শিশু
মাদারীপুরে এক দিনে পৃথক স্থান থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার
মাদারীপুরের শিবচর ও কালকিনি উপজেলা থেকে একই দিনে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা দুজনই পানিতে ডুবে নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবারের (২ সেপ্টেম্বর) এই ঘটনাদুটির একটি ঘটনা ঘটেছে শিবচর পৌরসভার ডিসি রোড এলাকায়, অন্যটি কালকিনি উপজেলার চরফতেপুর বাহাদুর এলাকায়।
গতকাল দুপুরে শিবচরের ডিসি রোড এলাকার মাওলানা রফিকুল ইসলামের স্ত্রীকে অজ্ঞান করে তিন মাস বয়সী শিশু মারিয়ামকে দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
শিশুটির মা কানন বেগম বলেন, দুপুরে মারিয়ামকে নিয়ে ঘর থেকে রাস্তায় এলে তাকে অজ্ঞান করে দুর্বৃত্তরা শিশুটিকে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন ঘণ্টা খোঁজ করে বাড়ি পাশের পুকুর থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে পুকুরে ডুবে দুই শিশু নিহত
শিশুটির বাবা মাওলানা রফিকুল জানিয়েছেন, তার স্ত্রীর মাথায় সমস্যা রয়েছে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখেন। সেখানে দেওয়া যায়, মা কানন বেগম বাচ্চা নিয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন এবং পরে একা ঘরে ঢুকছেন। পরে পুলিশ তিন ঘণ্টা খোঁজ করে সন্ধ্যায় পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।
অন্যদিকে, কালকিনির চরফতেপুর বাহাদুর এলাকার একটি খালে নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পর মঙ্গলবার ওয়ালিদ (৩) নামে আরেকটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরিবারে সদস্যরা জানান, সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাড়ির পাশে খালের কাছে খেলতে গিয়ে পরিবারের অলক্ষে পানিতে পরে ডুবে যায় ওয়ালিদ। এরপর কালকিনি উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের লোক ও ডুবুরি দিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে উদ্ধার করা যায়নি। পরে মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়।
কালকিনি থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
৯৩ দিন আগে
খাবার আনতে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীকে ‘গরম খুন্তির ছ্যাঁকা’ দিলেন মাদরাসা সুপার
মাগুরা জেলার শ্রীপুরে খাবার আনতে দেরি হওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মাদারাসা সুপার মাওলানা আবু সাইদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে উপজেলার নাকোল-কমলাপুর দারুল উলুম ইসলামি মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম জুনায়েদ হোসেন (১২)। সে মাগুরা শহরের আদর্শপাড়ার ভাড়া বাড়ির বাসিন্দা সুজন মিয়ার ছেলে।
নাকোল থানা পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতনের পর শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি, বরং কাউকে কিছু না জানানোর জন্য ভয় দেখিয়ে মাদরাসায় আটকে রাখা হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) জুনায়েদ পালিয়ে বাড়ি ফিরে গেলে তার বাবা সুজন মিয়া নাকোল পুলিশ ফাঁড়িতে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
সুজন মিয়া জানান, চার বছর আগে ছেলেকে হাফেজ বানানোর উদ্দেশ্যে ওই মাদরাসায় ভর্তি করেন। কিন্তু সেখানে তুচ্ছ ঘটনায়ও মাদরাসার সুপার মাওলানা আবু সাইদের নির্যাতনের শিকার হতে হতো তার ছেলেকে।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে বাংলাদেশি যুবকের নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি
তিনি বলেন, গত রাতে সুপারের খাবার আনতে জুনায়েদকে মাদরাসার পাশে একটি বাড়িতে পাঠানো হয়। সেখানে গৃহস্থের খাবার প্রস্তুতে দেরি হওয়ায় জুনায়েদের ফিরতেও দেরি হয়। কিন্তু এ জন্য জুনায়েদকে অপরাধী করে নির্যাতন করা হয়।
শিশু জুনায়েদ জানায়, রাত ৯টার দিকে খাবার নিয়ে মাদরাসায় ফিরলেও সুপারের ঘনিষ্ট দুই ছাত্র ওয়ালিদ ও সিজান তার হাত বেঁধে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে পরনের কাপড় খুলে ফেলে। এরপর মোমবাতির আগুনে স্টিলের খুন্তি গরম করে শরীরে ছ্যাঁকা দেয়। নির্যাতনের বিষয়টি প্রকাশ করলে আরও মারধরের হুমকিও দেওয়া হয় তাকে।
এ বিষয়ে এ ঘটনার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে মাদরাসার সুপার মাওলানা আবু সাইদ বলেন, রাতে তাদের মাদরাসায় তালা দিয়ে নিজ ঘরে যাই। কিন্তু কখন এটি ঘটেছে জানা নেই।
নাকোল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুকুল হোসেন জানান, শিশুটির বাবার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৯৭ দিন আগে
সিলেটে নিখোঁজের একদিন পর নদীতে মিলল শিশুর লাশ
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় নিখোঁজের একদিন পর আরিয়ান আহমদ (৬) নামের এক শিশুর লাশ সুরমা নদীতে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মাহতাবপুরসংলগ্ন সুরমা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।আরিয়ান উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মির্জারগাঁও গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
এর আগে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে গ্রামের পূর্বের বালুর মাঠ থেকে সে নিখোঁজ হয়।
লামাকাজি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন নদীতে শিশুটির লাশ ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। সে সাঁতার জানত না। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।’
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সাঁতার না জানায় নদীর পানিতে ডুবে শিশুটি মারা গেছে।
১৩১ দিন আগে
বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে চায় শিশু হোসাইন
সাত মাস আগে মায়ের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে হারিয়ে যাওয়া চার বছরের শিশু হোসাইনের জায়গা হয়েছে কুমিল্লার দেবীদ্বারে সরকারি শিশু পরিবারে। তবে শিশুটি এখন ফিরতে চায় তার পরিবারের কাছে।
যে বয়সে বাবা-মায়ের আদর, স্নেহ আর ভালোবাসায় থাকার কথা, সে বয়সে মা-বাবাকে হারিয়ে তার আশ্রয় হয়েছে সরকারি শিশু পরিবারে। ছোট বাচ্চাটি তাই যেকোনোভাবে ফিরে যেতে চায় তার বাবা-মায়ের কাছে।
জানা গেছে, সাত মাস আগে তার মায়ের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে হারিয়ে যায় হোসাইন। মাকে খুঁজতে খুঁজতে ট্রেনে চড়ে চলে আসে কুমিল্লার লাকসাম স্টেশনে। সেখান থেকে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও শিশুটির পরিবারের কোনো খোঁজ না পেয়ে লাকসাম সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে তাকে দেবীদ্বার সরকারি শিশু পরিবারে পৌঁছে দেয় পুলিশ।
হোসাইন জানিয়েছে, তার বাবার নাম আলমগীর হোসেন, মায়ের নাম জরিনা ও গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর নামাত।
শিশুটি আরও জানিয়েছে, তার বাবা নোয়াখালির একটি দোকানে কাজ করেন। হাসান নামে তার একটি ছোট ভাই রয়েছে। এ ছাড়া আর কিছুই সে বলতে পারে না।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় সেফটিক ট্যাংক থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার
দেবীদ্বার শিশু পরিবারের দেওয়া তথ্যমতে, হোসাইনের দেওয়া গ্রামের নাম সঠিক না হওয়ায় তাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
তারা জানায়, হোসাইন সাত মাস ধরে শিশু পরিবারের অন্য এতিম শিশুদের সঙ্গে ভালো থাকলেও প্রায় সময়ই তার বাবা-মায়ের কাছে যেতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে এবং কান্নাকাটি করে।
হোসাইনের বাবা-মাকে ফিরে পেতে সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন দেবীদ্বার সরকারি শিশু পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক বরুণ চন্দ্র দে।
১৪২ দিন আগে
বরগুনায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
বরগুনা সদর উপজেলার ৯ নম্বর এম. বালিয়াতলী ইউনিয়নে একটি পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে উপজেলার পাতাকাটা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।নিহত শিশু দুজন হলো, পাতাকাটা গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে জুনায়েদ (১০) ও রাসেল হোসেনের ছেলে ইয়াসিন (৯)। তারা প্রতিবেশী এবং সমবয়সী ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে জুনায়েদ ও ইয়াসিন বাড়ির পাশের একটি পুকুরপাড়ে খেলছিল। খেলার সময় হঠাৎ জুনায়েদ পুকুরে পড়ে গেলে ইয়াসিন তাকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে পড়ে যায়। উভয়েই পানিতে তলিয়ে যায়।
দীর্ঘক্ষণ তাদের খোঁজ না পেয়ে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা খুঁজতে শুরু করে। পরে পুকুর থেকে দুজনকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষার পর তাদের মৃত ঘোষণা করে লাশ পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পড়ুন: মাগুরার পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
১৫৬ দিন আগে
নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর শেরপুরে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার
শেরপুরের শ্রীবরদীতে নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর মাছের খামার থেকে দুই শিশুকন্যার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) সকাল ৮টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলার বটতলা এলাকার মৃধাবাড়ি এলাকার ওই মাছের খামার থেকে শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলো—উপজেলার তিনানি ছনকান্দা গ্রামের বেতালবাড়ী এলাকার ট্রাকচালক স্বপন মিয়ার মেয়ে স্বপ্না বেগম (৬) এবং সেলিম মিয়ার মেয়ে সকাল বেগম (৭)।
নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর ১২টার দিকে জামাকাপড় পরে ঘুরতে বের হয় তারা। কিন্ত দুপুর থেকে বিকাল, এরপর বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও বাড়ি ফেরে না স্বপ্না ও সকাল। এরপর তাদের খুঁজতে এলাকায় মাইকিং করা হয়।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে পা পিছলে নদীতে পরার ২৯ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার
তবে গতকাল অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাদের পাওয়া যায়নি। পরে আজ (বুধবার) সকালে ওই মাছের পুকুর থেকে বিবস্ত্র অবস্থার তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার জাহিদ। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
১৬৯ দিন আগে
১১ বছরের শিশুর বিরুদ্ধে মামলা, ওসিকে শোকজ
রাজধানীর খিলগাঁও থানায় ১১ বছর বয়সি এক মেয়ে শিশুর বিরুদ্ধে চুরির মামলা নেওয়ায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। একইসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক মো. সাখাওয়াত হোসেনকেও শোকজ করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সাজ্জাদ হোসেন সবুজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. গোলাম কবির এ শোকজ দেন। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে খিলগাঁও থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করার জন্য নোটিশে বলা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৭ মে খিলগাঁও থানাধীন গোড়ান মাজার গলিতে বাপ্পি পরিবহন নামক গ্যারেজে একটি মোবাইল চুরির ঘটনায় একটি মামলা করা হয়। গ্যারেজের কর্মচারী শুকুর আলী (২৪) বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন- খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা মোহনা (১৫), শাহানা (২৩), নিলুফা (২২) ও রুমা (১১)। তাদের সবার স্থায়ী ঠিকানা হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার বোল্লা গ্রামে। এদের মধ্যে ১১ বছর বয়সী শিশু রুমাকে আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় থানার ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়, কারাগারে আটক রাখার আবেদনে শিশু ‘রুমা’র বয়স ১২ উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে এজাহারে তার বয়স ১১ বছর বলা হয়েছে। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ৮৩ ধারা অনুযায়ী, ৯ থেকে ১২ বছর বয়সি শিশুর দ্বারা সংঘটিত অপরাধ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না, যদি সে তার কার্যক্রমের প্রকৃতি ও পরিণতি বুঝবার মতো পরিপক্বতা অর্জন না করে। রুমা নামক শিশুর বয়স এজাহারে ১১ বছর উল্লেখ রয়েছে। কেন তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হলো? কেন থানায় কর্মরত শিশু-বিষয়ক কর্মকর্তা দিয়ে প্রয়োজনীয় মূল্যায়ন ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি?
আরও পড়ুন: কবিরাজকে ১০ টুকরো করে হত্যা, দুজনের ফাঁসির আদেশ
নোটিশে আরও বলা হয়, “আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শিশুরা ‘পাবলিক কর্তৃক ধৃত’ এবং ‘পাবলিক কর্তৃক মারধরের শিকার হয়েছে। অথচ, তাদের দেহে নীলাফোলা জখম থাকার পরও, তাদের চিকিৎসার কোনো রেকর্ড বা চিকিৎসা সনদ আদালতে দাখিল করা হয়নি এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তাও পরিষ্কার নয়। এছাড়াও এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, মামলার প্রকৃতি বিবেচনায় কোনো ধরণের উদ্ধার তালিকা বা জব্দ তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি এবং তা আদালতে প্রেরিত নথির সঙ্গে দাখিল করা হয়নি।’
নোটিশে বিচারক আরও উল্লেখ করেন, এজাহারে উল্লিখিত ঘটনার সময় ২৭ মে ভোর ৬টা ৫৫ মিনিট। বর্ণনা অনুযায়ী, স্থানীয় জনতা আসামিদের হাতেনাতে আটক করে এবং ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে খিলগাঁও থানা পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়। অথচ, এজাহারে সংবাদ প্রাপ্তির সময় ৪টা ১০ মিনিট উল্লেখ করা হয়েছে, যা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
চুরির ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারে বাদী শুকুর অভিযোগ করেন, আমি ও সিফাত হোসেন খিলগাঁও থানাধীন গোড়ান মাজার গলিতে বাপ্পি পরিবহন নামক গ্যারেজে কাজ করি। সে সুবাধে আমরা গ্যারেজের কাজ শেষে গ্যারেজেই ঘুমাই। আমি (শুকুর) ও সিফাত হোসেন গত ২৭ মে রাত অনুমান ১টার সময় প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে গ্যারেজে ঘুমিয়ে পড়ি। এদিন ভোর অনুমান ৬টা ৫৫ মিনিটের সময় আসামিরা আমাদের গ্যারেজের দরজা খুলে গ্যারেজে প্রবেশ করে। এরপর আমাদের সিটের উপরে থাকা সিফাত হোসেনের ব্যবহৃত ১০ হাজার টাকা মূল্যের স্যামসাং মোবাইল সেট চুরি করে নেওয়ার সময় টের পেয়ে আমার ঘুম ভেঙে গেলে আমি চোর চোর বলে চিৎকার দিই। এসময় আশপাশের লোকজন দ্রুত গ্যারেজে আসলে তাদের সহায়তায় আসামিদেরকে হাতেনাতে আটক করে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ ফোন করি। এরপর খিলগাঁও থানা পুলিশ এসে আসামিদের থানায় নিয়ে যায়।
শিশুর বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ১২ বছরের কম বয়সি শিশুর সংঘটিত কার্য তো অপরাধ বলে গণ্য হয় না৷ এক্ষেত্রে শিশুর বয়স এজাহারে ১১ বছর লেখা হলে তো কাজটি আইন অনুযায়ী হয়নি। এজন্য শোকজ করেছে।
এ বিষয়ে শোকজপ্রাপ্ত খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘শিশুটির বয়স এজাহারে ১১ বছর লেখা হলেও, তার বয়স মূলত ১২ বছর। ফরোয়ার্ডিংয়ে (আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন) শিশুর বয়স ১২ বছর লেখা হয়েছে। এই শিশু চুরি করেছে, তার সিসিটিভি ফুটেজ আছে৷ শিশু অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে দোষীপত্র দেওয়া হয়।’
শোকজের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শোকজের ব্যাখ্যা বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করব।’
১৮৭ দিন আগে
ভারতীয় মানব পাচারকারী ও নারী-শিশুসহ আটক ৪
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত এলাকা থেকে এক ভারতীয় মানব পাচারকারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এসময় তার সঙ্গে পাচার হওয়ার আগে উদ্ধার করা হয়েছে দুই নারী ও এক শিশু।
বুধবার (১ মে ) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর বাঘাডাংগা বিওপি'র একটি টহল দল কাঞ্চনপুর গ্রামের একটি ব্রিজের উপর থেকে তাদের আটক করে।
আটক পাচারকারীর নাম শংকর অধিকারী (৩৯)। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বাগদা থানার পূর্বহুদা গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম নুকুল অধিকারী ও মাতার নাম গৌরি অধিকারী।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, শংকর অধিকারী বাংলাদেশে ৬ মাসের ভিসা নিয়ে ৩ মাস আগে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বড়খোলা গ্রামে তার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন এবং ১৩ বছর বয়সী জয় বালা নামের এক কিশোরীকে বিয়ে করেন। পরে তিনি আবার ভারতে ফিরে যান। গত ১৭ এপ্রিল তিনি পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
স্ত্রী জয়া বালা, প্রতিবেশী যুথিকা হালদার (২৯) এবং যুথিকার ১০ বছর বয়সী ছেলে বাধন বৈদাকে নিয়ে বেড়ানোর কথা বলে বাঘাডাংগা সীমান্ত এলাকায় নিয়ে আসেন।
তবে অভিযুক্ত শংকরের স্ত্রী ও যুথিকা জানান, তারা পাচারের বিষয়টি জানতেন না। তাদের ধারণা ছিল, তারা শুধুমাত্র ঘুরতে যাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যরাও একই দাবি করেছেন।
বিজিবি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শংকর স্বীকার করেছেন যে, বাংলাদেশি এক মানব পাচারকারী আনোয়ারের মাধ্যমে ৪৭ হাজার টাকার চুক্তিতে তিনজনকে ভারতে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল তার। সীমান্ত পার হওয়ার পর ওই টাকা আনোয়ারকে দেওয়ার কথা ছিল। শংকরের কাছ থেকে ৫০ হাজার ১১০ টাকা, ৮৫০ ভারতীয় রুপি এবং ৭ ওমানি রিয়াল উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পতেঙ্গায় নারী ও শিশুসহ ৩৫ রোহিঙ্গা আটক
ধারণা করা হচ্ছে, পাচারের পর ওই নারী ও শিশুকে বিক্রি করে খরচের টাকা তুলতে চেয়েছিল শংকর।
আটক শংকর অধিকারীকে মহেশপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়। আর উদ্ধারকৃত দুই নারী ও শিশুকে পুনর্বাসনের জন্য যশোরের ‘জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার’ নামক একটি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মহেশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার ও সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিজিবি সব সময় মানবপাচার রোধে তৎপর রয়েছে। সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।
২১৫ দিন আগে
মসজিদে শিশু বলাৎকার, যুবকের যাবজ্জীবন
চুয়াডাঙ্গায় একটি মসজিদে শিশু বলৎকারের ঘটনায় এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
আসামির উপস্থিতিতে রবিবার (২৭ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এই রায় দেন। পরে তাকে হাজতে পাঠানো হয়।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নাজমুল ইসলাম (২২) চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদহ গ্রামের ঘুষিপাড়া মহল্লার বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ৯ বছর বয়সী ওই শিশুটি হাসাদহ ঘুষিপাড়া জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ধর্মীয় শিক্ষক নাজমুল ইসলামের কাছে আরবি শিক্ষা গ্রহণ করত। ২০২৩ সালের ১৫ মে মসজিদের ভেতরে কোমল পানীয় ‘সেভেন আপ’ খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে বলাৎকার করেন নাজমুল। এরপর শিশুটি বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনাটি তার মাকে জানায়। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় শিশুটির মা শিরিনা খাতুন বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ১৭ মে জীবননগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ১৭ বছর পর দুই জনের যাবজ্জীবন
একই বছরের ৩০ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জীবননগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ্ আলী মিয়া নাজমুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতে আজ (রবিবার) রায় ঘোষণা করেন। রায়ে নাজমুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
২২১ দিন আগে
মুমিনের জুমাবারের কিছু আমল ও শিশুদের নামাজ
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজ একটি। মুসলিমদের প্রাত্যহিক জীবনে নামাজের প্রভাব অভাবনীয়। ইবাদত মু’মিনের হৃদয়ে প্রশান্তি বয়ে আনে।
প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ফরয করা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানবজাতিকে নামাজের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, সালাত আদায় কর ( কায়েম কর বা সংযোগ প্রতিষ্ঠা কর ) এবং যাকাত আদায় কর ও যারা রুকুকারী (অবনত হওয়া) তাদের সাথে রুকু কর । (সুরা বাকারা, আয়াত-৪৩)
জুমার নামাজ দৈনন্দিন পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাজ থেকে একটু ভিন্ন। কারণ এই নামাজের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যাদের ওপর হজ্জ ফরয হয়নি তাদের জন্য জুমার দিনের ইবাদতকে হজ্জের সওয়াবের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। হজ্জ মূলত আর্থিক ও শারিরীক শ্রম এবং কিছু বিশেষ আচার ও অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
আরও পড়ুন: জামাতে নামাজ আদায়, ৩০০ শিশু-কিশোর পেল বাইসাইকেল
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের ঘর থেকে উত্তমরূপে অজু করে ফরজ নামাজের উদ্দেশ্যে বের হয়, সে ইহরাম বেঁধে হজে গমনকারীর মতো সওয়াব লাভ করে। আর যে ব্যক্তি শুধু সালাতুদ্দুহা (পূর্বাহ্নের নামাজ) আদায়ের উদ্দেশ্যে কষ্ট করে বের হয়, সে ওমরাহ আদায়কারীর মতো সওয়াব লাভ করবে। ’ (আবু দাউদ- ৫৫৮)
নামাজ যেহেতু প্রত্যেক সাবালক নারী ও পুরুষের জন্য ফরয, সেহেতু শরিয়াহসম্মত কোনো ওযর ব্যতীত কোনো অবস্থাতেই নামাজ ত্যাগ করার সুযোগ নেই। আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জুমু‘আর দিনে প্রত্যেক সাবালকের জন্য গোসল করা ওয়াজিব।(বুখারী-৮৭৯)
শুক্রবার বা জুমা বারের দিনে মুসলিমদের সালাত আদায় করার জন্য প্রস্তুতি হিসেবে তাহারাত বা গোসল করা, ভালো পোশাক পরিধান, মেসওয়াক করা, রেশমি কাপড় না পড়া, সুগন্ধি ব্যবহার নিয়ে অনেক হাদিস বর্ণনা করেছেন সাহাবিরা। এছাড়া এদিন মসজিদে মুসল্লিদের আগে যাওয়ার গুরুত্ব নিয়েও অনেক হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে।
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ্র রসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন জানাবাত (ফরয) গোসলের ন্যায় গোসল করে এবং সালাতের জন্য আগমন করে সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি গাভী কোরবানি করল। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানি করল। চতুর্থ পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি মুরগী সদাকা করল। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি ডিম সদাকা করল। পরে ইমাম যখন খুতবা দেওয়ার জন্য বের হন, তখন মালাইকা (ফেরেশতাগণ) যিকির শ্রবণের জন্য উপস্থিত হয়ে থাকে।(সহীহ বুখারী-৮৮১)
পুরুষদের জন্য রেশনি পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করেছেন রাসূল (সা.)। অন্যদিকে জুমার দিনে উত্তম পোশাক পড়তে উৎসাহিত করেছেন। আমরা মুসলিমদের অনেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ভালো পোশাক পরিধান করি বা প্রস্তুতি রাখি। অথচ, আমাদের মনে রাখা দরকার যে—সকল মনিবের মহামনিব মহান আল্লাহ, ইবাদতের মাধ্যমে তার সামনে নত হওয়ার বা হাজির হওয়ার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ ভালো পোশাক পরিধান করা উচিৎ। কারণ তিনিই তো সর্বাধিক সম্মানিত। তার সামনেই তো উত্তমরূপে হাজির হওয়া দরকার।
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেন, উমর ইব্নু খাত্তাব (রা.) মসজিদে নববীর দরজার নিকটে এক জোড়া রেশমী পোশাক (বিক্রি হতে) দেখে নবীকে (সা.) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যদি এটি আপনি খরিদ করতেন আর জুমার দিন এবং যখন আপনার নিকট প্রতিনিধি দল আসে তখন আপনি তা পরিধান করতেন। তখন আল্লাহ রসূল (সা.) বললেন, এটা তো সে ব্যক্তিই পরিধান করে— আখিরাতে যার (কল্যাণের) কোনো অংশ নেই। অতঃপর আল্লাহর রাসূলের (সা.) নিকট এ ধরনের কয়েক জোড়া পোশাক আসে, তখন তার এক জোড়া তিনি ‘উমরকে (রা.) দেন। ‘উমর (রা.) আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা.)! আপনি আমাকে এটি পরতে দিলেন, অথচ আপনি উতারিদের (রেশম) পোশাক সম্পর্কে যা বলার তা তো বলেছিলেন। তখন আল্লাহর রাসূল (সা.) বললেন, আমি তোমাকে এটি নিজের পরিধানের জন্য দেইনি। ‘উমর ইবনু খাত্তাব (রা.) তখন এটি মক্কায় তার এক ভাইকে দিয়ে দেন। যাকে পোশাকটি দেওয়া হয় তখন তিনি মুশরিক ছিলেন। (বুখারী ৮৮৬)
মুসলিম পরিবারের শিশুদের ইসলামী জীবনাচার শেখানোর জন্য পিতামাতার ভূমিকাই প্রধান। শিশুরা বাবা-মায়ের কাছেই প্রথম আচরণ ও শিক্ষা রপ্ত করে থাকে। বাস্তবিক অর্থে শিশুরা মূলত অনুকরণপ্রিয়। তাই তাদের সামনে যেসব আচার-অনুষ্ঠান বেশি হয় তাতে তাদের সম্পৃক্ততা থাকে, শিশুদের মন ও মানস সেভাবেই গড়ে ওঠে।
কোরআন ও হাদীসের নির্দেশনা অনুসারে মুসলিম পরিবারের সন্তানদের নামাজ শেখানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এজন্য তাদের অনুকূল পরিবেশ দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই অনুকূল পরিবেশ আধুনিক সমাজের পরিবারগুলোতে সচরাচর পাওয়া কঠিন। এজন্য জুমাবারসহ প্রতি ওয়াক্তে শিশুদের মসজিদে নিয়ে গেলে সেই পরিবেশে আকৃষ্ট হতে পারে তারা।
আরও পড়ুন: নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে শোলাকিয়ায় ৬ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়
আমর ইবনু শুআয়েব (রহ.) থেকে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের সন্তানদের বয়স ৭ বছর হলে তাদেরকে সলাতের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স ১০ বছর হয়ে যাবে তখন (সালাত আদায় না করলে) এজন্য তাদেরকে শারিরীক শাস্তি দেবে এবং তাদের ঘুমের বিছানা আলাদা করে দেবে (আবু দাউদ- ৪৯৫)।
আমাদের অবিভাবকদের অনেকেই মসজিদে শিশুদের বিচরণে বিরক্তিবোধ করেন, যা মোটেও ঠিক নয়। কারণ শিশুরা নিষ্পাপ। তারা বড়দের অনুকরণ করে শিখবে। সামাজিক শৃঙ্খলা ও আচরণও শিশুরা বিভিন্ন বয়সী মানুষের সাহচর্যে শেখার একটি সুযোগ পেতে পারে মসজিদে যাতায়াতের মাধ্যমে। আল্লাহর রাসূল (সা.) যখন সালাত আদায় করতেন, তখন হাসান ও হোসেন (রা.) তার ঘাড়ে ও পিঠে উঠতেন। তাতে তিনি বাধা দিতেন না। প্রকৃত মুমিন হওয়ার জন্য আল্লাহর নির্দেশ ও রাসূলের (সা.) সুন্নাহসমূহ অনুসরণ করা উচিৎ।
২২৪ দিন আগে