মোসাদ
ছায়ার আড়ালে মোসাদ: ইরানে রহস্যময় অনুপ্রবেশ
ইরানের ভেতরে একটি গোপন ড্রোন তৈরির কারখানা স্থাপন করেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। একাধিক গোয়েন্দা সূত্র থেকে এমন দাবি করা হয়েছে। সেখান থেকে পরিচালিত বিস্ফোরক ড্রোন হামলাতেই ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি তাদের।
ইরানে তখন গভীর রাত। মুহূর্তের মধ্যেই রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে আগুনের ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে চারপাশ। এরপরই শুরু হয় ধারাবাহিক হামলা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বড় হামলার মুখোমুখি হয়েছে ইরান। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংসের জন্য এ অভিযান চালানো হয়। গোয়েন্দা সূত্র মতে, শুক্রবার (১৪ জুন) ভোরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) যখন তাদের অপারেশন রাইজিং লায়ন বা জেগে ওঠা সিংহ শুরু করে, তখনই ড্রোনগুলো সক্রিয় করে মোসাদ।
এরপর তারা ইসরায়েলের দিকে তাক করে রাখা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণস্থলগুলোতে হামলা চালিয়ে অকোজো করে দেয়। এতে, ইসরায়েল বিনা প্রতিরোধেই হামলা চালাতে থাকে।
হামলায় ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজ, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা, শীর্ষ তিন সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইরানের প্রতিরক্ষা কাঠামোতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রাখার কৌশলের অংশ।
আরও পড়ুন: গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ: দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
ব্রিটিশ-ইসরায়েল কমিউনিকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (বিআইকম) জানিয়েছে, মোসাদের ইউনিটগুলো ইরানের ভেতরে থেকেই ভূমি থেকে আকাশে ও ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা লক্ষ্য করে নির্ভুলভাবে হামলা পরিচালনা করেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ মোসাদের প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজের বরাতে জানায়, ফুটেজে কিছু মুখোশ পরা ব্যক্তিকে রকেট লঞ্চার বসাতে দেখা যায়, যা পরে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই অপারেটররা তেহরানের আশেপাশে লক্ষ্যস্থলগুলোতে ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরক ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী ট্রাকও ছিল। সাদাকালো ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সশস্ত্র ব্যক্তিরা, একটি এলাকায় খোলা মাঠে বসে আইডিএফের হামলা শুরুর অপেক্ষা করছেন।
ইসরাইলের কৌশলগত সক্ষমতা
ইসরায়েলের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রকাশিত তথ্যগুলোকে ইসরায়েলের গোপন অভিযানগুলোর বিস্তৃতি ও গভীরতা তুলে ধরার পাশাপাশি দেশটির সক্ষমতা নিয়ে এক ধরনের কৌশলগত বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি সঠিক হলে এটি নজিরবিহীন একটি কৌশলগত সক্ষমতা হিসেবে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এ অভিযানে নজরদারি, গোয়েন্দাগিরি এবং অস্ত্রশক্তি মিলিয়ে সমন্বিত আক্রমণ চালানো হয়েছে। তেহরানের পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে ইসরায়েল কতদূর যেতে পারে তার ইঙ্গিত এটি।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের সামরিক বিজ্ঞানের পরিচালক ম্যাথু সাভিল বলেছেন, ‘মোসাদের অপ্রচলিত কার্যক্রমের সাম্প্রতিক রিপোর্টগুলো ইসরায়েলের গুপ্তচরবৃত্তি দক্ষতার প্রমাণ, যার মাধ্যমে তারা ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রবেশ করেছে। এরপর স্বল্প সময়ে অপারেশন চালানোর ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে।’
ইরানের ভূখণ্ডে এমন গোপন অবকাঠামো স্থাপন করতে ইসরায়েলের বহুবার গোপন মিশন পরিচালনা করতে হয়েছে। সঠিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত করার জন্য ইরানের সামরিক ও অস্ত্রব্যবস্থার অবস্থান সম্পর্কেও নির্ধারিত গোয়েন্দা তথ্যের প্রয়োজন ছিল।
আরও পড়ুন: ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কেন এত বিতর্কিত?
এই হামলায় ইরানের তিনজন সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তিসহ সিনিয়র সামরিক নেতৃত্ব নিহত হয়েছেন, যা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সামরিক সক্ষমতাকে আরও দুর্বল করেছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতায় আঘাতের পাশাপাশি তারা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনাকারীদেরও হারিয়েছে।
সাভিল বলেন, ‘এই হামলার ব্যাপ্তি ও পরিসর ইঙ্গিত দেয় যে, এই অভিযান শুধু ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অনুসরণ থেকে বিরত রাখার জন্য নয়, বরং সম্ভাব্য সামরিক প্রতিক্রিয়া অক্ষম করা এবং শাসনব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার জন্যও পরিকল্পিত।’
শত্রু ভূখণ্ডে মোসাদের অভিযান নতুন নয়
শত্রু ভূখণ্ডে বিশেষ করে ইরানে মোসাদের সাহসী অভিযান চালানোর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ২০২০ সালে ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল কাসিম সুলেইমানিকে হত্যা করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করে মোসাদ।
২০২২ সালে দুটি মোটরসাইকেলে আসা হত্যাকারী আইআরজিসি কর্মকর্তা কর্নেল সাইয়্যাদ খাদায়িকে গুলি করে হত্যা করে। ২০২৪ সালে ইসরায়েল তেহরানে আইআরজিসির অতিথিগৃহে বোমা স্থাপন করে হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করে।
সাম্প্রতিক হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল ইঙ্গিত দিয়েছে আরও অনেক কিছু আসছে। ইসরায়েলের অপারেশন বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল ওডেড বাসিউক বলেন, ‘আমরা অপারেশনের মাত্র কয়েক ঘণ্টা ভিতরে ছিলাম... ছয় মাস আগে এটি কল্পনার মতো মনে হত।’
তিনি বলেন, ‘এই সাফল্য পরিকল্পনা, মহড়া এবং এখানে বসে যারা কাজ করেছে, তাদের পাশাপাশি যারা এখানে নেই তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-ইরান সংঘাত সহজেই শেষ করা সম্ভব: ট্রাম্প
এ রাতের হামলাটিকে ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময়কার মোসাদের অপারেশন ফোকাসের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। ওই সময় ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল মিসরের বিমানবাহিনীর প্রায় সবকিছুই ধ্বংস করে দিয়েছিল।
১৭২ দিন আগে
মোসাদের দুই গোয়েন্দাকে গ্রেপ্তারের দাবি ইরানের
ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে কাজ করা দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান। রবিবার (১৫ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
ইরান জানিয়েছে, আলবুর্জ প্রদেশে মোসাদের দুই গোয়েন্দাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বিস্ফোরক ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস প্রস্তুত করছিল।
এদিকে ইরানের হয়ে কাজ করায় দুজনকে গ্রেপ্তার করার দাবি করেছে ইসরায়েল। শনিবার টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে দাবি করা হয়, ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর কার্যক্রমের দায়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানের ভেতরে একটি গোপন ড্রোন তৈরির কারখানা স্থাপন করেছিল বলে দাবি করেছে একাধিক গোয়েন্দা সূত্র। সেখান থেকে পরিচালিত বিস্ফোরক ড্রোন হামলাতেই ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি তাদের।
ইরানে তখন গভীর রাত। মুহূর্তেই রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে আগুনের ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে চারপাশ। এরপরই শুরু হয় ধারাবাহিক হামলা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বড় হামলার মুখোমুখি হয়েছে ইরান। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংসের জন্য এ অভিযান চালানো হয়।
গোয়েন্দা সূত্র মতে, শুক্রবার (১৪ জুন) ভোরে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) যখন তাদের অপারেশন রাইজিং লায়ন শুরু করে, তখনই ড্রোনগুলো সক্রিয় করে মোসাদ। এরপর তারা ইসরায়েলের দিকে তাক করে রাখা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণস্থলগুলোতে হামলা চালিয়ে অকোজো করে দেয়। এতে, ইসরায়েল বিনা প্রতিরোধেই হামলা চালাতে থাকে।
১৭২ দিন আগে
নুর ইসরায়েলের মোসাদের সঙ্গে ৩ বার সাক্ষাৎ করেছেন: ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এসওয়াই রমজান বৃহস্পতিবার বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে তিনটি বৈঠক করেছেন।
ঢাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত এ দাবি করেন।
মোসাদের সঙ্গে এ ধরনের বৈঠক বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে তিনি মনে করেন।
রমজান বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা সূত্রগুলো কাতার, দুবাই ও ভারতে ইসরায়েলিদের সঙ্গে নুরের সাক্ষাতের ছবি পেয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সিলেটে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দাখিল
রাষ্ট্রদূতের মতে, গত বছর কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের সময় ফিলিস্তিনি গোয়েন্দা সংস্থা প্রথম বিষয়টি লক্ষ্য করে।
দূত বলেন, নুর যদি মোসাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করেন, তা ফিলিস্তিনের জন্য যথেষ্ট।
তিনি বলেন যে তবে তা বাংলাদেশ সরকার বা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য হুমকি।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: ৭ কর্মদিবসে সাবেক ভিপি নুরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে হাজিরের নির্দেশ
চট্টগ্রামে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
৮৯৬ দিন আগে
বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালি ও শাহবাগ থানায় দায়ের করা দুই মামলায় বিএনপির আলোচিত নেতা মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীকে ৬ মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
জামিন পাওয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ নিশ্চিত করেন।
এই দুই মামলায় জামিন পাওয়ার ফলে বিএনপির এই নেতারা কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী হাসিবুর রহমান।
আরও পড়ুন: কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত
২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘বাংলাদেশের সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে নাশকতা, চেক প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় আসামি হন আসলাম। অন্যান্য মামলায় তিনি আগেই জামিন পেয়েছেন বলে জানান তার আইনজীবী হাসিবুর রহমান।
১৬৪৯ দিন আগে
গোপনে সৌদি সফর করলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার গোপনে সৌদি আরব সফর করেছেন বলে ইসরায়েলের গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে।
১৮৩৭ দিন আগে