধ মালিকানার অধীনে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রণীত নীতিমালার আলোকে পরিচালিত হবে। এর কার্যক্রম পরিচালনায় আর কোনো আইনি বাধা নেই।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে, অধ্যাদেশ জারি
এর আগে, ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি রিট আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এই পদক্ষেপকে অবৈধ ও প্রতিষ্ঠানের বিকাশের প্রতি বাধা বলে দাবি করে নগদ। এ কারণে বিষয়টি যথায়থ আইনি প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি চাইছিল প্রতিষ্ঠানটি।
নগদের মালিকপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ জামির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘এই রায় দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ রায়ে প্রমাণ হয়েছে, কোনো কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক বৈধ মালিকদের তাদের প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ থেকে বঞ্চিত করতে পারে না।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনের শাসন ও সুশাসনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে একটি সাহসী ও ন্যায়সঙ্গত অবস্থান নিয়েছের বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
২০৬ দিন আগে
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আপিল বিভাগের নতুন দুই বিচারপতির সাক্ষাৎ
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন নবনিযুক্ত বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এই দুই বিচারপতি। এ সময় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
এর আগে, গত ২৪ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগের এই দুই বিচারপতিকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।
সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের সুপারিশে প্রধান বিচারপতির পরামর্শে তাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
নিয়োগের পরদিন (২৫ মার্চ) প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ গ্রহণ করেন বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগে দুই বিচারপতির নিয়োগ
২৪৪ দিন আগে
আপিল বিভাগে দুই বিচারপতির নিয়োগ
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ পেয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারপতি। সোমবার (২৪ মার্চ) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন— বিচারপতি এ, কে, এম, আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের শপথ পড়ানো হবে।
সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এই শপথ পাঠ করাবেন। এর মধ্য দিয়ে তাদের নিয়োগ কার্যকর হবে।
রাষ্ট্রপতি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫-এর দফা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক বিচারপতি এ, কে, এম, আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুবকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, আপিল বিভাগের বিচারক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বিচারপতি খিজির হায়াতকে অপসারণ
বিচারপতি আসাদুজ্জামান ২০০১ সালের ২৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হন। বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট আসাদুজ্জামানকে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক নিয়োগ করা হয়। ২০০৫ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হন। তিনি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়সহ বেশ কিছু আলোচিত মামলায় রায় দিয়েছেন।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ১৯৯৪ সালের ৯ এপ্রিল এবং ২০০২ সালের ১৫ মে যথাক্রমে হাইকোর্ট বিভাগ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আইনজীবী নিযুক্ত হন। বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৬ সালের ২৩ আগস্ট একই বিভাগের স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তিনি।
তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে আনা কয়েকটি বিষয়কে অবৈধ ঘোষণা করে রায় প্রদানসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলায় রায় দিয়েছেন।
২৫৫ দিন আগে
সাবেক বিচারপতি মানিকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
গুলশান থানার একটি হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৫ মার্চ) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের পরিদর্শক আমিনুল ইসলামের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত সাবেক বিচারপতি মানিকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তবে, এ সময় আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
আরও পড়ুন: সাবেক বিচারপতি খায়রুল হকের বিচার চাইলেন ঢাকা জেলা যুবদল সভাপতি মুরাদ
শুনানিতে ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘এই আসামি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনগণ তাকে আটকে দেয়। তিনি কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, যারা টাকার বিনিময়ে তাকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করবে বলেছিল, তারা টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। তাকে হাফপ্যান্ট পড়া ও কলাপাতার ওপর শুয়ে থাকা অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি বিভিন্ন সময়ে টকশোতে গিয়ে মারামারি করতেন। ফ্যাসিস্টের পক্ষে সাফাই গাইতেন। আন্দোলনের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’ শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই গুলশান থানাধীন প্রগতি স্বরণী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শিক্ষার্থী মো. আবু যর শেখ।
পরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ জুলাই মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে গত বছরের ১৬ নভেম্বর গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা মামলায় জামিন পেলেও কারামুক্তি মিলছে না সাবেক বিচারপতি মানিকের
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৪ আগস্ট সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতে পালানোর সময় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে একাধিক হত্যা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
২৭৪ দিন আগে