ফেনী
ফেনীতে চুরির দায়ে মাকে বেঁধে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় টাকা চুরির অভিযোগে মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে ছেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মঈন উদ্দিন নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
শনিবার বিকালে উপজেলার বাথানিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ট্রলির ধাক্কায় বাবা-ছেলের মৃত্যু, চালক আটক
নিহত নুর মোহাম্মদ নোয়াখালীর সুধারাম থানার আন্দার চর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। বাথানিয়া গ্রামে এক বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন তিনি।
অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন ছাগলনাইয়ার বাথানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
এদিকে খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ।
নুর মোহাম্মদের মা বিবি খতিজা জানান, চার বছর আগে নুর মোহাম্মদকে ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনর বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দিয়ে যান তিনি। তার মাসিক বেতন ধরা হয়েছিল দুই হাজার টাকা। চার বছরে তাকে কখনো ছুটি দিত না ওই পরিবার। সেই ক্ষোভ থেকে গেল ২৭ রমজানে বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তি একটি খাম নিয়ে নোয়াখালীর বাড়ি চলে যান নুর মোহাম্মদ। বাড়ি যাওয়ার পর থেকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অব্যাহত হুমকিতে ঈদের পরদিন তিনি ছেলেকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে হাজির হন এবং চুরি করে নেওয়া টাকা ফেরত দেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ট্রলির ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
তিনি আরও বলেন, বাড়ি ঢোকা মাত্রই ব্যাংক কর্মকর্তার চারভাই মিলে তার ছেলেকে মারধর শুরু করেন। বাধা দিলে তাকেও মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন তারা। সারা রাত দফায় দফায় তার ছেলেকে মারধর করা হয়। এ ছাড়া পরদিনও তার ছেলেকে মারধর করা হয়। এরপর শনিবার বিকালে মারধরে মারা যান তার ছেলে নুর মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, আমার ছেলের যদি কোনো অন্যায় থাকতো, তাহলে তাকে পুলিশে দিতো। আমি তাদের কাছে আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। তবু তাদের মন গলেনি। এভাবে নির্যাতন করে, সারারাত ধরে পেটাতে পেটাতে আমার ছেলেকে মেরে ফেলল। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম জানান, শনিবার রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। টাকা চুরিকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে।
ওসি আরও বলেন, নিহতের পিঠ, কোমর, হাত, পাসহ পুরো শরীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। তারপরও ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটি শেষে সোমবার খুলছে ব্যাংক, দোকানপাট-আদালত
তিনি বলেন, এ ঘটনায় রবিবার মা বিবি খতিজা ছাগলনাইয়া থানার ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। তিনি মারধরের কথা স্বীকার করেছেন।
ফেনীতে ট্রেন দুর্ঘটনা: দুই গেটম্যান বরখাস্ত
ফেনীর মুহুরীগঞ্জে বালুবোঝাই ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কায় ছয়জন নিহতের ঘটনায় দুই গেটম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রবিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) রিটন চাকমা।
বরখাস্ত দুইজন হলেন- মো. সাইফুল ও মো. রাশেদ খান। তাদের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম কারাগারে কয়েদির আত্মহত্যা, ৩ কারারক্ষী বরখাস্ত
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ জানতে রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনিসুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির সদস্যরা হলেন- রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবদুল হানিফ, বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) সাজিদ হাসান নির্জর, রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর কমানডেন্ট রেজানুর রহমান, রেলওয়ের বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন এবং বিভাগীয় টেলিযোগাযোগ ও সংকেত প্রকৌশলী জাহেদ আরেফিন তন্ময়।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, কী কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। দুর্ঘটনার সময় সিগন্যাল বারটি ফেলা হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।
এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ফেনীর মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন ক্রসিং এ চট্টগ্রামগামী একটি মেইল ট্রেন বালুবাহী ট্রাককে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়। এরমধ্যে ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে থাকা তিনযাত্রী যুবক, ট্রাক চালক, সহকারী ও চালকের ছেলে মারা যান।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় হাতকড়াসহ ২ আসামির পলায়ন, ৪ পুলিশ বরখাস্ত
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জবি শিক্ষক শাহেদ ইমনকে বরখাস্ত ও চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিমকে অব্যাহতি
ফেনীতে বালুবাহী ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ২
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় বালুবাহী ট্রাকে চট্টগ্রামগামী মেইল ট্রেনের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সাড়ে ৮টার দিকে মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ট্রাকটি রেললাইন পার হওয়ার সময় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু
নিহত মো. মিজান বরিশালের উজিরপুর কাউয়ারাহা গ্রামের আবুল হাওলাদারের ছেলে এবং অপরজনের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রামগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনটি সকালে মুহুরীগজ্ঞে এলাকায় পৌঁছলে লাইনে উঠা একটি ট্রাককে ধাক্কা দিলে এ সময় ঘটনাস্থলে ২ জন নিহত হন।
ঘটনার পর থেকে গেটম্যান মো. সাইফুল পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ফেনী সদর উপজেলার পূর্ব ফাজিলপুর মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ই/৩২(১)নং রেলগেইটে সকালে গেইটম্যান দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলেন না। আর এই কারণে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান বলেন, বালুবাহী ট্রাক রেলক্রসিং করার সময় ট্রাকের পেছনের অংশে ট্রেনের ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: তেজগাঁওয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রতিবন্ধী কিশোরের মৃত্যু
ঝিনাইদহে ট্রেনের ধাক্কায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু
ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত ১
ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে একরাম উদ্দিন নামে এক বাবুর্চি নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে চট্টগ্রামগামী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে তার মৃত্যু হয়।
নিহত একরাম উদ্দিন নোয়াখালীর সুধারাম থানার পশ্চিম মাইজচড়া গ্রামের মনসুর আহাম্মদের ছেলে।
আরও পড়ুন: পাবনায় ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু
তিনি ফেনী শহরতলীর জামেয়া রশিদিয়া মাদরাসায় বাবুচির কাজ করতেন।
জিআরপি পুলিশ জানায়, ফেনীর ফাজিলপুর এলাকায় চট্টগ্রামগামী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে কালিদহ রেল স্টেশনের পূর্বদিকে স্টিলব্রিজ সংলগ্ন স্থান থেকে লাশটি উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের ভাই জামেয়া রশিদিয়া মাদরাসার শিক্ষক ইমাম উদ্দিন জানান, তার ছোট ভাই একরাম ৫-৬ মাস জামেয়া রশিদিয়া মাদরাসায় বাবুর্চির কাজ করতেন। সকালে ঘুরতে বের হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন।
ফেনী জিআরপি পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম জানান, খবর পেয়ে একরামের বড় ভাই এসে লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় লাকসাম জিআরপি থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে হোটেল শ্রমিকের মৃত্যু
গাইবান্ধায় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
ফেনীতে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য
ফেনী শহরের অলিগলিতে, উপজেলার গ্রামাঞ্চলে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। হত্যা, চুরি, ছিনতাই, স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা, যৌন হয়রানিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে উঠতি বয়সী এসব কিশোররা।
এদের অনেকের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। ‘বড় ভাইয়েরা’এলাকায় প্রভাব বিস্তার, বিপক্ষের নেতা-কর্মীকে ধমকানো-শাসানো, জমিজমা বাগিয়ে নেওয়াসহ নানা স্বার্থ উদ্ধারে কিশোর গ্যাং লালন করা হয় বলে জানা গেছে। ফলে পরিবার বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চেষ্টা করেও তাদের ফেরানো যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেনী জেলায় অন্তত ১০টি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। ‘বড় ভাইদের’ আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তারা এখন বেপরোয়া, ভয়ংকর। এদের রাজত্ব জেলা শহর থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত। বড় বড় হাটবাজার ঘিরেও এদের প্রভাব। মাদকের জগতেও রয়েছে বিচরণ। সংঘবদ্ধ হয়ে ছিনতাই, নারী উত্ত্যক্ত, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, হানাহানি থেকে শুরু করে খুনোখুনিতেও জড়িয়ে পড়েছে এরা।
আরও পড়ুন: যশোরে অস্ত্রসহ ‘কিশোর গ্যাং’য়ের ৯ সদস্য আটক
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতাদের পাল্লা ভারী করতেই মূলত কিশোর গ্যাং সদস্যদের ডাকা হয়। ফেনীতে ‘কসাই’, ‘হিমিল’, ‘শান্ত’, ‘জেকে’, ‘পিটু’, ‘চাকমা জাবেদ’সহ একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতার কথা শোনা যায়। উঠতি বয়সী তরুনদের এ ভয়ংকর রূপ ভাবিয়ে তুলেছে অভিভাবক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।
বৃহস্পতিবার ফেনী পৌরসভার মধ্যম রামপুর এলাকা থেকে এসডিকে গ্রুপের প্রধান মো. রাব্বি, মো. তৌহিদুল ওরফে সাগর, মো. ফখরুলকে আটক করা হয়। ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ হয়ে মারামারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিলেন তারা।
তারা প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে স্থানীয় এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, নিজেদের মধ্যে মারামারি, অন্য সাধারণ কিশোরদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন এবং মাদক সেবন করে বলে জানা গেছে। আটকের সংখ্যা বেশি হলেও কয়েকজন পরীক্ষার্থী হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসডিকে গ্রুপের এক সদস্য জানান, ‘নেতাদের কোনো প্রয়োজন হলে তারা বড় ভাইদের বলেন। আর বড় ভাইরা আমাদের নিয়ে অপারেশন কমপ্লিট করেন। এক্ষেত্রে সদস্যরা কিছু টাকা পায়।’
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আটক করা হলে তাদের ছাড়ানোর জন্য বড়ভাই বা নেতাদের কল আসে বলে জানান এক পুলিশ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের ৩৭ সদস্য গ্রেপ্তার
ফেনী গার্লস স্কুল এবং মহিলা কলেজের সামনে ছাত্রীকে একদল বখাটে উত্ত্যক্ত করে। অপরদিকে, ফেনীর জিয়া মহিলা কলেজ, ফেনী সরকারি কলেজ, মহিপাল সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের প্রতিনিয়তই কিছু বখাটে কিশোর দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। এসব কিশোর গ্যাং ধরতে ইতোমধ্যে ফেনী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
সম্প্রতি ফেনীতে ঘটে যাওয়া বখাটেদের কয়েকটি ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রয়েছে পাঁচগাছিয়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা; ফালাহিয়ায় সহিংসতা।
এদিকে, কিশোর গ্যাংয়ের আঘাতে কিছুদিন আগে জায়লস্কর ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামে সজীব নামে এক ছেলে মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া শহরতলির আল জামিয়াতুল কামিল মাদরাসায় একদল বখাটে কিশোর তাণ্ডব চালায়। এ সময় পুলিশ খবর পেয়ে মাদরাসায় অভিযান পরিচালনা করলে তারা পালিয়ে যায়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হায়দার ক্লিনিকের পাশে খালি জায়গায় কিশোর গ্যাং ‘এফসিবি’ মারামারির একটি দৃশ্য ভাইরাল হয়। ভিডিও ফুটেজে ফেনী মডেল হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র আমিরুল হুদা মুবিনকে পিটিয়ে আহত ও পা ধরে ক্ষমা চাওয়ানোর দৃশ্য দেখা যায়। রাতে নির্যাতনের শিকার কিশোরের মা পারভিন আক্তার বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় ১১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ কিশোরকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় পিকনিকের বাস থেকে কিশোর গ্যাংয়ের ৯ সদস্য আটক
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফেনীর এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ফেনী শহরের স্কুলগুলোতে ও পাড়াকেন্দ্রিক সক্রিয় রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের একাধিক গ্রুপ। এরা শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী। এক গ্রুপের সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটলে প্রতিশোধ নিতে কালক্ষেপণ করে না অন্য গ্রুপের সদস্যরা। এদের স্কুলব্যাগে চাপাতি, পকেটে থাকে ক্ষুর। আধিপত্য বিস্তার, ছোট ভাই-বড় ভাই ও প্রেম-সংক্রান্ত বিষয়সহ ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি হলেই মারামারিতে লিপ্ত হয়। এরা স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে।’
ফেনী পুলিশ কোয়ার্টার এলাকার বাসিন্দা ওয়াজি উল্লাহ জানান, ‘প্রকাশ্যে চলে সিগারেট, মদ-গাঁজা সেবনসহ নানান অপকর্ম। তাদের দৌরাত্ম্যে বন্ধ থাকে মার্কেটের বেশিরভাগ দোকান। ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না দোকান মালিকরা। কিশোর গ্যাংয়ের কারণে দোকান মালিকরা অতিষ্ঠ। দিন দিন কাস্টমার কমে যাচ্ছে। সকাল-বিকাল প্রতিদিন মারামারি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিকাল থেকে রাতের ১০টা পর্যন্ত তাদের আসর জমে।’
ফেনী জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, ‘শিশু ও কিশোর অপরাধ এবং কিশোর গ্যাং দমনে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে সমাজকে আরও সচেতন হতে হবে। অভিভাবকদেরও শিশু-কিশোরদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সবসময় কাজ করছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ শেষে সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীদের রাস্তাঘাটে আড্ডা না দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ২ কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষ: গ্রেপ্তার ১৬, অস্ত্র-ককটেল জব্দ
ফেনীতে অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে স্টেশন অপারেটর নিহত
ফেনীর দেবীপুরে প্রাইম ফিলিং স্টেশনে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সাইদুল ইসলাম রনি নামে ফিলিং স্টেশনের এক অপারেটর নিহত হয়েছেন।
এ সময় সিএনজি চালক জাহিদ আলম আহত হন।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দেবীপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সাইদুল ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের দক্ষিণ আঁধারমানিক গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি ওই ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী ছিলেন।
আরও পড়ুন: বরিশালে বোমা উদ্ধারকালে বিস্ফোরণ, ২ পুলিশসহ আহত ৩
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৮টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক জাহিদ আলম দেবীপুর এলাকায় দেবীপুর প্রাইম সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নেওয়ার জন্য যান। সিএনজিচালিত অটোরিকশাটির সিলিন্ডারে গ্যাস নেওয়ার সময় হঠাৎ সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে গ্যাস ঢোকানোর কাজে নিয়োজিত ফিলিং স্টেশনটির কর্মচারী সাইদুল ইসলামের শরীর ঝলসে যায়। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জাহিদ আলমও এ সময় আহত হন।
স্থানীয় লোকজন দ্রুত দুজনকে উদ্ধার করে ফেনী সদর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইদুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক জাহিদ আলমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক কুদরত উল্লাহ বাবু বলেন, এটি একটি দুর্ঘটনা। আমাদের কোনো ভুলের কারণে এটি হয়নি। দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজিটি নতুন। এটি এখনও অন টেস্ট। এটির জন্য গাড়ি কর্তৃপক্ষ দায়ী।
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমা বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত যুবকের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ১৪ জন দগ্ধের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
ফেনীতে ‘সাগরিকা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত
ফেনীর রেলস্টেশনে ‘সাগরিকা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে ফেনীর সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার দিকে ফেনী রেল স্টেশনের ৩ নম্বর লাইনে এ ঘটনা ঘটে। তবে, বিকল্প লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ফেনীর রেলস্টেশন মাস্টার হারুন উর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৭ বগি লাইনচ্যুত, নিহত ১
রেলওয়ে পুলিশের ফেনী ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানায়, ঢাকা চট্টগ্রাম রেল লাইনের চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রাম অভিমুখি সাগরিকা এক্সপ্রেস এর একটি ‘গ’ বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
ফেনী স্টেশন মাস্টার মো. হারুন মজুমদার জানান, চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রাম অভিমুখি সাগরিকা এক্সপ্রেসের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ দুর্ঘটনার পর ওই রুটে ট্রেন চলাচল কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও এখন স্বাভাবিক হয়েছে।
এছাড়া ওই রেলের ক্ষতিগ্রস্ত বগি রেখে বাকি সাতটি বগি নিয়ে চট্টগ্রাম রওনা হয়েছে, বাকি দুইটি বগি মেরামত হলে পাঠানো হবে বলেও জানান স্টেশন মাস্টার।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে চট্টলা এক্সপ্রেসের বগি লাইনচ্যুত, ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ
হবিগঞ্জে মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত
ফেনীতে ট্রাক্টর-অটোরিকশা সংঘর্ষ, কিশোর অটোরিকশাচালক নিহত
ফেনীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাটিবোঝাই ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে কিশোর অটোরিকশাচালক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ফেনীর আমিনবাজার সড়কের সুলতানপুরে বিদ্যুতের সাবস্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় কিশোর নিহত
নিহত কিশোর মো. লিমন (১৪) ফেনী পৌরসভার সুলতানপুর এলাকায় মামা মো. জসিম উদ্দিনের বাড়িতে থাকতেন এবং তার পৈতৃক বাড়ি খুলনায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে ফেনী শহরের কলেজ থেকে যাত্রী নিয়ে উপজেলার আমিনবাজারের দিকে যাচ্ছিল লিমন। পথে সুলতানপুরে বিদ্যুতের সাবস্টেশন এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক্টরের সঙ্গে অটোরিকশাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাচালক মো. লিমন ও তিন যাত্রী মারাত্মক আহত হন। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ট্রাকচাপায় কিশোর নিহত
ফেনী সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমরান হোসেন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও ট্রাক্টর পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আহত তিনজনের মধ্যে একজনকে রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি দুইজন ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন: খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫
ফেনীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা: নিহত ২
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীতে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. সাহাব উদ্দিন নামে এক পিকআপচালক নিহত হয়েছেন। রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়কের ফাজিলপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে শনিবার রাতে ফেনী-সোনাগাজী আঞ্চলিক সড়কের সদর উপজেলার কলঘর এলাকায় দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নুরুল আমিন নামের এক পথচারী নিহত হন।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৪
মো. সাহাব উদ্দিন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরমোহন এলাকার মো. বাবুল মিয়ার ছেলে। অরেকজন ধলিয়া ইউনিয়নের উত্তর ধলিয়া গ্রামের কলঘর এলাকার হাসান আলী ভূঞা বাড়ির বাসিন্দা নুরুল আমিন।
ফাজিলপুর (মুহুরিগঞ্জ) হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদ খান চৌধুরী জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফাজিলপুর অংশের ঢাকামুখী লেনে সংস্কারকাজ চলছে। সে কারণে চট্টগ্রামমুখী লেনে দুই দিক থেকে যানবাহন চলাচল করছিল। দুপুরে ঢাকামুখী একটি যাত্রীবাহী বাস ও চট্টগ্রামমুখী একটি পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মারাত্মক আহত অবস্থায় পিকআপের চালক সাহাব উদ্দিনকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাহাব উদ্দিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও পিকআপ পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।
আরও পড়ুন: টঙ্গীতে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় ফেনী-সোনাগাজী সড়কের অপর পাশের দোকানে চা খেতে গিয়েছিলেন সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের উত্তর ধলিয়া গ্রামের কলঘর এলাকার হাসান আলী ভূঞা বাড়ির বাসিন্দা নুরুল আমিন।
রাত ৯টার দিকে সড়ক পারাপারের সময় ফেনী থেকে সোনাগাজীমুখী একটি দ্রুতগামী মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, নুরুল আমিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পোশাককর্মীর মৃত্যু
ফেনীতে আগুনে দগ্ধ সেই পরিবারের ৩ জনের কেউই বেঁচে নেই
ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ইতালি ভবনের পঞ্চম তলার বাসায় আগুনে দগ্ধ আশীষের পরিবারের তিনজনের কেউ আর কেউ বেঁচে রইল না।
আগুন লাগার ঘটনার ১৩ দিনের মধ্যে একে একে মারা গেলেন আশীষ চন্দ্র সরকার, তার একমাত্র সন্তান রিক সরকার ও স্ত্রী টুম্পা রানী সরকার (৩০)।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আগুনে দগ্ধ ব্যবসায়ীর মৃত্যু
তারা তিনজনই রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ইতালি ভবনের পঞ্চম তলার বাসায় আগুন লাগে। এ ঘটনায় দগ্ধ হন আশীষ, টুম্পা ও রিক। গ্যাসের চুলায় তিতাসের সংযোগ লাইন থেকে আগুন লাগার ঘটনার কথা স্বজনদের বলেছিলেন আশীষ ও টুম্পা।
গত ৩১ ডিসেম্বর হাসপাতালের হাইডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) মারা যান আশীষ চন্দ্র সরকার, ৫ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ছেলে রিক সরকার ও সর্বশেষ গত সোমবার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যু হয় আশীষের স্ত্রী টুম্পা রানী সরকারের।
আরও পড়ুন: পলাশবাড়িতে বাসে আগুন, দগ্ধ ৭
আশীষের ছোট ভাই পরিতোষ চন্দ্র সরকার জানান, দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন মো. তরিকুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তারা।
তিনি আরও বলেন, আশীষের ৮২ শতাংশ, টুম্পার ৬০ শতাংশের বেশি এবং রিকের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়। শুরু থেকেই রিককে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আর আশীষ ও টুম্পাকে এইচডিইউ ভর্তি করা হয়। তিনজনের অবস্থাই সংকটাপন্ন ছিল।
সোমবার টুম্পার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যার সময় তাকে এইচডিইউ থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে টুম্পার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ
তার লাশ নিয়ে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার দিকে রওনা দিয়েছেন। এর আগে আশীষ ও রিকেরও শেষকৃত্য হয় ধোবাউড়ায়।
আশীষের ভাই পরিতোষ জানিয়েছিলেন, তাদেরও বাসার দরজা-জানালা সব সারা দিন বন্ধ ছিল। রাতে আশীষ অফিস থেকে বাসায় ফেরার পর ভাত রান্নার জন্য চুলা জ্বালাতে যান। চুলা জ্বালানোর পরপরই দুই কক্ষের বাসায় আগুন লেগে যায়। আগুন লাগা অবস্থায় তারা নিজেরাই দরজা খুলে সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকেন।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, চিৎকার শুনে তারা গিয়ে দেখেন, শরীরে আগুন নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে দৌঁড়ে নামছেন তিনজন। কাপড় জড়িয়ে দিয়ে সেই আগুন নেভান তারা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আগুনে দগ্ধ ব্যবসায়ীর মৃত্যু
তিনি চাকরির সুবাদে ফেনীতে থাকতেন। ফেনীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হিসাবরক্ষণ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায়।
ফেনীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হিসাবরক্ষণ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। রিক ফেনীতে একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আগুনে দগ্ধ যুবকের মৃত্যু