স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ঢাকার নাগরিক সমস্যা সমাধানে ধাপে ধাপে কাজ করতে হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম পর্যায়ক্রমে ঢাকার নাগরিক সমস্যা সমাধানের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ঢাকা পৃথিবীর জনবহুল শহরগুলোর অন্যতম এবং প্রতিবর্গ কিলোমিটারে সবচেয়ে বেশি মানুষ বসবাস করে।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে এ শহরে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দিন দিন নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঢাকাকে আধুনিক শহরে পরিণত করতে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এরই ফলশ্রুতিতে আজ আমরা ঢাকায় মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ের মতো দ্রুতগতি সম্পন্ন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ঢাকার যানজট: মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেস ওয়ের প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকার সব সমস্যা রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধীরে ধীরে সব সমস্যা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির কথা উল্লেখ করে বলেন, মানুষের সামর্থ্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মন্ত্রী দখলমুক্ত ফুটপাতের উপর জোর দিয়ে বলেন, হাঁটার পরিবেশ পেলে নাগরিকরা স্বল্প দূরত্বে হেঁটে গেলে তা পরিবেশের জন্য এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে সেক্ষেত্রে হকারদের পুনর্বাসন অথবা তাদের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ দেওয়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
আরও পড়ুন: আমাদের এখন লক্ষ্য ডালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া: কৃষিমন্ত্রী
যানজটের সমস্যা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, একই পরিবারের একাধিক গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে আমাদের চিন্তা করার সময় এসেছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও জবাবদিহির উপর জোর দিয়ে ঢাকা শহরে পার্কিং ব্যবস্থা ও শৃঙ্খলা আনা জরুরি হয়ে পড়েছে।
খেলাধূলার উপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, খেলাধূলা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং এ কারণে উন্নত বিশ্বে খেলাধূলার উপর অনেক গুরুত্বারোপ করা হয়।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ সময় খেলাধুলা মানুষের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক চেতনা তৈরি করে উল্লেখ করে বলেন, এ বোধ যে মানুষের মধ্যে কাজ করে তারা দেশ ও সমাজকে উন্নত করতে বেশি সক্রিয় থাকে। তাই খেলাধুলার গুরুত্ব আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় জীবনে অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দৃঢ় প্রত্যয় স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
খেলাধুলা শুধু স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তাই নয়, খেলাধুলার ফলে মানুষের মধ্যে সৃজনশীলতার বিকাশ হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দৃঢ় প্রত্যয় স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের অধীন সব অধিদপ্তরের দক্ষতা মূল্যায়ন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
একই সঙ্গে দপ্তরগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পুনরায় দায়িত্ব পাওয়ার পর রবিবার কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনে প্রতিষ্ঠানটির সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বসবাসযোগ্য ঢাকার জন্য নাগরিকদের সচেতনতা জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
সমবায়মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যে অবস্থানে নিতে চান সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, পুনরায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর আস্থা রাখতে সব সময় সচেষ্ট থাকবেন।
তিনি ঢাকা ওয়াসার দক্ষতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহের দায়িত্বটি ঢাকা ওয়াসা ঠিকভাবে করতে পেরেছে। এছাড়াও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিক করতে ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান।
ভর্তুকির টাকায় ধনীদের পানি সরবরাহ করা যৌক্তিক কি না সে প্রশ্ন রেখে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ঢাকা ওয়াসার এক হাজার লিটার পানি উৎপাদনে খরচ হয় ২৬ থেকে ৩০ টাকা। ৩০ টাকা যদি উৎপাদন খরচ হয়, আর আমি যদি তা ১৫ টাকায় বিক্রি করি তাহলে বাকি ১৫ টাকা ভর্তুকি কে দেবে? সরকারি টাকা দিয়ে কী আমি এখানে ক্ষতিপূরণ দেব?
আরও পড়ুন: জনপ্রতিনিধিরা চেষ্টা করলে জনগণের ভাগ্য আমূল পরিবর্তন করা সম্ভব: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তিনি বলেন, এটা কি যৌক্তিক বিষয় কি না প্রশ্ন আমার। ধনাঢ্য এলাকার পানির মূল্য আর মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত অধ্যুষিত এলাকার পানির মূল্য এক হওয়া উচিত নয় বলে মত দেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে গেলে আইন ও বিধিগুলো সঠিকভাবে জানা প্রয়োজন। এতে কর্মকর্তাদের উৎসাহ ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। আশা করি সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা পাঁচ দিনব্যাপী এই কর্মশালার মাধ্যমে নাগরিক সেবা আরও সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন।
এদিকে, আজ সকালে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ‘সিটি কর্পোরেশন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ’ ও ‘সম্পদ আহরণ এবং বাজেট ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম এবং সভাপতিত্ব করেন জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মনোজ কুমার রায়।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম এবং সভাপতিত্ব করেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এছাড়াও ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সুজিত কুমার বালা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
জনপ্রতিনিধিরা চেষ্টা করলে জনগণের ভাগ্য আমূল পরিবর্তন করা সম্ভব: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, পৃথিবীর সব উন্নত দেশের উন্নয়নের ইতিহাস জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেই পরিবর্তিত হয়েছে।
তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিরা যদি দক্ষ হয় সেই দক্ষতার ছোঁয়া জনগণের জীবনেও প্রভাব ফেলে। মানুষের কল্যাণে জনপ্রতিনিধিরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকলে জনগণের ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন সম্ভব।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে পাঁচ দিনব্যাপী খুলনা সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের জন্য আয়োজিত ‘সিটি করপোরেশন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ’ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বসবাসযোগ্য ঢাকার জন্য নাগরিকদের সচেতনতা জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে শত নির্যাতন জেল-জুলুম দিয়েও বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের পথ থেকে বিচ্যুত করা যায়নি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ সময় বিভিন্ন স্থানীয় সমস্যা সমাধানের জন্য জনগণের উদ্ভাবনী শক্তির উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, আপনারা যারা আজকে এখানে উপস্থিত তারাই আপনাদের এলাকার মানুষ এবং তাদের সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন।
তিনি বলেন, সেই সমস্যার সমাধান উদ্ভাবনের মাধ্যমে মানুষের অংশগ্রহণে নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় মানুষ সুযোগ পেলে অনেক কঠিন সমস্যারও বেশ সহজ সমাধান বের করে ফেলতে পারে।
তাজুল ইসলাম এ সময় স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে রাজস্ব আদায়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, মানুষ যদি তাদের প্রদত্ত করের টাকায় বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা ভোগ করে তাহলে কর প্রদানে উৎসাহিত হয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় কাউন্সিলরদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার সুযোগ রয়েছে।
মানুষের অপার শক্তির উপর বিশ্বাস রাখার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ছোট্ট ও জনবহুল বাংলাদেশের প্রধান শক্তি হচ্ছে এর মানবসম্পদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের শক্তির উপর বিশ্বাস রাখেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেজন্যই তিনি দারিদ্র্যপীড়িত একটি দেশকে আজকে বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে পেরেছেন, উন্নয়নশীল বিশ্বের কাতারে সম্মানের সঙ্গে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ করে দিতে পেরেছেন।
জনগণের ইচ্ছায় এবং জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা শাসন ব্যবস্থাকেই গণতন্ত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে সেই জনপ্রতিনিধিদেরও বিভিন্ন বিষয়ে জানার দরকার রয়েছে বলেই আজকের এই প্রশিক্ষণ।
সময়ের সঙ্গে মানুষের এবং চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় নানা আইনের পরিবর্তন হয় এবং সে বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের ধারণা থাকতে হবে- বলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তামাক ব্যাবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
বসবাসযোগ্য ঢাকার জন্য নাগরিকদের সচেতনতা জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, পরিকল্পিত ঢাকা শহরের জন্য সবার দায়িত্ববোধ ও সচেতনতা জরুরি।
তিনি বলেন, সেজন্য নীতি নির্ধারক ও নগর পরিকল্পনাবিদসহ সমাজের সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। এছাড়া সবাইকে বসবাসযোগ্য ঢাকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
সোমবার (২০ মার্চ) বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এ ‘ঢাকা নগরীর সবুজ এলাকা এবং এর রাজনৈতিক অর্থনীতি’- শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেকোনো পরিকল্পনা বা জননীতি বাস্তবায়ন করতে গেলে যখনই তা কারও স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় তখন সেই পরিকল্পনার বিপক্ষে তিনি অবস্থান নেন। এই ধরনের মানসিকতা কমিউনিটির সবার মঙ্গলের জন্য পরিহার করতে হবে।
এ সময় মন্ত্রী ঢাকা ডিটেইলস এরিয়া প্ল্যান বা ড্যাপের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া দায়িত্ব পালন করেছেন সর্বোচ্চ পরিশ্রম ও আন্তরিকতা দিয়ে।
ড্যাপ প্রণয়নের ক্ষেত্রে বসবাসের স্থান, খোলা জায়গা, খেলার মাঠ, সবুজ ও জলজ এলাকা থেকে শুরু করে অন্যান্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভালো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজসহ সবার এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার ভিতরে জনসংখ্যা কত হবে, তাদের জন্য কি কি নাগরিক সুবিধা প্রয়োজন তা আমাদের চিন্তা করতে হবে।
আরও পড়ুন: সকল শ্রেণির মানুষের জন্য ঢাকাকে বাসযোগ্য ও টেকসই করতে হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, যেখানে পাঁচ হাজার লোকের নাগরিক সুবিধার ব্যবস্থা করা আছে সেখানে যদি ২০ হাজার লোক বসবাস করে তাহলে কিভাবে বসবাসযোগ্যতা বজায় থাকবে। এই বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।
ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল শহর হওয়ায় এই শহরের ওপর চাপ কমাতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকাকে পৃথিবীর আর কোনও শহরের সঙ্গে তুলনা করার সুযোগ নেই। প্রতিদিন যে পরিমাণ মানুষ ঢাকায় ঢুকছে; তাতে খোলা জায়গা, খেলার মাঠ বা সবুজ এলাকা রক্ষা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
এ সময় মন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়ছে জানিয়ে বলেন, উন্নত বিশ্ব প্রতিশ্রুত আর্থিক অনুদান ছাড় না করার কারণে বাংলাদেশ কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় যেতে পারছে না।
মন্ত্রী রাজধানীর খালগুলো ওয়াসা থেকে সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা প্রসঙ্গে বলেন, জলবদ্ধতা দূর জরার জন্য তার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের ফলে রাজধানীবাসী আগের তুলনায় অনেক স্বস্তিতে আছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা যার যার দায়িত্ব পালন করলে দেশ ও সমাজ এগিয়ে যাবে।
নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে কাজ করলে জাতির পিতার সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই আমরা একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ করতে পারব।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল জব্বার খাঁন, ইউএসএইড বাংলাদেশের অফিস অব ইকোনমিক গ্রোথের পরিচালক মোহাম্মাদ এন. খান।
আরও পড়ুন: তামাক ব্যাবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
এতে সভাপতিত্ব করেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার।
সকল শ্রেণির মানুষের জন্য ঢাকাকে বাসযোগ্য ও টেকসই করতে হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বসবাসরত সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য ঢাকাকে বাসযোগ্য ও টেকসই করতে হবে। নাগরিক অধিকারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সকলকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণে রাজধানী দৃষ্টিনন্দন, নিরাপদ বাসযোগ্য ও টেকসই শহর হবে।
শনিবার রাজধানীর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স-এ বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত জনঘনত্ব, বাসযোগ্যতা ও টেকসই উন্নয়ন শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার হলো আমার গ্রাম আমার শহর। এর অধীনে সড়ক যোগাযোগ, ইন্টারনেট-টেলি যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সুপেয় পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো সন্নিবেশিত হয়েছে৷ একটি উন্নত জীবন যাত্রার জন্য যে ব্যবস্থাপনা মানুষের প্রয়োজন তার সবই রয়েছে৷ গ্রামগুলোতে শহরের সুবিধা নিশ্চিত হলে শহর মুখী মানুষের চাপ কমবে৷
আরও পড়ুন: জাতির স্বার্থে কাজ করার আহ্বান স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
রাজধানীকে বাসযোগ্য করার জন্য ডিটেইল এরিয়া প্লান (ড্যাপ) প্রনয়ণ করেছে সরকার। ড্যাপের বাস্তবায়ন রাজধানীকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করবে। এটি সম্মিলিতভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে ঢাকাকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এগুলো বললে কিছু মানুষ সহ্য করতে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের উন্নয়ন থেমে যায়। দেশ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, কৃষি, শিল্প-কারখানাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়াও জিডিপির প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আর্থ-সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে দেশ অনেক এগিয়েছে।
গোল টেবিল বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো.আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকাকে টেকসই করতে হলে দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। দখলকৃত খালের সীমানা চিহ্নিত করা হচ্ছে৷ সিএস দাগে খালের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: তামাক ব্যাবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বা নগরগুলোকে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য ন্যাশনাল কমিটি গঠন করতে হবে। বিকেন্দ্রীকরণ জরুরি বলেও তিনি মতামত দেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন ইশরাত ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার জন্য পার্ক বা উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিশেষজ্ঞ বক্তারা ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য ও টেকসই করে গড়ে তোমার আহ্বান জানান।
আমার গ্রাম আমার শহর, বিকেন্দ্রীকরণের এবং ড্যাপ বাস্তবায়নের জন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বলে তারা উল্লেখ করেন।
গোল টেবিল বৈঠকে দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু মোকাবিলায় আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তামাক ব্যাবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তামাকের ব্যবহার জনস্বাস্থ্য, অর্থ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক ক্ষতি ছাড়া জীবনে কোনো অবদান রাখেনা। স্বাস্থ্যের গুরুত্ব সকলেই জানে। তাই তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ পরিহার করা অপরিহার্য। তামাক ব্যাবহারের নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা আহছানিয়া মিশন কর্তৃক আয়োজিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ব্যবস্থা শীর্ষক আলোচনা সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সময়ের সঙ্গে সব কিছুই পরিবর্তন হয়। আইনও পরিবর্তন হতে পারে। প্রণীত খসড়াটি যেন দ্রুত আইনে রূপান্তরিত হয় সে চেষ্টা করতে হবে। তামাকের জন্য যে কোটি কোটি টাকা আয় হচ্ছে বলা হয়, সেটা স্বাস্থ্য ক্ষতির তুলনায় কিছুই না।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু মোকাবিলায় আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তিনি বলেন, বলা হয় যে তামাক বন্ধ হলে ৮০ লাখ লোক বেকার হয়ে যাবে এটা সত্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগ কাজ করছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে জন্য গাইডলাইন করা হয়েছে।
মো.তাজুল ইসলাম বলেন, তামাকের চাষাবাদ ও তামাক পণ্য উৎপাদন কৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস করে। তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধে জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এদেশ স্বাধীন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমারা একাত্ম থাকলে আমরা যে কোনো সংকট মোকাবিলা করে বিজয় অর্জন করবোই। বর্তমান সংকট বৈশ্বিক তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতি বুঝে কাজ করতে হবে যেন কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে।
বিশেষ অতিথি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ. ফ. ম. রুহুল হক উল্লেখ করেন তামাকের কোন ভালো দিক নেই। তামাক নিয়ন্ত্রণ করলে দেশের স্বাস্থ্যখাত ভালো থাকবে।
সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার বলেন, বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত দেশ এবং ২০৪০ সালে আমরা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আন্দোলন মানুষকে অধিক সচেতন করছে।
আইন সংশোধন হলে এ আন্দোলন আরও ফলপ্রসূ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
হোসেন আলী খন্দকার, সমন্বয়কারী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের অতিরিক্ত সচিব, উল্লেখ করেন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তামাক বাদে অন্য ফসল উৎপাদন কাজ করতে। উন্মুক্ত আলোচনায় বিশিষ্টজনরা তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করেন। দ্রুত খসড়া আইন পাশ ও তামাক মুক্ত বাংলাদেশ আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে আহ্বান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টর এর পরিচালক জনাব ইকবাল মাসুদ।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মো. সেলিম রেজা, প্রধান নির্বাহী (অতিরিক্ত সচিব), ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, আবদুস সালাম মিয়া, গ্রেন্ডস ম্যানেজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল ডা. জুবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জনাব জালাল আহমেদ এবং দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।।
আরও পড়ুন: জাতির স্বার্থে কাজ করার আহ্বান স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পদ্মা সেতু দুই যুগেও হতো না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ডেঙ্গু মোকাবিলায় আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সরকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়া ও কিছু মৃত্যুতে আমরা ব্যথিত।
সোমবার সকালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জাতিসংঘ দিবস পালন উপলক্ষে ‘ক্লিন আপ ক্যাম্পেইন’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন নতুন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যাগ নেয়া হচ্ছে। মশা মারার ওষুধ প্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে৷
আরও পড়ুন: জাতির স্বার্থে কাজ করার আহ্বান স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
মন্ত্রী বলেন, এই বছর আগের তুলনায় আবহাওয়ার ভিন্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এখন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এডিস মশা মোকাবিলা করতে আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রাখতে হবে।
জাতিসংঘ দিবস পালন উপলক্ষে ‘ক্লিন আপ ক্যাম্পেইন’-অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ স্কাউটের প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খানসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন৷
আরও পড়ুন: চট্রগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে ভুল থাকলে সংশোধন: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পদ্মা সেতু দুই যুগেও হতো না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পদ্মা সেতু দুই যুগেও হতো না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করলে দুই যুগেও কাজ শেষ হতো না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
সোমবার রাজধানীতে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন রচিত ‘বাংলাদেশের ৫০ সাফল্য সম্ভাবনা’- শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন প্রত্যাহার করায় তারা পেয়েছে কি শিক্ষা নিলো। তারা অর্থায়ন না করা আমাদের স্বপ্নের সেতু দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা মনোবলের কারণে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু যেমনি বিশ্বে আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে তেমনি নিরাপদও হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুসিক নির্বাচন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
বাজেট শুধু বাৎসরিক দলিল নয়, আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাজেট সরকারের শুধু বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের দলিল নয়। বাজেট ঘোষণার মাধ্যমে দেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে থাকে।
রবিবার (৫ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বণিক বার্তা ও গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'জন-বাজেট সংসদ ২০২২' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করেই বাজেট ঘোষণা করে থাকে। কারণ এর মাধ্যমে মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়। দেশের কোন মানুষকে বাদ দিয়ে উন্নত দেশে গড়া সম্ভব না। দেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় সকল মানুষের অংশগ্রহণের ফলে।
এবারের বাজেটেও জাতির আশা-আঙ্খার প্রতিফলিত ঘটবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মো. তাজুল ইসলাম জানান, দেশ অর্থনীতির সকল সূচকে অনেক এগিয়েছে। এটি সবাইকে মানতে হবে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলোকে চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। আর এটি একদিনে হবে না। স্বাধীনতার পর মাথাপিছু আয় ছিল ১২৫ ডলার। এখন এটি বহুগুণ ছাড়িয়ে গেছে। আগে খাদ্যের চরম অভাব ছিল। এখন সেটি নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ সকলে খাতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, দেশে একসময় ভয়াবহ দরিদ্রতা ছিল। আমি নিজে দরিদ্রতা দেখেছি। না খেয়ে থাকা মানুষের আহাজারি শুনেছি। মানুষ দরজায় এসে বলতো ' মাগো সারাদিন কিছু খাই না, দয়া করে ক'টা খাবার দেন'। কিন্তু এখন মানুষ না খেয়ে মরছে না। মানুষ এখন খেতে পারছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ কেটে উঠতে না উঠতেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্বে টালমাটাল শুরু হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি অনেক জিনিস-পত্রের দাম বেড়েছে। আমরা পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছি। সরকার নানাভাবে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধুও তাঁর সময়ে কৃষিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনো শেখ হাসিনা কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। এখনও অন্যান্য খাতের মত তিনি কৃষিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
কৃষিকে একক গুরুত্ব দিয়ে মানুষে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার কৃষির পাশাপাশি শিল্পায়নকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। গার্মেন্টস শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের। এর অবদান একা কারো নয়। একজন সাধারণ পোষাক শ্রমিকও এর কৃতিত্ব পাবে।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করার জন্য পথ নকশা তৈরি করেছে। এই লক্ষমাত্রা অর্জনে পঞ্চম বার্ষিকীসহ বিভিন্ন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশে যে অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ চলছে তা বাস্তবায়িত হলে প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হবে। দেশ পৌঁছে যাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. এম এম আকাশ, রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ, দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ।
আরও পড়ুন: পানির অপচয় রোধে রিসাইক্লিং করার উদ্যোগ নিতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
রাজধানীর প্রত্যেক বাসা-বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
এবারের বর্ষায়ও ঢাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা, নেই কোনো স্থায়ী সমাধান
বর্ষা আসার সাথে সাথে ঢাকাবাসী প্রতিবছরই জলাবদ্ধতার সমস্যায় পড়ে। মেগা সিটির দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানের জন্য এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরের রাস্তা থেকে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে একটি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা নেয়া উচিত ছিল।
দুই সিটি করপোরেশনের দাবি, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন, বক্স কালভার্ট নির্মাণ ও খাল ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান থাকায় এ বছর জলাবদ্ধতা কম হবে।
ইউএনবির সাথে আলাপকালে কয়েকজন নগরবাসী আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতার সমস্যা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
মগবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. রহিমুল্লাহ বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন সেবা সংস্থার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এই রাস্তায় চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়বে কারণ বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টি হলেই এগুলো জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে।’
মালিবাগ এলাকার গৃহবধূ মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া-আসা করতে তেজগাঁও যেতে হবে। সেখানে একটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে এবং নির্মাণ কাজের কারণে পুরো এলাকাটি দুর্গম হয়ে পড়েছে।’
জলাবদ্ধতার কারণে আসন্ন বর্ষায় সেখানে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশনর পদক্ষেপ
এবারের বর্ষায় রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪৬টি হটস্পট চিহ্নিত করেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১০৪ ও উত্তরের ৪২টি। এসব স্থানে বিগত বছরগুলোয় বৃষ্টির পানি জমেছিল। তার আলোকেই চিহ্নিত করা হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জানায়, জলাবদ্ধপ্রবণ ১০৪টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৯টির বেশি স্থানের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে কিছু অংশের কাজ চলছে। এছাড়া জলজট নিরসনে ড্রেন, বক্স কালভার্ট ও খাল পরিষ্কারের কার্যক্রম চলছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির অতিরিক্ত জলাবদ্ধতাপ্রবণ ৩২টির বেশি এলাকা মতো। পল্টন, শান্তিনগর, বেইলি রোড, কাকরাইল,গোপীবাগ, কমলাপুর, টিকাতলী, আগাসাদেক রোড, আগামাসি লেন, আব্দুল হাদি লেন, ইস্কাটন রোড, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকা, বাংলাদেশ সচিবালয়, ইস্কাটন রোড, নিউমার্কেট, বাটা মোড়, ধানমন্ডি ঈদগাহ রোড, ঝিগাতলা, নাজিম উদ্দিন রোড, নবাবগঞ্জ পার্ক, আজিমপুর, কে এম দাস লেন সংলগ্ন রাস্তা, আরকে মিশন রোড ও অভয়দাস লেন গোপীবাগ বাজার রোড ও পুরান ঢাকার কিছু এলাকা।
অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্রে জানা যায়, গত বছর জলাবদ্ধপ্রবণ ১০৩টি স্থান ছিল। এবার এসব স্থানের মধ্যে ৬১টির সংস্কার করা হয়েছে। বাকি ৪২টি স্থান সংস্কারের কার্যক্রম চলছে। এছাড়া ড্রেন ও খালের পরিষ্কারের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা উত্তরের অতিরিক্ত জলাবদ্ধ এলাকা প্রায় ৩০টির মতো- মিরপুর-১০, মিরপুর-১৩, মিরপুর সাংবাদিক কলোনি এলাকা, মিরপুর কালশী, বিমানবন্দর সড়কের আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী পর্যন্ত, শহীদ আব্দুর ওয়াব রোড, মিরপুর শেওরা পাড়া, কাজী পাড়া, মনিপুর, মধুবাগ, বাংলামোটর, মালিবাগ, মোহাম্মদপুর লালমাটিয়, কারওয়ান বাজার টিসিবি ভবন সংলগ্ন এফডিসি এলাকা পর্যন্ত, নাখালপাড়া, নিকুঞ্জ-১, ২, গ্রীন রোড, তে বসুন্ধরা সিটির পিছনে তেজতুরি বাজার, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, কুড়িল, বাড্ডা ও কুড়িল নতুন বাজার এলাকা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ (অতিরিক্ত সচিব) ইউএনবিকে বলেন, গত বছর দক্ষিণ সিটিতে ১০৪টি স্পটে পানি জমাট থাকতো। এই জায়গা গুলো চিহ্নিত করে এবার সংস্কার কাজ করেছি। ১০৪টির মধ্য ৫টি স্পট বাকি আছে। এই স্পট ১৯ মের মধ্যে শেষ হবে। এছাড়া ১৫ কিলোমিটার খাল পরিষ্কার করেছি। আমরা আশা করছি এবার বর্ষায় গতবারের তুলনায় সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
পড়ুন: কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা