ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আজ ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ১৩ প্রার্থী, মোট ২০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে আজ ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ৩ জন প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) ও অন্যান্য পদে বাকি ১০ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।
বুধবার (১২ আগস্ট) বিকালে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় চীফ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এ তথ্য জানান।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, গতকাল প্রথম দিনে ডাকসু মনোনয়নপত্র নিয়েছে ৭ জন। যার মধ্যে দুই জন ভিপি পদের জন্য মনোনয়ন নিয়েছেন। আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৩ জন, যার মধ্যে ভিপি পদে ৩ জন।
পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ শুরু আজ
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সেইসাথে দুই দিনে হল সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৮টি হল থেকে মোট ১৮টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার জানান, ডাকসুর সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ পদের বিষয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর উত্থাপিত আপত্তি গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কমিশনের কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
এ পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
১১৩ দিন আগে
হল রাজনীতি নিষিদ্ধের আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে: ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, হলগুলোকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত রাখার গত বছর নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
শনিবার (৯ আগস্ট) ভোরে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এ কথা বলেন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ঢাবিতে হল রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার(৮ আগস্ট) সকালে ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে কমিটি ঘোষণা করার পর এই বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
২০২৪ সালের ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) নেতাকর্মীদের অপসারণ ও হলগুলোকে রাজনীতিমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন: হল রাজনীতির বিরুদ্ধে মধ্যরাতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রাত সাড়ে ১২টার বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে, ১-২-৩-৪, হল রাজনীতি আর নয়, স্বাধীনতা না দাসত্ব, স্বাধীনতা-স্বাধীনতা ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত হলো হল স্তরে কোনো ছাত্ররাজনীতির অনুমতি দেওয়া হবে না। তারা কেন্দ্রীয় স্তরে, মধুর ক্যান্টিনে এটি করতে পারে। এটাই ছিল বোঝাপড়া। তবে, আমরা কোনো ছাত্র সংগঠনকে 'আপনি এটি বাতিল করুন' বলতে বাধ্য করতে পারি না। আমরা জানিয়েছি, ১৭ জুলাই যা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তা বলবৎ থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়ে আজ প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির একটি সভা হবে। এরপর, যেসব ছাত্র সংগঠনের নাম উঠে এসেছে, তাদের সঙ্গেও আমাদের কথা বলব।’
১১৭ দিন আগে
সাম্য হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি ডিএমপির
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলায় রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকাল পৌনে ৫টায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সংবাদ সম্মেলনে আসছেন বলে এক বার্তায় জানানো হয়েছে।
সাম্য হত্যা মামলায় রবিবার পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা ডিবি। তাদের মধ্যে তিনজনকে পরদিন রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। ওই তিনজন হলেন—সোহাগ, হৃদয় ইসলাম ও রবিন।
পুলিশ জানিয়েছে, সুজন সরকার নামে আরেক আসামিকে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে। আর রিপন নামে গ্রেপ্তার আরেকজন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকেও কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় সোমবার পর্যন্ত মোট আট আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, ১৩ মে রাতেই তামিম হাওলাদার, পলাশ সরদার ও সম্রাট মল্লিককে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনারের সংবাদ সম্মেলনের বার্তায় ডিবির হাতে আটজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়।
নতুন করে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, সাম্য হত্যায় সব মিলিয়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথমে তিনজন এবং পরে ডিবির হাতে আটজনসহ মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’
গত ১৩ মে রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায়।
এদিকে সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) সকালে উপাচার্য ভবনে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাম্য হত্যা: ঢাবির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রতিবেদনটি উপাচার্যের হাতে জমা দেন। এ সময় প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ এবং কমিটির সদস্য সচিব সহকারী প্রক্টর শারমীন কবির উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, ‘উপাচার্য স্যার আজ (সোমবার) প্রতিবেদনটি রিসিভ করেছেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
১৯১ দিন আগে
সাম্য হত্যা নিয়ে ধোঁয়াশা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হলেও পুরস্কৃত পুলিশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিলেও এই মামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ পর্যন্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হলেও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি—মূল হত্যাকারী এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। এ ছাড়া ঘটনার তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দাবি করছে পুলিশের দুই পক্ষ।
গত মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে ঢাবি ক্যাম্পাস-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইআর) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাম্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের পর পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও যে ব্যক্তির ছুরিকাঘাতে সাম্য নিহত হন, তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে দাবি করেছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাম্যর সহপাঠীসহ অন্যান্য ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
রহস্য উদঘাটন করেই পুরস্কৃত পুলিশ
এদিকে, দ্রুততম সময়ে সাম্য হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তারের স্বীকৃতিস্বরূপ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) শাহবাগ থানা পুলিশের সংশ্লিষ্ট টিমকে নগদ এক লাখ টাকা পুরস্কার দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।এ নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, ‘শাহবাগ থানার তদন্ত টিমের দ্রুত তৎপরতার কারণে ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এর স্বীকৃতিস্বরুপ ও সামনে আরও ভালো কাজের উৎসাহ প্রদানের জন্যই এ পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে।’
পুরস্কার দেওয়ার পরের দিনই (শুক্রবার) সাম্য হত্যায় জড়িত মূল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শাহবাগ থানা অবরোধ করে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি—সাম্য হত্যার যিনি মূলহোতা, অর্থাৎ যিনি ছুরিকাঘাত করেছেন, সাদা শার্ট বা পাঞ্জাবি পরা সেই ব্যক্তি ও তার সব সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
তবে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে হত্যাকারীকে ধরতে পারেনি পুলিশ অভিযোগ তুলে রবিবার (১৮ মে) আবারও শাহবাগ থানা ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার বর্ণনা ও হত্যাকাণ্ড
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে সাম্যর সঙ্গেই ছিলেন তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ও আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদ। ওই সময় খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্যে মোটারসাইকেলে চড়ে রমনা কালী মন্দির গেট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশ করেন তারা। পরে খাওয়া শেষে একটি শিশুর হাতে থাকা ‘টিজার গান’ কাড়তে গিয়ে অন্য একটি পক্ষের মোটরসাইকেল ধাক্কা লাগে তাদের। আর এ নিয়েই শুরু হয় কথা কাটাকাটি, যা একপর্যায়ে প্রাণঘাতী মারামারিতে রূপ নেয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বায়েজিদ বলেন, ‘সেদিন আমাদের ইনস্টিটিউটের একটি প্রোগ্রাম ছিল। প্রোগ্রাম শেষ করে রাতে খাওয়া-দাওয়া করতে উদ্যানের গেটের দোকানগুলোতে যাই। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে খাওয়া শেষে সেখান থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলাম। তার মধ্যেই এই বিপত্তি।’
তিনি বলেন, ‘মুক্ত মঞ্চের পাশে (হত্যাকাণ্ডের স্থানের পাশে) দুটি অল্পবয়সী শিশু ছিল। মন্দিরের গেট দিয়ে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়ি নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের একজন আমাদের লক্ষ্য করে টিজার গান সদৃশ কিছু একটা মারে। শিশুদের হাতে এগুলো থাকা নিরাপদ না ভেবে সাম্য গাড়ি ঘোরায়। এ সময় আমরা বাচ্চাটিকে ধরতে গেলে সে পালনোর চেষ্টা করে।’
‘এ সময় সেখানে কয়েকজন বসে ছিলেন। তাদের দিকে আমাদের খেয়াল ছিল না। হঠাৎ তাদের একটি বাইকের সঙ্গে আমাদের (বাইকের) ধাক্কা লাগে। এরপরই ওই ব্যক্তিরা আমাদের ওপর তেড়ে আসে।’
আরও পড়ুন: ঢাবির সাম্য হত্যাকাণ্ড: ৬ দিনের রিমান্ডে তিনজন
ওই ঘটনায় আহত এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘শুরুতে কথা কাটাকাটি হয়, পরে তারা প্রভাব দেখাতে চাইলে আমরাও উত্তেজিত হয়ে যাই। একপর্যায়ে পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া লাল টি-শার্ট পরা ব্যক্তি আমাকে মাটিতে ফেলে মারধর শুরু করে।’
‘১-২ মিনিটের মধ্যেই ঘটনার আকস্মিকতা সামলে দেখি, সাম্য উঠে দাঁড়িয়েছে। তারপর চোখ যায় তার পায়ের দিকে। দেখি, তার ডান পা রক্তাক্ত। তার পরপরই ধুপ করে পড়ে যায় সে।’কথা বলতে গিয়ে এ সময় কণ্ঠ ভারী হয়ে ওঠে বায়েজিদের।
নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলেন, ‘এরপর আমরা ওকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নেওয়ার জন্য প্রত্যক্ষদর্শীদের সাহায্য চাই, কিন্তু কেউ সে সময় এগিয়ে আসেনি। পরে একটি ছোট বাচ্চার সাহায্য নিয়ে ওকে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
মূলত তাদের মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সাদা শার্ট বা পাঞ্জাবি পরা এক যুবক বড় ছুরি জাতীয় কোনো অস্ত্র দিয়ে সাম্যর পায়ে আঘাত করেন। এর পরপরই তিনটি মোটরসাইকেলে করে তাদের ১০-১২ জনের একটি দল দ্রুত পালিয়ে যান বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘অস্ত্রের আঘাতে সাম্যর ডান পায়ের উরুতে গভীর ক্ষত হয়। কাটা জায়গা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। হাসপাতালে নিতে নিতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েই মারা যায় সে।’
পরে এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘উরুর পেছনে শরীরের একটি অন্যতম প্রধান রক্তনালী থাকে, যাকে বলা হয় ফিমোরাল আর্টারি। এটিকে বলতে পারেন দেহের প্রধান রক্তনালীর একটি শাখা রক্তনালী, কিন্তু এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
ওই রক্তনালী কেটে যাওয়ার পর হাসপাতালে আনতে দেরি হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে নিজের ধারণার কথা জানান ওই চিকিৎসক।
আসামিদের গ্রেপ্তার নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরের দিন (বুধবার) সকালে রাজধানীর পৃথক তিনটি স্থান থেকে তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাই শরিফুল আলম শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও পলাশ সরদারকে (২৮) আদালতে তোলে পুলিশ। এরপর তাদের প্রত্যেককে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
তবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন আসামিদের তিনজনই। তারা আদালতকে বলেন, হয়রানি করার জন্য আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রেপ্তারদের অপরাধের বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী বায়েজিদের দাবি, তারা ঘটনাস্থলেই ছিলেন। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার তিনজন আমাদের আক্রমণ করে মারধর করেছেন। তবে মূল হত্যাকারীকে ধরা হয়নি, তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আইইআর-এর আরেক শিক্ষার্থী আশরাফুল আলম রাফি হত্যাকারীর বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘যে তিনজনকে ধরা হয়েছে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, কিন্ত তারা মূল হত্যাকারী নন। সাদা জামা কিংবা পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তি সাম্যকে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ওই ব্যাক্তির গায়ের রঙ ফর্সা; তাকে দেখতে মোটেও উদ্বাস্তুর মতো নয়।’
একই ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ফারহান শাহরিয়ার চৌধুরী বলেন, ‘হত্যার দিন রাতে আমাদের ইনিস্টিটিউটের একটি প্রোগ্রাম ছিল। রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত আমরা সাম্য ভাইয়ের সঙ্গেই ছিলাম।’
আরও পড়ুন: সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ থানা ঘেরাও, আসামিদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম
তার দাবি, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছুরিকাঘাত এবং সোয়া ১২টার দিকে সাম্যকে মৃত ঘোষণা করা হলেও হত্যাকাণ্ডের ৬ ঘণ্টা পরও ঘটনাস্থল অরক্ষিত ছিল। ঢাবি শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে ঘটনাস্থলটি রক্ষা করে প্রমাণাদি বাঁচানোর চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধান আসামিকে ধরতে পারল না, অথচ শাহবাগ থানার তদন্ত টিমকে পুরস্কৃত করা হলো। পুলিশের এই ধরনের প্রহসনের তীব্র নিন্দা জানাই আমরা।’
পুলিশ কী বলছে
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাৎক্ষণিকভাবে অপরাধীদের ধরতে আমরা শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে তল্লাশি অভিযান শুরু করি। পরে শমরিতা হাসপাতাল থেকে একজন ও বিআরবি হাসপাতাল থেকে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করি।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার ওই দুজনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফোন নম্বর ট্র্যাক করে তৃতীয়জনকে ফার্মগেটের রাজাবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি অফিসে নেওয়া হয়।’
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও দোয়েল চত্বরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব!
এদিকে, পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে বিশ্লেষণ করছে বলে জানালেও রমনা কালী মন্দির ও বাংলা একাডেমি গেটের সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন বায়েজিদ।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ফুটেজ নাকি তাদের কাছে আছে। অথচ শাহবাগ থানার পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান খান আমাকে পার্সোনালি (ব্যক্তিগতভাবে) ডেকে বলেছেন, পুলিশ মন্দিরের গেট ও বাংলা একাডেমি গেটের সিসিটিভি ফুটেজ পায়নি।’
আক্ষেপ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘রমনা কালী মন্দির একটি ধর্মীয় সেনসিটিভ (স্পর্শকাতর) জায়গা। মন্দিরের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ না পাওয়া ও বাংলা একাডেমির ফুটেজ নষ্ট হওয়ায় ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রশাসনের গাফিলতি আছে।’
বায়েজিদের দাবির সত্যতা যাচাই করতে আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না, নাকি কী পাওয়া যায়নি, সেটা এখন বলা যাবে না। আর এটি তদন্তকারী কর্মকর্তা জানেন। আমি তো এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নই। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘তাদের (বায়েজিদ) সঙ্গে কথা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ অবশ্যই আছে। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর দু-তিন দিন চলে গেছে। আমরা বসেছিলাম না, কাজ করেছি। ঘটনার ক্লু বের করার চেষ্টা করছি।’
পরে এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট হওয়ার যে দাবি, সে বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। আমরা অন্তত ১১টি আলামত জব্দ করেছি। এগুলো নিয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’
বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে হত্যার বিচার
সাম্য হত্যার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে শনিবার (১৭ মে) ঢাবি প্রশাসন ও ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলীর মধ্যে বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে।
ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে উপাচার্যও সংহতি প্রকাশ করেছেন। ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, অপরাধীদের আগামীকাল (রবিবার) থেকে রিমান্ড শুরু হবে। দ্রুত তদন্ত কাজ শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।
এ ছাড়া আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এ হত্যার বিচার কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন হবে।’
উদ্যানের বর্তমান হালচাল
সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো ঐতিহাসিক একটি স্থানের নিরাপত্তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যানের নিরাপত্তা জোরদারে বেশ কয়েকটি উদ্যোগও নিয়েছে সরকার।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) থেকে উদ্যানে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। অভিযানে ভ্রাম্যমাণ দোকানপাটসহ কয়েক শ’ অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে সিটি করপোরেশন।
এ ছাড়া রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেটটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ধীরে ধীরে একটি নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক স্থানে রূপান্তর করতে নিয়মিত টহল ও অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম জানিয়েছেন, সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত উদ্যানে অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
তবে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাম্য হত্যার এক সপ্তাহও এখনও পেরোয়নি, অথচ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রাণচাঞ্চল্য কমেনি একটুও। আঁধার নামলেও উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে অনেককে আড্ডা, ঘুরে বেড়ানোসহ একান্তে সময় কাটাতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে জাবি ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি
এসবের মাঝেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল চোখে পড়ে। টহলদল দেখলেই লোকজনকে সরে যেতে দেখা যায়, কিন্তু তারা চলে গেলে আবারও উদ্যানে ঢুকছিল মানুষ।
উপদেষ্টার ঘোষণার পর টিএসসি-সংলগ্ন গেটে দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকটি গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে নিরাপত্তাবাহিনীর অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট-সংলগ্ন গেট গলে উদ্যানে ঢুকতে দেখা যায় অনেককে। অনেককে আবার ছবির হাটের গেট এবং টিএসসি-সংলগ্ন গেটের দেওয়াল টপকেও উদ্যানে ঢুকতে দেখা যায়।
বিষয়টি নিয়ে উপস্থিত এক আনসার সদস্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘উদ্যানের নিরাপত্তা রক্ষায় রাতের শিফটে আমরা মাত্র ৬ জন। এই ছয়জনের পক্ষে এতো বড় উদ্যানে টহল দিয়ে এসব বিষয়ের সমাধান করা কষ্টসাধ্য।’
১৯৯ দিন আগে
ঢাবির রাজনীতিবিষয়ক বিশেষ কমিটির কার্যক্রম শুরু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধরণ ও অনুশীলনের বিষয়গুলো যাচাইয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ কমিটি কাজ শুরু করেছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট হলে কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. শ্যামা হক বিদিশা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল মতিনকে নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- তাহমিদা বেগম, বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আবুল কাসেম ফজলুল হক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা।
বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন, আবাসিক হলগুলোতে ছাত্র রাজনীতি এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কোন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে মূল অংশীজনদের আলোচনা, পরামর্শ ও প্রতিক্রিয়া সহজ করতে একটি পরামর্শ বাক্স স্থাপন ও বিশেষ ই-মেইল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।
কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বিশিষ্ট নাগরিক, সাংবাদিক, ডাকসুর সাবেক নেতা ও অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময় করা হবে।
কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রকৃতি ও অনুশীলন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান করবে।
আরও পড়ুন: ঢাবি ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনায় বিশেষ কমিটি গঠন
৩৭৬ দিন আগে
পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনা কমিটি বাতিলের প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনা কমিটি বাতিল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফাকে 'ইসলাম বিদ্বেষী' আখ্যা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কিছু শিক্ষার্থী।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক সামিনা লুৎফাকে 'ইসলাম বিদ্বেষী' হিসেবে আখ্যায়িত করা নিয়ে সমাবেশে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
ছাত্র আন্দোলনে অধ্যাপক সামিনা লুৎফার উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, এ ধরনের ভিত্তিহীন লেবেলিং বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেও এর দুই সদস্যের বিষয়ে কিছু ধর্মীয় সংগঠনের আপত্তির পরে তা বাতিল করে দেয়। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
৪৩০ দিন আগে
তোফাজ্জল হত্যায় জড়িত অভিযোগে ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ঢাবি ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ
বহিষ্কৃতদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক তিন নেতা আছেন। তারা হলেন- সংগঠনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সাবেক উপসম্পাদক জালাল আহমেদ, গণযোগাযোগ ও উন্নয়নবিষয়ক সাবেক সম্পাদক আহসান উল্লাহ এবং আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক আল হোসেন সাজ্জাদ।
বহিষ্কৃত অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন- মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন; পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মুত্তাকিন সাকিন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মো. ফিরোজ কবির, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষার্থী মো. আব্দুস সামাদ ও ওয়াজিবুল আলম।
আরও পড়ুন: ঢাবি ক্যাম্পাসে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ ৪ জন গ্রেপ্তার
এজাহারভুক্ত আট আসামির মধ্যে জালাল মিয়া, মোহাম্মদ সুমন, আহসান উল্লাহ, মুত্তাকিন সাকিন, আল হোসেন সাজ্জাদ ও ওয়াজিবুল আলমকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্টকে অপসারণ এবং এই পদ পূরণের জন্য নতুন প্রভোস্ট নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: গণপিটুনির প্রতিবাদে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল
৪৩৯ দিন আগে
ঢাবি ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্যের লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে সভায় উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্যরা ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিন্ডিকেটের এক সদস্য জানান, সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে সন্ধ্যা ৭টা থেকে পৌনে ৮টা পর্যন্ত বৈঠক চলে।
সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য বলেন, বৈঠকের মূল আলোচ্য ছাত্র রাজনীতি থাকলেও এই সিদ্ধান্তের ফলে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৪৪১ দিন আগে
গণপিটুনির প্রতিবাদে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনি ও খাগড়াছড়িতে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দিনভর বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারের নেতৃত্বে মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচির সূচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণপিটুনির বিচারের দাবিতে রাজু ভাস্কর্য এলাকায় মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: ঢাবি ক্যাম্পাসে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ ৪ জন গ্রেপ্তার
পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ভেতরে ওই ব্যক্তিকে হত্যার প্রতিবাদে 'নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ' ব্যানারে শিক্ষার্থীরা প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন।
তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন এক পরিবেশ তৈরি করছে, যেখানে 'মোবোক্রেসি'কে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে, যার ফলে এই নৃসংশ মৃত্যু হয়েছে।
বিকেল থেকেই বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাবি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে রাস্তায় নেমে আসেন। সন্ধ্যায় তারা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন করে 'গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট'। ছাত্র রাজনীতি গণপিটুনির মূল কারণ নয়। তাই ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা অযৌক্তিক বলে তারা দাবি করেন।
আরও পড়ুন: ঢাবির হলে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে নতুন বিধিনিষেধ আরোপের প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন, প্রশাসন প্রতিটি হল সঠিকভাবে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বিধিনিষেধের সমালোচনা করে বলেন, প্রশাসনের গাফিলতি হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে 'স্টুডেন্টস রাইটস ওয়াচ' ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেন হলের আরেক দল শিক্ষার্থী। তারা জড়িতদের বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
একই সঙ্গে খাগড়াছড়িতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: সচিবালয়ে ঢাবি শিক্ষার্থী-আনসার সদস্যদের সংঘর্ষে আহত বেশ কয়েকজন
৪৪১ দিন আগে
ঢাবি ক্যাম্পাসে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ ৪ জন গ্রেপ্তার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে চোর সন্দেহে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাসহ চার শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল আমিন জানান, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে শিক্ষার্থীদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তারা হলেন- ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ; মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোত্তাকিন সামিন; খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ সুমন মিয়া এবং ভূগোল বিভাগের সাজ্জাদ আবু সাঈদ।
আরও পড়ুন: ঢাবির হলে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
এর আগে এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় হলের ভেতরে ঢুকে পড়েন তোফাজ্জল নামে ওই ব্যক্তি। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে আটকে রেখে, আগের দিন হল থেকে হারিয়ে যাওয়া ছয়টি মোবাইল ফোন সেট ও মানিব্যাগ চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ওই যুবক বলেন, যদি তাকে কিছু খেতে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আসল চোরদের কথা বলবেন।
ছাত্ররা তাকে ভাত খাওয়ান। কিন্তু ওই যুবক আসল চোরদের বিষয়ে তথ্য দিতে পারেননি। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাত ১০টা থেকে শুরু করে দুই ঘণ্টা ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বিষয়টি প্রক্টরিয়াল টিমকে জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত তোফাজ্জলকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেউ কেউ জানান, তোফাজ্জল একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিরীহ শিক্ষার্থীদের হয়রানি না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি ঢাবির আহ্বান
নিহত তোফাজ্জল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা। অনেক আগেই তার বাবা-মা দুজনই মারা গেছেন।
এ ঘটনায় ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষক ড. আলমগীর কবিরকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক জহির রায়হান, মোহাম্মদ মাহাবুব আলম, ড. আসিব আহমেদ, ড. তৌহিদুল ইসলাম ও এ কে এম নূরে আলম সিদ্দিকী।
আরও পড়ুন: প্রশাসনের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান, ঢাবিতে সংঘর্ষ
৪৪১ দিন আগে