চসিক
চট্টগ্রামে ব্যর্থতার মূল্য: মেগা প্রকল্পের পরও জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ
চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএ, চসিক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের চারটি প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালে শুরু হয়ে ২০২২ সালে সব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত এই চার প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৬০-৮০ শতাংশ। এত কিছুর পরেও মানুষের অসচেতনতা এবং পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনার অভাবে জলাবদ্ধতার এই দুর্গতি থেকে স্থায়ী রেহাই মিলছে না।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে নগরীর নিচু এলাকায়। জলাবদ্ধতা মুক্তির প্রকল্পে খাল সংস্কার হওয়ায় বেশ কিছু এলাকায় পানি দ্রুত নেমে গেছে। তবুও বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছে নগরীর চকবাজার, মেহেদীবাগ, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, শুলকবহর ও আগ্রাবাদ।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। এদিকে গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে নগরীর পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের সতর্কতা দেওয়া হলেও কাউকে সরতে দেখা যাচ্ছে না। টানা বৃষ্টিতে নগরীর মেহেদীবাগ, চকবাজার, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা তৈরি হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ আবাস থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ থাকলেও সেখান থেকে কাউকে নিরাপদ এলাকায় যেতে দেখা যায়নি।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ৩৬টি খাল খননের মধ্যে ২১ খালের কাজ হয়েছে। এছাড়া ১২টি খালের মুখে রেগুলেটর ও পাম্প হাউসের জায়গায় চারটি খালের মুখে কাজ শেষ হয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সাথে যুক্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শানস বলেন, প্রকল্প কাজ অব্যাহত থাকায় আগের চেয়ে নগরীর জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমেছে। তবে অপচনশীল বর্জ্যের কারণে পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, নগরীতে চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোর মালিকানায় যেসব ব্যক্তি ও সেবা সংস্থা আছে, তাদেরকে জবাবদিহিতার জায়গায় আনা দরকার। না হলে পাহাড় ধসে মৃত্যুর শঙ্কা থাকবেই।
তবে নগরীর বাসিন্দারা জানান, মূলত নগরীর জলাবদ্ধতার দুর্ভোগের জন্য দায়ী মানুষের অসচেতনতা এবং পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনার অভাব। আগের তুলনায় জলাবদ্ধতা কমলেও দুর্ভোগ থেকে স্থায়ী রেহাই মিলছে না। এখনও ভরা বর্ষায় প্রতিনিয়ত জলাবদ্ধতার আতঙ্কে থাকে নগরবাসী। বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে এই জনদুর্ভোগ। অথচ নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গত ১৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিন মেয়র প্রায় ৩২৪ কোটি টাকা খরচ করেছেন। এই টাকা ব্যয় হয়েছে নালা-নর্দমা ও খাল থেকে মাটি উত্তোলন, প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ, খালের তলা পাকাকরণ, খননযন্ত্র ও মাটি সরানোর কাজে ট্রাক কেনায়। জলাবদ্ধতা দূর করতে প্রতি বছর গড়ে খরচ হয়েছে ২৩ কোটি টাকা।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলীদের মতে, পরিকল্পিতভাবে ওই টাকা খরচ হয়নি। রুটিন কাজ করেই দায় সেরেছে সিটি কর্পোরেশন। জল দূর করার টাকা যেন জলেই গেছে। ফলে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। আবার সমস্যা যতটা ব্যাপক, সে অনুযায়ী ব্যয় হওয়া অর্থ প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে বিগত বছর এপ্রিল মাসে প্রবল বৃষ্টিতে দুবার ডুবেছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা। এরপর গত জুন বৃষ্টিতে আবার ডুবে যায় নগরীর বড় একটি অংশ। সেদিন থেকে টানা চার দিন ডুবে ছিল নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আগ্রাবাদ এক্সেস রোড।
পরবর্তীতে বৃষ্টিতে নগরীর প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। ডুবে যায় আগ্রাবাদের একটি হাসপাতালসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকা। তখন আবারও প্রায় তিন দিন ডুবে ছিল আগ্রাবাদ এক্সেস রোড। এ সময় সড়কে নৌকাও চলতে দেখা যায়। সর্বশেষ গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে আবারও তলিয়ে যায় নগরী। তবে পানি দ্রুত সরে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী হয়নি। এতে কিছুটা স্বস্তিতে নগরের বাসিন্দারা।
সূত্র মতে, চট্টগ্রাম নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের ২২টিতেই বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে কম-বেশি জলাবদ্ধতা হয়। নগরীর ৬০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৩১ লাখ ২৩ হাজার ৬১৩ জন এসব ওয়ার্ডে বসবাস করছেন। সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হয় চান্দগাঁও, পূর্ব ষোলশহর, শুলকবহর, চকবাজার, পশ্চিম বাকলিয়া, পূর্ব বাকলিয়া, দক্ষিণ বাকলিয়া, উত্তর আগ্রাবাদ, দক্ষিণ আগ্রাবাদ, পাঠানটুলী, বকসিরহাট, গোসাইলডাঙা, উত্তর মধ্যম হালিশহর এলাকার মানুষদের। এই ১৩ ওয়ার্ডে মোট বাসিন্দা ১৮ লাখ ২৮৫ জন।
পড়ুন: ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৭ স্থানে ভাঙন, ৩৫ গ্রাম প্লাবিত
এ ছাড়া পাঁচলাইশ, মোহরা, পশ্চিম ষোলশহর, উত্তর কাট্টলী, রামপুর, উত্তর হালিশহর, পাথরঘাটা, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ও দক্ষিণ হালিশহরের বাসিন্দাদেরও জলাবদ্ধতায় ভুগতে হচ্ছে। এ ৯টি ওয়ার্ডে বাস করেন ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৩২৮ জন।
সিটি কর্পোরেশনের বাজেট বই ও বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র থাকাকালে ২০০৩-০৪ থেকে ২০০৮-০৯ অর্থবছর পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যয় হয় ৬৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। মহিউদ্দিন চৌধুরীকে পরাজিত করে ২০১০ সালের নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মনজুর আলম। তার মেয়াদে ব্যয় হয় ২০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। পরে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্ব নিয়ে দুই বছরে খরচ করেছেন ৫২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন, জলাবদ্ধতা এটি সমাধানযোগ্য সমস্যা। কয়েকটি বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিলে জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হতো। তবে এই সমস্যা নিরসনের জন্য বসে না থেকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও সরকারি ও আধা সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয় না থাকার কারণে জলাবদ্ধতা নিরসনে সমাধান হয়নি বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
চট্টগ্রাম নগরীতে শাখা-প্রশাখা মিলিয়ে ১১৮টি খালের মোট দৈর্ঘ্য ১৮২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার। বর্তমানে পাকা ও কাঁচা নালা-নর্দমা আছে যথাক্রমে ৭১০ কিলোমিটার ও ৫৫ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বরাদ্দ পায়। কর্পোরেশনের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের হার ১৭ থেকে ৩৫ শতাংশে ওঠানামা করে। আর রাজনৈতিক বিবেচনায় কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়। খাল ও নালা-নর্দমা থেকে মাটি উত্তোলন করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব নয়। এ সমস্যা দূর করতে সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করার বিকল্প নেই। আর বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।
সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের সময় সিটি কর্পোরেশন নালা-নর্দমা ও প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণে ৮২ কোটি ৮২ লাখ ৯১ হাজার টাকা এবং নালা-নর্দমা ও খাল থেকে মাটি অপসারণে ২১ কোটি ৯৭ লাখ ২৭ হাজার টাকা খরচ হয়। যখন নাগরিক দুর্ভোগ চরমে ওঠে, তখন লোক দেখানোর জন্য সব মেয়রই খাল খননের পাশাপাশি যন্ত্রপাতি কেনেন। এত টাকা পরিকল্পিত উপায়ে খরচ করা হলে নগরবাসী সুফল পেত।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে মেলখুম ট্রেইল থেকে পড়ে দুই বন্ধুর মৃত্যু, আহত ৩
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান করতে ১৯৯৫ সালে প্রণীত চট্টগ্রাম ড্রেনেজ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
তাদের মতে, কেবল জোড়াতালির কাজ করে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। বৃষ্টি ও জোয়ারজনিত জলাবদ্ধতা কিংবা বন্যা—এসব দুর্ভোগ থেকে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে মুক্তি দিতে ১৯৯৫ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘চিটাগাং স্টর্ম ওয়াটার ড্রেনেজ অ্যান্ড ফ্লাড কন্ট্রোল মাস্টারপ্ল্যান’। এটি ‘ড্রেনেজ মহাপরিকল্পনা’ নামে পরিচিত। নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে কী করণীয়, এই মহাপরিকল্পনায় এর স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের।
জলাবদ্ধতার কারণ
পাহাড় কাটার কারণে এর মাটি ও বালু বৃষ্টির পানির সঙ্গে এসে নালা-নর্দমা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আবার যেসব নালা-নর্দমা আছে, সেগুলো মানুষ দখল করে স্থাপনা তৈরি করছে এবং সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ কারণটি হচ্ছে, খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পানি যেখানে পড়বে (কর্ণফুলী নদীতে), সেখানে মুখগুলো উঁচু হয়ে গেছে। ফলে জোয়ারের সময় নদীর পানি সহজে প্রবেশ করছে, পরে আর বের হতে পারছে না।
দ্রুত জনসংখ্যা বাড়ছে, পরিকল্পিতভাবে নগরায়ণের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। মানুষ যত্রতত্র বাড়ি তৈরি করছে। আগে যেখানে পানি জমত, সেগুলো ভরাট করছে। পাহাড় কেটে ফেলছে। সব মিলিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এই নগর।
নিচু এলাকা এবং জলাধার ও জলাশয় ভরাট করে ভবন তৈরি করা হচ্ছে। এতে ড্রেনেজ এলাকা কমে যাচ্ছে। আবার নালা-নর্দমা ও খালগুলো দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। অবৈধভাবে পাহাড় কাটার ফলে পাহাড়ি বালু নালা ও খালে পড়ে তা ভরাট হয়ে গেছে। খালের ভিতর দিয়ে সেবা সংস্থার পাইপলাইন গিয়ে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। নালা-নর্দমা ও খালকে ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করার মানসিকতাও জলাবদ্ধতার সমস্যা প্রকট হওয়ার একটি কারণ। চট্টগ্রাম নগর সাগর ও নদীর পাশে গড়ে উঠেছে। ফলে জোয়ারের পানি অবাধে শহরে প্রবেশ করে লোকালয় তলিয়ে যায়। যখন একই সময়ে বৃষ্টিপাত ও উচ্চ জোয়ার থাকে, তখন অবস্থা ভয়াবহ হয়।
সম্ভাব্য সমাধান
শহরের জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের জন্য পুনরায় যথেষ্ট পরিমাণ গবেষণা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
নিয়মিত ড্রেজিং করে কর্ণফুলীর গভীরতা বাড়াতে হবে। নদীর আশপাশে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিতে হবে। নগরীর সব খাল নিয়মিত খনন এবং রাস্তার পাশে নালার গভীরতা ও প্রশস্ততা বাড়াতে হবে। জলাশয়, ডোবা ও পুকুর ভরাটের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। গৃহস্থালি ময়লা-আবর্জনা নালা-নর্দমার মাধ্যমে খাল ও নদীতে চলে যাওয়া বন্ধ করতে হবে। ময়লা ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার করতে হবে।
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা, খাল ও নালা-নর্দমার অপদখল এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করা প্রয়োজন। নতুন তিনটি খাল খনন এবং খালগুলোর অপ্রয়োজনীয় বাঁক সংশোধন করে সোজা করা প্রয়োজন।
পাহাড়ের বালু রোধে সিলট্র্যাপ (পাহাড়ি বালু আটকানোর ফাঁদ) করা প্রয়োজন। জোয়ারের পানি ঠেকানোর জন্য জোয়ার প্রতিরোধক ফটক নির্মাণ প্রয়োজন। সাগর ও নদীর কাছাকাছি নিচু এলাকায় জলাধার সংরক্ষণ করতে হবে। নালা ও খালের ভিতর থাকা সেবা সংস্থার পাইপলাইন সরিয়ে নিতে হবে। নালা-নর্দমা ও খালগুলোর কারিগরি ত্রুটি সংশোধন করতে হবে। নালা-নর্দমা ও খালে যাতে কেউ আবর্জনা ফেলতে না পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই হবে।
জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলের কার্যালয়গুলোকে সক্রিয় ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। ড্রেনেজ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। এটি প্রণয়নের পর অনেক সময় চলে গেছে। এখন এই মহাপরিকল্পনাকে সংশোধন ও পরিমার্জন করতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে সিডিএ, বন্দর, ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সব সেবা সংস্থার সমন্বয়ে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে এই সমস্যা সমাধান করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাদের যে বাজেট, তাতে তাদের পক্ষে কঠিন। এ জন্য সরকারি সব সংস্থা, যেমন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে।
আশার আলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
নগরীর দীর্ঘদিনের বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে চার উপদেষ্টাকে বিশেষ দায়িত্ব দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সফর করেন।
আরও পড়ুন: কুকি-চিনের উত্থান বনাম বান্দরবানের পর্যটন: ক্ষতির পাহাড়
চার উপদেষ্টা হলেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
দায়িত্ব পেয়ে চার উপদেষ্টা চট্টগ্রাম এসে নালা, খাল পরিদর্শন করে আটটি স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ইতিমধ্যে খাল-নালা সংস্কার ও মাটি অপসারণ করা হয়েছে। এর ফলে কমেছে জলাবদ্ধতা। সবশেষ গত কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হয়েছে।
এতে নগরীর নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। তবে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় এবার তেমন জলাবদ্ধতা দেখা যায়নি। খাল ও নালা পরিষ্কার করায় এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে পুরো নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে আরও এক থেকে দেড় বছর লাগবে, তখন পুরোপুরি সুফল মিলবে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
১৪৭ দিন আগে
চসিকের মেয়র হিসেবে শপথ নিলেন বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিলেন বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন।
রবিবার (৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সভাকক্ষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
নবনিযুক্ত চসিক মেয়রকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফ বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেন বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশের একটি প্রধান নগরীর মেয়র হয়েছেন। ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন এটাই তার কাছে প্রত্যাশা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গ্রিন চট্টগ্রাম দেখতে চাই। জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম দেখতে চাই। ক্লিন সিটি হিসেবে নগরবাসীরও একই প্রত্যাশা।’
হাসান আরিফ বলেন, পেছনের সব ধ্যান-ধারণা, চিন্তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকদের যে অর্জনের জন্য তাদের আত্মত্যাগ রয়েছে, সে প্রত্যাশা পূরণের জন্য বৈষম্যহীন শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় মেয়র শাহাদাত হোসেনের কাছে দেখতে চাই। আমি মনে করি, এ প্রত্যাশা চট্টগ্রামের প্রতিটি নাগরিকের। আমাদের প্রত্যাশা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জানান, ‘চট্টগ্রাম বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে। যদি চট্টগ্রাম শহরের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপ করা যায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি। গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি, হেলদি সিটি- এসব আমার নির্বাচনি ইশতেহার। নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাতকে চসিক মেয়র ঘোষণা করলেন আদালত
নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ও যুগ্ম জেলা জজ, ১ম আদালত চট্টগ্রাম কর্তৃক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির শাহাদাত হোসেনকে নির্বাচিত মেয়র ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বাংলাদেশ গেজেটে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শাহাদাত হোসেনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে সংশোধিত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সরকারি গেজেট প্রকাশিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে শপথ নিতে হয়। এ বিধান অনুযায়ী রবিবার শপথ নিলেন শাহাদাত হোসেন।
শপথ অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মুখপাত্র সালাহ উদ্দিন আহমেদ, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তায় একসঙ্গে কাজ করবে চসিক-সিএমপি
৩৯৭ দিন আগে
চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তায় একসঙ্গে কাজ করবে চসিক-সিএমপি
চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
এ লক্ষ্যে উভয় সংস্থার মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে নগরীর টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের উপস্থিতিতে চুক্তিটি সই হয়।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং ডেপুটি কমিশনার (হেডকোয়ার্টার) আব্দুল ওয়ারিশ নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ১০টির মতো এয়ারবাস কিনতে চায়: বিমানমন্ত্রী
সভায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চসিক ও সিএমপি যানজটমুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে একসঙ্গে কাজ করছে৷ এরই মধ্যে উচ্ছেদ কার্যক্রমের কারণে শহরে যানজট কমেছে৷ এই চুক্তির আওতায় পারস্পরিক তথ্য আদান-প্রদানের মাধমে আমরা নিরাপদ নগর পরিকল্পনায় আরও এগিয়ে যাব৷
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, তথ্যের এই আদান-প্রদান ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে আরও বেশি বিজ্ঞানভিত্তিক ও গতিশীল করবে, ভূমিকা রাখবে সড়ককে আরও নিরাপদ করতে৷
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ছিলেন- কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাহাদুর, আবুল হাসনাত মো বেলাল, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আকবর আলী, ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের এমবেডেড কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে রাজস্ব আয় বাড়ানোর নির্দেশ বিমানমন্ত্রীর
বিমানে কিছু সমস্যা ইতোমধ্যে চিহ্নিত করেছি: বিমানমন্ত্রী
৫৭৬ দিন আগে
চট্টগ্রামে এবার একুশে বই মেলা হবে সিআরবিতে
চট্টগ্রামে এবার একুশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে নগরীর সিআরবিস্থ শিরিষতলায়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেনের (চসিক) উদ্যোগে আগামী ৯ ফ্রেরুয়ারি থেকে অমর একুশে বই মেলা শুরু হচ্ছে।
২৩ দিনব্যাপী এ বই মেলা শেষ হবে ২ মার্চ।
আরও পড়ুন: বায়তুল মুকাররমে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলা শুরু
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, প্রতি বছর নগরীর কাজীর দেউড়ি এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে এই মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার স্থান সংকুলানের কারণে সিআরবির শিরিষতলা বই মেলার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিকল্প হিসেবে স্টেডিয়াম সংলগ্ন শিশুপার্কের খালি মাঠেও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
মেয়র রেজাউল আরও বলেন, চট্টগ্রামের অমর একুশে বই মেলা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য। এই মেলার জন্য সুনির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন করা জরুরি। আমি মনে করি সিআরবি শিরিষতলাতে স্থায়ীভাবে থাকবে। আমরা যদি বইমেলা এবার শিরিষতলায় করতে পারি তাহলে স্থায়ীভাবে প্রতি বছর বই মেলা ওখানে করার একটা সুযোগ তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শনিবার থেকে সপ্তাহব্যাপী বিভাগীয় বইমেলা শুরু
তিনি বলেন, বই মেলা সফল করতে উপকমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি ঠিকভাবে কাজ করলেই বই মেলা সফল হবে বলে আমি মনে করি। বই মেলা সফল করতে প্রয়োজন সমন্বিত প্রয়াস। কেউ ইগোতে ভুগলে বই মেলা সফল করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, উৎসবমুখর বাঙালির প্রাণের উৎসব এই বই মেলা হয়ে উঠে বাঙালির মিলন মেলায়।
আরও পড়ুন: বইমেলা গেট প্রাঙ্গণ পরিচ্ছন্ন করলেন কোয়ান্টামের ১৫০ স্বেচ্ছাসেবী
৬৮৯ দিন আগে
চসিক কার্যালয়ে দুদকের অভিযান
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল। চসিকের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাসের অনিয়ম খুঁজতে এই অভিযানে নেমেছে দুদক।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর টাইগারে চসিকের প্রধান কার্যালয়ে যায় দুদকের একটি টিম।
এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ের-১ সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অভিযান চালায় দুদকের এ দল।
সূত্র জানায়, প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাসের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে এসেছেন দুদক কর্মকর্তারা। তারা ঝুলন কুমার দাশের ৪১৬ নম্বর রুমে বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই করেছেন। পরে ঝুলন দাশকে নিয়ে দুদকের টিম নির্বাহী প্রকৌশলী তাসমিয়া তাহসিনের রুমে (৩০৩ নম্বর কক্ষ) যান।
দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক বলেন, ‘২০১৯ সালে জাইকার অর্থায়নে ৪৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে টেন্ডারে অনিয়ম, নিজের পছন্দমতো ঠিকাদারকে কাজ দেওয়াসহ দুনীর্তির অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে এসেছি। অভিযানে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন যাচাইবাছাই করতে হবে। আরও কিছু কাগজপত্র আমরা চেয়েছি। সেগুলো যাছাইবাছাই শেষে একটা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাঠাব। তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ওয়াসা ভবনে দুদক, নথিপত্র জব্দ
চসিক’র কাউন্সিলর সলিম উল্লাহ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেট প্রধান মিঠুর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে দুদক
৭২১ দিন আগে
চসিক কার্যালয়ে দুদকের অভিযান, মশার ওষুধ কেনায় অনিয়ম
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় ৮ জনের একটি টিম চসিক কার্যালয়ে প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, নথি তল্লাশি করেন। এসময় মশা মারার ওষুধ কেনায় অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক টিম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেলা ১টার দিকে অভিযান শুরু করেন দুদক কর্মকর্তারা। এসময় সংস্থাটির বিভিন্ন বিভাগের নথিপত্র তল্লাশি করেন তারা। অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা বেশ কিছু নথি নিজেদের জিম্মায় নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
এর আগে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর কক্ষে দীর্ঘসময় সময় অবস্থান করেন এবং মেয়রের সঙ্গে এসব ইস্যুতে কথা বলেন দুদক কর্মকর্তারা।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, দুদক কর্মকর্তারা নগরীর টাইগার পাসস্থ নগর ভবনেই অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: চসিকের সার্ভার হ্যাক করে জন্মনিবন্ধন সনদ উত্তোলন, আটক ৪
এবিষয়ে চসিকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ১২টার দিকে দুদক কর্মকর্তারা নগর ভবনে এসেছেন। মেয়রের সঙ্গেও ঘণ্টাখানেক কথা বলেছেন তারা। পরে তারা কিছু ফাইল তল্লাশি করেন এবং নিজেদের জিম্মায় নেন।
তবে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের আকস্মিক এই অভিযান, তা জানেন না বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা।
অভিযানের বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটা অভিযোগ ছিল, চসিকে মশার ওষুধ কেনায় দুর্নীতি হয়। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার কার্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে। মেসার্স বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ডিসেম্বর ২১ থেকে অক্টোবর ২২ পর্যন্ত ৭৭ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৫ লাখ টাকার বেশি কেনাকাটা করতে হলে দরপত্র আহ্বান করতে হয়। কিন্তু একই ব্যক্তিকে কাজ পাইয়ে দিতে ৫ লাখ টাকার নিচে রাখতে ১৬ লটে ভাগ করে ওষুধ কেনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন,‘কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে আমরা অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। বাকিটা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
অভিযোগ রয়েছে, দরপত্র ছাড়াই চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক অরভিন সাকিব ওরফে ইভান নামের এক নেতার কাছ থেকে কেনা হয় এসব মশার ওষুধ।
আরও পড়ুন: নির্মাণে ত্রুটির কারণেই ফ্লাইওভারে ফাটল: চসিক মেয়র
চসিকের প্যানেল মেয়র নির্বাচিত হলেন তিন কাউন্সিলর
১০২৯ দিন আগে
চসিকের সার্ভার হ্যাক করে জন্মনিবন্ধন সনদ উত্তোলন, আটক ৪
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) জন্ম নিবন্ধন সার্ভার হ্যাক করে ১৫ দিনে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ৫৪৮ জনকে জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়েছে হ্যাকার দল। এ ঘটনায় সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে চারজনকে আটক করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
এসব সনদ যাদের দেয়া হয়েছে তাদের ঠিকানা দেখানো হয়েছে জামালপুর, শরীয়তপুর, উখিয়া ও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এদের মধ্যে রোহিঙ্গারাও রয়েছে।
পুলিশ জানায়, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
আরও পড়ুন: চসিকের ২১৬১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি পাঁচটি ওয়ার্ডের ৫৪৬টি জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি ও ইস্যু করার তথ্য পাওয়া যায়। পরে কাউন্সিলর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানা যায়, পাঁচটি ওয়ার্ডের মোট ৫৪৬টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করেছে হ্যাকাররা। এরমধ্যে ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ৪০৮টি, ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের ৮৪টি, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের ৪০টি, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ১০টি এবং ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের চারটি।
এ ব্যাপারে থানায় জিডি করা হয়েছে, অবহিত করা হয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়কে। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ইস্যুকৃত সনদগুলো বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
চসিকের আইটি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হাসান বলেন, সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে। তাদের লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, চসিকের জন্ম নিবন্ধন আইডি প্রথম হ্যাক করা হয় ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন দেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের অফিসিয়াল সার্ভারের আপগ্রেডেশনের কাজ চলার সময় হ্যাক করে ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা, ছয় নম্বর চকবাজার এবং ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে ১৮টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করা হয়। এর মধ্যে ১২টি ছিল রোহিঙ্গার নামে। এ ঘটনায় পতেঙ্গা ও চকবাজার থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেন সংশ্লিষ্ট জন্মনিবন্ধন সহকারীরা।
এদিকে ৮ জানুয়ারি আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের আইডি হ্যাক করে ইস্যু করা হয় চারটি জন্মনিবন্ধন সনদ। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ১৪ জানুয়ারি জিডি করেন জন্মনিবন্ধন ডাটা এন্ট্রি সহকারী সঞ্জীব আচার্য্য।
এছাড়া ১০ জানুয়ারি ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আইডি হ্যাক করে ১০টি এবং ২১ জানুয়ারি ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের আইডি হ্যাক করে ৮৪টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করা হয়।
একের পর একে হ্যাকিংয়ের ঘটনায় চিন্তিত কাউন্সিলর ও জন্মনিবন্ধন সহকারীরা। তাদের ধারণা, সংঘবদ্ধ প্রশিক্ষিত কোনও চক্র এই হ্যাকিংয়ে জড়িত।
চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, এ ধরনের ঘটনা দেশের অনেক জায়গায় ঘটছে। রেজিস্ট্রার জেনারেল এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যেসব সনদ ইস্যু হয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চসিক মেয়রের বাড়িতে হাঁটু পানি
চসিকের উন্নয়নে একনেকে ২৪৯০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
১০৪৫ দিন আগে
চসিকের ২১৬১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য দুই হাজার ১৬১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।
রবিবার (২৬ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই বাজেট ঘোষণা করেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। মেয়র হিসেবে এবার দ্বিতীয় বাজেট ঘোষণা করলেন তিনি।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন অনুদান খাতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২১২ কোটি টাকার আয় দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হিসেবে দেখানো হয়েছে বকেয়া কর ও অভিকর খাতে ২১৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। হালকর ও অভিকর খাতে আয় দেখানো হয়েছে ২১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এছাড়া ফিস আদায় বাবদ ১২৫ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার, জরিমানা আদায় বাবদ ৬০ লাখ, সম্পদ হতে অর্জিত ভাড়া ও আয় বাবদ ১১১ কোটি ৮০ লাখ, ব্যাংক স্থিতি থেকে আয় বাবদ ৫ কোটি ও ভর্তুকিসহ নিজস্ব উৎস থেকে আয় বাবদ ৯০৪ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে উন্নয়ন খাতে ১ হাজার ১১২ কোটি টাকা, বকেয়া দেনা বাবদ ১৭৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। তবে চসিকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও পারিশ্রমিক প্রদান বাবদ ব্যয় হবে বছরে ২৯০ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এছাড়া মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ভাড়াকর ও অভিকর বাবদ ৭ কোটি ৩৫ লাখ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও পানি ব্যয় বাবদ ৫০ কোটি ৫০ লাখ, কল্যাণমূলক ব্যয় বাবদ ৪২ কোটি ৭০ লাখ, ডাক তার দূরালাপনী বাবদ ১ কোটি ২০ লাখ, আতিথেয়তা ও উৎসব বাবদ ৬ কোটি ৫ লাখ, বীমা বাবদ ৬৫ লাখ, ভ্রমণ ও যাতায়াত ব্যয় বাবদ ১ কোটি ৩০ লাখ, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা ব্যয় বাবদ ৬ কোটি টাকাসহ মুদ্রণ ও মনিহারী বাবদ ৬ কোটি ৮১ লাখ, ফিসবৃত্তি ও পেশাগত ব্যয় বাবদ ১ কোটি ২৩ লাখ, প্রশিক্ষণ বাবদ ১ কোটি, ভাণ্ডার ও বিবিধ খাতের ব্যয় মিলিয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। শুধুমাত্র বেতন, ভাতা, পারিশ্রমিকসহ চসিকের বার্ষিক পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় হবে ৫৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া বাকি ১ হাজার ৫৯৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা উন্নয়ন, বকেয়া দেনা, ত্রাণ ক্রয় ও অন্যান্য খাতে ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।
বাজেট ঘোষণাকালে মেয়র রেজাউল করিম চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তুলতে তার একগুচ্ছ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। বর্তমান ও ভবিষ্যতের আলোকে চসিক নগরবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর প্রত্যাশা ও চট্টগ্রাম নগরকে পরিবেশগত, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ, নান্দনিক ও বাসযোগ্য নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই বাজেট বলে জানান তিনি। জনগণের প্রত্যাশিত সেবা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করার জন্য নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পড়ুন: ৯২২.৪৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দিল ঢাবি সিন্ডিকেট
আয়কর, ট্রেড লাইসেন্স এ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে চসিকের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মেয়র রেজাউল জানান, নগরের ব্যবসায়ীদের সঠিকভাবে ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় আনা গেলে সেটার সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৪ লাখ। অথচ চসিকের রেজিস্টার অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্সের সংখ্যা মাত্র ৮৫ হাজার।
মেয়র রেজাউল বলেন, অবসর ও মৃত্যুজনিত কারণে চসিকের অনুমোদিত বিভিন্ন পদ শূন্য হওয়ায় উক্ত পদগুলো পূরণের লক্ষ্য কার্যক্রম চলছে। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের ব্যাপারে কার্যক্রম চলছে। মানবিক দিক বিবেচনায় বিভিন্ন পদের কর্মচারীদের দুই দফা বেতন বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কর আদায়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাজেট ঘোষণাকালে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ এবং দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।
পড়ুন: সরকারের সুবিধাভোগীদের স্বার্থ রক্ষায় বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে: বিএনপি
বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন বড় চ্যালেঞ্জ: এফবিসিসিআই
১২৫৭ দিন আগে
প্রধানমন্ত্রীর নামে সড়ক হবে চট্টগ্রামে
চট্টগ্রাম মহানগরীর বারিক বিল্ডিং থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের নাম ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা সড়ক’ নামকরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক। রবিবার চসিকের সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন এবং বিশেষ করে কোনরূপ ম্যাচিং ফান্ড ব্যতিরেকে ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার যে অনুমোদন দিয়েছেন তার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সড়কটির এই নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়।
পড়ুন: চসিকের উন্নয়নে একনেকে ২৪৯০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
চসিকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চসিকের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণা দেয়া আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত এম এ হান্নানের সমাধিতে তার বিভিন্ন কীর্তিগাঁথা নিয়ে ফলক স্থাপন করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রামের বরেণ্য ব্যক্তিদের ছবি, নাম ও কীর্তিগাঁথা সম্বলিত ফলকও স্থাপন করা হবে নগরীর বিভিন্ন স্থানে।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও বিভাগীয় প্রধানরা সভায় বক্তব্য দেন।
পড়ুন: নির্মাণে ত্রুটির কারণেই ফ্লাইওভারে ফাটল: চসিক মেয়র
১৪০৪ দিন আগে
চট্টগ্রাম নগরীর ১৫ স্পটে এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত: চবি
চট্টগ্রাম নগরীর ৯৯টি এলাকার ৫৭টি স্থানের নমুনা বিশ্লেষণ করে ১৫ স্পটে এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল।
গত ৫ জুলাই থেকে এ জরিপ পরিচালনা করে চবির গবেষক দলটি। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ না করলেও রবিবার রাতে গবেষক দলের আহবায়ক চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, সোমবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি চসিককে হস্তান্তর করা হবে। এটি হাতে পেলে মশক নিধন কার্যক্রম আরও জোরালো হবে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুর প্রকোপ: ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২৩৭ রোগী হাসপাতালে
গবেষক দল বলছে, চট্টগ্রাম নগরীর ৯৯টি এলাকা পরিদর্শন করে ৫৭টি স্পট থেকে গত জুলাই মাসে মশার লার্ভা সংগ্রহ করে। এতে পরীক্ষা করে ১৫টি স্পটে শতভাগ এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে।
তারা বলেন, নগরীতে মশার উপদ্রব বাড়ায় সিটি করপোরেশনকে কার্যকর ওষুধ নিশ্চিতকরণে সহযোগিতার উদ্দেশে একটি কমিটি গঠন করেন চবি উপাচার্য। গত ৫ জুলাই থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জরিপ চালিয়ে গবেষক দল মশার লার্ভা সংগ্রহ করে। লার্ভাগুলো লালন-পালনের পর জন্ম নেওয়া মশাগুলোর ওপর ওষুধ প্রয়োগ করে ১৫টি স্পটের নমুনায় শতভাগ এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে।
এদিকে এ বছর চট্টগ্রামে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস। এরই মধ্যে এ রোগে চট্টগ্রামে দুজন মারা গেছে।
আরও পড়ুন: দেশে একদিনে আরও ২৩১ মৃত্যু, শনাক্ত ১৪, ৮৪৪
গবেষক দলের আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও প্রাণ রসায়ন এবং অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূইয়া বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে মশা মারার ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অনুরোধ করা হয়। এরপর তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করেন উপাচার্য।
তিনি জানান, অনেকগুলো লার্ভা লালন-পালন করে এখন মশা হয়ে গেছে। মশাগুলোর ওপর ওষুধ প্রয়োগ করে কার্যকারিতা দেখা হচ্ছে। কোন ওষুধ মশা মারার জন্য কার্যকর তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে। এছাড়া, কোন ওষুধ কি পরিমাণে দিতে হবে, কীভাবে ওষুধ প্রয়োগ করলে মশা নিধন সহজ হবে তা উল্লেখ করা হবে প্রতিবেদনে।
এর আগে নগরীতে মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর গুণগত মান পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় চসিক। এর অংশ হিসেবে গত ১৪ মার্চ ব্যবহৃত ওষুধ পরীক্ষা করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারকে অনুরোধ করে চসিক।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী জানান, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। এরমধ্যে দু’জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের ৪ সদস্য আটক: অস্ত্র, গুলি উদ্ধার
তিনি বলেন, ‘মশার ওপর আমাদের যে সার্ভে হয়েছে তাতেও এডিস মিলেছে। এটা আমরা সিটি করপোরেশনকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি। তাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও ওষুধ ছিটানো জোরালো করতে বলেছি। এছাড়া নগরবাসীকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করতে বলেছি, আমরাও মাইকিং করছি। তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট পাঠানো হয়েছে।’
চসিক সূত্রে জানাগেছে, প্রতিদিন চার থেকে ছয়টি ওয়ার্ডে বিশেষ টিম মশক নিধনে কাজ করবে। যে ওয়ার্ডে যেদিন অভিযান চালানো হবে সেই ওয়ার্ডের প্রত্যেকটা স্থানে মশক নিধনের অভিযান চলবে।
১৫৮৬ দিন আগে