মো. শাহরিয়ার আলম
ঢাকা-ওয়াশিংটন বিস্তৃত সম্পর্ক মতভেদ নিয়ে অবাধে বিতর্ক করার সুযোগ দিয়েছে: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব গভীর ও বিস্তৃত হয়েছে, যা তাদেরকে মতভেদ নিয়ে খোলামেলা বিতর্ক করার সুযোগ দিয়েছে।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যকার এই ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততা তাদেরকে পরিপূরক ও প্রান্তিককরণভাবে পারস্পরিক লাভবান হওয়ার জন্য ঘনিষ্ঠভাবে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আমরা দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বন্ধুদের কাছে অংশীদারিত্বের অনুসন্ধান করেছি এবং (ভবিষ্যতেও) চালিয়ে যাব।’
প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততাকে সংকীর্ণ প্রিজম থেকে না দেখে, বরং উন্নয়নের জন্য তাদের বাস্তবসম্মত অনুসন্ধান হিসেবে দেখা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও দু’দেশের মানুষের মেলবন্ধনের স্মারক হিসেবে 'রুটস অব ফ্রেন্ডশিপ: ৫০ ইয়ারস অব ইউএস-বাংলাদেশ রিলেশনস'- শীর্ষক এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে তিনি এ কথা বলেন।
এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড দ্য আর্টস (ইএমকে) এ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনকারীদের যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই: রাষ্ট্রদূত হাস
শাহরিয়ার বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বে আমরা একসঙ্গে কী করতে পারি তার একটি প্রকৃত উদাহরণ কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই। আমরা বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি মার্কিন সরকারের অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করি।’
তবে তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও দণ্ডিত খুনি রাশেদ চৌধুরীর দীর্ঘদিনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশে প্রত্যাবাসন গভীর অনুশোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও স্মার্ট দেশ হওয়ার আশা ও আকাঙ্খা নিয়ে মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৪ কোটির বেশি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র সফরের ঐতিহাসিক ছবি দেখে আপনারা মুগ্ধ হবেন। এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি রাষ্ট্রপ্রধান কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।’
তিনি বলেন, প্রদর্শনীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বকারী সব বাংলাদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের ঐতিহাসিক ছবি প্রদর্শিত হয়, যখন তারা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, এই ছবিগুলো সুশাসনের প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতি, বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা এবং একটি কার্যকরী গণতন্ত্রের স্তম্ভ হিসেবে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বোঝায়।
৫০ বছরের বেশি বন্ধুত্বের প্রতিনিধিত্বকারী ঐতিহাসিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘আমি সুশাসন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা অর্জনে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’
আরও পড়ুন: উন্নয়ন অংশীদারিত্বে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে ঢাকা ও দিল্লির সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা: প্রণয় ভার্মা
বিদ্যমান সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ঢাকা-সিউল উচ্চ পর্যায়ের সফর প্রয়োজন: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের ওপর জোর দিয়েছেন।
দুই দেশের মধ্যে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আনন্দ প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী আলম।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত লি জাং-কেউন বুধবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে বিদায়ী বৈঠক করেন।
তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, দক্ষ শ্রম, কানেক্টিভিটি, ইন্দো প্যাসিফিক, উচ্চ পর্যায়ের সফর, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
রাষ্ট্রদূত লি বাংলাদেশে তার মেয়াদে অর্জিত চারটি বড় মাইলফলক তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
এগুলো হলো- দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি (১ দশমিক ৫ বিলিয়ন থেকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), ওডিএ (৭০০ মিলিয়ন থেকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), ইপিএস কর্মী (প্রতিবছর ১৫০০ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত) এবং এফডিআই (২০২২ সালে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
তিনি চলমান ঢাকা-সিউল সরাসরি ফ্লাইট এবং বাংলাদেশে দুটি কোরিয়ান জায়ান্ট কোম্পানি- হুন্দাই এবং স্যামসাং-এর অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্টের উদ্বোধনের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে তার সফল মেয়াদের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান এবং তার ভবিষ্যত দায়িত্বের জন্য তার সাফল্য কামনা করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
সিউলে বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ পিপিপি প্লাটফর্ম মিটিং অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনে সহায়তার জন্য সৌদি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা শাহরিয়ারের
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সোমবার রাতে সঙ্কট-কবলিত সুদান থেকে ১৩৬ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনতে প্রাথমিকভাবে সহায়তা করায় সৌদি আরব সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাকিদের আনতে বাড়তি সময় লাগছে। আমরা বিকল্প হিসেবে জেদ্দা বা কাছাকাছি কোথাও থেকে জাহাজ ভাড়া করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি, যেন সবাইকে একবারে না হলেও দুই বা তিনবারে (অথবা একাধিক জাহাজে) জেদ্দায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়।’
আরও পড়ুন: সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে ঢাকায় পৌঁছাল ১৩৫ বাংলাদেশি
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি অনেকেরই হয়তো বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে কিন্তু আমরা আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি এবং পোর্ট সুদানে যেন খাদ্য এবং বাসস্থানের সমস্যা না হয় সেদিকে নজর রাখছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আশাকরি আমরা দ্রুত আপনাদের কষ্ট লাঘব করতে পারবো। সবাইকে সহায়তা করার অনুরোধ করছি।’
সোমবার সৌদি আরবের জেদ্দা হয়ে ঢাকায় এসেছেন ১৩৬ বাংলাদেশি।
এসময় ঢাকা বিমানবন্দরে বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বাগত জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ।
আরও পড়ুন: সংকটাপন্ন সুদান ছাড়তে পোর্ট সুদানে পৌঁছেছেন ৬৭৫ বাংলাদেশি
সৌদি আরবে অবতরণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফিরবেন সুদানে আটকা পড়া বাংলাদেশিরা: রিয়াদ দূতাবাস
ইইউ’র সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একটি বহুমাত্রিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব: ইইউ
ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাহী ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে বহুমাত্রিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
চারদিনের সফরের শেষ পর্যায়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ৫ মে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের সদর দপ্তরে ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ইউ’র ইবিএ স্কিমের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী হিসেবে বাংলাদেশের প্রশংসা করে ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উন্নীত হওয়ার এবং জিএসপি+ ছাড়ের জন্য বাংলাদেশের পক্ষে আবেদন করার ব্যাপারে ইইউ’র সমর্থন ব্যক্ত করেন।
তিনি ইইউ-বাংলাদেশ বিজনেস ক্লাইমেট ডায়ালগ এবং ইইউ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সকে ইউরোপীয় ও বাংলাদেশি ব্যবসার অর্থপূর্ণভাবে একত্রিত হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তুলে ধরেন।
বাণিজ্য কমিশনার শ্রম খাতে বাংলাদেশের জাতীয় কর্মপরিকল্পনার অভিযোজনের প্রশংসা করেন।
ইবিএ স্কিম স্বল্পোন্নত দেশ থেকে ইইউ-তে আসা সমস্ত পণ্যের (অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাদে) আমদানির জন্য শুল্ক এবং কোটা বাদ দেয়।
আরও পড়ুন: সুদান থেকে বাংলাদেশিদের স্থানান্তরে সৌদি আরব ও ইন্দোনেশিয়ার সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ: শাহরিয়ার
চারদিনের সফরের শেষ পর্যায়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ৫ মে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের সদর দপ্তরে ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বাংলাদেশ ও ইইউ অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উদযাপন করায় স্বাধীনতার পর থেকে দেশের উন্নয়নে ইইউ-এর ভূমিকাকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি ইভিপিকে অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে এবং উত্তোরণের জন্য প্রস্তুত করার জন্য সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যতে ইইউ-এর অনেক বড় ভূমিকার কথা অবহিত করেন।
বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব সহযোগিতা চুক্তির দ্রুত সম্পন্ন হওয়ার আশা প্রকাশ করেছে, যা উন্নত সম্পর্ককে সুসংহত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি প্রক্রিয়া হবে।
ইইউ পক্ষকে সরকার কর্তৃক গৃহীত জনকেন্দ্রিক নীতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল, যার মধ্যে উৎপাদন খাতে কাজের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং বজায় রাখা রয়েছে।
বাংলাদেশের শ্রম খাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের চলমান প্রচেষ্টাকে সীমিত করে এমন বাস্তবতাও জানানো হয়েছিল।
এর আগে সকালে ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টারে 'ইপিসি টকস জিওপলিটিক্স' শিরোনামের ইভেন্টে প্রতিমন্ত্রী আলম বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকা, ইইউ-বাংলাদেশ সম্পর্ক, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের প্রভাব, বৈশ্বিক শান্তি, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আরও অনেক বিষয়ে ইন্টারেক্টিভ কথোপকথন করেন।
৪ মে প্রতিমন্ত্রী ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট ক্রিস পিটার্সের সঙ্গে দেখা করেন এবং দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু-বান্ধব প্রযুক্তি এবং নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগের জন্য ইআইবি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, ইইউ এর গ্লোবাল গেটওয়ে উদ্যোগকে কাজে লাগানোর সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পশ্চিমাদের অবশ্যই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হওয়া পাক গণহত্যার কথা স্বীকার করতে হবে: শাহরিয়ার
প্রতিমন্ত্রী ইউরোপিয়ান এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিস (ইইএএস)-এর সেক্রেটারি জেনারেল স্টেফানো স্যানিনোর সঙ্গেও একটি বৈঠক করেন।
উভয় পক্ষের মধ্যে অংশীদারি সহযোগিতা চুক্তির প্রাথমিক প্রবর্তন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্যানিনো বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আলোচনার অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে-জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সংকট, ইউরোপে চাকরির বাজারের চাহিদা পূরণের জন্য বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মীর সুযোগ এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট।
বৈঠকে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ ও ইইউতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৩ মে শাহরিয়ার আলম ব্রাসেলসের মর্যাদাপূর্ণ সার্কেল রয়্যাল গাওলোইস-এ স্বাধীনতার ৫২ তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত একটি সংবর্ধনায় যোগদান করেন।
প্রতিমন্ত্রী বেলজিয়াম ও ইইউকে বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান, যা দেশটিকে সাহায্যের পরিবর্তে বাণিজ্যে এই দুই অংশীদারের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম করেছে।
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক যাত্রায় ইইউ-এর ভূমিকার প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ বলেন, বাংলাদেশ যখন উত্তোরণের দ্বারপ্রান্তে তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হওয়াকে ইতিহাসের একটি গর্বের মুহূর্ত বলে অভিহিত করেছেন।
ইইএএস-এর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল এনরিক মোরা এবং বেলজিয়ামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপক্ষীয় বিষয়ক মহাপরিচালক জেরোয়েন কোরেম্যান সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ ও ইইউ প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশ কমিউনিটি, মিডিয়া, একাডেমিয়া ও থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সদস্যরা গালা সংবর্ধনায় যোগ দেন।
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম শনিবার ব্রাসেলসে তার ‘আলোচিত’ সফর শেষ করে ব্রাসেলস ত্যাগ করেন, যেখানে তিনি ইইউ কমিশনার এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: বিদেশি মিশনের সঙ্গে নথি শেয়ারের কারণ জানালেন শাহরিয়ার আলম
আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা ঘোষণা
বাংলাদেশ সোমবার (২৪ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে তার 'ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা' ঘোষণা করেছে। রূপরেখায় বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আধুনিক, জ্ঞান-ভিত্তিক, উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য রাখে। এক্ষেত্রে দেশের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে ইন্দো-প্যাসিফিকের স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক’ হিসেবে বিবেচনা করে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বৈশ্বিক জিডিপিতে সামষ্টিক অংশ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অগ্রগণ্য অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সামগ্রিক কার্যক্রম এবং প্রযুক্তি খাতে গতিশীল বিকাশ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই অর্থনীতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিতকল্পে একটি সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করতে পারে।
বাংলাদেশ তাই এই অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট সকলের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক-এর ধারণা বাস্তবায়নের বিষয়ে গুরুত্বারাপ করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফিংয়ের পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা ঘোষণার এ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন উপস্থিত ছিলেন।
মৌলিক নীতিমালাসমূহ:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র- ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’।
বাংলাদেশ সংবিধান অনুসারে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতিসমূহ, যথা জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা; এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ পরিহার এবং সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য অবিরাম প্রয়াস অব্যাহত রাখা।
আরও পড়ুন: মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য জাপানের ভিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বাংলাদেশ: রাষ্ট্রদূত
সমুদ্র আইন সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদ বা আনক্লস, ১৯৮২-সহ প্রযোজ্য জাতিসংঘ চুক্তিসমূহ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক কনভেনশনসমূহ মেনে চলা।
টেকসই উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবিক কার্যক্রম এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাসমূহ সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে গঠনমূলক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা।
অভিলক্ষ্য:
উপর্যুক্ত মৌলিক নীতিমালার আলোকে নিম্নে বর্ণিত অভিলক্ষ্যসমূহ বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা এবং এ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমকে পরিচালিত করবে-
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সকলের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখা, অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং সংলাপ ও বোঝাপড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মেরিটাইম বিষয়ক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিদ্যমান কাঠামোকে শক্তিশালীকরণ, যথা সমুদ্রে জরুরী পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেয়া ও সার্চ এন্ড রেসকিউ কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আনক্লস, ১৯৮২-সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশন অনুসারে অবাধ সামুদ্রিক চলাচল ও কোনো দেশের ভূখণ্ড বা জলসীমার উপর দিয়ে আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিমান চলাচলের অধিকারের বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন বজায় রাখা।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট সহযোগীদের সঙ্গে একযোগে আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ, শান্তিরক্ষা, শান্তি বিনির্মাণ এবং সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে অর্থবহ ও আন্তর্জাতিক মূল্যবোধসম্পন্ন অবদান রাখা।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আন্তঃদেশীয় সংগঠিত অপরাধসমূহ দমনে নীতি কাঠামো প্রণয়ন ও ব্যবহারিক পদক্ষেপের মাধ্যমে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়াসকে সমর্থন করা।
আরও পড়ুন: ইন্দো-প্যাসিফিক: বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বাড়াতে চায় ফ্রান্স
জাতিসংঘে বাংলাদেশ প্রবর্তিত 'শান্তির সংস্কৃতি' এজেন্ডা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা সম্প্রসারণ, 'নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা' এজেন্ডার ওপর অব্যাহত আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বজায় রাখা,
আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।
উন্মুক্ত, স্বচ্ছ ও নিয়ম-ভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাসমূহ সুসংহতকরণের মধ্য দিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উন্নয়নের অধিকার এবং সকলের সার্বিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এর বাইরেও সুষম ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখা।
ভৌত, প্রাতিষ্ঠানিক, জ্বালানি, ডিজিটাল এবং মনুষ্য পর্যায়ে সংযুক্তির প্রসার, নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পণ্য, পরিষেবা, পুঁজি এবং জনগণের চলাচল সহজতর করা এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর, অভিগম্য উদ্ভাবন এবং উন্মুক্ত ও নিরাপদ সাইবারস্পেস ও মহাকাশ-এ দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।
যেকোনো ভবিষ্যৎ সঙ্কট ও বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতি সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও অবাধ বাণিজ্য প্রবাহকে সুসংহত করতে টেকসই আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক যোগান শৃঙ্খল বা ভ্যালু চেইন তৈরির উদ্দেশ্যে দেশীয় কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতসমূহের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা।
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১৪-সহ আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উন্নয়ন অঙ্গীকারসমূহের আলোকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মহাসাগর, সাগর এবং সামুদ্রিক সম্পদের সংরক্ষণ, টেকসই ব্যবহার এবং ব্যবস্থাপনাকে সুসংহত করা।
আরও পড়ুন: ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্কের 'সুবিধা ও অসুবিধা' মূল্যায়ন করছে বাংলাদেশ: মোমেন
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা, জল-সংহতি এবং দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে দেশীয় উত্তম চর্চাসমূহকে তুলে ধরাসহ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা।
জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস, সামুদ্রিক দূষণ এবং পরিবেশের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক কনভেনশন ও অঙ্গীকারসমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ধারাবাহিকভাবে দৃশ্যমান কার্যক্রম গ্রহণ করা।
সকলের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
ভবিষ্যৎ অতিমারি মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণের লক্ষ্যে ভ্যাকসিন, ডায়াগনস্টিক ও চিকিৎসা সুরক্ষা সামগ্রীর মতো ‘বৈশ্বিক সম্পদ’-এ সকলের অভিগম্যতা নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।
আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং পারস্পরিক উপকারী পরিপূরকতা বাড়ানোর জন্য উপ-আঞ্চলিক অংশীদার এবং প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলো সঙ্গে সহযোগিতা।
'স্মার্ট বাংলাদেশ'-এর রূপকল্পকে সামনে রেখে সকলের ভাগাভাগি সুবিধার জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গবেষণা ও উদ্ভাবনে সহযোগিতা ও সহযোগিতা জোরদার করা।
পশ্চিমাদের অবশ্যই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হওয়া পাক গণহত্যার কথা স্বীকার করতে হবে: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, যেসব দেশ মিয়ানমারে গণহত্যা স্বীকার করছে তাদের এটাও স্বীকার করতে হবে যে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা শিগগিরই এই দেশগুলোর কাছে এ বিষয়টি উত্থাপন করব।
সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘রিকগনিশন অব বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১’- শীর্ষক সেমিনার শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু জাতিসংঘে ইতোমধ্যে একটি গণহত্যা দিবস রয়েছে, তাই দুর্ভাগ্যবশত বিশ্বসম্প্রদায় ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে জাতিসংঘের গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না।
বিষয়টিকে জটিল আখ্যায়িত করে শাহরিয়ার আশা প্রকাশ করেন, সরকারিভাবে সেসব দেশের স্বীকৃতি না পেলেও বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জনগণের কাছ থেকে স্বীকৃতি পাবে।
সরকার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার জন্য জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জনের জন্য তার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, যা বিশ্বের অন্যতম জঘন্য অপরাধ।
আওয়ামী লীগ সরকার ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
আরও পড়ুন: বিদেশি মিশনের সঙ্গে নথি শেয়ারের কারণ জানালেন শাহরিয়ার আলম
২০১৭ সালের ২০ মার্চ প্রস্তাবটি করা হয়েছিল।
এর আগে একই বছরের ১১ মার্চ সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে দিবসটি পালনের প্রস্তাব পাস হয়।
২০১৭ সালের মার্চ মাসে সংসদে উত্থাপিত হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জনের বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকার হিসেবে ছিল।
সরকারের প্রচেষ্টা জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় কারণ জাতিসংঘ ৯ ডিসেম্বরকে গণহত্যার অপরাধের শিকার এবং এই অপরাধ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক স্মরণ ও মর্যাদা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সরকার সর্বোচ্চ সংখ্যক দেশের কাছ থেকে গণহত্যার স্বীকৃতি চায়।
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল, কিন্তু দ্রুতই গণহত্যার বিষয়টি বিস্মৃত হয়ে যায়।
২৫শে মার্চকে 'গণহত্যা দিবস' হিসেবে পালন করা হবে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগের জন্য জাতির চিরন্তন স্মারক এবং এটা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত নৃশংস গণহত্যার সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
২৫ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশে অপারেশন সার্চ লাইট নামে গণহত্যার নির্দেশ দিয়ে গোপনে পাকিস্তানে যান।
সেই রাত থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা এবং তাদের স্থানীয় সহযোগী রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামস বাহিনী পরবর্তী ৯ মাসে সারা দেশে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: ‘বিজিবি সতর্ক, মিয়ানমার থেকে এখন কেউ ঢুকতে পারবে না’: শাহরিয়ার আলম
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না সৌদি আরব: শাহরিয়ার
রোহিঙ্গা সংকট ভুলে যাওয়ার নয়: ইইউ উচ্চ প্রতিনিধি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের চাহিদা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সংস্থার মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘এই সংকট ভুলে যাওয়ার নয়। ইইউ ২০১৭ সাল থেকে ২৮৭ মিলিয়ন ইউরো সহ বৃহত্তম মানবিক সহায়তাদানকারীদের মধ্যে একটি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আগ্রহী ইইউ: অ্যাম্বাসেডর
তারা বর্তমান সময়ে বৈশ্বিক সংকট– জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দুর্বলতা এবং সেইসঙ্গে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে আলোচনা করেছেন।
শাহরিয়ার বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং বিশ্ব সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে ইইউ-এর পররাষ্ট্র বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেলের সঙ্গে দেখা করে ভালো লাগছে।’
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে নিউইয়র্কে বিসিআইইউয়ের বাণিজ্যবিষয়ক বৈঠক
অহিংস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের আহ্বান জানিয়েছে ইইউ মিশনগুলো
সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করতে কাজ করছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, অংশীদারিত্বমূলক সমৃদ্ধি এবং পারস্পরিক উন্নয়নের জন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করতে অবিরাম কাজ করছে।
তিনি বলেন, অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা বৃদ্ধি, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, পানি ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার অনুসরণ, সংযোগ বৃদ্ধি, জনগণের মধ্যে যোগাযোগের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার মাধ্যমে প্রতিবেশীদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার এবং মানবিক সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ‘বিবর্তিত বৈশ্বিক ব্যবস্থায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার ইস্যু’র রাজনৈতিক ব্যবহার হিতে বিপরীত হতে পারে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি হলো-সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বিদ্বেষ নয়- বৈশ্বিক শৃঙ্খলা যে দিকেই অগ্রসর হচ্ছে তা অক্ষুণ্ণ থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মৌলিক অবস্থান হলো- সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়, এটি অক্ষত থাকবে না, যাই ঘটুক না কেন।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ কখনোই আপস করবে না।
তিনি বলেন, ‘এগুলো অক্ষত রেখে, বাংলাদেশ তার সম্পদ অব্যাহত রাখবে ... আমাদের প্রচুর বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছে .. আমাদের অবশ্যই কিছু নমনীয় শক্তি আছে।’
আলম বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী এলাকায় একটি ভালো প্রতিবেশী হিসেবে গড়ে ওঠা সম্পর্ক সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখবে।
‘আমরা (এছাড়াও) আশা করি যে আমাদের প্রতিবেশীরা তাদের সর্বোত্তম ক্ষমতা দিয়ে এটির প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ব যখন একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তখন এগুলো আরও প্রাসঙ্গিক।
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) সভাপতি এম হুমায়ুন কবির সভাপতিত্ব করেন এবং বিআইআইএসএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন স্বাগত বক্তব্য দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারপার্সন ডক্টর লাইলুফার ইয়াসমিন ‘বিবর্তিত বৈশ্বিক ব্যবস্থায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপন’ শীর্ষক একটি উপস্থাপনা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক(দক্ষিণ এশিয়া)এটিএম রোকেবুল হক ‘প্রতিবেশীদের প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি: অংশীদারিত্বে সমৃদ্ধির বন্ধুত্ব’ শীর্ষক উপস্থাপনা করেন।
বিআইআইএসএস’র গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির, ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন উপায় অন্বেষণ’ শীর্ষক উপস্থাপনা করেন।
বিআইএসএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এম আশিক রহমান ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্প্রসারিত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা’ বিষয়ে উপস্থাপনা করেন।
মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এশিয়ার পুনঃউত্থানের কথা তুলে ধরেন।
তিনি উভয় ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং বর্ধিত প্রতিবেশীদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার ওপর জোর দেন এবং আঞ্চলিক সমস্যার শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে বহুপাক্ষিকতাকে উন্নীত করার ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) সভাপতি হুমায়ুন কবির উল্লেখ করেছেন যে পরিবর্তিত বৈশ্বিক ব্যবস্থায় বিশ্বের দেশগুলো প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাদের বৈদেশিক নীতি প্রণয়নের জন্য লড়াই করছে এবং বাংলাদেশকে সতর্কতার সঙ্গে এর মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, সাবেক কূটনীতিক, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, গবেষক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন থিংক ট্যাংক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা অংশ নেন।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে আমরা আরও ভালোভাবে প্রস্তুত: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
সীমান্ত হত্যা কারোই কাম্য নয়: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্প শিগগিরই বাস্তবায়নের আশাবাদ শাহরিয়ারের
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ‘পাইলট প্রকল্প’ দ্রুততম সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়িত হবে।
তিনি মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জন্য আলোচনার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদানের জন্য বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে ‘সক্রিয় ভূমিকার’ জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশে চীনের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন রবিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত ওয়েন বলেন, রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের অভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের প্রকাশ্য বিবৃতি দেয়ার আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস বুঝতে হবে: মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারিকে শাহরিয়ার আলম
তিনি বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ‘ত্যাগ’ স্বীকার করেছেন এবং তাদের প্রত্যাবাসনে ভূমিকা রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত ওয়েন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনারা অনেক অর্থ ব্যয় করেছেন এবং অনেক কষ্ট স্বীকার করেছেন। আপনারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আমাদের লক্ষ্য (প্রত্যাবাসন) অভিন্ন।’
বাংলাদেশ কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আতিথ্য করছে এবং গত ছয় বছরে একটিও রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করা হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপনের গুরুত্বও তুলে ধরেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, চীন থেকে শিল্প স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশকে একটি উপযুক্ত স্থান হিসেবে বিবেচনা করার জন্য চীনা রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান।
চীনা রাষ্ট্রদূত দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা ও বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য পিপিপি-তে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) শেষ করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
নতুন রাষ্ট্রদূতের মেয়াদে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
উভয় পক্ষই বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, সংযোগ ও কোভিড পরিস্থিতিসহ পারস্পরিক স্বার্থের দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে আন্তরিকভাবে মতামত বিনিময় করেছে।
চীনা নববর্ষ দিবসে নতুন রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অংশীদার হওয়ার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে তিনি কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় এবং চীন থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাবাসন এবং পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের চীনে প্রত্যাবর্তনে সহায়তার জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত ইয়াওর সফল মেয়াদ কামনা করেন এবং তার দায়িত্ব পালনে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা খর্ব করা যাবে না: শাহরিয়ার
সম্পর্ককে আরও গভীর করতে অপশক্তিকে পরাজিত করবে ঢাকা-নয়াদিল্লি: শাহরিয়ার
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা খর্ব করা যাবে না: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার সমস্যা মোকাবিলা করা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজ এবং এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা খর্ব করা যাবে না।
শনিবার প্রতিমন্ত্রী ক্যাম্পে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন।
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ও ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতা: অগ্রাধিকারমূলক সমস্যা এবং উদ্বেগ’- শীর্ষক সিনিয়র পর্যায়ের সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের জন্য দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় প্রচেষ্টার সমন্বয় করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের অব্যাহত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গা ইস্যুকে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে।
বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স আয়োজিত সংলাপটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর শাহাব এনাম খান।
সেক্রেটারি, মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট (এমএইউ) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হুসাইন এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুগুলো সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি যোগ দেয়ার বিষয় না। এটি কিছু নীতির ওপর নির্ভর করে এবং এ বিষেয়ে কোনও ভুল ধারণা থাকলে তা দূর করা দরকার।