হারাম
হারাম টাকা দিয়ে ইবাদত হয় না: ধর্ম উপদেষ্টা
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হাসান বলেছেন, হালাল টাকা খরচ করে হজ করতে হবে। হারাম টাকা দিয়ে ইবাদত হয় না।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ-২০২৫ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মানুষের মাঝে সুদ-ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ কামানোর প্রবণতা আছে। তবে অসৎ পথে উপার্জিত অর্থে হজ কবুল হবে না।
হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, কোনো দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, সুদখোর, ঘুষখোররা যখন হারাম শরীফে গিয়ে বলে আল্লাহ আমি হাজির, তখন ফেরেশতারা সমস্বরে বলতে থাকে, তোমার হাজিরা কবুল হয়নি। তিনি সকলকে সৎপথে অর্থ উপার্জনের অনুরোধ জানান।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, হজব্রত পালনে শারীরিক কষ্ট ও অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবহন সেবা নাও পাওয়া যেতে পারে। পায়ে হেঁটে মিনা-আরাফা-মুজদালিফায় যেতে হতে পারে। হাজীদেরকে কষ্ট বা ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা থাকতে হবে, সবকিছু সহজে মেনে নিতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করতে হবে।
প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, প্রশিক্ষণ মানুষকে কৌশলি করে তোলে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই কর্মে সিদ্ধিলাভ করা যায়। যতবেশি মনযোগ সহকারে হজ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা যাবে, হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন ততবেশি সহজ হবে। তিনি হজযাত্রীদেরকে মনোনিবেশ সহকারে প্রশিক্ষণ গ্রহণের অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন: আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হচ্ছে: ধর্ম উপদেষ্টা
হজযাত্রীদেরকে ভাগ্যবান অভিহিত করে ড. খালিদ বলেন, হজ ভাগ্যের ব্যাপার। টাকা কিংবা বিত্তবৈভব থাকলেই হজ করা যাবে, একথা ঠিক নয়। অনেকের টাকা থাকা সত্ত্বেও আজ যাবে, কাল যাবে করে যেতে পারে না। মানুষ যখন মায়ের পেটে থাকে তখনই কে কতদিন দুনিয়ায় থাকবে, কী পরিমাণ রিজিক পাবে, সৎকর্ম করবে কিনা, হজ করতে পারবে কিনা-এ বিষয়গুলো নির্ধারিত হয়ে যায়।
কবুল হজের ফজিলত বর্ণনা করে ড. খালিদ বলেন, কবুল হজের প্রতিদান হলো জান্নাত। হাজীদেরকে আল্লাহ সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর মতো নিষ্পাপ করে দেন।
হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক, হাবের সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার, হজ অনুবিভাগের যুগ্মসচিব ড. মঞ্জুরুল হক ও হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার।
এ সময় উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও হজ অফিসের পরিচালক মো. লোকমান হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা জেলার বেসরকারি মাধ্যমে হজযাত্রীদের মধ্য হতে আজ দুটি ব্যাচে সাত শতাধিক হজযাত্রীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে।
২৩৯ দিন আগে
মদ, ঘুষ হারাম না হালাল? লাইসেন্স থাকলে চলবে?
মদ, জুয়া, ইয়াবা, আইস, গাঞ্জা সবই হারাম। কিন্তু বিষয় হইলো আমাদের দেশে এগুলা খোরের সংখ্যা এতো বেশি যে গুইনা কূল করা যাইবো না। নেশাখোর কত এই দেশে? সরকার আম কাঁঠালের ফলনের হিসেব ভালো রাখে, কিন্তু নেশার খবর কম রাখে।
তবে এই দেশে বুড়া, পোলাপান অনেকেই এগুলা খায়। আমরা যারা ১৯৭১ এ তরুণ হিসেবে পার করছি তারা দেখছি, যুদ্ধের পর অনেক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধের স্মৃতি ভুলতে নেশা করতো। তাদের মনোরোগ ছিল। চিকিৎসা ছিল না তাই আশ্রয় চাইছে নেশার ঘরে। এখন আমাদের বয়সীরা সব ভুইলা যায়, এমনকি যুদ্ধ হইছিল সেইটাও।
যোদ্ধার নেশা?
আমাদের এক বন্ধু ছিল, অসাধারণ যোদ্ধা। জানুয়ারি মাসে ঢাকা, তারপর ইউনিভার্সিটি, চা, আড্ডা, নেশা এবং প্রেম। সবগুলাই সামলানো যেত, কিন্তু শেষটা বড় দাহ করে। যেই মেয়ে তার সাথে কদিন ঘোরাঘুরি করতো, কয়দিন পর তাকে ছেড়ে যেতো। সে ছিল নেশাখোর, আড্ডাবাজ, বেকার।এমনকি তার গায়ে তখন যোদ্ধার গ্লামারটাও লাগে নাই। আমার বোন এমন করলেও আমি খুশি হতাম।
তারপর আমার বন্ধুর নেশার মাত্রা বাড়তেই লাগলো, জীবনের লাগাম ঢিলে হতে থাকলো। ১০ বছর পর কেবল নেশাখোর পরিচয় ছাড়া তার আর কিছুই রইলো না। বাবার অবস্থা ভালো ছিল তাই ভাড়া তুলে জীবন কাটালো। বিয়ে, বাচ্চা কাচ্চা সবই হলো। কিন্তু নেশা ছাড়লো না। পরে ট্যাবলেটের বদলে মদ খেত।
এই লোক কি হারামখোর ছিল ? সে তো যুদ্ধেও গেছে, জান দিতে গেছে, কারো কোনো ক্ষতি করেনি। সে খারাপ না ভালো লোক? সে কি হারাম খায় ? তার এক বিন্দু রুজিও হারাম নয়। অতএব .. সে কি খারাপ না ভালো ?
যে মানুষটা সারা দিন রিকশা টানে আর রাতে এক পুড়িয়া গাঞ্জা টানে আর যে লোক কোটি টাকার বিজনেস করে লাখ টাকার মদ খায় তারা কি সমান পাপের বাক্স হাতে দাঁড়ানো ?
মদ আর চুরি?
প্রতিদিন মদ উদ্ধারের খবর পাই মিডিয়া থেকে। যাদের বাসা থেকে এইসব পাওয়া যায় তাদের অবশ্যই খারাপ ভাবা হচ্ছে। কিন্তু এই শহরে কত স্থানে খুব হালাল পরিবেশে মদ পাওয়া যায়, তার হিসেব কি আছে? কতগুলো বার আছে ঢাকায়? গত ১০ বছরে খুব কম বড়োলোক পেয়েছি যে মদ খায় না। তবে কিনা তাদের লাইসেন্স আছে -মানে হালাল? মদ কই খেলো সেটা তাহলে আসল কথা, কাগজ থাকলে হালাল ?
কিন্তু যে পরিমাণ দুর্নীতি, ঘুষ কেলেঙ্কারি, চুরি হয় এবং এসব নিয়ে মিডিয়াতে ফলাও করে প্রতিবেদনও ছাপা হয়, তার পিছনে আমরা তো পড়ে নেই? দুর্নীতি নিয়ে কথা বলবো না। কিন্তু কতবার মানুষ ভাবে ঢাকার এতো বিলাসী জীবন হারামের না হালাল টাকায় চলে? এখন কি ঘুষ খাওয়ার লাইসেন্স দেয়া হবে?
আসলে আমরা দুর্নীতিকে হারাম মনে করি না। আমরা বেশির ভাগ হাইল্লা মানুষ, গ্রামের কালচার মানি। মক্তবে মৌলভী সাহেব বলেছেন, মদ খাওয়া হারাম, তা নিয়েই চলছি। ঘুষ খাওয়ার কথা নিয়ে তো উনি তেমন কিছু বলেননি। গ্রামের মানুষকে গ্রামে শান্তিতে থাকতে দিন।
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
১৫৭৫ দিন আগে