পি কে হালদার
পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে রায়ের দিন ধার্য
গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে করা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় রায়ের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আগামী শনিবার (৮ অক্টোবর) এ রায় ঘোষণা করা হবে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ তারিখ র্নির্ধারণ করেন। দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মদ আলী সালাম এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: এরকম কতজন পি কে হালদার আছে, জানতে চাই: ফখরুল
আসামিদের মধ্যে সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা, অবন্তিকা বড়াল ও শঙ্খ বেপারী কারাগারে আছেন। এদিন শুনানির সময় তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
তিনি আরও জানান, পি কে হালদারসহ ১০ জন পলাতক। এ কারণে তারা আইনি লড়াই করতে পারেননি।
পলাতক অপর আসামিরা হলেন- পি কে হালদারের মা লিলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হওয়ায় সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছে দুদক। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, দুদক অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। কাজেই তারা খালাস পাবেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পি কে হালদার বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ নিজ দখলে রেখেছেন।
মামলাটি তদন্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। অভিযোগপত্রে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ কানাডিয়ান ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশটিতে পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর এ মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১০৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: পি কে হালদারসহ ১২৯ ঋণখেলাপিকে হাইকোর্টে তলব
এরকম কতজন পি কে হালদার আছে, জানতে চাই: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিদেশে অর্থ পাচারকারী এবং তাদের মদদদাতাদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের প্রশ্ন এরকম কতজন পি কে হালদার আছে, আর এরকম কতজন মানুষ আছে? আমরা জানতে চাই, এই ধরনের কত টাকা পাচার হয়েছে? কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে পাচার হল? কারা তার সঙ্গে জড়িত ছিল? কারা মদদ দিয়েছে? সেই বিষয়গুলো পরিষ্কার করে জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বিএনপি নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়িত্ব দুর্নীতি, চুরি ও অর্থ পাচারের ঘটনা তদন্ত করে ফাঁস করা। কিন্তু দুদক দীর্ঘদিন ধরে শুধু বিএনপি নেতাদের হয়রানি করছে।
বর্তমান সরকারের সঙ্গে জড়িত রাঘব বোয়াল ধরতে এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে দুদককে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার সাম্প্রতিক মন্তব্যের মাধ্যমে নিজেই স্বীকার করেছেন যে তাদের দলের নেতারা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। তিনি বলেছেন, যারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে তাদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেয়া হবে না।’
দেশের বর্তমান দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই মিলে কাজ করি এবং এই ভয়ঙ্কর সরকারকে অপসারণ করতে এবং সত্যিকারের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করি।’
কর্মসূচিতে বিএনপির সিনিয়র নেতারাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পিকে হালদারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য জানানো হয়নি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পিকে হালদার ভারতে গ্রেপ্তার
পি কে হালদারসহ ১২৯ ঋণখেলাপিকে হাইকোর্টে তলব
প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে থাকা পি কে হালদারসহ ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) ১২৯ ঋণখেলাপিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ২৪ ও ২৫ মে সকাল সাড়ে ১০টায় তাদেরকে আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে কবে, কীভাবে টাকা পরিশোধ করবেন সে বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
আদালত তার আদেশে আরও বলেছেন, এসব ঋণখেলাপিকে কিস্তিতে টাকা পরিশোধের প্ল্যান (পে-প্ল্যান) নিয়ে আসতে হবে যাতে তারা ধীরে ধীরে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির পাওনা পরিশোধ করতে পারে।
আইএলএফএসএল থেকে ঋণগ্রহণকারী ব্যক্তি ও সংস্থার তালিকা দাখিল করে প্রয়োজনীয় আদেশ চেয়ে আইএলএফএসএল’র দায়ের করা আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক কোম্পানি বেঞ্চ গত ১৬ মার্চ এই তলবের আদেশ দেন। ওই আদেশের কপি লেখার পর তাতে বিচারকের স্বাক্ষর শেষে বুধবার লিখিত আদেশ প্রকাশ করেন আদালত।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট জব্দ থাকার পরও পিকে হালদার কীভাবে বিদেশে, জানতে চায় হাইকোর্ট
আইএলএফএসএল’র আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, পি কে হালদারসহ ১২৯ ঋণখেলাপির কাছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পাওনা প্রায় ১৮০০ কোটি টাকা। গ্রাহকের এই টাকা কবে, কীভাবে তারা পরিশোধ করবেন তা জানতে আদালত তলব করেছেন। ১২৯ ঋণ খেলাপির মধ্যে ১০০ জনকে ২৪ মে ও ২৯ জনকে ২৫ মে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও তার বেশি অর্থঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়া এমন ২৮০ ব্যক্তিকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।
আদালতের আদেশে গত ২৩ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৫৮ জন ঋণখেলাপি হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন। হাইকোর্ট তাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, আগে টাকা দিবেন তারপর আলোচনা, না দিলে কারাগারে যেতে হবে। আদালতের তলব আদেশের পরও হাজির না হওয়ায় পিপলস লিজিংয়ের ১২২ ঋণখেলাপির খেলাপির বিদেশ গমনে গত ৯ মার্চ নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। ঋণখেলাপিদের থেকে টাকা আদায়ে হাইকোর্টের আদেশের ধারাবাহিকতায় এবার ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ১২৯ ঋণখেলাপিকে তলব করলেন আদালত।
পি কে হালদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৫ মামলা
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের (আইএলএফএস) ৩৫১ কোটি টাকা আত্মসাত করায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ৩৩ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দেশে ফেরা মাত্রই পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা পাচার করার ঘটনায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল'র) পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পিকে হালদার) বিমান থেকে দেশের মাটিতে পা রাখার সাথে সাথে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ হেফাজতে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।