ব্যাংকিং খাত
খাদের কিনারা থেকে ফিরে এসেছে দেশের ব্যাংক খাত: গভর্নর
গত এক বছরে দেশের ব্যাংকিং খাত খাদের কিনারা থেকে ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলেই এই খাতটি ধ্বংসের মুখ থেকে ফিরতে পেরেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রবিবার (১০ আগস্ট) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, ‘গত বছরের আগস্টে সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ব্যাংক খাত একেবারে খাদের কিনারায় ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দুটি প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল—ম্যাক্রোইকোনমি স্থিতিশীল করা এবং আর্থিক খাত সংস্কার। এক বছরে পূর্ণ সংস্কার সম্ভব নয়, তবে আমরা প্রতিটি খাতে সংস্কার শুরু করেছি।’
আরও পড়ুন: পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে: গভর্নর
ঋণ সংযোগ (লাইন অব ক্রেডিট) বজায় রাখতে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানান।
গভর্নর বলেন, ‘আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি— আমরা আমাদের সব পাওনা পরিশোধ করব, এবং আমরা তা করেছি। আমাদের অবস্থা শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের মতো হয়নি।’
গত এক বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং রপ্তানি আয়ই ঋণ পরিশোধে বড় সহায়তা করেছে বলে মনে করেন তিনি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, গত বছরের ১৪ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে এক ডলারও বিক্রি করেনি, বরং বাজারে চাপ সত্ত্বেও প্রতি ডলার ১২২ টাকায় কিনেছে। ফলে বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে এবং ভবিষ্যতে তা ৫ শতাংশের নিচে নামবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
গভর্নর আরও বলেন, ‘এখন দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টস উদ্বৃত্তে আছে, তবে বিনিয়োগ আকর্ষণে এখনও পিছিয়ে রয়েছে অর্থনীতি।’
‘নির্বাচনের আগে বড় বিনিয়োগ আসবে না, তবে আমরা নির্বাচন-পরবর্তী সময়ের জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
কেন ব্যাংক কমিশন গঠন করা হয়নি— এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কমিশন করলে সিদ্ধান্ত নিতে ৬ থেকে ৯ মাস সময় লাগত। তাই আমরা ব্যাংক খাত সংস্কার, বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করেছি।’
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করে এর জন্য ৮ থেকে ১০টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
গভর্নর জানান, বৃহৎ পরিসরে আইনি সংস্কার চলছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংস্কার (যাতে সম্পদ পুনরুদ্ধারের ধারা যুক্ত করা হচ্ছে) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার সংশোধনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জবাবদিহিতা ও স্বাধীনতা বাড়ানো। এ ছাড়া দীর্ঘদিনের ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স আইন ও ঋণ আদালত আইন সংশোধন করা হবে।
অনিয়মের কারণে কোনো ব্যাংকের তারল্য সংকট দেখা দিলে ব্যাংলাদেশ ব্যাংক যেন সেটি অধিগ্রহণ করতে পারে, এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রেজল্যুশন অর্ডিন্যান্সেও সংশোধন আনার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংকগুলোকে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় একীভূত করা হবে: গভর্নর
সবাইকে সতর্ক করে গর্ভনর বলেন, ‘আর কোনো ছাড় নয়। কোনো ব্যাংক যদি সঠিকভাবে চলতে না পারে, বাংলাদেশ ব্যাংক তা নিজের হাতে নেবে।’
সব ব্যাংক পর্যবেক্ষণের জন্য ‘৩৬০ ডিগ্রি মনিটরিং’ নামে একটি সংস্থা গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্যাশলেস ব্যবস্থায় রূপান্তরের ওপর জোর দেন গর্ভনর। এ জন্য কিউআর কোড ব্যবহারে উৎসাহ, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের প্রসার, ক্ষুদ্র ঋণ (ন্যানো লোন), স্কুল পর্যায়ে ব্যাংকিং শিক্ষা, শিক্ষার্থীদের জন্য ২০০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, আবাসন খাতে সংস্কার, রাজস্ব বিভাগ পুনর্গঠন এবং স্মার্টফোনের দাম কমিয়ে ডিজিটাল ব্যাংকিং বিস্তারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
১১৭ দিন আগে
ব্যাংকিং খাতের সংস্কার ও অর্থ পাচার রোধে আইএমএফের কারিগরি সহায়তা চায় বাংলাদেশ: অর্থ উপদেষ্টা
বাংলাদেশ ব্যাংকিং খাত সংস্কার, মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ ও কর সংস্কারসহ উদ্বেগের মূল ক্ষেত্রগুলোতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কারিগরি সহায়তা চেয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, 'আমরা ব্যাংকিং খাত সংস্কার, অর্থপাচার মোকাবিলা ও কর সংস্কার বাস্তবায়নে কারিগরি সহায়তা চেয়েছি।’
দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং অতিরিক্ত তহবিলের বিধানসহ সম্ভাব্য সংস্কার অনুসন্ধানের জন্য এক সপ্তাহব্যাপী সফরে এসেছে আইএমএফ মিশন চিফ ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি।
এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলোতে সমর্থন করার জন্য বাহ্যিক সংস্থানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছিলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের স্থানীয় সম্পদ যতটা সম্ভব ব্যবহার করব, তবে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের জন্য আমাদের বিদেশি সহায়তার প্রয়োজন হবে।’
আইএমএফ প্রতিনিধি দলের এই সফরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জোরদার এবং সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।
ব্যালেন্স অব পেমেন্ট সাপোর্টের পাশাপাশি ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতের সংস্কার নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে জানিয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, 'যেসব ক্ষেত্রগুলোতে আইএমএফের সহায়তা সবচেয়ে বেশি লাভজনক হতে পারে সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’
অর্থ উপদেষ্টা আইএমএফ প্রতিনিধিদলকে জানান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, তবে তা পুরোপুরি বাস্তবায়নে সময়ের প্রয়োজন হবে।
অক্টোবরে বাংলাদেশ আইএমএফের সঙ্গে আরও আলোচনায় জড়িত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেসব আলোচনায় সহায়তা ও নীতি নির্দেশনার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঋণদাতা সংস্থার নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া হবে।
এছাড়াও আইএমএফের প্রতিনিধি দল উচ্চ ভর্তুকি ব্যয়, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ ও সরকারি ব্যয়ে সম্ভাব্য কর্তনের খাতগুলোসহ দেশের আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলো পর্যালোচনা করবে।
চলমান ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের পাশাপাশি বাজেট সহায়তার জন্য সরকার এরইমধ্যে আইএমএফের কাছে আরও ৩ বিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে।
৪৩৭ দিন আগে
আত্মসাতের টাকা ১ লাখ কোটি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাংকিং খাত সংস্কারের উদ্যোগ
দুর্নীতিবাজদের আত্মসাৎ করা অর্থ এবং দেশে ও বিদেশে রাখা উভয় সম্পদ পুনরুদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একই সঙ্গে দেশের ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠনের জন্য উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
এছাড়া আর্থিক খাতকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার বৃহত্তর উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিদেশে পাচার হওয়া এসব সম্পদ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ইসলামী ব্যাংকসহ এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ৬ ব্যাংকে ঋণসীমা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
প্রক্রিয়াটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ বলে স্বীকার করে সরকার আর্থিক খাতের সংস্কারের অঙ্গীকারের ওপর জোর দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, এই কৌশলের মূল উপাদান হবে ব্যাংকিং কমিশন প্রতিষ্ঠা করা, যা প্রতিটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিষয়ে তদন্ত, দুর্নীতির সম্পূর্ণ মাত্রা উন্মোচন এবং কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করবে। সারা বিশ্বের ব্যাংকিং নিয়ম মেনে চলা নিশ্চিত করতে এই খাতকে ঢেলে সাজাতে পরিকল্পনাটি ছয় মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সব মান নিশ্চিত করতে সক্ষম হওয়া এবং একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা। তবে এ লক্ষ্য অর্জনে কার্যক্রমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কারিগরি সহায়তা ও অর্থায়ন প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুন: ইসলামী ব্যাংকের ৬ ডিএমডিসহ শীর্ষ ৮ কর্মকর্তা বরখাস্ত
অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ব্যাংকিং খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়টি প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এসব সংস্কার করা হচ্ছে।
প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী আত্মসাৎ করা মোট অর্থের পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে সঠিক সংখ্যা নির্ধারণে এখনো কাজ চলছে।
এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি ব্যাংক সংস্কারের উদ্যোগের অংশ হিসেবে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে। অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও একই ধরনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে।
পাচার হওয়া অর্থের সন্ধান এবং সেগুলো ফিরিয়ে আনতে সরকার বিদেশি সংস্থাগুলোর সহায়তাও চেয়েছে। নতুন ব্যবস্থাপনা দলগুলো ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণের সঠিক তথ্য সংগ্রহ এবং সেগুলো পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখতে দায়বদ্ধ থাকবেন।
আরও পড়ুন: এনবিআর পরিদর্শনে গিয়ে কাজের গুরুত্ব তুলে ধরলেন অর্থ উপদেষ্টা
৪৬৩ দিন আগে
ব্যাংকিং খাতে প্রাথমিক স্তরে নারী নিয়োগ দ্বিগুণ হলেও পরিচালনায় এখনও পিছিয়ে
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকিং খাতে নারীদের কর্মসংস্থান বেড়েছে ১ হাজার ৪০৭টি।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে নারীদের কর্মসংস্থানের হার ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যেখানে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের মাত্র ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ সদস্য নারী।
লিঙ্গ সমতা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬১টি ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৪৬ জন, যা ব্যাংকগুলোর মোট কর্মীর ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালে তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৪৩টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ২২ হাজার ২৪৮ জন, যা মোট কর্মীর ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।
বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে নারী কর্মকর্তার অনুপাত সবচেয়ে বেশি। যা অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বোর্ড সদস্য হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল মাত্র ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এর মধ্যে বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে বোর্ডে নারীদের অংশগ্রহণের হার ১৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিকভাবে মুক্তির মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
অন্যদিকে আলোচিত সময়ে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নারী সদস্য নেই।
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে ব্যাংকগুলোর জমা দেওয়া প্রতিবেদন অনুসারে, নারী কর্মীদের অংশগ্রহণের হার চাকরির প্রাথমিক পর্যায়ে ১৭ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং মাঝারি পর্যায়ে ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ, উচ্চ পর্যায়ে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশের তুলনায় বেশি।
প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাংকিং খাতে নারীর অংশগ্রহণ বেশি।
একই সঙ্গে ৩০ বছরের কম বয়সী নারী কর্মীদের অংশগ্রহণের হার ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ; যা তফসিলি ব্যাংকের তুলনায় এ হার দ্বিগুণেরও বেশি। তফসিলি ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশের বেশি।
২০২৩ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্টে বাংলাদেশের অবস্থান ১২ ধাপ এগিয়েছে।
আরও পড়ুন: নারী দিবসে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সমাবেশ বানচালের অভিযোগ
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্য বিবেচনায় ২০২২ সালের ৭১তম স্থান থেকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ৫৯তম।
সিডিপির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সাধারণত নারীর কর্মসংস্থান বাড়ছে এবং নারীর কর্মসংস্থানের অনুপাত কমার সঙ্গে সেই হিসাবের মিল নেই।
ব্যাংকিং খাতে নারীর কর্মসংস্থানের অনুপাত কেন কমছে তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গ বৈষম্য কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করে ব্যাংকিং খাতে নারীর কর্মসংস্থান বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন উভয় ক্ষেত্রেই নারীদের অগ্রাধিকার দেয়। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সম্পৃক্ত নারীদের উৎসাহিত করে ঋণ বিতরণ ও সুদ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও কাজ করে যাচ্ছে। নারী কর্মীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ ও ডে কেয়ারের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি সেক্টরে নারীদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করতে আগ্রহী: নসরুল হামিদ
৬৩৬ দিন আগে
ব্যাংক ও ব্যাংকিং খাতের তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করুন: অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
অর্থনীতি নিয়ে দেশের অন্যতম শীর্ষ চিন্তাবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ব্যাংকিং খাত একটি দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড।
তিনি বলেন, 'ব্যাংকগুলো যখন ভালো করেছে, তখন অন্য খাতগুলোও ভালো করছে।’
অর্থনীতিকে সচল রাখতে তারা যে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পাদন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের একটি ব্যাংকের কর্মক্ষমতা জানার অধিকার রয়েছে- যেখানে তারা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ জমা দিচ্ছে। একটি ব্যাংকের আর্থিক কর্মক্ষমতা সম্পর্কে তথ্য গ্রাহকদের জন্য সর্বজনীনভাবে উপলব্ধ করা উচিত বলেও মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে তথ্যভিত্তিক গবেষণাগ্রন্থ 'ব্যাংকিং অ্যালমানাক'র পঞ্চম সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, ব্যাংকিং অ্যালমানাক বই প্রকাশ দেশের আর্থিক খাতের জন্য একটি ভালো উদ্যোগ।
এই গতি ধরে রাখতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের তথ্য সন্নিবেশ করে নিয়মিত বই প্রকাশ করা হচ্ছে।’ 'প্রকাশনা রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে ব্যাংকার, ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করে এমন লোক, গবেষক, বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীদের সবার জন্য বইটি সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’
আরও পড়ুন: ব্যাংককে সুরা কৃষ্ণ চাকমার জয়জয়কার
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ব্যাংকিং অ্যালমানাকের সম্পাদকীয় বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং অ্যালমানাক দেশের প্রথম এ ধরনের প্রকাশনা উদ্যোগ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিটি সংস্করণে নতুন এবং জনস্বার্থের তথ্য যুক্ত করার চেষ্টা করি। আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এই জাতীয় প্রকাশনার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল পাওয়া যায় না। তারপরও আমরা সর্বশেষ তথ্য দিয়ে প্রকাশনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করছি।’
সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংকগুলো আমাদের যে তথ্য দিচ্ছে, আমরা তা অন্তর্ভুক্ত করে দিচ্ছি। অন্তত দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা সম্ভব। ভবিষ্যতে এটিকে আরও সমৃদ্ধ তথ্য ভান্ডারে পরিণত করার চেষ্টা করা হবে।’
এক্সিম ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ আব্দুল বারী, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও ফার্স্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নুরুল আমিন এবং ব্যাংকিং অ্যালমানাকের প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বারোপ
৬৬৩ দিন আগে
৫ বছরের মধ্যে ব্যাংকিং খাত ডিজিটালাইজড হবে: প্রতিমন্ত্রী পলক
দেশের ব্যাংকিং খাতকে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ডিজিটালাইজড করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
২১৪৮ দিন আগে
অন্যতম সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী ইউসিবি
ব্যাংকিং খাতে অন্যতম সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী নির্বাচিত হয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেড।
২২০৯ দিন আগে