চাঁদপুর
ভূমিকম্পে মতলব সেতুর জয়েন্টে ফাটল, আতঙ্কে মানুষ
জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ধনাগোদা নদীর ওপর নির্মিত মতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর উপজেলার সংযোগ সেতু হিসেবে পরিচিত বিশাল ‘মতলব সেতু’র মাঝখানের জয়েন্টে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা এবং সেতুটি নিয়মিত ব্যবহারকারী যানবাহনের চালকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত ২১ নভেম্বর সারা দেশে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে ক্ষতি এড়াতে পারেনি স্থানীয় যোগাযোগব্যবস্থায় অতি গুরুত্বপূর্ণ মতলব সেতু। ভূমিকম্পের পর সেতুটির মাঝখানের জয়েন্টে ফাটল লক্ষ করে স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর মাঝখানে জয়েন্টে বড় ফাঁকা। সেতুর কোথাও উঠে গেছে কংক্রিট, বেরিয়ে পড়েছে রড। প্রতি দিন ছোটবড় হাজার হাজার যানবাহন চলছে এই ভগ্নদশাগ্রস্ত সেতুর ওপর দিয়ে। ভারী যানবাহন চলাচলের সময় সেতুটি কাঁপতে থাকে। সেতু পারাপারের সময় যানবাহনের চালকসহ যাত্রীদের চোখেমুখেও আতঙ্ক লক্ষ্য করা যায়। তাদের সঙ্গে কথা হলেও উৎকণ্ঠার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তারা।
এ ছাড়া দুই পাশের সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সেতুর নিচের মাটি-বালু সরে গিয়ে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গর্ত তো নয়, যেন মরণফাঁদ। অতি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় যে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পে সেতুর মাঝ দিয়ে ফাটল দেখা যাচ্ছে। ভূমিকম্পের আগে এরকম ছিল না। সেতু পরিদর্শন করে শিগগিরই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানান তিনি।
কামরুল হাসান ও গোলাম নবী বলেন, প্রতি দিন ঝুঁকি নিয়েই জরুরি পরিষেবার গাড়ি, শিক্ষার্থী, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ শত-সহস্র সাধারণ মানুষ দিনরাত সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। তাই সেতুর দুপাশের অ্যাপ্রোচ সড়কে সৃষ্ট গর্ত এবং মাঝখানে সৃষ্ট ফাটল সংস্কার করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সেতুর অবস্থা ‘অত্যন্ত ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দেন কলেজ শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদিন। স্কুলশিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, ‘প্রতি দিন আমি এই সেতু দিয়ে আসা-যাওয়া করি। কোনো ভারী গাড়ি পারাপার করার সময় এটি কাঁপতে থাকে। তখন মনে হয়, এই বুঝি ভেঙে পড়ল।’
শুধু স্থানীয় নয়, আন্তঃজেলা ও ঢাকাকেন্দ্রিক যোগাযোগের জন্যও মতলব সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ। চাঁদপুরসহ আশপাশের জেলা—নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকায় যাতায়াতের জন্য ২৪ ঘণ্টা এই সেতুটি ব্যবহার করে থাকে। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করে।
চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের সুত্র জানায়, মতলব উত্তর ও দক্ষিণের সরাসরি যোগাযোগ, চাঁদপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব কমানো এবং যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে প্রায় ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ধনাগোদা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগকে এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেতুটি নির্মাণে ৮৪ কোটি টাকার মধ্যে মূল সেতু নির্মাণে ৫৬ কোটি টাকা এবং জমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয় হয় ২৮ কোটি টাকা। পরবর্তীতে আরও ৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে মোট ৯২ কোটি টাকায় ধনাগোদা নদীর ওপর মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের উত্তর-পূর্ব পাশে বিশাল এ সেতুটি নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
সেতুটিতে ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের ৭টি স্প্যান রয়েছে এবং দু-পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক ১.৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়ে নির্মাণ ও অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ ২০১৮ সালের জুন মাসে সম্পন্ন হয় এবং সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
‘নিরাপদ সড়ক চাই’ মতলব দক্ষিণ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম বাবু বলেন, ‘মতলব সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চাঁদপুরসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ এই সেতুটি ব্যবহার করছে। সেতুর দুপাশের রাস্তারও বর্তমানে বেহাল দশা। সেতুর মাঝখানের জয়েন্টে ফাটল দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত সংস্কার করার জন্য জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’
সেতুর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মতলব দক্ষিণ উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘অতি দ্রুত সেতুটির সংস্কার করা হবে।’
এ বিষয়ে চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহম্মদ আলিউল হোসেন বলেন, ‘সেতুটির বর্তমান অবস্থা পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণে প্রকৌশলী পাঠানো হবে।’
১ দিন আগে
চিকিৎসক সংকটে বন্ধ হয়ে গেল চাঁদপুরের শতবর্ষী দাতব্য চিকিৎসালয়
অবশেষে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ‘প্রাথমিক চিকিৎসার বাতিঘর’ খ্যাত চাঁদপুর পৌরসভার শতবর্ষী দাতব্য চিকিৎসালয়। চিকিৎসক সংকটের কারণে এটি আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ১ মাস ধরে বন্ধ রাখা রয়েছে মেঘনাপাড়ে অবস্থিত গরীবের চিকিৎসাসেবার এই অন্যতম এই কেন্দ্রটি। এতে করে নদীভাঙন-কবলিত ও চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা মানুষেরা আরও বিপাকে পড়েছেন। ফলে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ। ১০৫ বছর পুরনো এই চিকিৎসাকেন্দ্রটি ফের চালু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর জেলার প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা পুরানবাজারের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একশ বছরের বেশি সময় আগে প্রতিষ্ঠা করা হয় পৌর দাতব্য চিকিৎসালয়টি।
ব্রিটিশ সরকার, পাকিস্তান সরকার এবং স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শাসনামলে সগৌরবে এই প্রতিষ্ঠানটি নামমাত্র মূল্যে (২ টাকা) মানুষকে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ সরবরাহ করে আসছিল। সবশেষ চাঁদপুর পৌরসভার অর্থায়নে মাত্র ২ টাকার টিকিটে চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়ে ‘মানবতার বাতিঘর’ হিসেবে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে ব্যাপক সুনাম কুড়ায় প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ফি আছে, চিকিৎসা নেই!
হাবিবুর রহমানসহ (৭৫) স্থানীয় কয়েকজন বর্ষীয়ানের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম দিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিতে অস্ত্রোপচারসহ গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া হতো। পরবর্তীতে অর্থ সংকটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকলেও পৌরসভার ২ জন স্বাস্থ্য সহকারী দিয়ে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসার কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। এতে হতদরিদ্র মানুষের ছোটখাট অসুখের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠে দাতব্য চিকিৎসালয়টি। দৈনিক প্রায় ৮০/৯০ জন রোগী এখানে সেবা নিতে আসতেন বলে জানান তারা।
তবে হঠাৎ করেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটের কারণ দেখিয়ে গত মাসে চিকিৎসালয়টি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা হতদরিদ্র মানুষজন পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
৯৪ দিন আগে
চাঁদপুরে নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ধনাগোদা নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হওয়া আব্দুল মান্নান (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে চাঁদপুর নৌ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে নদীতে গোসল করতে নেমে তিনি নিখোঁজ হন। বিকেল ৫টার দিকে চাঁদপুর নৌ ফায়ার স্টেশনের ডুবুরি দল প্রায় এক ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত আব্দুল মান্নান মতলব উত্তর উপজেলার বেলতলি নয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে আব্দুল মান্নান ধনাগোদা নদীতে গোসল করতে নামেন। এ সময় নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের কারণে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তলিয়ে যান।
পরবর্তীতে মতলব উত্তর ফায়ার স্টেশনের মাধ্যমে চাঁদপুর নৌ ফায়ার স্টেশনে খবর দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে সাগরে গোসলে নেমে বাবা-ছেলের মৃত্যু, দুই দিনে প্রাণ গেল ৪ জনের
চাঁদপুর নৌ ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার মো. রাকিবুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, গতকাল (রোববার) বিকাল ৪টার দিকে ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এক ঘণ্টার চেষ্টায় ৫টার দিকে তারা আব্দুল মান্নানের মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
উদ্ধার শেষে মতলব উত্তর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল হাকিমের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক জানান, মৃত্যুর ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
৯৭ দিন আগে
মেঘনার পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলন: হুমকিতে বাঁধ, আতঙ্কে স্থানীয়রা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন চলছে। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে মেঘনা-ধনাগোদা বন্যা নিয়ন্ত্রণ সেচ প্রকল্পের ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। ফলে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
এই বাঁধের মধ্যে মতলব দক্ষিণের একটি গ্রাম ও মতলব উত্তরের ১৪টি ইউনিয়ন অবস্থিত। সেখানকার জনসংখ্যা প্রায় ৭ লাখ।
গত কয়েকদিন উপজেলার মেঘনা নদী অববাহিকার দশানি, ষাটনল, নাছিরাকান্দি, বোরচর এলাকা ঘুরে প্রকাশ্যে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলতে দেখা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু সন্ত্রাসী কিবরিয়া মিয়াজি ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরেই মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। তাদের এই ধরনের কাজে জড়িত থাকায় দুপক্ষের বিরোধে গোলাগুলিতে একাধিক ব্যাক্তি মারা গেছে, আহত হয়েছে আরও অনেকে। এসব ঘটনায় এখনো মামলা চলছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। এতকিছুর পরও কীভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে?
দশানি গ্রামের মাজেদুর রহমান বলেন, ‘কী বলমু ভাই, দিন-রাইত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলে। পাড় ধসে আমাদের ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধ যদি ভেঙে যায়, তাহলে পুরো মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ শেষ হয়ে যাবে, অথচ কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: পদ্মায় বালু উত্তোলনের দায়ে ৪ জনের কারাদণ্ড, একজন মুচলেকায় মুক্ত
ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রশাসনকে বারবার জানালেও কোনো ফল পাইনি। মনে হয় বালু সিন্ডিকেটের কাছে প্রশাসনও জিম্মি। সরকার পরিবতর্ন হলেও কোনো কাম হচ্ছে না।’
১০৮ দিন আগে
চাঁদপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলায় বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রুবেল হোসেন শিশির (১৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাবুরহাট-পেন্নাই সড়কের কাছে ময়দান খোলা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবেল ৩ নম্বর কল্যাণপুর ইউনিয়নের আমানুল্লাহপুর গ্রামের দিঘিরপাড় এলাকার নজরুল ইসলাম স্বপনের ছেলে।
নিহতের স্বজনরা জানান, রুবেল সম্প্রতি বাবুরহাট স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছেন। গতকাল (রবিবার) নানার কাছ থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল (রবিবার) দুপুরে রুবেল তার নানার মোটরসাইকেলে করে সদরের লালদিয়া এলাকা থেকে বাবুরহাট যাওয়ার পথে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ডাববোঝাই ভ্যানের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খেলে তিনি ছিটকে পড়ে যান। মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার তীব্রতায় তার মস্তিষ্ক বের হয়ে আসে।
দীর্ঘ সময় রাস্তার পাশে রুবেলের মরদেহ পড়ে থাকলেও স্থানীয়রা কেউ তাকে হাসপাতালে নিতে সাহস পাননি।
পরে এক সিএনজি অটোরিকশাচালক মানবিক কারণে তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
আরও পড়ুন: দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কায় নিহত ১
এরপর চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান সুমন জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই রুবেলের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে আহাজারি শুরু করেন।
চাঁদপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘হাসপাতালে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।’
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহার মিয়া ইউএনবিকে জানান, পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই শেষ বিকালে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
১১৭ দিন আগে
বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রধান শিক্ষকের কাছে স্কুলছাত্রীর দরখাস্ত
চাঁদপুরে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দিচ্ছে পরিবার—এমন অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষকের কাছে দরখাস্ত দিয়েছে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। পরে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান ওই শিক্ষক।
সাহসিকতা দেখানো মেয়েটির নাম রুহি আক্তার (১৩)। সে ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ি উপজেলার কড়ৈতলী গ্রামের গাজী বাড়িতে। বাবা প্রবাসী আব্দুর রশিদ এবং মা গৃহিণী সুমি বেগম।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মার হাতে লিখিত আবেদনটি দেয় রুহি। আবেদনে সে জানায়, তার জন্ম ২০১২ সালের ১৮ জুন। সে এখনো পড়াশোনা করছে। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, যাতে সে রাজি নয়। তাই প্রধান শিক্ষকের সহায়তা চায় সে।
প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মা বলেন, ‘দরখাস্ত পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’
আরও পড়ুন: বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অ্যাসিড নিক্ষেপ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৩
ইউএনও সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘এই বয়সে এমন সাহসিকতা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা মেয়েটির পাশে আছি এবং যে কোনো মূল্যে বাল্যবিয়ে ঠেকানো হবে।’
রুহির মা সুমি বেগম বলেন, ‘পারিবারিকভাবে ভালো পাত্র দেখা হয়েছিল, তবে এখনো বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক হয়নি। মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই করা হবে না।’
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে ইউএনও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন, আমরা প্রশাসনিক সহায়তা করি।’
১২৯ দিন আগে
চাঁদপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশু নিহত
চাঁদপুরের কচুয়ায় পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে ফাইজা আক্তার ও হুমায়রা আক্তার নামে দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৬ জুলাই) বিকালে উপজেলার ফতেবাপুর ও সাজিরপাড় গ্রামে এই দুটি ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুরা হলো— ফতেবাপুর গ্রামের মো. গোফরান উদ্দিন প্রধানের ১৮ মাস বয়সী মেয়ে ফাইজা আক্তার এবং সাজিরপাড় গ্রামের মো. হুমায়ুন কবিরের ৩ বছর বয়সী মেয়ে হুমায়রা আক্তার।
স্বজনরা জানান, ফতেবাপুর গ্রামের ফাইজা আক্তার নিজ বাড়ির পুকুরঘাটে গোসল করতে গিয়ে পানি নিয়ে খেলতে খেলতে সবার অগোচরে পুকুরে পড়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ তাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পুকুরে ভাসতে দেখা যায়। দ্রুত উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: মাগুরায় পানিতে ডুবে ৩ বছরের শিশুর মৃত্যু
অন্যদিকে, একই উপজেলার সাজিরপাড় গ্রামের হুমায়রা আক্তার খেলাধুলার সময় পরিবারের সবার অজান্তে বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকেও পুকুর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সোহেল রানা ইউএনবিকে দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১৩২ দিন আগে
চাঁদপুরে বিএনপির গণমিছিলে হামলা, আহত ১০
চাঁদপুরের কচুয়ায় বিএনপির গণমিছিলে হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ জুলাই) বিকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, বিএনপির স্থানীয় নেতা মোশাররফ হোসেন সমর্থিত দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরে গণমিছিল বের করা হয় উপজেলার রহিমানগর বাজারে। এ সময় আরেক পক্ষের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।
আহতদের উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে জানান কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র ও আহত বিএনপির স্বজনরা।
পড়ুন: মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, চাঁদপুরের উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত
এ ঘটনার পর থেকে রহিমানগর বাজার এলাকা এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ সেলিমসহ যুবদল ও মহিলা দলের নেতারা।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন সমর্থিত নেতাকর্মীদের আয়োজনে গণমিছিলটি রহিমানগর বাজার প্রদক্ষিণকালে ১৫ থেকে ২০ জনের একদল দুর্বৃত্ত লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করে। ওইসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপে কয়েক জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে এবং টহল অব্যাহত রেখেছে।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সেলিম উল্ল্যাহ সেলিম এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে কোনো বিএনপির সমর্থকেরা হামলা করতে পারে না। হামলাকারীদের পতিত ফ্যাসিবাদের দোসর বলেও তিনি মন্তব্য করেন তিনি।
১৩৩ দিন আগে
মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, চাঁদপুরের উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চাঁদপুরে ফুলে উঠেছে মেঘনা। জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা বেড়েছে প্রায় ৩ ফুট। এতে করে মেঘনার উপকূলীয় এলাকার সড়ক, পুকুর ও বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে ঘরে-বাইরে স্থানীয়দের কষ্ট বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সাপ আতঙ্ক।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে জানা গেছে, জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটারের ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, গতকাল (শুক্রবার) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়ে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল বিকাল থেকেই চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার নদী অববাহিকার ৩০টি চর এলাকায় পানি বেড়েছে। এ ছাড়াও চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরান বাজার এলাকায় নদীর পানি সড়কের সমান উচ্চতায় রয়েছে। ফলে বাঁধটিও রয়েছে হুমকির মুখে।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় শহরের পুরান বাজার রনাগোয়াল ও পশ্চিম শ্রীরামদী এলাকার দিনমজুর মরন ঢালী, ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ও ভুলু দাসসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: সাগরে ফের লঘুচাপ, আগামী তিন দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
তারা বলেন, বৃহস্পতিবার পানি কিছুটা কম ছিল। তবে আজ (শুক্রবার) বিকাল থেকে বাতাসের তীব্রতার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ঢেউ এবং পানির উচ্চতাও বেড়েছে। এ সময় আমাদের বাসাবাড়ি, দোকানেও পানি উঠে যায়। পানি বাড়ায় দ্রুত দোকানের মালপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মনির শেখ, সাজ্জাদ হোসেন ও শহিদুল্যাহ মাস্টারসহ কয়েকজন জানান, ফেরিঘাট এলাকায় পানি রাস্তা ছুঁই ছুঁই। আশপাশের নীচু সড়কে পানি উঠে গেছে।
১৩৪ দিন আগে
চাঁদপুর সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অগ্নিকাণ্ড
বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে এক পুলিশ কনস্টেবলের সহায়তায় দ্রুতই আগুন নেভানো সম্ভব হয় বলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে ওই হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় সফিকুর রহমান নামে দায়িত্বরত এক পুলিশ কনস্টেবল এক আনসার সদস্যকে নিয়ে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভান।
ওটি রুমে ডিউটিরত আয়া মিলি ইউএনবিকে বলেন, ‘আমি বৈদ্যুতিক সুইচ বোর্ডের কাছে দরজা বন্ধ করতে গেলে পোড়া গন্ধ পাই, সঙ্গে সঙ্গে স্টাফ নার্স আছমা আপাকে জানাই। এর মধ্যেই ধোঁয়া উঠে আগুন লেগে যায়।’
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে আগুনে ১০ লাখ টাকার মালামাল ছাই, আহত ১০
এরপর হুড়োহুড়ি করে সবাই পালাতে গেলে ওই কনস্টেবল ও আনসার সদস্য এগিয়ে এসে আগুন নেভান বলে জানান মিলি।
আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মাহবুবুর রহমান ও আবাসিক চিকিৎসক ডা. সৈয়দ আহমদ কাজলসহ দায়িত্বশীল কর্মর্কতারা।
ডা. সৈয়দ আহমদ ইউএনবিকে বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্ট সাকির্ট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছিল। বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে সবাই রক্ষা পেয়েছি।’
ডা মাহবুবুর রহমান জানান, হাসপাতালের ওটি রুমে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালের অন্য কোথাও যদি ত্রুটি বিচ্যুতি থাকে, সেগুলোও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগেও এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল।
১৪১ দিন আগে