অর্থনৈতিক অঞ্চল
আইসিটি, অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডেনের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডিশ বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিশ্বখ্যাত পোশাক কোম্পানি এইচঅ্যান্ডএম-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও প্রেসিডেন্ট হেলেনা হেলমারসনের নেতৃত্বে একটি সুইডিশ প্রতিনিধিদল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে এবং এইচঅ্যান্ডএম-এর চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার অ্যাডাম কার্লসনও প্রতিনিধিদলে ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাক্ষাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক নীতি ও লক্ষ্যযুক্ত পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী কাতার: দেশটির প্রধানমন্ত্রী
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে রপ্তানি ঝুড়ি সম্প্রসারণ করতে চায়।
সাক্ষাৎকালে হেলেনা হেলমারসন গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইডেনের বিশেষ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা এগিয়ে নিতে চায়।
এইচঅ্যান্ডএম-এর সিইও ও প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং দেশে কোভিড-১৯ মহামারি সফলভাবে মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী সুইডিশ কোম্পানির প্রশংসা করেন, যেহেতু তারা মহামারির সময়েও তাদের অর্ডার বাতিল করেনি।
হেলেনা হেলমারসন জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার নিজস্ব অর্থায়নে প্রশমন কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন এবং এ বিষয়ে কাজ করছে।
শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতায় তার সরকারের অর্জনও তুলে ধরেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
ভুটানকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই প্রতিবেশি দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য ভুটানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। আপনি আমাদের দেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করতে পারেন যা ভুটান অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত হবে।’
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ও রানি জেটসুন পেমা শনিবার ক্লারিজ হোটেলে যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার যুক্তরাজ্য সফরের সময় অবস্থান করছেন, সেখানে তার সঙ্গে দেখা করার সময় তিনি এই প্রস্তাব দেন।
শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা ভুটানের রাজা ও রানি হোটেলে পৌঁছালে তাদের অভ্যর্থনা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ৫০ মিনিট ব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আরও পড়ুন: রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা ভুটানের রাজাকে অবহিত করেন যে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে অর্থনৈতিক অঞ্চল দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপনি চাইলে কুড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দিতে পারেন।’
ভুটানের রাজা পরিবেশের ক্ষতি না করে তার দেশে একটি প্রশাসনিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে চান বলে শেখ হাসিনা এই প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলপথসহ সব ক্ষেত্রে প্রতিবেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ উন্নয়ন করছে। বাংলাদেশ একটি কানেক্টিভিটি হাব। ভুটান বাংলাদেশের দুটি বন্দর এবং সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে।’
মোমেন বলেন, ভুটানের রাজপরিবার শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
রাজা তার হিমালয় দেশের সরাসরি ট্রানজিট বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এবং আরেকটি ভারতের মধ্য দিয়ে পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রীকে বড় অনুপ্রেরণা বললেন ঋষি সুনাক
ভুটানের আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজন হলে আমরা এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলব।’
ভুটানের রাজা বলেন, তার দেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ ভাবে সম্পৃক্ত, কারণ তারা দুজনেই বাংলাদেশে পড়াশোনা করেছেন।
তিনি বলেন, ভুটানের দুই নেতাই ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ সফর করতে চান।
স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'আপনাদের জন্য আমাদের দরজা খোলা আছে।
মোমেন বলেন, ভুটানের রাজা ও রানি প্রধানমন্ত্রীকে তাদের ‘খালা’ মনে করায় তারা বিভিন্ন পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর উন্মুক্ততার প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের
অর্থনৈতিক অঞ্চলে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষ সুযোগ পেতে পারেন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষ সুযোগ পেতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘নারী উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে আমরা তাদের বিশেষ সুযোগ দেব। তাদের জন্য আলাদা প্লট দেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (যা ব্যাপকভাবে ‘জাপানি ইকোনমিক জোন’ নামে পরিচিত) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে কার্যত যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার পরিকল্পিত শিল্পায়নের মাধ্যমে আবাদি জমি ও পরিবেশ রক্ষা করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য। আমরা সর্বোচ্চ (বিনিয়োগের) সুযোগ ও সুবিধা দিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশি উদ্যোক্তারাও দেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
তিনি বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে, বাংলাদেশ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে একটি সেতু হিসেবে পুরোপুরি অবস্থান করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করছে। ভৌগলিক অবস্থা বিবেচনায় ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষের বাজার হতে পারে বাংলাদেশ।
এছাড়া সরকার জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধাও দিচ্ছে যাতে তারা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারে।
তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ উদ্যোগে এক হাজার একর জমিতে গড়ে ওঠা জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
মার্কিন কোম্পানির জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান এফবিসিসিআই’র
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য একটি নিবেদিত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়ার পর ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) দেশটির উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের আইসিটি খাতে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এফবিসিসিআই জানিয়েছে, ২২ সেপ্টেম্বর ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভায় প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ালে তা আত্মঘাতী হবে: এফবিসিসিআই
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। এছাড়াও হাইটেক পার্ক ও ৬ লাখের বেশি দক্ষ ফ্রিল্যান্সার থাকায় তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ স্থান।
এছাড়াও গত ১৩ বছরে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ অভুতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মার্কিন উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত সম্প্রসারণশীল অর্থনীতি বাংলাদেশ। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ আঞ্চলিক সাপ্লাই চেইনের কেন্দ্রস্থল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক কর্মক্ষম তরুণরাও যে কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য বাড়তি সুবিধা বয়ে আনবে।
ব্যবসা বাণিজ্যের প্রচলিত খাতগুলোর বাইরেও নতুন নতুন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিকশিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সভাপতি। ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, রোবোটিকস, ব্লকচেইন, স্পেস, বায়ো-হেলথসহ তথ্যপ্রযুক্তির নানা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বছরে ৩০ নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেবে এফবিসিসিআই
বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন বড় চ্যালেঞ্জ: এফবিসিসিআই
ডি-৮ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ জায়গা দিতে প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জায়গায় দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সংস্থাটির সদস্য রাষ্ট্রের মন্ত্রীদের ২০তম সম্মেলনে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করে এই প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য জায়গা দিতে প্রস্তুত আছে। যেখানে সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিনিয়োগ করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘যদি এখনই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়, তাহলে আগামী দশকেই শক্তিশালী ডি-৮ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে।’
ডি-৮ হলো উন্নয়নশীল আটটি রাষ্ট্রের পারস্পরিক সহযোগিতমূলক একটি সংগঠন। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হলো-বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক।
১৯৯৭ সালে কয়েকটি লক্ষ্য উন্নয়নের জন্য এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করে সদস্য রাষ্ট্রগুলো। এরমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে অবস্থান তৈরি, বহুমুখী বাণিজ্য ও নতুন বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহযোগিতা, এবং মানুষের জীবনমান উন্নতকরণ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২৫ বছরের এই ফোরামের সময় এসেছে বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার ও নজর দেয়ার, বাণিজ্য বৃদ্ধি, আইসিটি, খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষিতে বৈচিত্রতা আনা এবং বিকল্প জ্বালানির খোঁজ করার।
তিনি বলেন, সফল ডি-৮ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) বাস্তবায়ন। যার বিরাট একটি অভ্যন্তরীণ বাজার আছে।
তিনি বলেন, ডি-৮ এর অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যই এর ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে ত্বরান্বিত করবে। ফোরামকে আগামী দশকে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা ১২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা উচিত।
আইসিটির বিশাল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে সম্মেলনে হাসিনা বলেন, ডি-৮ দেশের তরুণরা হতে পারে শক্তিশালী জনশক্তি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষ ৪০ বছরের কম বয়সী। আমাদের সাড়ে ছয় লাখ নিবন্ধিত আইটি ফ্রিল্যান্সার আছে। এই বিশাল জনশক্তি আইটি নির্ভর শিল্প করতে কাজে লাগানো যেতে পারে। তরুণরা বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।
চতুর্থ প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের জন্য কৃষিতে বৈচিত্য নিয়ে আসা ও খাদ্য উৎপাদনে ডি-৮ এর মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা ও কর্মসূচী ডি-৮ এর সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সাথে বিনিময় করতে প্রস্তুত। আগামী দশকে খাদ্য উৎপাদনে ও খাদ্যে আত্মনির্ভরশীল হতে কৃষি উৎপাদনে ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মনযোগ দেয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রী ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে যত্নবান হতে ও বিকল্প বিদ্যুতের উৎসের বিষয়েও পরামর্শ দেন।
বিকল্প জ্বালানির সক্ষমতা অর্জনের বিষয়ে যে দেশগুলো অভিজ্ঞ তাদের সাথে সমন্বয় করতে ডি-৮ কে প্রস্তাব দেন তিনি।
পড়ুন: যুদ্ধে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান
ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ ডিসিসিআইয়ের
ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
বুধবার কলকাতার একটি হোটেলে কলকাতা চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি রিজওয়ান রহমানের নেতৃত্বে ৪৭ সদস্যের একটি ডিসিসিআই প্রতিনিধিদল মতবিনিময় সভা করেছে।
সভায় ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, ফার্মাসিউটিক্যালস, জুতা, জ্বালানি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, হালকা প্রকৌশল, আইসিটি এমন কিছু ক্ষেত্র যেখানে ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা সুযোগগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
এছাড়া তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগ উভয় পক্ষের ব্যবসার জন্য একটি জয়-জয় পরিস্থিতির সূচনা করবে।
এদিকে কলকাতা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি শৈলজা মেহতা বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। ‘সুবিধাজনক বাণিজ্য পরিসংখ্যান অর্জনের জন্য, উভয় দেশকে সক্রিয় শিল্প অংশগ্রহণের সঙ্গে বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উন্নত বাজার অ্যাক্সেস, উন্নত ভৌত সংযোগ, ট্রানজিট ও জ্বালানি বাণিজ্য দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্ভাবনা উন্মোচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।
তিনি পর্যটনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন যেখানে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আবুধাবির বিনিয়োগকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
ডিসিসিআই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৯ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে রয়েছে এবং বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস তা ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের মধ্যে ঘাটতি থাকলেও দিন দিন তা কমছে।
গত পাঁচ থেকে ছয় বছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় আড়াই গুণ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল: ৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ৪ কোম্পানি
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের (বিএসএমএসএন) বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা স্থাপনের জন্য চারটি কোম্পানি ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
শনিবার রাজধানীতে কোম্পানিগুলোর সাথে জমি ইজারা চুক্তি স্বাক্ষর করে বেপজা। এর মধ্যে তিনটি বিদেশি এবং একটি দেশীয় কোম্পানি।
কোম্পানিগুলো গার্মেন্টস, গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ, ক্যাম্পিং আইটেম, জুতার অ্যাকসেসরিজ এবং প্যাকেজিং টুলস তৈরি করবে। এর মাধ্যমে ২৩ হাজার ৪৫৩ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
চারটি কোম্পানি হলো-শ্রীলঙ্কান কোম্পানি ইউনিভোগ গার্মেন্টস, মার্কিন কোম্পানি ক্যাম্পেক্স (বিডি) লিমিটেড, চীনা কোম্পানি ফেংকুন কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল কোম্পানি লিমিটেড এবং বাংলাদেশি কোম্পানি টেক্সট্রিম লেবেলস (বিডি) লিমিটেড।
আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে হচ্ছে দেশের প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ির কারখানা
সম্ভাবনাময় আগামীর মিরসরাই: উন্নয়নের মোহনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর
অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অধিক বৈদেশিক বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের উন্নয়ন তরান্বিত করতে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য অর্জনে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে নরওয়েকে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার নরওয়েকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সহজে পৌঁছে যেতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিশেষত আইসিটি এবং পাট খাতে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সুইডেন ও স্পেনকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা রয়েছে উল্লেখ করে সুইডেন এবং স্প্যানিশ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।