ইপিজেড
মোংলা ইপিজেডের আগুন ২৪ ঘণ্টা পর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে
ফায়ার সার্ভিসের আটটি টিমের ২৪ ঘন্টার নিরলস প্রচেষ্টার পর বুধবার বিকালে বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডের একটি ভারতীয় লাগেজ কারখানায় লাগা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
বিকাল ৩টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
খুলনা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মামুন মাহমুদ জানান, বিকাল ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় এবং তারা কারখানায় ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: মোংলা ইপিজেডে ভিআইপি কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট
এর আগে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ভিআইপি-১ লাগেজ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তখনও কারখানার ভেতরের বিভিন্ন জায়গায় স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়।
অগ্নিকাণ্ডের সময় কর্তৃপক্ষ কারখানা থেকে ৭৭৫ জন শ্রমিককে বের করে আনতে সক্ষম হয়।
এ ঘটনায় মোংলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মোংলায় বসুন্ধরা গ্যাস ফ্যাক্টরিতে বিস্ফোরণে দগ্ধ ৬
বাগেরহাটে আগুনে ৭ দোকান পুড়ে ছাই
মোংলা ইপিজেডে ভিআইপি কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট
মোংলা ইপিজেডে ভিআইপি-১ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট কাজ করছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ৩টায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
তবে এ ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: রাঙ্গুনিয়ায় বসতঘরে আগুনে পুড়ে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু
মোংলা ইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আরদেশ আলী বলেন, ভিআইপি নামক প্রতিষ্ঠানের প্লাস্টিক, কেমিকেলসহ বিভিন্ন পণ্য থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ইপিজেড স্টেশনের তিনটি ইউনিট, রামপাল, ফকিরহাট ও বাগেরহাটসহ মোট সাতটি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নেভাতে কাজ করছেন।
শিশু আয়াতের দেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার
চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড এলাকায় অপহরণের পর হত্যা করে কেটে ছয় টুকরো করে সাগর ও খালে ফেলে দেয়া শিশু আয়াতের শরীরের খণ্ডিত দুটি অংশ উদ্ধার করেছে বলে দাবি করেছে মামলা তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার দুপুরে নগরীর আকমল আলী রোডের সাগর পাড়ের একটি নালায় স্লুইচগেটের কাছে বিচ্ছিন্ন দুই পায়ের অংশ পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘আজ ষষ্ঠদিনের মতো অভিযানে আয়াতের খণ্ডিত মাংসপিণ্ড আকমল আলী রোডের সাগর পাড়ে স্লুইসগেট এলাকায় পাওয়া গেছে। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শিশু আয়াত হত্যা: আসামি আবীর ফের ৭ দিনের রিমান্ডে
উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর ইপিজেড থানার বন্দরটিলার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত (৫)। পরদিন এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন তার বাবা সোহেল রানা। ইপিজেড থানার পাশাপাশি তদন্তে নামে পিবিআই।
নিখোঁজের ১০ দিনের মাথায় ২৪ নভেম্বর রাতে আবীর নামে একজনকে আটক করে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে আবীর জানায় মুক্তিপণের জন্য আয়াতকে অপহরণ করেছিল। আয়াত চিৎকার দেয়ায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর লাশ ছয় টুকরো করে সাগর ও পাশ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়। পরে আকমল আলী সড়কে তার মায়ের বাসার সামনে একটি ঝোঁপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আয়াতের বাসার পাশে কবরস্থানে তার পায়ের স্যান্ডেলও উদ্ধার করা হয়।
ইতোমধ্যে আবীরকে পিবিআই প্রথমে দুই দিন এবং দ্বিতীয় দফায় সাতদিন রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। গতকাল (২৯ নভেম্বর) তার মা-বাবা দুইজনকে তিনদিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: শিশু আয়াতকে ৬ টুকরা করে হত্যা, লাশ উদ্ধারে সাগরে অভিযান পিবিআই’র
টুকরো করে শিশু হত্যা, অভিযুক্তের বাবা-মা ৩ দিনের রিমান্ডে
সর্বোচ্চ রপ্তানি, বিনিয়োগ ও চাকরি দেখলো ইপিজেড: বেপজা
দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তাদের আওতাধীন আটটি শিল্প অঞ্চল (ইপিজেড) ২০২১-২২ অর্থবছরে রেকর্ড উচ্চ কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয় এবং বিনিয়োগ দেখেছে। বুধবার এই তথ্য জানায় বেপজা।
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইপিজেড থেকে রপ্তানি ২০২২ অর্থবছরে আট হাজার ৬৬৫ দশমিক ৯০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এ বছরে রপ্তানি ৩০ দশমিক ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ রপ্তানি, বিনিয়োগ ও চাকরি দেখলো ইপিজেড: বেপজা
এর আগে ২০১৯ অর্থবছরে এটির কাছাকাছি পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৫২৪ দশমিক ১১ মিলিয়ন ডলার।
ইপিজেডের মোট রপ্তানির ৫৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ ছিল পোশাকের চালান। বাকিটুকু ছিল গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, জুতা ও চামড়াজাত পণ্য, টেক্সটাইল, তাঁবু, ক্যাপ, প্লাস্টিক সামগ্রী এবং ইলেকট্রনিক্স পণ্য।
এছাড়াও, বেপজা ২০২২ অর্থবছরে ৪০৯ দশমিক ৮০ মিলিয়ন বিনিয়োগ রেকর্ড করেছে। যা আগের সমস্ত রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। এ বছরে বিনিয়োগ ২০ দশমিক ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থার মতে, আগের ২০১৫ অর্থবছরে রেকর্ড ছিল ৪০৬ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন ডলার।
রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে বিনিয়োগ কারখানায় ৬৪ হাজার ১৬০টি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে, যা সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ৫১ শতাংশ বৃদ্ধির রেকর্ড হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
২০২২ সালের জুন পর্যন্ত, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন(তাইওয়ান এবং হংকং), জাপান, ভারত, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশসহ ৩৭টি দেশের বিনিয়োগকারীরা ইপিজেডে ছয় হাজার ৪০ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন বিনিয়োগ করেছে।
২০২২ সালের জুন পর্যন্ত, আটটি ইপিজেডের ৪৫৬টি অপারেশনাল এন্টারপ্রাইজ থেকে মোট রপ্তানি ৯৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যেখানে ক্রমবর্ধমান কর্মসংস্থানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ দুই হাজার ৩৬৫ জনের।
আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল: ৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ৪ কোম্পানি
বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে ‘বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন
সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফায়ারম্যান সাকিলের দাফন সম্পন্ন
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোর বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রাণ হারানো ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যের একজন সাকিল তরফদারের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৬ টা ৪৫ মিনিটে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নের শুকদাড়া গ্রামে সাকিলের বাড়িতে মরদেহটি নেয়া হয়।
এরপর সাকিলকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়া হয়। পরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তায় প্রস্তুত ভারত
এর আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে সাকিল তরফদারের মরদেহটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরে নেয়া হয়। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তার প্রথম জানাজা সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়।
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ –পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দীন বলেন, ‘যারা অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনায় মারা যান, তারা সাধারণত শহীদ হন। সাকিলও শহীদ হয়েছেন। তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের জুনে খুলনার কমার্স কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থান ফায়ার সার্ভিসে চাকরি পান সাকিল। প্রথমে তিনি বটিয়াঘাটা ফায়ার স্টেশনে, পরে মোংলা ইপিজেডে ফায়ার স্টেশনে বদলি হন। সেখান থেকে ছয় মাস আগে তাকে চট্টগ্রামের কুমিরা ফায়ার স্টেশনের পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফায়ার সার্ভিসের আরও ৩ সদস্য নিখোঁজ
চট্টগ্রামে লরিচাপায় ভ্যানচালক নিহত
চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড এলাকায় লরির চাপায় আলামিন (৩৫) নামে এক ভ্যানচালকের মুত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুর পৌনে ১ টার দিকে ইপিজেড থানার নেভি হাসপাতালের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত আলামিন ইপিজেডের তালতলা এলাকার বাসিন্দা সুলতান আহমদের ছেলে।ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবিরুল ইসলাম বলেন, আলামিন পেশায় একজন ভ্যান চালক ছিলেন। তিনি গ্যাসের সিলেন্ডার আনা-নেয়া করতেন। আজ দুপুরে গ্যাসের সিলেন্ডার আনার সময় নেভি হাসপাতালের সামনে লরির চাপায় তার মৃত্যু হয়। তার লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লরিটি আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
চট্টগ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে কলেজছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’
চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় এক কলেজছাত্রীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে বন্দরটিলা বাজারে একটি ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তাজনাহার আক্তার নূপুর (১৯) নূপুর ভোলার চরফ্যাশন থানার দক্ষিণ রাইছা গ্রামের মো.তাজুল ইসলামের মেয়ে এবং নগরীর পোস্তারপাড় মহিলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
নিহত নূপুরের চাচা মো. ইউছুফ বলেন, বাসায় কোনো পারিবারিক ঝামেলা ছিল না। কি কারণে আত্মহত্যা করেছে বুঝতে পারছি না। সেহরি খেয়ে ঘুমানোর পর সকালে পরিবারের সদস্যরা অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে দরজা ভাঙে। এসময় তাকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখা যায়। পরে ইপিজেড থানার পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
ইপিজেড থানার সেকেন্ড অফিসার নুরুজ্জামান বলেন, নিহত কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরেনসিক মর্গে রয়েছে।
আরও পড়ুন: পিরোজপুরে বিষপানে প্রেমিক যুগলের আত্মহত্যা
প্রেমের সম্পর্কে জটিলতা: হাতিরঝিল লেকে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
চট্টগ্রামে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা: প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে লায়লা বেগম নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইরানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার জোরারগঞ্জে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, হত্যা মামলার সাক্ষ্য দেয়ায় গত ১ জানুয়ারি ইরান, তার দুই ভাইসহ অন্যান্য সহযোগীরা মিলে ইপিজেড থানা এলাকায় লায়লা বেগমের বসতভিটায় হামলা চালায়। হামলায় লায়লা বেগম ও তার ছেলে গুরুতর আহত হন। পরে ৬ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মারা যান লায়লা বেগম।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার ইরান নগরীর ইপিজেড থানাধীন ২ নম্বর মাইলের মাথা এলাকার মহব্বত মুন্সীর বাড়ির মৃত আবুল বশরের ছেলে।
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, ইরানের বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় দুটি হত্যা মামলাসহ চারটি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১১ এপ্রিল পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এরশাদ (২২) নামে এক যুবককে নগরীর ইপিজেড থানার মাইলের মাথা মহিউদ্দিনের গ্যারেজের সামনে মারধর করেন ইরান ও তার দুই ভাই। দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত এরশাদকে ঘটনাস্থল থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার পরদিন এরশাদ মারা যান।
এ ঘটনায় ইরান ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ইপিজেড থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। এরপর আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে জামিনে বের হয়ে আসেন। জেল থেকে বের হয়ে মামলায় সাক্ষ্য না দেয়ার জন্য আসামিরা সাক্ষীদের চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু লায়লা বেগমের স্বামী কবির আহম্মেদ (৬৫) ও ছেলে ওমর ফারুক (৩১) এরশাদ হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ইরান, তার দুই ভাই ও অন্যান্য সহযোগীরা মিলে ইপিজেড থানা এলাকায় লায়লা বেগমের বসতভিটায় হামলা চালায়। হামলায় লায়লা বেগম ও তার ছেলে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে ৬ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় চমেক হাসপাতালে মারা যান লায়লা বেগম।
এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় ইরান ও তার দুই ভাইয়ের নামে আরেকটি মামলা হয়। এরপর থেকে পলাতক ছিলেন তিন ভাই। পরে র্যাব তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জোরারগঞ্জ থানা এলাকায় ইরানের অবস্থান শনাক্ত করে।
মঙ্গলবার ভোরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইরানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এখনো পলাতক রয়েছে তার দুই ভাই মো. আরমান (৩৫) ও ইমতিয়াজ (৩২)।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
চট্টগ্রামে নিজ বাড়ির ছাদে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
কুমিল্লা ইপিজেডে স্টোররুমের বোর্ড ধসে নারী শ্রমিকের মৃত্যু
কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) একটি গার্মেন্টসের নির্মাণাধীন স্টোররুমের ছাদ ঢালাইয়ের বোর্ড ধসে পড়ে এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও তিনজন। শনিবার ইপিজেডের নাসা গার্মেন্টসে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত জোসনা বেগম (৪৫) নগরীর দক্ষিণ চর্থার থিরা পুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা।
জানা যায়, নাসা গার্মেন্টসে দীর্ঘদিন কাজ করছেন জোসনা। শনিবার সকালেও কর্মস্থলে আসেন তিনি। হঠাৎ গার্মেন্টের স্টোররুম অংশের বোর্ড ধসে পড়ে। সেখানে আহত হন চারজন। তিনজন দৌড়ে সরে আসার কারণে গুরুতর আহত হননি। কিন্তু জোসনা বেগম বের হতে পারেন নি। গুরুতর আহত জোসনা বেগমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
কুমিল্লা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এটা আকস্মিক দুর্ঘটনা। নিহতের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ডাকাতির সময় বৃদ্ধাকে হত্যা: ৪ জনের যাবজ্জীবন
কুমিল্লায় প্রকাশ্যে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা
চট্টগ্রামে টিকা নিতে ভিড়, সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে
চট্টগ্রাম মহানগরীতে টিকা কেন্দ্রগুলোতে প্রচন্ড ভিড়ের কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। উপচে পড়া ভিড় আর অব্যবস্থাপনার কারণে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।
এক সময় করোনা টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে অনীহা থাকলেও বর্তমানে টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে প্রবণতা বাড়লেও বাড়েনি তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা। আবার মোবাইল ফোনে কোন মেসেজ না পেয়েও কেন্দ্রেগুলোতে অবাঞ্ছিত ভিড় অনেকটা নিত্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে একদিকে টিকা কেন্দ্রগুলোতে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি, অন্যদিকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও অনেকে টিকা নিতে পারছেন না।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে নগরীতে প্রতিদিন গড়ে ১০ জন করে করোনা রোগী মারা যাচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯শ’ জন।
বুধবার সকাল থেকে নগরীর কয়েকটি টিকাদান কেন্দ্র ঘুরে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গছে। সকালে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতাল টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, টিকা দিতে হাসপাতালের সামনে শত শত মানুষ সমবেত হয়েছেন। হাসপাতালের ভিতরে এক সঙ্গে এতো মানুষের প্রবেশ করানোর সুযোগ না থাকায় ধাপে ধাপে মানুষকে ভেতরে ঢুকানো হয়। কিন্তু প্রতিবার ভেতরে ঢুকানোর জন্য গেট খুলতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আবার কখনো রোদের তাপ সহ্য করে করোনার টিকা নিতে আসা মানুষ নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় না রেখেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমনকি লাইনের কেউ কেউ চাইছেন সামনের জনকে ঠেলে টিকা কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে। এতে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: টিকা পেতে ভোগান্তি, বিশৃঙ্খলা
সকাল ৮টায় টিকা নিতে আসা ৫৭ বছর বয়সী রহিম সোবাহান জানান, সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন কেন্দ্রের বাইরে। ১১টা পর্যন্ত ভেতরে যাওয়ার সুযোগ পাননি তিনি।
এই একই চিত্র দেখা গেছে বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গা-হালিশহর এলাকার টিকা কেন্দ্রগুলোতে। তার মধ্যে বন্দরের ধোপপুলস্থ ৩৮নং ওয়ার্ড অফিসের টিকা কেন্দ্রেটি উল্লেখযোগ্য। এখানে অনেকেই টিকা নিবন্ধন করেই টিকার কোন মেসেজ না পেয়েও নিবন্ধন কার্ড নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন।
পতেঙ্গার কাটগড় -স্টিল মিল এলাকায় টিকা দিতে আসা একাধিক নারী-পুরুষের লাইন এড়িয়ে তীব্র জটলার দৃশ্য দেখা যায়। তেমনি ইপিজেডের হক সাহেব রোডস্থ মোহাম্মদীয়া স্কুল এবং নিউ মুরিংস্থ আহম্মদীয় সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্রে এবং নিয়মিত টিকা কেন্দ্রে বন্দরটিলা মাতৃসদনের নিচে-উপরে ও মূল কেন্দ্রে ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি।
এখানে লাইনে অপেক্ষমান হাজেরা বেগম নামে এক নারী বলেন, কেন্দ্রের বাইরে যে ভিড় তাতে করোনা মুক্তির জন্য টিকা নিতে আসলাম নাকি করোনা সঙ্গে করে নিতে আসলাম ঠিক বুঝতে পারছি না।
এ ব্যাপারে বন্দর ইপিআই জোনের জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. হাসান মুরাদ চৌধুরী বলেন, আমরা বারবার সরকার ঘোষিত টিকার এসএমএস ছাড়া কাউকে কেন্দ্রে না আসতে অনুরোধ জানাচ্ছি। সকল কেন্দ্রের সামনে ব্যানার-সাইনবোর্ড লাগিয়ে টিকা কেন্দ্রে ভিড় এড়াতে নিরুৎসাহী করছি। তারপরও জনসাধারণ টিকার এসএমএস না পেয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করেই টিকা নিতে চলে আসছে। যার ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমক ও করোনা উপসর্গ দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন। আর এই অবস্থার রোধ করা না গেলে চট্টগ্রামে ভয়াবহ রূপ নিবে করোনা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ ব্যাপারে বারবার ঘোষণা দিচ্ছে ভিড়-জনসমাগম রোধ করা না গেলে করোনাভাইরাস অতিমাত্রাই সংক্রমিত হবে।
আরও পড়ুন: টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, একসঙ্গে অনেক মানুষ সমবেত হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সারাদিন টিকা দেয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এক সঙ্গে অনেকে ভিড় করছে। এরপরও সুশৃঙ্খলভাবে সবাইকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন আরও জানান, চট্টগ্রাম মহনগরী ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মোট ৩২৬টি কেন্দ্রে করোনার গণটিকা কার্যক্রম চলছে। গতকাল শনিবার প্রথম দিন প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪১ ওয়ার্ডের ১২৩টি বুথে টিকাদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ডা. সেলিম আখতার চৌধুরী জানান, সিটি করপোরেশন এলাকার প্রতি কেন্দ্রে ৩০০ জন করে টিকা নিতে পারছেন। তিনটি বুথে একদিনে ৯০০ জন টিকা পাবেন। এর বাইরে স্থায়ী ১১টি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলমান আছে। কোন কেন্দ্রে অনিয়ম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম পৌঁছেছে চীনের টিকা