পিবিআই
রহিমাকে অপহরণ করা হয়নি, মেয়ে অপহরণ নাটক সাজিয়েছে: পিবিআই
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে খুলনার আলোচিত রহিমা বেগম ‘অপহরণ নাটক’ সাজানো হয়েছিল বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া, সোমবার সকালে মহানগর হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানান, তদন্তে রহিমা বেগমকে অপহরণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নানের নেতৃত্বে অপহরণের নাটক সাজানোর প্রমাণ মিলেছে।
তিনি জানান, মূলত রহিমা বেগম অপহরণ হননি, তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে গিয়েছিলেন। তিনি ২৮ দিন আত্মগোপনে ছিলেন। এই ২৮ দিন তিনি বিভিন্ন স্থান পরিবর্তন করেছেন।
এছাড়া, গত বছর ২৭ অক্টোবর দিবাগত রাতে তিনি মহেশ্বরপাশার বাসা থেকে আত্মগোপন করার পরে ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় কিছুদিন অবস্থান করার পর টপ টেন এর একটি ব্যাগে কিছু কাপড় ও ওষুধ দিয়ে মরিয়ম মান্নান তাকে বান্দরবান পাঠিয়ে দেয়। সেখানে কিছুদিন অবস্থান করার পর তিনি চলে যান ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীর সৈয়দ গ্রামের জনৈক আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে।
পুলিশ সুপার জানান, সংবাদ পেয়ে ওই বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করি। তাকে উদ্ধারের পর তিনি কোনো কথাই বলছিলেন না। পরে রহিমা কয়েকজন প্রতিবেশীর নাম উল্লেখ করে জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তারা তাকে অপহরণ করেছে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে অপহরণের পর শিশুকে হত্যা, আটক ১
মুক্তিপণের জন্য ক্রাইম পেট্রোলের কায়দায় নীরবকে অপহরণের পর হত্যা
শিশু আয়াতের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার
চট্টগ্রামে অপহৃত ও খুন হওয়া পাঁচ বছরের শিশু আয়াতের বিচ্ছিন্ন মাথা বন্দরনগরীর একটি খাল থেকে বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
চট্টগ্রামের পিবিআই পরিদর্শক ইলিয়াস খান জানান, অভিযুক্ত আবিরের কাছ থেকে খবর পেয়ে তারা আকমল আলী রোডের ইপিজেড এলাকার একটি স্লুইস গেটের পাশের খাল থেকে মাথার অংশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, পিবিআইয়ের ২৫ জন সদস্যের দুটি দল গত তিন দিন ধরে আয়াতের দেহাবশেষ যেখানে ফেলা হয় সেখানে অনুসন্ধান করছে।
তিনি বলেন, 'আয়াতের মুখ বিকৃত হয়েছে, তাই শনাক্ত করা কঠিন, তবে এটি তার মাথা হওয়া উচিত।'এর আগে বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর আকমল আলী সড়কের খাল থেকে আয়াতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।শিশু নিখোঁজ হওয়ার ১০ দিন পর ২৫ নভেম্বর আবির আলীকে (২০) আলিনা ইসলাম আয়াতকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
আরও পড়ুন: শিশু আয়াতকে ৬ টুকরা করে হত্যা, লাশ উদ্ধারে সাগরে অভিযান পিবিআই’র
ভুক্তভোগী পরিবারের প্রাক্তন ভাড়াটিয়া অভিযুক্ত আবির ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের বন্দরটিলা এলাকায় আরবি পাঠের জন্য একটি মসজিদে যাওয়ার সময় শিশুটিকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে।
আবির মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরে তার দেহ ছয় টুকরো করে।
পরে দেহের অঙ্গ দুটি ব্যাগে মুড়িয়ে শহরের কাট্টালী এলাকার সমুদ্র সৈকতে ফেলে দেন।
পুলিশ জানায়, আয়াতের বাবা সোহেল রানা নিখোঁজ হওয়ার পর স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। দুই দিনের রিমান্ড শেষে সোমবার আবিরকে আরও সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। মঙ্গলবার আবিরের বাবা-মা আজহারুল ইসলাম ও আলেয়া বেগমকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: শিশু আয়াতের দেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার
চট্টগ্রামে শিশু আয়াত হত্যা: আসামি আবীর ফের ৭ দিনের রিমান্ডে
শিশু আয়াতের দেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার
চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড এলাকায় অপহরণের পর হত্যা করে কেটে ছয় টুকরো করে সাগর ও খালে ফেলে দেয়া শিশু আয়াতের শরীরের খণ্ডিত দুটি অংশ উদ্ধার করেছে বলে দাবি করেছে মামলা তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার দুপুরে নগরীর আকমল আলী রোডের সাগর পাড়ের একটি নালায় স্লুইচগেটের কাছে বিচ্ছিন্ন দুই পায়ের অংশ পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘আজ ষষ্ঠদিনের মতো অভিযানে আয়াতের খণ্ডিত মাংসপিণ্ড আকমল আলী রোডের সাগর পাড়ে স্লুইসগেট এলাকায় পাওয়া গেছে। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শিশু আয়াত হত্যা: আসামি আবীর ফের ৭ দিনের রিমান্ডে
উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর ইপিজেড থানার বন্দরটিলার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত (৫)। পরদিন এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন তার বাবা সোহেল রানা। ইপিজেড থানার পাশাপাশি তদন্তে নামে পিবিআই।
নিখোঁজের ১০ দিনের মাথায় ২৪ নভেম্বর রাতে আবীর নামে একজনকে আটক করে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে আবীর জানায় মুক্তিপণের জন্য আয়াতকে অপহরণ করেছিল। আয়াত চিৎকার দেয়ায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর লাশ ছয় টুকরো করে সাগর ও পাশ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়। পরে আকমল আলী সড়কে তার মায়ের বাসার সামনে একটি ঝোঁপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আয়াতের বাসার পাশে কবরস্থানে তার পায়ের স্যান্ডেলও উদ্ধার করা হয়।
ইতোমধ্যে আবীরকে পিবিআই প্রথমে দুই দিন এবং দ্বিতীয় দফায় সাতদিন রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। গতকাল (২৯ নভেম্বর) তার মা-বাবা দুইজনকে তিনদিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: শিশু আয়াতকে ৬ টুকরা করে হত্যা, লাশ উদ্ধারে সাগরে অভিযান পিবিআই’র
টুকরো করে শিশু হত্যা, অভিযুক্তের বাবা-মা ৩ দিনের রিমান্ডে
পিবিআই এখনো আয়াতের খন্ডিত দেহের সন্ধান পায়নি
চট্টগ্রামে শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতের খণ্ডিত দেহ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শনিবার দ্বিতীয় দিনের মত কাট্টলী সাগড়পাড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত আবীর আলীর (১৯) দেখানো স্থানগুলোতে তল্লাশি চালিয়েছে পিবিআই টিম।
তবে ওই স্থান থেকে গতকাল উদ্ধার করা হয়েছিল আয়াতের পোশাক ও জুতো। আয়াতের সে পোষাক বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা সোহেল রানা।
তিনি আহাজারি করে বলছিলেন-“কি অপরাধ করেছিল আমার নিষ্পাপ আয়াত আর বলেন, আমার মেয়ে কি পৃথিবীর আলোয় আর হাসবে না। রাঙাবে না আমার পৃথিবী”।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, গ্রেপ্তার আবির আলীর দেখানো জায়গাগুলোতে আমরা তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখেছি। আয়াতের শরীরের টুকরোগুলো পাওয়া যায় কিনা। কিন্ত পাওয়া যায়নি। হয়তো সাগরের পানিতে সেগুলো ভেসে গেছে। তবে খুনের আলামত আমরা উদ্ধার করেছি। আয়াতের জুতা ও জামা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আকমল আলী সড়ক থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে আয়াতকে হত্যার কথা স্বীকার করে।শুধুমাত্র মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে শিশু আয়াতকে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ আদায়ের সুযোগ না পেয়ে ছয় বছর বয়সী এ শিশুর লাশকে ছয় টুকরা করার পর তা কাট্টলী সাগরপাড়ে ফেলে দেয়া হয় বলে সে স্বীকার করেছে। তাকে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ড চাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মিরসরাই ট্রাজেডি: আয়াতের পর এবার চলে গেলেন তাসমির হাসান
তিনি বলেন, আয়াতের বাবা সোহেল রানার অনেক টাকা আছে ভেবে মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে ঘটনার দিন বিকালে আয়াতকে অপহরণ করে আবির আলী। পরে আয়াত চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে আকমল আলী সড়কের বাসায় নিয়ে ছয় টুকরো করা হয়। তারপর কাট্টলীর সাগরপাড়ে ফেলে দেওয়া হয়।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আবীর জানিয়েছে, ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রল’ও ‘সিআইডি’ তার পছন্দের সিরিয়াল। মূলত সেসব অনুষ্ঠান দেখেই মুক্তিপণ আদায়, লাশ গুম, আলামত নষ্ট সবকিছুই সেখান থেকে শিখেছে। এবং সে মোতাবেক আয়াতকে হত্যা করে লাশ ৬ টুকরো করেছে।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম জানান, আজ শনিবার বলেন, আয়াত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। শিশু আয়াতের বাবা সোহেল রানা মামলাটির বাদী।তবে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করবেন বলে জানান তিনি।
গত ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার বন্দরটিলার এলাকার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত। পরদিন শিশুর বাবা সোহেল রানা এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করলেও কোন হদিস মিলেনি। অবশেষে নিখাঁজের ১০ দিন পর এ ঘটনার রহস্যের জট খুলে পিবিআই। এ ঘটনায় আয়াতের বাবার ডায়েরিকে মামলা হিসেবে নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শিশু আয়াতকে ৬ টুকরা করে হত্যা, লাশ উদ্ধারে সাগরে অভিযান পিবিআই’র
চট্টগ্রামে পিবিআই’র মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখালো আদালত
চট্টগ্রামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলায় স্ত্রী মিতু হত্যার আসামি ও পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। মামলার শুনানী উপলক্ষে আসামি বাবুল আক্তারকে সকালে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মেট্রোর ইনচার্জ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানার দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন আদালত।
গত ১৭ অক্টোবর রাতে নগরীর খুলশী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর ইনচার্জ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রশিকিউশন) মো. কামরুল হাসান।
আরও পড়ুন: রিমান্ড শেষে কারাগারে বাবুল আক্তার
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা আব্দুল অয়াদুদ মিয়া।
একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকার ধানমন্ডি থানায় আরেকটি মামলা করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার।
পরে ১০ নভেম্বর সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম এর আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাবুল আকতারসহ অন্য আসামিরা মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করছেন। এর অংশ হিসেবে ইলিয়াস হোসেনকে দিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে ‘স্ত্রী খুন, স্বামী জেলে, খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’-শিরোনামে ফেসবুক ও ইউটিউবে ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রচার করেছেন। ভিডিওতে যে বক্তব্য রয়েছে তার মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাবুল ও ইলিয়াসের বিরুদ্ধে এবার পিবিআই পুলিশ সুপারের মামলা
পিবিআই প্রধানসহ ৬ পুলিশের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তারের মামলা খারিজ
রিমান্ড শেষে কারাগারে বাবুল আক্তার
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের করা মামলায় পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার সকালে ধানমন্ডি থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত শুক্রবার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: কারাগারে বাবুল আক্তারের কক্ষে তল্লাশির অভিযোগ ফেনীর ওসির বিরুদ্ধে
জানা যায়, শুক্রবার একদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রবিউল ইসলাম।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
১০ নভেম্বর বাবুল আক্তারের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাদী বনজ কুমার মজুমদারের পক্ষে ধানমন্ডি থানায় চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অন্য তিন আসামি হলো-বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া এবং সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: নিজের মামলায় ফের জামিন না মঞ্জুর বাবুল আক্তারের
স্ত্রী খুনের মামলায় বাবুল আক্তারকে কেন জামিন নয়: হাইকোর্ট
বাবুল ও ইলিয়াসের বিরুদ্ধে এবার পিবিআই পুলিশ সুপারের মামলা
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় কারাগারে আটক সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ও আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), চট্টগ্রাম মেট্রোর প্রধান পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা।
গত সোমবার রাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের খুলশী থানায় মামলাটি করা হলেও বুধবার রাতে তা জানাজানি হয়।
মামলায় বাবুলের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া ও ছোট ভাই হাবিবুর রহমান লাবুকেও আসামি করা হয়েছে।
গতকাল রাতে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগে সোমবার তিনি (পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা) মামলাটি করেছেন। মামলায় বাবুল আক্তারসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাবুল আক্তারসহ অন্য আসামিরা মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করছেন। এর অংশ হিসেবে ইলিয়াস হোসেনকে দিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে ‘স্ত্রী খুন স্বামী জেলে খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে ফেসবুক ও ইউটিউবে ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রচার করছেন। ভিডিওতে যে বক্তব্য রয়েছে তার মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের অভিযোগপত্র গ্রহণ
মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুলের করা মামলায় তাকেসহ ৭ জনকে আসামি করে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে।
আদালতে পিবিআইয়ের অভিযোগপত্র জমা দেয়ার আগে ৩ সেপ্টেম্বর এই মামলার তদন্ত নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন ইলিয়াস হোসেন। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার ও পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম মেট্রোর প্রধান পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানাসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন বাবুল। ২৫ সেপ্টেম্বর সেই আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।
এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর বাবুল, ইলিয়াস, ওয়াদুদ মিয়া ও লাবুকে আসামি করে ঢাকার ধানমন্ডি থানায় একই অভিযোগে মামলা করেন বনজ কুমার মজুমদার।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
পড়ুন: চট্টগ্রামে মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা
মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের অভিযোগপত্র গ্রহণ
চট্টগ্রামে মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ সাত জনকে আসামি করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।
সোমবার (১০ অক্টোবর) অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হালিমের আদালতে শুনানি শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
এসময় পিবিআইয়ের দেয়া অভিযোগপত্রের ওপর নারাজির আবেদন করেন বাবুল। আদালত বাবুলের আবেদন খারিজ করে দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম বলেন, মিতু হত্যা মামলায় আসামিপক্ষে নারাজি এবং পুনঃতদন্তের আবেদন করা হলেও শুনানি শেষে তা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।
মামলায় বাবুল আক্তার ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা ও খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু। এদের মধ্যে মুছা ও কালু পলাতক রয়েছে।
এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারসহ সাত জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই।
পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুলের দুই সন্তানের জবানবন্দি নিতে নির্দেশ
অভিযোগপত্রে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই উল্লেখ করেছে, পরকীয়ার ঘটনা জেনে যাওয়ায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তার সোর্সদের দিয়ে স্ত্রী মিতুকে খুন করিয়েছেন বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। বাবুল–মিতু দম্পতির বড় ছেলে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসির মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে ও আর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম (মিতু)। এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। একপর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই।
পরে গত বছরের ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আট জনকে আসামি করে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। পরে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়।
চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পিবিআই। সংস্থাটি জানায়, একই ঘটনায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিতে মিতুর বাবার মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই ঘটনায় দুটি মামলা চলতে পারে না। সম্প্রতি আদালত এটিকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করেন। তাই আদালতের পর্যবেক্ষণ মেনে ও বিধিবিধান অনুসারে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, বাবুলের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত শেষ করে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে।
পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
চট্টগ্রামে মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা
‘নিখোঁজ’ বিষয়ে রহিমার বক্তব্য বিভ্রান্তিকর: পিবিআই
ফরিদপুরে ২৯ দিন নিখোঁজ থাকার পর জীবিত উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম ‘নিখোঁজ’ হওয়ার বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বৃহস্পতিবার খুলনা পিবিআই –এর এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান ইউএনবিকে জানান, আদালতে দেয়া রহিমার জবানবন্দি তারা যাচাই করছেন।
এখন পর্যন্ত রহিমার বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করে এমন কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তা। সোমবার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুরের সৈয়দপুর গ্রামে কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে যান, যেখানে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে রহিমা থাকছিলেন।
এসপি মুশফিকুর বলেন, আমরা সেখানে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।
আদালতে দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী রহিমা বান্দরবান সদর উপজেলার ইসলামপুরে যাওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা আরও তদন্তের জন্য বান্দরবানেও যাবেন।
এছাড়া রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেলাল হাওলাদার নিখোঁজের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রহিমা বেগমের নিখোঁজ ঘটনা ‘অপহরণ’ নয়: পিবিআই
কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমরা তথ্য পাব বলে আশাবাদী। আমরা তার রিমান্ডের জন্য আদালতে আবেদন করেছি।’
জবানবন্দিতে রহিমা বলেন, ২৭ আগস্ট অপহরণের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় নিজেকে আবিষ্কার করেন। তিনি বান্দরবানের একটি হোটেলে কাজ নেন।
এরপর হোটেল মালিক তাকে একটি স্থানীয় ক্যাম্পে চাকরির প্রস্তাব দেয়। যার জন্য তার জন্মসনদ ও এনআইডি কার্ডের প্রয়োজন ছিল।
এজন্য তিনি জন্ম নিবন্ধন ও এনআইডি কার্ড সংগ্রহের জন্য ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে তার পরিচিত কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে যান।
সেখানে তিনি ১৬ সেপ্টেম্বর সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হকের কাছে জন্ম সনদ ও এনআইডির জন্য যোগাযোগ করেন এবং জানান, তিনি ওই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং জীবিকার জন্য বাগেরহাটে থাকতেন।
তবে ইউপি চেয়ারম্যান সন্দেহের বশবর্তী হয়ে এগুলো দিতে রাজি হননি বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তা।
পিবিআই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এখনও মামলাটি তদন্ত করছি এবং রহিমা বেগম তার নিখোঁজের বিষয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
২৯ দিন নিখোঁজ থাকা রহিমা বেগমকে আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করার পর ২৫ সেপ্টেম্বর তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরে তাকে খুলনার বয়রা এলাকায় তার ছোট মেয়ে আদুরী আক্তারের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় বলে বাদীর আইনজীবী আফরুজ্জামান টুটুল জানান।
রহিমা তার বিবৃতিতে ‘জমি বিরোধের জের ধরে অপহরণ’ হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।
আগের রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা থেকে রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপাড়া উপজেলার বণিকপাড়া এলাকায় বাড়ির পাশে পানি আনতে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন রহিমা। তার সন্তানরা ঘটনাস্থল থেকে তার স্যান্ডেল, স্কার্ফ এবং একটি কলসি খুঁজে পায়।
জবানবন্দিতে রহিমাকে অপহরণের অভিযোগে অভিযুক্ত ছয়জনকে তার সন্তানদের অভিযোগের ভিত্তিতে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলাতেও আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পিবিআইকে যা বললেন রহিমা
খুলনার রহিমাকে পিবিআইয়ে হস্তান্তর
রহিমা বেগমের নিখোঁজ ঘটনা ‘অপহরণ’ নয়: পিবিআই
ফরিদপুরে জীবিত খোঁজ পাওয়া রহিমা বেগমের ‘নিখোঁজ’ ঘটনা ‘অপহরণ’ নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘খুলনার দৌলতপুরের বাসা থেকে অপহরণের কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও মামলাটি তদন্ত করছি এবং রহিমা বেগম তার নিখোঁজের বিষয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে, মামলায় গ্রেপ্তারদের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান রহস্যজনকভাবে এই নিখোঁজের পেছনের ‘মাস্টারমাইন্ড’। মরিয়মসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সত্য উদঘাটন করা যাবে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: খুলনার ‘নিখোঁজ’ রহিমা ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরে ছিলেন: পুলিশ
২৯ দিন ধরে ‘নিখোঁজ’ থাকা রহিমা বেগমের জবানবন্দি ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে রেকর্ড করার পর তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাদীর আইনজীবী আফরুজ্জামান টুটুল জানান, পরে তাকে খুলনার বয়রা এলাকায় তার ছোট মেয়ে আদুরী আক্তারের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
রহিমা তার বিবৃতিতে ‘জমি বিরোধের জেরে অপহরণ’ হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তাকে অপহরণ করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি নিজে ফরিদপুর যান।
আগের রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা থেকে রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: খুলনার ‘নিখোঁজ’ রহিমা বেগম ফরিদপুরে জীবিত উদ্ধার: পুলিশ
খুলনায় পিবিআই কার্যালয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সময় রহিমা দাবি করেন, ‘আমার বাড়ির সামনে থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ে কয়েকজন আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।’
এ সময় রহিমার বরাত দিয়ে মুশফিকুর রহমান জানান, ‘গোলাম কিবরিয়া ও মো. মহিউদ্দিন নামে দুই ব্যক্তি যাদের সাথে জমি নিয়ে রহিমার বিরোধ ছিল তারা জোরপূর্বক একটি খালি কাগজে তার স্বাক্ষর নিয়ে মাত্র এক হাজার টাকা দিয়ে তাকে দূরবর্তী স্থানে ফেলে রেখে যায়।’
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে খুলনার নিখোঁজ নারীর লাশ পাওয়ার বিষয়ে পরিবারের সন্দেহ প্রকাশ