বড়দিন
বড়দিন উপলক্ষে র্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
যে কোন জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) সারাদেশে বড়দিন উদযাপনের জন্য তার বিশেষ ফোর্স টিম, হেলিকপ্টার, ডগ স্কোয়াড এবং বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রেখেছে।
যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আগামীকাল উৎসব ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হবে বড়দিন।
র্যাব সদর দপ্তর সূত্র জানায়, বড়দিন উপলক্ষে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই জঙ্গির পলায়নকে 'ব্যর্থতা' বলেছেন র্যাব মহাপরিচালক
অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাড়া চার্চগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, ফুট ও মোবাইল টহল,যানবাহন স্ক্যানার, চেকপোস্ট ও সিসিটিভি মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে র্যাব সদর দপ্তরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, এদিন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশির জন্য রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইতোমধ্যে এলিট ফোর্সের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া অপপ্রচার ও গুজব ঠেকাতে র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিমের সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফারদিন হত্যার তদন্তে অগ্রগতি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: র্যাব
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত র্যাব
বড়দিন উদযাপনে পাহাড়ে খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ
রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) শুভ বড়দিন। পাহাড়ের খ্রিস্টান পল্লীগুলোতে বড়দিন উদযাপনে এখন উৎসবের আমেজ। পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটির খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চলছে নানা আয়োজন। বড়দিন উপলক্ষে গির্জাগুলোকে ফুল দিয়ে আকর্ষণীয় নানা রঙে সাজানো হয়েছে। গির্জায় গির্জায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা।
রাঙামাটি জেলাসহ প্রত্যন্ত এলাকায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের গ্রামগুলো লাল, নীল বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে। এছাড়া ক্রিসমাস ট্রি, ধর্মীয় প্রার্থনা, বাইবেল পাঠ, যিশুর জন্মের সে গোশালাও তৈরি করা হয়েছে।
গির্জাগুলোও সাজানো হয়েছে নানান সাজে। আর ঘরের ওপরে টাঙানো হয়েছে রঙিন কাগজে বানানো তারা চিহ্নিত আলোক সজ্জা। বসতবাড়ির আঙ্গিনায়ও দেখা গেছে নানা রঙের কারুকাজ।
এছাড়া শহরের তবলছড়ি বন্ধু যীশু টিলা গির্জায় দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে এ উৎসবে মেতে উঠেছে বাঙালিরাও। আর বড়দিন উপলক্ষ্যে কেক কেটে রাঙ্গামাটিসহ প্রত্যন্ত এলাকায় উৎসবের সূচনা করবে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা।
গত দুই বছর করোনার কারণে স্বল্প পরিসরে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা বড়দিন পালন করলেও এ বছর করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবার স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মেনে আনন্দঘন পরিবেশে বড়দিন উদযাপন করছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা। শিশুরা মেতে উঠেছে বড়দিনের আনন্দে।
আরও পড়ুন: রবিবার শুভ বড়দিন
রাঙামাটি শহরে সাতটি খ্রিস্টান পল্লী রয়েছে। এরমধ্যে আসামবস্তি, নতুনবস্তি, বন্ধু যীশুটিলা ও রির্জাভমুখসহ অন্যান্য গ্রামের মানুষ গির্জায় প্রার্থনা করে নানা আয়োজনে প্রভু যীশুর জন্মদিনের উৎসব পালনে ব্যস্ততার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে।
বড়দিন উদযাপনে পাহাড়ের খ্রিস্টান পল্লী গুলোতেও চলছে উৎসবের আমেজ। রাঙামাটিসহ কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা, বাঘাইছড়ি সাজেক ইউনিয়ন ও বিলাইছড়ির পাংখোয়া পাড়ায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী পাংখোয়া ও খিয়াং সম্প্রদায়ের মানুষ বড় দিন উদযাপন করতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আবার কেউ কেউ এলাকায় আয়োজন করেছে প্রীতিভোজের।
অন্যদিকে, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উপলক্ষে রাঙামাটি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন।
খ্রিস্টান পল্লীগুলোর আশে-পাশে পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
রাঙামাটি ক্যাথলিক চার্চপাল পুরোহিত ফাদার মাইকেল রয় জানান, ‘ঈশ্বরের আশীর্বাদ রূপে যীশু এসেছিলেন মানবতার কল্যাণে মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখাতে। পাহাড়ে শান্তির বার্তা নিয়ে আসবে প্রভু যীশুর জন্মদিন। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় জেলা শহরসহ রাঙ্গামাটির বিভিন্ন গির্জায় বড়দিন উদযাপিত হবে। এ উৎসবের মধ্যে মিশে যাবে সকল হিংসা, সংঘাত। সৃষ্টি হবে সম্প্রীতি মেলবন্ধন।
দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধির পাশাপাশি পাহাড়ের শান্ত পরিস্থিতি ও করোনার পরিস্থিতিতে সকল মানুষ যাতে সুস্থ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে প্রভু যীশুর জন্মদিনে এমনটাই প্রার্থনা করছে সকলে।’
আরও পড়ুন: বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে বরিশালের ১শ গীর্জায় কঠোর নিরাপত্তা
গাজীপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বড়দিন উদযাপিত
বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে বরিশালের ১শ গীর্জায় কঠোর নিরাপত্তা
বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে বরিশালের একশটি গীর্জায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার দুপুরে বরিশাল নগরীর পলিটেকনিক রোডের জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভা কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার বলেন, বরিশাল জেলার একশ’ গীর্জার মধ্যে একটিতে কোন ইনসিডেন্ট ঘটলে তাহলে সকল ভালো কার্যক্রমের ফলাফল শুন্য, তাই নিরাপত্তার দিকটাতে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। বড়দিন ও গীর্জাকেন্দ্রীক কোন মোটরসাইকেল মহড়া করা হবে না।
তিনি বলেন, দুষ্টু লোক আছে আশপাশে, তারা অসাম্প্রদায়িক আমাদের এই দেশে সাম্প্রদায়িক কোন ঘটনা উস্কে দিতেই পারে। তাই সার্বিক দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারন সবাই মিলে বড়দিনের উৎসব উদযাপন করতে চাই।
তিনি বলেন, গীর্জায় বড় কোন ব্যাগ নিয়ে যাওয়া যাবে না। ধর্মীয় অনুষ্ঠানস্থলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থায়ী সিসি ক্যামেরা না থাকলে সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে।
এছাড়া বড়দিনে গীর্জা ও সড়ককেন্দ্রীক নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিদ্যুতের দায়িত্বপূর্ণ কর্মকর্তা বরাবর চিঠি দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান হোসেন। এই সভায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কেএসএ মহিউদ্দিন মানিক-বীর প্রতীক।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ সরদার, ইকবাল হোসেন, বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ গীর্জার প্রতিনিধিরা।
কোভিড ১৯: বিশ্বজুড়ে আরও একটি নিরানন্দ বড়দিন
করোনাভাইরাস বৃদ্ধির ফলে বেথলেহেম ও ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে লন্ডন ও বোস্টন পর্যন্ত দ্বিতীয় বছরের মতো ক্রিসমাসের অনুষ্ঠান পালন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গির্জাগুলোকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাতিল করতে বলা হচ্ছে এবং নাগরিকদের ভ্রমণ ও পারিবারিক জমায়েত সীমিত করতে বলা হচ্ছে।
যিশু খ্রিষ্টের কথিত জন্মস্থান ইসরায়েলে ওমিক্রন সংক্রমণ কমানোর জন্য আন্তর্জাতিক পর্যটকদের ইসরায়েলে ভ্রমণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে।
জার্মানিতে ক্রিসমাসের দিনে সকাল থেকে কোলনের বিশাল ক্যাথেড্রালের চারপাশে একটি বড় লাইন দেখা যায়। এ লাইন ক্যাথেড্রালের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য নয়, করোনার টিকা দেয়ার জন্য।
ক্যাথেড্রালের প্রভোস্ট গুইডো আসমান ডিপিএ নিউজ এজেন্সিকে বলেন, ক্রিসমাস উপলক্ষে এই টিকাদান কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় দুই বছর ধরে চলা লকডাউন এবং অন্যান্য বিধিনিষেধে আটকে থেকে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। সবাই এখন নিরাপদে ছুটির অনুষ্ঠান উপভোগের জন্য উন্মুখ।
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ওমিক্রন ঢেউ শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে
রোজালিয়া লোপেস নামের পর্তুগিজ এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী ক্যাসকেসের উপকূলীয় শহরে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা করছিলেন। তিনি বলেন, তিনি ও তার পরিবার মহামারির কারণে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এখন ভ্যাকসিন, বুস্টার ডোজ, দ্রুত হোম টেস্ট ও জনসম্মুখে মাস্ক পরাসহ সব নিয়ম মেনে হলেও তারা ক্রিসমাসের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে চায়।
নিউইয়র্ক শহর, যেখানে ওমিক্রন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে; সেখানকার অধিবাসীরা করোনা পরীক্ষা করার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হওয়ার আগে বাড়তি সতর্কতা হিসাবে অনেকেই এসময় করোনা পরীক্ষা করছেন।
অনেকে ছুটির দিনে ভ্রমণ করতে বাধার মুখে পড়েছে কারণ বিভিন্ন দেশের প্রধান এয়ারলাইনগুলো ওমিক্রনের কারণে শত শত ফ্লাইট বাতিল করেছে।
শুক্রবার সাদিয়া রেইন নামের এক নারী তার ৭৫ বছর বয়সী মায়ের সঙ্গে দেখা করতে ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়া থেকে নিউইয়র্ক সিটিতে পৌঁছেছেন। রেইনস বলেন, গত দু’বছর তারা দু’জন ক্রিসমাসে আলাদা থেকেছেন। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ায় ভ্রমণে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, তিনি এবছর মায়ের থেকে আলাদা থাকতে পারেননি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য চার্চ ব্যক্তিগত বিভিন্ন পরিষেবা বাতিল করেছে। এরমধ্যে রাজধানী ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ক্যাথেড্রাল ও বোস্টনের ঐতিহাসিক ওল্ড সাউথ চার্চও রয়েছে।
রোমে শুধুমাত্র পোপ ফ্রান্সিস সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাস্ক ছাড়া আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। অন্যান্য বছর সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে কমপক্ষে দুই হাজার মানুষ একত্রিত হতো। এবছর সেখানে প্রবেশ দর্শকদের প্রবেশ সীমিত ছিল এবং উপাসকদেরও মাস্ক পরতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে করোনা শনাক্তের ৭৩ শতাংশ এখন ওমিক্রন
জার্মানিতেও গির্জাগামীদের বিভিন্ন বিধিনিষেধ মানতে হয়েছে। অনেক জায়গায় টিকা বা করোনা পরীক্ষার প্রমাণপত্র দেখাতে হয়েছে।
ইউরোপের সবচেয়ে কঠোর লকডাউনের মধ্যে থাকা নেদারল্যান্ডের লোকেরা কঠিন বিধিনিষেধের মধ্যে ক্রিসমাস পালন করছে। দেশটিতে বার এবং রেস্তোরাঁসহ সমস্ত অপ্রয়োজনীয় দোকান বন্ধ ছিল এবং ক্রিসমাসে চারজনের বেশি মানুষ একত্রে কোথাও ভ্রমণে যাওয়া নিষেধ ছিল।
ফ্রান্সে ক্রিসমাসের দিনে কেউ কেউ হাসপাতালে প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করেছেন। কারণ দেশটিতে সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। তবে সরকার ক্রিসমাসের ছুটি উপলক্ষে কারফিউ তুলে নিয়েছে।
বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্পে ক্রিসমাস ট্রিগুলিকে সাংস্কৃতিক স্থানগুলো বন্ধ রাখার প্রতিবাদে জানালা থেকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখেছে অধিবাসীরা।
বেথলেহেমে মহামারির আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার খ্রিস্টান তীর্থযাত্রী ভ্রমণ করতেন। কিন্তু গতবছরের মতো এবছরও দর্শনার্থীর অভাবে শহরটির হোটেল, রেস্তোরাঁ ও উপহার সামগ্রীর দোকানগুলো মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ৩ দিনে দ্বিগুণ হচ্ছে ওমিক্রন সংক্রমণ, ৮৯ দেশে শনাক্ত: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
গাজীপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বড়দিন উদযাপিত
দেশের বৃহত্তম খ্রিস্টান পল্লী গাজীপুরের খ্রিস্টান এলাকাগুলোতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপিত হয়েছে।
বড়দিন উপলক্ষে ভোর থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে খ্রিস্টান পল্লীগুলোতে উৎসবে মেতে উঠে। সকাল থেকে গির্জায় গির্জায় খৃষ্টযাগ, উপাসনা, প্রার্থনা সভা, প্রসাদ বিতরণ, উপহার প্রদান ও সঙ্গীতসহ ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতা এবং কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ভক্ত ও অনুসারীরা বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন। কোন কোন গির্জায় কয়েক দফায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি হয়েছে। সকালেই গির্জায় গিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভকামনা জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
আরও পড়ুন: সাভারে উৎসব আর ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যে বড়দিন পালিত
কেক কাটা অনুষ্ঠানের পর তিনি বলেন, অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এই এলাকার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা তাদের বড়দিন উদযাপন করছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে যাতে তারা উৎসব আনন্দ করতে পারে সেজন্য প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বড়দিন ঘিরে নানা আয়োজন, নিরাপত্তা জোরদার
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরি সেন্ট নিকোলাস চার্চের ফাদার জয়ন্তী গোমেজ জানান, গির্জায় বিশেষ প্রার্থনায় ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সারা বিশ্বের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনকের জন্মদিন মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। সামনের বছরগুলোতে যেন আর এরকম মহামারির দুর্যোগ মানুষের জীবনে আর না থাকে, সেই প্রার্থনাও জানানো হয় ঈশ্বরের কাছে।
বড়দিন: বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে বেনাপোল বন্দরে সারাদিন বাণিজ্য বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘটের তৃতীয় দিনেও স্থবির বেনাপোল বন্দর
বেনাপোল সি অ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষ্যে শনিবার বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ২৬ ডিসেম্বর রবিবার থেকে দু’দেশের মধ্যে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চালু হবে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু
বড়দিন উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য উঠা নামাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: হিলি বন্দরে ২ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
বাংলাদেশ বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান লিটন জানান, শনিবার বিশ্বে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব ক্রিসমাস ডে উদযাপিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ীরা আজ হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি, বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য উঠা-নামাসহ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
রবিবার থেকে পুনরায় বন্দরের সকল কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: ঈদে মিলাদুন্নবী: হিলিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
সীমিত পরিসরে বড়দিন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের নির্দেশনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
করোনা মহামারির কারণে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন (২৫ ডিসেম্বর) ও খ্রিস্টীয় বর্ষের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে আয়োজন করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট নানা দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানকে এক চিঠির মাধ্যমে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বব্যাপী সকল ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান, জনসমাবেশ অত্যন্ত সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরোয়াভাবে পালিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে মুসলমান, হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান অত্যন্ত সীমিত করে পালিত হয়েছে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন ও খ্রিস্টীয় বর্ষের শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে “থার্টি ফার্স্ট নাইট” উপলক্ষে প্রকাশ্যে কোনো সভা, সমাবেশ এবং ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন না করে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে আয়োজন করা যৌক্তিক হবে।’
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহর এলাকায় স্থানীয়ভাবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা ও আলোচনা করার পরামর্শ দেয়া হয়।
১৪ ডিসেম্বর জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিভাগীয় কমিশনার, মহানগর পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবকে এ চিঠি দেয়া হয়।
এছাড়া বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার ও নজরদারি অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বড়দিন: রাঙামাটির খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ
চট্টগ্রামে বড়দিন ঘিরে নানা আয়োজন, নিরাপত্তা জোরদার
বড়দিন: রাঙামাটির খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ
বড়দিন উদযাপনে রাঙামাটির খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের মধ্যে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। এ উপলক্ষে গীর্জাগুলোকে ফুল দিয়ে নানান রঙে সাজাঁনো হয়েছে।
গত দুই বছর করোনার কারণে স্বল্প পরিসরে বড়দিন পালন করলেও এবছর করোনার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মেনে আনন্দঘন পরিবেশে বড়দিন উদযাপন করবেন খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা।
রাঙামাটি শহরে সাতটি খ্রিস্টান পল্লী রয়েছে। তার মধ্যে আসামবস্তি, নতুনবস্তি, বন্ধু যীশুটিলা, রির্জাভমুখসহ অন্যান্য গ্রামের মানুষ গীর্জায় প্রার্থনা করে নানা আয়োজনে প্রভু যীশুর জন্মদিন পালন করবেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বড়দিন ঘিরে নানা আয়োজন, নিরাপত্তা জোরদার
এছাড়া কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা ও বিলাইছড়ির পাংখো পাড়ায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী পাংখো ও খিয়াং সম্প্রদায়ের মানুষ বড় দিন উৎযাপন করতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
রাঙামাটি ক্যাথলিক চার্চের ফাদার জেওমে ডি. রোজারিও বলেন, দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধির পাশাপাশি পাহাড়ের শান্ত পরিস্থিতি ও করোনার পরিস্থিতিতে সকল মানুষ যাতে সুস্থ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে প্রভু যীশুর জন্মদিনে এমনটাই প্রার্থনা করবে সকলে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে গুর্খা সম্প্রদায়ের ‘টিকা লাগাউনে’ উৎসব
চট্টগ্রামে বড়দিন ঘিরে নানা আয়োজন, নিরাপত্তা জোরদার
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ১৭ গির্জায় নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।