আইপিও
পুঁজিবাজারে আইপিও ও মিউচুয়াল ফান্ড নীতিতে বড় সংস্কারের সুপারিশ
পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ও মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে চূড়ান্ত সুপারিশপত্র জমা দিয়েছে বাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কাছে এই সুপারিশপত্র হস্তান্তর করেছেন টাস্কফোর্স সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের (বিয়াক) প্রধান নির্বাহী কে এ এম মাজেদুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত সংস্কারে আইপিওর প্রাথমিক অনুমোদনের দায়িত্ব স্টক এক্সচেঞ্জের হাতে ন্যস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এরপর স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যায়নের ভিত্তিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে বিএসইসি।
এছাড়া পাবলিক ইস্যু নিরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতা মানদণ্ড নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে টাস্কফোর্স। এতে করে আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও দায়বদ্ধতাসম্পন্ন হবে। ফলে বিনিয়োগকারীরা নতুন কোম্পানিতে অর্থলগ্নি করতে ভরসা পাবেন বলে মনে করছে টাস্কফোর্স।
সুপারিশে আরও বলা হয়, আইপিওর শেয়ারের দাম নির্ধারণে নতুন প্রাইসিং মডেল তৈরি করা হবে, যাতে করে নতুন কোম্পানিগুলো ন্যায্য মূল্য পায়। এর মাধ্যমে বড় ও গুণগত মানসম্পন্ন কোম্পানির বাজারে আসার আগ্রহ বাড়বে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার দ্রুত সংস্কারে ড. ইউনূসের পাঁচ নির্দেশনা
আইপিও অনুমোদনে ইস্যু ম্যানেজারদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব নির্ধারণেরও সুপারিশ এসেছে, যার ফলে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
এছাড়া নতুন তালিকাভুক্ত হতে চাওয়া কোম্পানিগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে টাস্কফোর্স। তাদের মতে, কোম্পানিতে সুশাসন জোরদার হলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থও সুরক্ষিত থাকবে।
বড় পরিবর্তনের সুপারিশ মিউচুয়াল ফান্ডে
আইপিওর পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ড পুনর্গঠনেও বিএসইসির কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছে টাস্কফোর্স।
প্রতিবেদনে সকল মেয়াদি (ক্লোজ-এন্ড) ফান্ডকে অবশ্যই ট্রাস্ট ডিডে নির্ধারিত প্রাথমিক মেয়াদ শেষে অবসায়ন (রিডিম) করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে কোনো বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) উপস্থিত ইউনিট-হোল্ডারদের তিন-চতুর্থাংশ ভোটে কোনো ফান্ড ওপেন-এন্ডে রূপান্তরিত হতে পারবে।
যেসব ফান্ডের মেয়াদ ইতোমধ্যে বাড়ানো হয়েছে, সেগুলোর জন্য সংশোধিত বিধিমালা কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে একটি ইজিএম ডাকার সুপারিশ করা হয়েছে। সেখানে ৭৫ শতাংশ ইউনিট-হোল্ডার রূপান্তরের পক্ষে ভোট দিলে তা রূপান্তর হবে; অন্যথায় তিন মাসের মধ্যে ফান্ডের মেয়াদ শেষ বিবেচনা করতে সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া গ্রোথ, ব্যালান্সড, শরিয়াহ-অনুবর্তী, ফিক্সড ইনকাম ও মানি মার্কেট ফান্ডের জন্য আলাদা আলাদা বাধ্যতামূলক সম্পদ বরাদ্দ নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব এসেছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ সীমা বাড়ানোর প্রস্তাবও দিয়েছে টাস্কফোর্স। এ ক্ষেত্রে একক শেয়ারে বিনিয়োগের সীমা ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ এবং একক শিল্প খাতে বিনিয়োগের সীমা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীতের সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও বাজারে তালিকাভুক্ত নয়—এমন ইক্যুইটি সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করতে নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছে টাস্কফোর্স। শুধু মেইন বোর্ডে তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির ইস্যুকৃত বন্ড বা প্রেফারেন্স শেয়ারেই বিনিয়োগের অনুমতি থাকবে।
মিউচুয়াল ফান্ডে বার্ষিক ব্যয় অনুপাতের সীমা সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ফিক্সড ইনকাম ও মানি মার্কেট ফান্ডের জন্য এই হার হবে ২ শতাংশ।
পাশাপাশি মেয়াদি ফান্ডের ক্ষেত্রে বছরে অর্জিত লাভের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ ইউনিট-হোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণের প্রস্তাব এসেছে। ওপেন-এন্ড ফান্ডের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটে ন্যূনতম লভ্যাংশ হবে ঐ বছরের অর্জিত লাভ এবং ভার আরোপিত গড় আয় (ওয়েট এভারেজ আর্নিং পার ইউনিট)—এই দুটির মধ্যে যেটি কম, তার অন্তত ৩০ শতাংশ।
সুপারিশের বিষয়ে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, ‘টাস্কফোর্সের সুপারিশ বাস্তবায়নে কমিশন দ্রুত আইনি সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করবে। এসব সুপারিশ কার্যকর হলে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
১৯৯ দিন আগে
আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ভূমিকা থাকা উচিত: এটিএম তারিকুজ্জামান
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেছেন, আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ভূমিকা থাকা উচিত। আগে এক্সচেঞ্জের ভালো ভূমিকা ছিল, এখন অনেকটাই কম।
তিনি বলেন, বর্তমানে আইপিওসহ সব ধরনের পাবলিক অফারের অনুমোদন দেয় বিএসইসি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলাদা আলাদা আইন রয়েছে। কোথাও স্টক এক্সচেঞ্জ অনুমোদন দেয় আবার কোথাও রেগুলেটর অনুমোদন দেয়। আমাদের দেশে আগে থেকেই রেগুলেটর আইপিও অনুমোদন দিয়ে আসছে।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিএমজেএফের নিজস্ব কার্যালয়ে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত সিএমজেএফ টক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আবু আলী এটি সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি জিয়াউর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরেক প্রশ্নের উত্তরে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, পুঁজিবাজারের আস্থার উন্নয়নে ফ্লোর প্রাইস কোনো স্থায়ী কোনো সমাধান নয়।
তিনি বলেন, এটা শেয়ার প্রাইস নির্ধারণে সরাসরি হস্তক্ষেপ। রেগুলেটর বা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ফিক্স করা ঠিক না। এটা বিশ্বের কোথাও নেই। স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ডিসকভারের জায়গা।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক নির্বাহী পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
প্রশ্ন-উত্তর পর্বে পুঁজিবাজারের ম্যানুপুলেশন বন্ধ, ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেন, কৌশলগত বিনিয়োগ ও টেকনিক্যাল সহায়তা, ভালো কোম্পানী পুঁজিবাজারে আনা, বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা ও তালিকাভুক্ত কোম্পানীতে সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ নানা বিষয় ওঠে আসে।
আরও পড়ুন: জুলাই-সেপ্টেম্বরে ২০৯,৬২৬ মিলিয়ন টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বিডা
অনুষ্ঠানে ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথকীকরণে ডি-মিউচ্যুয়ালইজেশন করা হয়। এই আইনে স্বতন্ত্র পরিচালকদের প্রাধ্যান্য দেওয়া হয়েছে। ট্রেকহোল্ডারদের প্রতিনিধিও রয়েছে। তবে কাজ করতে গিয়ে মনে হচ্ছে, কিছু বিষয় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, সেটা নিয়ে রেগুলেটরের সঙ্গে আলোচনা করবো আমরা।
ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশনের পর স্টক এক্সচেঞ্জে বেশ কিছু সুফলও এসেছে। মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা আলাদা হয়েছে। সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপে নেই। অপারেশনে বোর্ডের কোনো ইনফ্লুয়েশন নেই। তবে আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
কৌশলগত বিনিয়োগকারী থেকে কী পেলাম এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রস্তাবে টেকনিক্যাল কিছু প্রস্তাব ছিল। সেই প্রস্তাবের কিছু কাজ ইতোমধ্যে হয়েছে। আরও কিছু বাকি রয়েছে। করোনার কারণে বাস্তবায়নের বিলম্ব হয়েছে। আশা করি, অবশিষ্ট কাজও হবে।
আরও পড়ুন: রপ্তানি বাড়াতে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দূর করতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বিনিয়োগকারীর সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, বাজারে লাভ-লোকসান থাকবেই। কারো লোকসান হবে না-এমন নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হয়, বিনিয়োগকারীর টাকা যাতে কেউ আত্মসাৎ করতে না পারে- সে ব্যাপারে আমরা তৎপর আছি।
পুঁজিবাজারে ম্যানুপুলেশন বন্ধে ডিএসই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে শেয়ার কারসাজি নিয়ে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, অনেক তদন্তই ডিএসই করার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে। কারসাজি নিয়ন্ত্রণের ডিএসইর সার্ভিলেন্স টিম কাজ করছে।
দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্তি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিশ্চয়ই দেখেশুনেই আইপিও অনুমোদন করে। আর বিএসইসি অনুমোদন করলে সেটি তালিকাভুক্ত করা আমাদের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, বাজারের উন্নয়নে আইন-কানুনের কিছু পরিবর্তন ও সংশোধন প্রয়োজন। এগুলো আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে তুলে ধরব। বিএসইসি এই বাজারের উন্নয়নে অনেক ভূমিকা রাখছে। তাই আইনের পরিবর্তন ও সংশোধনের বিষয়ে তারা ইতিবাচক সাড়া দেবেন বলে আশা করছি।
আরও পড়ুন: খোলা বাজারে ১৫ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি
৭৫১ দিন আগে
রবির পুঁজিবাজারে যাত্রা শুরু ২৪ ডিসেম্বর
ঢাকা এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে লেনদেন শুরু করবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেড।
১৮০৯ দিন আগে