পবিপ্রবি
বরাদ্দ সংকটে হুমকিতে পবিপ্রবির ঐতিহ্যবাহী দুটি লেক
অবহেলা আর অযত্নে ক্রমেই ঝুঁকিতে পড়ছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)-এর স্বপ্নিল সৌন্দর্যের অন্যতম প্রতীক, ঐতিহ্যবাহী লাল কমল ও নীল কমল লেক। লেকদুটির পার্শ্ববর্তী মাটি সরে গিয়ে এমব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় জলবায়ু ও দুর্যোগপ্রবণ আবহাওয়ায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের একাধিক শিক্ষক জানান, সম্প্রতি টানা বৃষ্টিপাত এবং কালবৈশাখী ঝড়ের প্রভাবে লেকদুটির পাড় ভেঙে পড়ছে। বিশেষ করে লাল কমল লেকের পাশে অবস্থিত প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো নারিকেল গাছ ও এক যুগেরও বেশি বয়সী মেহগুনি গাছগুলোর গোড়ার মাটি সরে গিয়ে গাছগুলো এখন যেকোনো সময় উপড়ে পড়ার আশঙ্কায় আছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনৈতিক সংকট বিরাজ করলেও পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনৈতিক সংকট প্রকট। তবুও আমরা পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি।’
আরও পড়ুন: বৈসাবিকে ঘিরে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ফেরাতে মারমাদের উদ্যোগ
তিনি আরও বলেন, ‘লাল কমল ও নীল কমল নামের দুটি লেক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই দুটি লেক শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, বরং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও স্থানীয় জলবায়ু নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক। তাই লেক দুটির চারপাশে পাইলিংয়ের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে এ বিষয়ে বিশেষ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা ইউজিসির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছি এবং বিশ্বাস করি, কমিশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে এ বছরের বাজেট থেকেই অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেবেন।’ তিনি গণমাধ্যমসহ সব মহলের সহায়তা কামনা করেন, যাতে এই উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ক্যাম্পাস গড়তে আমাদের প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের উপপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মুহাইমিনুল আলম ফাইয়াজ, কৃষি অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ড. সগিরুল ইসলাম মজুমদার ও ড. মুহাম্মাদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘লেকদুটির প্রাকৃতিক পরিবেশ শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, স্থানীয় বাসিন্দা ও লেকের পাড়ের মেহগনি গাছগুলোতে অতিথি পাখিদের আবাসস্থল হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই লেক ঘিরেই পবিপ্রবির জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে।’
আরও পড়ুন: রূপসা নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ
আইন অনুষদের শিক্ষার্থী মীর মো. নুরুননবী, ইএসডিএম অনুষদের শিক্ষার্থী ও ইএসডিএম ক্লাবের সভাপতি আফিয়া তাহমিন জাহিন এবং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারদিন হাসান বলেন, ‘প্রতিদিন ক্লাস শেষে আমরা এখানের দৃষ্টিনন্দন কাঠের ব্রিজের ওপর ও লেকের পাড়ের বেঞ্চের ওপর বসে একটু স্বস্তি খুঁজি। কিন্তু এখন চারপাশের ভাঙা পাড় ও গাছের হেলে পড়ার ভয়ে আতঙ্ক নিয়ে হাঁটতে হয়। এটা শুধু সৌন্দর্যের নয়, নিরাপত্তার বিষয়ও।’
কর্মচারী সমিতির সদস্য মো. মোশারেফ হোসেন, মাসুম বিল্লাহ, রেদোয়ানুল ইসলাম রমজান ও কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে লেক পাইলিংয়ের দাবি জানিয়ে আসছি। এটা অল্প পয়সায় মেরামতের কাজ নয়, ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ তারা যেন এবছরের বিশেষ অর্থ বরাদ্ধ দিয়ে আমাদের এটার স্থায়ী সমাধান করে দেন।’
পর্যটক হিসেবে আগত জয়পুরহাট জেলার রোজিনা আক্তার বলেন, ‘এমন শান্ত পরিবেশ খুব কম জায়গায় পাওয়া যায়। কিন্তু ভাঙা পাড় আর ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো দেখে হতাশ হয়ে যেতে হয়। কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দুর্ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা মো. শহীদ সরদার, সাইদুর রহমান খান, রিয়াজ কাঞ্চন ও কামাল হোসেন বলেন, ‘এই লেক দেখতে অনেক মানুষ আসে, আমাদের দোকানপাটও চলে ভালো। কিন্তু যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের রুজি-রোজগারও বন্ধ হয়ে যাবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, শিক্ষার পরিবেশ, জননিরাপত্তা এবং স্থানীয় অর্থনীতিও হুমকির মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে জাবিতে চালু হলো ইলেকট্রনিক কার্ট গাড়ি
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশ সচেতন মহল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)র প্রতি অনতিবিলম্বে এ বছরের বাজেট থেকে প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে লাল কমল ও নীল কমল লেকের চারপাশে টেকসই পাইলিং ও সংরক্ষণের ব্যবস্থার জোর দাবি জানিয়েছেন।
২২৩ দিন আগে
পবিপ্রবিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ৪
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শফিকুর রহমান নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও চারজন শ্রমিক।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক মসজিদের পাশে নির্মিত ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচারাল ভবনের ছাদে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: উল্লাপাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ছাদ ঢালাই দেয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে রাতেই রড দিয়ে ছাদের কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। রডের সঙ্গে বৈদ্যুতিক মেইন লাইনের সংযোগ হয়ে ছিটকে পড়ে ইমরান হোসেন (২৫), মো. মনির (২৭), শফিকুর রহমান (৩৮) সহ চার জন মারাত্মক স্পৃষ্ট হয়। এতে শ্রমিকদের প্রায় ৭০ শতাংশ শরীর পুড়ে দগ্ধ হয়। আহত শ্রমিকদের মধ্যে শফিকুর রহমানের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে।
পবিপ্রবি হেলথকেয়ার সেন্টারের প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. এ. টি. এম. নাসির উদ্দীন বলেন, আহত শ্রমিকদের হেলথ কেয়ারে আনলে দেখা যায় শ্রমিকদের শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে কোন ধরণের আশংকা থাকবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের আরও বেশি সচেতন হওয়া দরকার ছিলো। এ ধরণের ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: কুমারখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে লাইনম্যানের মৃত্যু
চরফ্যাশনে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু
৯৯৯ দিন আগে
পবিপ্রবিতে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে।
১৮২৮ দিন আগে
পবিপ্রবিতে ১০ দফা দাবিতে কর্মচারীদের মানববন্ধন
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) আপ-গ্রেডেশন ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।
১৮৭১ দিন আগে