স্থিতিশীলতা
দেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশে বর্তমানে যে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চলছে, তা অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। ২০১৩-১৫ সাল পর্যন্ত যেভাবে জ্বালাও-পোড়াও করেছে এবং এখনও একনাগারে এগুলো করছে; তাতে দেশের ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া কখনোই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: সংলাপ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হয়, আগুনসন্ত্রাসীদের সঙ্গে নয়: তথ্যমন্ত্রী
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) প্রেস ইনস্টিটিউট প্রকাশিত ‘এসডিজি এবং উন্নয়নমূলক ফিচার সংকলন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপির অবরোধের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় যানজট হচ্ছে। দূরপাল্লার গাড়িও চলছে। এই যে কর্মসূচি দিয়ে তারা নিজেদের হাস্যকর করছে, আমি বুঝি না তারা কেন এই সিদ্ধান্তগুলো নেয়? এসব কর্মসূচি কেউ মানছে না, বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দিচ্ছে যে তোমাদের মানি না, কিসের অবরোধ!
তিনি বলেন, আমরা তো চাই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। ধ্বংসাত্মক এই অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুক। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) বক্তব্য আমি শুনেছি, আমি মনে করি তিনি যথার্থ বলেছেন। আশা করি বিএনপির শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।
তিনি আরও বলেন, একটি নির্বাচিত সরকারকে দিন তারিখ বলে ফেলে দেওয়া এটাই তো একটি সন্ত্রাসী ঘোষণা। এই অপরাজনীতি থেকে আশা করি তারা বেরিয়ে আসবে। সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে দেশের বাস্তবতা তাদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। কারণ সিদ্ধান্তটা ওখান থেকে আসে। যারা পলাতক কিংবা যারা নির্বাচন করতে পারবে না। তারাই সিদ্ধান্ত দেয় নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি নেতারা তো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি রাষ্ট্র, সমাজ ও সাংবাদিকদের শত্রু: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির আগুনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কলম ধরুন: সাংবাদিকদের প্রতি তথ্যমন্ত্রী
বৃহত্তর সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতায় আসিয়ানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ তার সমর্থন প্রসারিত করতে প্রস্তুত এবং আসিয়ানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং মানব মূলধন উন্নয়নে আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের গুরুত্ব স্বীকার করি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আসিয়ান কূটনীতিকদের জন্য 'এনহেনসিং এনগেজমেন্ট বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড দ্য আসিয়ান রিজিওন' কোর্সের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
ঢাকায় নিযুক্ত আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কিছু বিদেশি সংস্থার রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য নিবন্ধনের আবেদন করা উচিত: মোমেন
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রযুক্তি, কৃষি, নীল অর্থনীতি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির মতো ক্ষেত্রে আমাদের বন্ধুপ্রতিম আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ অনুসন্ধানের জন্য আগ্রহী।
তিনি বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ এশীয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য আঞ্চলিক সংযোগের কেন্দ্র হতে কাজ করছি।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্র ও তাদের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার (এসডিপি) হতে আগ্রহী।
আরও পড়ুন: 'মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা' দাবি করা ব্যক্তিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা উচিত: মোমেন
তিনি বলেন, ‘আমাদের আপেক্ষিক শক্তি, প্রাসঙ্গিকতা এবং আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার ইচ্ছা প্রদর্শনের জন্য আমরা আসিয়ান সচিবালয়ের সহযোগিতায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি।’
মোমেন সম্মিলিত নিরাপত্তা, শান্তি ও অভিন্ন সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে আসিয়ান প্রক্রিয়া এবং এর কেন্দ্রীয় ধারণার প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার ও অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে আমরা আমাদের জনগণের জন্য একটি উজ্জ্বল এবং আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ তৈরি করতে পারি।’
বাংলাদেশের কূটনীতিকরা আগামী দিনগুলোতে এই লক্ষ্য অর্জনে আসিয়ান সহকর্মীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে যাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জ নিতে চাই এবং মোকাবিলা করতে প্রস্তুত: মোমেন
আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: আশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জনগণই নির্ধারণ করবেন।
তিনি যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের নীতি খুবই পরিষ্কার। আমরা হস্তক্ষেপ করি না। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা আসবে এবং আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, 'সংবিধান ও আইনের' ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত 'বিআরআই@১০: আশরিং ইন নেক্সট গোল্ডেন ডিকেড' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্দিষ্ট একটি দেশ নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু দাবি করলেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় : চীনা রাষ্ট্রদূত
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিইএবির প্রেসিডেন্ট কে চ্যাংলিয়াং। ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা স্থিতিশীলতা চাই। আমরা আশা করি, চীনের জনগণ ও সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকবে। এখন পর্যন্ত আমরা নিরাপদ বোধ করছি। যে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ।’
তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের প্রাক-নির্বাচনের বছর। গণমাধ্যমের অনেক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করতে আসেন বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চীনের পর্যবেক্ষণ কী। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রনীতির বিষয় হিসেবে চীন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপকারী যে কোনো শক্তির বিরোধিতা করে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ। চীন বাংলাদেশের উন্নত ভবিষ্যতের পাশাপাশি চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’
আরও পড়ুন: জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বেইজিং ঢাকাকে সমর্থন করে: চীনা রাষ্ট্রদূত
ঢাকা-বেইজিং কৌশলগত সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে হবে: চীনা রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বাংলাদেশ ও চীনের উচিত ভবিষ্যতে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করা এবং দুই দেশের সহযোগিতার কৌশলগত সম্পর্কের নতুন উচ্চতায় পৌঁছানো।
সোমবার তিনি বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে (এফএসএ) আমন্ত্রণে বক্তৃতা দেন।
এফএসএ'র মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী এবং বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশের প্রশিক্ষণার্থী কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইয়াও বলেন, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ঐতিহাসিক সম্পর্ক, তুলনামূলক জাতীয় অবস্থা, সুশাসনের ক্ষেত্রে সমমনা এবং সুসংযুক্ত জাতীয় স্বপ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: উন্নত বন্যা ব্যবস্থাপনা: বাংলাদেশের নদী ড্রেজিংয়ে সহায়তার প্রস্তাব চীনের
তিনি বলেন, উভয় দেশ সর্বদা মূল স্বার্থের ইস্যুতে একে অপরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছে এবং দ্বিপক্ষীয় ব্যবহারিক সহযোগিতা দুই দেশের জনগণকে উপকৃত করেছে।
এক শতাব্দীতে অপ্রত্যাশিত বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন মেনে চলে, চীনা বৈশিষ্ট্যযুক্ত পথে আধুনিকীকরণ অনুসরণ করে এবং জিডিআই, জিএসআই ও জিসিআই উদ্যোগের প্রস্তাব দেয়।
তিনি আরও বলেন, চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইরান একে অপরের সঙ্গে সমঝোতা করে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ব্রিকস জোটে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত চীন: মুখপাত্র
রাষ্ট্রদূত বলেন যে চীন রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সহায়তা করে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।
তিনি বলেন, ‘চীন ও বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নে অবদান রাখার প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে।’
বক্তৃতা শেষে রাষ্ট্রদূত ইয়াও চীন-আমেরিকা সম্পর্ক, চীন-ভারত সম্পর্ক, 'ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি', বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতা এবং দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যু নিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশে' প্রতিফলিত: চীন
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংস্কার উদ্যোগের পরিকল্পনা করছে সরকার
বৈশ্বিক ও জাতীয় অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে তাৎক্ষণিক নীতিগত প্রতিক্রিয়া ছাড়াও সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধিকে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার একাধিক মধ্যমেয়াদী (২০২৫-২৬) সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
সরকারের বাজেট নথি অনুযায়ী, এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, সরকারি খাতের ঋণের খরচ কমানো, ভর্তুকি কমানো এবং আর্থিক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে ব্যয় দক্ষতা উন্নত করা।
এই সংস্কার উদ্যোগগুলো স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
সাময়িকভাবে চাহিদা এবং আমদানি ব্যবস্থাপনার জন্য বাস্তবায়িত পদক্ষেপগুলো ধীরে ধীরে সহজ করার সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক ভারসাম্যকে শক্তিশালী করা এবং রিজার্ভ বৃদ্ধির চলমান কৌশল।
এছাড়াও নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাজেট ঘাটতি এবং সরকারি ঋণ গ্রহণযোগ্য সীমার মধ্যে বজায় রাখার মাধ্যমে রাজস্ব স্থায়িত্বকে শক্তিশালী করা হবে।
এতে বলা হয়, ‘এটি আরও দক্ষ ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুশীলন এবং সামাজিক কল্যাণ এবং উন্নয়ন ব্যয়ের মতো অগ্রাধিকার খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্জন করা হবে।’
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
নথিতে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশ বাজেট ঘাটতি (প্রাথমিক এবং সামগ্রিক উভয়), অর্থায়নের মিশ্রণ এবং সর্বজনীন ও সর্বজনীনভাবে গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের স্তরের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রেখে একটি বিচক্ষণ রাজস্ব নীতির অবস্থান অব্যাহত রাখবে।
মাঝারি মেয়াদে, প্রাথমিক রাজস্ব ঘাটতি (অনুদান সহ) জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যে নীতিটি নোঙর করা হবে যাতে সরকারি ঋণ জিডিপির ৪৫ শতাংশের নিচে থাকে।
উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিতে ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি ভর্তুকি এবং দেশীয় ঋণ অর্থায়নের খরচ যৌক্তিক করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির পরিচালনায় সংস্কারের উদ্যোগ, যেমন লক্ষ্যমাত্রার উন্নতি, কভারেজের যৌক্তিকতা, সরকার-থেকে-ব্যক্তি (জিটুপি)) পদ্ধতির ব্যবহার, একটি সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তন ইত্যাদি, এই দেশে অব্যাহত থাকবে। মাঝারি মেয়াদী.
দেশের ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনসংখ্যাকে সার্বজনীন পেনশন প্রকল্পের আওতায় আনার লক্ষ্যে ইউনিভার্সাল পেনশন ম্যানেজমেন্ট বিল- ২০২৩ ইতোমধ্যে সংসদে পাস হয়েছে।
আরও পড়ুন: সংসদে বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা করেছে। প্রস্তাবিত স্কিমের অধীনে, একজন সুবিধাভোগী যদি ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সে নাম নথিভুক্ত করেন তবে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত সাবস্ক্রিপশনের অর্থ প্রদানের সাপেক্ষে পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারেন, যেখানে যারা ৫০ বছরের বেশি বয়সে নথিভুক্ত করেন ন্যূনতম ১০ বছরের জন্য সাবস্ক্রিপশন দিতে হবে।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে পেনশনভোগীর মৃত্যু হলে, পেনশনভোগীর মনোনীত ব্যক্তি পেনশনভোগীর ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময়ের জন্য পেনশন পাওয়ার অধিকারী হবেন।
কমপক্ষে ১০ বছর সাবস্ক্রিপশন দেওয়ার আগে গ্রাহক মারা গেলে জমাকৃত অর্থ লাভের সঙ্গে মনোনীত ব্যক্তিকে ফেরত দেওয়া হবে। এছাড়া মাসিক পেনশন হিসেবে প্রাপ্ত পরিমাণ আয়কর থেকে অব্যাহতি পাবে।
বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের সবচেয়ে নিম্নতম।
আরও পড়ুন: ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যোগ দিতে পারবে
নথিতে বলা হয়েছে, ‘এটি সমালোচনামূলক খাতে বাজেট বরাদ্দ সম্প্রসারণ এবং প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগাতে একটি শক্তিশালী বাধা হিসাবে কাজ করছে।’
তাই, সরকার সর্বোত্তম অনুশীলন অনুসরণ করে আয়কর এবং ভ্যাট ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রাজস্বের দিকে বেশ কিছু নীতি ও প্রশাসনিক সংস্কার শুরু করেছে।
নীতি সংস্কারের মূল ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে কর আইনের আধুনিকীকরণ, কর ব্যয়ের যৌক্তিককরণ, ট্যাক্স হারের কাঠামোকে সরলীকরণ করা এবং বাণিজ্য-সম্পর্কিত কর থেকে করের বোঝা আয় এবং মূল্য সংযোজন করের দিকে স্থানান্তরিত করার একটি অত্যধিক কৌশলের অংশ হিসাবে করের ভিত্তি প্রসারিত করা।
প্রশাসনিক দিক থেকে মূল সংস্কারের মধ্যে রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মধ্যে কমপ্লায়েন্স রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট স্থাপন এবং একটি কমপ্লায়েন্স উন্নতি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, আয়কর, ভ্যাট এবং এনবিআর-এর কাস্টমস শাখার মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি জোরদার করা, কর প্রশাসনে অটোমেশনকে ক্রমান্বয়ে সম্প্রসারণ ও একীভূত করা ও উৎসে কর আদায় বৃদ্ধি ইত্যাদি
এই সংস্কারগুলো ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপির শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ অতিরিক্ত রাজস্ব তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
আরও পড়ুন: সংসদে সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তন বিল পাস
নথিতে বলা হয়েছে যে সরকার জ্বালানি ভর্তুকি যৌক্তিক করার পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সামাজিক ও উন্নয়ন ব্যয়ের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল বরাদ্দ করেছে।
২০২২ সালের আগস্টে পেট্রোলিয়ামের দাম বৃদ্ধির উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে মিল রাখা এবং ভর্তুকির পরিমাণ কমানো।
একটি পদ্ধতি নিশ্চিত করতে সরকার একটি পর্যায়ক্রমিক সূত্র-ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি মূল্য সমন্বয় প্রক্রিয়া চালু করতে চলেছে, যা পেট্রোলিয়াম পণ্যগুলোতে ভর্তুকি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অধিকন্তু, সরকার সামগ্রিক রাজস্ব বাড়ানোর জন্য কর-রাজস্ব খাতে অব্যবহৃত ক্ষেত্রগুলোতে মনোনিবেশ করছে এবং কর-বহির্ভূত রাজস্ব উৎসগুলোতেও জোর দিচ্ছে।
সরকারের সুদের ব্যয় হ্রাস করার লক্ষ্যে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার হ্রাস, স্তরযুক্ত সুদের হার প্রবর্তন, ক্যাপিং ইস্যু, এবং অর্জিত সুদের ওপর কর বৃদ্ধি সহ বেশ কয়েকটি সংস্কার পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের অবদান জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে এক দশমিক ২ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়েছে।
সুদের ব্যয় কমিয়ে সরকারি তহবিল সংরক্ষণ করার জন্য দক্ষ নগদ ব্যবস্থাপনাও এখানে একটি অগ্রাধিকার।
নথিতে বলা হয়েছে, এটি অর্জনে সরকার ট্রেজারি সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট (টিএসএ) শক্তিশালী এবং প্রসারিত করছে। যা আরও ভাল নগদ ব্যবস্থাপনা, সুদের ব্যয় হ্রাস এবং প্রতিশ্রুতি নিয়ন্ত্রণগুলোকে উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হবে
আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে শেখ হাসিনা ও কিশিদার আলোচনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা একমত পোষণ করেছেন যে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী বাস্তুচ্যুতি স্বাগতিক সম্প্রদায়ের ওপর বোঝা বাড়াবে এবং ‘এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা’ সৃষ্টি করবে।
তারা এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এই সংকটের চূড়ান্ত সমাধান হিসেবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের মিয়ানমারে 'টেকসই, নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ' প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যার দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
তিনি ভাসানচরে পুনর্বাসিতদের জন্য প্রথম দেশ হিসেবে জাপানের মানবিক সহায়তাসহ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের জন্য দেশটির সহায়তার জন্য তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী কিশিদা তাদের প্রতি জাপানের অব্যাহত সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে প্রায় দুই দশমিক তিন বিলিয়ন ইয়েন এবং প্রায় ১৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পূর্ববর্তী সহায়তার শীর্ষে ভাসানচরসহ আয়োজক সম্প্রদায় ও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের জন্য অতিরিক্ত সহায়তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়েছে: জাপানের প্রধানমন্ত্রী
দুই প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাবাসনের পর তাদের আত্মনির্ভরশীল জীবনের জন্য শিক্ষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণের মতো যথাযথ সহায়তা প্রদানের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী কিশিদা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত এবং শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য জাপানে শিক্ষার সুযোগ প্রদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
দুই প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সহিংসতা ও সশস্ত্র সংঘাত বন্ধ, আটকদের মুক্তি এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান।
তারা মিয়ানমারে একটি সমাধান খুঁজতে আসিয়ান প্রচেষ্টার প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং এ বিষয়ে আসিয়ান চেয়ারের সক্রিয় সম্পৃক্ততার প্রশংসা করেন।
তারা আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্য জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশসহ প্রতিবেশি দেশগুলো মিয়ানমারের পরিস্থিতি থেকে উদ্ভূত প্রভাবের সম্মুখীন হওয়ায় তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল পদক্ষেপের দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রী কিশিদা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের অব্যাহত মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা বর্তমানে জাপানে সরকারি সফরে রয়েছেন এবং ২৬ এপ্রিল একটি শীর্ষ বৈঠক করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ২৪ দেশের সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করবে: আইএসপিআর
আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ২৪টি দেশের সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করার জন্য সম্মতি প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ইউএস আর্মি প্যাসিফিক (ইউএসএআরপিএসি) দ্বারা যৌথভাবে আয়োজিত ৪৬ তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মিস ম্যানেজমেন্ট সেমিনার (আইপিএএমএস)-২০২২ এ অংশগ্রহণকারীরা এই অঞ্চলে অব্যাহত শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করে শেষ করেন।
শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) এর সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিাতে বলা হয়, ১২-১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে জ্যেষ্ঠ সামরিক নেতাদের নেতৃত্বে ২৪টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ইউএস আর্মি প্যাসিফিকের জেনারেল চার্লস এ ফ্লিন বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঐক্য ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার দৃঢ় বার্তা পাঠাতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ২৪টি দেশের স্থলবাহিনীর নেতারা এ সম্মেলনে একত্র হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে সেনাবাহিনী
এবারের সম্মেলনের থিম ছিল ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ।’
বিভিন্ন সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা প্লেনারি সেশন, ওয়ার্কিং গ্রুপ ও টিম বিল্ডিং-এ অংশ নিয়েছিলেন। এসময় তারা এই বিশাল ও অনন্য অঞ্চলের সাধারণ সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য সিনিয়র অফিসারদের একসঙ্গে কাজ করার, সম্পর্ক তৈরি করার এবং বৃত্তের বাইরে চিন্তা করার চ্যালেঞ্জ নেয়ার অভিপ্রায়ে প্রাণবন্ত আলোচনা করেন।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল শফিউদ্দিন তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের শান্তির যাত্রা এখানেই শেষ নয়। এটা সবে শুরু।’
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি সেমিনারের মাধ্যমে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব বাড়বে।
৪৬ তম আইপিএএমএস ‘বলিষ্ট শান্তিরক্ষা’, ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ ও ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে স্থল বাহিনীর ভূমিকা’- শীর্ষক তিনটি প্লেনারি সেশনে ভাগ করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথিরা এর ওপর আলোকপাত করেন এবং চ্যালেঞ্জ ও সামনের পথ নিয়ে আলোচনা করেন।
তৃতীয় দিনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ‘বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন; সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর প্রধান অতিথি হিসেবে সেমিনারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মসূচি
সেনাবাহিনীর দেয়া ঈদ উপহার পেলেন খাগড়াছড়ির দরিদ্ররা
ভারতকে দেশে স্থিতিশীলতা বজায়ে সাহায্য করতে বলেছিলাম: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে স্থিতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চান উল্লেখ করে তিনি ভারত সরকারকে বলেছেন, ভারত বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করলে বাংলাদেশ খুশি হবে।
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামে তিনি কী বলতে চেয়েছিলেন তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, স্থিতিশীলতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা চাই। আমরা কোনো অস্থিরতা চাই না। আমরা যদি এটি করতে পারি (স্থিতিশীলতা বজায় রাখা) তবে আমাদের সম্পর্কের এই সোনালি অধ্যায় যথার্থ হবে।’
শুক্রবার এর আগে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও মোনাজাত করেন।
মোমেন বলেন, তিনি জানিয়েছিলেন (ভারত সরকারকে) বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই কিছু দুষ্টু লোক আছে যারা উসকানিমূলক কথাবার্তা বলে এবং তিলকে তাল করে (ছোটখাটো বিষয়কে বড় করে তুলতে উসকানি দেয়)।
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের সরকারেরই দায়িত্ব হবে তিলকে তাল করার সুযোগ সৃষ্টি করতে না দেয়া। আমরা যদি তা করতে পারি, তাহলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকবে এবং কোনো অনিশ্চয়তা থাকবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা (ক্ষমতায়) আছেন বলেই বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে এবং উনি আছেন বলেই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে।’
আরও পড়ুন: মিডিয়াকে সহনশীল হওয়ার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ‘একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে সবার জন্যই ভালো। বাংলাদেশে সব নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে।’
মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ক্ষমতায়) থাকলেই বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা থাকে এবং স্থিতিশীলতা থাকলেই উন্নয়নের যাত্রা নিরবচ্ছিন্ন থাকে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আসামের মুখ্যমন্ত্রী তাকে যা বলেছিলেন তিনি ভারত সরকারকে ঠিক তাই জানিয়েছিলেন।
মোমেন বলেন, ‘ভারতে গিয়ে আমি বলেছিলাম আপনার আসামের মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার জিরো টলারেন্স টু টেরোরিজম নীতি ও বাংলাদেশ সন্ত্রাসীদের হাব হতে পারে না-এমন ঘোষণার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স টু টেরোরিজম ঘোষণার পরে আসাম ও আশপাশের এলাকায় কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নেই। এর ফলে আসামে বিনিয়োগ বৃদ্ধি হয়েছে এবং এর ফলে তাদের দেশের উন্নয়ন হচ্ছে।
মোমেন বলেন, ‘আমি ভারত সরকারকে জানিয়েছি যে আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন শেখ হাসিনা থাকায় সেখানে স্থিতিশীলতা আছে। এতে দুই পক্ষই লাভবান হচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার মোমেন বলেন, বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন তা করতে তিনি ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু জাতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমি ভারত সরকারকে বলেছিলাম শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। তাহলেই দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত একটা দেশ হবে।’
হিন্দুদের অন্যতম বড় উৎসব জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোমেন আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে সরাতে কেউ যদি দেশকে অস্থিতিশীলতার পথে নিয়ে যায়, তাহলে তা বিপদের। তাই আমরা সবাই স্থিতিশীলতা চাই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি ভারত সরকারকে বলেছেন আমরা এমনভাবে কাজ করব যাতে আমাদের কোন কারণে কোন উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডকে কখনও প্রশ্রয় দেব না। এটা যদি আমরা করতে পারি, ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ের মঙ্গল।’
মোমেন বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকায় ভারতকে তার সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয় না।
তিনি বলেন, আর আমাদের উন্নতি হচ্ছে বলে ভারতে লোক যায়। ২৮ লাখ লোক আমাদের দেশ থেকে প্রতিবছর ভারতে বেড়াতে যায়। ভারতের কয়েক লাখ লোক আমাদের দেশে কাজ করে। এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের সোনালী অধ্যায়ের ফলে। সুতরাং আমরা কোনো ধরনের উস্কানিমূলক কাজ করব না।
সে কারণে মোমেন বলেন, তিনি ভারত সরকারকে শেখ হাসিনাকে সমর্থন অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করেছেন। কারণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা দুই দেশের জন্য সুফল বয়ে আনে।
আরও পড়ুন: ‘বেহেশতে আছি’ মন্তব্যের ফের ব্যাখ্যা দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সর্বত্র শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশের অর্থনৈতিক খাতে গতি বজায় রাখতে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো বন্ধুপ্রতীম দেশসহ সর্বত্র শান্তি ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি অন্যান্য দেশের স্থিতিশীলতার ওপর অনেকটা নির্ভর করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বত্র স্থিতিশীলতা চাই। আমরা চাই আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো স্থিতিশীলতা ফিরে পাক।’
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একটি ছোট দলের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, পরস্পর নির্ভরশীল বিশ্বে বসবাস করায় তারা সর্বত্র শান্তি ও স্থিতিশীলতা চান।
আরও পড়ুন: ঢাকা থেকে ভিসা দেয়ায় রোমানিয়াকে ধন্যবাদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখা যাক কী হয়। আমরা এখনও এটি নিয়ে আলোচনা করতে বসিনি।’
ঋণের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা আবারও উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন,এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই। ‘আমরা বিচক্ষণ (ঋণ নেয়ার সময় এবং তার পরবর্তী ব্যবস্থাপনা)। আমরা এতটা ঋণ করি না এবং যখন আমরা ঋণ করি তখন অনেক হিসাব করেই করি।’
শক্তিশালী রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ সমর্থিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শক্তির কথা তুলে ধরে ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা (ঋণ) পরিশোধে সক্ষম।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংও পুনর্ব্যক্ত করেছেন এদেশে কোনো ঋণের ফাঁদ নেই।
ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতেও আলোচনা করেছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীন ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় থমকে আছে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের (চীনা) সহযোগিতা চেয়েছি।’
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরের ব্যাপারে আশাবাদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী
র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে দিল্লির সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শ্রীলঙ্কার স্থিতিশীলতাকে সমর্থন করার অঙ্গীকার ভারতের
শ্রীলঙ্কার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ভারত দ্বীপরাষ্ট্রটির ‘গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার’-কে সম্পূর্ণ সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি দিল্লিতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, শ্রীলঙ্কার জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ আদায়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খা পূরণে ভারত সবসময় পাশে থাকবে।
বাগচি জোর দিয়ে বলেন, ‘ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকা শ্রীলঙ্কার অন্যতম ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশি হিসেবে ভারত তার (শ্রীলঙ্কার) গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।’
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় কারফিউ উপেক্ষা করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত
প্রতিবেশি দেশটিতে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থা ও রাজাপাকসে সরকার বিরোধী অব্যাহত বিক্ষোভের মধ্যেই ভারত এ আশ্বাসের কথা জানায়।
এসময় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার জন্য ভারতের আর্থিক সহায়তার কথাও স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, আমাদের ‘নেবারহুড ফার্স্ট’ নীতি মেনে ভারত চলতি বছরই শ্রীলঙ্কার জনগণের আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে তিন দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগ
রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব শ্রীলঙ্কার বিরোধীদলের