জলবায়ু সংকট
আসন্ন জলবায়ু সংকট এড়াতে প্রধান অর্থনীতিগুলোকে অবশ্যই ন্যায্য অংশীদারিত্ব করতে হবে: জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী
অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়নের সমান বণ্টনের জন্য ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বারবার আহ্বানে খুব কম সাড়া পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে 'ডেলিভারিং ক্লাইমেট জাস্টিস: অ্যাক্সিলারেটিং অ্যাম্বিশন অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন অন অ্যাডাপ্টেশন অ্যান্ড ওয়ার্নিংস ফর অল' শীর্ষক জলবায়ু উচ্চাকাঙ্ক্ষা বিষয়ল শীর্ষ সম্মেলনের উচ্চ পর্যায়ের থিমেটিক সেশনে তিনি বলেন, ‘অভিযোজন তহবিলকে প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু ন্যায়বিচারের প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশ এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেকোনো গঠনমূলক পদক্ষেপের সঙ্গে একাত্ম হতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, বিশ্বের প্রধান অর্থনীতিগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সৎ থাকবে এবং আসন্ন সংকট এড়ানোর জন্য তাদের ন্যায্য অংশীদারিত্ব করবে।’
তিনি বলেন, জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশকে সাধারণত বিশ্বনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জাতিসংঘ স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলের জন্য সম্মাননা পেলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে বেশ কয়েকটি প্রকৃতি-ভিত্তিক, কাঠামোগত এবং প্রযুক্তিগত সমাধান রয়েছে যা বিশ্বের অন্যান্য অংশে একইভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে।’
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার ২০৫০ সালের মধ্যে ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রত্যাশিত প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এর জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অ্যাডাপটেশন পাইপলাইন অ্যাকসেলারেটর অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় একটি কার্যকর মডেল দেখতে চাই।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থায় যথেষ্ট বিনিয়োগ করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ভোলা ঘূর্ণিঝড়ে যে লাখ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল তার তুলনায় সরকার প্রাণহানির সংখ্যা এক অঙ্কে নামিয়ে এনেছে।
আরও পড়ুন: বাইডেনের নৈশভোজে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘৬৫ হাজার উপকূলীয় মানুষের সমন্বয়ে আমাদের বিশ্বের বৃহত্তম কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক কর্মসূচি রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের সর্বশেষ জাতীয় পরিকল্পনা একটি সমন্বিত বহু-বিপজ্জনক আগাম সতর্কতা পদ্ধতি গ্রহণ করেছে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশ আবহাওয়ার পূর্বাভাসে নিয়মিত আপডেট দিতে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী ভূমিকম্প মডেলিং নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের উপস্থিতিতে মহড়া পরিচালনার জন্য জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে অভিযোজন ও আগাম সতর্কীকরণে বিনিয়োগ নিখুঁত অর্থবহ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি আমাদের উন্নয়ন অংশীদাররা জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য এই সুযোগগুলো কাজে লাগাবে।’
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ এর মতো আরেকটি মহামারি প্রতিরোধে বিশ্বকে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে: জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
কপ-২৭ এর জলবায়ু পরিবর্তন আলোচনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে: হু
জলবায়ু সংকট ক্রমাগত মানুষকে অসুস্থ করে তুলছে এবং জীবন ও স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে তুলছে। আর তাই এ বিপর্য়ের কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য সংকটকে কপ-২৭ এর জলবায়ু আলোচনার কেন্দ্রে রাখার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
রবিবার হু এ সংক্রান্ত একটি অনুস্মারক জারি করেছে।
অনুস্মারকে বলা হয়েছে, হু বিশ্বাস করে যে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রশমন, অভিযোজন, অর্থায়ন এবং সহযোগিতার চারটি মূল লক্ষ্যে অগ্রগতির মাধ্যমে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটাতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, কপ-২৭ বিশ্বকে এক করার এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে রাখার (প্যারিস চুক্তি) লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করতে পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।
আরও পড়ুন: মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
সাংবাদিকদের ও কপ-২৭ এ অংশগ্রহণকারীদের উচ্চ পর্যায়ের একটি আলোচনায় যোগ দিতে স্বাগত জানায় হু।
হু জেনেভা থেকে এক বার্তায় জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন ইতোমধ্যেই মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে এবং জরুরি পদক্ষেপ না নিলে তা (প্রভাব ) চলতেই থাকবে।
হু’র মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন সারা বিশ্বে কয়েক লাখ মানুষকে অসুস্থ বা আরও বেশি রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলছে। এবং আবহাওয়ার চরম বিপর্যয় দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে নেতারা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা কপ-২৭-এ একমত হবেন যে, স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের বিষয়টিকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা উচিত।’
হু এর প্রতিবেদন অনুসারে ২০৩০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অপুষ্টি, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া ও তাপপ্রবাহের কারণে প্রতি বছর আনুমানিক আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যের জন্য সরাসরি ক্ষতির খরচ (অর্থাৎ, কৃষি ও পানি এবং স্যানিটেশনের মতো স্বাস্থ্য-নির্ধারক খাতে খরচ বাদ দিয়ে), ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ২ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার হবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
বৈশ্বিক তাপমাত্রার বৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যে খরা, বিধ্বংসী বন্যা ও ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী হারিকেন এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় আঘাত হানছে।
এই বিষয়গুলো সামগ্রিকভাবে মানব স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে।
তবে আশার কথা হলো, বিশ্বনেতারা যদি ২০২১ সালের নভেম্বরে গ্লাসগোতে দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলিকে সম্মান করে এবং জলবায়ু সংকট সমাধানে আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য এখনই পদক্ষেপ নেয়; তবে সমাধান আনা সম্ভব।
হু জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে একটি ন্যায্য, ন্যায়সঙ্গত ও দ্রুত পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি পরিচ্ছন্ন জ্বলানি রূপান্তর করার জন্য সরকারগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছে।
ডিকার্বনাইজেশনের প্রতিশ্রুতিতেও উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে এবং হু একটি জীবাশ্ম জ্বালানি অপসারণ চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। যার মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলের জন্য ক্ষতিকারক কয়লা ও অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানি ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত উপায়ে পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা যাবে।
এটিকে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের একটি হিসেবে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: মহামারি শুরু হওয়ার পর করোনাভাইরাসে মৃত্যু সর্বনিম্ন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে সোমালিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মসূচি চালু
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় জলবায়ু সংকট থেকে মনোযোগ সরানো উচিত নয়: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে জলবায়ু সংকট থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরানো উচিত নয়।
প্যারিস চুক্তির অধীনে অর্থায়ন ও প্রযুক্তির বিষয়ে উন্নত দেশগুলোর দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চলমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও আমরা বিশ্বকে জলবায়ু সংকট থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে দিতে পারি না।’
বুধবার বাংলাদেশ থেকে ঘানায় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) প্রেসিডেন্সি হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো সিভিএফের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও ফোরামের কাজ পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের প্রেসিডেন্সির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাধিকার হবে জলবায়ু ঝুঁকি থেকে সহনশীলতা ও সমৃদ্ধিতে আখ্যান পরিবর্তন করা।’
তার নেতৃত্বে সিভিএফ অধিকাংশ উদ্দেশ্য এবং আরও অনেক কিছু অর্জন করতে পারে বলে জানান তিনি।
নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘানাকে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী ঘানার প্রেসিডেন্ট আকুফো-আডোর নজরে সিভিএফ নেতৃত্ব স্থিতিশীল থাকবে।
তিনি বলেন, ট্রোইকার সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ঘানাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের প্রেসিডেন্সি কপ-২৬ এর ফলাফলের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছিল। মহামারি সত্ত্বেও আমরা জলবায়ু সংকটের দিকে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’
জলবায়ু উদ্যোগ বাড়াতে দেশগুলোর জন্য মিডনাইট সারভাইভাল ডেডলাইনও চালু করেছে সিভিএফ।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এনডিসি জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। প্রায় ৭০টি দেশ আমাদের আহ্বানে সাড়া দেয়।’
বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সির সময় এটি সদস্যদের জলবায়ু কার্যক্রমে সহায়তার জন্য সিভিএফ-ভি২০ যৌথ মাল্টি-ডোনার ফান্ড গঠন করে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ও মার্শাল আইল্যান্ড বীজ তহবিল প্রদান করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২০২১ সালে বাংলাদেশ আয়োজিত ভি২০ ক্লাইমেট ভালনারেবলস ফাইন্যান্স সামিটে আগামী পাঁচ বছরে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বিতরণ পরিকল্পনার জন্য চাপ দেয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা গ্লাসগোতে এটি বাস্তবায়ন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-গ্লাসগো ঘোষণা সিভিএফের মূল দাবি ও প্রতিশ্রুতির সারসংক্ষেপ।
তিনি বলেন, ‘আমরা উচ্চ নির্গমনকারী দেশগুলোর প্রতি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রতিশ্রুতি বাঁচিয়ে রাখতে এবং তাদের বার্ষিক জলবায়ু উদ্যোগ বাড়াতে আহ্বান নবায়ন করেছি।’
বাংলাদেশের মেয়াদে পাঁচজন থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু কার্যক্রমের জন্য জনমত গঠনে সিভিএফ-ভি২০ সংসদীয় গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সির সময় অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য সিভিএফ ও জিসিএ সচিবালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে জন কেরি ঢাকায়
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি শুক্রবার সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতিকে এগিয়ে নিতে তিনি ঢাকা এসেছেন।
বেলা সাড়ে ১১ টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন ও তার স্ত্রী সেলিনা মোমেন কেরিকে গ্রহণ করেন। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২২-২৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাইমেট ইস্যুতে একটি সম্মেলনের দাওয়াত দিতে ঢাকায় এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি জো বাইডেনের পক্ষ থেকে এই সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু-সহিষ্ণু উন্নয়ন করেছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
ভারত সফর শেষে কেরি টুইট করে বলেন, ‘প্যারিস চুক্তি জলবায়ু সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের আরও ক্ষমতায়নের বিশ্বব্যাপী প্রয়োজনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ‘তাই ভারতবর্ষে জলবায়ু পদক্ষেপ এবং শক্তি পরিবর্তনের জন্য চালিত নারী নেত্রীদের সাথে সাক্ষাতে আমি আনন্দিত।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ইউএনবিকে জানান, ঢাকায় কেরি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি এবং মূল উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে সাক্ষাত করবেন।
বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠকের আগে কেরি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এবং অন্যদের সাথে সাক্ষাত করবেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ুর কারণে বিশ্বে ২ কোটি মানুষ অভিবাসী হওয়ার আশঙ্কা
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি ও পরিবেশের মার্কিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মার্সিয়া বার্নিকাট বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বকে একটি দুর্দান্ত অংশীদার হিসেবে প্রস্তাব করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০ জন বিশ্বনেতাকে জলবায়ু সম্মেলনে আমন্ত্রণ করেছেন।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই শীর্ষ সম্মেলন সর্বজনীন দেখার জন্য লাইভ স্ট্রিম হবে।
জলবায়ু শীর্ষক সম্মেলনটি শক্তিশালী জলবায়ুর তাৎপর্য এবং অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো নির্দেশ করবে। এই নভেম্বরে গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (সিওপি২৬) হওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি মূল মাইলফলক হবে।
ড. মোমেন ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা আমাদের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো জানাতে পেরে খুশি হব। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাও আমরা তাদেরকে জানাব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে অভিযোজন যথেষ্ট নয় এবং এটিকে প্রশমন করতে হবে এবং তাদের প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাংলাদেশের সমর্থন প্রয়োজন। এটি কেরির বিশেষ লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল: মন্ত্রী
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সমস্যা সৃষ্টি করেনি এবং নদীভাঙ্গন থেকে মানুষকে পুনর্বাসিত ও রক্ষার জন্য দায়িত্বশীল দেশগুলোর উচিত দায়িত্ব ভাগ করে নেয়া।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জকে জোর দিয়ে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব গভীর জলবায়ু সংকটের মুখোমুখি এবং আমাদের বৈদেশিক নীতি, কূটনীতি এবং জাতীয় সুরক্ষার কেন্দ্রবিন্দু জলবায়ু পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে হওয়া উচিৎ।’
প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্যারিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য অফিসের প্রথম দিনেই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
পরের দিন ২৭ জানুয়ারি, তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রধান অর্থনীতিবিদদের প্রচেষ্টার উদ্যোগের জন্য তিনি শিগগরই নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করবেন।