চীন-ভারত সম্পর্ক
ভারতকে কি চীনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন ট্রাম্প?
সীমান্ত-বিরোধসহ এশিয়ার আধিপত্য নিয়ে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব নতুন নয়। দশকের পর দশক ধরে চলে আসা এই দ্বন্দ্ব নিয়ে যুদ্ধের ময়দানেও নেমেছে এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করেছে ভারত। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গোটার বিশ্বের নজরে আসে।
চীন দুই দেশেরই অভিন্ন শত্রু হওয়ায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বন্ধুত্বকে অনেকেই স্বাভাবিক হিসেবে দেখছিল। তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্কারোপের সিদ্ধান্তে মোদি-ট্রাম্পের ‘ভালো বন্ধুত্বে’ বাজছে ভাঙনের সুর। যুক্তরাষ্ট্রের চড়া শুল্কের খড়গের নিচে পড়ে চীনের দিকে ঝুঁকছে ভারত। অন্তত নরেন্দ্র মোদির আসন্ন চীন সফর এই সম্ভাবনার প্রদীপ নতুন করে জ্বালানি পেয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে আগ্রহী অনেকের মনেই এখন একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে— তবে কী ট্রাম্পের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে শি জিনপিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন মোদি?
নিষেধ সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় মোদির ওপর চটেছেন ট্রাম্প। সে কারণেই ভারতের ওপর নেমে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কশাস্তি। দিল্লির ওপর প্রথমে ২৫ শতাংশ, পরে আরও ২৫ শতাংশসহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।
তবে ট্রাম্পের কাছে নতি স্বীকার করে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করা তো দূর, যেদিন ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্কের হুমকি দিলেন তিনি, সেদিনই জানা গেল চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি। শুধু মোদি নন, সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও যাচ্ছেন চীনে।
সিএনএন বলছে, ভারত-চীন সম্পর্কের টানাপোড়েনের বরফ যদিও আগেই গলতে শুরু করেছিল, তবে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মূলত সেই প্রক্রিয়ায় গতির সঞ্চার করেছে বলে মত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের।
ওয়াশিংটনের সঙ্গে এখন খুবই অস্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক। কারণ কৌশলগত অংশীদার হোক কিংবা ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন কার সঙ্গে কেমন আচরণ করবে তা বলা মুশকিল। গত মে মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বাণিজ্য প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। অথচ সেটি পরে আবার ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনেন তিনি।
আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি আরও ৯০ দিন বাড়ালেন ট্রাম্প
আবার রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে ভারতের ওপর খড়গহস্ত হলেও চীনের ওপর মোটেও বিমাতাসুলভ আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে না ট্রাম্পকে। রাশিয়ার তেল ভারতের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে কেনে চীন, কিন্তু বেইজিংয়ের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা বা বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করা তো হয়নি-ই, উল্টো চীনের ওপর পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপসহ অন্যান্য বাণিজ্যনীতি কার্যকর করার দিনক্ষণ আরও ৯০ দিনের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ একই কারণে চীনকে বাগে রাখতে বহু বছর ধরে যে দেশটিকে বিকল্প শক্তি হিসেবে গড়ে তুলেছিল যুক্তরাষ্ট্র, সেই ভারতকে এবার শাস্তির মুখে দাঁড় করিয়েছেন ট্রাম্প।
এসবের মাঝেই গত সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিয়ানজিন শহরে অনুষ্ঠিতব্য এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফর করবেন তিনি। এর আগে, ২০১৮ সালে মোদির সর্বশেষ চীন সফরও ছিল এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই।
১১২ দিন আগে
নিখোঁজ সৈনিককে ফিরিয়ে দিতে ভারতের প্রতি চীনের আহ্বান
চীন-ভারতের মধ্যকার প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে দুদেশের পাহাড়ি সীমান্তে নিখোঁজ হওয়া চীনা সৈন্যকে ভারত দ্রুত ফিরিয়ে দেবে বলে আশা করছে চীন।
১৮৭১ দিন আগে