ইলন মাস্ক
নতুন রাজনৈতিক দল গড়ার দাবি মাস্কের, ট্রাম্প বললেন ‘হাস্যকর’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক কর ছাড় আইনের জবাবে ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের হুমকি এবার বাস্তবায়ন করার কথা জানিয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। তার এই সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক লিখেছিলেন, ‘দেশকে দেউলিয়া করার এই অপচয় ও দুর্নীতির খেলায় আমাদের এখানে আসলে একদলীয় শাসন চলছে, গণতন্ত্র নয়। আজ আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আমেরিকা পার্টি গঠন করা হল।’
একসময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মাস্ক ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওইজি) নামে পরিচিত সরকারের খরচ কমানো সংস্থার প্রধান ছিলেন। তবে প্রেসিডেন্টের এই কর ছাড় আইন নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন। শুক্রবার এই আইনটি চূড়ান্তভাবে স্বাক্ষরিত হয়।
আইনটি কংগ্রেসে পাস হওয়ার পথে থাকতেই মাস্ক হুমকি দেন, ‘যদি এই বেসামাল খরচের বিল পাস হয়, তাহলে আমি আমেরিকা পার্টি গঠন করব।’
যদিও হোয়াইট হাউসে তার শেষ দিকে মাস্ক বলেছিলেন— ভবিষ্যতে তিনি রাজনীতিতে ‘অনেক কম’ অর্থ ব্যয় করবেন।ি
আরও পড়ুন: ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চান না ট্রাম্প
এদিকে, রবিবার (৬ জুলাই) নিউ জার্সির নিজ বাসা থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার আগে মাস্কের এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘মাস্কের এই উদ্যোগ পুরোপুরি হাস্যকর।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে আমরা দারুণ সাফল্য অর্জন করেছি। তাছাড়া, ডেমোক্রেটরা তাদের পথ হারিয়েছে, কিন্তু এটা বরাবরই দ্বিদলীয় ব্যবস্থা ছিল। আমার মনে হয় তৃতীয় দল গঠন শুধু বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করবে। এটা মূলত দুই দলের জন্যই তৈরি ব্যবস্থা।’
এ ছাড়া, তৃতীয় দলগুলো কখনোই কার্যকর হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
নতুন রাজনৈতিক দল গঠন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে নতুন নয়, তবে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট পার্টির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সমর্থন টেনে নেওয়া সাধারণত কঠিন। তবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক, যিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের পেছনে অন্তত ২৫ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন।
যদি তিনি ২০২৬ সালের কংগ্রেস নিয়ন্ত্রণ নির্ধারণকারী নির্বাচনে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেন, তবে ভোটের সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারেন বলে মনে করেন অনেকে।
তবে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার পুনরায় শুরু হওয়া দ্বন্দ্ব মাস্কের জন্য আর্থিকভাবে বিপর্যয়করও হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ সরকার থেকে কোটি কোটি ডলারের চুক্তির ওপর নির্ভরশীল তার ব্যবসা এবং তার কোম্পানি টেসলা ইতোমধ্যেই শেয়ারবাজারে ধাক্কা খেয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে মাস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন করেছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। রবিবার মাস্ক বা তার রাজনৈতিক কমিটি আমেরিকা পিএসির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
যদিও রবিবার সকালে মাস্ক এক্স পোস্টের মাধ্যমে পার্টি নিয়ে ব্যবহারকারীদের মতামত নিচ্ছিলেন এবং এই দল ব্যবহার করে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে সক্রিয় হবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
গত মাসেও ট্রাম্পের বিলের পক্ষে ভোট দেওয়া প্রতিটি কংগ্রেস সদস্যকে তিনি নির্বাচনে পরাজিত করার চেষ্টা করবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। ওই বিলে ফেডারেল ঘাটতি আরও বাড়াবে বলে সতর্ক করেছিলেন।
এদিকে, রবিবার সিএনএনর ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘ডিওজিউয়ের নীতিগুলো জনপ্রিয় হলেও, ইলন মাস্ক মোটেও জনপ্রিয় ছিলেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, তার পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা কালকের (শনিবার) ঘোষণায় মোটেই খুশি হননি এবং তাকে তার ব্যবসায় মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করবেন, রাজনীতিতে নয়।’
১৫১ দিন আগে
ড্রাগন ক্যাপসুল বন্ধে মাস্কের হুমকি, সংকটের শঙ্কায় নাসা
যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফেরায় মার্কিনিদের তো বটেই বিশ্ববাসীরও নজর কেড়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ধনকুবের ইলন মাস্কের বন্ধুত্ব। তবে সম্প্রতি এ সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে। কিছুদিনের আগেরও ঘনিষ্ঠ এই দুই মিত্র এবার সামাজিক মাধ্যমে জড়িয়ে পড়েছেন বাক-বিতণ্ডায়। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন পর্যন্ত নভোচারী ও রসদ পাঠানোর কাজে ব্যবহৃত ড্রাগন ক্যাপসুল বাতিল করার হুমকি দিয়েছেন মাস্ক। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এই হুমকি দেন রকেট কোম্পানি স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা মাস্ক।এর আগে, স্পেসএক্স ও স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবায় সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন ট্রাম্প। এর জবাবে মাস্ক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,‘ স্পেসএক্স তার ড্রাগন ক্যাপসুল অবিলম্বে বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করবে।’অবশ্য মাস্কের হুমকি কতটা বাস্তবসম্মত, তা স্পষ্ট নয়। তবে সরকারি অর্থায়নে তৈরি এই ক্যাপসুলটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন সচল রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এ ছাড়া, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক অভিযান ও এই দশকের শেষ দিকে চাঁদের পৃষ্ঠে নভোচারী পাঠানোর মতো বড় প্রকল্পের জন্যও স্পেসএক্সের ওপর নির্ভরশীল ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)।
ড্রাগন ক্যাপসুল আসলে কী
এই মুহূর্তে স্পেসএক্সই একমাত্র মার্কিন কোম্পানি, যারা চারজনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করে মহাকাশ স্টেশনে যাতায়াতের সুযোগ দিয়ে আসছে।
বোয়িং-এর স্টারলাইনার ক্যাপসুল এখন পর্যন্ত একবারই নভোচারী নিয়ে উড়েছে। গত বছরের সেই পরীক্ষামূলক মিশন ছিল অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ। ওই মিশনে গিয়ে মহাকাশে আটকে পড়া দুই নভোচারীকে দীর্ঘ নয়মাস পর এ বছরের মার্চ মাসে স্পেসএক্সের একটি ক্যাপসুলে করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর থেকে স্টারলাইনার এখনও স্থগিত রয়েছে।
স্পেসএক্স তাদের নিজস্ব বেসরকারি মিশনের জন্যও ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করে। পরবর্তী মিশনটি হবে আগামী সপ্তাহে। অ্যাক্সিওম স্পেস নামের হিউস্টনভিত্তিক একটি কোম্পানি এটি ভাড়া করেছে। তাছাড়া, খাদ্য ও অন্যান্য রসদ পরিবহনের জন্যও ড্রাগনের কার্গো সংস্করণ ব্যবহার করে স্পেসএক্স।
নাসার অন্য বিকল্প রাশিয়ার সোয়ুজ
এই মুহূর্তে রাশিয়ার সোয়ুজ ক্যাপসুলই একমাত্র বিকল্প, যা দিয়ে মহাকাশ স্টেশনে ক্রুদের নিয়ে যাওয়া যায়।
অন্যদিকে, প্রতিটি স্পেসএক্স মিশনে একজন রাশিয়ান থাকেন। এই বিনিময় ব্যবস্থার ফলে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রতিটি ক্যাপসুলে একজন করে আমেরিকান ও রাশিয়ান থাকা নিশ্চিত করা হয়।
২০২০ সালে স্পেসএক্স নাসার জন্য প্রথম নভোচারী পাঠায়। এর ফলে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমাতে পারে নাসা। এর আগে রুশ ফ্লাইটে প্রতি আসনে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ হতো কয়েক কোটি ডলার। রসদের জন্যও রুশ মহাকাশযান ও মার্কিন কোম্পানি নর্থরপ গ্রুম্যানের ওপর নির্ভরশীল ছিল নাসা।
স্পেসএক্সের অন্যান্য সরকারি মিশন
নাসার বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক মিশন এবং সামরিক সরঞ্জাম উৎক্ষেপণের কাজেও ব্যবহৃত হয় এই কোম্পানিটি।
গত বছর মহাকাশ স্টেশন ব্যবহারের অযোগ্য হলে সেটিকে কক্ষপথ থেকে নামিয়ে আনার দায়িত্বও পায় স্পেসএক্স।এ ছাড়াও, নাসা চাঁদের কক্ষপথ থেকে নভোচারীদের চাঁদের পৃষ্ঠে নামানোর জন্য স্পেসএক্সের স্টারশিপ মেগা রকেট বেছে নিয়েছে। অন্তত প্রথম দুটি ল্যান্ডিং মিশনের জন্য এটি ব্যবহার করবে নাসা। এদিকে, স্টারশিপ গত সপ্তাহে টেক্সাস থেকে নবমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে উড্ডয়ন করে, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়ে।
১৮১ দিন আগে
স্টারলিংক কী? কীভাবে কাজ করে ইলন মাস্কের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা
প্রথিতযশা মার্কিন উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মস্তিষ্ক প্রসূত প্রযুক্তি সেবা ‘স্টারলিংক’। ছোট্ট এই শব্দটি সমগ্র বিশ্ব জুড়ে তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক অদেখা ভূবনের বার্তা দিয়ে চলেছে। চলমান দশকে ইন্টারনেট ব্যবস্থার মধ্যমণি হওয়ায় প্রযুক্তিগত বিবর্তনটিকে ঘিরে চলছে সমূহ উদ্দীপনা। অধিকাংশ উন্নত দেশগুলোতে বিস্তার লাভের পর উন্নয়নশীল অঞ্চল পরিক্রমায় স্টারলিংকের এবারের গন্তব্য বাংলাদেশ। এই প্রেক্ষাপটে চলুন জেনে নেওয়া যাক- কী এই স্টারলিংক, আর এর কার্যপদ্ধতিই-বা কী।
স্টারলিংক কী
পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ চালু করা প্রথম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক সার্ভিসেস, এলএলসি। পরিচালনা প্রতিষ্ঠানের নামানুসারেই উপগ্রহ ক্লাস্টারের নাম হয়েছে স্টারলিংক। আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটি এই স্যাটেলাইটগুলোর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে। গোটা বিশ্ব জুড়ে ইলন মাস্কের এই প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক রয়েছে ১০০টিরও বেশি দেশে।
স্টারলিংকের যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালের মে মাসে ৬০টি স্যাটেলাইটের চালুর মাধ্যমে। বর্তমানে এই সংখ্যা দাড়িয়েছে ৭ হাজারেরও বেশি এবং এগুলো খুব কাছাকাছি কক্ষপথে থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এই অবস্থানটি প্রায় ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার উপরে। এগুলো পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে (এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও) উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে সক্ষম।
আরো পড়ুন: দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এসি চালুর পূর্বে যে সতর্কতা জরুরি
২০২১ সালের শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা কেন্দ্রিক এর প্রথম বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময় প্রথম জনসাধারণের কাছ থেকে প্রি-অর্ডার নেওয়া হয়েছিলো।
স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা কীভাবে কাজ করে
.
ইন্টারনেট সংযোগের প্রক্রিয়া
শহরাঞ্চলের পাশাপাশি অনুন্নত এলাকাগুলোতেও সমানভাবে কার্যকর স্টারলিংক পরিষেবা। স্টারলিংক গ্রাহকের কম্পিউটার বা অন্য কোনও ডিভাইস থেকে ডাটা রিকোয়েস্ট প্রথমে নিকটতম স্যাটেলাইটে পৌঁছায়। সেই রিকোয়েস্ট পরবর্তীতে প্রেরিত হয় উদ্দিষ্ট গন্তব্যের কাছাকাছি আরেকটি স্যাটেলাইটে। তারপর রিকোয়েস্টটি সেই স্যাটেলাইটের অধীনে থাকা সুনির্দিষ্ট ডাটা সার্ভারে প্রবেশ করে। এরপর কাঙ্ক্ষিত তথ্যটি নিয়ে একই ভাবে গ্রাহকের কম্পিউটার বা অন্য কোনও মোবাইল ডিভাইসে ফিরে আসে। এভাবে পৃথিবীর দুই প্রান্তে থাকা ডিভাইসের মধ্যে ইন্টারনেট নির্ভর যোগাযোগ স্থাপন করা হয়।
স্যাটেলাইটগুলোর মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ রক্ষার্থে গেটওয়ে হিসেবে বসানো হয় গ্রাউন্ড স্টেশন। এগুলো উপগ্রহ থেকে ডেটা গ্রহণ করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর পথ সুগম রাখে।
আরো পড়ুন: অনলাইন বই বাজার: ঘরে বসেই যে ১০ ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারেন পছন্দের বই
একটি গ্রাউন্ড স্টেশন সাধারণত ৪ হাজার ৩০৬ বর্গফুট জায়গা জুড়ে প্রশস্ত হয়। এখানে বন্ধনীতে ঘেরা থাকে ৯ দশমিক ৪ ফুট উচ্চতার ৯টি অ্যান্টেনা।
উন্নত প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য
স্টারলিংকের প্রদক্ষিণরত উপগ্রহগুলোর অবস্থান আদর্শ জিওস্টেশনারি কক্ষপথের উচ্চতার ১/১০৫ থেকে ১/৩০ অংশের মধ্যে। কক্ষপথটি নন-জিওস্টেশনারি হিসেবে অভিহিত এবং এখানে স্যাটেলাইটগুলো ২৪ গিগা হার্টজ-এর উপরে উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডে কাজ করবে। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে তুলনামূলক ভাবে কাছাকাছি হওয়ায় এই ব্যান্ডে বিস্তৃত কভারেজ পাওয়া যাবে। একই সাথে স্যাটেলাইট ও গ্রাউন্ট স্টেশনের মধ্যকার যোগাযোগটিও হবে অধিক কার্যকর।
পৃথিবী থেকে স্যাটেলাইট যোগাযোগের লেটেন্সি বা বিলম্ব থাকে প্রায় ২৫ থেকে ৩৫ মিলি সেকেন্ড। এই মাত্রা বর্তমান কেবল ও ফাইবার নেটওয়ার্কের তুলনায় অনেক কম। এই গতিতে ভিডিও কনফারেন্সিং ও অনলাইন গেমিং-এ অভূতপূর্ব রিয়েল-টাইম অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুন: ছোটদের বাংলা ভাষা শেখার ১০টি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ
পিয়ার-টু-পিয়ার প্রোটোকল ব্যবহার করায় স্টারলিংক বর্তমান সময়ের আইপিভি৬ (ইন্টারনেট প্রোটোকল ভার্সন ৬) থেকে অধিক সহজ। এই প্রোটোকল মূলত ইন্টারনেটের আওতায় একত্রে কতগুলো ডিভাইস সংযুক্ত হতে পারবে এবং সেগুলোর মধ্যে তথ্যের লেনদেন কতটুকু নিরাপদ হবে তা নির্দেশ করে। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো নেটিভ এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন। এই প্রক্রিয়ায় প্রেরকের ডিভাইসে এনক্রিপ্ট করা ডাটা শুধুমাত্র প্রাপকের ডিভাইসে ডিক্রিপ্ট করা হয়। ফলে পরিষেবা প্রদানকারীসহ তৃতীয় কোনও পক্ষের কাছে সেই ডাটা উন্মুক্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
এই সর্বক্ষেত্রে পিয়ার-টু-পিয়ারের অবস্থান আইপিভি৬-এর ওপরে।
এছাড়া স্টারলিংকের আরও আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে দ্রুতগতির ডাউনলোড। সম্প্রতি ঢাকায় এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে। এ সময় ডাউনলোড গতি ছিলো ২৩০ এমবিপিএস (মেগাবিট্স পার সেকেন্ড) এবং আপলোড ২০ এমবিপিএস।
আরো পড়ুন: কীভাবে জানবেন ঢাকার যানজটের সর্বশেষ অবস্থা?
সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী
স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য গ্রাহককে টেলিভিশনের ডিশ অ্যান্টেনার মতো একটি যন্ত্র বসাতে হবে। এটি সেই স্যাটেলাইটগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। যন্ত্রটি ক্রয়ের সময় এর সাথে পুরো একটি টুলকিট দেওয়া হয়। এতে স্টারলিংক অ্যান্টেনা ছাড়াও থাকে স্ট্যান্ড, স্টারলিংক কেবল, জেন থ্রি রাউটার, এসি কেবল এবং পাওয়ার অ্যাডাপ্টার। অ্যান্টেনা যে কোনও জায়গায় মাউন্টের জন্য উপযোগী। এমনকি ট্রেনের মতো দ্রুতগামী কোনও বস্তুর ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তবে শর্ত হচ্ছে- আকাশ ও অ্যান্টেনার মাঝে কোনও প্রতিবন্ধকতা থাকা যাবে না।
এই অ্যানটেনার সঙ্গে স্টারলিংকের রাউটারটি যুক্ত করে গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। এই টুলকিট এবং গ্রাউন্ড স্টেশন সম্মিলিত ভাবে স্টারলিংককে সম্ভাবনাময় করে তুলেছে। কেননা এতে করে দুর্গম পাহাড় বা জঙ্গলেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন সম্ভব হবে।
এই রাউটারে এক সাথে ২৫৪টি ডিভাইস যুক্ত হতে পারে। অবশ্য কোম্পানির পক্ষ থেকে ৫০টির কম ডিভাইস ব্যবহারের পরামর্শ রয়েছে।
আরো পড়ুন: ডিপসিক: এআইয়ের দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির লড়াকু প্রতিপক্ষ
ইন্টারনেট পরিষেবার লাইসেন্স
আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্টারলিংককে বিশ্বের যে কোনও অঞ্চলে সেবা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হয়। সেখানকার জাতীয় টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষের অনুমতির পরেই সেবার বিপণন শুরু হয়।
এর জন্য স্টারলিংক নির্দিষ্ট দেশের সাথে দীর্ঘস্থায়ী আন্তর্জাতিক চুক্তিতে যায়। এই চুক্তির মধ্যে অন্তর্ভূক্ত থাকে লাইসেন্সিং-এর সাধারণ সময়সীমা এবং করনীতি।
স্টারলিংক ব্যবহারের নানা ক্ষেত্র
আবাসিক চাহিদার পাশাপাশি করপোরেট ক্লায়েন্টও রয়েছে স্টারলিংকের। ইতোমধ্যে তারা বিস্তৃত পরিসরে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সেবা রয়েছে এয়ারলাইনস, জাহাজ, বিনোদনমূলক যানবাহন, ও ট্রাকসহ নানা ধরণের পরিবহনে।
আরো পড়ুন: লেখকদের সৃজনশীলতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব: ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা
এছাড়া বিভিন্ন দেশের মিলিটারি বা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট চাহিদার ভিত্তিতে তারা বিশেষ সেবা দিয়েছে।
২৫৩ দিন আগে
ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের হয়ে যেতে বললেন ইলন মাস্ক
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়া উচিত বলে অভিমত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্ক। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় রবিবার (৯ মার্চ) এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক লেখেন, ‘এক্সিট ন্যাটো নাউ (এখনই ন্যাটো থেকে বের হয়ে যাও)।’
ওই পোস্টকে সমর্থন করে মাস্ক আরেক পোস্টে বলেন, ‘ইউরোপের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’ তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সত্যিই ন্যাটো থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: মাস্কের কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিলের পিটিশনে সই
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের(ইইউ) ওপর শুল্কারোপ করার হুমকি দিয়ে এসেছেন ট্রাম্প।
এ ছাড়াও তার পুতিন-প্রীতিও ইউরোপীয়দের শঙ্কায় ফেলেছে। শুধু তাই নয়, ন্যাটোর ছত্রছায়ায় ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে নিরাপত্তা পেয়ে থাকে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের বিতর্কিত বক্তব্য, ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়ে ইউরোপকে বাদ দিয়ে এককভাবে নানা পদক্ষেপ নেওয়ায় ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো থেকে বের হওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন ট্রাম্প ঘনিষ্ট মার্কিন ধনকুবের মাস্ক।
আগামী মাসে ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)। এমন সময়ে ট্রাম্পের বক্তব্য ও মাস্কের এসব পোস্ট ন্যাটোর ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে ট্রাম্প ও তার বন্ধু মাস্কের এসব বক্তব্য সত্ত্বেও এখনও যুক্তরাষ্ট্রকে ন্যাটো জোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবেই দেখছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ভন দার লিয়েন।
আরও পড়ুন: ওপেনএআই কিনতে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার প্রস্তাব মাস্কের
গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৌশলে কোনো পরিবর্তন আনা হবে কিনা; জানতে চাইলে এমন সম্ভাবনা তিনি নাকচ করে দেন তিনি।
উরসুলা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও বৃহৎ পরিসরে তাদের স্বার্থ মূলত এক। তিনি বলেন, ‘মতের অমিল আমাদের থাকবেই, তবে সেগুলো সমাধান করেই এগিয়ে যেতে হবে।’
ন্যাটোর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট, যে গত ২৫ থেকে ৩০ বছর যাবত ন্যাটো যে নীতিতে চলেছে, তা এখন সেই অর্থে আর প্রাসঙ্গিক নেই।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির বাঁক বদল; ইইউ ও ন্যাটো নিয়ে নিজেদের অবস্থান নিয়ে মার্কিন সুরে যে পরিবর্তন এসেছে, তাকে ইউরোপের জন্য একটি ‘সতর্ক বার্তা’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে ইউরোপকে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সজাগ হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন উরসুলা।
২৬৯ দিন আগে
স্টারলিংক এলে আর কেউ ইন্টারনেট বন্ধ করতে পারবে না: শফিকুল আলম
ভবিষ্যতে সরকারগুলো যাতে কোনো অজুহাতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই স্টারলিংককে বাংলাদেশে ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন কথা বলেন। স্যাটেলাইনভিত্তিক দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংকের মালিক মার্কিন ধনকুবের ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা উন্নয়ন বিভাগ ডিওজিই’রও প্রধান তিনি। দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সরকারি খরচ কমাতে এই বিভাগটি চালু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।আরও পড়ুন: দেশে স্টারলিংক আনতে মাস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ড. ইউনূস
শফিকুল আলম বলেন, ‘গেল ১৬ বছরের শাসনামলে বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে শেখ হাসিনার একনায়কতন্ত্র। বড় ধরনের প্রতিবাদ কিংবা বিরোধী দলীয় বিক্ষোভকারীদের ওপর ধরপাকড় চালাতে স্বৈরাচার ও একনায়কদের পছন্দের হাতিয়ার হচ্ছে ইন্টারনেট শাটডাউন।’
‘এতে দেশের হাজার হাজার ফ্রিল্যান্সারকে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। তাদের কেউ কেউ চিরতরে কাজ হারিয়ে ফেলেন,’ বলেন এই প্রেস সচিব।
তিনি আরও জানান, ‘বাংলাদেশে স্টারলিংকের আসার অর্থ হচ্ছে, ভবিষ্যতে কোনো সরকার ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারবে না। অন্তত নতুন কোনো ইন্টারনেট বন্ধের চেষ্টার আঘাত বিপিও ফার্ম, কল সেন্টার ও ফ্রিল্যান্সারদের ওপর আসবে না।’
এরআগে ১৩ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কলে আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্র অন্বেষণের পাশাপাশি বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ করা হয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশে স্টারলিংক সেবা চালু করতে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান ড. ইউনূস।আরও পড়ুন: স্টারলিংকের ২৩ ইন্টারনেট স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ
পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি মার্কিন এই ধনকুবেরকে চিঠি দেন তিনি। এতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আমাদের যৌথ ভিশন বাস্তবায়নে চলুন আমরা একসাথে কাজ করি। বাংলাদেশে স্টারলিংকের সংযোগ দেওয়া হলে তরুণ উদ্যোক্তা, গ্রামীণ অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ নারী এবং প্রত্যন্ত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ওপর যুগান্তকারী প্রভাব পড়বে।’
প্রযুক্তি খাতের ব্যক্তিরা বলছেন, স্টারলিংক বাংলাদেশে এলে দুর্গম এলাকায় খুব সহজে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে। ফলে ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের পার্থক্য ঘুচে যাবে। গ্রামে বসেই উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিংসহ ইন্টারনেটভিত্তিক কাজ করতে পারবেন তরুণেরা। দুর্যোগের পর দ্রুত যোগাযোগ প্রতিস্থাপনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে স্টারলিংক।
২৮২ দিন আগে
মাস্কের কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিলের পিটিশনে সই
মার্কিন ধনকুবের ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিল করতে একটি পিটিশনে সই করেছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার হুমকি দিয়ে আসছেন। এতে দেশটির স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে। একারণে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মাস্কের জন্মসূত্রে পাওয়া কানাডার নাগরিকত্ব বাতিলের দাবিতে এই পিটিশনে সই করেছেন দেশটির নাগরিকরা।
দ্য কানাডিয়ান প্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার লেখক কোয়ালিয়া রিড এই পিটিশনটি কানাডার হাউস অব কমন্সে উত্থাপন করেন। নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি ও মাস্কের সমালোচক চার্লি অ্যাঙ্গাসের অর্থায়নে এই পিটিশনটি হয়েছে।’
ট্রাম্পঘনিষ্ঠ মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি টেসলা, স্পেসএক্স এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এর প্রধান। মায়ের সূত্রে কানাডার নাগরিক মাস্ক। কানাডার সাসকাচোওয়ান প্রদেশের রাজধানী রেজিনা তার মায়ের জন্মস্থান।
আরও পড়ুন: কানাডাকে ‘সত্যিকার অর্থে’ ৫১তম অঙ্গরাজ্য করতে চাচ্ছেন ট্রাম্প: ট্রুডো
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় মাস্ককে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি দাখিল করা রিডের পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছে, মাস্ক ‘ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে কানাডার জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত’ হয়েছেন।
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণ করেই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কানাডার পণ্যে উচ্চ শুল্কারোপ করেন। এছাড়াও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার হুমকি দেন। এতে কানাডার জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
পিটিশনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া মানে মাস্ক এমন এক ‘বিদেশি সরকারের সদস্য, যারা কানাডার সার্বভৌমত্ব মুছে ফেলতে চায়।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে মাস্কের নাগরিকত্ব অবিলম্বে বাতিল করার এবং তার কানাডীয় পাসপোর্ট প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়েছে পিটিশনে। ট্রাম্প আগেও ট্রুডোকে ব্যঙ্গ করে ‘গভর্নর’ বলেছেন। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রধান নির্বাহীদের গর্ভনর বলা হয়।
গেল জানুয়ারিতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টির প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন ট্রুডো, এই ঘোষণার পর মাস্ক এক্সে ব্যাপক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্কারোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
কানাডার সংবাদমাধ্যম দ্য কানাডিয়ান প্রেস জানিয়েছে, সাধারণত এ ধরনের পিটিশনটি স্বীকৃতি পেতে কমপক্ষে ৫০০ স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। তাহলে সেটি হাউস অব কমন্সে উপস্থাপন করা যায় এবং সরকারিভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
রিডের পিটিশন সহজেই এই শর্ত পূরণ করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। জানা যায়, রোববার রাত পর্যন্ত পিটিশনে প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার স্বাক্ষর পড়েছে এবং ক্রমেই স্বাক্ষরের সংখ্যা বাড়ছে। আগামী ২০ জুন পর্যন্ত স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে।
কানাডার হাইস অব কমন্সের কার্যক্রম আগামী ২৪ মার্চ পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে পার্লামেন্টের সদস্যদের ফিরে আসার আগেই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৮৩ দিন আগে
দেশে স্টারলিংক আনতে মাস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ড. ইউনূস
বাংলাদেশে স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করতে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও কলে আলোচনার সময় ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে মাস্কের কোম্পানির সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়েও তারা আলাপ করেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে দুবাইতে অবস্থানরত প্রধান উপদেষ্টা স্পেসএক্স ও টেসলা প্রধান ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার-বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার ও গ্লোবাল এঙ্গেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথস।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ইলন মাস্কের সঙ্গে আলাপকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের স্যাটেলাইট যোগাযোগের রূপান্তরমূলক প্রভাব, বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী যুবক, গ্রামীণ ও ঝুঁকিপূর্ণ নারী এবং প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উচ্চগতির ও স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ কীভাবে বাংলাদেশের ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে পারে, সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষমতায়ন এবং দেশের লাখ লাখ ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে জাতীয় সীমানার বাইরে প্রবেশাধিকার দেওয়ার উপায় নিয়ে এ সময় আলোচনা করা হয়।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের কানেক্টিভিটি যুক্ত করা হলে লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে দেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে একীভূত করা হবে।
তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রযুক্তিচালিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচনে মাস্কের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্কের নজর দক্ষিণ এশিয়ায়, বড় সুযোগ বাংলাদেশের
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্টারলিংক গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ পল্লী ফোনের একটি সম্প্রসারিত অংশ হতে পারে, যা গ্রামের নারী ও তরুণদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তারা বৈশ্বিক উদ্যোক্তায় পরিণত হবে।
ইলন মাস্ক এ সময় গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করে দারিদ্র্য বিমোচনে এর বৈশ্বিক প্রভাবের কথা জানান।
টেসলা মোটরসের এই প্রতিষ্ঠাতা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণফোন উভয়ের কাজের ব্যাপারেই তিনি অনেক বছর ধরে জানেন।
স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে কাজে লাগানো বাংলাদেশে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারে বলে তিনি দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেন।
ড. ইউনূস স্টারলিংক সেবার চালুর উদ্দেশ্যে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং জাতীয় উন্নয়নে এই উদ্যোগের তাৎপর্য তুলে ধরেন। মাস্কও এই আমন্ত্রণে ইতিবাচক সাড়া দেন; বলেন, ‘এর জন্য আমি অপেক্ষায় আছি।’
বাংলাদেশে ইস্টারলিংক সেবা উদ্বোধনের সম্ভাব্য উদ্বোধনের গুরুত্ব তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তার আশা, এই আলোচনা দেশে উন্নত স্যাটেলাইট সংযোগ চালুর পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করবে।
উভয় পক্ষ এ উদ্যোগে দ্রুত অগ্রগতি আনতে সম্মত হয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরবর্তী কার্যক্রম সমন্বয়ে ড. খলিলুর রহমান, লরেন ড্রেয়ার ও রিচার্ড গ্রিফিথসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২৯৪ দিন আগে
ওপেনএআই কিনতে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার প্রস্তাব মাস্কের
টুইটারের (বর্তমান এক্স) পর এবার চ্যাপজিপিটির মূল প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ও মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রথম সারির এই প্রতিষ্ঠানটি কিনতে বিরাট অঙ্কের আর্থিক প্রস্তাব দিয়েছেন মাস্কের নেতৃত্বাধীন একটি বিনিয়োগকারী দল।
ওপেনএআইয়ের সমস্ত সম্পত্তি কিনে নিতে ৯ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন মাস্কের আইনজীবী মার্ক টোবেরফ।
তবে লোভনীয় এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছেন ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম আল্টম্যান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক ও আল্টম্যানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার উৎকর্ষের এই যুগে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান পারস্পরিক টানাপোড়েনের মধ্যে মাস্কের এই প্রস্তাব নতুন উত্তেজনার জন্ম দিল।
আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে ভারতীয় বড় সংবাদমাধ্যমগুলো
এদিকে, মাস্কের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তারই মালিকানাধীন এক্স (সাবেক টুইটার) কিনে নেওয়ার পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছেন আল্টম্যান। এক্স কিনতে ৯৭৪ কোটি ডলার দাম হাঁকিয়েছেন তিনি।
এক এক্স পোস্টে মাস্কের প্রস্তাব ফিরিয়ে তার উদ্দেশে এই প্রযুক্তিবিদ বলেন, ‘ধন্যবাদ! আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান বিক্রি করব না। তবে আপনি চাইলে আমরা টুইটার কিনে নিতে পারি।’
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রারম্ভিক এই যুগে এআইভিত্তিক বিভিন্ন টুলসের একটি বড় বাজার ইতোমধ্যে গড়ে ফেলেছে ওপেনএআই। ফলে সারা বিশ্ব থেকেই ব্যাপক বিনিয়োগ আকর্ষণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রযুক্তি খাতে, বিশেষ করে এআইতে ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানটি যে আধিপত্য করবে, তা সবারই জানা।
ইলন ও আল্টম্যান উভয়েই ওপেনএআইয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৫ সালে প্রাথমিকভাবে একটি অলাভজনক সংস্থা হিসেবে যাত্রা শুরু করে ওপেনএআই। এরপর ২০১৮ সালে কোম্পানিটি থেকে বের হয়ে যান মাস্ক। তবে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালিয়ে যান আল্টম্যান। পরে ওপেনএআইকে লাভজনক কোম্পানিতে পরিণত করার চেষ্টা শুরু করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার হাত ধরে আসে চ্যাটজিপিটি।
ওপেনএআইকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে আল্টম্যানের এই সিদ্ধান্তের প্রতি অসম্মতি জানান মাস্ক। সে সময় তিনি বলেন, ওপেনএআই প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল মানবতার উপকারে এআই তৈরি করা, কিন্তু সেই নীতি থেকে সরে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে ওপেনএআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নতুন বিনিয়োগ সংগ্রহের জন্যই এই নীতিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই পদক্ষেপ উন্নত এআই প্রযুক্তির উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে মনে করেন তারা।
আরও পড়ুন: ডিপসিক: এআইয়ের দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির লড়াকু প্রতিপক্ষ
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার জগতে মাস্ক পুনরায় প্রবেশ করেন ২০২৩ সালে। এক্সএআই নামে একটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আসেন তিনি।
সম্প্রতি ওপেনএআইয়ের স্বত্ব কিনে নিতে মাস্কের কোম্পানি এক্সএআই ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান চেষ্টা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ব্যারন ক্যাপিটাল গ্রুপ ও ভ্যালর ম্যানেজমেন্টের মতো প্রতিষ্ঠান।
আল্টম্যানকে প্রস্তাব দিয়ে এক বিবৃতিতে মাস্ক বলেছেন, ওপেনএআইকে তার পুরনো অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে হবে। এটিকে আবারও একটি ওপেন-সোর্স ও নিরাপত্তাকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
অবশ্য মাস্কে যে দাম হাঁকিয়েছেন তা ওপেনএআইয়ের সর্বশেষ বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে সর্বশেষ তহবিল সংগ্রহ করেছিল ওপেনএআই। সে সময় প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য ছিল ১৫৭ বিলিয়ন ডলার। তবে বর্তমানে এর মূল্য ৩০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অবকাঠামো তৈরির জন্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ওপেনএআই। এই প্রকল্পে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকল। এছাড়া প্রকল্পটির অপর দুই অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয়েছে জাপানের একটি বিনিয়োগকারী সংস্থা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি সার্বভৌম তহবিল।
‘দ্য স্টারগেট প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এই প্রকল্পকে ‘ইতিহাসের সর্ববৃহৎ এআই অবকাঠামো প্রকল্প’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শীর্ষ উপদেষ্টাদের একজন হওয়া সত্ত্বেও এই প্রকল্পে ঘোষিত বিনিয়োগের অর্থ বাস্তবে এখনও নিশ্চিত হয়নি বলে দাবি করেন মাস্ক। তবে তার এই দাবির পক্ষে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের অক্টোবরে টুইটার কিনে নেন ইলন মাস্ক। পরবর্তীতে মাইক্রোব্লগিং এই প্ল্যাটফর্মের নাম পরিবর্তন করে তিনি এর নতুন নাম দেন ‘এক্স’।
২৯৬ দিন আগে
নিউরালিংক: ইলন মাস্কের ব্রেইন-চিপ কোম্পানির মানবদেহে পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন
ইলন মাস্কের ব্রেইন-চিপ ফার্ম জানিয়েছে, তারা মানুষের ওপর প্রথম পরীক্ষা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছে।
নিউরালিংক ইমপ্লান্ট কোম্পানি কম্পিউটারের সঙ্গে মস্তিষ্ককে সংযুক্ত করে মানুষের দৃষ্টি ও গতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করতে চায়।
এতে বলা হয়, অংশগ্রহণকারীদের নিয়োগ শুরু করার তাৎক্ষণিক কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। পরীক্ষা শুরু করার জন্য ইলন মাস্কের পূর্বের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হয়েছিল।
এফডিএ জানিয়েছে, তারা নিউরালিংকের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটির বিকল্প 'ট্রুথজিপিটি' তৈরির পরিকল্পনা ইলন মাস্কের
গত মার্চে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এফডিএ'র অনুমোদন পাওয়ার জন্য নিউরালিংকের একটি প্রস্তাব নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নিউরালিংক পক্ষাঘাত ও অন্ধত্বের মতো অবস্থার চিকিৎসার জন্য এবং কিছু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কম্পিউটার ও মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সহায়তা করার জন্য মাইক্রো চিপগুলো ব্যবহার করার আশা করে।
বানরের ওপর পরীক্ষা করা চিপগুলো মস্তিষ্কে উৎপাদিত সংকেত ব্যাখ্যা করতে এবং ব্লুটুথের মাধ্যমে ডিভাইসে তথ্য পাঠাতে ডিজাইন করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে নিউরালিংকের মস্তিষ্কের ইমপ্লান্ট ব্যাপকভাবে উপলব্ধ হতে হলে প্রযুক্তিগত ও নৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে ব্যাপক পরীক্ষার প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুন: টেসলার রোবট ‘অপটিমাস’ দেখালেন ইলন মাস্ক
৯২২ দিন আগে
চ্যাটজিপিটির বিকল্প 'ট্রুথজিপিটি' তৈরির পরিকল্পনা ইলন মাস্কের
বিলিয়নেয়ার টুইটারের মালিক ইলন মাস্ক আবার মানবতার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপদ সম্পর্কে সতর্কতা ঘণ্টা বাজিয়েছেন। দাবি করছেন যে একটি জনপ্রিয় চ্যাটবটের একটি উদার পক্ষপাত রয়েছে। তিনি নিজের এআই সৃষ্টি করে এর মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করছেন।
সোমবার রাতে মাস্ক প্রচারিত একটি বিভাগে ফক্স নিউজ হোস্ট টাকার কার্লসনকে বলেছিলেন যে তিনি জনপ্রিয় এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির বিকল্প ‘ট্রুথজিপিটি’ তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন। যেটি একটি ‘সর্বোচ্চ সত্য-সন্ধানী এআই হবে যা মহাবিশ্বের প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করে।’
মাস্ক বলেন, ধারণাটি হলো যে একটি এআই যে মানবতাকে বুঝতে চায় এটিকে ধ্বংস করার সম্ভাবনা কম।
মাস্ক আরও বলেছিলেন যে তিনি চিন্তিত যে চ্যাটজিপিটি ‘রাজনৈতিকভাবে সঠিক হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
কার্লসনকে দেয়া দুই-অংশের সাক্ষাৎকারে প্রথমটিতে, মাস্ক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিয়ন্ত্রণের পক্ষেও পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে তিনি একজন ‘বড় ভক্ত’। তিনি এআইকে গাড়ি বা রকেটের চেয়ে ‘আরও বিপজ্জনক’ উল্লেখ করে বলেছিলেন যে এটি মানবতাকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্ককে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করছেন অস্কার বিজয়ী অ্যালেক্স গিবনি
নেভাদা ব্যবসায়িক ফাইলিং অনুসারে মাস্ক আলাদাভাবে এক্স.এআই কর্পোরেশন নামে একটি নতুন ব্যবসা সংগঠিত করেছে। নেভাদা সেক্রেটারি অব স্টেট অফিসের ওয়েবসাইট বলছে, ব্যবসাটি ৯ মার্চ যাত্রা শুরু করে এবং মাস্ককে এর পরিচালক এবং তার দীর্ঘকালীন উপদেষ্টা জ্যারেড বার্চালকে সচিব হিসাবে নিযুক্ত করেছে।
মাস্ক বহু বছর ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে দৃঢ় মতামত প্রকাশ করেছেন এবং মার্ক জুকারবার্গ এবং বিল গেটস সহ অন্যান্য প্রযুক্তি নেতাদের বরখাস্ত করেছেন, যা তিনি এই ক্ষেত্রের একটি ‘সীমিত’ বোঝার জন্য বর্ণনা করেছেন।
ওপেনএআই ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি ব্লগ পোস্টে বলেছে, মাস্ক ওপেনআই-চ্যাটজিপিটির পিছনে একটি স্টার্টআপ-এ একজন প্রাথমিক বিনিয়োগকারী ছিলেন এবং২০১৫ সালে একটি অলাভজনক এআই গবেষণা ল্যাব হিসাবে প্রতিষ্ঠার পরে এর বোর্ডের সহ-সভাপতি ছিলেন৷ কিন্তু মাস্ক সেখানে মাত্র কয়েক বছর স্থায়ী থাকার পর ২০১৮ সালের শুরুর দিকে বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেন।
সান ফ্রান্সিসকো স্টার্টআপটি স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং সিস্টেম তৈরিতে টেসলার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ‘যেহেতু টেসলা এআইতে আরও বেশি মনোযোগী হচ্ছে, এটি ইলনের জন্য একটি সম্ভাব্য ভবিষ্যতের দ্বন্দ্ব দূর করবে।’
মাস্ক কার্লসনকে বলেছিলেন, ‘আমি নাম এবং ধারণা নিয়ে এসেছি।’ ‘ ওপেনএআই এখন মাইক্রোসফ্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত এবং আর অলাভজনক নয়।
মাস্ক ২০১৯ সালে তার প্রস্থানের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বলেছেন, এটি টেসলার প্রকৌশল সমস্যা এবং ওপেনএআই- এর নেতাদের সঙ্গে কিছু মতামতের পার্থক্যের উপর ফোকাস করার প্রয়োজনীয়তার সঙ্গেও সম্পর্কিত ছিল। তিনি বলেন, ‘ভালো শর্তে বিচ্ছিন্ন হওয়াই ভালো।’
মাস্ক নির্দিষ্ট না করেই টুইটে বলেছেন, ‘টেসলা ওপেনএআই-এর মতো কিছু লোকের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল এবং ওপেনএআই টিম যা করতে চেয়েছিল তার কিছুর সঙ্গে আমি একমত নই।’
কিন্তু টেসলার এআই সিস্টেমের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মার্কিন নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রকরা গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি পার্ক করা ফায়ারট্রাকে ছুটে যাওয়ার সময় একটি স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং সিস্টেম ব্যবহার করার জন্য সন্দেহভাজন একটি টেসলা জড়িত একটি মারাত্মক দুর্ঘটনার তদন্ত ঘোষণা করেছে।
ফায়ারট্রাক অভিযোগ হলো অটোমেকারের অটোপাইলট সিস্টেম ব্যবহার করে টেসলাসের একাধিক দৃষ্টান্তে এজেন্সির একটি বৃহত্তর তদন্তের অংশ যা পার্ক করা জরুরি যানবাহনে ক্র্যাশ করে। যা অন্যান্য দুর্ঘটনার প্রবণতা রয়েছে। এনএইচটিএসএ গত বছরে টেসলাসের সঙ্গে নিরাপত্তা সমস্যাগুলো অনুসরণ করার জন্য আরও আক্রমণাত্মক হয়ে একাধিক প্রত্যাহার এবং তদন্ত ঘোষণা করেছে।
মাস্ক বোর্ড থেকে পদত্যাগ করার পরের বছর ওপেনএআই এখনও চ্যাটজিপিটিতে কাজ করা থেকে অনেক দূরে ছিল। কিন্তু, প্রকাশ্যে তার জিপিটি সিস্টেমের প্রথম প্রজন্মের উন্মোচন করেছিল, যার উপর চ্যাটজিপিটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে একটি লাভজনক ব্যবসা হিসাবে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি বড় পরিবর্তন শুরু করেছিল।
২০২০ সালের দিকে মাস্ক টুইট করেছিলেন যে ‘ওপেনএআই আরও উন্মুক্ত হওয়া উচিত’ এবং উল্লেখ করেছেন যে এটিতে তার ‘কোন নিয়ন্ত্রণ এবং শুধুমাত্র খুব সীমিত অন্তর্দৃষ্টি’ নেই।
কখনও কখনও তিনি পরিপূরক হয়েছেন। ৩০ নভেম্বর চ্যাটজিপিটি প্রকাশের পরের দিনগুলোতে মাস্ক ওপেনএআই সিইও স্যাম অল্টম্যানকে টুইট করেছিলেন যে এটি ‘ভয়ঙ্কর ভাল’ এবং অভিযোগ করেছেন যে সংবাদ মিডিয়া এটিকে ব্যাপকভাবে কভার করছে না।কারণ, ‘চ্যাটজিপিটি খুব একটা বামপন্থি নয়।’
তারপর থেকে মাস্ক বারবার উদাহরণ তুলে ধরে বলেছেন বামপন্থী পক্ষপাতিত্ব বা সেন্সরশিপ দেখান। অন্যান্য চ্যাটবটের মতো চ্যাটজিপিটি’র ফিল্টার রয়েছে যা এটিকে বিষাক্ত বা আপত্তিকর উত্তর বের করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন: টুইটারের নিয়ন্ত্রণে ইলন মাস্ক, শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত
৯৬১ দিন আগে