মেঘালয়
সুনামগঞ্জে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল
টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ি ঢল নেমেছে। বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হাওড় এলাকার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ডুবেছে নিম্নাঞ্চল।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত ১৪৫ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।
তবে সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীর পানি এখনও বিপদ সীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাকি সব নদীর পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মূলত গত দুই দিনের বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে।
দুই দিনের টানা বর্ষণ ও সীমান্তের ওপাড়ে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ি ঢল নেমেছে। চলাচলের সড়ক ডুবিয়ে বিকট শব্দে হু-হু করে ঢলের পানি ঢুকছে হাওর ও লোকালয়ে। ঘোলাটে পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে হাওর এলাকা।
আরও পড়ুন: নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর
সুনামগঞ্জে নদনদীর পানি বিপদসীমার ওপরে
ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে সুনামগঞ্জের নদনদীতে পানি বেড়েছে। সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে শহরের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর, নবীনগর, ধারারগাও, জেলরোড, উত্তর আরপিননগর, তেঘরিয়া ও বড়পাড়া এলাকার সড়ক ও কিছু ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। শহরতলির সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের ইব্রাহিমপুর, সদরগড়সহ নদীরপাড়ের গ্রামগুলোর নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানিতে উঠেছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের ছাতক, তাহিরপুর, দিরাই, শাল্লা ও জামালগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ ছাতক সড়কে পানি ওঠায় ছাতকের সঙ্গে সারাদেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এবং জেলা শহরের সাথে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার একমাত্র সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: বরিশালে ৫ নদীর পানি বিপদসীমার উপরে
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৫০০ হেক্টর বোরো ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে যার ক্ষতির পরিমাণ হবে ৫ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি এবং সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘরস্থ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং তাহিরপুরের যাদুকাটাসহ অন্যান্য নদীর পানিও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: টানা বর্ষণে সিলেট-সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি
সুনামগঞ্জে বাঁধ উপচে হাওরে ঢুকছে ঢলের পানি
উজানের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জির ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের নদ-নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। রবিবার সকালে ঢলের পানি হাওরের পাড় উপচে তাহিরপুর উপজেলার বর্ধিত গুরমার হাওরে ঢুকছে। এতে হাওরের দুই হাজার হেক্টর জমির ফসল ঝুঁকিতে পড়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, এটা নতুন কোনো বাঁধ নয়, হাওরের পাড়ে পুরোনো স্থায়ী বাঁধ। গতকাল শনিবার রাতে হাওরে ব্যাপক পানির চাপ সৃষ্টি হয়। এরপর আজ সকালে বাঁধ উপচে হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করে।
হাওরপাড়ের গোলাবাড়ি গ্রামের কৃষক খসরুল আলম বলেন, যেভাবে পানি ঢুকছে, সেটি যদি সারা দিন অব্যাহত থাকে, তাহলে ফসলের ক্ষতি হবে। আর যদি পানির চাপ কমে যায়, তাহলে ফসল রক্ষা পাবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বলেন, তাঁরা এ হাওরের ফসল রক্ষায় ১৫ দিন ধরে লড়াই করছেন। কৃষক, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তা সবাই মিলে হাওরের বাগমারা এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটির সংস্কারকাজ করছে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় পাহাড়ি ঢলে পানির ব্যাপক চাপ বেড়ে রবিবার সকাল থেকে হাওরের উঁচু স্থান দিয়ে উপচে পানি ঢুকছে। এসব স্থানে বাঁধের প্রয়োজন হয় না। পানি আটকানোর চেষ্টা চলছে। লোকজন কাজে নেমে পড়েছেন।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা রবিবার দুপুর ১২টায় ছিল ৫ দশমিক ৮৭ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া জেলার সীমান্তবর্তী জাদুকাটায় এ সময়ে পানি বেড়েছে ৭১ সেন্টিমিটার, পাটলাই নদে ৪৩ সেন্টিমিটার।
সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৩ মিলিমিটার। সুনামগঞ্জে উজানের পাহাড়ি ঢল নামা অব্যাহত আছে। এতে বাড়ছে নদ-নদী ও হাওরের পানি। এ অবস্থায় দ্রুত ধান কাটার চেষ্টা করছেন কৃষকেরা। কিন্তু অনেক হাওরেই ধান এখনও পুরোপুরি পাকেনি। সুনামগঞ্জে এবার প্রথম দফা পাহাড়ি ঢল নামে ৩০ মার্চ।
আরও পড়ুন: হাওরে স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করা হবে: পানি সম্পদ উপমন্ত্রী
এখন দ্বিতীয় দফা পাহাড়ি ঢলেও ফসল বেশি ঝুঁকিতে আছে। উপজেলার সব নদ-নদীর পানি আবার বাড়ছে। এতে মাটিয়ান হাওর, গুরমার হাওর, শনির হাওর, মহালিয়া হাওর, সমসার হাওরের ফসল আবার ঝুঁকিতে পড়েছে।
একইভাবে এসব হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধগুলোতেও পানির চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে টাক্সগুয়ার হাওরের বাঁধগুলো রয়েছে চরম ঝুঁকিতে।
এ হাওরের মন্দিয়াতা গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক সানজু মিয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আবার ঢল নামছে। শনিবার পরিমাণটা বেশি ছিল। এতে হাওরে ঢেউ উঠছে। এ ঢেউ আছড়ে পড়ছে বাঁধে। এতে বাঁধে সমস্যা হচ্ছে।
একই হাওরপারের জয়পুর গ্রামের কৃষক মুজিবর রহমান বলেন, আমরা রাতে বাঁধে পাহারা দিচ্ছি। প্রশাসনের লোকজনও আমাদের সঙ্গে আছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান করিব বলেন, হাওরে পানি বেড়েছে। ঢেউয়ের পানি বাঁধ উপচে গেছে। এতে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু ভাঙেনি। তবে অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। বাঁধে পানির ব্যাপক চাপ বেড়েছে। সমস্যা হচ্ছে টাক্সগুয়ার হাওরের বাঁধগুলোকে নিয়েই। যেকোনো সময় যেকোনো বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।
জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, আমরা একদিকে কৃষকদের বলছি ধান কাটতে, অন্যদিকে হাওরের বাঁধ রক্ষায় কাজ করছি। সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, জমিতে পাকা ধান রাখা যাবে না। ৮০ শতাংশ পাকলেই কেটে ফেলতে হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, আজ থেকে উজানে ও ভাটিতে দুই স্থানেই বৃষ্টি কমবে। উজানের বৃষ্টি আমাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। ১৫ দিন ধরে মাটির বাঁধগুলো ঢলের পানির ব্যাপক চাপ সামলাচ্ছে। মাটি নরম হয়ে গেছে। অনেক বাঁধে ফাটল, ধস আছে। সেগুলোতে দিনরাত কাজ হচ্ছে। আমরা সবাই মিলেই চেষ্টা করছি। দুয়েকটা দিন ধরে রাখতে পারলে মনে হয় বিপদ কেটে যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে এবার দুই লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন।
এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। ধান কাটায় কৃষকদের পাশাপাশি হাওরে কম্বাইন্ড হারভেস্টর ও রিপার আছে।
সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন হাওরে ৭২৭টি প্রকল্পে ১২২ কোটি টাকায় ৫৩৬ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারকাজ হয়েছে। এ বাঁধ নির্মাণকাজের সময়সীমা ছিল ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সময় বাড়িয়েও বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি।
আরও পড়ুন: হাওরের ফসলের ঝুঁকি কমাতে কাজ চলছে: কৃষিমন্ত্রী
তাহিরপুর সীমান্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে মেঘালয়ে ফিরে গেছে ৪ বন্য হাতি
ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকা থেকে বুধবার দুপুরের দিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর আসা চার বন্য হাতি ফিরে গেছে। উপজেলার বরগুপ এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যাদুকাটা নদী এলাকার সীমান্ত বেড়া ভেঙে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে হাতিগুলো মেঘালয়ে ফিরে যায়।
এ তথ্য নিশ্চিত করে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার ভোরে গিয়ে বেড়া ভাঙা ও পায়ের ছাপে নিশ্চিত হয়েছে হাতিগুলো ভারতে ফেরত গেছে।
তিনি বলেন, রাতে হাতিগুলো বরগুপ এলাকায় বিচরণ করছিল। বিজিবি ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা আমাদের নিশ্চিত করেছেন, বরগুপের সীমান্ত এলাকার বেড়া ভেঙে প্রাণীগুলো ভারতে চলে গেছে। হাতিগুলো সাধারণ মানুষের ক্ষতি করেনি। তারা বেশ শান্ত ছিল এবং রাতভর গ্রামবাসীও সচেতন ভূমিকা পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীর ধানক্ষেত থেকে মৃত হাতি উদ্ধার
সুনামগঞ্জ জেলা বন অফিসের সহকারী বন সংরক্ষক অরুণ বরণ চৌধুরীও জানান, বন্য হলেও হাতিগুলো শান্ত ছিল। দু-তিনজনের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তবে তাদের চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আবেদন করলেই সরকার ভর্তুকি দিয়ে দেবে।
এর আগে বুধবার ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকা থেকে দুটি বড় ও দুটি ছোট হাতি যাদুকাটা সীমান্ত পেরিয়ে তাহিরপুরের বারেক টিলায় প্রবেশ করে। দিনভর বিচরণের পর হাতিগুলো রাতে বরগুপ এলাকায় অবস্থান নেয়। হাতিগুলোর বিচরণের কারণে এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বসতবাড়ি ও ক্ষেত রক্ষায় সারা রাত পাহারা দেয় বিজিবি, বন বিভাগ ও স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: শেরপুর সীমান্তে হাতি আতঙ্কে ঘুম নেই পাহাড়ি অধিবাসীদের
সিলেট সীমান্তে এখনও পড়ে আছে দুই বাংলাদেশির লাশ
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া দুই বাংলাদেশির লাশ দুইদিন ধরে নো ম্যানস ল্যান্ডে পড়ে আছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশগুলো উদ্ধার করা যায়নি।লাশগুলো সীমান্তের বাংলাদেশ না ভারত অংশে রয়েছে এ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় লাশ উদ্ধারে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।এর আগে বুধবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নের ডোনা সীমান্তের ১৩৩১ নম্বর পিলারের পাশে দুই বাংলাদেশির লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি বিজিবি ও পুলিশকে জানান।
আরও পড়ুন: সিলেট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহতনিহতরা হলেন, সীমান্তবর্তী এলাগুল গ্রামের আব্দুল লতিফের পুত্র আসকর আলী (২৫) একই গ্রামের আব্দুল হান্নানের পুত্র আরিফ হোসেন (২২)।
নিহত আরিফের পরিবারের এক সদস্য বলেন, স্থানীয় লালবাজারে যাওয়ার কথা বলে গত মঙ্গলবার বিকেলে আরিফ ও আসকর বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। ডোনা সীমান্ত এলাকার কিছু মানুষের কাছ থেকে তারা শুনেছেন আসকর ও আরিফ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উখিয়াং এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছিলেন। এ সময় তাদের ওপর গুলি করে বিএসএফ। ঘটনাস্থলেই দুজন মারা গেলে তাদের লাশ সীমান্তের ১৩৩১ মেইন পিলারের পাশে ফেলে রাখা হয়।পুলিশের ধারণা, আসকর ও আরিফ মঙ্গলবার রাতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে থাকতে পারেন। ওই রাতে কিংবা ভোরের কোনো এক সময়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বা সে দেশের খাসিয়া আদিবাসীদের গুলিতে মারা যেতে পারেন তারা।
আরও পড়ুন: সিলেটে রেস্টুরেন্ট মালিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার১৯ বিজিবির সুরইঘাট ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দু’জনের লাশ উদ্ধারে বৃহস্পতিবার সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে।বিজিবির ওই কর্মকর্তারা জানান, পতাকা বৈঠকে হত্যার দায় অস্বীকার করেছে বিএসএফ। এমনকি লাশগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। যদিও বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে লাশগুলো ভারতের অভ্যন্তরে রয়েছে।বৈঠকে লাশগুলো যে স্থানে পড়ে আছে সেই স্থান কোন দেশে পড়েছে তা চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, লাশ ভারতের অভ্যন্তরে থাকলে সে দেশে ময়নাতদন্ত হবে। এরপর আরেক দফা পতাকা বৈঠক করে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এতে লাশ উদ্ধার ও হস্তান্তরে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, লাশ দুটি সীমান্তে এখনো পড়ে আছে। ওই জায়গা ভারতের অভ্যন্তরে হওয়ায় এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিজিবি ও বিএসএফ যৌথভাবে লাশ উদ্ধারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
সিলেটে ৪.৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
সিলেট, ০৩ নভেম্বর (ইউএনবি)- সিলেটে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।